চট্টগ্রামে ধর্মঘটে চলছে না বাসের চাকা, ভোগান্তিতে যাত্রীরা



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
ধর্মঘটের কারণে বাস না চলায় নগরীর চাক্তাই এলাকায় যাত্রীদের ভোগান্তি। ছবি: আনিসুজ্জামান দুলাল

ধর্মঘটের কারণে বাস না চলায় নগরীর চাক্তাই এলাকায় যাত্রীদের ভোগান্তি। ছবি: আনিসুজ্জামান দুলাল

  • Font increase
  • Font Decrease

বাসের ধাক্কায় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই শিক্ষার্থী নিহতের জেরে পরিবহন ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনায় আজ রোববার (২৮ এপ্রিল) ভোর ৬টা থেকে চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট চলছে। এই ধর্মঘটের কারণে শহর ছেড়ে যায়নি কোনো বাস। নগরীতেও ঘুরছে না বাসের চাকা। এই কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।

দূরপাল্লার বাস না চলায় চাহিদা বেড়েছে প্রাইভেটকার ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার। আর এই সুযোগে চালকেরা দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করছেন। একইভাবে নগরীতেও বাস চলাচল না করায় টেম্পো ও রিকশা নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে নগরবাসীকে। বাস না চলায় এসব গাড়ির চালকেরাও ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছেন।

রোববার (২৮ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর সবচেয়ে বড় বাস টার্মিনাল বহদ্দারহাট বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে পড়ে রয়েছে শত শত গাড়ি। টিকিট কাউন্টারগুলোও তালা দেওয়া। চালক ও সহকারীরা বিভিন্ন দোকান ও গাড়িতে বসে খোশগল্প এবং মুঠোফোনে লুডু খেলায় ব্যস্ত সময় পার করছিলেন।

জানতে চাইলে চালকদের অনেকেই ধর্মঘট নিয়ে ক্ষোভের কথা জানান। তবে কেউই পরিবহন নেতাদের ভয়ে নাম প্রকাশ করতে চাননি।

চট্টগ্রাম-বাঁশখালী রুটে চলাচল করা সুপার সার্ভিসের দুজন চালক বার্তা২৪.কমকে বলেন, 'ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে। পরিবহন নেতারা সেই সড়কে ধর্মঘটের ডাক দিতে পারতেন। কিন্তু ঢালাওভাবে পাঁচ জেলায় পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়ে যাত্রীদের যেমন ভোগান্তিতে ফেলেছেন, তেমনি আমাদের পেটেও লাথি মেরেছেন। কেননা গাড়ি চললেই তো আমাদের পেটে খাবার পড়ে, না চললে কে দেবে খাবার? পরিবহন মালিকেরা তো তার খবর রাখেন না।'

চট্টগ্রামে ধর্মঘটে চলছে না বাসের চাকা, ভোগান্তিতে যাত্রীরা। ছবি: আনিসুজ্জামান দুলাল

এই টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রামের দক্ষিণের প্রায় সব জেলার পাশাপাশি উত্তরের কয়েকটি উপজেলায়ও গাড়ি যায়। প্রতিদিন অন্তত দশ হাজার যাত্রী এই টার্মিনাল হয়ে গন্তব্যে যান। কিন্তু গাড়ি না চলায় তারা পড়েছেন মহা ঝামেলায়।

এই টার্মিনাল থেকে আধা কিলোমিটার দূরে চান্দগাঁও থানা মোড় এলাকা থেকে কক্সবাজারে যাওয়ার বেশ কয়েকটি পরিবহনের কাউন্টার রয়েছে। সেখানে গিয়েও একই চিত্র দেখা গেছে। চলছে না কোনো বাসই, তালা ঝুলছে কাউন্টারে-কাউন্টারে।

জানতে চাইলে মারচা নামের একটি পরিবহনের একজন চালক বলেন, ধর্মঘটের কারণে সকাল থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশে কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। যাত্রীরা এসে তাই ফিরে যাচ্ছেন।

কক্সবাজারে যেতে এই স্টেশনে এসেছিলেন একটি বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) কর্মী শাহাদাত হোসেন। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, কর্মস্থলে যোগ দিতে কক্সবাজার যেতে বাসা থেকে বেরিয়েছিলাম। কিন্তু স্টেশনে এসে দেখি কোনো গাড়িই চলছে না। বাধ্য হয়ে প্রাইভেটকারে দ্বিগুণ ভাড়ায় কক্সবাজার যেতে হচ্ছে।

দক্ষিণ চট্টগ্রাম থেকে শহরে ঢোকার প্রধান প্রবেশমুখ চাক্তাইয়ের নতুন ব্রিজ এলাকা। বেলা সাড়ে ১১টায় সেখানে গিয়ে দেখা যায় মানুষদের প্রচুর ভিড়। বাস না চলায় কোনো প্রাইভেটকার আসলেই সেটি ঘিরে ধরছেন যাত্রীরা। সেই সুযোগে যেখানে আগে ১০০ টাকায় পটিয়া-চন্দনাইশের গন্তব্যে যাওয়া যেত সেই ভাড়া এখন দাবি করা হচ্ছে ২০০ টাকা।

কেন বেশি ভাড়া দাবি করছেন সেটি জানতে চাইলে মোহাম্মদ রশিদ নামের একজন প্রাইভেটকার চালক বার্তা২৪.কমকে বলেন, 'ধর্মঘটে ঝুঁকি নিয়ে সড়কে বেরিয়েছি। ধর্মঘটে গাড়ি চালানোর জন্য যে কোনো সময় হামলার শিকার হতে পারি। সেজন্য যাত্রীদের কাছ থেকে চেয়ে কিছু ভাড়া বেশি নিচ্ছি।'

বাস না চলায় কেউ কেউ ট্রাকে-পিক আপে চড়েও ঝুঁকি নিয়ে গন্তব্যে ফিরছিলেন।

পরিবার নিয়ে চন্দনাইশে ফিরতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়েন রানী দাশ। তিনি বলেন, জরুরি বাড়ি যেতে হচ্ছিল। কিন্তু বাস না চলায় বিপদে পড়েছি। এখন বাধ্য হয়ে দ্বিগুণ ভাড়ায় প্রাইভেটকারে যেতে হচ্ছে। আমাদের অপরাধটা কোথায় বুঝতেছি না।

একইভাবে উত্তর চট্টগ্রাম থেকে নগরীতে প্রবেশের তিন মুখ একেখান, অক্সিজেন ও কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকায়ও যাত্রীদের ভোগান্তির শেষ নেই। এই তিন স্টেশনেও দূরপাল্লার বাসের সব কাউন্টার বন্ধ। প্রাইভেটকার, অটোরিকশা, ট্রাক-মানুষ যে যেভাবেই পারছে গন্তব্যে ফিরছে।

গত শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে চট্টগ্রামের পাঁচ জেলায় ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটের এই ঘোষণা দেওয়া হয়। পরে অবশ্য তিনটি পরিবহন সংগঠন ধর্মঘট প্রত্যাখানের ঘোষণা দেয়। কিন্তু এই সংগঠগুলো টেম্পোজাতীয় পরিবহন সংশ্লিষ্ট। ফলে তাদের প্রত্যাখানে তেমন একটা প্রভাব পড়ছে না।

গত সোমবার (২২ এপ্রিল) চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী দুই চুয়েট শিক্ষার্থী নিহত হয়। এর জের ধরে ওইদিন থেকেই শিক্ষার্থীরা ১০ দফা দাবিতে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করে আসছিলেন। গত ২৪ এপ্রিল ঘাতক বাসের চালককে পুলিশ গ্রেফতার করে। এরপরও ছাত্র আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থামাতে ২৫ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করলে ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থীরা গণ পরিবহনে আগুন ধরিয়ে দেয়। এর প্রতিবাদে পরিবহন ধর্মঘটের ঘোষণা দেওয়া হয়।

   

ডিসি সাহেবের বলী খেলার ৬৯তম আসরের চ্যাম্পিয়ন বাঘা শরিফ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কক্সবাজার
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী বলি খেলা শক্তি ও কৌশলের খেলা। যে শক্তি-কৌশল দেখিয়ে কক্সবাজারের ঐতিহ্যবাহী ডিসি সাহেবের বলী খেলার ৬৯তম আসরে মহেশখালীর কালু বলিকে পরাস্ত করে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেন কুমিল্লার বলি বাঘা শরিফ।

শনিবার (১১ মে) বিকেলে কক্সবাজারের ঐতিহ্যবাহী ডিসি সাহেবের বলী খেলার ৬৯তম আসরের সমাপনী হয় বর্ণাঢ্য আয়োজনে। যেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল আহমেদ।

এসময় তিনি বলেন, মাদক, সন্ত্রাসবাদ এবং সমাজের সকল খারাপ কিছু থেকে তরুণ সমাজকে বাঁচানোর পাশাপাশি ঐতিহ্য রক্ষায় এ ধরনের আয়োজন অনেক ভূমিকা রাখছে।

এদিকে, বলি খেলার পাশাপাশি আয়োজিত বৈশাখী মেলায় রয়েছে- নাগরদোলা, হস্ত, কুটির, তাঁত শিল্পসহ নানা ধরনের পণ্যের স্টল।

সমাপনী অনুষ্ঠানে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরানের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন- কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এড. সিরাজুল মোস্তফা, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. জাহিদ ইকবাল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিভীষণ কান্তি দাস, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন ও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রট, বলী খেলা উপ-কমিটির সদস্য সচিব হেলাল উদ্দিন কবির প্রমুখ।

পরে চ্যাম্পিয়ন এবং রানার্সআপসহ বিজয়ীদের মাঝে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি এবং প্রাইজমানি বিতরণ করেন অতিথীরা।

প্রসঙ্গত, কক্সবাজারের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের এক অনন্য অংশ ডিসি সাহেবের বলি খেলা। ১৯৫৬ সালে কক্সবাজার মহকুমা থাকাবস্থায় ‘এসডিও সাহেবের বলি খেলা’ নামে এ খেলার প্রবর্তন হয়। ১৯৮৪ সালে কক্সবাজার জেলায় রূপান্তর হওয়ার পর ‘এসডিও সাহেবের বলী খেলার’ নাম বদলে ‘ডিসি সাহেবের বলি খেলা’ করা হয়।

;

ঈদুল আজহায় মিলতে পারে টানা ৫ দিনের ছুটি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ঈদুল আজহায় মিলতে পারে টানা ৫ দিনের ছুটি

ঈদুল আজহায় মিলতে পারে টানা ৫ দিনের ছুটি

  • Font increase
  • Font Decrease

ঈদুল ফিতরের দুই মাস ১০ দিন পর মুসলমানরা ঈদুল আজহা পালন করে থাকেন। সেই হিসেবে ঈদুল আজহা (কোরবানির ঈদ) আগামী জুন মাসের ১৭ তারিখ (সোমবার) হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর এতেই টানা পাঁচ দিনের ছুটি পাবেন সরকারি চাকরিজীবীরা। এর মধ্যে দুই দিন সাপ্তাহিক আর বাকি তিন দিন ঈদের ছুটি।

সরকারি ছুটির তালিকা অনুযায়ী, কোরবানির ঈদের ছুটি শুরু হবে ঈদের আগের দিন অর্থাৎ ১৬ জুন (রোববার) থেকে। যা চলবে ১৮ জুন (মঙ্গলবার) পর্যন্ত। এর আগে ১৪ ও ১৫ জুন (শুক্র ও শনিবার) সাপ্তাহিক ছুটি। সে হিসাবে মোট পাঁচ দিনের ছুটি মিলছে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।

সারা বিশ্বের মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য প্রতি বছর দিনটি পালন করেন। হিজরি বর্ষপঞ্জি হিসাবে জিলহজ মাসের ১০ তারিখ থেকে শুরু করে ১২ তারিখ পর্যন্ত তিন দিন ঈদুল আজহা চলে। হিজরি চন্দ্র বছরের গণনা অনুযায়ী ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার মাঝে ২ মাস ১০ দিনের ব্যবধান থাকে।

এবার ১০ জিলহজ বা কোরবানির ঈদ হতে পারে জুন মাসের ১৬ বা ১৭ তারিখে। সৌদি আরবের চাঁদ দেখা কমিটির ঘোষণা অনুযায়ী জুন মাসের ১৬ তারিখে দেশটিতে কোরবানির ঈদ পালিত হবে।

বাংলাদেশে সাধারণত সৌদি আরব, কাতার, ওমান, আরব আমিরাত এসব দেশের পরের দিন কোরবানির ঈদ পালন করা হয়। সেই হিসাবে বাংলাদেশে কোরবানির ঈদ পালিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে জুন মাসের ১৭ তারিখে। তবে চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে তারিখে পরিবর্তন হতে পারে।

উল্লেখ্য, পবিত্র ঈদুল ফিতরে সরকারি চাকরিজীবীরা টানা ৫ দিন ছুটি পেয়েছিলেন।

;

১ টাকা ৪৩ পয়সায় ঢাকায় পৌঁছাবে রাজশাহীর আম



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

মাত্র ১ টাকা ৪৩ পয়সায় (প্রতি কেজি) ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনে ঢাকায় যাবে রাজশাহীর বিখ্যাত রসালো আম। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ১০ জুন লোকসান মাথায় নিয়েই পঞ্চমবারের মত চালু হবে 'ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন'। এবার ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনটি ঢাকায় যাবে আইকনিক পদ্মা সেতু হয়ে।

ট্রেনটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর থেকে প্রতিদিন বিকেল ৪টায় ছেড়ে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন হয়ে রাত সোয়া ২টায় ঢাকায় পৌঁছাবে। ট্রেনটি চলাচলের সম্ভাব্যতা যাচাই-বাছাই শেষে সব প্রস্তুতি নিয়েছে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে।

শনিবার (১১ মে) দুপুরে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে এ তথ্য জানানো হয়। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম।

রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার দিন বলেছিলাম রেলকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হবে। এজন্য সবার সহযোগিতা চাই। চাষি ও ব্যবসায়ীদের কম খরচে আম পরিবহনের সুবিধা দিতে প্রধানমন্ত্রী এই ট্রেন দিয়েছেন।

উদাহরণ টেনে রেলমন্ত্রী বলেন, অনেক সময় এমন হয়েছে যে- কোনো অসুস্থ মানুষের পাশে কেউ না থাকলে সে বাঁচে না। ধরেন রেলওয়েও এখন অসুস্থ। তাই চাষি ও ব্যবসায়ীরা আমাদের পাশে থাকেন। আমরা আপনাদের জন্য সম্ভাব্য সর্বোচ্চ সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করবো।

রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সেমিনারে মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেন, নিরাপদে স্বল্প সময়ে ও স্বল্প খরচে আম পরিবহনের লক্ষ্যে আগামী ১০ জুন চালু হচ্ছে ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন। ২০২০ সালে প্রথম ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন চালু করা হয়। ২০২০ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত চার বছর মোট ৩৯ লাখ ৯৫ হাজার ৭৯৮ কেজি আম পরিবহণ করা হয়েছে। এতে সরকারের ৪৬ লাখ ২৯ হাজার ১৪০ টাকা রাজস্ব অর্জিত হয়েছে। তবে অধিক লাভের কথা চিন্তা না করে আমরা আম পরিবহণ ব্যবস্থা আরও নিরাপদ ও সহজ করতে এবং ট্রেনকে জনপ্রিয় করতে চাই। আমরা রাস্তার ওপর চাপ কমাতে চাই। এজন্য যা যা করণীয় তাই আমরা করবো। আমরা চাই কম খরচে রেলের মাধ্যমে এই অঞ্চলের জন্য আম পরিবহন সহজ হোক। কুরিয়ারের বিকল্প হিসেবেই আমরা এটি করতে চাচ্ছি।

এদিকে সেমিনারে জানানো হয়, ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনটিতে মোট ছয়টি লাগেজ ভ্যানের মাধ্যমে ২৮ দশমিক ৮৩ টন আম পরিবহন করা যাবে। তবে এবার ট্রেন যাবে পদ্মা সেতু হয়ে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর স্টেশন থেকে প্রতিদিন বিকেল ৪টায় ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে এই ট্রেন। যাত্রা পথে রহনপুর স্টেশন থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, আব্দুলপুর, ঈশ্বরদী, পোড়াদহ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর ও ভাঙ্গা স্টেশনসহ মোট ১৫টি স্টেশনে যাত্রাবিরতি দেবে। আর ঢাকায় পৌঁছাবে রাত ২টা ১৫ মিনিটে।

রাজশাহী থেকে ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনটিতে রাজধানী ঢাকা পর্যন্ত প্রতি কেজি আম পরিবহণে ভাড়া লাগবে ১ টাকা ৪৩ পয়সা। আর চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে লাগবে ১ টাকা ৪৭ পয়সা, পোড়াদহ থেকে ১ টাকা ১৯ পয়সা, রাজবাড়ী থেকে ১ টাকা ৭ পয়সা, ফরিদপুর থেকে ১ টাকা ১ পয়সা এবং ভাঙ্গা থেকে পড়বে ৯৮ পয়সা।

সেমিনারে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, ২০২০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনে ৩৯ লাখ ৯৫ হাজার ৭৯৮ কেজি আম পরিবহণ করা হয়েছে। ট্রেন ভাড়া পেয়েছে ৪৬ লাখ ২৯ হাজার ১৪০ টাকা।

আর চার বছরে ট্রেনটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রাজশাহী হয়ে ঢাকায় যাতায়াতে তেলই খরচ হয়েছে ৯২ লাখ ৯১ হাজার টাকা। ফলে কয়েক বছরে ট্রেনের লোকসান হয়েছে ৪৬ লাখ ৬১ হাজার ৮৬০ টাকা। এরপরও জনস্বার্থ বিবেচনায় তারা লাভের আশা না করে ট্রেনটি চালাবেন।

এই ব্যাপারে সেমিনারে উপস্থিত আম ব্যবসায়ী ও চাষিরা তাদের নিজস্ব বক্তব্য তুলে ধরে বলেন, ট্রেনে করে আম চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকায় পাঠাতে খুব কম খরচ হলেও বারবার ওঠানামা করার কারণে ঝামেলা বেশি হয়। গ্রাহক পর্যায়ে ডেলিভারিতেও সমস্যা হয়। এতে অনেক আম প্রায় সময় নষ্টও হয়। তাই সড়কপথ ও কুরিয়ার সার্ভিসকেই বেছে নেন অধিকাংশ ব্যবসায়ী।

সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন , রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ও রেলওয়ে মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা, নাটোরের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক সর্দার শাহাদত আলী, রেল মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মো. মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদারসহ রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলার জেলা প্রশাসক, রেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা।

;

যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত আছি: নানক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিএনপি জামায়াতের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক।

শনিবার (১১ মে) মোহাম্মদপুরের গজনবী রোডে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি ও সমাবেশের বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, বিএনপি জামায়াত অপশক্তি দীর্ঘ দশ বছর পর্যন্ত শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়নের পথে বাধা সৃষ্টি করেছে। ধ্বংসের পথ বেছে নিয়েছে। তারিখের পর তারিখ দিয়েও সরকারকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারেনি বিএনপি-জামায়াত।

এসময় তিনি জেনেভা ক্যাম্পের বাসিন্দাদের স্থায়ী বাসস্থানের ব্যবস্থা করার যে প্রতিশ্রুতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিয়েছেন তা শীঘ্রই বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানান।

এছাড়াও গাবতলী থেকে বুড়িগঙ্গা পর্যন্ত বেড়িবাঁধকে ফোর লেন করার প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম বলেছেন, বিএনপি নামক দলটি ভারত জুজুর ভয় দেখাচ্ছে, ভারতের বিরুদ্ধে কথা বলছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে যখন এগিয়ে যাচ্ছি তখন তারা দেশে অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরি করতে চায়। নির্বাচনে তারা বিশ্বাস করে না, পেছনের দরজা দিয়ে আসতে চায়। নির্বাচনের একমাত্র মাধ্যম নির্বাচন, সে জন্য ৫ বছর অপেক্ষা করতে হবে। এছাড়া আর কোনোভাবে ক্ষমতায় আসার সুযোগ নেই। তারেক রহমান যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের নেতৃত্বে আছে তারা ততদিন বিরোধী দলেও আসতে পারবে না। তাই আমার আহবান, তার নেতৃত্ব পরিহার করে নির্বাচনের পথে আসুন।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, তাদের অজুহাত ভারত সরকার আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসিয়েছে, তাদের পণ্য বর্জন করতে হবে। তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা যাবে না। মুক্তিযুদ্ধে যারা আমাদের এক কোটি মানুষকে আশ্রয় দিল, খাবার দিল তাদের বর্জন করে অর্জন করব কাকে? ভারতকে বর্জন করে যদি পাকিস্তানকে অর্জন করতে চান তাহলে মনে রাখবেন সাড়ে তিন হাত বাঁশের লাঠি নিয়ে ওদের বিরুদ্ধে আমরা যুদ্ধ করব।

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লায়লী প্রমুখ।

;