বছরজুড়ে রাজনীতির মাঠে ‘উত্তাপ’ ছড়ানোর চেষ্টায় বিএনপি

  সালতামামি



আকরাম হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ইস্যুতে বিদায়ী বছরের রাজনীতির ময়দানে উত্তাপ ছড়ানোর চেষ্টা করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি। তবে অন্যান্য বছরের মতোই ২০২১ সালেও আশা জাগিয়ে জোড়ালো কোনো আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি দলটি। উল্টো সরকারের নানামুখী চাপে কোনঠাসা হয়ে রয়েছে দলটি।

অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে বড় কর্মসূচি দিলেও বছর জুড়ে মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশ, দোয়া মাহফিল, জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা, স্থায়ী কমিটির সাপ্তাহিক বৈঠক, সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের অবস্থান জানান দিয়েছে। নেতাদের অনেকে মনে করেন, নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও ২০২১ সালে দলটি কিছুটা আন্দোলনমুখী হয়েছে।

অসুস্থ খালেদা জিয়া

২১ মাসেরও বেশি সময় সরকারের নির্বাহী আদেশে নানা শর্তসাপেক্ষে মুক্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বাসায় অবস্থানকালে ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার করোনা শনাক্ত হয়। ২৭ এপ্রিল হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। আক্রান্তের ২৭ দিন পর ৯ মে করোনা মুক্ত হন। শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে ১৯ জুন বাসায় ফেরেন সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী। বাসায় থেকে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ১২ অক্টোবর হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে এদিন রাতেই সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয় খালেদা জিয়াকে। টানা ২৬ দিন ওই হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ৭ নভেম্বর বাসায় ফেরেন তিনি। এর ৬ দিন পর ১৩ নভেম্বর আবারও রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

লিভার সিরোসিসসহ নানা রোগে আক্রান্ত বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল টিম। ক্রমশই তার শারীরিক অবস্থা জটিল হচ্ছে। এ রোগের চিকিৎসার জন্য এ মুহূর্তে যে প্রযুক্তি দরকার তা ভারতীয় উপমহাদেশে নেই। এসমস্ত চিকিৎসা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জার্মানিতে সম্ভব বলে জানিয়েছে মেডিকেল টিম এবং যত দ্রুত সম্ভব বিদেশে দেয়ার পরামর্শ দেন তারা।

খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে পরিবারের চিঠি

খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে সরকারের কাছে একাধিকবার আবেদন করেছে তার পরিবার। খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর এ আবেদন করেন। এপ্রিলের মাঝামাঝি একবার আবেদন করা হয়। সে আবেদনে সাড়া দেয়নি সরকার। খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে নভেম্বরের মাঝামাঝিতে আবারও চিঠি দেয়া হয়। সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত বিদেশে নেয়ার অনুমতি দেয়নি।

মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসা দাবিতে বিএনপির কর্মসূচি

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে একের পর এক কর্মসূচি পালন করছে দলটি। ২০ নভেম্বর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সমানে গণ-অনশন করে দলটি। গণ-অনশন থেকে ২২ নভেম্বর একই দাবিতে সারাদেশে মহানগর ও জেলায় সমাবেশের ঘোষণা দেন বিএনপি মহাসচিব। এসময় হরতাল দেয়ার দাবি জানান নেতাকর্মীরা। ২২ নভেম্বর ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ হয়। ২৪ নভেম্বর সারাদেশে জেলা প্রশাসন বরাবর স্মারকলিপি পেশ করে বিএনপি।

২৪ নভেম্বর ৮ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ২৫ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত এসব কর্মসূচি পালন করা হয়। ২৫ তারিখ যুবদল সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। ২৬ তারিখ সারাদেশে মসজিদে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তির জন্য দোয়া, ২৮ তারিখ সেচ্ছাসেবক দল সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি করে। ৩০ তারিখ বিভাগীয় শহরগুলোতে সমাবেশ, ২ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদলের মানববন্ধন, ৩ তারিখ কৃষকদল মৌন মিছিল। ২২ ডিসেম্বর থেকে জেলায় জেলায় সমাবেশ শুরু করছে বিএনপি। ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত একই দাবিতে ৩২ জেলায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এসব সমাবেশ বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকছেন।

ধারণা করা হচ্ছে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত সুচিকিৎসার দাবিতে কঠোর কর্মসূচিতে যাবে বিএনপি। দলটির তৃণমূল নেতাকর্মীরাও সিনিয়র নেতৃবৃন্দ কাছে বিভিন্ন সময় হরতালের মতো কর্মসূচির দাবি করেছে। তবে এখন পর্যন্ত কঠোর কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেয়নি মাঠের প্রধান বিরোধী দল।

নির্বাহী কমিটির সঙ্গে বিএনপির বৈঠক

সাড়ে তিন বছর পর সেপ্টেম্বরে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করে দলের হাইকমান্ড। ১৪,১৫,১৬ তারিখে বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদকসহ সম্পাদকমণ্ডলি এবং অঙ্গ সংগঠনের মোট ২৮৬ জন নেতা অংশ নেন। ২১,২২,২৩ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় দফায় মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠান হয়। জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা যারা বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নয় তারাও এ বৈঠকে উপস্থিত থাকেন। তিন দিনের সে সিরিজ বৈঠকে জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা সভাপতি মিলে মোট ৩৬৩ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। বিএনপির এ বৈঠক দেশের রাজনৈতিক অঙ্গে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করে।

বিএনপির কর্মসূচিতে হামলা

বরাবরের মত এবারও বিএনপির মিছিলসহ নানা কর্মসূচিতে হামলার ঘটনা ঘটে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের ‘বীর উত্তম’ খেতাব বাতিলের প্রতিবাদে ১৩ ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ চলাকালে পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এঘটনায় পুলিশের আট সদস্য আহত হয়। অন্যদিকে দেড় শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মী আহত হয়। ঘটনাস্থল থেকে ২০ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল ও লেখক মুশতাক আহমেদের কারাগারে মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে ডাকা ছাত্রদলের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় ২৮ ফেব্রুয়ারি। এতে ছাত্রদলের ৩৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়।

১৭ আগস্ট সকালে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটি প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দিতে গেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় বিএনপির নেতাকর্মীদের।

করোনাকালে রাজনীতি

সারাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে নেতা-কর্মী-সমর্থক-জনগণের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় রেখে ১ এপ্রিল ‘রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক’ কার্যক্রম স্থগিত করেছে বিএনপি। এসময় নিয়মিত ভার্চুয়াল আলোচনা ও নেতাকর্মীদের নিয়ে বৈঠক করে দলটি। সাধ্যমত ত্রাণ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার সামগ্রী বিতরণ করেছেন দলটি। করোনা মহামারীর প্রকোপ কমে আসলে ১২ সেপ্টেম্বর পুনরায় শুরু করে সাংগঠনিক কার্যক্রম।

কারণ দর্শানোর নোটিশ ও বহিষ্কার

১৭ এপ্রিল বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর ‘নিখোঁজ বা গুমে’র বিষয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। ২২ এপ্রিল বিতর্কিত মন্তব্যে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দেয় দল। ২৬ এপ্রিল জবাব দেন তিনি। মির্জা আব্বাসের ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হয় বিএনপি। বছরের শেষে এসে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ থেকে নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। ২৫ ডিসেম্বর তাকে অব্যাহতি দেয়ার পর খুলনা সদর ও সোনাডাঙ্গা থানার ১৬টি ওয়ার্ড ও অঙ্গসংগঠনের ৫৬১ নেতা-কর্মী পদত্যাগ করে।

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা

মেয়াদোত্তীর্ণ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এবং ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির শাখা কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে দলটি। ঢাকা দক্ষিণে আহ্বায়ক করা হয় আবদুস সালাম ও উত্তরে আহ্বায়ক হয়েছেন আমান উল্লাহ আমানকে। দক্ষিণে সদস্য সচিব করা হয়েছে রফিকুল আলম মজনু ও আমিনুল হককে উত্তরের। ২ আগস্ট বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এবং ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার উল্লেখিত কমিটি দুটি অনুমোদন করেছেন।

না ফেরার দেশে বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ মওদুদ আহমদে

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী মওদুদ আহমদ ১৬ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। এর আগে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী, উপ-প্রধানমন্ত্রী, উপ-রাষ্ট্রপতি, আইনমন্ত্রীসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন এই বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ।

ইউপি নির্বাচন বর্জন

স্থানীয় সরকারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি। ২৮ ফেব্রুয়ারি দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, স্থায়ী কমিটির সভায় সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিভিন্ন উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচন ও সব পৌরসভার নির্বাচনে সরকারের নগ্ন হস্তক্ষেপ এবং নির্বাচন কমিশনের সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে চরম ব্যর্থতার তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানান।

রাষ্ট্রপতির সংলাপ বর্জনের সিদ্ধান্ত

নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের উদ্দেশ্য রাষ্ট্রপতির সংলাপে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) দলের স্থায়ী কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয় বলে জানিয়েছেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, বিএনপি বিশ্বাস করে নির্বাচনকালীন সময়ে নিরপেক্ষ, নির্দলীয় সরকার ব্যতিরেকে সুষ্ঠু, অবাধ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কোনও নির্বাচন কমিশনই করতে পারবে না। রাষ্ট্রপতি নিজেই বলেছেন, তার কোনও ক্ষমতা নেই পরিবর্তন করার। সেই কারণে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ কোনও ইতিবাচক ফলাফল আনতে পারবে না। বিএনপি অর্থহীন কোনও সংলাপে অংশগ্রহণ করবে না।

বিদায়ী বছরে রাজনৈতিক মূল্যয়ন করতে যেয়ে বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসনে বিএনপি মনোনীত সাংসদ রুমিন ফারহানা বার্তা২৪.কমকে বলেন, বিদায়ী বছরে বিরোধী দলীয় রাজনীতির সাথে যারা যুক্ত তাদের কারও জন্যই খুব স্বস্তি ছিল না। আমাদের উপরে সরকারের নিপীড়নমূলক আচরণ অব্যাহত ছিল। যা ২০১৩-১৪ সালে শুরু হয়েছে তার ধারাবাহিকতা একুশেও ছিল।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত সুচিকিৎসার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে রাজপথে বিএনপি যে আন্দোলন করার কথা ছিল তা অব্যাহত রয়েছে। আইনের পথেও আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। একইসাথে ৪০১ ধারায় সরকারের কাছে আবেদন পত্রও জমা দেয়া হয়েছে। সরকার এখন এতটাই স্বৈরাতান্ত্রিক, এতটাই ফ্যাসিস্ট আচরণ করছে যে কোনো ব্যাপারে তাদের কর্ণপাত করা আলামত দেখতে পারছি না।

বিএনপির রাজনীতি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন প্রশ্ন করলে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বার্তা২৪.কম-কে বলেন, এসব হতাশার কথা বলে তো লাভ নেই। তাদের অনেক দূর যেতে হবে। তাদের ঘুম থেকে জাগতে হবে। তারা এখনো ঘুম থেকে জাগে নাই। খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলনের যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল সেই সুযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করেনি তারা। তাদের যদি ইচ্ছা থাকতো তাহলে গত বছরেই হাইকোর্ট ঘেরাও করা উচিত ছিল। সেটা তারা করে নাই। নাজিমুদ্দিন রোডের কারাগারে থাকা এবং গুলশানে থাকা একই কথা। বরং শেখ হাসিনাকে পলিটিক্যাল অ্যাডভান্টেজ দিয়েছে বিএনপি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বার্তা২৪.কমকে বলেন, বিগত দিনের বিএনপির রাজনীতি জনগণের পক্ষে ছিল, এখনো আছে, সামনেও থাকবে। গণতন্ত্রের পক্ষে, জনগণের ভোটাধিকারের পক্ষে, বাংলাদেশের মানুষের বাক স্বাধীনতার পক্ষে, আইনের শাসনের পক্ষে, স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনার পক্ষে বিএনপির রাজনীতি ছিল-আছে-থাকবে। যতদিন বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্রের অধিকার, ভোটাধিকার, সাংবিধানিক অধিকার ফিরে না পাবে ততদিন বিএনপি বাংলাদেশের মানুষের পাশে থাকবে। সমগ্র দেশের মানুষ খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে জেগেছে।

কঠোর কর্মসূচির প্রসঙ্গে বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য সারাদেশে বিএনপির জোড়ালো কর্মসূচি চলছে। কর্মসূচি একদিনও বাদ যাচ্ছে না। যখন যে কর্মসূচি প্রয়োজন হবে সে সিদ্ধান্ত দল নিবে।

   

বগুড়ায় জামায়াতের বিক্ষোভ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বগুড়া
বগুড়ায় জামায়াতের বিক্ষোভ

বগুড়ায় জামায়াতের বিক্ষোভ

  • Font increase
  • Font Decrease

কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বগুড়ায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী।

সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টায় শহরের নুরানী মোড় থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে চারমাথা এলাকায় গিয়ে শেষ হয়।

বগুড়া শহর জামায়াতের আমির আবিদুর রহমান সোহেলের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ মিছিলে শহর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী অধ্যাপক রফিকুল আলম, উপ-শহর থানা আমির আব্দুল হামিদ বেগসহ বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশগ্রহন করেন।

মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে অধ্যক্ষ আবিদুর রহমান সোহেল বলেন, সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি , জুলুম-নিপীড়নের ফলে গোটা জাতি আজ বিক্ষুব্ধ। দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে এক মুহুর্তও ক্ষমতায় দেখতে চায় না। তাই অবিলম্বে সরকার পদত্যাগ করে কেয়ারটেকার সরকারের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ইসলাম এবং দেশের জন্য ক্ষতিকর। সরকার বিনা কারণে জামায়াত নেতা ডা. শফিকুর রহমান, সেক্রেটারী জেনারেল মিয়া গোলাম পরোয়ারসহ জামায়াত-শিবিরের অসংখ্য নেতাকর্মীকে কারারুদ্ধ করে রেখেছে। অবিলম্বে আমিরে জামায়াতসহ সকল নেতাকর্মীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করা হয় সমাবেশ থেকে।

  সালতামামি

;

সিলেট বিএনপির ২ নেতা বহিষ্কার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দলীয় নেতাদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করায় সিলেটে দুই বিএনপি নেতাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাতে সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন ও সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

বহিষ্কৃতরা হলেন- মহানগরীর ৫ নং ওয়ার্ড বিএনপির ৪৯ নং নির্বাহী সদস্য সালেহ আহমদ খসরু এবং ১৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির ৪২ নং নির্বাহী সদস্য দিনার খান হাসু।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২১ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার ভৈরব থেকে শুরু হওয়া রোডমার্চের শেষ জনসভা ঐতিহাসিক আলিয়া মাদরাসা মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। ২০ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১১টায় রোডমার্চের দল নেতা ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব হাবিবুন্নবী খান সোহেল ঐতিহাসিক আলিয়া মাদরাসা মাঠ পরিদর্শনকালে জেলা ও মহানগর বিএনপির দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের মাঠ পরিদর্শন শেষে কোন কারণ ছাড়া দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দের সঙ্গে তারা অশোভন আচরণ করেন। যা দলীয় শৃঙ্খলার পরিপন্থী। এতে প্রতীয়মান হয় যে ২১ তারিখের আলিয়া মাদরাসা মাঠের জনসভার আয়োজনটি বিঘ্নিত করার উদ্দেশ্য ছিল তাদের।

এমন কার্যকলাপে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে তাদেরকে সকল পর্যায়ের পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

সেই সঙ্গে কেন তাদেরকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সুপারিশ কেন করা হবে না তা আগামী ৭ দিনের মধ্যে নিজেদের সপক্ষের বক্তব্য থাকলে নিম্ন স্বাক্ষরকারী মহানগর বিএনপির সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক বরাবরে প্রেরণ করার অনুরোধ করা হয়।

  সালতামামি

;

আজ কোথায় কখন কোন দলের সমাবেশ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক অঙ্গন। এমন অবস্থায় দেশের বৃহৎ দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি আজ ঢাকায় কর্মসূচির ডাক দিয়েছে। সবমিলিয়ে ঢাকা আজ সমাবেশের নগরী।

রাজধানীর চারটি স্থানে পৃথক সমাবেশ করবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তাদের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি। বিকেলে রাজধানীর উত্তরা, যাত্রাবাড়ী, ধোলাইখাল ও আমিনবাজারে এসব সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

বিএনপি জানিয়েছে, সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে পুরান ঢাকার সূত্রাপুরের ধোলাইখালে বেলা তিনটায় সমাবেশ করবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি। তাদের এ কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একই দাবিতে বেলা আড়াইটা থেকে আমিনবাজার চিশতি ফিলিং স্টেশন–সংলগ্ন এলাকায় সমাবেশ করবে ঢাকা জেলা বিএনপি।

অন্যদিকে বেলা দুইটায় রাজধানীর উত্তরার আজমপুরে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ করবে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ। এখানে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। আর যাত্রাবাড়ীর শহীদ ফারুক সরণিতে সমাবেশ করবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ।

  সালতামামি

;

'ওবায়দুল কাদের পারলে খালেদা জিয়া কেন সিঙ্গাপুর যেতে পারবে না'



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন বলেছেন, বেগম খালেদো জিয়া বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। যিনি বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের প্রাণের স্পন্দন। তিনি কখনো কারো সাথে আপোষ করেননি। সবাই তাকে দেশের গণতন্ত্রের মা হিসেবে চিহিৃত করেছে। ওয়ান ইলেভেনের সময় শেখ হাসিনা এরশাদের সঙ্গে লং ড্রাইভে গিয়েছিল। অথচ বলে বেড়ান তিনি নাকি আন্দোলন করেছেন। ওবায়দুল কাদের যদি প্রতি সপ্তাহে সিঙ্গাপুর যেতে পারে, বেগম খালেদা জিয়া কেন যেতে পারবে না। ম্যাডামের কিছু হলে সারা বাংলাদেশে আগুন জ্বলবে। সরকার বুঝতে পারছেন না? আপনারা বুঝবেন না। কারণ বিভিন্ন বাহিনী নিয়ে আছেন। আরে আন্দোলনের জোয়ারে এই বাহিনী এক মিনিটের মধ্যে কোথায় চলে যাবে টেরও পাবেন না। 

রোববার (২৪ সেপ্টম্বর) বিকেলে নগরীর কাজীর দেউরী নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে নুর আহম্মেদ সড়কে বিএন‌পি চেয়ারপার্সন বেগম খা‌লেদা জিয়ার মু‌ক্তির দা‌বি‌তে চট্টগ্রাম মহানগর বিএন‌পির কেন্দ্র ঘোষিত বি‌ক্ষোভ সমা‌বেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহবায়ক ইয়াছিন চৌধুরী লিটনের পরিচালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর। 

মীর নাছির বলেন, পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ আমাকে বলেছিল, আমি যখন ক্ষমতায় ছিলাম সব বাহিনীর প্রধানরা বলেছিল, আমার পাশে থাকবে। কিন্তু বিপদ যখন আসল, দেখি, আমি ছাড়া পাশে আর কেউ নেই। পুলিশ বাহিনীকে বলতে চাই, বেশি বাড়বাড়ি করবেন না। জোয়ার শুরু হলে কিছু করতে পারবেন না। আমাদের নেতাদের যেদিন নির্দেশ দিব সেদিন আপনাদের কোনো অস্ত্রই কাজে আসবে না। আমরা আন্দোলন করে এই পর্যায়ে এসেছি। আওয়ামী লীগ পালাবার পথ খুঁজে পাবে না। আওয়ামী লীগের সাথে কোন আপোষ নাই। বেগম খালেদা জিয়াকে যে অত্যাচার করেছে তাদেরকে ক্ষমা করা যায় না।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে মাহবু্বর রহমান শামীম বলেন, বেগম খালেদা জিয়া আজকে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তাকে পর্যাপ্ত চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না। চিকিৎসার অভাবে বেগম খালেদা জিয়ার যদি কিছু হয়, তাহলে এই সরকারের পরিণতি হবে ভয়াবহ। আওয়ামীলীগ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। এই আওয়ামী লীগকে দেশের মানুষ বিশ্বাস করে না। শেখ হাসিনা জনগণের শক্তিতে নয়, রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে বন্দুকের নলে জোর করে ক্ষমতায় টিকে আছে। তারা আবারো বিগত নির্বাচনের মত আরেকটি নির্বাচনের জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। কিন্তু শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে দেশে কোনো নির্বাচন হতে দেব না। সারা বিশ্ব আজকে বাংলাদেশের সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে। আগামী নির্বাচন হতে হবে নিরপক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। আগামী ৫ অক্টোবর কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ রোডমার্চ কর্মসূচিতে সরকার যদি বাধা দেয় তাহলে যেখানে বাধা, সেখানেই প্রতিরোধ করা হবে। 

সভাপতির বক্তব্যে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, খেলা ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। আওয়ামীলীগকে বিদায় নিতেই হবে। বোরখা যদি কিনে না নেন ওই নারায়ণগঞ্জের নেতার কাছ থেকে তাড়াতাড়ি কিনে ফেলুন। দেশত্যাগের জন্য গোপনে প্রস্তুতি নিন। জনগণ কিন্তু আপনাদের ক্ষমা করবে না। জনগণ প্রস্তুতি নিয়ে নিয়েছে। বেগম খালেদা জিয়ার আপোষহীন নেতৃত্বে স্বৈরাচারী এরশাদ বিদায় নিতে বাধ্য হয়েছিল। আজকে বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। চিকিৎসা পাওয়া তাঁর মৌলিক অধিকার। কিন্তু জটিল চিকিৎসার পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি বাংলাদেশে নেই। কো্নো সরকার যদি মানুষের মৌলিক অধিকার দিতে না পারে তাহলে তাঁর ক্ষমতায় থাকার কোনো প্রয়োজন থাকে না। কিন্তু এ সরকার বেহায়া নির্লজ্জ সরকার। এ সরকারের দিন শেষ হয়ে গেছে। চুরিচামারি করে আর ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করবেন না। বাংলাদেশের মানুষ বারবার রক্ত দিয়ে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে সরকারের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে একদফার আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারের পতন হবে। 

 

  সালতামামি

;