পাকিস্তান: সংঘাতে বিপন্ন জনপদ

ললাটে জঙ্গিবাদের অমোচনীয় তকমা



ড. মাহফুজ পারভেজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম
পাকিস্তানে শিয়া-সুন্নি লড়াই চলছে তিন দশক ধরে, ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানে শিয়া-সুন্নি লড়াই চলছে তিন দশক ধরে, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

 

পাকিস্তানে শিয়া ও সুন্নি লড়াই থেমে থেমে চলছে তিন দশক ধরে। নানা সময়ে সংঘাতের কম-বৃদ্ধি হলেও সমস্যাটি প্রশমিত হয়নি। শিয়া-সুন্নি দ্বন্দ্ব-সংঘাত-লড়াই পাকিস্তানের ক্রনিক সমস্যা এবং দক্ষিণ এশিয়া উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও ক্ষতিকর সঙ্কট রূপে চিহ্নিত।

সাউথ এশিয়া টেররিজম পোর্টালের পরিসংখ্যানে জানা যায়, সংঘাতে এ পর্যন্ত শিয়াদের পাঁচ হাজার সদস্য মারা গেছেন এবং ১০ হাজার জন আহত হয়েছেন। সুন্নিদের ক্ষেত্রেও হতাহতের সংখ্যা কমবেশি একই।

১৯৮৯ সাল থেকে রক্ষিত পরিসংখ্যানে এ পর্যন্ত ১০ থেকে ১৫ হাজার শিয়া ও সুন্নি সদস্যের জানমালে ক্ষতির বিবরণ পাওয়া যায়। গ্রাম ও শহরে হতাহতের সংখ্যা প্রায় সমান।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো প্রতিটি আক্রমণেরই তীব্র প্রতিক্রিয়া ও প্রতিআক্রমণ হয়েছে। বিষয়টি চলছে আদিম যুগের ‘খুনের বদলা খুন’ নামক বর্বর ও নৃশংস নীতিতে।

আরও পড়ুন: জন্ম থেকে সংঘাতের চারণভূমি

কয়েকটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের তথ্য মতে, পাকিস্তানে বছরে কমপক্ষে একহাজার মানুষ শিয়া-সুন্নি লড়াইয়ে প্রাণ হারাচ্ছে। আহত হচ্ছে কয়েক সহস্র। আরেকটি মারাত্মক মানবাধিকার লংঘনের ঘটনা ঘটছে শিয়া-সুন্নি সংঘাতের ফলে। তা হলো গুম। উভয় পক্ষে কতজনকে যে গুম করা হয়েছে বা অপহরণ করা হয়েছে, তার ইয়াত্তা নেই।

প্রতিটি গুম ও অপহরণের শেষ ফলাফল হত্যাকাণ্ড বলে মনে করা হয়। সাধারণ ধারণা হলো, পাকিস্তানে গুম ও অপহরণ মানেই গোপন হত্যাকাণ্ড, যে হত্যার কোনও রেকর্ড ও প্রমাণ থাকে না। এমনকি, লাশটিও খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয় না।

এতো পুরনো, রক্তাক্ত ও ক্ষতিকর সামাজিক ও ধর্মীয় সমস্যাটির প্রবল রাজনৈতিক ও নিরাপত্তাগত গুরুত্ব থাকলেও তা প্রশমনে সরকারি বা বেসরকারি পর্যায়ের উল্লেখযোগ্য তৎপরতা নেই। বরং উভয় গ্রুপেরই ধর্মীয়-রাজনৈতিক প্রোপাগান্ডা ও প্রচার-প্রচারণার কারণে প্রতিশোধমূলক মনোবৃত্তি প্রতিনিয়ত বাড়ছে।

প্রতিটি সংঘাতের ঘটনার পর নতুন করে হিংসা ও বিদ্বেষ সঞ্চার করা হচ্ছে। প্রতিটি আঘাতেরই তীব্র প্রতিক্রিয়া ও পাল্টা প্রত্যাঘাত করা হচ্ছে। একজনের বদলে এক তো বটেই, কখনো কখনো প্রতিশোধমূলক হামলার মাধ্যমে ১০ জনকেও মেরে ফেলা হচ্ছে। বিশেষত শিয়াদের মহররম মাসের তাজিয়া অনুষ্ঠানে ও ইমামবাড়ার সমাবেশে বোমা-অস্ত্রসহ নৃশংস হামলা চালানো হচ্ছে। পক্ষান্তরে সুন্নিদের শুক্রবারের জুমার নামাজেও বড় আকারের সশস্ত্র হামলা করা হচ্ছে। উভয় ক্ষেত্রেই উভয় সম্প্রদায়ের নিরীহ মানুষগুলো অকাতরে মারা যাচ্ছেন।

লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো পাকিস্তানে শিয়া-সুন্নি হামলায় অত্যাধুনিক অস্ত্র ও বোমা ব্যবহারের পাশাপাশি অংশ নিচ্ছেন উভয় পক্ষের সুইসাইড স্কোয়াডের আত্মঘাতী সদস্যরা। উভয় সম্প্রদায়ের নেতৃস্থানীয় নেতাদেরও নিহতের তালিকায় পাওয়া যাচ্ছে। মসজিদ ও ধর্মস্থানে সাধারণ গণহত্যার সঙ্গে সঙ্গে বাসা-বাড়িতেও পরিকল্পিত টার্গেট ভিত্তিক হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছেন বিশিষ্ট শিয়া ও সুন্নি নেতারা।

pakis
সংঘাতে বিপর্যস্ত পাকিস্তান, ছবি: সংগৃহীত

 

পাকিস্তানের অনেক শহরেই শিয়া ও সুন্নি মতের অনুসারী ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নেতারা সশস্ত্র দেহরক্ষী নিয়ে চলেন। তারপরেও কোনও পূর্ব-ঘোষণা ছাড়াই যখন তখন উভয় পক্ষের মধ্যে রক্তাক্ত সংঘর্ষ লেগে যাওয়ার ঘটনাও ঘটছে প্রায়শই। বিশেষত হিংসার আগুনে দগ্ধ প্রাচীন ও ঐতিহাসিক শহর করাচির অবস্থা অতি শোচনীয়। প্রায়শই করাচিকে তুলনা করা হচ্ছে সংঘাতের নগর বৈরুতের সঙ্গে।

আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের ভাষ্যে ও গবেষণায় পাকিস্তানকে সেক্টেরিয়ান সংঘাত বা গোষ্ঠী/সম্প্রদায়গত সংঘাতের চারণভূমি বলে উল্লেখ করা হচ্ছে। মূলত ধর্মীয় সম্প্রদায়গত বিভাজন থেকে সংঘাতের সূচনা ও প্রসার হলেও এর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দিক রয়েছে। রাজনৈতিক কারণে সামরিক ও বেসামরিক নেতারা সংঘাত জিইয়ে রেখে ফায়দা নিচ্ছেন।

সংঘাতের অর্থনৈতিক লাভের মধ্যে অস্ত্র বিক্রি ব্যাপক গুরুত্ব পাচ্ছে পাকিস্তানে। যে টাকার বখরা প্রশাসন, নেতারা পেয়ে থাকেন। অবস্থা এমন হয়েছে যে পাকিস্তানে সাধারণ হাট-বাজারে অস্ত্র পাওয়া যাচ্ছে এবং যে কেউ চাইলে সর্বাধুনিক-স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র কিনতে পারছেন।

পাকিস্তানের সাধারণ জনজীবন, পর্যটন ও ভ্রমণ বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে শিয়া-সুন্নি সংঘাতের কারণে। চরম ভীতি ও আতঙ্কে মানুষ জীবন-যাপন করছেন সেখানে। কখন, কোথায় লড়াই লেগে কার জীবন নিঃশেষ হয়ে যাবে, তা কারো জানা নেই।

আরও পড়ুন: চলছে ‘খুনের বদলা খুন’!

সমাজে শিয়া ও সুন্নিরা বসবাস করছেন পারস্পরিক হিংসা ও ঘৃণা নিয়ে এবং একে অপরকে আক্রমণের প্রতিহিংসামূলক মনোভাব লালন করেন। গবেষকরা ‘এক নিঃশব্দ গৃহযুদ্ধ’ নামে অভিহিত করছেন পাকিস্তানের শিয়া-সুন্নিদের মধ্যকার সংঘাতময় পরিস্থিতিকে, যাকে দেশটির সবচেয়ে বড় নিরাপত্তার হুমকি বলেও মনে করা হচ্ছে।

পরিতাপের বিষয় হলো হিংসা ও উগ্রতা ছড়িয়ে পাকিস্তানের নেতারা বছরের পর বছর ধরে একে অপরের শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত করছেন। সাধারণ জনজীবনের সামাজিক নিরাপত্তা ব্যাহত করছেন। ফল স্বরূপ পাকিস্তান পরিণত হয়েছে শিয়া-সুন্নি সংঘাতের এক বিপন্ন জনপদে, সংঘাতের রক্তাক্ত দুষ্টচক্র থেকে কেউ রেহাই পাচ্ছেন না এবং বেরও হতে পারছেন না।

আরও পরিতাপের বিষয় এটাই যে একই ধর্মের মধ্যকার দুই বিবদমান সম্প্রদায়কে থামানোর মতো কোনও সর্বজনমান্য ধর্মীয় বা রাজনৈতিক নেতার দেখা পাকিস্তানে পাওয়া যাচ্ছে না। সবাই কোনও না কোনও গ্রুপ বা গোষ্ঠীর নেতৃত্বে থেকে অপরাপর গ্রুপের সঙ্গে মতাদর্শিক বা সশস্ত্র লড়াই চালিয়েই যাচ্ছেন। পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছেন নিজ নিজ গ্রুপ বা মতের বিভিন্ন উগ্র ও জঙ্গি সংগঠনকে।

যার ফলে দেশটিতে ভীতি, নিরাপত্তাহীনতা, হানাহানি, রক্তপাত ও হতাহত বাড়ছেই। আর এভাবেই পাকিস্তান নামক দেশটির ললাটে উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদের অমোচনীয় তকমা লেগে গেছে। গবেষকদের মতে, ‘পাকিস্তান হয়ে উঠেছে উগ্রবাদ, মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদের আশ্রয়, প্রশ্রয় ও প্রজনন ক্ষেত্র’ এবং 'সংঘাতের ধর্মীয়-রাজনৈতিক রণক্ষেত্র', যা দেশটির 'অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাকে ভঙ্গুর', 'অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত' এবং 'সামাজিক নাগরিক স্থিতিশীলতাকে নাজুক' করে ফেলেছে।
(তৃতীয় কিস্তি)

   

সম্মানসূচক ডি. লিট উপাধি পেল 'বিড়াল'!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে 'ম্যাক্স' নামের একটি বিড়ালকে সম্মানসূচক ‘ডক্টরেট অব লিটারেচার’ বা ডি. লিট উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে। দেশটির ভারমন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির ছাত্রদের স্নাতক অনুষ্ঠানে বিড়ালটিকে এই সম্মানসূচক ডিগ্রি দেওয়া হয়। তবে সেই অনুষ্ঠানে বিড়ালকে আমন্ত্রণ জানানোর নিয়ম না থাকায় উপস্থিত ছিল না ম্যাক্স। 

বিশ্ববিদ্যালয়টির কর্তৃপক্ষ বলছে, অনুষ্ঠানে বিড়ালটি উপস্থিত ছিল না। তাই বিড়ালের মালিক অ্যাশলে ডোর কাছে খুব শিঘ্রই এই ডিগ্রি পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।   

বন্ধুসুলভ এই বিড়ালটিকে তার ইঁদুর শিকারের দক্ষতা বা অতিরিক্ত ঘুমানোর জন্য নয় বরং তার সহচার্যের জন্যই স্বীকৃতি দিয়েছে।   বিড়ালটিকে এই ডিগ্রিতে ভূষিত করা হয়। ভারমন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির ক্যাসেলটন ক্যাম্পাস।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সম্মানসূচক ডি. লিট উপাধি পেল 'বিড়াল'!

বিশ্ববিদ্যালয়টি একটি ফেসবুক পোস্টের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ম্যাক্স দ্য ক্যাট, অনেক বছর ধরেই ক্যাসেলটন পরিবারের একজন আদুরে সদস্য। ভারমন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসের প্রবেশদ্বারের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া রাস্তায় পাশেই বসবাস করে এক পরিবার। বিড়ালটি সেই পরিবারেরই পোষা।

বিড়ালের মালিক অ্যাশলে ডো বলেন, ‘বিড়ালটি ঠিক করেছে সে ক্যাম্পাসে যাবে। এরপর থেকেই সে কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আড্ডা দিতে শুরু করে। আর শিক্ষার্থীরাও তাকে আদর করতে শুরু করে।’

বিড়ালটি প্রায় চার বছর ধরে ক্যাম্পাসে আসা যাওয়া করছে। বিড়ালটিকে পথের ধারে শুয়ে থাকতে দেখলেই সবাই তার সঙ্গে সেলফি নেয়।

এমনকি সাবেক ছাত্ররাও যখনই ক্যাম্পাসে আসেন তারা তখনই বিড়ালটির খোঁজ নিতে তার মালিক ডো-এর কাছে যান। ডো তাদের কাছে বিড়ালটির মা হিসেবেই বেশি পরিচিত।

;

৯৩ বছর বয়সে বৃদ্ধের অবিশ্বাস্য কর্মকাণ্ড



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
বৃদ্ধ জন স্টারব্রুক

বৃদ্ধ জন স্টারব্রুক

  • Font increase
  • Font Decrease

শৈশবে খেলা, কৈশরে পড়ালেখা, যৌবনে চাকরি, মধ্যবয়সে সংসার, বৃদ্ধবয়সে একটা মাথা গোজার ঠাঁই খুঁজে অবসরে সময় কাটিয়ে দেওয়া। কপাল খারাপ থাকলে বিছানাতেই শোয়া বা আধশোয়া থেকে মৃত্যুর দিন গোণা। সাধারণত এভাবেই মানুষের জীবন কেটে যায়। অনেকে আবার মধ্যবয়সের পরেই নানারকম রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। অথবা শরীরকে বিভিন্ন রোগের আবাসস্থল বানিয়ে দুর্বল হয়েই বেঁচে থাকেন। তবে খড়ের গাদায় সূচের মতো দু-একজন থাকে যারা একেবারেই ব্যতিক্রম। তেমনভাবেই আলোচনায় এসেছেন ৯৩ বছরের এক বৃদ্ধ।  তার ব্যতিক্রমী জীবনযাপনের ধারাই আলোড়ন সৃষ্টি করেছে যুসমাজে।     

যুক্তরাজ্যের বাসিন্দা জন স্টারব্রুক। তিনি একজন ওয়াটার পোলো খেলোয়াড়। এটি মূলত পানির মধ্যে বাস্কেটবলের মতো একধরনের খেলা। এইখেলার সাথে কুস্তি খেলারও কিছুটা সাদৃশ্য রয়েছে। জনের বর্তমান বয়স ৯৩ বছর। এই বয়সেও যথেষ্ট সুস্থ এবং সবল তিনি। সমবয়েসীদের যেখানে সোজা হয়ে দাঁড়াতেও ২ জনের সহায়তা লাগে, সেখানে এখনো ম্যারাথনে দৌড়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। পাশাপাশি বেশ দক্ষ সাঁতারুও বটে! ৮০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সাঁতার কাটা অব্যাহত রেখেছেন তিনি।

প্রায় শতাব্দি ছুঁই ছুঁই বৃদ্ধের এমন কারিশমা দেখে চোখ ছানাবড়া হবার উপক্রম। জন মূলত একজন সাঁতারু। পেশাগতভাবে না হলেও অনেক ছোটবেলা থেকেই তিনি সাঁতার কাটেন তিনি। দেশের সম্মানজনক অনেপ্রতিযোগীতায় একাধিক বার চ্যাম্পিয়নের খেতাবও জেতেন। চাকরি করেছেন ‘ব্রিটিশ আর্মি মেডিক্যাল কর্পস’-। সেখানেও সাঁতারের দক্ষতার কারণে তার বেশ সুনাম ছিল।   

ম্যারাথনে দৌড়াচ্ছেন ৯৩ বছরের জন

তবে সাঁতারের পাশাপাশি এখন ম্যারাথেনেও অংশগ্রহণ করেছেন জন। ৫২ টির বেশি ম্যারাথনের দৌড় শেষ করেছেন তিনি। জানালেন এই বয়সেও তার এমন চ্যালেঞ্জিং সব কাজের অভিজ্ঞতা। সুস্থতা ধরে রাখার রহস্যও ফাঁস করলেন সকলের কাছে। ব্রিটিশ নাগরিক জন বন্ধুদের কাছে ‘দ্য লিজেন্ডনামেই পরিচিত। একই নামে তাকে আখ্যায়িত করছে ব্রিটিশ গণমাধ্যমগুলো

জন স্টারব্রুক জানান, তিনি এখনো সপ্তাহের ৬ দিনই জিমে যাতায়াত করেন। বিশেষ কোনো খাদ্যাভাস নেই তার। খাদ্যতালিকায় প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজি রাখতে পছন্দ করেন- এই যা। তাছাড়া প্রতিদিন সকালে পোরিজ খান তিনি। তবে তিনি কখনো ধূমপান করেননি। অ্যালকোহলও খুব সীমিত পরিমাণে সেবন করতেন। মূলত এই বয়সেও এটা সবল থাকার পেছনে বংশ পরম্পরায় পাওয়া নিজের জীন আসল কারণ- বিশ্বাস করেন জন।

কারণ যাই হোক, প্রানবন্ত এই বৃদ্ধ বিশ্ববাসীকে অবাক করেছে। তার মতোই দৃঢ় মানসিকতা ধরে রাখার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন যুবক-যুবতীরা।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

;

প্রশ্ন আর উত্তর যেন পরস্পরের সাংঘর্ষিক!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রশ্ন থাকে এক আর তার উত্তর হয় ভিন্ন। এমন উত্তরপত্রের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রায়ই দেখা যায়। এবার এমনই এক উত্তরপত্রের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে ভাইরাল হয়েছে। যা দেখে রীতিমতো সবাই অবাক! তবে এই ঘটনার জন্ম দেওয়া দেশটি বাংলাদেশ নয়, প্রতিবেশী দেশ ভারতের একটি হিন্দি পরীক্ষায় ঘটেছে এমন কাহিনী।

ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রকাশিত ভিডিওতে পরীক্ষার্থীর এমন উত্তর দেখে শিক্ষককেও হাসতে দেখা যায়। 

ভিডিওটি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করা হয়েছে @n2154j অ্যাকাউন্টের একটি আইডি থেকে।

ওই ভিডিওতে দেখা যায়, একটি প্রশ্ন ছিল এমন, সংযুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণ (যৌগিক ব্যঞ্জনবর্ণ) কী? এই প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষার্থীটি একটি খাদ্য রূপক দিয়ে উত্তর দিল: "মাটার পনির এবং সব মিশ্র সবজি একত্রিত একটি খাবার।"

আরেকটি প্রশ্ন ছিল "অতীত কাল কাকে বলে?" এর উত্তরে ওই পরীক্ষার্থি লিখেছে, "যখন অতীত আমাদের অতীতের আকারে আসে, তখন তাকে অতীত কাল বলা হয়।"

ভিডিও অনুযায়ী আরও একটি প্রশ্ন ছিল "বহুবচন কাকে বলে?" এর উত্তরে সে লিখেছে "যে পুত্রবধূ তার শ্বশুরবাড়ির কথা শোনে তাকে বহুবচন বলে।"

শিক্ষার্থীটির এমন উত্তর শুনে হাসিতে ফেটে পড়েন শিক্ষক। এমন উত্তরগুলোকে শিক্ষক ভুল হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। যদিও এমন উত্তরের জন্য তাকে পুরোপুরি হতাশ করা হয়নি। তাকে ১০ মার্কের মধ্যে ৫ নম্বর দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষক পরে তার উত্তরপত্রে লিখে দিয়েছিলেন, এই ৫ মার্ক তোমার মস্তিষ্কের জন্য, ছেলে।

ভিডিওটি দেখে সবাইকে হাসির ইমোজি দিতে দেখা যায়। সম্পূর্ণ নম্বর না পাওয়ায় অনেকেই যুক্তি দিয়ে লিখেছেন, ছাত্রটি তার কৌতুক প্রতিভার জন্য পূর্ণ নম্বর পাওয়ার যোগ্য।

তবে এমন ঘটনা নিয়ে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করে বলেছেন, ছাত্র এবং শিক্ষকের হাতের লেখা সন্দেহজনকভাবে একই রকম।

অন্য এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, "প্রশ্ন এবং উত্তর একই হাতের লেখা"। 

;

ফেনী শহরে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে কৃষ্ণচূড়া



মোস্তাফিজ মুরাদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

'কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরি কর্ণে-আমি ভুবন ভুলাতে আসি গন্ধে ও বর্ণে' জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই মনোমুগ্ধকর গানে ফুটে উঠেছে কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্য। কৃষ্ণচূড়া যেন প্রকৃতিকে দান করেছে লাল আভার অপরূপ সৌন্দর্যের মহিমা। সাথে গ্রীষ্মের উত্তাপে শহরে সৌরভ ছড়াচ্ছে নানা জাতের ফুল। তীব্র তাপদাহের পর কালবৈশাখী, এরপর মাঝারি বৃষ্টির মধ্যে ফুলের আগমন। এতে রঙের উল্লাসে মেতে উঠেছে ফেনী শহরবাসী।

ফেনী শহরের কোর্ট বিল্ডিং, এলজিইডি, পুলিশ লাইন, নবীন চন্দ্র সেন কালচারাল সেন্টার, ফেনী সরকারি কলেজ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ফুটে আছে কৃষ্ণচূড়া। এটি একদিকে প্রকৃতিকে যেমন সাজিয়েছে অপরূপ সৌন্দর্যে, অন্যদিকে এর সৌন্দর্য মুগ্ধ করছে তরুণ-তরুণী, নানা শ্রেণি-পেশার মানুষসহ ফুলপ্রিয় পথচারীদের। শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কের পাশে, সরকারি দফতরসহ স্কুল-কলেজে কৃষ্ণচূড়া গাছের লাল ও উজ্জ্বল সবুজ পাতার সংমিশ্রণ দৃষ্টিনন্দন করে তুলেছে চারপাশ।


কৃষ্ণচূড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ফুলের ঘ্রাণে মুখরিত হয়ে আছে পুরো শহর। শহরের মূল সড়কের ডিভাইডারে পৌরসভার উদ্যোগে লাগানো হাসনাহেনা, রজনিগন্ধা, গন্ধরাজসহ নানা জাতের ফুল গাছে ফুল ফুটেছে। এটি একদিকে বাড়িয়েছে সৌন্দর্য অন্যদিকে হেঁটে কিংবা রিকশায় চলাচল করলে পাওয়া যায় এসব ফুলের সুঘ্রাণ।

ফেনী শহরের কৃষ্ণচূড়ার অপরূপ সৌন্দর্য দেখে ফুলপ্রিয় পথিকরা বলছেন, কৃষ্ণচূড়া ফুল প্রকৃতিকে অনন্য সাজে সাজিয়েছে। এই ফুলের সৌন্দর্যের কারণে পথচারীরা একবার হলেও এই ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য এর গাছের উপর নজর দিবে। পাশাপাশি তীব্র গরমে অন্যান্য ফুলের সুঘ্রাণে চারপাশ মুখরিত হওয়াতে ক্লান্তিতা কিছুটা হলেও কমছে।


তারা বলছেন, কৃষ্ণচূড়া ফুলের এই নান্দনিক দৃশ্য দেখতে এর গাছ রোপণ করা জরুরি। রাস্তা প্রশস্তকরণ, ঘর-বাড়ি নির্মাণসহ নানা প্রয়োজনে গাছ কেটে ফেলা হয়। অন্যান্য গাছ রোপণ করার পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া রোপণ করলে একদিকে যেমন সৌন্দর্য বাড়াবে অন্যদিকে পরিবেশ বান্ধব হবে।

সাজিদ হাসান নামের এক পথচারী বলেন, কৃষ্ণচূড়া একদিকে যেমন প্রকৃতিতে অপরুপ সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে, আরেকদিকে গ্লোবাল ওয়ার্মিং কমাবে। সারাদেশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে, আমার মতে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে এই গাছটিও যুক্ত করা উচিত। তীব্র গরমের পর বৃষ্টি হলো, এরপর শহরে নানা রঙের ফুলের দেখা মিলছে, ফুলের ঘ্রাণে চলাচল করতেই ভালো লাগছে।

ফারজানা ইয়াসমিন নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ফুলের সৌন্দর্য সবাইকে মুগ্ধ করে। অন্যান্য ফুলের পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া ফুল আমার অনেক ভালো লাগে। আমাদের কলেজে বকুল তলা আছে, ক্যান্টিনের পাশে কৃষ্ণচূড়া গাছ আছে। সুযোগ পেলেই ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করি।

অনিক মোহন নামে একজন বলেন, রিকশায় করে যখন বাসায় ফিরি, শহরের রাস্তার মাঝে ভিডাইভারে লাগানো নানা জাতের ফুলের ঘ্রাণ মনকে আনন্দিত করে। রাতের বেলা শহর যখন নিস্তব্ধ হয়ে যায়, তখন এ ফুলের সৌন্দর্য কয়েকশ’ গুণ বেড়ে যায়।

সড়কের পাশে কৃষ্ণচূড়া লাগানো হলে সৌন্দর্য বাড়বে বলে মনে করেন পথচারী মিনহাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, রাস্তা প্রশস্তকরণের জন্য যে গাছগুলো কেটে ফেলা হয়েছে, ওই গাছগুলোর জায়গা কৃষ্ণচূড়ার গাছ লাগালে রাস্তার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে।

একই কথা বলেন শহরের ব্যবসায়ী নাদিম আহমেদ। তিনি বলেন, সৌন্দর্য ও পরিবেশের কথা বিবেচনা করে এই গাছ রোপণ করা উচিত আমাদের। তাপমাত্রা যেভাবে বাড়ছে অন্যন্যা গাছ রোপণ করার পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া গাছ রোপণ করার উদ্যোগ নিতে হবে। যেগুলো শহরে আছে তাতেই সৌন্দর্য বেড়ে গিয়েছে কয়েকগুণ, আরও যদি লাগানো যায় ফুলে ফুলে ভরে উঠবে আমাদের শহর।

কৃষ্ণচূড়া মাদাগাস্কারের শুষ্ক পত্রঝরা বৃক্ষের জঙ্গলে পাওয়া যায়। যদিও জঙ্গলে এটি বিলুপ্ত প্রায়, বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে এটি জন্মানো সম্ভব হয়েছে। সৌন্দর্যবর্ধন গুণ ছাড়াও, এই গাছ উষ্ণ আবহাওয়ায় ছায়া দিতে বিশেষভাবে উপযুক্ত। কৃষ্ণচূড়া উদ্ভিদ উচ্চতায় কম (সর্বোচ্চ ১২ মিটার) হলেও শাখা-পল্লবে এটি বেশি অঞ্চল ব্যাপী ছড়ায়।

শুষ্ক অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে কৃষ্ণচূড়ার পাতা ঝরে গেলেও, নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে এটি চিরসবুজ থাকে। কৃষ্ণচূড়া ফুলের রং উজ্জ্বল লাল। পত্র ঝরা বৃক্ষ, শীতে গাছের সব পাতা ঝরে যায়। বাংলাদেশে বসন্ত কালে এ ফুল ফোটে। ফুলগুলো বড় চারটি পাপড়ি যুক্ত। পাপড়িগুলো প্রায় ৮ সেন্টিমিটারের মত লম্বা হতে পারে। কৃষ্ণচূড়া জটিল পত্র বিশিষ্ট এবং উজ্জ্বল সবুজ। প্রতিটি পাতা ৩০-৫০ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ২০-৪০ টি উপপত্র বিশিষ্ট। কৃষ্ণচূড়ার জন্মানোর জন্য উষ্ণ বা প্রায়-উষ্ণ আবহাওয়ার দরকার। এই বৃক্ষ শুষ্ক ও লবণাক্ত অবস্থা সহ্য করতে পারে।

জানা যায়, অপরূপ সৌন্দর্য ছড়ানোর পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এর পাতা, মূলের বাকল ও ফুল ভেষজ গুণাগুণ সম্পূর্ণ, যা জ্বর ও খুশকি নিরাময়ের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। ভেষজটি হেমিপ্লেজিয়া, আর্থরাইটিস এবং কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়। কৃষ্ণচূড়া গাছের শিকড়, বাকল এবং ফুল সবই পরজীবী সংক্রমণ নিরাময়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।

;