সব অপরাধে এক শাস্তি ‘সাময়িক বরখাস্ত’



শাহরিয়ার হাসান, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
বাংলাদেশ পুলিশ

বাংলাদেশ পুলিশ

  • Font increase
  • Font Decrease

হাজারো অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ পাওয়া যায় পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে। মাদক বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, অপহরণ, খুন, ছিনতাই, নির্যাতন, ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়, মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া, যৌন হয়রানি এমনকি ধর্ষণ ও ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগও রয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দফতরের বার বার কঠোর সর্তকতা, নির্দেশনার পরেও থেমে নেই পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের অপরাধ কর্ম। তবে অপরাধ করে পার পায়নি তারা। এসেছে শাস্তির আওতায়। কিন্ত সেই শাস্তি অপরাধের তুলনায় খুবই নগণ্য।

পুলিশ সদস্যদের অপরাধ আর শাস্তি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বড় অভিযোগ প্রমাণিত হলে পুলিশ সদস্যদের যে বিভাগীয় শাস্তি দেওয়া হয় সেটা শুধুই ‘সাময়িক বরখাস্ত’।

তথ্য বলছে, ২০১৮ সালে ১২ হাজার ৭৩৩ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে শাস্তি নামমাত্র। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের এক শতাংশেরও চাকরি যায়নি। সাময়িক বরখাস্ত বা দূরে কোথাও পোস্টিংয়ে আটকে আছে পুলিশের যত অপরাধ।

অথচ পুলিশ প্রবিধান বলছে উল্টো কথা, পিআরবি-১৮৬১ (পুলিশ প্রবিধান) অনুযায়ী কোন পুলিশ সদস্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়ালে তার বিরুদ্ধে দুই ধরনের বিভাগীয় শাস্তির (লঘু ও গুরু) বিধান আছে। গুরুদণ্ডের আওতায় চাকরি থেকে বরখাস্ত, পদাবনতি, পদোন্নতি স্থগিত, বেতন বৃদ্ধি স্থগিত ও বিভাগীয় মামলা হয়। যেটা এই হাজারো অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে দেখা যায় নাই বললেই চলে।

তবে ছোট অনিয়ম বা অপরাধের জন্য দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার, অপারেশনাল ইউনিট থেকে পুলিশ লাইন্স বা রেঞ্জে সংযুক্ত করে লঘুদণ্ড দেওয়ার যে বিধান রয়েছে সেই সংখ্যাটিই সিংহভাগ।

পুলিশ সদর দফতর সূত্র বলছে, গত ৯ বছরে ১ লাখ ৫০ হাজারের কিছু বেশি পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে নানা অপরাধে জড়ানোর অভিযোগ ওঠে। সত্যতা প্রমাণ শেষে, তাদের মধ্যে ১ লাখ ২০ হাজার ১৯১টি ঘটনায় পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নিয়েছে পুলিশ সদর দফতর। কিন্ত সেই শাস্তির হাতেগোণা কয়েকজন ছাড়া বাকি সবারই বড় অপরাধের জন্য শাস্তি হয়েছে সাময়িক বরখাস্ত।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে, পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, অপরাধের ওপর ভিত্তি করে পুলিশের সদস্যদের শাস্তি হয়। বিভাগীয় শাস্তির ক্ষেত্রে সাধারণত দায়িত্বে অবহেলা, ক্ষমতার অপব্যবহার, অপেশাদার আচরণ, উৎকোচ গ্রহণ ইত্যাদি গুরুত্ব পায়। তাছাড়া গুরু অপরাধে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ারও বিধান আছে।

তবে এসব ঘটনায় পুলিশ নিয়ে কাজ করা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, পুলিশ ছোট অপরাধ করলে কোন কোন ক্ষেত্রে কিছু সময়ের জন্য তাদের কোথাও সংযুক্ত করা হয়। বড় অপরাধ করেও খুব কমসংখ্যক ঘটনায় পদাবনতি হয়, ইনক্রিমেন্ট কাটা পড়ে। কিন্তু পুলিশ বাহিনী থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনা নেই বললেই চলে। সাধারণত সাময়িক বরখাস্ততেই আটকে থাকে তাদের ফাইল।

একই বিষয়ে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক নূর মোহাম্মাদ বলেন, একটা সংখ্যক পুলিশ সদস্য অপরাধে জড়িয়েছে, আবার তাদের শাস্তি হচ্ছে। এর মানে পুলিশ জবাবদিহিতার আওতায় আছে। সবসময় যে বড় শাস্তি হয় বিষয়টা এমন না। তবে বিভাগীয় শাস্তি হয় না এমন ঘটনাও নেই।

সাবেক আইজিপি আরো বলেন, পুলিশের ভাবমূর্তি উদ্ধারে পুলিশ বাহিনীকেই এগিয়ে আসতে হবে। তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে পারলেই অপরাধ প্রবণতা কমবে৷

   

আমতলীতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙন, তলিয়ে গেছে ৩ গ্রাম



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরগুনা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঘূর্ণিঝড় রিমলের প্রভাবে বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পায়রা (বুড়িশ্বর) নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বরগুনার আমতলী উপজেলার আরপাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের বালিয়াতলী গ্রামে নির্মাণাধীন একটি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে গেছে। এতে পানিতে তলিয়ে গেছে ওই ইউনিয়নের তিনটি গ্রাম।

রবিবার (২৬ মে) দুপুরে পায়রা (বুড়িশ্বর) নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ ফুট উচ্চে পানি প্রবাহিত হওয়ায় উপকূলীয় এলাকাসহ আমতলীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত এবং আরপাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের বালিয়াতলীতে পায়রা (বুড়িশ্বর) নদীর তীর ঘেষে নির্মাণাধীন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৪০ মিটার ভেঙে ৩টি গ্রাম বালিয়াতলী, উত্তর ঘোপখালী ও পশুরবুনিয়া গ্রাম তলিয়ে গেছে।

পানিতে ওই তিন গ্রামের মানুষের ঘর-বাড়ি ও পুকুর তলিয়ে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হওয়ার পাশাপাশি দুই শতাধিক পরিবারের ঘর-বাড়ি পানির নিচে থাকায় তাঁরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ আশরাফুল আলম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) তারেক হাসান ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জামাল হুসাইন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় উপজেলা প্রশাসন ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে মানুষজন তেমন যায়নি বলে জানায় ঘূর্ণিঝড় রিমালে কাজ করা কয়েকটি সেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরা।

বঙ্গোপসাগর তৎসংলগ্ন পায়রা (বুড়িশ্বর) নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ ফুট পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে।

বালিয়াতলী গ্রামের শহিদুল ইসলাম, খবির উদ্দিন, সাহেদা ও হোসনেআরা বেগম বলেন, নতুনভাবে নির্মাণ করা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে পানিতে ঘর-বাড়ী, পুকরসহ সবকিছুই তলিয়ে গেছে। তারা আজ দুপুরে রান্না পর্যন্ত করতে পারেননি। ভাটায় পানি নেমে যাওয়ার পরে রান্না করে তারপর তারা খাবার খেয়েছেন। তাদের অভিযোগ দায়সারাভাবে বাঁধ নির্মাণ করে আবার তা অল্প দিনের মধ্যেই নদীতে ভেঙে যায়।

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডেও নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব বলেন, বেশ কিছু জায়গায় বেড়িবাঁধে ভাঙনের খবর পেয়েছি ভাঙন রোধে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অধিক জোয়ার ও বৃষ্টিতে যে সকল এলাকার বেড়িবাধের নাজুক অবস্থা তৈরি হয়েছে সেই এলাকাগুলোতে নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। তাৎক্ষনিকভাবে ভাঙনের হাত থেকে উপকূলবাসীকে রক্ষা করতে জরুরী মেরামতে অংশ হিসেবে ৮০০ জিও ব্যাগ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ আফরাফুল আলম বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় যথেষ্ট প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ১০১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পায়রা (বুড়িশ্বর) নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে আরপাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভাঙে গেছে। ভাঙা এলাকা পরিদর্শন করেছি। বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের বাহিরে বসবাসরত মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসতে কাজ করছি ও বিভিন্ন ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

;

চট্টগ্রাম বিমানবন্দর সড়কে দুই শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
দুই শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

দুই শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম নগরীর শাহ আমানত বিমানবন্দর জননেত্রী শেখ হাসিনা সড়কের ভিআইপি অংশে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। এসময় প্রায় দুই শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।

রোববার (২৬ মে) দুপুরে চসিকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চৈতী সর্ববিদ্যা এ অভিযান পরিচালনা করেনG

অভিযানে ফুটপাত ও রাস্তার দুই পাশের অবৈধ ঘর-বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং বাটার ফ্লাই পার্কের সামনের প্রায় দুই শতাধিক স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। উচ্ছেদ অভিযানের পর সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী এলাকাটি পরিদর্শন করে উদ্ধার হওয়া জায়গায় বেষ্টনী তৈরির নির্দেশ দেন।

অভিযানকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে সহায়তা করেন চসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী আশিকুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ।

;

বরগুনায় বাঁধ ভেঙে ১০ গ্রাম প্লাবিত

  ঘূর্ণিঝড় রিমাল



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরগুনা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে জোয়ারের চাপে বরগুনায় বেড়িবাঁধ ভেঙে ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

রোববার (২৬ মে) সকাল থেকেই বরগুনার আকাশ ছিলো মেঘাচ্ছন্ন। ঘূর্ণিঝড় রিমাল গতি সঞ্চার করে উপকূলের দিকে এগিয়ে আসতে আসতে রুদ্র মূর্তি ধারণ করে বরগুনার প্রকৃতি। বেলা বাড়ার সাথে সাথে বাড়তে থাকে বাতাসের গতিবেগ। সেই সাথে থেমে থেমে জড়ো বৃষ্টি ঝড়ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের পোটকাখালী, ডালভাঙা ও নলী এলাকা, নলটোনা ইউনিয়নের নিশানবাড়িয়া, নলটোনা, সোনাতল ও কুমিড়মারা, বুড়িরচর ইউনিয়নের গুলবুনিয়া, বাঁশবুনিয়া, চালিতাতলী, আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়ন, বদরখালী ইউনিয়নের ফুলঝুড়ি, কুমড়াখালী ও গুলিশাখালী এলাকা, পাথরঘাটা উপজেলার সদর ইউনিয়নের পদ্মা, জীনতলা, টেংরা, কালমেঘা, কাকচিড়া, তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া, ছোটবগী, নিদ্রার চর, তেতুলবাড়িয়া, খোট্টার চর, সোনাকাটা, নিউপাড়া, আমতলী উপজেলার সদর ইউনিয়ন, গুলিশাখালী, বামনা উপজেলার রামনা, বদনীখালী, বেতাগী উপজেলার কালিকাবাড়ি, ঝিলবুনিয়া, ছোট মোকামিয়া এলাকার বাঁধের বাইরের প্রায় লক্ষাধিক বাড়ি-ঘর অধিক জোয়ারে নিমজ্জিত হয়েছে।

সরেজমিনে বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের মাছখালী গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, নদী তীরবর্তী মানুষ বেড়িবাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়েছে। উচ্চ জোয়ারের চাপে আশ্রয় নেওয়া সেই বেড়িবাঁধ ভেঙে গিয়ে প্লাবিত হয়েছে ৬টি গ্রাম। প্লাবিত এলাকায় জোয়ারের পানি ঘরের মধ্যে ঢুকে যাওয়া নষ্ট হয়ে গেছে রান্নার চুলা ও নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্র। এছাড়াও ঘরের ভিতরে পানি প্রবেশ করায় ব্যহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। আশ্রয় কেন্দ্র কিংবা নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার পথ দুর্ঘম হওয়ায় অনেকটাই বাধ্য হয়ে ঘরের ভিতরই আশ্রয় নিয়েছেন তারা। যে বেড়িবাঁধটিতে ভাঙন দেখা দিয়েছে রাতে যদি জোয়ার ও বৃষ্টি অব্যাহত থাকে তাহলে পুরো বেড়িবাঁধটির এক কিলোমিটার জায়গাজুড়ে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম বলেন, বেলা ১১টার দিকে বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় এখানকার ছয়টি গ্রাম। জোয়ার চলে গেলে পানি যেভাবে নেমে যাওয়ার কথা সেভাবে না নামায় অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। রাতে যদি পানির পরিমাণ বৃদ্ধি পায় তাহলে তাদের সহায় সম্বল সবকিছু নষ্ট হয়ে যাবে।

একই এলাকার বাসিন্দা সালাম মাঝি বলেন, বছরের পর বছর এভাবে গাঙ্গেও পানিতে ভাসছি। কতো মানুষ আসে কতো মানুষ যায় কিন্তু আমাগো বেড়িবাঁধের কোন ব্যবস্থা হয় না। সরকার যদি আমাগো এই বেড়িবাঁধ করে দিতো তাহলে আমরা নিরাপদে থাকতে পারতাম।

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব বলেন, বেশ কিছু জায়গায় বেড়িবাঁধে ভাঙনের খবর পেয়েছি। ভাঙন রোধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অধিক জোয়ার ও বৃষ্টিতে যে সকল এলাকার বেড়িবাঁধের নাজুক অবস্থা তৈরি হয়েছে সেই এলাকাগুলোতে নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে ভাঙনের হাত থেকে উপকূলবাসীকে রক্ষা করতে জরুরি মেরামতে অংশ হিসেবে ৮০০ জিও ব্যাগ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

বরগুনার জেলা প্রশাসক মোহা. রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় আমরা সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছি। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে উপকূল তীরবর্তী মানুষ জনকে নিয়ে আসা হয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় বেড়িবাঁধ ভাঙনের খবর পাওয়া গেছে। সেই সব এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসার জন্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

;

হাতিয়ায় ১৪ গ্রাম প্লাবিত, পানিবন্দি হাজারো মানুষ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নোয়াখালী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের নয়টি গ্রামসহ ১৪টি গ্রাম জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের প্রধান সড়ক ও বাজারগুলো প্লাবিত রয়েছে।

রোববার (২৬ মে) দুপুর থেকে শুরু হওয়া জোয়ারে এসব গ্রাম প্লাবিত হয়। জোয়ারের প্রভাবে হাতিয়ায় নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৪-৫ ফুট পানি বেড়ে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন প্রায় ৪০ হাজার মানুষ।

প্লাবিত হওয়া গ্রামগুলো হলো, নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের মোল্লা গ্রাম, মুন্সি গ্রাম, আদর্শ গ্রাম, বান্দাখালী গ্রাম, ডুবাইয়ের খাল গ্রাম, ইসলামপুর গ্রাম, আনন্দগুচ্ছ গ্রাম,বাতায়ন গ্রাম,বসুন্ধরা গ্রাম ও ধানসিঁড়ি গ্রাম, পূর্বাচল গ্রাম,হরণী ইউনিয়নের চর ঘাসিয়া, বয়ারচর গ্রাম, নলচিরা ইউনিয়নের তুফানিয়া গ্রাম, তমরদ্দি ইউনিয়নের পশ্চিম তমরদ্দি গ্রাম।


স্থানীয় বাসিন্দা জিল্লুর রহমান বলেন, সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়া টানা বর্ষণ অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে পুরো উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। ফলে এখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। পানি ঢুকে পড়েছে বাড়িগুলোতে।

স্থানীয় বাসিন্দা ফিরোজ আলম বলেন, নিঝুম দ্বীপে প্রায় ৪০ হাজার লোকের বসবাস। ইউনিয়নটির সাগরের একবারে কাছে হলেও নেই কোনো বেড়িবাঁধ। যার ফলে জোয়ারের সময় চারদিক দিয়ে একসঙ্গে এই ইউনিয়নে পানি প্রবেশ করতে শুরু করে।

নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল আফছার মো.দিনাজ উদ্দিন বলেন, রোববার দুপুর থেকে টানা বর্ষণ ও জোয়ারের পানি ঢুকে নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের ৯টি গ্রাম প্লাবিত হয়। এতে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার মানুষ ঘর বন্দি হয়ে পড়েছে। পানিতে ভেসে গেছে গবাদিপশুর খাদ্য ও মাছের ঘের। তলিয়ে গেছে শাকসবজিসহ নানা ফসলের জমি। বেড়িবাঁধ না থাকায় জোয়ারের পানি ঢুকে নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন প্রায় প্লাবিত হয়।

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শুভাশিস চাকমা বলেন, জোয়ার পানিতে হাতিয়ার ছয়টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। হাতিয়ার বিভিন্ন নৌ রুটে সি-ট্রাক, ট্রলার চলাচল বন্ধ রয়েছে। যাত্রীদের জানমাল ও নিরাপত্তার স্বার্থে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত হাতিয়ার সঙ্গে সব চলাচল বন্ধ থাকবে। হাতিয়াতে ২৪২ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক বিষয়ে খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে।

;