জাবি সিনেটে ভিসিপন্থীদের ভরাডুবি, আস্থার সংকটে শিক্ষকদের একাংশ



জাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
জাবি উপাচার্য ফারজানা ইসলাম, ছবি: সংগৃহীত

জাবি উপাচার্য ফারজানা ইসলাম, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অধ্যক্ষ ক্যাটাগরিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) একাডেমিক কাউন্সিল কর্তৃক মনোনীত সিনেটে পাঁচটি ও সিন্ডিকেটে দুটি পদের নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে ভিসিপন্থী শিক্ষকদের জোট বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের। সিনেটে পাঁচটি পদের মধ্যে চারটি পদে নির্বাচিত হয়েছেন ভিসি বিরোধী জোট 'সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ'র মনোনীত প্রার্থীরা। অন্যদিকে সিন্ডিকেটের দুটি পদের মধ্যে একটি করে পদে নির্বাচিত হয়েছেন উভয় জোট মনোনীত প্রার্থী।

গত সোমবার (১৭ জুন) একডেমিক কাউন্সিলের ১৩৫ তম সভার ১৬ ও ১৭ নং আলোচ্য সূচির কার্যক্রম হিসেবে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। মঙ্গলবার (১৮ জুন) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডেকেট সভায় নির্বাচনের মাধ্যমে মনোনীত সদস্যদের স্ব স্ব পর্ষদে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ।

তবে এ নির্বাচন নিয়ে ক্যাম্পাসে আলোচনার ঝড় উঠেছে। অধিকাংশ আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা ভিসির সঙ্গে একজোট হওয়ার পরও ভিসিপন্থীদের ভরাডুবি শিক্ষক রাজনীতিতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। অনেক শিক্ষকদের ধারণা- আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের একটি গ্রুপ ভিসিকে সমর্থন দিলেও ভোট দেয়নি। অনেক ভিসিপন্থী শিক্ষক সরাসরি দায়ী করেছেন তাদেরই একটি পক্ষকে।

ফলে নির্বাচনে পরাজয়ের পর উপাচার্যের আস্থার সংকটে পড়তে পারেন ভিসিপন্থী শিক্ষকদের উক্ত অংশ। এ অংশের অনেক শিক্ষক পূর্বে ভিসি বিরোধী জোট ‘সম্মিলিত শিক্ষক সমাজে’র নেতৃত্ব স্থানীয় পদে আসীন ছিলেন। এ অংশের অন্যতম প্রধান ও ‘সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ’র আহ্বায়ক ছিলেন অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদার। গত এপ্রিল মাসে তিনি ভিসি বিরোধী শিক্ষকদের বিরাট একটি অংশ নিয়ে ভিসিপন্থী শিক্ষকদের জোটে যোগদান করেন।

ভিসিপন্থী অনেক শিক্ষকের দাবি, দলবদল করে সদ্য ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ’ এ যোগদান করা এ সকল শিক্ষকেরা তাদের পূর্বের দলের সাথে সখ্যতা বজায় রেখে চলেছেন।

তাদের দাবি দল পরিবর্তন করা ওই গ্রুপের নেতা অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদার ও তার অনুসারী শিক্ষকদের অনেকে তাদের পূর্বের দল ‘সম্মিলিত শিক্ষক সমাজে’র মনোনীত প্রার্থীদেরকে সমর্থন দিয়েছেন বলেই আজ এই ভরাডুবি। ভিসিপন্থী শিক্ষকদের একীভূত হওয়ার পর প্রথম নির্বাচনে আবারও ভিসিপন্থীদের ভরাডুবি হয়েছে। এ নির্বাচন ভিসিপন্থী শিক্ষক রাজনীতিতে ‘সন্দেহের কাদা’ ছোড়াছুড়ির আলোচনা শুরু হয়েছে।

এ বিষয়ে ভিসিপন্থী শিক্ষক অধ্যাপক আলী আজম তালুকদার বলেন, 'আমরা যারা আগে থেকে উপাচার্যের সঙ্গে ছিলাম তাদের সঙ্গে সদ্য যোগ দেওয়া শিক্ষকদের মধ্যে বিশ্বাসের ঘাটতি অবশ্যই রয়েছে। এই ঘাটতির কারণেই হয়ত নির্বাচনে আমাদের ভরাডুবি হয়েছে। সুতরাং এ বিষয়ে উপাচার্য যদি এখন থেকে সচেতন না হন তাহলে অদূর ভবিষ্যতে আরও বেশি ক্ষতির মুখে পড়তে হতে পারে।'

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দল পরিবর্তন করা ভিসিপন্থী শিক্ষক অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদার বলেন, 'যে সব শিক্ষকেরা এ ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন তারা আসলে নিজেদের দুরবস্থা ঢাকতে চাচ্ছেন। আমাদের মধ্যে বিশ্বাসের কোন ঘাটতি নেই।'

এদিকে সম্মিলিত শিক্ষক সমাজের সদস্য অধ্যাপক নুরুল ইসলাম বলেন, 'যেসকল শিক্ষক আমাদের সাথে প্রতারণা করে উপাচার্যের দলে যোগ দিয়েছেন তারা যে উপাচার্যের সঙ্গে প্রতারণা করবেন না তার কোন নিশ্চয়তা নেই। তাদের প্রতারণার ফল উপাচার্য এখন নিজেই প্রত্যক্ষ করেছেন।'

এর আগে একাডেমিক কাউন্সিল, সিনেট ও সিন্ডিকেট নির্বাচনের দাবিতে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের একটি অংশ বিএনপি ও বামপন্থী শিক্ষকদের নিয়ে আন্দোলন শুরু করে। এ বছরের জানুয়ারিতে শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে ভিসিপন্থীদের ভরাডুবি হয়। বিরোধীদের আন্দোলন আরও তীব্র হলে এপ্রিল মাসে সরকারের চাপে আন্দোলন ছেড়ে আওয়ামীপন্থী অধিকাংশ শিক্ষক ভিসিকে সমর্থন দেন।

তবে ভিসি বিরোধী ‘সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ’ এর নেতারা বলছেন, উপাচার্যের ‘অনৈতিক ও নানা অনিয়মের’ প্রতিবাদে সচেতন শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে তাদের সঠিক রায় দিয়েছেন। নির্বাচনে জয় লাভ করার পর সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। একই সাথে উপাচার্যকে স্বৈরাচারিতা পরিহার করে গণতান্ত্রিক উপায়ে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করতে আহ্বান জানান।

ভিসি বিরোধী জোটের সদস্য সচিব অধ্যাপক জামাল উদ্দিন রুনু বলেন, 'আমাদের জোট বরাবরই বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে আসছে। এই নির্বাচনে বিজয় আমাদের সামনের দিনগুলোতে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকতে প্রেরণা যোগাবে।'

এদিকে ভিসি বিরোধী জোট তেকে সিন্ডিকেট সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন অধ্যাপক নেহাল আহমেদ (ঢাকা কলেজ)। সিনেটর হয়েছেন অধ্যাপক বেদৌরা বিন্তে হাবীব (নারায়ণগঞ্জ সরকারী মহিলা কলেজ), অধ্যাপক মো. ইসমাইল হোসেন (সরকারি তেলিগাতী কলেজ, নেত্রকোনা), অধ্যাপক মো. রফিকুল ইসলাম (টঙ্গী সরকারি কলেজ, গাজীপুর) ও অধ্যাপক গোলসান আরা বেগম (আর.এস. আইডিয়াল কলেজ, কিশোরগঞ্জ)।

অন্যদিকে নির্বাচনে ভিসিপন্থীদের ব্যানার থেকে সিন্ডেকেট সদস্য হয়েছেন অধ্যক্ষ শেখ জুলহাস উদ্দীন (সিদ্ধেশ্বরী কলেজ, ঢাকা), এছাড়া সিনেটর হয়েছেন অধ্যক্ষ আনিসুর রহমান (আবদুর রউফ কলেজ, মানিকগঞ্জ)।

   

ঢাবিতে বিবিএ পড়াকালেই সিএ ভর্তির সুযোগ



ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিবিএ পড়াকালেই ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস এ ভর্তির সুযোগ পাবে। এ ছাড়াও, সিএ পড়ার ক্ষেত্রে এই বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য ৩টি কোর্স মওকুফ করা হবে।

রোববার (১৯ মে) বাংলাদেশে সিএ শিক্ষা ও গবেষণার প্রসার এবং এবিষয়ে দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টির লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগ এবং দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি)-এর মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ এবং আইসিএবি'র প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ ফোরকান উদ্দিন এফসিএ নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এই সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, এ সমঝোতা স্মারকের আওতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের শিক্ষার্থীরা এসব সুবিধা পাবেন।

বিশ্ববিদ্যালয় ব্যাংকিং এন্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. হাসিনা শেখ, আইসিএবি'র সিইও শুভাশিস বোস এফসিএ, ভাইস-প্রেসিডেন্ট এমবিএম লুৎফুল হাদী এফসিএ, ভাইস- প্রেসিডেন্ট মারিয়া হাওলাদার এফসিএ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যাংকিং এন্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের বিবিএ প্রোগ্রামের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. শহিদুল ইসলাম অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

;

উপাচার্য-শিক্ষকদের দ্বন্দ্বে অর্ধমাস অচল কুবি, শঙ্কিত শিক্ষার্থীরা



অনন মজুমদার, কুবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
উপাচার্য-শিক্ষক সমিতি দ্বন্দ্বে অর্ধমাস অচল কুবি

উপাচার্য-শিক্ষক সমিতি দ্বন্দ্বে অর্ধমাস অচল কুবি

  • Font increase
  • Font Decrease

উপাচার্য ও শিক্ষক সমিতির মধ্যকার দ্বন্দ্বে ১৫ দিনের বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) সকল অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম। গত ২৯ এপ্রিলে শিক্ষক সমিতির অনির্দিষ্টকালের জন্য সকল ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন এবং ৩০ এপ্রিল সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণার পর এখন পর্যন্ত স্থগিত হয়েছে সাতটি বিভাগের চূড়ান্ত পরীক্ষার প্রস্তাবিত রুটিন প্রকাশ এবং পাঁচটি বিভাগের চূড়ান্ত পরীক্ষা।

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সূত্রে জানা যায়, গত ২৯ এপ্রিল থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ হওয়ার পর থেকে অর্থনীতি বিভাগ, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন বিভাগ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ এবং মার্কেটিং বিভাগের আটটি পরীক্ষা স্থগিত হয়েছে। যে সাতটি বিভাগের চূড়ান্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত করার লক্ষে রুটিন হাতে এসেছিল, সেগুলোও ইতোমধ্যেই শুরু হওয়ার কথা ছিল।

এদিকে অনির্দিষ্টকালের ক্লাস-পরীক্ষা ও হল বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে অনেক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের হলেই থেকে যায়। কেউ কেউ আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া বাসে করে ফিরে যান বাড়ি। দফায় দফায় সাধারণ শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা জানান, উপাচার্য - শিক্ষকদের দ্বন্দ্বে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে না। তারা চান, দ্রুত সময়ের মধ্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম ফিরে আসুক।

বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী তাওহীদ হোসেন সানি বলেন, ‘করোনা মহামারির কারণে আমাদের শিক্ষা জীবন অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তার উপর শিক্ষকদের ক্লাস পরীক্ষা বয়কটের সিদ্ধান্ত আর এরপর প্রশাসনের অনির্দিষ্টকালের বন্ধ যেন ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’। ঈদের পর আমাদের স্নাতকোত্তর ১ম সেমিস্টার পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা, কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে আমাদের ইনকোর্সই শেষ হয়নি। কবে নাগাদ সবকিছু স্বাভাবিক হবে, এসবের কিছুই জানি না। আমরা খুবই হতাশ। শিক্ষকদের এই দ্বন্দ্বে আমরা সাত হাজার শিক্ষার্থী কেন ভুক্তভোগী হবো?'

বিশ্ববিদ্যালয়টিতে এমন ঘটনার সূত্রপাত হয় গত ১৯ ফেব্রুয়ারি কুবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচনের দিনই। ঐদিন বিকালে উপাচার্যকে ঘেরাও করে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন তারা। এছাড়া উপাচার্যকে ‘নব্য আলী জিন্নাহ’ বলেন সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান৷ ৬ মার্চ উপাচার্যকে সবার সামনে পদত্যাগ করতে বলেন ও ‘ডাস্টবিন’ বলেও সম্বোধন করেন।

গত ১৩ মার্চ শিক্ষক সমিতি সাত দফা দাবি জানিয়ে কর্মসূচি শুরু করে। এরপর ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়ার পর ২৫ এপ্রিল উপাচার্য, ট্রেজারার ও প্রক্টরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তাদের কার্যালয়ে তালা দেওয়া হয়। ২৮ এপ্রিল দুপুরে উপাচার্য প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশের সময় উপাচার্য, শিক্ষক সমিতি ও শাখা ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীদের মধ্যে ত্রিমুখী ধাক্কাধাক্কির পর শিক্ষক সমিতি তাদের সাত দফা দাবি থেকে সরে এসে উপাচার্য ও ট্রেজারারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলন কর্মসূচি শুরু করেন। এরপর ২৯ এপ্রিল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরেরদিনই সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক, প্রশাসনিক কার্যক্রম ও হলসমূহ বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

২৮ এপ্রিলের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা করেছে কুবি শিক্ষক সমিতি ও প্রশাসন৷ শিক্ষক সমিতি উপাচার্য, ট্রেজারারসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে এবং প্রশাসন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ শিক্ষক সমিতির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানায় অভিযোগ জানায়।

এদিকে কুবি শিক্ষক সমিতির সাত দফা দাবির পক্ষে সমর্থন জানিয়ে বিভিন্ন প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন ১৯ জন শিক্ষক। তবে বর্তমান এই অচলাবস্থা নিরসনে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি উপাচার্য কিংবা শিক্ষক সমিতিকে। বরং সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অমান্য করেছে কুবি শিক্ষক সমিতি। ২৪ এপ্রিল ৯২তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় শিক্ষক সমিতির দাবিগুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে এবং সিন্ডিকেট থেকে চারটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সিদ্ধান্ত চারটি হলো- বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য এবং কোষাধ্যক্ষ শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি অবিহিত করে দিক নির্দেশনা চাইবে। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি উপাচার্য দফতরে হওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত তদন্তের জন্য চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়, আগামী ১৬ মে অধ্যাপক গ্রেড-১ ও অধ্যাপক গ্রেড-২ পর্যায়ে উন্নীতকরণের জন্য সভা আহ্বান করা হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য প্রফেসর ড. সাদেকা হালিমকে শিক্ষক সমিতির দাবিগুলো নিয়ে শিক্ষক সমিতির সাথে আলোচনা করে দাবিসমূহ নিষ্পত্তির জন্য দায়িত্ব প্রদান করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তবে সিন্ডিকেটের চার সিদ্ধান্তকে উপাচার্যের 'সমস্যা সমাধানের দৃশ্যমান উদ্যোগ নয়' দাবি করে শিক্ষক সমিতির সভাপতি এবং তারা তাদের কর্মসূচি চলমান থাকবে বলে জানায়।

বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে শিক্ষক সমিতি সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, ‘আমরা শিক্ষকদের উপর যে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছিলো তার প্রতিবাদে আমরা ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু উপাচার্য সে সমস্যার সমাধান না করে যে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন আমরা শিক্ষক সমিতি সেটার সাথে একমত নই। আমরা চাই দ্রুত ভিসির অপসারণ হোক এবং এই সমস্যার সমাধান হোক। আমরা শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হোক চাই না। পাশাপাশি, আমরা চাই শিক্ষার্থীরা যথাসময়ে ক্লাস পরীক্ষা দিতে পারুক।’

সার্বিক বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, ‘সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তে বিশ্ববিদ্যালয় ও হল বন্ধ করার আগেই ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে আসছিল শিক্ষক সমিতি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি বিবেচনায় সিন্ডিকেটের সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়- ক্যাম্পাস ও হল বন্ধের। আশা করছি খুব দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হবে।’

;

রাবিতে শিক্ষার্থীর বিছানাপত্র নামিয়ে দিলো ছাত্রলীগ



রাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আবাসিক হল থেকে এক শিক্ষার্থীর বিছানাপত্র নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে।

শনিবার (১৮ মে) দিনগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৪০২ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে রোববার (১৯ মে) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার’ নামে ফেসবুকের একটি গ্রুপে ঘটনাটি বিবরণ জানিয়ে পোস্ট করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম মো. কুদ্দুস আলী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। অন্যদিকে, অভিযুক্তরা হলেন- বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মো. ফজলে রাব্বি ও তার অন্তত ৮/১০ জন অনুসারী। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবের অনুসারী।

ফেসবুক পোস্টে ভুক্তভোগী কুদ্দুস আলী উল্লেখ করেন, তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের একজন অনাবাসিক ছাত্র। বিভাগের বড় ভাইয়ের নামে বরাদ্দ করা ৪০২ নম্বর কক্ষে তিনি অবস্থান করছিলেন।

তিনি আবাসিক হওয়ার জন্য হলের প্রাধ্যক্ষের কাছে আবেদন করেন। প্রাধ্যক্ষ আবেদন গ্রহণ করে তাকে ওই সিটে থাকতে বলেন। আগামী মাসে বিভাগের ওই বড় ভাই ক্যাম্পাসে এলে তার সিট বাতিল করলে তিনি ওই সিটে স্থলাভিষিক্ত হবেন।

এরই মধ্যে শনিবার দিনগত রাতে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী এসে তাকে জোর করে সিট থেকে নামিয়ে দিয়ে অন্য একজনকে উঠিয়ে দেন।

জানতে চাইলে ভুক্তভোগী কুদ্দুস আলী বলেন, আমি ফেসবুক পোস্টটি ডিলিট করে দিয়েছি। বিভাগের শিক্ষকেরা এই ঘটনা নিয়ে কথা বলতে নিষেধ করেছেন। আমাকে আশ্বস্ত করা হয়েছে যে, এই ব্যাপারে দ্রুতই সমাধান করা হবে।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা ফজলে রাব্বি বলেন, কুদ্দুস আলী যে সিটে উঠতে চেয়েছিল, সেই সিটে সে-সহ আরো একজন থাকতো। তারা আমার কাছে সমাধান চাইতে এলে আমি তাদের বলি, এ ব্যাপারে হল প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেবে। আমাদের এই ব্যাপারে কোনো হস্তক্ষেপের অধিকার নেই। এরপর তারা দুইজনই চলে যায়।

বিছানাপত্র নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে রাব্বি বলেন, এর সঙ্গে ছাত্রলীগ বা আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শায়খুল ইসলাম মামুন জিয়াদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোনে এ বিষয়ে কিছু বলবেন না জানিয়ে বলেন, আমি এই ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে তারপর কথা বলবো। আর ফোনে আমি কোনো কথা বলবো না। দেখা করার জন্য সময় চাইলে তিনি ফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

সিট থেকে নামিয়ে দেওয়ার বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন, আমি এই বিষয়ে অবগত নই। দ্রুত এই বিষয়ে খোঁজ নিয়ে সিদ্ধান্তে আসা হবে।

;

‘বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন' পাচ্ছেন জাবির ২ অধ্যাপক



জাবি করেসপন্ডেট, বার্তা ২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কাজে নিয়োজিত বন্যপ্রাণী সংরক্ষণবাদী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জাতীয়ভাবে উৎসাহিত করার লক্ষে বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত ‘বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন' -এর জন্য চূড়ান্তভাবে মনোনীত হয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুল আজিজ ও অধ্যাপক ড. মো. কামরুল হাসান৷

গত ১৩ মে (সোমবার) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত প্রজ্ঞাপন থেকে জাবির দুই অধ্যাপকের মনোনয়ন প্রাপ্তির তথ্য জানা যায়৷ এর মধ্যে বন্যপ্রাণী বিষয়ক শিক্ষা ও গবেষণা ক্যাটাগরিতে ‘বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন ২০২৩’ এর জন্য প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুল আজিজকে এবং 'বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন ২০২৪’ এর জন্য একই ক্যাটাগরিতে অধ্যাপক ড. মো. কামরুল হাসানকে চূড়ান্তভাবে মনোনীত করা হয়৷

রোববার (১৯ মে) এক অভিনন্দন বার্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নূরুল আলম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন ২০২৩’ এর জন্য ড. মোহাম্মদ আবদুল আজিজ ও ‘বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন ২০২৪’ এর জন্য অধ্যাপক ড. মো. কামরুল হাসান মনোনীত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আনন্দিত। এ পদক পরিবেশ বিষয়ে তাদের গবেষণা ও উদ্ভাবনে নিরলস পরিশ্রমের স্বীকৃতি। এতে বিশ্ববিদ্যালয় সুনাম ও গৌরব বৃদ্ধি পেয়েছে।

উপাচার্য তার অভিনন্দন বার্তায় ড. মোহাম্মদ আবদুল আজিজ ও অধ্যাপক ড. মো. কামরুল হাসানের অব্যাহত সাফল্য কামনা করেন৷

উল্লেখ্য, সুন্দরবনের বাঘ ও প্রাণ প্রকৃতি গবেষণার মধ্য দিয়ে ২০০৯ সালে ড. মোহাম্মদ আবদুল আজিজের গবেষণার সূত্রপাত। সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা নির্ণয়সহ বাঘের জিনভিত্তিক নানা রহস্য উন্মোচন ছিল তার গবেষণার বিষয়। গবেষণার জন্য ২০১৮ সালে ডারেল ট্রাস্ট ফর কনজারভেশন বায়োলজি পুরস্কার পান। সুন্দরবনের বাঘের ওপর তার প্রকাশিত বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধগুলো জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রশংসিত হয়েছে। ২০১৯ সালে জাতীয় বাঘ শুমারির তথ্য বিশ্লেষণে তিনি মুখ্য ভূমিকা পালন করেন।

ড. কামরুল হাসান একজন নিবেদিতপ্রাণ বন্যপ্রাণী গবেষক ও শিক্ষক। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত তার শতাধিক গবেষণা প্রবন্ধ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষণা সাময়িকীতে (Journal) প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশের বন ও বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত ৭টি বইয়ের লেখক/ সহলেখক৷ বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী তালিকায় ১৪টি প্রজাতি নতুন (New record) হিসেবে যোগ করেছেন৷

প্রসঙ্গত, ‘বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন’ এর প্রতিটি শ্রেণিতে পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ২ ভরি ওজনের স্বর্ণের বাজারমূল্যের সমপরিমাণ নগদ অর্থ ও ৫০ হাজার টাকার অ্যাকাউন্ট পে-ই চেক এবং সনদপত্র বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জুনে অনুষ্ঠাতব্য বৃক্ষমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে দেওয়া হবে।

;