ইবিতে চার দশকেও শক্তিশালী হয়নি ইন্টারনেট বিতরণ ব্যবস্থা
বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মেজবাহ হাসান জিয়াউর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। ইন্টারনেট থেকে মেজবাহ প্রায়ই একাডেমিক পড়াশোনার জন্য বিভিন্ন রিসোর্স ডাউনলোড করেন। কিন্তু বিগত এক মাস যাবত হলটির ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছে মেজবাহ। তার মতো বিপাকে পড়েছেন হলটির আবাসিক শিক্ষার্থীরা।
সম্প্রতি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আবাসিক হলগুলোর শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট সমস্যা প্রধান সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে। চার দশকেও বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ইন্টারনেট বিতরণ ব্যবস্থা শক্তিশালী করা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮টি আবাসিক হলে ৩ হাজার ৫৯৪ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা রয়েছে। এসব শিক্ষার্থীরা পাচ্ছেনা প্রয়োজনীয় ইন্টারনেট সেবা। শিক্ষার্থীদের একাডেমীক রিসোর্সসহ প্রয়োজনীয় কিছু ডাউনলোড করার জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় শুধু ইন্টারনেট সেবা খাতে বছরে ৪৮ লাখ টাকা খরচ করে। বাংলাদেশ রিসার্স অ্যান্ড এডুকেশন নেটওয়ার্কের (বিডিরেন) মাধ্যমে ১০০০ এমবিপিএস ইন্টারনেট সেবার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে মাসে দিতে হয় ৪ লাখ টাকা। ভর্তির সময় ইন্টারনেট বাবদ শিক্ষার্থীদের গুনতে হয় ২৪০ টাকা। আবার হল প্রশাসন প্রতি বছর ইন্টারনেট বাবদ নেয় ৮০ টাকা।
কিন্তু এত টাকা ব্যয়েও মানসম্মত সেবা পাচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা। জনবল সংকট ও দুর্বল বিতরণ ব্যবস্থার কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। মাঝে মাঝেই ইন্টারনেট থাকে না। আবার যখন থাকছে তখন বাফারিং করে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ব্রাউজিং করতে সমস্যা হয়। বার বার জানানোর পরও আশ্বাস দেওয়া পর্যন্তই সীমাবদ্ধ। ফলে ইন্টারনেট থেকে তথ্য সংগ্রহের জন্য বাড়তি অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
অন্যদিকে গত ৩০ জুলাই বিদ্যুৎ-জ্বালানী সাশ্রয়ে প্রতি সোমবার অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার ঘোষণা দেয় প্রশাসন। এতে নতুন করে অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে হয় শিক্ষার্থীদের। কিন্তু বেহাল ইন্টারনেটর কারণে শিক্ষার্থীদের অর্থ খরচ করে কিনতে হচ্ছে ইন্টারনেট ডাটা প্যাক।
সাদ্দাম হোসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী হাদিউজ্জামান বলেন, ইন্টারনেট সমস্যার কারণে সময়তো অনেক কাজ করতে পারি না। ব্রাউজিং করাটা দুঃসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান সায়লা বলেন, ইন্টারনেট নামে আছে। কিন্তু এতে আমাদের তেমন কোনো কাজ হয়না। ইন্টারনেট সমস্যার জন্য আমাদের বাড়তি ফি গুনতে হয়।
এ বিষয়ে প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা বলেন, হলগুলোতে ইন্টারনেট ব্যবস্থা উন্নতি করার জন্য প্রশাসন একটা কমিটি করে দিয়েছে। বিতরণ ব্যবস্থা উন্নতির জন্য যা প্রয়োজন তাই করা হবে।
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. আহসান-উল-আম্বিয়া বলেন, হলগুলোতে যে যার মত ইন্টারনেট কানেকশন নিচ্ছে। হলে টেকনিক্যাল হ্যান্ড ব্যবহার না করার কারণে ইন্টারনেট বিতরণ ব্যবস্থার ত্রুটি ঘটেছে। ব্লকে হাব দেওয়ার জন্য যেসব মালামাল লাগবে তার একটা তালিকা আইসিটি সেল হল প্রভোস্টদের দিয়ে দিবে। সেই অনুযায়ী মালামাল সরবরাহ করলে, আমরা বিতরণ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে পারবে।