লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলায় চাঞ্চ্যলকর জোড়া খুনের মামলায় আমৃত্যু কারাদন্ডপ্রাপ্ত প্রধান আসামি ইব্রাহিম খলিলকে (৪৬) গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭ এর সদস্যরা।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৭ এর জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) তাপস কর্মকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি থানাধীন তকিরহাট এলাকায় থেকে আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ইব্রাহিম খলিল লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলার আবুল কাশেমের ছেলে।
র্যাব-৭ জানায়, ইব্রাহিম খলিল ফেনীর একটি ইটভাটায় মাঝি হিসেবে কাজ করতেন। ইটভাটায় একই গ্রামের বেলাল মাঝির ছেলে ইউসুফ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতো। কাজের সুবাধে বিভিন্ন প্রয়োজনে ইউসুফ প্রায়শই ইব্রাহিমের বাড়িতে যাতায়ত করতো। যাতায়তের এক পর্যায়ে ইব্রাহিমের স্ত্রী ভিকটিম রিনা বেগমের সাথে ইউসুফের অবৈধ সর্ম্পক গড়ে উঠে।
২০১৭ সালে মে মাসের শেষের দিকে ইউসুফ ইটের ভাটার কাজ ছেড়ে দিয়ে এলাকায় এসে দিন মজুর হিসেবে কাজ করতে থাকেন। একই বছরের ৩ জুন সন্ধ্যায় ইব্রাহিম খলিল ফেনী থেকে বাড়িতে আসেন। এসে তার স্ত্রী ভিকটিম রিনা বেগম ও ভিকটিম ইউসুফকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে উত্তেজিত হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে ইব্রাহিম ঘরে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে দু’জনকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন।
পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থল থেকে তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে ৬ জুন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভিকটিম ইউসুফ এবং রিনা বেগম চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যবরণ করেন।
এ ঘটনায় নিহত ইউসুফের স্ত্রী বাদী হয়ে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর আসামি ইব্রাহিক খলিল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপনে চলে যায়। পরবর্তীতে পুলিশ প্রতিবদেনের ভিত্তিতে বিজ্ঞ আদালত দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে আসামীর অনুপস্থিতিতে আমৃত্যু সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।
র্যাব-৭ এর জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) তাপস কর্মকার বলেন, ‘আমৃত্যু সশ্রম কারাদন্ডের সাজাপ্রাপ্ত আসামি ইব্রাহিম খলিলকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু করে র্যাব। একপর্যায়ে ফটিকছড়ি তকিরহাট থেকে আত্নগোপন থাকা ইব্রাহিমকে গ্রেফতার করা হয়। ইব্রাহিম স্বীকার করেন তিনি জোড়া খুন মামলায় আমৃত্যু সশ্রম কারাদন্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে অতিরিক্ত ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি।
গ্রেফতারকৃত আসামি সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান এই র্যাব কর্মকর্তা।