খুলছে স্বপ্নের দুয়ার, উৎসবে দেশ!

  ‘স্বপ্ন ছুঁয়েছে’ পদ্মার এপার-ওপার
  • মানসুরা চামেলী, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

পদ্মা সেতু

পদ্মা সেতু

আজ দেশে উৎসব। স্বপ্ন জয়ের উৎসব। বাধা পেরিয়ে উত্তাল পদ্মা জয়ের উৎসব। ‘নিজেদের অর্থায়নে করব পদ্মা সেতু’- এই দৃঢ় সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের উৎসব। দীর্ঘ চ্যালেঞ্জ আর প্রতিকূলতা পেরিয়ে যে স্বপ্ন দেখেছিল জাতি আজ তা বাস্তব; তার জয়োৎসব।

আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা; এর পদ্মা বুকে গৌরবের প্রতীক পদ্মা সেতুর দুয়ার খুলে যাবে। এই স্বপ্নের দুয়ার খোলার সঙ্গে সঙ্গে গোটা দেশ মেতে উঠতে উৎসবে। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের মহেন্দ্রক্ষণকে রাঙাতে ঝাঁকে ঝাঁকে মানুষ আসছে পদ্মার পাড়ে। সেতুর দ্বার উন্মোচনের পর সেতুর দক্ষিণ প্রান্তে কাঁঠালবাড়ি ঘাটে জনসভা করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভার মঞ্চ তৈরি হয়েছে সেতুর আদলেই। প্রায় ১০ লক্ষাধিক মানুষের সমাবেশ হবে সেখানে। ভোর থেকেই সেখানে জড়ো হচ্ছেন মানুষ।

বিজ্ঞাপন

পদ্মা সেতুর উদ্বোধন ঘিরে আজকের এক গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহাসিক দিনের সাক্ষী হতে যাচ্ছে পুরো দেশ। স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের দিনে সারা দেশ উৎসব, আনন্দ, উল্লাসে মেতে উঠেছে। বর্ণিল সাজে সেজেছে পুরো দেশ। জেলায় জেলায় সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ছাড়াও বিভিন্ন সংগঠন এবং সাধারণ মানুষ নানা আয়োজন করেছেন এই দিনে।

উচ্ছ্বাসে ভাসছেন পদ্মাপারের মানুষ থেকে শুরু করে দক্ষিণের ২১ জেলার মানুষ। পথে-ঘাটে, চায়ের কাপে, আড্ডায়-আলোচনায় সেই আনন্দেরই অনুরণন। চোখেমুখে স্বপ্নপূরণের আলোকছটা। সোশ্যাল মিডিয়ার টাইমলাইন আজকে পদ্মা সেতুতে সয়লাব। পরিবর্তন হচ্ছে কভার ফটো, প্রোফাইল। স্ট্যাটাস ও পোস্ট করে এই গৌরবের সাক্ষী হচ্ছেন সবাই। সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীকে তার সাহসী ও দৃঢ় সিদ্ধান্তের জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছেন।


পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর বদলে যাবে দেশের অর্থনীতি এমনটাই ধারণা করছেন অর্থনীতিবিদরা। এই সুফলের অপেক্ষায় দিন গুণছেন মানুষ। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপক হারে শিল্পায়ন হবে এবং লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে।

কৃষিতে খুলে যাবে ব্যবসার নতুন দ্বার। কৃষকরা সেই রঙিন স্বপ্ন দেখছেন। তাদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য দ্রুত পরিবহনের ফলে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ১ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে যাবে।

উন্নয়নের হাওয়া লাগবে গোটা দেশে। প্রতি বছর দারিদ্র্য নিরসন হবে ০ দশমিক ৮৪ ভাগ। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটবে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার প্রায় ছয় কোটি মানুষের। 

যোগাযোগ সেক্টরে হবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। ঘাটে বসে ভোগান্তির অপেক্ষার দিন শেষ হবে। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের সারা জীবনের কষ্ট লাঘব হবে এই সেতুর কারণে। তাই তো পদ্মা সেতুর উদ্বোধন ক্ষণটি তাদের কাছে চির স্মরণীয় এক মুহূর্ত।


 

পর্যটক বৃদ্ধির ফলে বাড়তে থাকবে এ অঞ্চলের জিডিপি। সুন্দরবন ও কুয়াকাটা, কুষ্টিয়ায় লালন শাহের মাজার ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি, গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধুর সমাধী, মেহেরপুরের মুজিবনগর, বরিশালে নদী পর্যটনসহ বেশ কয়েকটি গন্তব্যে সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থার বদৌলতে পর্যটক বাড়ার সম্ভাবনা থাকছে।

৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পদ্মা সেতু নির্মাণে কাজ ২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর শুরু করে সরকার। সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা।