ঢাবি ছাত্রী ধর্ষণের প্রতিবাদে সিলেটে বিক্ষোভ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট
ঢাবি ছাত্রী ধর্ষণের প্রতিবাদে সিলেটে বিক্ষোভ

ঢাবি ছাত্রী ধর্ষণের প্রতিবাদে সিলেটে বিক্ষোভ

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে ধর্ষণের প্রতিবাদে সিলেটে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (৬ জানুয়ারি) দুপুর ২ টায় সিলেট এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে তারা এ বিক্ষোভ করেন। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে অংশ নেন ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।

এছাড়া সাংস্কৃতিক সংগঠন মোহনা, থিয়েটার মুরারিচাঁদ, মুরারিচাঁদ কবিতা পরিষদ, রোভার স্কাউটসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মীরাও মিছিলে অংশ নেন।

আরও পড়ুন: ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ

মিছিল শেষে কলেজের প্রধান ফটকের সামনে সমাবেশ করেন তারা। এ সময় শিক্ষার্থীরা কিছু সময় কলেজের সামনে সিলেট-তামাবিল সড়ক অবরোধ করে রাখেন। পরে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সালেহ আহমেদের অনুরোধ অবরোধ তুলেন শিক্ষার্থীরা৷

এদিকে আগামী মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) এমসি কলেজের সকল বিভাগের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ধর্ষণবিরোধী মানববন্ধন কর্মসূচি করার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

উল্লেখ্য, গত রোববার (৫ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে করে শেওড়া যাচ্ছিলেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে তিনি কুর্মিটোলায় বাস থেকে নামার পর এক ব্যক্তি তার মুখ চেপে পাশের নির্জন স্থানে নিয়ে যান। সেখানে তাকে অজ্ঞান করে ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতন করা হয়।

আরও পড়ুন: ছাত্রী ধর্ষণের প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ, অবরোধ

পরে রাত ১০টার দিকে জ্ঞান ফিরলে তিনি বিষয়টি বুঝতে পারেন। পরে সেখান থেকে অটোরিকশায় করে বাসায় ফেরার পর রাত ১২টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়। বর্তমানে ওই ছাত্রী ট্রমায় ভুগছেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন। ধর্ষণের ঘটনায় ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি মামলা হয়েছে।

   

শ্রমিকরা অর্থনীতির চাকা সচল রাখে: স্পিকার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
শ্রমিকরা অর্থনীতির চাকা সচল রাখে: স্পিকার

শ্রমিকরা অর্থনীতির চাকা সচল রাখে: স্পিকার

  • Font increase
  • Font Decrease

শ্রমিকরাই জাতীয় অর্থনীতির চাকা সচল রাখে বলে বাংলাদেশ ২০২৬ সালের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত হবে বলে মন্তব্য করেছেন- বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি।

রোববার (২৮ এপ্রিল) রাজধানী ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের 'জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস' উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে এসব কথা বলেন।

শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শ্রমিকদের কল্যাণে কলকারখানা জাতীয়করণ করেন। কৃষিভিত্তিক বাংলাদেশ আজ স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে চলেছে। দেশে ব্যাপক শিল্পায়ন হচ্ছে, রফতানি বাণিজ্য বিকাশ লাভ করছে এবং তৈরি পোশাক শিল্প, ঔষধ শিল্প ও আইসিটি খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।

স্পিকার বলেন, বাংলাদেশ শ্রম আইন ও শ্রম আইন বিধিমালায় শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা হয়েছে। শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ গুরুত্বপূর্ণ শ্রমিক অধিকার। উন্নত কর্মপরিবেশ শ্রমিকের কর্মদক্ষতা ও প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন বৃদ্ধি করে। তাই শোভন কর্মপরিবেশ তৈরিতে বিনিয়োগ করতে হবে।

তিনি বলেন, শ্রমিকরা দীর্ঘসময় কর্মস্থলে অতিবাহিত করেন। তাই শ্রমিকদের কর্মস্থলে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস, সুপেয় পানির ব্যবস্থা ও আরামদায়ক পোশাকের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। শ্রমিকদের কর্মপরিবেশ অনুকূল রাখতে সকলকে সচেতন হতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ল্যাকটেটিং মায়েদের জন্য ভাতা চালু করেছেন। প্রত্যেক দফতরে শিশুদের জন্য দিবাযত্ন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নারী শ্রমিকদের কর্মপরিবেশ উন্নত করার দিকে সকলকে দৃষ্টি দিতে হবে।

'সুস্থ শ্রমিক, শোভন কর্মপরিবেশ, গড়ে তুলবে স্মার্ট বাংলাদেশ' জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবসের প্রতিপাদ্যের উদ্ধৃতি দিয়ে স্পিকার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সকলকে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এসময় ২৯টি ফ্যাক্টরিকে গ্রীন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড ২০২৩ দেওয়া হয়। স্পিকার বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার প্রদান করেন।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফদতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিক প্রতিনিধিরা, জাতীয় শ্রমিকলীগের নেতৃবৃন্দ, শ্রমিকবৃন্দ, আমন্ত্রিত অতিথিরা, গণ্যমান্য ব্যক্তিরাসহ গণমাধ্যম কর্মীরা এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

;

চুরির মামলা তদন্ত করতে গিয়ে অস্ত্রের সন্ধান



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

চুরির মামলা তদন্ত করতে গিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাঁচটি অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় চোর চক্রের দুই নারীসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

রোববার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) ড. খ. মহিদ উদ্দীন।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- মো. রাজীব হোসেন রানা (২৮), মো. শাহীন (৪০), মো. আবুল হাসান সুজন (২৫), মো. পারভেজ নুর (৩৮) ও মানিক চন্দ্র দাস (৩৬)।

ড. খ. মহিদ উদ্দীন বলেন, রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজার থানার পূর্ব ইসলামবাগ এলাকার একটি বাড়িতে গত ১২ এপ্রিল চুরির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্তে নেমে অভিযান চালিয়ে চুরির সঙ্গে জড়িত দুই নারীসহ চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। আসামিদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে অস্ত্রের কারবারের সঙ্গে জড়িত থাকার তথ্য পায় তদন্তকারী কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, এই চক্রের মূলহোতা মামুন ২২ মামলার আসামি। মামুনের অন্যতম সহযোগী তার মা হাসিনা। তারা স্থানীয়ভাবে চোর হিসেবে পরিচিতি। চুরি মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে গিয়ে চক্র গড়ে তোলে মামুন। কারাগারে গড়ে তোলা ১০ থেকে ১২ জনের চক্রটি স্থানীয়ভাবে মামুন বাহিনী হিসেবে পরিচিত। তারা নানা কৌশলে বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে চুরি করে আসছিলো।

আসামিদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মামুন বাহিনীর একটি অংশের সদস্য রাজীব হোসেন রানাসহ চক্রের আরও তিন সদস্য প্রায় এক বছর আগে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা এলাকার একটি বাসায় চুরি করে। কিন্তু রহস্যজনক কারণে এ ঘটনায় থানায় কোনো অভিযোগ করেননি ভুক্তভোগী। কারণ ওই বাসা থেকেই টাকা ও স্বর্ণালঙ্কারসহ বেশকিছু অস্ত্র চুরি হয়। ফলে অবৈধ অস্ত্রের মালিক শাহিন কোনো অভিযোগ করেননি। পরবর্তীতে অস্ত্রের মালিক শাহিনকে গ্রেফতার করে অভিযান চালিয়ে পাঁচটি অস্ত্র ও ৩৯ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।

অস্ত্র উদ্ধারের মামলায় গ্রেফতার রানার বিরুদ্ধে ১০টি মামলা, সুজনের বিরুদ্ধে একটি, মানিকের বিরুদ্ধে চারটি ও পারভেজের বিরুদ্ধে দুটি মামলা রয়েছে। বর্তমানে তারা কারাগারে রয়েছেন। এই ঘটনায় দুজন পলাতক রয়েছে বলেও জানান তিনি।

গত এক বছরে চুরি করে পাওয়া অস্ত্রগুলো নানা কৌশলে হাত বদল হয় উল্লেখ করে অতিরিক্ত কমিশনার মহিদ বলেন, মামুনের চক্রটি মূলত চুরির সঙ্গে জড়িত। তবে এই অস্ত্রগুলোর অপব্যবহারের সুযোগ ছিলো। এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে তাতে অস্ত্রগুলো একাধিকবার হাত বদল হয়েছে।

অস্ত্রের প্রকৃত মালিক বৈধ নাকি অবৈধ জানতে চাইলে তিনি বলেন, যার বাসা থেকে অস্ত্রগুলো চুরি হয়েছে। তিনি কোনো অভিযোগ করেননি। এমন কি সে যখন গ্রেফতার হয়েছে তখনও অস্ত্রের বৈধতার কোনো তথ্য দিতে পারেনি। অস্ত্রগুলো তিনি কোথা থেকে সংগ্রহ করেছেন বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।

;

গৃহায়ণের ও গণপূর্তের প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

 

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে সংসদীয় কমিটি। এই অসন্তোষ থেকেই চলমান প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষ না করে নতুন প্রকল্প না নিতে মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করেছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ‘অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত কমিটি’।

রোববার (২৮ এপ্রিল) জাতীয় সংসদ ভবনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত কমিটির দ্বিতীয় বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন ক্যাপ্টেন (অব:) এ বি তাজুল ইসলাম এমপি। কমিটির সদস্য চীফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, মো. মাহবুবউল আলম হানিফ, মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, প্রাণ গোপাল দত্ত, অপাজিতা হক, মো. শাহরিয়া আলম এবং খাদিজাতুল আনোয়ার বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।

বৈঠকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম ও কর্মবন্টন এবং এর আওতাধীন চলমান প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম ও কর্মবন্টন এবং এর আওতাধীন চলমান প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতির উপর সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরা হয়।

বৈঠকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ সমাপ্তকরণ এবং গ্রামীণ মাটির রাস্তাসমূহ টেকসই করণের লক্ষ্যে হেরিং বোন বন্ডকরণ বর্ষাকালের পরিবর্তে শীতকালে করার জন্য কমিটি মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করে। বৈঠকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধিদপ্তরের টেন্ডার আহবান করার কার্য ক্ষমতা ও বিধি বিধান রয়েছে কি না তার তথ্য উপাত্ত আগামী এক মাসের মধ্যে কমিটির কাছে উপস্থাপন করার জন্য মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করা হয়।

বৈঠকে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন চলমান উন্নয়ন প্রকল্পসমূহের বাস্তবায়ন অগ্রগতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করা হয় এবং চলমান প্রকল্পগুলো সমাপ্ত না করে নতুন প্রকল্প গ্রহণ না করার জন্য কমিটি সুপারিশ করে। এছাড়া, ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরের পরিত্যক্ত জমিতে ফ্ল্যাট নির্মাণের ব্যবস্থা করা এবং পূর্বাচল ও ঝিলমিল প্রকল্প সরেজমিনে পরিদর্শনের বিষয়ে কমিটি সুপারিশ করে।

গৃহায়ণ গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিভিন্ন সংস্থা প্রধানরা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়সহ বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

;

শহরের সঙ্গে জেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ



সীরাত মঞ্জুর, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: আনিসুজ্জামান দুলাল

ছবি: আনিসুজ্জামান দুলাল

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম নগর ও পাঁচ জেলায় চলমান ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের কারণে তীব্র ভোগান্তিতে পড়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। নগর ও আশেপাশের জেলাগুলোতে বন্ধ রয়েছে বাস চলাচল। ফলে তীব্র গরমে জরুরী প্রয়োজনে বের হওয়া মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা। এদিকে ধর্মঘটের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অটোরিকশা চালকরা দুই থেকে তিনগুণ অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছেন বলে অভিযোগ যাত্রীদের। পাশের জেলার পাশাপাশি দূরপাল্লার বাসগুলো বন্ধ থাকায় বিছিন্ন হয়ে পড়েছে চট্টগ্রামের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা।

রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল থেকে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে এসব ভোগান্তি চোখে পড়ে। 

সকাল থেকে দক্ষিণ চট্টগ্রামের প্রবেশদ্বার শাহ আমানত সেতু এলাকায় কোনো ধরণের বাস চলাচল করতে দেখা যায়নি। এসময় দীর্ঘক্ষণ যাত্রীদের তীব্র রোদে দাঁড়িয়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়। কেউ কেউ ফেরত গেলেও অনেকে ট্রাকে চড়ে ও দ্বিগুণ ভাড়ায় অটোরিকশা যোগে গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দেন। একই দৃশ্য উত্তর চট্টগ্রামের প্রবেশপথ অক্সিজেন মোড় এলাকায়ও।

জরুরি প্রয়োজনে রাঙামাটি থেকে চট্টগ্রাম শহরে এসেছেন রফিকুজ্জামান। অক্সিজেন এলাকায় পরিবার নিয়ে গাড়ির জন্য তীব্র রোদে দাঁড়িয়ে আছেন। বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমরা জরুরি কাজে চট্টগ্রামে এসেছিলাম। ধর্মঘটের বিষয়টি জানতাম না। এখন বাড়ি যাওয়ার জন্য এখানে এসেছি। এসে দেখি কোন ধরনের গাড়ি নেই, কয়েকটা অটোরিকশা থাকলেও তারা অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করছে। সিএনজি থাকলেও ওরা তিনগুণ ভাড়া চাচ্ছে। আগে জনপ্রতি ২০০ টাকা করে ভাড়া নিতো এখন ৩০০ টাকা চাচ্ছে।’

পাসপোর্টের কাজে সকালে ফটিকছড়ি থেকে মেয়েকে নিয়ে পাসপোর্ট অফিসে গিয়েছেন পঞ্চাশোর্ধ্ব ইউনুছ আহমেদ। তিনি বলেন, ‘সকালে সিএনজি অটোরিকশা করে এসেছি। ভাড়াও ঠিক ছিল। দুপুরে এসে দেখি। ৫০ টাকা ভাড়া বেড়ে গেছে। মানে আসতে নির্ধারিত ভাড়া নিছে, যেতে অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করছে।’

শহরের সঙ্গে জেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ। ছবি: আনিসুজ্জামান দুলাল
  

এদিকে খাগড়াছড়ি থেকে কাজির দেউরিতে চাকরির ইন্টারভিউ দিতে আসা রাকিব হোসেন বলেন, ‘বাস নেই তাই সিএনজি করে ভেঙে ভেঙে যাব। ভাড়া অনেক বেশি চাচ্ছে, এটা আসলে জুলুম হয়ে যাচ্ছে। আমাদের দেশে কোন একটি কিছু হলে অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করে চালকরা। এটির সমাধান হওয়া দরকার। বাস নেই, সেজন্য অটোরিকশা করে ফটিকছড়ি যাব, সেখান থেকে আবার মানিকছড়ি যাব।’

অক্সিজেন এলাকায় দাঁড়িয়ে দুর্ভোগের কথা জানাচ্ছিলেন মিনাল চাকমা নামের ৬০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধা। তিনি বলেন, ‘খাগড়াছড়ি যাব, কিন্তু অনেকক্ষণ রোদের মধ্যে দাঁড়িয়েও কোন বাস পাই নাই। সিএনজি চললেও তারা অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করছে। আগে বাসে করে ২২০ টাকা নিতো। আজ সিএনজিতে ৫০০ টাকা চাচ্ছে ভাড়া।’

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক-পশ্চিম) তারেক আহমেদ জানান, স্বাভাবিকভাবেই মানুষের দুর্ভোগ হচ্ছে। শহরে কিছু বাস চলছে। তবে দূরপাল্লার গাড়ি বন্ধ আছে। অলঙ্কার, একে খান মোড় ও কদমতলী থেকে দূরপাল্লার গাড়ি ছাড়ছে না।

কোথাও তেমন কোনো গণ্ডগোলের খবর আমরা পাইনি। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। দ্রুত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে ধর্মঘটের ডাক দেয়া বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মনজুর আলম চৌধুরী বার্তা২৪.কমকে বলেন, পরিবহন ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসক আমাদেরকে ডেকেছেন। আমরা সেখানে আমাদের দাবিগুলো উত্থাপন করব। আমাদের যে চার দফা দাবি এগুলো যৌক্তিক দাবি। এখানে আমরা দেশে প্রচলিত আইনে যেটা হওয়ার সেটার কথাই বলেছি। আমাদের যে গাড়ি ক্ষতি করা হয়েছে তার ক্ষতিপূরণ দাবি করছি। চুয়েট কর্তৃপক্ষকে গাড়িগুলোর ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং দেশে নিয়ম না মেনে যে অবৈধ গাড়িগুলো চলাচল করছে, সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা চাই প্রত্যেক জিনিসের আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেয়া হোক। চুয়েটের নিহত শিক্ষার্থীদের আমরা আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেছি। এরপরও গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। দুই ছাত্র মারা গিয়েছে সেটা কি তাদের দোষ নাকি গাড়ির দোষ। বিষয়টি প্রশাসন বা তদন্ত কমিটি দেখবে।

বৈঠকের পর ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হবে কি না জানতে চাইলে এই পরিবহন মালিক নেতা বলেন, আমাদের দাবিগুলা আদায় না হলে আমরা ধর্মঘট চলমান রাখবো। আমরা সরকারকে বিব্রত করতে চাই না। আমরা জনগণের সেবা করার জন্য গাড়ি চালাচ্ছি। আমাদের নিরাপত্তা এবং ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

আমাদের ধর্মঘটের আওতায় সব গাড়ি বন্ধ। যে একটি সংগঠন প্রত্যাহার করেছে এদের কোন গাড়ি নেই। আমাদের বাস মালিকদের সব সংগঠন ঐক্যবদ্ধভাবে আছে। তারা সবাই ধর্মঘট পালন করছে বলেও জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, সোমবার (২২ এপ্রিল) চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী দুই চুয়েট শিক্ষার্থী নিহত হয়। এর জের ধরে ওইদিন থেকেই শিক্ষার্থীরা ১০ দফা দাবিতে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করে আসছিলেন। গত ২৪ এপ্রিল ঘাতক বাসের চালককে পুলিশ গ্রেফতার করে। এরপরও ছাত্র আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থামাতে ২৫ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করলে ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থীরা গণ পরিবহনে আগুন ধরিয়ে দেয়। এর প্রতিবাদে পরিবহন ধর্মঘটের ঘোষণা দেওয়া হয়।

;