তিন দিন আগে পুতিন আমার স্বামীকে হত্যা করেছে: নাভালনির স্ত্রী



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাশিয়ার বিরোধী নেতা আলেক্সি নাভালনির স্ত্রী সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বলেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তার স্বামীকে তিন দিন আগেই হত্যা করেছেন। কারণ, তিন দিন পর তাদের সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে কাজ শুরু করার কথা ছিল।

সোমবার প্রকাশিত একটি ভিডিওতে চোখের পানি ধরে রেখে ইউলিয়া নাভালনায়া বলেন, ‘তিন দিন আগে ভ্লাদিমির পুতিন আমার স্বামী আলেক্সি নাভালনিকে হত্যা করেছেন।’

ইউলিয়া আরও বলেন, ‘তিন বছর যন্ত্রণা ও অত্যাচারের পর আলেক্সি জেল কলোনিতে মারা যান।’

তিনি বলেন, ‘আলেক্সি এবং নিজেদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে জিনিসটি আমরা করতে পারি, তা হলো লড়াই চালিয়ে যাওয়া। আগের চেয়ে আরও মরিয়া হয়ে এবং আরও প্রবলভাবে লড়াই চালিয়ে যাবো আমরা।’

শোকার্ত ও ক্ষুব্ধ ইউলিয়া বলেন, ‘আমাদের যুদ্ধের বিরুদ্ধে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে, সুষ্ঠু নির্বাচন এবং বাক স্বাধীনতার জন্য লড়াই করার জন্য লড়াই করার প্রতিটি সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।"

তিনি বলেন, ‘আমরা জানি, ঠিক কেন পুতিন তিন দিন আগে অ্যালেক্সিকে হত্যা করেছিল। আমরা নিশ্চিতভাবে খুঁজে বের করবো কে এই অপরাধটি করেছে এবং কীভাবে এটি করা হয়েছে। আমরা নাম বলব এবং ওই হত্যাকারীর মুখ সবাইকে দেখাবো।’

ক্রেমলিন সোমবার এর আগে বলেছিল যে, নাভালনির মৃত্যুর তদন্ত চলছে। কিন্তু, পশ্চিমা সরকারগুলো নিন্দা করে বলেছে, পুতিন এই মৃত্যুর জন্য দায়ী।

এদিকে, রাশিয়ার তদন্ত কর্মকর্তারা দেশটির প্রয়াত বিরোধী দলীয় নেতা আলেক্সি নাভালনির মা এবং তার আইনজীবীদের বলেছেন, কারাগারে তার মৃত্যুর তদন্তের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। সোমবার নাভালনির মুখপাত্র রয়টার্সকে এ কথা জানিয়েছেন।

নাভালনির মুখপাত্র কিরা ইয়ারমিশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ পোস্ট করা এক বার্তায় বলেন, ‘এ তদন্ত কতো দিন চলবে তা জানানো হয়নি। নাভালনির মৃত্যুর কারণ এখনও জানা যায়নি। এক্ষেত্রে তারা মিথ্যা বলছে এবং সময় ক্ষেপণ করছে।’

এদিকে, সাইবেরিয়ার একটি হাসপাতালের মর্গে রাশিয়ার বিরোধীদলীয় নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনির থেঁতলানো মরদেহ পাওয়া গেছে বলে সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ। মৃত্যুর দুই দিন পর তার মরদেহের সন্ধান পাওয়া গেল।

রাশিয়ায় পুতিনবিরোধী গণমাধ্যম নোভায়া গেজেটার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্যারামেডিক বলেছেন, নাভালনির মরদেহ সালেখার্ড অঞ্চলের ক্লিনিক্যাল হাসপাতালে আনা হয়। মরদেহের মাথা ও বুকে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

তিনি বলেন, ‘যারা মরদেহটি নিয়ে এসেছিলেন তারা বলেছেন যে এমন আঘাত খিঁচুনির কারণে হতে পারে। লোকটির খিঁচুনি শুরু হলে তাকে শান্ত রাখার চেষ্টা করা হয়েছিল। এ সময় শরীরে আঘাত লাগে। বুকেও ছিল আঘাতের দাগ। এরপর সম্ভবত হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু ঘটে।’

রুশ কারা কর্মকর্তাদের মতে, শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রুশ আর্কটিকের নৃশংস কারাগার হিসেবে কুখ্যাত আইকে ৩-তে কিছুক্ষণ হাঁটার পর অসুস্থ হয়ে মারা যান ভ্লাদিমির পুতিনের কট্টর সমালোচক হিসেবে পরিচিত নাভালনি।

স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা জানান, এখনও ময়নাতদন্ত হয়নি। এ ছাড়া মস্কো থেকে দুটি অনির্ধারিত ফ্লাইট শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সালেখার্ডে পৌঁছেছিল। সম্ভবত ময়নাতদন্ত বিশেষজ্ঞদের নিয়ে এসেছিল সেই ফ্লাইট।

গণমাধ্যমকর্মীরা আরও জানান, শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে পৌঁছেছিল প্রথম বিমান। তদন্ত কমিটির গাড়িও তখন দেখা গেছে। দেড় ঘণ্টা পর পৌঁছেছে দ্বিতীয় বিমান।

রুশ পর্যবেক্ষকদের ধারণা, সরকারের পক্ষে ময়নাতদন্তের বিশেষজ্ঞ দলকে মস্কো থেকে পাঠানো হতে পারে। তারা মৃত্যু সম্পর্কে এমন একটি সনদপত্র দেবে যাতে ক্রেমলিন সন্তুষ্ট হয়।

পর্যবেক্ষকেরা আরও বলেন, আইকে ৩ থেকে একজন মৃত বন্দীর লাশ পৌরসভার মর্গের পরিবর্তে হাসপাতালের মর্গে পাঠানো কিছুটা অস্বাভাবিক। ক্রেমলিনের বিরুদ্ধে যেখানে বিক্ষোভ নিষিদ্ধ সেখানেই এখন চলছে বিরল প্রতিবাদ। বিক্ষোভ হচ্ছে রাশিয়ার বাইরেও।

   

চাঁদে যাচ্ছে পাকিস্তান



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারতের পর এবার চাঁদে যাচ্ছে পাকিস্তান। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী শুক্রবার যাত্রা শুরু হবে তাদের। এর মাধ্যমে চীনের সহায়তায় দেশটির পতাকাখচিত প্রথম কোনো মহাকাশযান চাঁদে অবতরণ করবে। চীনের সহায়তায় দেশটির প্রথম মহাকাশযানটি চাঁদের পথে পাড়ি দিচ্ছে।

পাকিস্তানের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব স্পেস টেকনোলজি (আইএসটি) জানিয়েছে, শুক্রবার দেশটির ঐতিহাসিক চন্দ্র মিশন শুরু হবে।

জানা গেছে, এই প্রকল্পটি সম্পন্ন হচ্ছে চীনের সহায়তায়। চীনের মাটি থেকেই চাঁদের উদ্দেশে রওনা দেবে পাকিস্তানের চন্দ্রযান।

খবরে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব স্পেস টেকনোলজি (আইএসটি) জানিয়েছে, পাকিস্তানের ঐতিহাসিক চন্দ্র মিশন আগামী শুক্রবার স্থানীয় দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে চাঁদের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবে। চীনের তৈরি চ্যাং ওঁ-৬ চন্দ্রযানে করে দেশটির হাইনান প্রদেশের উৎক্ষেপণকেন্দ্র থেকে রওনা হবে। পাকিস্তানের এই চন্দ্র মিশনের নাম দেওয়া হয়েছে আইকিউব-কিউ।

চীনের এ মিশনটি পাকিস্তানের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ কারণ এটি পাকিস্তানের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি কিউবস্যাট স্যাটেলাইট আইকিউব-কিউ বহন করছে। কিউবস্যাট হল ক্ষুদ্রাকৃতির উপগ্রহ যা সাধারণত ছোট আকার এবং মানসম্পন্ন নকশায় তৈরি করা হয়।

চ্যাংয়ে-৬ মিশনের মাধ্যমে চাঁদের অন্ধকার দিক থেকে ধূলা ও পাথরের নমুনা পৃথিবীতে ফেরত আনতে চায় চীন।

বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসাবে চাঁদের মাটিতে নিয়ন্ত্রিত অবতরণ করে ভারত। ভারতীয় মহাকাশসংস্থা ইসরোর বিজ্ঞানীদের নিরলস চেষ্টায় এটি সম্পন্ন হয়।

;

ভারতীয় গুপ্তচর বহিষ্কার করেছিল অস্ট্রেলিয়া



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রতিরক্ষা প্রকল্প, বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ও বাণিজ্য সম্পর্ক বিষয়ক নথি চুরির চেষ্টা করায় ২০২০ সালে একাধিক ভারতীয় গুপ্তচর বহিষ্কার করেছিল অস্ট্রেলিয়া। চলতি সপ্তাহে এক প্রতিবেদনে এ খবর প্রকাশ করেছে অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন।

ভারতীয় গুপ্তচর বহিষ্কারের বিষয়টি ২০২১ সালে অস্ট্রেলিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা অস্ট্রেলিয়ান সিকিউরিটি ইনটেলিজেন্স অর্গানাইজেশন (এএসআইও) প্রধান মাইক বুরগিসের বার্ষিক প্রতিবেদনেও উল্লেখ করা হয়েছিল বলেও খবরে বলা হয়েছে।

ঠিক কতজন গুপ্তচর বহিষ্কার করা হয়েছিল, তা অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি। তবে গত সোমবার (২৯ এপ্রিল) ওয়াশিংটন পোস্টে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২০ সালে ভারতীয় দুজন গুপ্তরচরকে বহিষ্কার করেছিল অস্ট্রেলিয়া। যদিও ওই ঘটনার পরও দিল্লির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের কথা বলে আসছে ক্যানবেরা।

অ্যানুয়াল থ্রেট অ্যাসেসমেন্ট নামে ওই বার্ষিক প্রতিবেদনে অস্ট্রেলিয়ার গোয়েন্দাপ্রধান জানিয়েছিলেন, দুই বিদেশি গুপ্তচর কয়েক বছর ধরে অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের কাজ করছিলেন। তবে সেই সময় তিনি দুই গুপ্তচরের জাতীয়তা প্রকাশ করেননি।

বুরগিস আরও বলেছিলেন, ২০২০ সালে বিদেশি গুপ্তচরেরা বর্তমান ও সাবেক কয়েকজন রাজনীতিবিদ, একটি বিদেশি দূতাবাস এবং রাজ্য পর্যায়ের পুলিশ পরিষেবাকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করেছিল। এছাড়া তারা নিজ দেশের প্রবাসীদের ওপরও নজর রাখছিল।

ওয়াশিংটন পোস্টের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের পর অনেক সংবাদমাধ্যম এ নিয়ে খবর প্রকাশ করেছে। এসব প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই দুজন ভারতীয় গুপ্তচর ছিলেন।

অস্ট্রেলিয়া সরকার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের এমন দাবি স্বীকার কিংবা অস্বীকার কোনোটাই করেনি। তবে বলা হয়েছে, অস্ট্রেলিয়া সরকার বিদেশি হস্তক্ষেপ প্রতিরোধ করতে আগ্রহী। বুধবার (১ মে) এক সংবাদ সম্মেলনে অস্ট্রেলিয়ার অর্থমন্ত্রী জিম চালমার্স বলেন,  আমি এসব গালগল্পে ঢোকার কথা কখনোই বলব না।

ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়ে জিম আরও বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের বেশ ভালো সম্পর্ক রয়েছে। এটা গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সম্পর্ক। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় উভয় পক্ষের প্রচেষ্টার ফলে দুই দেশ অনেকটা কাছাকাছি এসেছে।

 

;

বিলিয়নিয়ার হওয়ার পথে গুগলের সিইও



Asma Islam
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিলিয়নিয়ার হচ্ছেন অ্যালফাবেট ইনকর্পোরেটেড বা গুগলের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) সুন্দর পিচাই। তিনিই প্রথম কোনো ব্যক্তি যিনি গুগলের প্রতিষ্ঠাতা না হয়েও এই বিরল মাইলফলক অর্জনের পথে রয়েছেন।

বর্তমানে ৫১ বছর বয়সী পিচাই ২০১৫ সালে গুগলের নির্বাহী কর্মকর্তা হওয়ার পর থেকে কোম্পানি স্টক বা শেয়ার ৪০০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। একই সময়ে এসঅ্যান্ডপি ও নাসদাককেও ছাড়িয়ে গেছে।

কোম্পানির ক্লাউড কম্পিউটিং ইউনিটে এআই-চালিত প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে কোম্পানির প্রথম-ত্রৈমাসিক আয় প্রত্যাশাকেও ছাড়িয়ে গত সপ্তাহে নতুন রেকর্ডে গড়েছে। এটি প্রথমবারের মতো লভ্যাংশও চালু করেছে।

ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার্স ইনডেক্স অনুসারে, চাঙ্গা স্টক মূল্যের পাশাপাশি গুগলের এই রমরমা অবস্থাই এর প্রধান নির্বাহী সুন্দর পিচাইকে বিশ্বের সর্বোচ্চ বেতনভোগী নির্বাহীদের অন্যতম করে তুলেছে। যার জোরে তার সম্পদ প্রায় ১ বিলিয়নের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে খুব অল্পদিনের মধ্যে বিলিয়নিয়ার মর্যাদা পেয়ে যাবেন পিচাই।

ভারতের চেন্নাইয়ে জন্ম নেয়া সুন্দর পিচাইয়ের মূল নাম পিচাই সুন্দরারাজন। তিনি একটি দুই কক্ষের অ্যাপার্টমেন্টে বড় হয়েছেন যেখানে তিনি ও তার ছোট ভাই বসার ঘরের মেঝেতে ঘুমাতেন। শৈশবের বেশিরভাগ সময় পিচাইদের কোনো টেলিভিশন বা গাড়ি ছিল না। যা তিনি সাক্ষাত্কারে বলেছেন।

পিচাইয়ের বাবা রঘুনাথ তড়িৎ প্রকৌশলী ছিলেন, মা লক্ষ্মী ছিলেন স্টেনোগ্রাফার। উচ্চবিত্ত পরিবার ছিল না তাদের। ছোটবেলায় দুই ঘরের অ্যাপার্টমেন্টের বসার ঘরে ছোট ভাইয়ের সঙ্গে ঘুমাতেন সুন্দর। ১২ বছর বয়সে তাদের পরিবারে প্রথমেএকটা রোটারি টেলিফোন আসে। যেটা তাকে প্রযুক্তির সুবিধার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় বলে তিনি জানান।

ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (আইআইটি) খড়গপুর থেকে মেটালারজিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়েন তিনি। এরপর বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সুযোগ পান।

তথ্যপ্রযুক্তিতে বরাবরই আগ্রহী ছিলেন পিচাই। প্রথম প্রোগ্রাম হিসেবে তৈরি করেন দাবা খেলার সফটওয়্যার। ভারতের দিল্লি ইউনিভার্সিটিতে ২০১৪ সালে এক সাক্ষাৎকারে পিচাই বলেছিলেন, প্রযুক্তি আমার সব সময়ের পছন্দের বিষয় ছিল। আর সিলিকন ভ্যালি ছিল আমার স্বপ্ন, আমি এ নিয়ে লেখা পড়তাম, চাচার কাছ থেকে শুনতাম।

১৯৯৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে যান সুন্দর পিচাই। স্ট্যানফোর্ড থেকে এমএস শেষে ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়ার হোয়ার্টন স্কুলে এমবিএ করেন। গুগলে যোগ দেওয়ার আগে অ্যাপ্লায়েড ম্যাটেরিয়ালস এবং ম্যাককিনসি অ্যান্ড কোম্পানি নামের দুটি প্রতিষ্ঠানে কিছুদিন কাজ করেছেন।

গুগলের মূল কার্যালয় গুগলপ্লেক্সে ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল চাকরির সাক্ষাৎকারের জন্য গিয়েছিলেন তিনি। এপ্রিল ফুলের সেই দিনেই জি–মেইল চালু করে গুগল। পিচাইসহ সবাই ভেবেছিলেন বিনা মূল্যের ই-মেইল সেবাটি নিশ্চয় মজা করার জন্য করা।

গুগলের সার্চ টুলবার দিয়ে শুরু হয় পিচাইয়ের কাজ। তবে ২০০৬ সালে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় মাইক্রোসফট। জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজে ওয়েব ব্রাউজার ‘ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার’-এর ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে ‘বিং’ ঠিক করে দেয় মাইক্রোসফট।

পিচাই সে সময় কম্পিউটার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের বিক্রি করা কম্পিউটারে গুগলের সার্চ টুলবার যুক্ত করার ব্যাপারে বোঝাতে সক্ষম হন। মাইক্রোসফটের সে উদ্যোগে যে ক্ষতির মুখে পড়েছিল গুগল, পিচাইয়ের কাজে তা অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব হয়।

ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারের ফাঁড়াটি পিচাইয়ের জীবনে আশীর্বাদ হয়েই আসে। সে সময় গুগলের নিজস্ব ওয়েব ব্রাউজার তৈরির জন্য প্রতিষ্ঠানের দুই সহপ্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজ ও সের্গেই ব্রিনকে রাজি করাতে সক্ষম হন তিনি। ফলাফল? ক্রোম এখন বিশ্বের জনপ্রিয়তম ব্রাউজার।

নেতা হিসেবে পিচাইকে সবাই পছন্দ করতেন। অনন্য হওয়ার চেয়ে বরং ভালো ফলাফলে গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি। ক্রমেই তার কাঁধে দায়িত্ব বাড়তে থাকে। ২০১৩ সালে অ্যান্ড্রয়েড বিভাগের নেতৃত্বও দেওয়া শুরু করেন তিনি।

সুন্দর পিচাইয়ের নেতৃত্বে পরিচালিত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রকল্প হলো ‘অ্যান্ড্রয়েড ওয়ান’। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে কম দামের অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন বাজারে ছেড়ে ৫০০ কোটি নতুন মানুষকে অনলাইনে যুক্ত করতে চেয়েছেন তিনি।

অ্যান্ড্রয়েড যেন গুগলের সেবাগুলোর সঙ্গে চমৎকারভাবে মানিয়ে নিতে পারে, তা নিশ্চিত করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন পিচাই। তিনি দায়িত্ব গ্রহণের আগে অ্যান্ড্রয়েড সম্পূর্ণ আলাদা ব্যবসা হিসেবে পরিচালিত হতো।

গুগলে পিচাইয়ের উত্থানে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হলো, ২০১৪ সালে ৩২০ কোটি ডলারে নেস্ট অধিগ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তিনি। কম খরচের ক্রোমবুক ল্যাপটপ কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেম ‘ক্রোম ওএস’-এর পেছনেও আছেন পিচাই।

বেশ কয়েকবার টুইটারের উচ্চপদে কাজের জন্য ডাক পেলেও গুগল ছেড়ে যাননি তিনি। পিচাই প্রায়ই ল্যারি পেজের ‘অনুবাদকের’ ভূমিকা নিতেন। অর্থাৎ পেজের লক্ষ্য নিজে বুঝে বাকি কর্মীদের কাছে তা পৌঁছে দিতেন। ল্যারি পেজ লিখেছিলেন, ‘এ কাজের জন্য তিনিই (পিচাই) সেরা।’

সেই দক্ষতা এবং ক্রোম, অ্যাপ ও অ্যান্ড্রয়েডে সাফল্যের ফলে ২০১৪ সালের শেষের দিকে কর্মজীবনের পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ পদোন্নতি পান তিনি। সার্চ, ম্যাপস, গুগল প্লাস, বিজ্ঞাপন, অবকাঠামোসহ প্রতিষ্ঠানটির প্রায় সব পণ্যের দায়িত্ব আসে পিচাইয়ের কাঁধে। পেজের ‘সেকেন্ড-ইন-কমান্ড’-এর ভূমিকায় দেখা যায় তাকে।

পিচাইয়ের পদোন্নতির ঘোষণা দিয়ে কর্মীদের কাছে পাঠানো বার্তায় পেজ লিখেছিলেন, ভবিষ্যৎ দেখতে পারা এবং গুরুত্বপূর্ণ কাজে কর্মীদের কাজে লাগানোয় পিচাইয়ের অসাধারণ দক্ষতা। পণ্যের ব্যাপারে আমাদের দেখার চোখ প্রায় একই। এ কাজের জন্য তিনিই সেরা।

২০১৫ সালে গুগলের করপোরেট কাঠামোয় বড়সড় পরিবর্তন আনা হয়। প্রতিষ্ঠানের মূল বিভাগগুলোকে আলাদা প্রতিষ্ঠানে রূপ দেয়া হয়। সেই প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি হলো গুগল, যার অধীনে আছে সার্চ, ম্যাপস, বিজ্ঞাপন, ইউটিউবসহ মূল সেবগুলো। আর ‘অ্যালফাবেট’ নামে মূল প্রতিষ্ঠান দাঁড় করিয়ে সব কটি বিভাগ সেটির অধীনে আনা হয়। গুগলের মূল পণ্যগুলোর দায়িত্বে ছিলেন পিচাই। স্বাভাবিক কারণেই তাকে গুগলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) করা হয়।

;

তাপ বাড়ছে লন্ডনে, জনগণকে ‘নতুন বাস্তবতা’ মেনে নেওয়ার আহ্বান



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

লন্ডনে গ্রীষ্মকালে স্বাভাবিক তাপমাত্রা থাকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ তাপমাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। শুধু তাই নয় সামনের দিনগুলোতে তাপমাত্রা আরও বাড়ার আশঙ্কা করছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক থিঙ্কট্যাংক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর এনভায়র্নমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলেপমেন্ট (আইআইইডি)। এমন অবস্থায় শহরের মানুষদেরকে 'নতুন বাস্তবতার' সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

বুধবার (১ মে) আইআইইডির প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রবন্ধের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট।

গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়েছে, লন্ডনের মানুষ গত তিন দশকে (১৯৯৩-২০২৩) ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা ছিল এমন ১১৬ দিন পার করছে। এর মধ্যে ৫৯ দিন ছিল গত ১০ বছরে। আর ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা দেখছে ৭ দিন। যার ৫ দিন ছিল গত পাঁচ বছরের মধ্যে। 

১৯৯০ থেকে ২০০০— এই দশ বছরের প্রতি বছরই গ্রীষ্মকালে অস্বাভাবিক উষ্ণ দিনের সংখ্যা বেড়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রবন্ধে। কিন্তু এ সময়সীমায় টানা উষ্ণতা বা তাপপ্রবাহের তেমন কোনো রেকর্ড পাওয়িা যায়নি। কিন্তু ২০১৭ সাল থেকে গ্রীষ্মকালগুলোতে টানা তিন বা তারও বেশি দিন ধরে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা দেখছে লন্ডনবাসী।

গবেষণা প্রবন্ধে আরও বলা হয়, এমন তাপমাত্রায় মানুষের স্বাস্থ্যের অবনতির পাশাপাশি হিটস্ট্রোকের সম্ভাবনাও রয়েছে। এমনকি কাজের ক্ষেত্রে মানুষ বাধার সম্মুখীন হতে পারে।

আইআইইডির জ্যেষ্ঠ গবেষক টাকার ল্যান্ডসমান এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘লন্ডনের জলবায়ু দিন দিন অধিকতর উষ্ণ হয়ে উঠেছে এবং জনগণ যেন পরিবর্তিত তাপমাত্রার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে, সেজন্য সরকারের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।’

এমন পরিস্থিতিতে পরিবর্তিত সেই ‘নতুন বাস্তবতার’ সঙ্গে জনগণকে খাপ খাইয়ে নিতে আহ্বান জানিয়েছে তিনি।

;