নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন চিংড়ি রফতানিকারকরা



মানজারুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, খুলনা
চিংড়ি, ছবি: বার্তা২৪.কম

চিংড়ি, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের অন্যতম প্রধান রফতানি পণ্য চিংড়ি খাত আন্তর্জাতিক বাজার প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়েছে। টানা ১০ বছর ধরে এ পণ্যের রফতানি কমছে। ১০ বছরের মধ্যে গত অর্থবছরে সর্বনিম্ন রফতানি হয়েছে। তবে হঠাৎ করেই চলতি অর্থবছরে প্রথম ৬ মাসে বিগত বছরের তুলনায় রফতানি কিছুটা বেড়েছে। এতে আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছেন রফতানিকারকরা।

খুলনার মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, হঠাৎ চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে বিগত অর্থবছরের তুলনায় ২ হাজার টনের বেশি চিংড়ি রফতানি বেড়েছে।

জানা যায়, ২০১১-১২ অর্থবছরে চিংড়ি রফতানি করে আয় হয় ২ হাজার ৫৩৩ কোটি ৪১ লাখ টাকা, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ২ হাজার ২৪৩ কোটি ৭৯ লাখ টাকা, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ২ হাজার ৭০০ কোটি ২২ লাখ টাকা, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ২ হাজার ৫৪২ কোটি ৮৯ লাখ টাকা, ২০১৫-১৬ অর্থবছরেও ২ হাজার ৫৪২ কোটি ৮৯ লাখ টাকা, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ২ হাজার ৫৮৮ কোটি ২৪ লাখ টাকা, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ২ হাজার ৪৮৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকার চিংড়ি রফতানি হয়।

সর্বশেষ ২০১৮-১৯ অর্থবছরে চিংড়ি রফতানি আয় ছিল ২ হাজার ২৯০ কোটি ২০ লাখ টাকা। তখন রফতানি হয় ২৯ হাজার ৬ কোটি ৮২১ মেট্রিক টন চিংড়ি। গত ১০ বছরের মধ্যে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সবচেয়ে কম চিংড়ি রফতানি হয়েছে।

অপরদিকে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রথম ৬ মাসে ১ হাজার ৫১০ কোটি ৪৩ লাখ টাকার চিংড়ি রফতানি হয়েছে। এ সময় চিংড়ি রফতানি করা হয় প্রায় ১৮ হাজার ৫৬২ মেট্রিক টন।

খুলনার মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ অফিসের কর্মকর্তা এটিএম তৌফিক মাহমুদ জানান, ২০১৯-২০ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৮ হাজার ৫৬২ মেট্রিক টন চিংড়ি রফতানি হয়। বিগত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এ সময়ে রফতানি হয়েছিল ১৬ হাজার ৬২৭ মেট্রিক টন চিংড়ি। সুতরাং এ অর্থবছরের শুরুর ৬ মাসেই প্রায় ২ হাজার টন চিংড়ি বেশি রফতানি হয়েছে।

চিংড়ি, ছবি: বার্তা২৪.কম

বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্ব বাজারে চিংড়ির চাহিদা বাড়লেও এ খাতে বাংলাদেশের রফতানি আয় প্রতিনিয়ত কমে। বিশ্ববাজারে গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশের চিংড়ির দখল ৪ শতাংশ থেকে কমে ২ শতাংশে নেমে এসেছে। আর এ সময় ধারাবাহিকভাবে চিংড়ি রফতানি কমেছে ৩৩ শতাংশ। একই সঙ্গে দেশে চিংড়ির উৎপাদনও কমেছে ২৮ দশমিক ৩৫ ভাগ।

গত ৫ বছর আগে বিশ্ববাজারে যেখানে চিংড়ির চাহিদা ছিল ৪৩ লাখ মেট্রিক টন, তা এ অর্থবছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮ লাখ মেট্রিক টনে। কিন্তু দেশে চিংড়ি উৎপাদন কমে যাওয়ায় বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে বাংলাদেশ। এছাড়া গুণগত মান সংকটের কারণেও পিছিয়ে পড়ে সম্ভাবনাময় এ খাতটি। বিশেষ করে কতিপয় অসাধু ব্যক্তি গলদা চিংড়ির মাথা বিচ্ছিন্নকালে বাড়তি অংশ রেখে দেয়। এতে জীবাণু থাকার সম্ভাবনা থাকে। যা কোনোভাবেই বিদেশি ক্রেতারা পছন্দ করেন না।

বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক পরিচালক এস হুমায়ুন কবীর জানান, ২০২১ সালের মধ্যে ১.৫ বিলিয়ন ডলার বা ১৩ হাজার কোটি টাকা চিংড়ি খাত থেকে আয় করার টার্গেট নেয়া হয়েছিল। তবে তা মাত্র দুই বছরে অর্জন করা সম্ভব না। কিন্তু নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন চিংড়ি রফতানিকারক ও এ অঞ্চলের উৎপাদনকারীরা। এ অর্থবছরের শুরুতে যেভাবে চিংড়ি রফতানি বেড়েছে, এ ধারাবাহিকতা চলতে থাকলে টার্গেট পূরণ করা সম্ভব।

উল্লেখ্য, বিশ্বের মোট চিংড়ির চাহিদার ৭৭ ভাগই এখন হাইব্রিড প্রজাতির ভেন্নামি চিংড়ির দখলে। প্রতিবেশী দেশগুলো দ্রুত এ চিংড়ির উৎপাদন শুরু করলেও বাংলাদেশ তা পারেনি। বাংলাদেশের বাগদা চিংড়ির চাহিদা বিশ্ববাজারে এখন মাত্র ১১ ভাগ। ফলে প্রতিনিয়ত বৈদেশিক মুদ্রা আয় কমছে। তাই এখনই বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম খাত চিংড়ি রক্ষায় চাষাবাদ থেকে বাজারজাতকরণ পর্যন্ত আধুনিকায়নের উদ্যোগ গ্রহণ না করলে বিশ্ববাজারে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

   

রুমায় যৌথ বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে কেএনএফের ২ সদস্য নিহত



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বান্দরবান
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

বান্দরবানের রুমায় সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে মুখোমুখি বন্দুকযুদ্ধে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) ২ সদস্য নিহত হয়েছেন। এ সময় আরো ২ জনকে আটক করা হয়েছে। যৌথ বাহিনীর সঙ্গে কেএনএফের ৬ ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ চলে বলে জানা গেছে।

রোববার (২৮ এপ্রিল) ভোরে রুমা উপজেলার দুর্গম রেমাক্রি প্রাংসা ইউনিয়নের বাকত্লাই এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

নিহতদের পরনে কেএনএফের পোশাক থাকায় ধারণা করা হচ্ছে, মরদেহ দুটি কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সদস্যের। তবে তাদের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি। নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে বান্দরবান সদর হাসপাতাল মর্গে নিয়ে আসা হচ্ছে।

এ ঘটনার পর বর্তমানে ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। জানা গেছে, ওই এলাকায় সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথ বাহিনী তল্লাশি চালাচ্ছে।

পুলিশ জানায়, শনিবার দিনগত রাত ১২টার পর থেকে থানচি লিক্রে সড়কের বাকত্লাই এলাকায় দুর্গম পাহাড়ে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথ বাহিনী অভিযান চালায়। সেখানে ছয় ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষের পর দু’জনের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তল্লাশি চালিয়ে আরো দুই জনকে আটক করা হয়। তাদের বান্দরবান জেলা সদরে নিয়ে আসা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, বান্দরবানে ২ ও ৩ এপ্রিল রুমা ও থানচিতে ব্যাংক ডাকাতি, মসজিদে হামলা, টাকা-অস্ত্র লুটের ঘটনার মামলায় অভিযুক্ত কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সংশ্লিষ্টতা থাকার অভিযোগে বান্দরবান জুড়ে যৌথ বাহিনীর চিরুনি অভিযান চলমান রয়েছে।

;

চট্টগ্রামে ধর্মঘটে চলছে না বাসের চাকা, ভোগান্তিতে যাত্রীরা



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
ধর্মঘটের কারণে বাস না চলায় নগরীর চাক্তাই এলাকায় যাত্রীদের ভোগান্তি। ছবি: আনিসুজ্জামান দুলাল

ধর্মঘটের কারণে বাস না চলায় নগরীর চাক্তাই এলাকায় যাত্রীদের ভোগান্তি। ছবি: আনিসুজ্জামান দুলাল

  • Font increase
  • Font Decrease

বাসের ধাক্কায় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই শিক্ষার্থী নিহতের জেরে পরিবহন ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনায় আজ রোববার (২৮ এপ্রিল) ভোর ৬টা থেকে চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট চলছে। এই ধর্মঘটের কারণে শহর ছেড়ে যায়নি কোনো বাস। নগরীতেও ঘুরছে না বাসের চাকা। এই কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।

দূরপাল্লার বাস না চলায় চাহিদা বেড়েছে প্রাইভেটকার ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার। আর এই সুযোগে চালকেরা দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করছেন। একইভাবে নগরীতেও বাস চলাচল না করায় টেম্পো ও রিকশা নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে নগরবাসীকে। বাস না চলায় এসব গাড়ির চালকেরাও ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছেন।

রোববার (২৮ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর সবচেয়ে বড় বাস টার্মিনাল বহদ্দারহাট বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে পড়ে রয়েছে শত শত গাড়ি। টিকিট কাউন্টারগুলোও তালা দেওয়া। চালক ও সহকারীরা বিভিন্ন দোকান ও গাড়িতে বসে খোশগল্প এবং মুঠোফোনে লুডু খেলায় ব্যস্ত সময় পার করছিলেন।

জানতে চাইলে চালকদের অনেকেই ধর্মঘট নিয়ে ক্ষোভের কথা জানান। তবে কেউই পরিবহন নেতাদের ভয়ে নাম প্রকাশ করতে চাননি।

চট্টগ্রাম-বাঁশখালী রুটে চলাচল করা সুপার সার্ভিসের দুজন চালক বার্তা২৪.কমকে বলেন, 'ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে। পরিবহন নেতারা সেই সড়কে ধর্মঘটের ডাক দিতে পারতেন। কিন্তু ঢালাওভাবে পাঁচ জেলায় পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়ে যাত্রীদের যেমন ভোগান্তিতে ফেলেছেন, তেমনি আমাদের পেটেও লাথি মেরেছেন। কেননা গাড়ি চললেই তো আমাদের পেটে খাবার পড়ে, না চললে কে দেবে খাবার? পরিবহন মালিকেরা তো তার খবর রাখেন না।'

চট্টগ্রামে ধর্মঘটে চলছে না বাসের চাকা, ভোগান্তিতে যাত্রীরা। ছবি: আনিসুজ্জামান দুলাল

এই টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রামের দক্ষিণের প্রায় সব জেলার পাশাপাশি উত্তরের কয়েকটি উপজেলায়ও গাড়ি যায়। প্রতিদিন অন্তত দশ হাজার যাত্রী এই টার্মিনাল হয়ে গন্তব্যে যান। কিন্তু গাড়ি না চলায় তারা পড়েছেন মহা ঝামেলায়।

এই টার্মিনাল থেকে আধা কিলোমিটার দূরে চান্দগাঁও থানা মোড় এলাকা থেকে কক্সবাজারে যাওয়ার বেশ কয়েকটি পরিবহনের কাউন্টার রয়েছে। সেখানে গিয়েও একই চিত্র দেখা গেছে। চলছে না কোনো বাসই, তালা ঝুলছে কাউন্টারে-কাউন্টারে।

জানতে চাইলে মারচা নামের একটি পরিবহনের একজন চালক বলেন, ধর্মঘটের কারণে সকাল থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশে কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। যাত্রীরা এসে তাই ফিরে যাচ্ছেন।

কক্সবাজারে যেতে এই স্টেশনে এসেছিলেন একটি বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) কর্মী শাহাদাত হোসেন। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, কর্মস্থলে যোগ দিতে কক্সবাজার যেতে বাসা থেকে বেরিয়েছিলাম। কিন্তু স্টেশনে এসে দেখি কোনো গাড়িই চলছে না। বাধ্য হয়ে প্রাইভেটকারে দ্বিগুণ ভাড়ায় কক্সবাজার যেতে হচ্ছে।

দক্ষিণ চট্টগ্রাম থেকে শহরে ঢোকার প্রধান প্রবেশমুখ চাক্তাইয়ের নতুন ব্রিজ এলাকা। বেলা সাড়ে ১১টায় সেখানে গিয়ে দেখা যায় মানুষদের প্রচুর ভিড়। বাস না চলায় কোনো প্রাইভেটকার আসলেই সেটি ঘিরে ধরছেন যাত্রীরা। সেই সুযোগে যেখানে আগে ১০০ টাকায় পটিয়া-চন্দনাইশের গন্তব্যে যাওয়া যেত সেই ভাড়া এখন দাবি করা হচ্ছে ২০০ টাকা।

কেন বেশি ভাড়া দাবি করছেন সেটি জানতে চাইলে মোহাম্মদ রশিদ নামের একজন প্রাইভেটকার চালক বার্তা২৪.কমকে বলেন, 'ধর্মঘটে ঝুঁকি নিয়ে সড়কে বেরিয়েছি। ধর্মঘটে গাড়ি চালানোর জন্য যে কোনো সময় হামলার শিকার হতে পারি। সেজন্য যাত্রীদের কাছ থেকে চেয়ে কিছু ভাড়া বেশি নিচ্ছি।'

বাস না চলায় কেউ কেউ ট্রাকে-পিক আপে চড়েও ঝুঁকি নিয়ে গন্তব্যে ফিরছিলেন।

পরিবার নিয়ে চন্দনাইশে ফিরতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়েন রানী দাশ। তিনি বলেন, জরুরি বাড়ি যেতে হচ্ছিল। কিন্তু বাস না চলায় বিপদে পড়েছি। এখন বাধ্য হয়ে দ্বিগুণ ভাড়ায় প্রাইভেটকারে যেতে হচ্ছে। আমাদের অপরাধটা কোথায় বুঝতেছি না।

একইভাবে উত্তর চট্টগ্রাম থেকে নগরীতে প্রবেশের তিন মুখ একেখান, অক্সিজেন ও কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকায়ও যাত্রীদের ভোগান্তির শেষ নেই। এই তিন স্টেশনেও দূরপাল্লার বাসের সব কাউন্টার বন্ধ। প্রাইভেটকার, অটোরিকশা, ট্রাক-মানুষ যে যেভাবেই পারছে গন্তব্যে ফিরছে।

গত শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে চট্টগ্রামের পাঁচ জেলায় ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটের এই ঘোষণা দেওয়া হয়। পরে অবশ্য তিনটি পরিবহন সংগঠন ধর্মঘট প্রত্যাখানের ঘোষণা দেয়। কিন্তু এই সংগঠগুলো টেম্পোজাতীয় পরিবহন সংশ্লিষ্ট। ফলে তাদের প্রত্যাখানে তেমন একটা প্রভাব পড়ছে না।

গত সোমবার (২২ এপ্রিল) চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী দুই চুয়েট শিক্ষার্থী নিহত হয়। এর জের ধরে ওইদিন থেকেই শিক্ষার্থীরা ১০ দফা দাবিতে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করে আসছিলেন। গত ২৪ এপ্রিল ঘাতক বাসের চালককে পুলিশ গ্রেফতার করে। এরপরও ছাত্র আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থামাতে ২৫ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করলে ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থীরা গণ পরিবহনে আগুন ধরিয়ে দেয়। এর প্রতিবাদে পরিবহন ধর্মঘটের ঘোষণা দেওয়া হয়।

;

কিশোর গ্যাং নির্মূলে উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনা পেয়েছি: র‌্যাব মুখপাত্র



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

মাদক নিয়ে আমাদের অবস্থান জিরো টলারেন্স। কিশোর গ্যাং নির্মূলে উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনা পেয়েছি। আমরা কাজ করছি। প্রচুর কিশোর গ্যাং সদস্যকে আমরা গ্রেফতার করেছি। এদের আশ্রয়-প্রশ্রয় ও মদদদাতাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং এর নতুন পরিচালক হিসেবে সদ্য দায়িত্ব নেওয়া কমান্ডার আরাফাত ইসলাম।

রোববার (২৮ এপ্রিল) বেলা ১১টায় কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত পরিচয়পর্ব ও মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তিনি।

কমান্ডার আরাফাত ইসলাম গত বুধবার (২৪ এপ্রিল) লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইং এর পরিচালক হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তিনি সদ্য বিদায়ী পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈনের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন।

কিশোর গ্যাং ও অস্ত্র মাদক সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মাদক নিয়ে আমাদের অবস্থান জিরো টলারেন্স। কিশোর গ্যাং নির্মূলে উচ্চ পর্যায়ে নির্দেশনা পেয়েছি। আমরা কাজ করছি। প্রচুর কিশোর গ্যাং সদস্যকে আমরা গ্রেফতার করেছি। এদের আশ্রয়-প্রশ্রয় ও মদদদাতাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। তদন্ত করে এটা খুঁজে বের করা হবে। কিশোর গ্যাং চক্রকে আমরা সমূরে উৎখাত করবো ইনশাআল্লাহ। এজন্য গণমাধ্যমের সহযোগিতাও কামনা করেন তিনি।

ফরিদপুরের মধুখালীর ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লীতে মন্দিরের পাশে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার সঙ্গে জড়িত ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আসাদুজ্জামান ও ইউপি সদস্য অজিত কুমার বিশ্বাসকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করেছেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার। তাদেরকে গ্রেফতারে এলিট ফোর্স র‌্যাব কি ধরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, র‌্যাবের ইনটেলিজেন্স উইং বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। দেশের যেকোনো জায়গায় যেকোনো প্রান্তে যেকোনো ঘটনা চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসব ঘটনা নিয়ে কাজ করে। অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের হাতে সোপর্দ করে থাকে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অংশ হিসেবে র‌্যাব এ ঘটনায় কাজ করছে। অচিরেই এঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করা হবে।

ফরিদপুরের মধুখালীর ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লীতে মন্দিরের পাশে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাতে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা হচ্ছে সাইবার জগতে। যারা অপচেষ্টা করছেন তাদের সনাক্ত করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটা অপরাধ সংঘঠনের পর অপচেষ্টা বা ধামাচাপা দেবার চেষ্টা হতে পারে। অপরাধী গ্রেফতার হলেই সব বেড়িয়ে আসবে।

সাগর-রুনী হত্যাকাণ্ডের চার্জশিট বার বার পেছানো হচ্ছে। বিষয়টি বিচারিক প্রক্রিয়াতেই যায়নি। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, বিষয়টি চাঞ্চল্যকর ও তদন্ত প্রক্রিয়াধীন।

উপজেলা নির্বাচন আসন্ন। নির্বাচন ঘিরে অস্ত্রের ঝনঝনানি হয়। এক্ষেত্রে র‌্যাব কি ধরণের তৎপরতা চালাচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সমগ্র দেশে চার পর্বে উপজেলা নির্বাচন হতে যাচ্ছে। একটি অবাধ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন পরিবেশ তৈরির জন্য র‌্যাব আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছে। পোশাকের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও র‌্যাব সদস্যরা কাজ করছে।

কোন বিষয়টি কাজ করার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতিদিন যে ঘটনাগুলো ঘটে থাকে সেগুলো নিয়ে আমরা কাজ করি। আমার পূর্বের যে কর্মকর্তারা কাজ করে গেছেন, ঊর্ধ্বতনরা যে লিগ্যাসি রেখে গেছেন সেটাই আমি বহন করবো। র‌্যাবের কার্যক্রমকে আরও বেগবান করবো।

গত দুই বছর ক্রসফায়ার নেই। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কি খুব ভাল হয়ে গেলো যে র‌্যাবের সঙ্গে কোনো ক্রসফায়ার নেই। নাকি অন্য কোনো চাপে ক্রসফায়ার হচ্ছে না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে এইপর্যায়ে কথা বলার কিছু নেই। শুধু র‌্যাব কেন আত্মরক্ষার অধিকার সবার আছে। ক্রসফায়ার শব্দটি আমি ব্যবহার করতে চাই না। আমরা সব সময় চাই বিচার বহির্ভূত কোনো হত্যাকাণ্ড না ঘটু। যদিও বিভিন্ন সময় এটা নিয়ে ভিন্নখাতে আলোচনা হয়।

কুকি-চিনের তৎপরতা নির্মূলে র‌্যাব ও যৌথ বাহিনীর অভিযান সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যৌথ বাহিনী কাজ করছে। র‌্যাব যৌথ বাহিনীর অংশ। এটা নিয়ে কিছু বিষয় গোপনীয়তা রয়েছে অভিযানের স্বার্থে। এতোটুকু বলতে পারি, র‌্যাব এক্ষেত্রে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করছে। 

;

রাঙামাটিতে সহনীয় পর্যায়ে বিল পরিশোধের আশ্বাস বিদ্যুৎ বিভাগের



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, রাঙামাটি
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাঙামাটিতে মাত্রাতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল নিয়ে গ্রাহকদের উৎকণ্ঠা নিরসনের উদ্যোগ নিয়েছেন জেলার বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ কর্তৃপক্ষ। সাম্প্রতিক সময়ে রাঙামাটি শহরের ইসলামপুর এলাকাসহ কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুতের মিটার পরিবর্তন পরবর্তী সময়ে বিদ্যুত বিল কয়েকগুণ বেশি প্রদান করায় স্থানীয় গ্রাহকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে।

বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের দৃষ্টিগোচর হয়। তারই ধারাবাহিকতায় গ্রাহকদের জন্য সহনীয় পর্যায়ে বিল প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জালাল উদ্দিন। তিনি জানিয়েছেন, সারাদেশের ন্যায় রাঙামাটিতেও স্মার্ট প্রি পেমেন্ট মিটারিং প্রকল্প চলমান রয়েছে।

এই প্রকল্পের আওতায় রাঙামাটিতে প্রায় ২৪ হাজার গ্রাহকের মিটার পরিবর্তন করা হবে। তারই ধারাবাহিকতায় এখন পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার মিটার পরিবর্তন করা হয়েছে। এই পরিবর্তনের সময় পূর্বের মিটারগুলোতে যে ইউনিট পাওয়া যায় সেগুলোর আলোকেই বিদ্যুতের বিল প্রদান করা হয়েছে। এতে করে অনেক গ্রাহকের জমে থাকা ইউনিটের পরিমাণ বেশি হওয়ায় বিলটাও বেশি এসেছে। এটা সম্পূর্নভাবে সরকারের পাওনা এবং সন্মানিত গ্রাহকদের এটি পরিশোধ করতে হবে। এই ক্ষেত্রে গ্রাহকদের সামর্থ্যের কথা বিবেচনায় আমরা সহনীয় পর্যায়ে কিস্তি আকারে বিল তৈরি করে দিব। এতে করে গ্রাহকরা তাদের সামর্থ অনুযায়ী বিলগুলো পরিশোধ করতে পারবে বলে জানিয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জালাল উদ্দিন।

প্রসঙ্গত, রাঙামাটি শহরের অদূরে ইসলামপুরের কয়েকশো গ্রাহকদের কয়েকগুন বেশি হারে বিদ্যুতের বিল প্রদান করায় হতদরিদ্র গ্রাহকদের বিক্ষোভ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। তারই প্রেক্ষিতে রাঙামাটির বিদ্যুত বিতরণ বিভাগ কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদের হয়রানি বন্ধে এবং তাদের সামর্থ অনুসারে কিস্তির মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের উদ্যোগ নিয়েছে।

;