৫০ বছরেও অরক্ষিত বিজয়ের সাক্ষী বধ্যভূমিগুলো

  বিজয়ের ৫০ বছর


আমিনুল ইসলাম জুয়েল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
৫০ বছরেও অরক্ষিত বিজয়ের সাক্ষী বধ্যভূমিগুলো

৫০ বছরেও অরক্ষিত বিজয়ের সাক্ষী বধ্যভূমিগুলো

  • Font increase
  • Font Decrease

রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের হাজিরহাট এলাকায় জাফরগঞ্জ ব্রিজের পাশে রংপুর শহরের ব্যবসায়ী অশ্বিনী ঘোষসহ ১৯ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এই ব্রিজের ওপর দুই দিনে ১০ জনকে হত্যা করা হয়েছিল। আমার বাবাকেও জাফরগঞ্জ ব্রিজের কাছে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছে পাকিস্তানি সেনারা।

বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই জানেন না জাফরগঞ্জ ব্রিজ বধ্যভূমির কথা। নিহতদের স্মরণে সেখানে নির্মাণ করা হয়নি কোনো নামফলক বা স্মৃতিস্তম্ভ। এমন আরও অনেক জায়গা রয়েছে, যা আজও সংরক্ষণ করা হয়নি।

আক্ষেপের সঙ্গেই কথাগুলো বললেন প্রজন্ম একাত্তর রংপুর জেলা কমিটির সভাপতি দেবদাস ঘোষ দেবু।

স্বাধীনতার ৫০ বছরেও রংপুরে পুরোপুরি সংরক্ষণের আওতায় আসেনি ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা গণকবর ও বধ্যভূমিগুলো। কিছু বধ্যভূমি সংস্কার করা হলেও অযত্ন আর অবহেলায় অরক্ষিতভাবে পড়ে থাকা বেশীর ভাগ বধ্যভূমি নিশ্চিহ্নের পথে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা মুক্তিকামী বাঙালিদের ধরে এনে নির্মম নির্যাতন-নিপীড়ন করে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। তারই রক্ষমাখা নীরব সাক্ষী বধ্যভূমি এবং গণকবরগুলো। এর মধ্যে কিছু জায়গা বধ্যভূমি হিসেবে চিহ্নিত করে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হলেও অনেক জায়গা এখনো চিহ্নিতই করা হয়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রংপুরে ছোট-বড় অনেক বধ্যভূমি থাকলেও সরকারিভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে মাত্র ১৩টি। সেগুলো হলো- রংপুর টাউন হল, দখিগঞ্জ শ্মশান, সাহেবগঞ্জ, দমদমা, বালার খাইল, নব্দীগঞ্জ, লাহিড়ীরহাট, ঘাঘট নদী, নিসবেতগঞ্জ, জাফরগঞ্জ ব্রিজ, বদরগঞ্জের ঝাড়ুয়ার বিল ও পদ্মপুকুর এবং মিঠাপুকুর উপজেলার জয়রাম আনোয়ারা বধ্যভূমি। এছাড়াও জানা-অজানার মধ্যে রয়েছে মডার্ন সিনেমা হল, কুকুরুন বিল, নারিরহাট, শংকরদহ, বৈরাগীগঞ্জ, বলদিপুকুর, দেবীপুর, শিবগঞ্জ এলাকা বধ্যভূমি এবং রংপুর সেনানিবাস গণকবর। এসব দেখে বোঝার উপায় নেই কোনটা বধ্যভূমি আর কোন জায়গায় রয়েছে গণকবর। নতুন প্রজন্মকে ইতিহাস জানানোর জন্য বেশির ভাগ বধ্যভূমিতে নেই তথ্য নির্ভর কোনো নামফলক ও শহিদদের তালিকা।


ঝাড়ুয়ার বিল ও পদ্মপুকুর বধ্যভূমি:

রংপুরের সবচেয়ে বড় বধ্যভূমিগুলোর মধ্যে অন্যতম বদরগঞ্জ উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের ঝাড়ুয়ার বিল ও পদ্মপুকুর। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল পাকিস্তানি হানাদাররা দুইটি ট্রেনে চড়ে রামনাথপুর ইউনিয়নের বালাপাড়া ও কিসমত ঘাটাবিল এলাকার ঝাকুয়াপাড়া সংলগ্ন স্থানে আসে। এরপর তারা রামনাথপুর ও বিষ্ণুপুরে বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট এবং ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায়। এ সময় যারা বেঁচে যান তারা প্রাণভয়ে আশ্রয় নেন ঝাড়ুয়ার বিল-পদ্মপুকুর পাড়ে; কিন্তু রাজাকাররা ঝাড়ুয়ারবিল-পদ্মপুকুর পাড়ে সাধারণ মানুষের আশ্রয় নেয়ার বিষয়টি টের পেয়ে পাকিস্তানি বাহিনীকে জানালে তারা সেখানে গিয়ে সারিবদ্ধভাবে সবাইকে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে। শহীদদের স্মৃতি সংরক্ষণে বদরগঞ্জ শহর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নে ঝাড়ুয়ার বিল বধ্যভূমি ও পদ্মপুকুর এলাকায় ২০১৪ সালে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়েছে।

রংপুর টাউনহল বধ্যভূমি:

রংপুর শহরে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসররা সবচেয়ে বেশি হত্যাকা­ণ্ড ঘটায় রংপুর টাউন হলে। এটাকে টর্চার সেল বানানো হয়েছিল। এটি ছিল পাকিস্তানি সেনাদের নারী নির্যাতনের একটি প্রধান কেন্দ্র। এই টাউন হলে মেয়েদের ধরে আটকে রেখে পাশবিক নির্যাতন চালানো হতো এবং শেষে মেরে ফেলা হতো। এসব লাশসহ অসংখ্য মুক্তিকামী বাঙালির লাশ টাউন হলের পেছনের একটি কূপে ফেলে দেয়া হতো। গত বছর টাউন হল চত্বর বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ কাজের জন্য মাটি খুঁড়তে গিয়ে ওই কূপ থেকে বেশ কিছু হাড়গোড় পাওয়া গেছে। সেগুলো সংগ্রহে রাখতে উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন।


মডার্ন সিনেমা হল বধ্যভূমি

১৯৭১ সালের ১ মে ১৯ জন বাঙালি সেনা অফিসার ও সৈনিককে সেনানিবাস থেকে বের করে এনে রাত ১২টার দিকে সাহেবগঞ্জের এই মডার্ন সিনেমা হলের পেছনের বধ্যভূমিতে হত্যা করে মাটিচাপা দেওয়া হয়। এই বধ্যভূমি থেকে বেঁচে যান এক রিকশাচালক। নভেম্বরের ৮ তারিখে পাকিস্তানি সেনাদের এক দালাল জব্বার ওই রিকশাচালককে ন্যাপের কর্মী বলে ধরে নিয়ে যায়। তাকে মডার্ন সিনেমা হলে আটক রাখা হয়। এখানে তখন প্রায় সাড়ে ৩০০ বন্দীকে আটকে রাখা হয়েছিল। ১৩ দিন অমানুষিক নির্যাতনের পর তাদের সিনেমা হলের পেছনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে একে একে জিনকি, মালেক, আলী হোসেন, ফারুক হোসেনসহ সবাইকে জবাই করা হয়। এরই এক ফাঁকে সেই রিকশাচালক পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।

ঘাঘট নদতীরে নিসবেগঞ্জ বধ্যভূমি:

পাকিস্তানি বাহিনীর ২৩তম ব্রিগেড হেডকোয়ার্টার ছিল রংপুর শহরের নিসবেগঞ্জ এলাকায়। ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ অবাঙালি পাকিস্তানি সেনা অফিসার লে. আব্বাসের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে শহরে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। ফলে ২৮ মার্চ হাজার হাজার বিক্ষুব্ধ মানুষ তীর-ধনুক-বল্লম-লাঠি-দা-কুড়াল এবং বাঁশের লাঠি হাতে রংপুর সেনানিবাস আক্রমণের উদ্দেশ্যে ঘাঘট নদের তীরে জমায়েত হতে থাকে। এ সময় ক্যান্টনমেন্ট থেকে বৃষ্টির মতো গুলি ছোড়ে পাকিস্তানি বাহিনী। মাটিতে লুটিয়ে পড়ে অসংখ্য মানুষ। ঘাঘট নদের পানি সেইদিন হাজারো শহিদের রক্তে লাল হয়ে যায়। এতে এই ঘাঘট নদের তীর একটি বৃহৎ বধ্যভূমিতে পরিণত হয়। এক সময় নিশবেতগঞ্জ সেতু এলাকার সর্বত্র মানুষের মাথার খুলি ও কঙ্কাল পড়ে থাকতে দেখা যায়। সেখানে শহীদদের স্মরণে রক্তগৌরব নামে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে।

দমদমা সেতু বধ্যভূমি:

রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে দুই মাইল দক্ষিণ-পূর্বে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে দমদমা সেতুর নিচে রয়েছে একটি বধ্যভূমি। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিল মাসের ৩০ তারিখের মধ্যরাতে কারমাইকেল কলেজ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে অধ্যাপক সুনীল বরণ চক্রবর্তী, অধ্যাপক রামকৃষ্ণ অধিকারী, অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন রায় এবং অধ্যাপক কালাচাঁদ রায়কে বাসা থেকে বের করে আনে। পরে ক্যাম্পাসের ভিতরেই তাদের উপর শারীরীক নির্যাতন চালানো হয়। এই অবস্থায় অধ্যাপক কালাচাঁদ রায়ের সহধর্মিণী মঞ্জুশ্রী রায় বাসা থেকে স্বামীকে বাঁচানোর জন্য বেরিয়ে আসেন। পরে পাকসেনারা  মঞ্জুশ্রী রায়-সহ অন্যান্য অধ্যাপকদের রংপুর-বগুড়া মহাসড়কের দমদমা ব্রীজ এর কাছে আনে এবং রাস্তা সংলগ্ন একটি বাঁশের ঝাঁড়ে গুলি করে হত্যা করে।


স্বাধীনতা যুদ্ধের পরবর্তী সময়ে এই স্থানে আরও বহু মানুষকে ধরে হত্যা করে। স্থানীয় অধিবাসীদের মতে- রংপুরের বিভিন্ন জায়গা থেকে লোক ধরে এনে, ৭ই জন মধ্যরাতে এখানে জড় করে হত্যা করা হয়। এই দিনে প্রায় ২০০ লোককে হত্যা করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে আরও কিছু মানুষকে এখানে এনে হত্যা করা হয়। ২০১০ সালের ২৯ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ ও বধ্যভূমি সংরক্ষণের দায়িত্ব নেয় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে দায়িত্ব নেয়ার দীর্ঘ সময় পরেও বধ্যভূমি সংরক্ষণে তেমন উদ্যোগ নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

দখিগঞ্জ শ্মশানঘাট বধ্যভূমি:

রংপুর শহরের দখিগঞ্জ শ্মশানঘাটে ১৯৭১ সালের ৩ এপ্রিল রংপুর সেনানিবাসের দুটি মেস থেকে ১১ জনকে নিয়ে যাওয়া হয়। পাকসেনারা এই ১১ জনকে দখিগঞ্জ শ্মশানে এনে গুলি করে। এই সময় অলৌকিকভাবে বেঁচে যান তাজহাটের দীনেশ চন্দ্র ভৌমিক (মন্টু ডাক্তার)। দশ জনের লাশের সাথে তিনি গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মরার মতো পড়ে থাকেন। পাকসেনারা সবাইকে মৃত মনে করে চলে গেলে, দীনেশ চন্দ্র ভৌমিক সেখান থেকে পালিয়ে যান। পরে স্থানীয় শচীন ডাক্তারের চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে তিনি ভারতে চলে যান এবং স্বাধীনতার পরে দেশে ফিরে আসেন। এই দলে মন্টু ডাক্তারের সঙ্গে ছিলেন রংপুরের ভাসানী ন্যাপ নেতা ইয়াকুব মাহফুজ আলী। এই বধ্যভূমিতে নামফলক ও শহিদ স্মৃতিস্তম্ভ রয়েছে।

সাহেবগঞ্জ বধ্যভূমি:

রংপুর জেলখানা থেকে ১১ জন বন্দী ইপিআর সদস্যকে ধরে এনে হত্যা করে। হারাগাছ রোড ও সাহেবগঞ্জের মাঝামাঝি একটি স্থানে এই শহীদদের গণকবর রয়েছে।

রংপুর সেনানিবাস গণকবর:

রংপুর সেনানিবাসের পাশেই রয়েছে একটি গণকবর। এই গণকবরটিতে পাকিস্তানি বাহিনী বেঙ্গল রেজিমেন্ট এবং বাঙালি ইপিআর সদস্যসহ প্রায় ২০০ ব্যক্তির লাশ পুঁতে রেখেছিল। প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ অনুযায়ী, স্বাধীনতার পর এখান থেকে প্রায় ১০ হাজার শহীদের লাশ উদ্ধার করা হয়। ১২ এপ্রিল হানাদাররা সৈয়দপুর থেকে বহু মাড়োয়ারিকে ধরে এনে হত্যা করে এখানে পুঁতে রাখে।

সতের শহীদকে আজও ভোলেনি গঙ্গাচড়াবাসি:

১৯৭১ সালের ১৩ ডিসেম্বর রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার শংকরদহ গ্রামে ঘটেছিল এক নারকীয় হত্যাকাণ্ড। পাক হানাদার বাহিনীর বুলেটে নির্মমভাবে নিহত হন ১৭ জন নিরীহ গ্রামবাসী। এদের মধ্যে মসজিদে নামাজরত অবস্থায় পাক সেনারা ব্রাশ ফায়ার করে মেরেছে ৬ জন, চলতি পথে গুলি করে ১০ জন এবং বেয়নেট চার্জ করে মেরেছে ১ জনকে। ১৯৭১-এর ১২ ডিসেম্বর সকালবেলা কোম্পানি কমান্ডার মীর আব্দুস সালামের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল গঙ্গাচড়া থানা আক্রমণ করে। তার পূর্বেই পাক সেনারা পালিয়ে যায়। মুক্তিযোদ্ধারা থানা ব্যারাক থেকে কিছু অস্ত্র, গোলাবারুদসহ একজন পাকিস্তানি বাবুর্চীকে ধরে নিয়ে যায় তিস্তা নদীর অপরপ্রান্তে মুক্ত স্বাধীন এলাকায়। এ খবর পেয়ে পরদিন রংপুর সেনানিবাস থেকে একদল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী গঙ্গাচড়ায় আসে। ক্ষিপ্ত সৈন্যরা ব্রাশফায়ার করতে তিস্তা নদীর তীরবর্তী শংকরদহ গ্রাম পর্যন্ত যাওয়ার পথে গঙ্গাচড়ার মফিজ উদ্দিন, ফজর উদ্দিন, আব্দুল আজিজ ও হবিবর রহমানকে গুলি করে হত্যা করে। ওইদিন বিকালে এলাকার শান্তি কামনায় বকুলতলা পুরাতন মসজিদে নফল নামাজ আদায় করছিলেন মহিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মৌলভী তৈয়ব আলী, বছির উদ্দিন, সহির উদ্দিন, মহির উদ্দিন, নবির উদ্দিন ও তার সাত বছরের পুত্র সন্তান। নরঘাতকরা মসজিদ আক্রমণ করে নামাজরত অবস্থায় ব্রাশফায়ার করে উক্ত ৬ জনকেই হত্যা করে।

স্বাধীনতার এত বছর পরও গঙ্গাচড়ায় নিহতদের স্মরণে গড়ে ওঠেনি কোন স্মৃতিসৌধ, আসেনি ইতিহাসের পাতায় তাদের নাম, পালন হয় না গণহত্যা দিবস। তবে ভয়াল সেই স্মৃতি আজও কাঁদায় গঙ্গাচড়ার মানুষকে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. দিনেশ চন্দ্র ভৌমিক মন্টুর ছেলে সুশান্ত ভৌমিক সুবল বলেন, ‌স্বাধীনতার ৫০ বছরেও বধ্যভূমিগুলোতে রাষ্ট্রীয় ভাবে কোনো কর্মসূচি পালন করা হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত এসব বধ্যভূমিসহ সংশ্লিষ্ট সকল স্থাপনা সংরক্ষণে সরকারকে আরও গুরুত্ব বাড়াতে হবে।’

রংপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সদরুল আলম দুলু বলেন, সরকারের উচিত বধ্যভূমিগুলোকে সংরক্ষণ এবং ফুটিয়ে তোলা, যাতে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বেঁচে থাকে। তা না হলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, আকাঙ্খা ও স্বাধীনতা সংগ্রামের কষ্ট-অর্জন অজানা থেকে যাবে। 

রংপুর জেলা প্রশাসক আসিব আহসান বলেন, সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় বধ্যভূমি এবং গণকবর সংস্কারের জন্য কাজ করছে। রংপুরে যে সব বধ্যভূমি এখনও অরক্ষিত রয়েছে, সেগুলো চিহ্নিত করে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে দমদমা বধ্যভূমি, টাউন হলের পিছনের বধ্যভূমি, সাহেবগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি বধ্যভূমি সংরক্ষণের কাজ শেষ করা হয়েছে। সেসব বধ্যভূমিতে স্মৃতিস্তম্ভ ও নামফলক বসানো হয়েছে।

   

র‍্যাব-৩'র নতুন অধিনায়ক ফিরোজ, নিজ বাহিনীতে ফেরত যাচ্ছেন আরিফ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

এলিট ফোর্স র‍্যাব-৩'র নতুন অধিনায়ক (সিও) হিসেবে দায়িত্ব পেতে যাচ্ছেন লে. কর্নেল মো. ফিরোজ কবীর। তিনি লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদের স্থলাভিষিক্ত হবেন।

রোববার (২৮ এপ্রিল) ফিরোজ তার দায়িত্ব বুঝে নিবেন।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) র‍্যাব সদরদফতরের একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

র‍্যাব সূত্রে জানা গেছে, লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ নিজ বাহিনীতে (সেনাবাহিনী) ফেরত যাচ্ছেন। তিনি র‍্যাব-৩ এর অধিনায়ক হিসেবে দুবছরের বেশি সময় দায়িত্ব পালন করেছেন। মেধাবী ও সৎ অফিসার হিসেবে পরিচিত এই সেনা কর্মকর্তা ঢাকা মেডিকেলসহ বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে দালাল বিরোধী অভিযান, মাদক-অস্ত্র উদ্ধার, খাদ্য মজুত করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি ও কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য বন্ধে ব্যাপক অভিযান চালান। যা ব্যাপক প্রশংসিত হয়।

এদিকে র‍্যাব-৩ এর অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়া ফিরোজ কবীর সর্বশেষ র‍্যাব-৬'এর দায়িত্বে ছিলেন। সম্প্রতি তাকে বদলি করে র‍্যাব সদরদফতরে আনা হয়। গত মে মাসে তিনি র‍্যাব-৬'র অধিনায়কের দায়িত্ব পান। ভালো কাজের স্বীকৃতি হিসেবে চলতি বছর পুলিশ সপ্তাহে তিনি বাংলাদেশ পুলিশ পদক- বিপিএম পান।

অন্যদিকে ১৮ এপ্রিল র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈনকে নিজ বাহিনীতে ফেরত পাঠানো হয়। তার জায়গায় নতুন দায়িত্ব পেয়েছেন কমান্ডার আরাফাত ইসলাম। গত বুধবার আরাফাত তার বুঝে নেন। আর র‍্যাব-১৩'র অধিনায়কের দায়িত্ব পেয়েছেন কমান্ডার কামরুল হাসান।

রাজধানীর ব্যাংক পাড়া খ্যাত মতিঝিল, মুগদা, শাহ্জাহানপুর, পল্টন, খিলগাঁও, সবুজবাগ, রামপুরা, হাতিরঝিল, শাহবাগ ও রমনা থানা মিলে র‍্যাব-৩ এর আওতাধীন এলাকা। 

  বিজয়ের ৫০ বছর

;

লামায় অস্ত্র দেখিয়ে চাঁদা আদায়কালে পাহাড়ি সন্ত্রাসী আটক



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বান্দারবান
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বান্দরবানের লামা উপজেলায় অস্ত্র দেখিয়ে চাঁদা আদায়কালে বন্দুকসহশ জুয়েল ত্রিপুরা (২৮) নামের এক পাহাড়ি সন্ত্রাসীকে আটক করেছে সেনাবাহিনী।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বিকেলে লামা উপজেলার রুপসীপাড়া ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি নাইক্ষ্যংমুখ এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।

আটক জুয়েল ত্রিপুরা(২৮) হলেন অনজাহা ত্রিপুরার ছেলে । সে লামা উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নের লুলাইং এলাকার বাসিন্দা।

স্থানীয়রা জানান, আজ দুপুরে জুয়েল ত্রিপুরা সহ আরও দুই জন সংঘবদ্ধ হয়ে লামা উপজেলার রূপসীপাড়া ইউনিয়নের দুর্গম নাইক্ষংমুখ এলাকায় বন্দুকের ভয় দেখিয়ে স্থানীয়দের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছিল। সেই সময় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা সেনাবাহিনীর টহল দল দেখতে পেয়ে বিষয়টি অবহিত করে। এ সময় সেনাবাহিনীর একটি টহল দল হাতেনাতে জুয়েল ত্রিপুরা কে আটক করে পুলিশকে সোপর্দ করেন। এর আগে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে অন্য দুই জন পালিয়ে যায়।

এই বিষয়ে লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামীম শেখ বলেন, এ ঘটনায় আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

  বিজয়ের ৫০ বছর

;

নরসিংদীতে অতি গরমে প্রবাসীর শিশুর মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নরসিংদী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার চরাঞ্চল চাঁনপুরে অতি গরমে এক প্রবাসীর দেড় বছরের এক শিশু মারা গেছে। 

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বিকেলে উপজেলার চাঁনপুর ইউনিয়নের সওদাগর কান্দি এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটে।

স্থানীয় চাঁনপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মোমেন সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নিহত শিশুর নাম ইয়াসিন। সে রায়পুরা উপজেলার সওদাগর কান্দি এলাকার প্রবাসী এনামুল হকের ছেলে।

নিহত ইয়াছিনের নানা বাচ্চু মিয়া সাংবাদিকদের জানান, বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) নাতীসহ মেয়ে নরসিংদী শহরের বাসাইলস্থ ভাড়া বাসা থেকে আমাদের গ্রামের বাড়ি সওদাগর কান্দিতে নিয়ে আসি। আর আজই আমার নাতিটা মারা গেলো। 

তিনি আরও জানান, দুপুর সোয়া ২টার দিকে ইয়াসিন তার মায়ের সাথে দুপুরের খাবার খাওয়ার সময় অতিরিক্ত গরমে মাটিতে শুয়ে পড়ে। পরে তাকে সওদাগর কান্দি ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সাব সেন্টারের নিয়ে গেলে দায়িত্বরত ফার্মাসিস্ট মিজানুর রহমান তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ সময় মিজানুর রহমান জানান, শিশু ইয়াছিনকে তার কাছে আনার আগেই মারা গেছে। যারা নিয়ে এসেছে তাদের ভাষ্যমতে অতি গরমে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। 

 

 

 

  বিজয়ের ৫০ বছর

;

শাহ আমানত বিমানবন্দরে বৈদেশিক মুদ্রাসহ যাত্রী আটক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
শাহ আমানত বিমানবন্দরে বৈদেশিক মুদ্রাসহ যাত্রী আটক

শাহ আমানত বিমানবন্দরে বৈদেশিক মুদ্রাসহ যাত্রী আটক

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আরব আমিরাতের ৯০ হাজার দিরহামসহ শারজাহগামী এক যাত্রীকে আটক করেছে এনএসআই ও শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। উদ্ধার মুদ্রা ২৩ হাজার ৬৮৪ মার্কিন ডলারের সমমূল্যের।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিমানবন্দর টার্মিনালের আন্তর্জাতিক অ্যান্টি হাইজ্যাকিং গেইটে তল্লাশি এসব মুদ্রাসহ তাকে আটক করা হয়।

আটক যাত্রীর নাম মোহাম্মদ কায়সার হামিদ৷ তিনি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার বাসিন্দা। রাত সোয়া আটটার এয়ার এরাবিয়া জি৯-৫২১ ফ্লাইট যোগে শারজাহ গমনিচ্ছুক ছিলেন হামিদ।

বিষয়টি বার্তা২৪.কম-কে নিশ্চিত করেছেন- বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন তাসলিম আহমেদ।

তিনি জানান, বিমানবন্দর শুল্ক গোয়েন্দা ওই যাত্রীর বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে পতেঙ্গা মডেল থানায় মামলা দায়ের করছে। উদ্ধার করা বিদেশি মুদ্রাগুলো শুল্ক গোয়েন্দার মাধ্যমে বিমানবন্দর কাস্টমসের নিকট হস্তান্তর করা হবে, যা পরবর্তীতে সরকার কর্তৃক জব্দ হবে।

তিনি আরও জানান, যাত্রী বৈদেশিক মুদ্রা নীতিমালা অনুযায়ী নির্ধারিত পরিমাণ (১ বছরে সর্বোচ্চ ১২ হাজার ইউএস ডলার বা এর সমমূল্যের অন্য কোনো বৈদেশিক মুদ্রা) এর বেশি বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ে বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা করায় তার নিকট হতে প্রাপ্ত সমুদয় বৈদেশিক মুদ্রা যাত্রীসহ আটক করা হয়।

  বিজয়ের ৫০ বছর

;