খুলনা বিজয় দিবস ১৭ ডিসেম্বর

  বিজয়ের ৫০ বছর



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, খুলনা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

খুলনা মুক্ত দিবস আজ। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করলেও খুলনা শত্রুমুক্ত হয়েছিল এর একদিন পর ১৭ ডিসেম্বর। মুক্তিবাহিনী পাকিস্তানি হানাদারদের সঙ্গে লড়াই করে খুলনা শহর দখলমুক্ত করেন এদিনে। এরপর খুলনা সার্কিট হাউস ময়দানে শত্রুপক্ষ আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। ওই দিনই বিজয়ের পতাকা ওড়ে খুলনায়।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯৭১ সালের শেষ দিকে চূড়ান্ত বিজয়ের আগে দক্ষিণাঞ্চলের শ্যামনগর, দেবহাটা, সাতক্ষীরা হানাদারমুক্ত হওয়ার পর দক্ষিণাঞ্চলে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা বেড়ে যায়। তখন তাদের একটাই লক্ষ্য খুলনাকে মুক্ত করা। কপিলমুনির ভয়াবহ যুদ্ধের পর দক্ষিণাঞ্চলে মুক্তিবাহিনীর সামনে আর কোনও বাধা না থাকায় মুক্তিযোদ্ধারা একটি লঞ্চে রওনা দিয়ে বারআড়িয়া-মাইলমারা হয়ে বটিয়াঘাটায় আসেন এবং জলমা-চক্রাখালি হাইস্কুল ভবনকে ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করে।

১০ ডিসেম্বর সকালে লঞ্চে বসে মেজর জয়নুল আবেদীন খান, গাজী রহমত উল্লাহ দাদু, শেখ কামরুজ্জামান টুকু, মীর্জা খয়বার হোসেন, লে. আরেফিন, শেখ ইউনুস আলী ইনু, স ম বাবর আলী, সাহিদুর রহমান কুটু, শেখ আব্দুল কাইয়ুম প্রমুখ খুলনা শহর শত্রুমুক্ত করার মূল পরিকল্পনা করেন।

সে সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী গল্লামারী রেডিও স্টেশন, খুলনা লায়ন্স স্কুল, পিএমজি কলোনী, শিপইয়ার্ড, ৭নং ঘাটের জেটী, টুটপাড়া, বয়রা ফায়ার ব্রিগেড স্টেশন, ওয়াপদা ভবন, খালিশপুরের গোয়ালপাড়া বিদ্যুৎ কেন্দ্র, গোয়ালখালী ও দৌলতপুরের কয়েকটি স্থানে অবস্থান করছিল। তখন সিদ্ধান্ত হয় যে, মুক্তিযোদ্ধারা চারদিক থেকে খুলনা শহরে প্রবেশ করবে এবং কোনও বাধা এলে তা সশস্ত্রভাবে প্রতিহত করবে।

ফাহিম উদ্দিন ও লে. নোমান উল্লাহর নেতৃত্বে তার বাহিনী সেনের বাজার, রাজাপুর ও রূপসা ঘাটের দিক থেকে, বোরহান উদ্দিন ও তার বাহিনী ক্রিসেন্ট জুটমিল ও এর পাশে নৌঘাঁটিতে, মুজাহিদ ক্যাপ্টেন শাহজাহান মাস্টার ও তার বাহিনী কুলুটিয়া নামক স্থানে অবস্থান নিয়ে খুলনা রেডিও স্টেশনে, আফজাল ও কুতুব উদ্দিন তাদের বাহিনী নিয়ে ঝড়ডাঙ্গা ও সাচিবুনিয়ার দিক থেকে পাক সেনাদের লায়ন্স স্কুলের ঘাঁটিতে আক্রমণ চালিয়ে খুলনা শহরের দিকে প্রবেশ করে।


এরপর মুক্তিযোদ্ধারা বেতারে শুনতে পান, মিত্র বাহিনীর কমান্ডার মানেক শথ র আহ্বানে সাড়া দিয়ে পাকিস্তানি সেনারা ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে আত্মসমর্পণ করছে, কিন্তু খুলনায় তারা আত্মসমর্পণে রাজি হচ্ছে না।

এই সংবাদ পাওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধারা খুলনা শহরের দিকে এগিয়ে যান। ১৬ ডিসেম্বর যে দিন ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করে সেদিন খুলনা শহর ও এর আশপাশে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিচ্ছিন্নভাবে যুদ্ধ চলছিল। সড়ক পথে যশোর রোড ধরে খুলনায় আসার পথে শিরোমনিতে মিত্র বাহিনীর সঙ্গে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধে উভয় পক্ষের ব্যাপক সংখ্যক হতাহত হয়।

১৭ ডিসেম্বর ভোরে শিপইয়ার্ডের কাছে রূপসা নদীতে বটিয়াঘাটা ক্যাম্প থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি লঞ্চ এসে পৌঁছে। কিন্তু শিপইয়ার্ডের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা পাক সৈন্যরা লঞ্চটির ওপর আক্রমণ চালায় এবং গুলিবর্ষণ করে। মুক্তিবাহিনীও লঞ্চ থেকে নেমে শিপইয়ার্ডের ওপারের ধান ক্ষেতে অবস্থান নিয়ে পাল্টা গুলি চালায়।

অবশেষে সকল বাধা অতিক্রম করে ১৭ ডিসেম্বর সকালে মুক্তিযোদ্ধারা খুলনা শহরে প্রবেশ করতে শুরু করে। খুলনা সার্কিট হাউস দখল করার পর মেজর জয়নুল আবেদীন ও রহমত উল্লাহ দাদু যৌথভাবে সার্কিট হাউসে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন।

এছাড়া, মুক্তিযোদ্ধা স ম বাবর আলী, আবুল কালাম আজাদ, রেজাউল করিম, গাজী রফিকুল ইসলাম শহীদ হাদিস পার্কে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন। মিত্র বাহিনী খুলনা শহরে প্রবেশ করার ৮ ঘণ্টা আগেই হানাদার বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। এরপর খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিলের দপ্তর থেকে ব্রিগেডিয়ার হায়াত খুলনা সার্কিট হাউস ময়দানের দিকে রওনা হন।

পাকিস্তানি বাহিনীর পরাজিত বিধ্বস্ত সৈন্যরাও সার্কিট হাউস ময়দানের দিকে রওনা হয়। রাস্তায় তখন হাজারো মানুষের ঢল নামে। সবার মুখে তখন ‘জয় বাংলা ধ্বনি। সবাই ছুটেন খুলনা সার্কিট হাউস ময়দানের দিকে। ১৭ ডিসেম্বর সার্কিট হাউস ময়দানে পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণের পর সেখানে উপস্থিত হাজার হাজার মানুষ প্রাণভরে গ্রহণ করেন স্বাধীন বাংলার মুক্ত বাতাস।

 

 

 

   

বরিশালে পাইকারি বাজারে আলু বিক্রি শুরু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
বরিশালে পাইকারি বাজারে আলু বিক্রি শুরু

বরিশালে পাইকারি বাজারে আলু বিক্রি শুরু

  • Font increase
  • Font Decrease

বরিশালের পাইকারি বাজারে আজ থেকে আলু বিক্রি শুরু হবে বলে জানিয়েছেন আড়তদাররা।

সরকার নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করতে না পারার কারণে গত বৃহস্পতিবার নগরীর আড়তগুলো আলু শূন্য হয়ে পড়ে। এরপর থেকে গত চারদিন ধরে পাইকারি বাজারে আলু বিক্রি বন্ধ ছিলো। কোন আড়তে আলু দেখা যায়নি।

বরিশাল নগরীর পেঁয়াজপট্টি এলাকার আড়তদার মো. শিপন হোসেন জানান, রোববার বরিশাল জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলামের সঙ্গে আড়তদাররা সাক্ষাৎ করেন। তিনি সহনশীল দামে আলু বিক্রির পরামর্শ দেন। আলু কেনা বেচার ভাউচার রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন। তার আশ্বাসে সোমবার থেকে আলু বিক্রি শুরু করার সিদ্বান্ত নেওয়া হয়েছে।

তিনি জানান, পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি ৩৮ থেকে ৪০ টাকা ও খুচরা বাজারে ৪৫ টাকা দরে বিক্রির সিদ্বান্ত হয়েছে। এ সিদ্বান্ত অনুযায়ী মুন্সীগঞ্জ ও রাজশাহী অঞ্চল থেকে আলুবোঝাই ট্রাক সকালে বরিশালে এসে পৌঁছে। দুপুরের মধ্যে পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বেচা-বিক্রি শুরু করা হবে।

আড়তদার মো. আল আমিন বলেন, দ্রব্যেমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে আলু বেশি প্রয়োজন। সরকার ২৭ টাকা দরে পাইকারি বাজারে আলু বিক্রির সিদ্বান্ত দেয়। কিন্তু এ দামে আলু কোনভাবেই বিক্রি করা সম্ভব নয়। তাই আলু বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হয়। বরিশাল নগরীর পেঁয়াজ পট্টি এলাকায় ৩৫টি আড়ত রয়েছে। এ সকল আড়ত থেকে প্রতিদিন দেড় হাজার থেকে দুই হাজার বস্তা আলু বিক্রি হয়। আলু না থাকায় আড়তদের চেয়ে বেশি ভোগান্তিতে ছিলো শ্রমিকরা। গত চারদিন বেচা-বিক্রি না থাকায় অনেক শ্রমিক অর্থ সংকটে ছিলো।

  বিজয়ের ৫০ বছর

;

যুবলীগ নেতা হত্যা: প্রধান আসামি গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নোয়াখালী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নোয়াখালীর চাটখিল পৌরসভা যুবলীগ নেতা রনি পলোয়ান হত্যা মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। এ সময় তার কাছ থেকে ১৪৫ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়।

সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‍্যাব-১১ এর সিপিসি-৩ এর নোয়াখালী ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার লেফটেন্যান্ট মাহমুদুল হাসান।

এর আগে, গতকাল রোববার রাতে র‍্যাব-১১ তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় উপজেলার হালিমা দিঘীর পাড় এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার মো. খোকন (৩৫) উপজেলার সুন্দরপুর গ্রামের মৃত আলী আজ্জমের ছেলে। নিহত মোহাম্মদ রনি পলোয়ান (৩২) একই গ্রামের পলোয়ান বাড়ির শাহজাহানের ছেলে। সে চাটখিল পৌরসভা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নিহত রনি পলোয়ান পেশায় একজন সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক ছিলেন এবং স্থানীয় ক্ষমতাসীন রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। গত ২২ সেপ্টেম্বর বিকেলে খাওয়া দাওয়া শেষ করে বাড়ি থেকে বের হন। রাতে বাড়ি না ফেরায় স্ত্রী সাজু আক্তার তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। পরেরদিন ২৩ সেপ্টেম্বর সকালে ফটিক্কা বাড়ির বাগানে রনির গলাকাটা মরদেহ পাওয়ার খবর শুনে স্ত্রী সাজু আক্তার ঘটনাস্থলে গিয়ে স্বামীর মরদেহ শনাক্ত করেন। পরে তিনি চাটখিল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর র‍্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে। সে তদন্তে খোকনের নাম চলে আসে। পরবর্তীতে তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় উপজেলার হালিমা দিঘীর পাড় এলাকা থেকে খোকনকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাকে চাটখিল থানায় হস্তান্তর করা হয়। 

  বিজয়ের ৫০ বছর

;

ডেঙ্গুর ভয়াবহতা: মশা কেড়ে নিয়েছে শতশত প্রাণ, ছাড়িয়েছে রেকর্ড!



রাসেল মাহমুদ ভূঁইয়া, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
মশা কেড়ে নিয়েছে শতশত প্রাণ, ছাড়িয়েছে রেকর্ড!

মশা কেড়ে নিয়েছে শতশত প্রাণ, ছাড়িয়েছে রেকর্ড!

  • Font increase
  • Font Decrease

আর্দ্রতা কমে গিয়ে তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও বৃষ্টিপাত বেড়ে যাওয়ার ফলে দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে। সারাদেশেই ছড়িয়ে পড়েছে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু জ্বর। ইতোমধ্যে ডেঙ্গুতে অতীতের মৃত্যু ও আক্রান্তের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।

২৫০ শয্যা বিশিষ্ট টিবি হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার বলেন, ‘ডেঙ্গুর ভয়াবহতা বিগত বছরগুলোর তুলনায় এ বছর অনেক বেশি। দেশের আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ডেঙ্গুর ধরনেও পরিবর্তন এসেছে। আগে ডেঙ্গুর জীবাণু বহনকারী এডিস মশা পুরষ্কার পানিতে বংশ বিস্তার করে থাকলেও এখন সব ধরনের পানিতেই বংশ বিস্তার করছে। তাই আমাদের আরও বেশি সতর্ক থাকতে হবে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘হসপিটালগুলোতে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা অন্যান্য রোগীদের তুলনায় অনেক বেশি। রোগীর অবস্থা বেশি খারাপ হলেই কেবল তারা ডাক্তারের কাছে আসছেন। ফলে ভর্তির ২৪ ঘন্টার মধ্যেই অনেক রোগী মারা যাচ্ছেন।’

চলতি মাসেই ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৩১৬ জনের।আর এ বছরের শুরু থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৯০৯ জনের। চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৮৭ হাজার ৭২৫ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ৭৮ হাজার ৯১৫ জন এবং ঢাকার বাইরে ১ লাখ ৮ হাজার ৮১০ জন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত কয়েক বছর ধরে ডেঙ্গুর সংক্রমণ বৃদ্ধি পেলেও যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ না করার কারণে ডেঙ্গু আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। আগে ডেঙ্গু রাজধানী কেন্দ্রিক থাকলেও বর্তমানে তা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। 

২০০০ সালে দেশে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগের বড় প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। সে বছর ৯৩ জনের মৃত্যু হয়। এর পর থেকে প্রতিবছরই দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে। 

দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সর্বোচ্চ ২৮১ জনের মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছিল ২০২২ সালে। এছাড়া ২০১৯ সালে মৃত্যু হয়েছিল ১৭৯ জনের, ২০২০ সালে ৭ জন এবং ২০২১ সালে মৃত্যু হয় ১০৫ জনের।

হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী এবং মৃত্যুর এই সংখ্যা অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি বলে জানিয়েছে চিকিৎসকরা। ডেঙ্গুর কারণে হাসপাতালে সাধারণ রোগী সেবা ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান তারা।

রোগী এবং তাদের আত্মীয়রা বলছেন, হসপিটালে ভর্তি হলেই খচর, এই ভয়েই শুরুতে হসপিটালে আসা হয়না। দেশে ডেঙ্গু এখন মহামারি আকার ধারণ করেছে, এই অবস্থায় সরকারের যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলেও মনে করছেন তারা।

অনেক পরিবারের একত্রে ২-৩ জন ডেঙ্গু আক্রন্ত হয়ে হসপিটালে ভর্তি হয়েছেন। অসুস্থ সদস্যদের চিকিৎসা বাবদ লাখ টাকার বেশি খরচ করে ফেলেছেন তারা। এই ব্যয় সংকুলান করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের নিয়ে পরিবারের অন্য সদস্যদের নির্ঘুম রাত কাটছে বলে জানিয়েছেন হসপিটালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজনরা।

ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা অন্যান্য রোগীদের তুলনায় অনেক বেশি

জনস্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, এক সময় বাংলাদেশে ডেঙ্গু মৌসুমি রোগ বলে মনে করা হলেও কয়েক বছর ধরে বছরজুড়েই এর প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। এর ফলে এই রোগের ভাইরাস আরও শক্তিশালী হয়ে দেশের সব জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য থেকে জানা যায়, জুন মাসে যেখানে ৫ হাজার ৯৫৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, জুলাই মাসে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৩ হাজার ৮৫৪ জনে। আগস্টে ৭১ হাজারের বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

তবে জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগী তুলনামূলক কম ছিল। জানুয়ারিতে আক্রান্ত হয়েছিল ৫৬৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬ জন, মার্চে ১১১ জন, এপ্রিলে ১৪৩ জন, মে মাসে ১ হাজার ৩৬ জন, জুনে ৫ হাজার ৯৫৬ রোগী আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। মৃত্যুর দিক থেকে জানুয়ারিতে ৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩ জন, এপ্রিলে ২ জন, মে মাসে ২ জন এবং জুনে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে।

জুলাইয়ে তা বেড়ে মৃত্যু হয়েছে ২০৪ জনের। আগস্টে মৃত্যু হয়েছে ৩৪২ জনের। চলতি (সেপ্টেম্বর) মাসে ২৪ দিনেই ৩১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১ লাখ ২৩ হাজার ৮০৮ জন। মৃত্যু হয়েছে ৫৯৩ জনের।

আবার পুরো আগস্ট ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন সর্বমোট ৭১ হাজার ৯৭৬ জন, মারা গেছেন ৩৪২ জন। ইতোমধ্যে চলতি মাসের ২৪ দিনে সারা দেশে ডেঙ্গুতে মারা গেছে ৩১৬ জন। এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে সেপ্টেম্বর মাসে সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে। চলতি মাসে গত ২৪ দিনে দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৩ হাজার ৯১৭ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম জানান, ‘প্রতিটি ‍মৃত্যু ভীষণ কষ্টের। আমরা চাইব মৃত্যু শূন্যের কোটায় আসুক। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। এখন সবার সহযোগিতা দরকার।’  

মশা কেড়ে নিয়েছে শতশত প্রাণ, ছাড়িয়েছে রেকর্ড!

ডা. আয়শা আক্তার বলেন, ‘এডিস মশা ভোরবেলায় কিংবা দিনের বেলায় আক্রমন করে থাকলেও এখন ২৪ ঘন্টার যে কোনো সময়ই আক্রমন করতে পারে। কেননা নগরায়নের ফলে সবসময়ই আমাদের চারপাশ আলোকিত থাকে। পূর্বে ডেঙ্গু রোগী কেবল ঢাকায় সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন সারাদেশে এর ভয়াবহতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে রোগীর সংখ্যাও দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘আমাদের ডেঙ্গুর উৎস ধ্বংস করতে হবে। ডেঙ্গুর যে প্রজনন হচ্ছে সেগুলোকে যদি আমরা ধ্বংস করতে না পারি তাহলে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। পরিবারের কেউ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। সবসময় মশারি, কয়েল, স্পে ব্যবহার করতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর  থেকে দেওয়া পরামর্শ মেনে চলতে হবে।’ 

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গু ভয়াবহতা অবাক করার মতো। সরকারের উচিত সিদ্ধান্ত নিয়ে জোরদার মশক নিধন অভিযান পরিচালনা করা। এতগুলো প্রাণ ঝরে পড়েছে মশার কামড়ে তা ভাবতেই কষ্ট লাগে। 

স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে গতকাল পর্যন্ত দেশে মোট ১ লাখ ৮৭ হাজার ৭২৫ জন মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। এটা কেবল সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে যারা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন তাদের হিসাব। এর বাইরেও প্রচুর মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হচ্ছেন, তারা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন না। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সুস্থ হচ্ছেন। তাদের মধ্যে যাদের অবস্থার অবনতি হচ্ছে তারাই কেবল হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।

  বিজয়ের ৫০ বছর

;

পাতা কুড়াতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ২ শিশুর মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নোয়াখালী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে মসজিদের ছাদে পাতা কুড়াতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পষ্ট হয়ে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল সোয়া ৭টার দিকে উপজেলার ৭ নং পূর্ব চরবাটা ইউনিয়ন ১ নম্বর ওয়ার্ডের হাজীপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলো- উপজেলার পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামের হোসেন সর্দার বাড়ির মোহাম্মদ ফারুক হোসেনের ছেলে মো.জিসান (৯) ও একই গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে রাহাত হোসেন (১২) ।

স্থানীয় ইউপি সদস্য জামাল উদ্দিন জানায়, নিহত দুই শিশু সম্পর্কে মামা-ভাগ্নে ছিল। একই বাড়িতে তাদের পাশাপাশি ঘর। সকালে তারা মক্তব্যে পড়তে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হয়। কিন্ত তারা মক্তব্যে না গিয়ে সকাল সোয়া ৭টার দিকে কয়েকজন মিলে গাছের পাতা কুড়াতে গাছ বেয়ে হাজীপুর গ্রামের আস্তানা মসজিদের ছাদে উঠে। ওই সময় মসজিদের পাশ ঘেষে যাওয়া ১১ হাজার ভোল্টেজের বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে শিশু গুরুতর আহত হয়। একপর্যায়ে তারা নিচে পড়ে গেলে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে সুবর্ণচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করে।

চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  বিজয়ের ৫০ বছর

;