যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার বাসিন্দাদের আশ্রয় দেবে যুক্তরাষ্ট্র



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রায় সাত মাস চলমান। এ অবস্থায় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন গাজার ১৭ লাখেরও বেশি বাসিন্দা। মানবিক সংকটে অনেকেই গাজা থেকে পালিয়ে জীবন রক্ষা করতে চাইছেন। এ পরিস্থিতিতে বাইডেন প্রশাসন জানিয়েছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা থেকে পালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আসতে চাইলে তাদের আশ্রয় দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করে দেখছে তারা।

বুধবার (১ মে) সিবিএস নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন সরকারের অভ্যন্তরীণ নথিগুলোতে দেখা গেছে, মার্কিন নাগরিকদের সঙ্গে সংযুক্ত গাজা থেকে পালিয়ে আসা ফিলিস্তিনিদের ‘মার্কিন রিফিউজি অ্যাডমিশন প্রোগ্রাম’র মাধ্যমে আশ্রয় দেয়ার সম্ভাব্য বিকল্প উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এজন্য যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি কেন্দ্রীয় সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সংক্রান্ত প্রস্তাবও পেশ করেছেন।

নথি অনুসারে, মার্কিন কর্মকর্তারা গাজা থেকে অতিরিক্ত ফিলিস্তিনিদের আশ্রয় দেয়ার কথাও বিবেচনা করছেন। তবে প্রস্তাবটি মিশরের সঙ্গে সমন্বয়ের ওপর নির্ভর করবে। কারণ দেশটি এতদিন ফিলিস্তিনিদের আশ্রয় দিতে রাজি ছিল না।

মঙ্গলবার রাতে সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউসের একজন মুখপাত্র বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৮শ' টিরও বেশি আমেরিকান নাগরিক এবং তাদের পরিবারকে গাজা ছেড়ে যেতে সহায়তা করেছে। যাদের মধ্যে অনেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের নির্দেশে আমরা এ সহায়তা করেছি। এছাড়াও কিছু বিশেষভাবে দুর্বল ব্যক্তিদের, যেমন গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন এবং ক্যান্সারের চিকিৎসা নিচ্ছে এমন শিশুদের এই অঞ্চলের নিকটবর্তী হাসপাতালে যত্ন নেওয়ার মতো সহায়তা আমরা করেছি এবং এটি অব্যাহত থাকবে।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। প্রায় সাত মাস ধরে চলা এই হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

   

দু’দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে চীনে পৌঁছেছেন পুতিন



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দু’দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে পৌঁছেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। পঞ্চম দফায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের শপথ নেওয়ার পর এটাই তার প্রথম বিদেশ সফর।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) দ্য হিন্দুস্থান টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ সফরে পুতিন চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। দু’দেশের সম্পর্কের ৭৫তম বার্ষিকী উদ্‌যাপন করবেন তারা।

এছাড়া শুক্রবার (২৭ মে) চীনের ঐতিহাসিক শহর হারবিনে দুটি দ্বিপক্ষীয় ব্যবসায়িক সম্মেলনে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে পুতিনের। সেই সঙ্গে তিনি সেখানে একটি উৎসবেও যোগ দেবেন বলে জানা গেছে।

বেইজিং সফরের সময় চীনের সংবাদমাধ্যম সিনহুয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পুতিন বলেছেন, তিনি ইউক্রেন সংকটের ব্যাপারে আলোচনার জন্য প্রস্তুত আছেন। দু’দেশের মধ্যে বিরাজমান সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানে চীনের পরিকল্পনায় তার সমর্থন রয়েছে।

;

গাজায় ইসরায়েলি হামলা: রাফায় বাস্তুচ্যুত ৬ লাখ মানুষ



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৫ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৮০ হাজার মানুষ। এখন অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার রাফা শহরে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় এই শহরে ইসরায়েলি আক্রমণের ফলে শহর ছেড়ে পালাচ্ছে মানুষ। গত ০৬ মে’র পর থেকে এখন পর্যন্ত বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ৬ লাখ মানুষ।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফা শহরে ইসরায়েলি আক্রমণের ফলে খাদ্য, পানির সংকট এবং পর্যাপ্ত স্যানিটেশনের অভাবে মানুষ শহর ছেড়ে পালাচ্ছে। এখন পর্যন্ত বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ৬ লাখ মানুষ।

গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৩৫ হাজার ২৩৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৭৯ হাজার ১৪১ জন। নিহতদের বেশির ভাগই নারী এবং শিশু।

;

‘বাইডেনের ইসরায়েলপ্রীতি-ই গাজায় দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির কারণ’



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ফাঁস হওয়া বেশ কিছু গোপন নথিতে গাজায় দুর্ভিক্ষ সৃষ্টিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার প্রশাসনের সহযোগিতার বিষয়টি উঠে এসেছে। নথি অনুযায়ী বাইডেনকে খোদ তার প্রশাসনের কর্মকর্তারাই ‘দুষ্কৃতিকারী’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।

দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বিষয়গুলো সামনে এনেছে। এখানে বলা হয়, গাজা উপত্যকায় প্রায় সাত মাস ধরে চলমান গণহত্যায় প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পানীয়ের অভাবে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ইসরায়েলের এসব আগ্রাসনে প্রতিদিন অসংখ্য প্রাণ নিভে গেলেও যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ এই কাজে অবিরাম সহযোগিতা করছেন। 

প্রতিবেদনটিতে বাইডেন প্রশাসনের অসংখ্য ভুল পদক্ষেপ ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত উন্মোচন করা হয়েছে যার ফলে উত্তর গাজায় বিপর্যয়কর দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে। ফাঁস হওয়া নথি, বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তাদের সাক্ষ্য এবং গাজার ভুক্তভোগীদের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

গত বছরের ৭ অক্টোবরে গাজা উপত্যকায় সামরিক আগ্রাসন শুরু করে ইসরায়েল। এরপর গত সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে সেই আগ্রাসন অব্যাহত রয়েছে। এতে এখন পর্যন্ত ৩৫ হাজারের বেশি নিরস্ত্র ও নিরীহ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৮০ হাজার। ধ্বংসস্তূপের নিচে চাঁপা পড়েছেন আরও ৭ সহস্রাধিক মানুষ।

ইসরায়েলের নির্বিচার বোমাবর্ষণে গাজার ২৩ লাখ অধিবাসীর মধ্যে ১৯ লাখই এখন উদ্বাস্তু যারা গত কয়েক মাস ধরে খোলা আকাশের নিচে দিনাতিপাত করছেন। গাজার এসব বাসিন্দা বিদেশি সাহায্যনির্ভর হলেও সীমান্ত দিয়ে পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী ঢুকতে না দেয়ায় শুরু থেকেই ব্যাপক খাদ্য ঘাটতি দেখা দেয়। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে যা ভয়াবহ দুর্ভিক্ষে রূপ নিয়েছে।

আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সেই প্রথম থেকেই দুর্ভিক্ষের ব্যাপারে সতর্কতা ও হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছে। তবে গত সপ্তাহে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) প্রথমবারের মতো জানায়, ইসরায়েলের আগ্রাসনের প্রায় সাত মাস পর উপত্যকাটির উত্তরাঞ্চলে ‘পুরোদমে দুর্ভিক্ষ’ শুরু হয়েছে।

গত ৫ মে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসির সম্প্রচার করা এক সাক্ষাৎকারে ডব্লিউএফপির নির্বাহী পরিচালক সিন্ডি ম্যাককেইন বলেন, ইসরায়েলের অবরোধের মধ্যে গাজার অধিবাসীরা দীর্ঘদিন ধরে বাইরের খাদ্য সহায়তার ওপর নির্ভরশীল ছিলেন।

এরই মধ্যে এ উপত্যকায় যুদ্ধ শুরু করার পর সেখানে মানবিক সহায়তা সরবরাহের ওপর ব্যাপকভাবে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ইসরায়েল। গাজার বাসিন্দাদের চূড়ান্তভাবে একঘরে করে ফেলেছে ও এখানকার একাংশকে দুর্ভিক্ষের মুখে ঠেলে দিয়েছে এটি। দুর্ভিক্ষ এখন ছড়িয়ে পড়ছে গাজার দক্ষিণে।

ত্রাণ সহায়তায় নিয়োজিত সংস্থাগুলো বলছে, আকাশ ও সমুদ্রপথে যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশের সরবরাহ করা ত্রাণ গাজার ২৩ লাখ মানুষের জন্য যথেষ্ট নয়। তাদের ক্রমবর্ধমান একটি অংশ অপুষ্টির শিকার হওয়ার পর্যায়ে পৌঁছাচ্ছে। এছাড়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে শিশুদের বিকাশ এবং ক্ষুধায় মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটছে।

দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিজেদের বিশেষজ্ঞ দল এবং ত্রাণ সহায়তা সংস্থা বারবার সতর্কবার্তা দেয়ার পরও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। এর মাধ্যমে তিনি মূলত গাজায় দুর্ভিক্ষ সৃষ্টিতে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করেছেন বলে অভিযোগ উঠছে।

দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, তারা মার্কিন ত্রাণ সংস্তা ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি)-এর বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা, মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের কর্মকর্তা ও গাজায় কর্মরত বিভিন্ন ত্রাণ সংস্থার কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎকার নিয়েছে। এছাড়া ইউএসএআইডির অভ্যন্তরীণ বহু নথি তাদের হাতে এসেছে।

প্রতিবেদন মতে, বর্তমান ও সাবেক মার্কিন কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎকার ও ফাঁস হওয়া নথিগুলো বলছে যে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার প্রশাসন দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে গাজায় পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তার অনুমতি দেয়ার জন্য মিত্র ইসরায়েলকে রাজি করার জন্য নিজের সক্ষমতা ব্যবহার করার আবেদন বারবার প্রত্যাখ্যান করেছে বা উপেক্ষা করেছে।

সাবেক মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন যে, যুদ্ধবিরতি বা সংকট নিরসনের আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টাকে বাধা দিয়ে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি তৈরি করতে ইসরায়েলকে যাবতীয় কূটনৈতিক সহযোগিতা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র যার ফলে গাজায় ত্রাণ সহায়তা প্রবেশ ও সরবরাহ প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের সাবেক কর্মকর্তা জোশ পল, যিনি ইসরাইলি যুদ্ধে ঢালাও মার্কিন সমর্থনের কারণে পদত্যাগ করেছিলেন, তিনি দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টকে বলেছেন, 

একটা জনগোষ্ঠীকে অনাহারে মারার পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে। আর যুক্তরাষ্ট্র সেদিক থেকে শুধুমাত্র চোখই ফিরিয়ে থাকেনি, বরং দেশটি এর সঙ্গে সরাসরি জড়িত।

ইসরায়েল বরাবর জোর গলায় বলে এসেছে যে, গাজায় কোনো ক্ষুধা বা খাদ্য সংকট নেই। উল্টো ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের ওপর দোষ চাপিয়ে বলেছে, গাজায় ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করেছে হামাস।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতে, গত এপ্রিল পর্যন্ত গাজায় অপুষ্টি ও পানিশূন্যতার কারণে কমপক্ষে ৩২ জন মারা গেছেন যার মধ্যে ২৮ জনই শিশু। মৃত্যুর প্রহর গুনছেন আরও অনেকেই। এ ব্যাপারে অনেক আগে থেকেই উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা জানিয়ে আসছে জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা।

প্রেসিডেন্ট বাইডেন যদি সরকারিভাবে ও ব্যক্তিগতভাবে সেসব উদ্বেগের বিষয়ে আরও জোরালো পদক্ষেপ নিতেন, তাহলে অনেকের মৃত্যু রোধ করা যেত। কর্মকর্তারা বলছেন, গত ডিসেম্বরে প্রথম যখন সতর্কতা সংকেত দেয়া হয়েছিল, তখন সীমান্তের আরও স্থল ক্রসিং খোলার জন্য ইসরায়েলের উপর যুক্তরাষ্ট্র চাপ অব্যাহত এবং ত্রাণ সরবরাহ চালু রাখলে গাজার দুর্ভিক্ষ থামানো যেত।

কিন্তু বাইডেন ইসরায়েলকে মার্কিন সামরিক সহায়তা দানকে শর্তসাপেক্ষ করতে অস্বীকার করেন। পরিবর্তে তার সরকার এয়ারড্রপস তথা বিমান থেকে ত্রাণ ফেলা এবং গাজায় ভাসমান বন্দর নির্মাণের মতো সময়সাপেক্ষ ও অকার্যকর উপায় অনুসরণের সিদ্ধান্ত নেয়।

সারা বিশ্বই এখন জানে যে,  এয়ারড্রপস তথা বিমান থেকে ত্রাণ ফেলার কার্যক্রম পুরোটাই ব্যর্থ হয়েছে। এদিকে সংঘাতের সাত মাস পার হয়ে গেলেও গাজায় অস্থায়ী বন্দর তৈরির কাজ এখনও শেষ হয়নি; যার ফলে গাজায় দুর্ভিক্ষ ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।

ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের তথ্য মতে, গাজার উত্তরে প্রায় ৩ লাখ ফিলিস্তিনি এখন সম্পূর্ণ দুর্ভিক্ষের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন এবং ২৩ লাখ জনসংখ্যা বিপর্যয়কর মাত্রার ক্ষুধার সম্মুখীন হয়েছেন।

;

উত্তর প্রদেশে জেতা আসন ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ বিজেপি’র



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারতে পশ্চিম উত্তর প্রদেশের লড়াই শেষ। আগামী তিন দফায় নির্বাচন হতে যাচ্ছে উত্তরপ্রদেশের বুন্দেলখণ্ড ও পূর্বাঞ্চল এলাকায়, যা প্রথাগত ভাবে বিজেপির আস্তানা বলেই পরিচিত।

এনডিটিভি জানিয়েছে, উত্তর প্রদেশে প্রথম চার দফায় বিজেপি যে বেশ কিছু জেতা আসন হারাতে চলেছে, সে বিষয়ে এক রকম নিশ্চিত বিজেপি নেতৃত্ব।

ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে নিজেদের কর্তৃত্ব বজায় রাখতে বাকি তিন দফায় পাঁচ বছর আগে বিজেপি যে ফলাফল পেয়েছিল, তা ধরে রাখতেই এখন মরিয়া তারা।

২০১৪ সালে উত্তর প্রদেশে ৭১ আসনে জিতেছিল বিজেপি। ২০১৯ সালে সেই আসন কমে দাঁড়ায় ৬২-তে।

এবার ৮০টি আসনের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামলেও, আগামী তিনটি পর্বে নতুন করে আসন জিতে ঘাটতি মেটানো তো দূরে থাক, জেতা আসন ধরে রাখাই এখন প্রধান লক্ষ্য বিজেপি নেতৃত্বের।

প্রথম চারটি পর্বে মূলত কৃষক, জাঠ ও মুসলিম অধ্যুষিত পশ্চিম উত্তর প্রদেশের ৩৯টি আসনে ভোট হয়েছে। আগামী সোমবার বুন্দেলখণ্ড ও মধ্য উত্তর প্রদেশে ১৪টি আসনে নির্বাচন হতে চলেছে।

পাঁচ বছর আগে ওই ১৪টি আসনের মধ্যে রায়বরেলি ছাড়া বাকি সব কয়টিতে জিতেছিল বিজেপি। বাকি দুটি পর্বে যে ২৭টি আসনে বিজেপি ও তার শরিক দলগুলো মোট ২৩টি আসন জিতেছিল। বাকি চারটি আসন পেয়েছিল মায়াবতীর দল বিএসপি।

সব মিলিয়ে বাকি থাকা ৪১টি আসনের মধ্যে পাঁচ বছর আগে গেরুয়া শিবির জেতে ৩৬টি আসনে। ফলে বিজেপি বুঝতে পারছে ওই এলাকায় নতুন করে ভাল ফল করা যথেষ্ট কষ্টসাধ্য।

এ ছাড়াও এবার দেশের অন্যান্য স্থানের মতোই মোদি ঝড়ের কোনও অস্তিত্ব নেই যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে। সুতরাং বুন্দেলখণ্ড ও পূর্বাঞ্চলে দলের ফল কেমন হবে, তা নিয়েও উদ্বিগ্ন বিজেপি নেতৃত্ব।

বিশেষ করে উত্তর প্রদেশের অন্তত ২০টি লোকসভায় জয়ের ব্যবধান ১০ হাজারেরও কম ছিল। সেই আসনগুলোতে মোদি ঝড়ের অভাবে দলীয় প্রার্থীরা নিজের কারিশমায় কতটা ভোট টানতে পারেন, তার উপরে ফলাফল অনেকটাই নির্ভর করছে।

তাছাড়া পাঁচ বছর আগে বিজেপিকে অনেকটাই স্বস্তি দিয়ে উত্তর প্রদেশের ৩৭টি আসনে প্রার্থী দেয়নি বিএসপি। ফলে গত লোকসভা নির্বাচনে দলিত ও জাটভ ভোটের একটি বড় অংশ বিজেপির প্রার্থীর ঘরে পড়ে।

কিন্তু, এই পর্বে দলিত সমাজের বড় অংশ মুখ ফিরিয়েছেন বিজেপি থেকে। তা ছাড়া বিজেপির চারশো আসন পেলে সংবিধান পরিবর্তন করে সংরক্ষণ তুলে দিতে পারে, বিরোধীদের ওই প্রচারও প্রভাবিত করেছে দলিত সমাজকে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, গতবার বিজেপি প্রার্থীরা গণ হারে দলিত ভোট পেলেও, এবার তারা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন বলেই প্রাথমিক প্রবণতায় লক্ষ করা যাচ্ছে।

এমনকি যে কেন্দ্রে বিএসপি প্রার্থী নেই, সেখানে শ্রেণি-শত্রু হলেও সমাজবাদী পার্টির প্রার্থীকে ভোট দিতে দ্বিধা করছেন না দলিত প্রার্থীরা। তবে বিজেপির জন্য ইতিবাচক হল, দারা সিংহ চৌহান ও সুহেলদেব ভারতীয় সমাজ পার্টির নেতা ওমপ্রকাশ রাজভড়ের এনডিএ-তে অন্তর্ভুক্তি।

বিজেপি নেতৃত্বের মতে, দারা সিংহের অন্তর্ভুক্তির ফলে গোটা উত্তর প্রদেশে বিভিন্ন স্থানে যে ননিয়া-চৌহান ভোট রয়েছে, তা বিজেপির পক্ষে যাবে। আর ওমপ্রকাশ রাজভড় পেছনে থাকায় পূর্বাঞ্চলে রাজভড় তথা পিছিয়ে থাকা সমাজের ভোট বিজেপি প্রার্থীরা পেতে চলেছেন।

তবে বিজেপির কাছে বাড়তি চ্যালেঞ্জ হল পূর্বাঞ্চলে মায়াবতীর মোকাবিলা করা। গতবার মোদি ঝড় থাকা সত্ত্বেও পূর্বাঞ্চলে চারটি আসন দখল করে নিয়েছিল মায়াবতীর দল। এবার পরিস্থিতি ভিন্ন।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বিভাজনের রাজনীতিও এবারের ভোটে সেভাবে হাওয়া তুলতে ব্যর্থ হয়েছে।

উল্টা দিকে নানাবিধ কারণে বিজেপির বিরুদ্ধে যাদব ভোটের মতো দানা বেঁধেছে দলিত ভোটও। বিজেপি নেতৃত্ব ভাল করেই জানেন, সংঘবদ্ধ ওই দলিত ভোট অনেক হিসেব গুলিয়ে দিতে পারে।

সেই কারণে এখন মোদি ৪০০ আসনের লক্ষ্য ছেড়ে ভিন্ন বিষয়ে প্রচারে জোর দেওয়ার কৌশল করেছেন।

;