নারী মুক্তিযোদ্ধাদের গল্প

  বিজয়ের ৫০ বছর


স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশ স্বাধীনের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে খবর পৌঁছে দেয়া, চিকিৎসক ও সেবিকা হিসেবে কাজ করা ছাড়াও অস্ত্র হাতে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন নারীরা। কুষ্টিয়ার এমন নারী দুই বোনকে নিয়ে বার্তা২৪.কমের বিশেষ আয়োজন।

মুক্তিযুদ্ধে নারীর অংশগ্রহণ। সেবিকা হিসেবে চিকিৎসা দেওয়া আপন দুই বোন লুলু ই ফেরদৌস ও লুলু ই জান্নাত। তাদের সাথে কথা বলে প্রতিবেদন তৈরী করেছেন বার্তা২৪.কমের ষ্টাফ করেসপন্ডেন্ট, এসএম জামাল।

লুলু ই জান্নাত বলেন, আমার বয়স যখন ১৫ বছর ছিল। আমি তখন কুষ্টিয়া সরকারী কলেজে ফার্স্ট ইয়ারে পড়তাম। ভর্তি হওয়ার পর কিছুদিন পরে উত্তাল মার্চ ৭ মার্চের ভাষন শুনে আমরা শিহরিত হলাম।

লুলু ই ফেরদৌস

কিন্তু বাবা সরকারি চাকরি করতেন বলে আমাদের হাতে পতাকা বা ব্যানার হাতে করে রাস্তায় রাস্তায় স্বাধীন দেশ চাই, আইয়ুব খান হোটে যাও এমন স্লোগান দিয়ে রাস্তায় যাওয়াটা তেমন পচ্ছন্দ করতেন না। আমার বাবা এসব দৃষ্টিকটু মনে করতেন ।

আমার বাবা বলেন আমি সরকারি চাকরি করি কিন্তু এসবের কারণে যদি চাকরিটা চলে যায় তাহলে তো বিপদে পড়ে যাবো। যদি বা আমি এবং আমার বড় আপা উদ্বুদ্ধ হয়ে কিন্তু এগুলো করতাম। আপা  (লুলু ই ফেরদৌস) আমাকে বারবার বলছিলো এগুলো আমাদের অবশ্যই করতে হবে। আন্দোলন করতে হবে। স্বাধীন দেশ চাই। এজন্য যা যা করণীয় আমরা করবো ইনশাআল্লাহ।

৭ই মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষণ সারা দেশবাসীকে উদ্বুদ্ধ করে তুলেছিল। কৃষক শ্রমিক মজুর শিক্ষক-ছাত্র আপামর জনতা সবাই যেন এক কাতারে এসেছিল। আমাদের তারুণ্যদীপ্ত যে বয়সটা ছিল ১৫-১৬ বছরের তরুণী উদ্দীপ্ত সে সময় বঙ্গবন্ধুর ভাষণে আমরা সত্যিই উদ্দীপ্ত হয়ে যায়।

লুলু ই জান্নাত

কিন্তু তবে আমাদের এই বয়সে আব্বা আমাদের কমফর্টেবল করতেছিল না ।এরপরে ২৬ শে মার্চ কালরাত্রি আঁধার নেমে আসলো পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীদের তাণ্ডবের যখন আমরা শহরের মধ্যে আর থাকতে পারছিলাম না। সে সময় আমাদের লাহিনীপাড়া গ্রামে দাদার বাড়ীতে আমাদের সবাইকে নিয়ে গিয়েছিলেন আমার আব্বা। তখন আমরা শহরের কোর্টপাড়ায় ছিলাম।

কিন্তু লাহিনীপাড়া গ্রামে দাদাবাড়ীর দিকেও পাকসেনারা সেই  চলে গেল। তখন কিন্তু আব্বা বললো এখানেও তো থাকা নিরাপদ মনে করছি না। তখন আমার আব্বার এক আত্মীয় থাকতেন দৌলতপুরের বিলবোয়ালিয়া এলাকায়। তখন আমাদের নিয়ে আব্বা সেখানে গেলে আমাদের দেখভাল করার কয়দিন পর আমাদের শিকারপুর বর্ডার দিয়ে পার করেছিলেন তারা।

আব্বা ইনভাইটেড বেঙ্গল সরকারি চাকরি করতেন। আর চাকরি করার কারণে কলকাতার অনেক এলাকার চেনাজানা ছিলেন। উচ্চমাধ্যমিকে পড়ার সময়ই আমরা নার্সিং ইনস্টিটিউটে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলাম। সেই শিক্ষা কাজে লাগিয়ে কৃষ্ণনগরেরএকটি হাসপাতালে শরণার্থী ও আহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা দেওয়া শুরু করি আমরা দুই বোন মিলে।

যুদ্ধকালীন সময়ে আহত মুক্তিযোদ্ধা এমনকি ডায়রিয়া কলেরা রোগের সংখ্যা বেড়ে গেল তখন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ডাক্তার নার্স চিকিৎসা দেওয়ার জন্য সেসময় চিকিৎসক ছিল তারা স্বাস্থ্যখাতে সঠিকভাবে চিকিৎসা সেবা দিতে না পারায় অন্যদেরও এগিয়ে আসার জন্য উদ্বুদ্ধ করলেন।

তখন আব্বা আমাদের বললেন যে আমাদের তো কোন ছেলে নাই। তোমরা দুজন প্রাথমিক চিকিৎসা কাজে এগিয়ে আসো। দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কাজ করো ।

তখন আর কি করার আমাদের যেই সেবা স্বাস্থ্যসেবার প্রাথমিক কাজগুলো আমরা করতাম। কুষ্টিয়ার ডাক্তার কোরাইশী, ডাক্তার আলী আহসান, সহ নাম না জানা অনেক ডাক্তাররা । এছাড়াও সেখানে চিকিৎসাধীন মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ডাক্তার সাদ মোহাম্মদ ছিলেন, চট্টগ্রামের প্রদীপ কুমার সাহা সহ অনেকেই ছিলেন।

ডাক্তাররা যখন রোগী সামলাতে পারছিল না তখন আলাদা আমাদের জন্য ট্রেন্ড করে দেওয়া হলো। সেখানে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা কিংবা মুক্তিযোদ্ধা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত কলেরায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতাম।

সে সময়ে কলেরায় আক্রান্ত হয়ে লক্ষ লক্ষ রোগী মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। আমাদের নিজের চোখে দেখা লাশ ধরে ধরে একটার পর একটা করে ট্রাকের উপর ফেলছিল।কারণ লাশ সৎকারের ব্যবস্থা সেসময় উন্নত ছিল না।


লুলু ই ফেরদৌস বলেন, ‘খোলা মাঠে তাবুতে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা দেন। একদিন মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে এক মুক্তিযোদ্ধা আসেন। তার অবস্থা বেশ গুরুতর ছিল। মাথা দিয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। সেসময় তাড়াহুড়া করে সুচ আমার হাতের মধ্যে ঢুকে রক্তক্ষরণ শুরু হলে আমি আমার হাতের দিকে না তাকিতেতাকে বাচানোর চেষ্টা করেও বাচাতে পারিনি। আমার হাতের ওপরই মারা যান সেই যোদ্ধা। এভাবেই অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধাকে সেবা দিয়েছি। খাবার দিয়েছি। তাঁদের কষ্ট দেখলে মুখে ভাত তুলতে পারতাম না। সুস্থ হয়ে অনেকেই যুদ্ধে চলে যেতেন।’

ডিসেম্বরে দুই বোন খবর পান, দেশ স্বাধীন হয়েছে। সেদিন আনন্দে কেঁদে ফেলেছিলেন তারা। ভারতীয়দের মিষ্টিমুখ করিয়েছিলেন। ১৯৭২ সালের জানুয়ারিতে পরিবারসহ কুষ্টিয়ায় ফিরে আসেন তারা। আসার সময় ভারত সরকার তাঁদের কাজের স্বীকৃতিপত্র দেয়।

আমরা আজ আছি আগামীতে থাকবো না । আমাদের যে প্রজন্ম থাকবে তারা আমাদের দেশাটাকে কিভাবে রাখবে। সেজন্য এ সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের যেভাবে আমাদের ভালো রেখেছে আমাদের সন্তানদেরও যেন সেভাবে স্বযত্নে রাখে।

   

৫০ বছর আগে মহাকাশ থেকে তোলা পৃথিবীর ছবি আজও শ্রেষ্ঠ



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সালটা ১৯৬৮। বিশ্বব্যাপী মানুষ মেতে উঠেছিল বড়দিনের আনন্দে। তখনো জানতো না, বড়দিন উপলক্ষে তারা একটি বিশেষ উপহার পেতে চলেছে। পৃথিবী থেকে আমরা হরহামেশাই চাঁদ দেখি। অমাবস্যা-পূর্ণিমা, এমনকি পক্ষের মাঝামাঝি সময়ের বদৌলতে নানা দৃষ্টিকোণে নানা আকারের চাঁদ দেখতে পাই। তবে চাঁদ থেকে পৃথিবী দেখতে কেমন? এরকমটা হয়তো অনেকেই ভাবেন।

নাসার মহাকাশচারীরা অ্যাপোলো ৪ এ করে তখন চাঁদের চারপাশে টহল দিচ্ছে। সেখান থেকে তারা চাঁদের বাসকারীদের দৃষ্টিতে পৃথিবী কেমন হবে তার এক নমুনা জোগাড় করেন। ক্রিসমাসের কিছুদিন আগে ক্রুরা চাঁদকে প্রদক্ষিণ করার সময় ব্যারেন লুনার হরিজোন থেকে একটি ছবি তোলে। সেখানে সুদূর মহাকাশ থেকে পৃথিবীর একটি সুন্দর দৃশ্য ধারণ করা হয়। চমৎকার সেই রঙিন ছবিটি সবকিছু পরিবর্তন করতে চলেছিল।

ছবিটি তুলেছিলেন মার্কিন নভোচারী বিল অ্যান্ডার্স এবং জিম লাভেল। ছবিটি ধারণ করার পর মহাকাশ বিজ্ঞানীরা অবাক হয়ে যান। অর্ধ শতাব্দী পার হয়ে যাওয়ার পরও এটিকে প্রকৃতির সবচেয়ে আইকনিক ছবি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ, এটিই মহাকাশ থেকে তোলা প্রথম রঙিন এবং উচ্চ রেজুলেশনের ছবি।

১৯৭০ সালে পরিবেশ সচেতনতা এবং এই ব্যাপারে সক্রিয়তা বাড়ানোর উদ্দেশে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে পৃথিবী দিবস প্রচারিত হওয়ার কারণে ছবিটিকে বিশেষ কৃতিত্ব দেওয়া হয়।

যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ফটোগ্রাফিক সোসাইটির প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মাইকেল প্রিচার্ড ছবিটিকে নিখুঁত দাবি করেন। তিনি বলেন, এই ছবিটি পৃথিবীর এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেছিল, যা আগে কোনো ছবি করতে পারেনি। প্রকাণ্ড মহাবিশ্বে পৃথিবীর অস্তিত্ব কতটা ক্ষুদ্র গ্রহ, তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় ছবিটি।

১৯৬০ সালের পরই পৃথিবী নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে শুরু করে। ষাটের দশকের শেষভাগে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের মানুষ অনুধাবন করে পৃথিবীকে আজীবন একইভাবে ব্যবহার করা যাবে না। গ্রহের প্রতি আমাদের আরও অনুরাগী হতে হবে। সেই উদ্দেশে ১৯৬৯, ‘৭০ ও ‘৭১ সালে ‘ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থ’, মার্কিন প্রতিষ্ঠান ‘এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি’ এবং ‘গ্রিনপিস’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই ছবিটি প্রকাশের ১৮ মাস পর ২০ মিলিয়ন মার্কিন নাগরিক পৃথিবী রক্ষার আন্দোলনে রাস্তায় নামে।

পৃথিবী রক্ষা করার জন্য মানুষদের উৎসাহিত করার বেলায় ছবিটি অনেক বেশি প্রভাব ফেলে। এখনো অবদি মহাকাশ থেকে পৃথিবীর পাঠানো ছবিগুলোর মধ্যে ১৯৬৮ সালে বড়দিনের আগে তোলা সেই ছবিটিকে শ্রেষ্ঠ বিবেচনা করা হয়।

  বিজয়ের ৫০ বছর

;

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

  বিজয়ের ৫০ বছর

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

  বিজয়ের ৫০ বছর

;

আমার হাতের পাখা যেন তাদের আরাম দিচ্ছে!



মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

  • Font increase
  • Font Decrease

আবু বক্কর (৬২)। বয়সের ভারে অসুস্থ হয়ে তিনি এখন পাকা বিক্রেতা। প্রচণ্ড তাপদাহে মানুষ যখন ঠান্ডা বাতাসের প্রশান্তি খুঁজছে, তখন তিনি গ্রামে গ্রামে গিয়ে তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন।

আবু বক্কর বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্ত্রীসহ ছয় মেয়ে নিয়ে আমার সংসার। তবে মেয়েদের বিয়ে দিতে পেরেছি। কিন্তু বয়সের ভারে ঠিকই আমরা একা থেকে গেলাম। শেষ বয়সে গ্রামে গ্রামে তালপাতা পাখা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। শুধু সংসার না, এই টাকায় আমার পায়ের শিরার ব্যথার ওষুধও কিনতে হয়। একবেলা ওষুধ না খেলে চলতে পারি না।

এদিকে, পুরনো ব্যবসার ঋণের বোঝা আর অন্যদিকে অসুস্থ হয়ে ওষুধসহ সংসারের খরচ। শেষ বয়সে তালপাতার পাখাই আমার একমাত্র জীবনসঙ্গী বলেন আবু বক্কর।

তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন আবু বক্কর, ছবি- বার্তা২৪.কম

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার কলাগাছি গ্রামের কবিগানের অনুষ্ঠানে সরেজমিন দেখা যায়, একপাশে তালপাতার পাখা বিক্রি করতে ব্যস্ত ছোট্ট পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ। এই গরমে যখন তার ঘরে থাকার কথা, তখন সে নানা-নানীর সঙ্গে এসে তালপাতার পাখা বিক্রি করছে। কবিগানে বসে থাকা সব শ্রোতার কাছে গিয়ে বলছে, পাখা লাগবে, পাখা! কথা বলতে চাইলেও এ পাশ ওপাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে, ক্রেতার কাছে।

এক ফাঁকে তাকে কাছে পেয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, এই বয়সে পাখা বিক্রি করছো কেন! এ প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে মাহমুদুল্লাহ বলে, প্রচণ্ড গরমে স্কুল ছুটি। তাই, নানা-নানীর সঙ্গে চলে এসেছি মেলায় পাখা বিক্রি করতে। মানুষজন আমার কাছ থেকে যেন বেশি পাখা কেনে (ক্রয়), তাই আমি মেলায় তাদের সঙ্গে এসেছি।

অনেক উৎসাহের সঙ্গে সে বলে, গরমে আমার হাতের পাখায় যেন তাদের আরাম দিচ্ছে! মেলা হলে আমি সেখানে চলে যাই পাখা বিক্রি করতে। ঘোরাঘুরিও হয় আর টাকা ইনকামও হয়। টাকার জন্য বের হয়ে পড়েছি। আমরা পাখা বিক্রি করে পেট চালাই। নানা-নানী বুড়ো হয়ে গেছে। তাই, আমি সঙ্গে এসে তাদের কষ্টটাকে একটু ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।

যেখানে প্রচণ্ড তাপে মানুষজন নাজেহাল, সেখানে ছোট্ট মাহমুদুল্লাহ ছুটে চলেছে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পাখা বিক্রি করতে। ছোট্ট শিশু হলেও গরম যেন তার কাছে কিছু না, পেটের তাগিদে!

আরেক পাখা বিক্রেতা তালা উপজেলার হরিণখোলা গ্রামের বাসিন্দা ভদ্রকান্ত সরকার (৭০)। ১২-১৪ বছর ধরে এই পেশায় আছেন তিনি।

চলছে তালপাতার পাখার বিকিকিনি, ছবি- বার্তা২৪.কম

শেষ বয়সে পাখা কেন বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে ভদ্রকান্ত বলেন, চাল কিনে খেতে হয়। খুব কষ্টের সংসার! ছেলে-মেয়ে আছে। তারা তাদের মতো কাজ করে খায়। মা বাবার বয়স হয়ে গেলে ছেলে আর আমাদের থাকে না। আমরা বৃদ্ধ বয়সে কেমন আছি, সেটা জানার সুযোগ তাদের থাকে না। শেষজীবনটা এভাবে পাখা বিক্রি করে কাটিয়ে দেবো। কী আর করবো! কপালে যা আছে, শেষপর্যন্ত তাই হবে। কপালে ছিল, এমন বৃদ্ধ বয়সে গ্রামে গ্রামে পাখা বিক্রি করতে হবে!

  বিজয়ের ৫০ বছর

;