উস্কানির বিপরীতে পরমাণু হামলার হুশিয়ারি কিমের



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
কন্যাকে সঙ্গে নিয়ে ক্ষেপণাস্ত্রের উৎক্ষেপণ দেখছেন কিম। ছবি : সংগৃহীত

কন্যাকে সঙ্গে নিয়ে ক্ষেপণাস্ত্রের উৎক্ষেপণ দেখছেন কিম। ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন হুশিয়ানি উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘পিয়ংইয়ংয়ের বিরুদ্ধে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের উস্কানি দিলে দেশটি পরমাণু হামলা চালাতে দ্বিধা করবে না।’

এদিকে সিউল এবং তাদের মিত্ররা কোনও পূর্বশর্ত ছাড়াই সংলাপের আহ্বান জানিয়েছে। দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) এ খবর জানিয়েছে।

ওয়াশিংটনে দক্ষিণ কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি বৈঠকের পর এমন হুশিয়ারি বার্তা দেন কিম। ওই বৈঠকে তারা উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সংঘাতের ক্ষেত্রে পারমাণবিক প্রতিরোধের বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

দক্ষিণ কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে পারমাণবিক ও কৌশলগত পরিকল্পনা অন্তর্ভূক্ত ছিল। আলোচনায় তারা আবারো বলেছে যে, যুক্তরাষ্ট্র বা দক্ষিণ কোরিয়ার উপর পিয়ংইয়ং যেকোনও ধরনের পরমাণু হামলা চালালে উত্তর কোরিয়ার কিমের শাসনের অবসান ঘটবে।


অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার কেসিএনএ পরিবেশিত খবরে বলা হয়েছে, কিম তার দেশের সেনাবাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র ব্যুরোকে বলেছেন, শত্রু পক্ষ উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের উস্কানি দিলে পিয়ংইয়ং পরমাণু হামলা চালাতে দ্বিধা করবে না।

উত্তর কোরিয়ার নেতার এমন হুশিয়ারির পরপরই ওয়াশিংটন,সিউল এবং টোকিও পরমাণু ক্ষমতাধর পিয়ংইয়ংকে আরও উস্কানি দেওয়া বন্ধ করতে এবং কোনও ধরনের পূর্বশর্ত ছাড়াই বাস্তবসম্মত উত্তর কোরিয়াকে সংলাপে অংশগ্রহণ করার প্রস্তাব গ্রহনের আহ্বান জানিয়েছে।

   

ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দিল কলম্বিয়া



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো। ফিলিস্তিনের গাজায় হামলার কারণে গত বুধবার (১ মে) এ ঘোষণা দেন তিনি।

দ্য ওয়াশিংটন পোষ্টের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে এক সমাবেশে উপস্থিত হয়ে পেত্রো বলেন, তার দেশ আগামীকালই (বৃহস্পতিবার) ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে যাচ্ছে। এসময় তিনি নেতানিয়াহুকে ‘গণহত্যাকারী’ বলে আখ্যা দেন।

তিনি আরও বলেন, গাজার এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বের কোনো দেশ নিষ্ক্রিয় থাকতে পারে না।

এদিকে,কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্টের এমন ঘোষণায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ইসরায়েল। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ অভিযোগ করে বলেছেন, পেত্রোর এই ঘোষণা ইহুদিবিদ্বেষী ও ঘৃণায় পরিপূর্ণ। তার এই পদক্ষেপ হামাসের জন্য পুরস্কার।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৭ অক্টোবরে গাজায় হামলার পরপরই ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে দক্ষিণ আমেরিকার আরেক দেশ বলিভিয়া। সেসময় কলম্বিয়া, চিলি ও হন্ডুরাসসহ দক্ষিণ আমেরিকার আরও কয়েকটি দেশ ইসরায়েল থেকে তাদের রাষ্ট্রদূতদের প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। এবার তারই প্রেক্ষিতে ইসরায়েলের সাথে সব ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করল কলম্বিয়া।

 

 

;

চাঁদে যাচ্ছে পাকিস্তান



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারতের পর এবার চাঁদে যাচ্ছে পাকিস্তান। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী শুক্রবার যাত্রা শুরু হবে তাদের। এর মাধ্যমে চীনের সহায়তায় দেশটির পতাকাখচিত প্রথম কোনো মহাকাশযান চাঁদে অবতরণ করবে। চীনের সহায়তায় দেশটির প্রথম মহাকাশযানটি চাঁদের পথে পাড়ি দিচ্ছে।

পাকিস্তানের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব স্পেস টেকনোলজি (আইএসটি) জানিয়েছে, শুক্রবার দেশটির ঐতিহাসিক চন্দ্র মিশন শুরু হবে।

জানা গেছে, এই প্রকল্পটি সম্পন্ন হচ্ছে চীনের সহায়তায়। চীনের মাটি থেকেই চাঁদের উদ্দেশে রওনা দেবে পাকিস্তানের চন্দ্রযান।

খবরে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব স্পেস টেকনোলজি (আইএসটি) জানিয়েছে, পাকিস্তানের ঐতিহাসিক চন্দ্র মিশন আগামী শুক্রবার স্থানীয় দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে চাঁদের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবে। চীনের তৈরি চ্যাং ওঁ-৬ চন্দ্রযানে করে দেশটির হাইনান প্রদেশের উৎক্ষেপণকেন্দ্র থেকে রওনা হবে। পাকিস্তানের এই চন্দ্র মিশনের নাম দেওয়া হয়েছে আইকিউব-কিউ।

চীনের এ মিশনটি পাকিস্তানের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ কারণ এটি পাকিস্তানের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি কিউবস্যাট স্যাটেলাইট আইকিউব-কিউ বহন করছে। কিউবস্যাট হল ক্ষুদ্রাকৃতির উপগ্রহ যা সাধারণত ছোট আকার এবং মানসম্পন্ন নকশায় তৈরি করা হয়।

চ্যাংয়ে-৬ মিশনের মাধ্যমে চাঁদের অন্ধকার দিক থেকে ধূলা ও পাথরের নমুনা পৃথিবীতে ফেরত আনতে চায় চীন।

বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসাবে চাঁদের মাটিতে নিয়ন্ত্রিত অবতরণ করে ভারত। ভারতীয় মহাকাশসংস্থা ইসরোর বিজ্ঞানীদের নিরলস চেষ্টায় এটি সম্পন্ন হয়।

;

ভারতীয় গুপ্তচর বহিষ্কার করেছিল অস্ট্রেলিয়া



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রতিরক্ষা প্রকল্প, বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ও বাণিজ্য সম্পর্ক বিষয়ক নথি চুরির চেষ্টা করায় ২০২০ সালে একাধিক ভারতীয় গুপ্তচর বহিষ্কার করেছিল অস্ট্রেলিয়া। চলতি সপ্তাহে এক প্রতিবেদনে এ খবর প্রকাশ করেছে অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন।

ভারতীয় গুপ্তচর বহিষ্কারের বিষয়টি ২০২১ সালে অস্ট্রেলিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা অস্ট্রেলিয়ান সিকিউরিটি ইনটেলিজেন্স অর্গানাইজেশন (এএসআইও) প্রধান মাইক বুরগিসের বার্ষিক প্রতিবেদনেও উল্লেখ করা হয়েছিল বলেও খবরে বলা হয়েছে।

ঠিক কতজন গুপ্তচর বহিষ্কার করা হয়েছিল, তা অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি। তবে গত সোমবার (২৯ এপ্রিল) ওয়াশিংটন পোস্টে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২০ সালে ভারতীয় দুজন গুপ্তরচরকে বহিষ্কার করেছিল অস্ট্রেলিয়া। যদিও ওই ঘটনার পরও দিল্লির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের কথা বলে আসছে ক্যানবেরা।

অ্যানুয়াল থ্রেট অ্যাসেসমেন্ট নামে ওই বার্ষিক প্রতিবেদনে অস্ট্রেলিয়ার গোয়েন্দাপ্রধান জানিয়েছিলেন, দুই বিদেশি গুপ্তচর কয়েক বছর ধরে অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের কাজ করছিলেন। তবে সেই সময় তিনি দুই গুপ্তচরের জাতীয়তা প্রকাশ করেননি।

বুরগিস আরও বলেছিলেন, ২০২০ সালে বিদেশি গুপ্তচরেরা বর্তমান ও সাবেক কয়েকজন রাজনীতিবিদ, একটি বিদেশি দূতাবাস এবং রাজ্য পর্যায়ের পুলিশ পরিষেবাকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করেছিল। এছাড়া তারা নিজ দেশের প্রবাসীদের ওপরও নজর রাখছিল।

ওয়াশিংটন পোস্টের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের পর অনেক সংবাদমাধ্যম এ নিয়ে খবর প্রকাশ করেছে। এসব প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই দুজন ভারতীয় গুপ্তচর ছিলেন।

অস্ট্রেলিয়া সরকার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের এমন দাবি স্বীকার কিংবা অস্বীকার কোনোটাই করেনি। তবে বলা হয়েছে, অস্ট্রেলিয়া সরকার বিদেশি হস্তক্ষেপ প্রতিরোধ করতে আগ্রহী। বুধবার (১ মে) এক সংবাদ সম্মেলনে অস্ট্রেলিয়ার অর্থমন্ত্রী জিম চালমার্স বলেন,  আমি এসব গালগল্পে ঢোকার কথা কখনোই বলব না।

ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়ে জিম আরও বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের বেশ ভালো সম্পর্ক রয়েছে। এটা গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সম্পর্ক। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় উভয় পক্ষের প্রচেষ্টার ফলে দুই দেশ অনেকটা কাছাকাছি এসেছে।

 

;

বিলিয়নিয়ার হওয়ার পথে গুগলের সিইও



Asma Islam
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিলিয়নিয়ার হচ্ছেন অ্যালফাবেট ইনকর্পোরেটেড বা গুগলের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) সুন্দর পিচাই। তিনিই প্রথম কোনো ব্যক্তি যিনি গুগলের প্রতিষ্ঠাতা না হয়েও এই বিরল মাইলফলক অর্জনের পথে রয়েছেন।

বর্তমানে ৫১ বছর বয়সী পিচাই ২০১৫ সালে গুগলের নির্বাহী কর্মকর্তা হওয়ার পর থেকে কোম্পানি স্টক বা শেয়ার ৪০০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। একই সময়ে এসঅ্যান্ডপি ও নাসদাককেও ছাড়িয়ে গেছে।

কোম্পানির ক্লাউড কম্পিউটিং ইউনিটে এআই-চালিত প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে কোম্পানির প্রথম-ত্রৈমাসিক আয় প্রত্যাশাকেও ছাড়িয়ে গত সপ্তাহে নতুন রেকর্ডে গড়েছে। এটি প্রথমবারের মতো লভ্যাংশও চালু করেছে।

ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার্স ইনডেক্স অনুসারে, চাঙ্গা স্টক মূল্যের পাশাপাশি গুগলের এই রমরমা অবস্থাই এর প্রধান নির্বাহী সুন্দর পিচাইকে বিশ্বের সর্বোচ্চ বেতনভোগী নির্বাহীদের অন্যতম করে তুলেছে। যার জোরে তার সম্পদ প্রায় ১ বিলিয়নের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে খুব অল্পদিনের মধ্যে বিলিয়নিয়ার মর্যাদা পেয়ে যাবেন পিচাই।

ভারতের চেন্নাইয়ে জন্ম নেয়া সুন্দর পিচাইয়ের মূল নাম পিচাই সুন্দরারাজন। তিনি একটি দুই কক্ষের অ্যাপার্টমেন্টে বড় হয়েছেন যেখানে তিনি ও তার ছোট ভাই বসার ঘরের মেঝেতে ঘুমাতেন। শৈশবের বেশিরভাগ সময় পিচাইদের কোনো টেলিভিশন বা গাড়ি ছিল না। যা তিনি সাক্ষাত্কারে বলেছেন।

পিচাইয়ের বাবা রঘুনাথ তড়িৎ প্রকৌশলী ছিলেন, মা লক্ষ্মী ছিলেন স্টেনোগ্রাফার। উচ্চবিত্ত পরিবার ছিল না তাদের। ছোটবেলায় দুই ঘরের অ্যাপার্টমেন্টের বসার ঘরে ছোট ভাইয়ের সঙ্গে ঘুমাতেন সুন্দর। ১২ বছর বয়সে তাদের পরিবারে প্রথমেএকটা রোটারি টেলিফোন আসে। যেটা তাকে প্রযুক্তির সুবিধার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় বলে তিনি জানান।

ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (আইআইটি) খড়গপুর থেকে মেটালারজিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়েন তিনি। এরপর বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সুযোগ পান।

তথ্যপ্রযুক্তিতে বরাবরই আগ্রহী ছিলেন পিচাই। প্রথম প্রোগ্রাম হিসেবে তৈরি করেন দাবা খেলার সফটওয়্যার। ভারতের দিল্লি ইউনিভার্সিটিতে ২০১৪ সালে এক সাক্ষাৎকারে পিচাই বলেছিলেন, প্রযুক্তি আমার সব সময়ের পছন্দের বিষয় ছিল। আর সিলিকন ভ্যালি ছিল আমার স্বপ্ন, আমি এ নিয়ে লেখা পড়তাম, চাচার কাছ থেকে শুনতাম।

১৯৯৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে যান সুন্দর পিচাই। স্ট্যানফোর্ড থেকে এমএস শেষে ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়ার হোয়ার্টন স্কুলে এমবিএ করেন। গুগলে যোগ দেওয়ার আগে অ্যাপ্লায়েড ম্যাটেরিয়ালস এবং ম্যাককিনসি অ্যান্ড কোম্পানি নামের দুটি প্রতিষ্ঠানে কিছুদিন কাজ করেছেন।

গুগলের মূল কার্যালয় গুগলপ্লেক্সে ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল চাকরির সাক্ষাৎকারের জন্য গিয়েছিলেন তিনি। এপ্রিল ফুলের সেই দিনেই জি–মেইল চালু করে গুগল। পিচাইসহ সবাই ভেবেছিলেন বিনা মূল্যের ই-মেইল সেবাটি নিশ্চয় মজা করার জন্য করা।

গুগলের সার্চ টুলবার দিয়ে শুরু হয় পিচাইয়ের কাজ। তবে ২০০৬ সালে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় মাইক্রোসফট। জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজে ওয়েব ব্রাউজার ‘ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার’-এর ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে ‘বিং’ ঠিক করে দেয় মাইক্রোসফট।

পিচাই সে সময় কম্পিউটার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের বিক্রি করা কম্পিউটারে গুগলের সার্চ টুলবার যুক্ত করার ব্যাপারে বোঝাতে সক্ষম হন। মাইক্রোসফটের সে উদ্যোগে যে ক্ষতির মুখে পড়েছিল গুগল, পিচাইয়ের কাজে তা অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব হয়।

ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারের ফাঁড়াটি পিচাইয়ের জীবনে আশীর্বাদ হয়েই আসে। সে সময় গুগলের নিজস্ব ওয়েব ব্রাউজার তৈরির জন্য প্রতিষ্ঠানের দুই সহপ্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজ ও সের্গেই ব্রিনকে রাজি করাতে সক্ষম হন তিনি। ফলাফল? ক্রোম এখন বিশ্বের জনপ্রিয়তম ব্রাউজার।

নেতা হিসেবে পিচাইকে সবাই পছন্দ করতেন। অনন্য হওয়ার চেয়ে বরং ভালো ফলাফলে গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি। ক্রমেই তার কাঁধে দায়িত্ব বাড়তে থাকে। ২০১৩ সালে অ্যান্ড্রয়েড বিভাগের নেতৃত্বও দেওয়া শুরু করেন তিনি।

সুন্দর পিচাইয়ের নেতৃত্বে পরিচালিত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রকল্প হলো ‘অ্যান্ড্রয়েড ওয়ান’। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে কম দামের অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন বাজারে ছেড়ে ৫০০ কোটি নতুন মানুষকে অনলাইনে যুক্ত করতে চেয়েছেন তিনি।

অ্যান্ড্রয়েড যেন গুগলের সেবাগুলোর সঙ্গে চমৎকারভাবে মানিয়ে নিতে পারে, তা নিশ্চিত করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন পিচাই। তিনি দায়িত্ব গ্রহণের আগে অ্যান্ড্রয়েড সম্পূর্ণ আলাদা ব্যবসা হিসেবে পরিচালিত হতো।

গুগলে পিচাইয়ের উত্থানে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হলো, ২০১৪ সালে ৩২০ কোটি ডলারে নেস্ট অধিগ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তিনি। কম খরচের ক্রোমবুক ল্যাপটপ কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেম ‘ক্রোম ওএস’-এর পেছনেও আছেন পিচাই।

বেশ কয়েকবার টুইটারের উচ্চপদে কাজের জন্য ডাক পেলেও গুগল ছেড়ে যাননি তিনি। পিচাই প্রায়ই ল্যারি পেজের ‘অনুবাদকের’ ভূমিকা নিতেন। অর্থাৎ পেজের লক্ষ্য নিজে বুঝে বাকি কর্মীদের কাছে তা পৌঁছে দিতেন। ল্যারি পেজ লিখেছিলেন, ‘এ কাজের জন্য তিনিই (পিচাই) সেরা।’

সেই দক্ষতা এবং ক্রোম, অ্যাপ ও অ্যান্ড্রয়েডে সাফল্যের ফলে ২০১৪ সালের শেষের দিকে কর্মজীবনের পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ পদোন্নতি পান তিনি। সার্চ, ম্যাপস, গুগল প্লাস, বিজ্ঞাপন, অবকাঠামোসহ প্রতিষ্ঠানটির প্রায় সব পণ্যের দায়িত্ব আসে পিচাইয়ের কাঁধে। পেজের ‘সেকেন্ড-ইন-কমান্ড’-এর ভূমিকায় দেখা যায় তাকে।

পিচাইয়ের পদোন্নতির ঘোষণা দিয়ে কর্মীদের কাছে পাঠানো বার্তায় পেজ লিখেছিলেন, ভবিষ্যৎ দেখতে পারা এবং গুরুত্বপূর্ণ কাজে কর্মীদের কাজে লাগানোয় পিচাইয়ের অসাধারণ দক্ষতা। পণ্যের ব্যাপারে আমাদের দেখার চোখ প্রায় একই। এ কাজের জন্য তিনিই সেরা।

২০১৫ সালে গুগলের করপোরেট কাঠামোয় বড়সড় পরিবর্তন আনা হয়। প্রতিষ্ঠানের মূল বিভাগগুলোকে আলাদা প্রতিষ্ঠানে রূপ দেয়া হয়। সেই প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি হলো গুগল, যার অধীনে আছে সার্চ, ম্যাপস, বিজ্ঞাপন, ইউটিউবসহ মূল সেবগুলো। আর ‘অ্যালফাবেট’ নামে মূল প্রতিষ্ঠান দাঁড় করিয়ে সব কটি বিভাগ সেটির অধীনে আনা হয়। গুগলের মূল পণ্যগুলোর দায়িত্বে ছিলেন পিচাই। স্বাভাবিক কারণেই তাকে গুগলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) করা হয়।

;