আতঙ্ক নয়, করোনায় করণীয়

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস


ফাতিমা তুজ জোহরা, নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত ৪৯ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৯ জন সুস্থ হয়েছেন গেছেন। করোনাভাইরাস নিয়ে সতর্কতামূলক তথ্যের অভাবে ব্যক্তি সচেতনতা নিয়ে জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

গবেষক ও চিকিৎসকরা বলছেন, আতঙ্ক নয়, করোনা প্রতিরোধে প্রয়োজন নিজের করণীয় সম্পর্কে জানা। তথ্যের অভাব ও ভুল সংবাদ প্রচারকে এ আতঙ্ক সৃষ্টির অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। মানসিক চিকিৎসকরা বলছেন, এ আতঙ্ক নিজের ও পরিবারের জন্য ক্ষতিকর।

দেশের শহর ও গ্রামে বসবাসরত মানুষের মধ্যে ভুল তথ্য, গুজব মারাত্মক ক্ষতিকর। যা মানুষের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। যা মানুষের মনে ভীতি ও উৎকণ্ঠা বাড়িয়ে দেয় এবং হজম শক্তি ও রোগপ্রতিরোধের জন্য ক্ষতিকর।

মনস্তাত্ত্বিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আতঙ্কের তিনটি ধাপ আছে। এর মধ্যে প্রাথমিক ধাপ ছাড়িয়ে যাওয়ার পর থেকেই মস্তিষ্কের চাপ বাড়তে থাকে এবং শ্বাসতন্ত্রের জটিলতা দেখা দিতে পারে।

করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে করণীয় কী, তা নিয়ে বার্তা২৪.কমের পাঠকদের জন্য পরামর্শ দিয়েছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা।

মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মোহিত কামাল বার্তা২৪.কমকে বলেন, করোনার সময়কালে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো ইতিবাচক ভাবনা। ইতিবাচক ভাবনা তাড়াতে পারে মনের বিষাদ ও উদ্বেগ।

এ ব্যাপারে অধ্যাপক  ডা. মোহিত কামালের পরামর্শগুলো তুলে ধরা হলো

ইতিবাচক ভাবনাগুলো যেমন হতে পারে

১. করোনা আক্রান্ত অধিকাংশ রোগী ভালো হয়ে যায়।

২. কোয়ারেন্টাইন (সঙ্গরোধ) বা আইসোলেশন মানে নিজের সুরক্ষা করা।

৩. নিজেকে রক্ষা করা মানে পরিবারেরকেও নিরাপদ রাখা। সমাজ ও দেশ করোনামুক্ত করার যুদ্ধে অংশ নেওয়া।

৪. এই মূহুর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ঘরে থাকা। এটা দেশ প্রেমের বহিঃপ্রকাশ। 

ঘরে থেকে মানসিক অবসাদ কাটাতে যা করনীয়

১. গান শোনা, বই পড়া, লেখালেখি করা অথবা আনন্দময় বা সৃষ্টিশীল কাজ করা।

২. এ সুযোগে পারিবারিক বন্ধন দৃঢ় করা।

৩. যার যার ধর্মীয়চর্চা করা।

৪. শিশুদের মনের কথা শোনা। তাদের মতামত নেওয়া। করোনা নিয়ে তাদের মনোভাব তাদের বয়সের স্তরে নেমে বোঝা।

৫. বয়স্কদের প্রতি যত্নবান হওয়া।

৬. সাধ্য ও সামর্থ্য অনুযায়ী ঘরে এক্সারসাইজ (ব্যায়াম) করা। মেডিটেশনও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

৭. প্রতিদিন ডায়েরি লেখা যেতে পারে।

ইতোমধ্যে করোনাভীতি থেকে অনেকেই মানসিক বিশেষজ্ঞদের দারস্ত হচ্ছেন বলে জানান সহকারী ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট মুমীতা জেরিন নীলাভ। আতঙ্কিত রোগীদের ক্ষেত্রে করণীয় সম্পর্কে বার্তা২৪.কমকে তিনি বলেন, কিছু মানুষ আছেন যাদের মধ্যে ফোবিয়া (ভীতি) বা অ্যানজাইটি ডিসঅর্ডার (দুশ্চিন্তা) আছে। তারা বাসা থেকে বের হতে কিংবা কারো সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দিচ্ছেন। অনেক বেশি আইসোলেটেড হয়ে পড়ছেন। সেক্ষেত্রে আমরা মেডিটেশন নেওয়ার কথা বলছি। নেগেটিভ চিন্তা থেকে বিরত থাকা। একইসঙ্গে এ সময়টা নিজেদের সেলফ ডেভেলপমেন্টের জন্য উপযুক্ত সময়। কারো কোনো বিষয়ে দুর্বলতা থাকতে পারে সেগুলো কাটিয়ে উঠতে পারে। পাশাপশি গান শোনা, সৃজনশীল কাজ করতে পারেন। আর অবশ্যই সচেতনার পাশাপাশি এসব কাজ চালিয়ে যেতে হবে।

গবেষকরা বলছেন, করোনা আতঙ্ক থেকে দূরে থাকতে হলে কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। গায়ে জ্বর অনুভব মানেই করোনা নয়। এটি হতে পারে সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জা। এজন্য আতঙ্কিত না হয়ে শান্ত থাকতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য ও ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতায় খেয়াল রাখা, নিজে সচেতন হওয়া ও মানুষকে সচেতন করা, ভুল তথ্য ও সংবাদ এড়িয়ে চলা। যেহেতু এখনো করোনাভাইরাসের কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি, তাই এ রোগ প্রতিরোধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্দেশনা মেনে চলা প্রয়োজন।

আরও পড়ুন:

ক্লোরোকুইন ওষুধে কি করোনা নিরাময় সম্ভব?

করোনার চিকিৎসায় চার ওষুধ নিয়ে কাজ করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

গ্রীষ্মে কমবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ!

করোনার বিরুদ্ধে লড়তে চীনকে অনুসরণ করবে বাংলাদেশ!

 
   

নাটোরে আওয়ামী লীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নাটোর
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নাটোরের লালপুরের গোপালপুর পৌরসভার আজিমনগর রেলস্টেশন সংলগ্ন রবিউল ইসলাম কনফেকশনারী দোকানের সামনে প্রকাশ্যে পৌর আলীগের সহ-সভাপতি মনজুরুল ইসলাম মঞ্জুকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নিহত মনজুরুল ইসলাম মঞ্জু বাহাদিপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের সন্তান।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টার দিকে গোপালপুর পৌরসভার আজিমনগর রেলস্টেশন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, রাত সাড়ে ১০টার দিকে আজিমনগর রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন রবিউল ইসলাম কনফেকশনারির সামনে বসেছিলেন মঞ্জু। এসময় দুই মোটরসাইকেলে চার-পাঁচজন এসে মঞ্জুর মাথায় এবং পেটে গুলি করে দ্রুত সটকে পড়েন। এতে ঘটনাস্থলেই মঞ্জু মারা যান।

উল্লেখ্য বিগত ২৮ নভেম্বর ২০১৮ সকালে নাটোরের নর্থবেঙ্গল সুগার মিলস গেটে লালপুর উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিরুল ইসলাম হত্যা মামলার অন্যতম আসামী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তিরা জানান। জাহিরুল মরার পরে দীর্ঘ ৪ বছর যাবত একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে আসছিল।

এ ব্যাপারে লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসিম আহমেদ জানান মরদেহ এখন পর্যন্ত তাদের পরিবারের কাছেই রয়েছে।ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশের কয়েকটি দল মাঠে কাজ শুরু করেছে। প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে মঞ্জুর প্রতিপক্ষরা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে।

এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস

;

খাগড়াছড়িতে ভয়াবহ আগুনে পুড়ল ২৪ দোকান



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, খাগড়াছড়ি
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

খাগড়াছড়ি শহরের শান্তিনগর এলাকায় ভয়াবহ আগুনে পুড়ে গেছে ২৪টি দোকান। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১ টার দিকে শান্তিনগরের জাফর তালুকদার মার্কেটে এ আগুনের সূত্রপাত ঘটে।

ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়দের সহায়তায় দুই ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। আগুনে পোড়া দোকান গুলোর মধ্যে ওয়ার্কশপ, মোটরপার্টস, ব্যাটারীর সার্ভিস ও কুলিংকর্ণার ছিল।

এ ছাড়া ওয়ার্কশপের সামনে থাকা দুইটি ট্রাক্টরও পুড়ে যায়। প্রাথমিক ভাবে আগুনে কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

মার্কেট মালিক জাফর তালুকদার বলেন, আগুনে ২৪টি প্লটের সব পুড়ে গেছে। আশপাশে পানির উৎস না থাকায় আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের বেগ পেতে হয় বলে জানান তিনি।

খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তানভীর হাসান জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। আগুনে ২৪টি দোকান পুড়ে গেছে তবে কোন হতাহতের ঘটনা নেই।

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস

;

পোশাক শ্রমিকের ১২ হাজারের জীবন, নিজেই চলতে পারিনা, বউরে খাওয়ামু কি!

  ‘শ্রমিকের জয়গান কান পেতে শোন ঐ’



গুলশান জাহান সারিকা, স্টাফ করেস্পন্ডেন্টম, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর পীরেরবাগের বাসিন্দা শানিনুর প্রতিদিন ৮টা-৫টা কাজ করে মাসে ১২ হাজার টাকা ঘরে আনেন। স্বামীও কাজ করেন। কিন্তু দুই জনের আয়েও চলেনা পাঁচজনের পরিবার। রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন শাহীনুর। বস্তির ছাপড়া ঘরের ভাড়া গোনা আর আনুসঙ্গিক বিল পরিশোধের পর, বাজারের দিকে পা বাড়ানোর আগেই দেখেন হাত খালি। তিন মেয়েকে স্কুলে পাঠিয়েছিলেন এই মধ্যবয়ষ্ক নারী। কিন্তু এক মেয়েকে এরইমধ্যে স্কুল ছাড়াতে হয়েছে। এটাই পোশাক শ্রমিকের জীবন।

তৈরি পোশাক খাতের অর্থনীতির গতির সাথে সাথে এই খাতের শ্রমিকের জীবন-জীবিকা অতীতেও তেমন গতি পায়নি। এখনো পাচ্ছে না। গেল বছর পোশাক শ্রমিকদের বেতন সর্বনিম্ন ১২ হাজার টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। যা আগে ছিল ৮ হাজার টাকা। এ বেতন বাড়ায় কিছুটা স্বস্তি ফিরবে বলে আশা করা হলেও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সে স্বস্তির দেখা মেলেনি। শাহীনুর তার জ্বলন্ত প্রমাণ।

জীবিকার তাগিদে জীবনে সফলতার স্বপ্ন নিয়ে প্রতি বছর প্রায় ছয় লাখ মানুষ ঢাকা শহরে পাড়ি জমায় তাদের ভাগ্য বদলানোর আশায়। ঢাকায় আসা বিপুল সংখ্যক এ মানুষের মধ্যে নিম্নবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত বেশির ভাগেরই ঠাঁই হয় রাজধানীর বিভিন্ন পোশাক কারখানায়। গ্রাম থেকে উঠে আসা এসব মানুষ দৈন্যদশা থেকে মুক্তি পেতে অল্প আয়ে নিজের শ্রম বিলিয়ে দিচ্ছেন পোশাক কারখানায়। কিন্তু তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি।

দৈনিক ৮-৯ ঘণ্টা কাজের বিনিময়ে ১২-১৩ হাজার টাকা মাসিক বেতনে কাজ করেন অনেকে। তবে এ অল্প আয় দিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন পোশাক শ্রমিকদের পরিবারগুলো।

বাসা ভাড়া, সংসার খরচ, দিয়ে কেমন কাটছে পোশাক শ্রমিকদের জীবন? এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করেছেন বার্তা২৪.কমের এই প্রতিবেদক। বৃহস্পতিবার (২৫এপ্রিল) রাজধানীর মিরপুর এলাকার কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিকের সাথে সরেজমিনে কথা বলে জানা গেছে তাদের অবস্থার কথা।

মিরপুর শেওড়াপাড়ান একটি কারখানার পোশাক শ্রমিক শাহিনুর বেগম থাকেন পীরেরবাগ এলাকায় । বার্তা ২৪ কে তিনি বলেন, "স্বামীর একার রোজগারে সংসার চলেনা। তাই নিজেও কাজে গেছি। কিন্তু তাতেও চলে না। সকাল ৮ টায় যাই আর বিকাল পাঁচটায় ফিরি। মাসে সাড়ে ১২ হাজার টাকা পাই। হাড়ভাঙ্গা খাটুনির পর যা পাই তা বাসা ভাড়া, কারেন্ট বিল, পানির বিল দিতেই শেষ হয়ে যায়।"

"আমার তিন মেয়ে। ছেলে নাই। তাদের পড়াশোনার খরচ চালাতে পারি না। এক মেয়ের পড়া বন্ধ করে দিছি," বললেন শাহীনুর।

ভাগ্যের এই করুণদশার জন্য দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিকেই দায়ী করেন শাহীনুর। তিনি বলেন, একটু খেয়ে-পরে বাঁচার জন্য দুই জন কাজ করি। তাও তিনটা মেয়েকে নিয়ে এই শহরে চলতে পারি না। এইটাই দুর্ভাগ্য।"

আরেক পোশাক শ্রমিক আলাউদ্দিন বরিশালের পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া থানা থেকে জীবিকার সন্ধানে এসে যোগ দেন রাজধানীর একটি গার্মেন্ট কারখানায়। সেখানে আয়রন ম্যানের কাজ তার। মাসিক মজুরি ১২০০০ টাকা।

কাজের জায়গায় অনেক চাপ থাকে। ঘড়ির কাটার এদিক-ওদিক হওয়ার কোন সুযোগ নেই। সময়ের মধ্যে নির্দিষ্ট কাজ না করতে পারলে চাকরি চলে যাবে। বার্তা২৪ কে আলাউদ্দিন বলেন, "অভাবের তাড়নায় লেখাপড়া বেশি দূর করতে পারিনি। গ্রামে যখন কিছু করতে পারলাম না ঢাকা শহর চলে আসলাম। গার্মেন্টসের আয়রন ম্যানের কাজ পাইলাম। এই গরমে খুব কষ্ট হয় সে কাজ করতে। কিচ্ছু করার নেই। শেওড়াপাড়ায় মেসে থাকি। খাওয়া-থাকা বাবদ নিজেরই মাসে ৭-৮ হাজার টাকা খরচ হয়। বাকি টাকা বাড়িতে পাঠাই। তাতে মায়ের ওষুধ কিনতে হয়।

"মায় বলে সংসার শুরু করতে, বিয়া করতে। আমি বলি নিজেই চলতে পারিনা, বউরে খাওয়ামু কি!"

আরেক গার্মেন্টস কর্মী রোজিনা বলেন, "আগে আট হাজার টাকা ছিল এখন ১২ হাজার টাকা হইছে। কিন্তু এই যুগে আইসা এই টাকায় সংসার চলেনা। বাজারে মাছ-মাংসের আগুন ছোঁয়া দাম। ব্রয়লার মুরগিও প্রায় আড়াইশো টাকা কেজি। আমার স্বামীর নিত্য আয় নিত্যই ব্যয় হয়ে যায়। মাইয়া দুইটা বড় হইতাছে, বিয়া যে দিমু কিছুই সঞ্চয় নাই।"

তৈরি পোশাক শিল্প বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান একটি খাত। অর্থনৈতিক চালিকা শক্তির এখাতে স্বল্পদরে শ্রম কিনে ভারী হয় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। আর মালিকপক্ষের বাড়ে শান-শওকত। কিন্তু দিনের পর দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করেও শ্রমিকেরা দেখেননা সুখের মুখ। যতটুকু যাও বাড়ে আয়, সব শেষ হয়ে যায় বাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ধাক্কায়। সুতরাং তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকের জীবনে নেই সামান্য পরিবর্তন।

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস

;

রক্তদাতারা মানবিক গুণের অধিকারী: কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা



Sajid Sumon
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেছেন, 'রক্তদান মুমূর্ষুদের জীবন বাঁচাতে শ্রেষ্ঠ কাজ। একজন মানুষের মধ্যে মানবিক গুণ জাগ্রত হলেই রক্তদানের মতো এমন মহৎ কাজ করতে পারেন। আর রক্তদাতারা মানবিক গুণের অধিকারী।'

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজধানীর কাকরাইলস্থ ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি) মিলনায়তনে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন আয়োজিত স্বেচ্ছা রক্তদাতা সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা।

প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন, রক্তের যেহেতু বিকল্প নেই। রক্তদাতারা সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকেই মহতী এ কাজটি করে যাচ্ছেন। রক্ত কাকে দিচ্ছেন সেটিও তাদের কাছে মুখ্য বিষয় নয়। রক্তদানই আত্মত্যাগী- এটাই মানুষদের কাছে বড় কথা। প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি ভূপেন হাজারিকার গানের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, মানুষ মানুষের জন্যে। সবাই একটু সহানুভূতি চায়।

তিনি বলেন, এরকম সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে রেখেছেন আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি জাতিকে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাজগুলো স্বাধীনভাবে ভোগ ও পরিচালনা করার সুযোগ করে দিয়েছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ জাতিকে স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সমাজ, স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট দেশ উপহার দিতে নিরন্তর কাজ করে চলেছেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, একজন মহৎ মানুষ, যার ভিতর গুণ আছে, মানবিক মূল্যবোধ আছে, প্রজ্ঞা আছে, যিনি অপরের জীবন বাঁচাতে স্বেচ্ছায় রক্ত দান করছেন, এর চেয়ে দুর্লভ দান আর কিছু হতে পারে না। আজ এ মহতি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়াটাও আমার জন্য এক দুর্লভ মুহূর্ত। প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি বলেন, যারা স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন, যারা প্রজ্ঞাদ্যোতি জ্বালিয়ে অন্যের আলো জ্বালাচ্ছেন তাদের এই আলোকচ্ছটা অন্যের কল্যাণে আরও ছড়িয়ে পড়ুক। এটাই যেন হয় সকলের প্রেরণার উৎস। সবাই এগিয়ে আসুক। এ ধরনের মহৎ মানবিক কাজের সাথে সক্রিয় থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি।

অনুষ্ঠানে আলোচকরা জানান, দুই যুগে ১৬ লাখ ইউনিট রক্ত ও রক্ত উপাদান সরবরাহ করে মুমূর্ষু মানুষের পাশে দাঁড়াতে পেরেছে দেশের অন্যতম স্বেচ্ছাসেবী রক্তদানের সংগঠন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন। ২০০০ সালে ল্যাব প্রতিষ্ঠার পর থেকে চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত ২৪ বছরে সংগঠনটি মোট সরবরাহ করেছে ১৬ লাখ ৫ হাজার ৭৬৩ ইউনিট রক্ত ও রক্ত উপাদান। নিয়মিত-অনিয়মিত মিলিয়ে কোয়ান্টামের স্বেচ্ছা রক্তদাতার সংখ্যা ৫ লাখেরও বেশি। দুই যুগে ১৬ লাখ ইউনিট রক্ত দিয়ে সেবা করতে পারার জন্যে কোয়ান্টাম ল্যাবের পক্ষ থেকে সকল স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তারা। একই সাথে কমপক্ষে ৩ বার রক্তদান করে লাইফ লং, ১০ বারের দানে সিলভার, ২৫ বারে গোল্ডেন এবং ৫০ বার রক্তদান করে প্লাটিনাম ক্লাবের সদস্য হয়েছেন- এমন তিন শতাধিক স্বেচ্ছা রক্তদাতাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের উদ্বুদ্ধ করতে প্রধান অতিথি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এসময় তাদের হাতে সম্মাননা সনদ, ক্রেস্ট ও মেডেল তুলে দেন।

কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক নাহার আল বোখারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রম, কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের পরিচালক মোটিভেশন এম রেজাউল হাসান। স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের কৃতজ্ঞতা জানানোর পাশাপাশি দেশে রক্ত চাহিদা পুরোপুরি মেটাতে তরুণ স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের মানবিক এ সেবায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান আলোচকরা।

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস

;