পটকা কেন ফাটলো লোকের!



মাহবুবুর রহমান সজীব

  • Font increase
  • Font Decrease

গলির মোড়ে, কার্ণিশের গায়ে ইন্টারনেট ঝুলে পড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে একরকমের ট্রেন্ডি হয়ে উঠছে বাঙালি দিনকে দিন।

ফেসবুক, ইউটিউব, ইন্সটাগ্রাম, টুইটার এসব তো এখন আঙুলের ডগায়। ছুঁয়ে দিলেই মেলে। সহজলভ্য হয়ে গেলে যা যা হয় আর কি, কোনো কিছুই বাদ যাচ্ছে না।

এই যে ট্রেন্ডি হয়ে ওঠা, এটা ঠিক এমন যে- ‘আজ গরীব বলে, ডট ডট ডট’, ‘ডট ডট ডট, একদিন তো মরেই যাবো!’ এসবও ছড়িয়ে পড়ছে মহামারি আকারে।

আরও অনেক অনেক বিষয়, যেটা কিনা কখনোই আলোচনা হওয়ার নয়, সেসব নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। কে কেন এসব করছে, আদতে কেউ কিচ্ছু জানে না। তলিয়ে তো ভাবেই না! সবই ট্রেন্ড। এই ট্রেন্ড ফলো করতে গিয়ে অনেক কিছুই করতে হয় বলেই এসব করে লোকে। নতুবা ইজ্জত থাকে না।

/uploads/files/jw61735CSlqGfMMozQmno74XdSuc0mlyjJUt2hb1.jpeg

নুসরাত ফারিয়ার পটাকা গান নিয়ে তুমুল সমালোচনা হয়েছে, হচ্ছে এখনও। পড়শীর রাস্তা নিয়েও তাই। যদিও, এই এক মাসেই মিউজিক ভিডিও দুটি ভিউ পেয়েছে পাঁচ মিলিয়নেরও অধিক।

এটা কেবল ইউটিউবের হিসেব। আরও বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম তো আছেই। কমেন্ট যা এসেছে, তার অধিকাংশই নেতিবাচক। কিন্তু কেন!

কারণটা অধিকাংশ কমেন্টকারীই জানে না। ঢুকে দেখেছে দশ হাজার ডিজলাইক, সেও একটা দিলো। দেখেছে দশজনের নেগেটিভ কমেন্ট, সেও একটা করলো। ট্রেন্ড মেন্টেইন যাকে বলে।

হাজারও চেষ্টা চরিত্র করে বা সাজগোজ, শরীরী ভঙ্গিমা আর সুরের মাধুকরী দিয়েও বাহবা কেন পেলো না পটাকা বা রাস্তা! এটা ভাববার বিষয় মনে হলেও, আদতে তা নয়। কারণ, বাঙালি ফেসবুকার আর ইউটিউবাররা কখন কেন কোনটাকে বাহবা দেবে, আর কোনটাকে লবডঙ্কা দেখাবে; তা কেউ ধারণাও করতে পারে না।

ধরে নিলাম, নুসরাত ফারিয়া খুব খারাপ গেয়েছে। রাকিব রাহুলের লিরিকের ‘রে পটাকা’ শব্দটা গানে এভাবে শুনতে ভাল লাগেনি। সঙ্গে নাচটাও বেমানান। প্রীতমের কম্পোজিশন ভাল হয়নি। বাবা যাদবের ডিরেকশন একদম বাজে। ইভেন, পুরো প্রডাকশনটাই যাচ্ছেতাই। ধরে নিলাম এসব। তবুও কেন সেটা শুনতে হলো লোকের!

গানটা ফারিয়ার বলে? ফারিয়া কবে এত লোককে শিক্ষা-দীক্ষা দেয়ার দায়িত্ব পেয়ে গেলো যে ওর একটা ভরপুর বিনোদনের গান তথা আইটেম গান থেকেই সবার সব কিছু শিখতে হবে! এমন হলো কেন, অমন হলো না কেন; সব কেন ওকেই শুনতে হবে!

/uploads/files/iyTPMcjX5htrSYCefCl6jpbgrArxtZswlkyhmys1.jpeg

পড়শীর রাস্তার কী সমস্যা? রবিউল ইসলাম জীবন খারাপ লিখেছে, ওকে। জুয়েল মোর্শেদের কম্পোজিশন ঠিকঠাক হয়নি, ওকে। পলকের ডিরেকশন বাজে, ওকে। পড়শী কীসব নাচ-অভিনয় করলো, ওকে। তো? ওটাই কেন দেখতে হবে সবাইকে? আরও হাজার হাজার গান তো পড়েই আছে ইউটিউবে! ওসবেও তো চোখ বোলানো যায়।

বিষয়টা কোনোভাবেই এমন নয় যে, আমাদের হাতে অপশন নেই। প্রচুর টিভি চ্যানেল আসাতে যেমন রিমোট টিপে টিপে চ্যানেল পাল্টানোর সুবিধা হয়েছে, ইন্টারনেট আরও ব্যাপকভাবে সবাইকে হিউজ অপশনের সুবিধা দিয়েছে। ফারিয়ার গান ভাল হয়নি? ইগনোর করো, ব্যস। পড়শীর গান ভাল হয়নি? পাল্টে ফেলো, ব্যস।

কেউ কাউকে বাধ্য যেহেতু করছেনা জোর করে শুনতে, অপশনেরও যেহেতু লিমিটেশন নেই; কেন এত ফাটছে লোকের! কেন এতো হাত উঠে যাচ্ছে কীবোর্ডে আজেবাজে কমেন্ট করতে!

ওই যে বললাম, ট্রেন্ডি পিপল। এই এরাই ইউটিউবে ঢুকে তুমুল আগ্রহে রেশমি এলন-টেলন এদের নোংরা ভিডিও দেখে, আর নিচে গিয়ে লম্বা লম্বা ওয়াজ ঝেড়ে আসে। পটকা তো ফাটবেই!

   

জামদানির পর কানে ভাবনার দেশিয় বেনারসির জৌলুস



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
কানে সাফিয়া সাথীর বেনারসির পোশাকে ভাবনা

কানে সাফিয়া সাথীর বেনারসির পোশাকে ভাবনা

  • Font increase
  • Font Decrease

মেধাবী অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনার কান চলচ্চিত্র উৎসবের যাত্রা এখন বেশ আলোচনায়। তার কানের পোশাক-আশাক দেখে বোঝাই যাচ্ছে, বেশ সময় নিয়ে আটঘাট বেঁধেই ভূমধ্যসাগরের পাড়ে হাজির হয়েছেন।

কানে সাফিয়া সাথীর ডিজাইন করা বেনারসির পোশাকে ভাবনা

তাইতো তার প্রতিদিনের ছবি নিয়ে নেটিজেনদের আগ্রহ ক্রমশ বাড়ছে। প্রথম দুদিন পাশ্চাত্যের গাউন বেছে নিলেও তৃতীয় দিন থেকে এই তারকা হাজির হচ্ছেন দেশি পোশাকে।

কাক খুব ভালোবাসেন। কাকের অনেক ছবি এঁকেছেন। এবার সেই ‘কাক’ পোশাকে ধারণ করে কানের রেড কার্পেটে ভাবনা

নিয়ন গ্রীণ জামদানির সঙ্গে ঢাকার ঐতিহ্য রিকশা পেইন্টের মোটিফে ডিজাইন করা ব্লাউজ পরে বেশ চর্চিত হয়েছেন তিনি। এবার নতুন আরও কিছু ছবি পোস্ট করলেন ভাবনা। এগুলো তার কানের চতুর্থ দিনের লুক।

রিকশা পেইন্টের মোটিফে ডিজাইন করা ব্লাউজ পরে বেশ চর্চিত হয়েছেন ভাবনা

আর এদিনও তিনি বেছে নিলেন দেশিয় কাপড়। জামদানির পর বেনারসির জৌলুসে তাক লাগালেন ভাবনা। তবে দেশি ফেব্রিক বেছে নিলেও তিনি বেনারসি শাড়িতে নিজেকে জড়াননি। বর্তমান সময়ের অন্যতম চাহিদাসম্পন্ন ডিজাইনার সাফিয়া সাথীর নকশা করা কাতানের ভিন্নধর্মী গাউনে ধরা দিয়েছেন গ্ল্যামার গার্ল ভাবনা।

কান চলচ্চিত্র উৎসব প্রাঙ্গনে ভাবনা

মেরুণ কাতানে সোনালি জরির কাজ করা। বোঝাই যাচ্ছে বিয়ের বেনারসি কেটে পোশাকটি ডিজাইন করা হয়েছে। লম্বা টেলওয়ালা গাউনটির এক পাশে স্লিট করা। একপাশে অফ সোল্ডার, অণ্যপাশে ফুল হাতা। সঙ্গে কন্ট্রাস্ট সবুজ ঝোলানো দুল। সবমিলিয়ে নায়িকাকে অণ্য দিনের তুলনায় বেশি গর্জিয়াস লাগছে।

কানে সাফিয়া সাথীর ডিজাইন করা বেনারসির লম্বা টেলওয়ালা গাউনে ভাবনা

ছবি দেখে মনে হচ্ছে, কানের প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করছেন ভাবনা। প্রতিদিন দারুণসব সিনেমার প্রিমিয়ার শো উপভোগ করছেন। যখন যেমন ইভেন্টে অংশ নিচ্ছেন তখন তেমনি পোশাকে ধরা দিচ্ছেন। এই যেমন খেতে বের হবার সময় পরেছেন অ্যানিমেল প্রিন্টের স্লিভলেস টপ। সঙ্গে নিয়েছেন মেরুণ রঙের ব্র্যান্ডের হাতব্যাগ।

কান চলচ্চিত্র উৎসব প্রাঙ্গনে ভাবনা

;

সদস্যপদ বাতিল : নিজের খোঁড়া গর্তে পড়ছেন নিপুণ?



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
জায়েদ খান ও নিপুণ আক্তার

জায়েদ খান ও নিপুণ আক্তার

  • Font increase
  • Font Decrease

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন সাবেক সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানের সদস্যপদ বাতিল করেছিলেন নিপুণ আক্তার। গণমাধ্যমে শিল্পী সমিতি ও সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে বাজে মন্তব্য করায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন নিপুণ। এবার একই কারণে সদস্যপদ হারাতে পারেন নিপুণ।

নিপুণের সদস্যপদ কেন বাতিল হবে না, জানতে চেয়ে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বর্তমান কমিটি। বৃহস্পতিবার সমিতির কার্যকরী সভা শেষে এমনটা জানিয়েছেন সহ-সভাপতি ডি এ তায়েব।

নিপুণ আক্তার

গত বুধবার ২০২৪-২০২৬ মেয়াদের নির্বাচনের ফল বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন নিপুণ। তাই এ বিষয়ে সমিতির পদক্ষেপ কী হতে পারে তা নিয়ে বৈঠক করেন সদস্যরা।

বৈঠক শেষে ডি এ তায়েব বলেন, ‘রিট করা নিয়ে আমরা এখনো ভাবছি না। আমাদের কাছে নোটিশ এলে আইনিভাবে তা মোকাবিলা করা হবে।’

এর একদিন আগে সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন ডিপজলকে ‘অশিক্ষিত’সহ নানা কুরুচিপূর্ণ ভাষায় নিপুণ গালাগালি করেন বলেন জানান ডি এ তায়েব। তিনি বলেন, ‘নিপুণ আক্তার গণমাধ্যমে সমিতির সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে যা বলেছেন, তা কুরুচিপূর্ণ, মানহানিকর। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কমিটির সবাই। তার সদস্যপদ কেন বাতিল হবে না, জানতে চেয়ে চিঠি দেওয়া হবে। ৭ দিনের মধ্যে যদি তিনি উত্তর না দেন অথবা উত্তর যথোপযুক্ত মনে না হয়, তাহলে তার সদস্যপদ বাতিল করা হবে।’

মিশা সওদাগর ও ডিপজল

বৃহস্পতিবার সমিতির সভার আগে মিশা-ডিপজল প্যানেলকে সংবর্ধনা দিয়েছেন ইলিয়াস কাঞ্চন ও নিপুণের সময় সদস্যপদ ফিরে পাওয়া ১০৩ শিল্পী। এ সময় নির্বাচন বাতিল চেয়ে রিট করা নিপুণকে নিয়ে কথা বলেন শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডিপজল। তিনি বলেন, ‘আজকে যাকে (নিপুণ) নিয়ে কথা হচ্ছে, সে তো তার বাপকেই অস্বীকার করছে। রক্তে সমস্যা না থাকলে এটা হওয়ার কথা না। যাকে (ডিপজল) দিয়ে সবাই তার মুখ চিনল, তাকেই সে ভুলে যায়। সে কি আমাদের সঙ্গে টেস্ট খেলতে চায়? আসো খেলো। কিন্তু আমরা চাই ভদ্রতা ও নম্রতা। চলচ্চিত্র কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায় সেদিকেই কাজ করব।’

;

দক্ষিণি ছবিতে নগ্ন এই জনপ্রিয় বাঙালি অভিনেতা!



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ঋষভ বসু / ছবি : ইন্সটাগ্রাম

ঋষভ বসু / ছবি : ইন্সটাগ্রাম

  • Font increase
  • Font Decrease

কলকাতার অভিনেতা ঋষভ বসু বাংলাদেশেও পরিচিত ওটিটির কল্যাণে। তার অভিনীত ‘শ্রীকান্ত’, ‘ভটভটি’, ‘মহাভারত মার্ডারস’ ইত্যাদি কাজগুলো আলোচিত হয়েছে। এবার টালিউড থেকে দক্ষিণি সিনেমায় দেখা গেল তরুণ এই অভিনেতাকে। তেলেগু ছবি ‘দক্ষিণা’র ট্রেলারে ঋষভকে নগ্ন দেখে চমকে গেছেন তাঁর ভক্ত-অনুসারীরা। 

এর আগে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, যীশু সেনগুপ্তকে দেখা গেছে দক্ষিণি ছবিতে। এবার একই পথে হাঁটলেন ঋষভ। পরিচালক ওশো তুলসীরামের ডার্ক থ্রিলার ‘দক্ষিণা’ সিনেমার হাত ধরেই তেলেগু ইন্ডাস্ট্রিতে পা রাখলেন তিনি।

ঋষভ বসু / ছবি : ইন্সটাগ্রাম

ট্রেলারেই ইঙ্গিত মিলল যে বাঙালি অভিনেতাকে এখানে নেতিবাচক চরিত্রে দেখা যাবে। একের পর এক মেয়ে খুন করে এক সাইকো কিলার। সেই চরিত্রেই ঋষভ বসু।

প্রথমবার দক্ষিণি ছবিতে পা রেখেই আলোচনায় এই বাঙালি অভিনেতা। চিত্রনাট্যের প্রয়োজনেই ক্যামেরার সামনে নগ্ন হলেন তিনি। ট্রেলারে এক হাড় হিম করা দৃশ্যে ঋষভকে দেখা গেল একেবারে নগ্ন অবস্থায়।

অভিনেতার অবশ্য পর্দায় নগ্নতা নিয়ে কোনো ছুতমার্গ নেই! তাঁর কথায়, ‘এই ছবিতে নগ্নতা প্রযুক্তির সাহায্যে দেখানো হয়েছে। তাই খুব একটা অস্বস্তি হয়নি। তবে চরিত্রের প্রয়োজনে যদি আমাকে নগ্ন হতে হয়, সেটা নিয়ে কোনো ছুতমার্গ নেই।’

ঋষভ বসু / ছবি : ইন্সটাগ্রাম

‘মহাভারত মার্ডারস’-এ ধূসর চরিত্রে ঋষভের অভিনয় দেখেই নাকি ডার্ক থ্রিলার ‘দক্ষিণা’ সিনেমার জন্য তাঁকে বেছে নিয়েছিলেন পরিচালক।

;

কানে ‘গডফাদার’ স্রষ্টাকে ১১ মিনিটের করতালি সম্মাননা!



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
লালগালিচায় হেঁটে লুমিয়েরের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে টুপি নাড়ছেন ফ্রান্সিস ফোর্ড

লালগালিচায় হেঁটে লুমিয়েরের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে টুপি নাড়ছেন ফ্রান্সিস ফোর্ড

  • Font increase
  • Font Decrease

৮৫ বছরের একজন মানুষের জন্য কী আকাক্সক্ষা সবার! হবেই বা না কেন? সর্বকালের সেরা চলচ্চিত্র পরিচালকদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলা অন্যতম। তিনি ‘গডফাদার’ ট্রিলজির কিংবদন্তি পরিচালক। তাকে নিয়ে আগ্রহ না থাকাটাই যেন অস্বাভাবিক!

কান চলচ্চিত্র উৎসবের প্রাণকেন্দ্র পালে দে ফেস্টিভ্যাল ভবনের গ্র্যান্ড থিয়েটার লুমিয়েরের সামনের সড়ক বিভাজক ঢেকে গিয়েছিল জনস্রোতে। তরুণ-তরুণী, বুড়ো-বুড়ি সবার দৃষ্টি তার দিকে। লালগালিচায় হেঁটে লুমিয়েরের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে এক হাতে টুপি নেড়ে সবার অভিবাদনে সাড়া দেন তিনি। তার অন্য হাতে ছড়ি। তাকে একনজর দেখতে দোতলার প্রেস রুমের ব্যালকনির এক কোণে লেগে গেলো জটলা। প্রেস রুমের বাইরে লবিতে গ্র্যান্ড থিয়েটার লুমিয়েরের একপাশের দরজায় মোবাইল ফোন তাক করে রেখেছেন অনেকে। তিনি সুবিশাল লুমিয়েরে ঢোকার পর টানা ৪ মিনিট মুহূর্মুহু করতালিতে সম্মান জানানো হয়।

তরুণ-তরুণী, বুড়ো-বুড়ি সবার দৃষ্টি পরিচালক ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলার দিকে

১৯৭৪ সালে ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলার ‘অ্যাপোক্যালিপস নাউ’ ছবিটি কানে স্বর্ণপাম জয় করেছিল। ৫০ বছর আগের সেই জয় নিয়ে সে সময় বিতর্কও ছিল, কারণ উৎসবটিতে প্রদর্শনের সময় ছবিটির কাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি! ১৯৭৯ সালে কাপলো পরিচালিত ‘দ্য কনভারসেশন’ ছবিটিও স্বর্ণপাম জিতেছে। ১৯৯৬ সালে মূল প্রতিযোগিতা বিভাগে বিচারকদের প্রধান ছিলেন তিনি।

কানে ৪৫ বছর পর ‘মেগালোপলিস’ নিয়ে উৎসবের মূল প্রতিযোগিতায় ফিরলেন ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলা। গতকাল (১৬ মে) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টায় এর ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হয়েছে। কল্পবিজ্ঞানধর্মী বড় ক্যানভাসের ছবি ‘মেগালোপোলিস’ নিজের ওয়াইন বিক্রি থেকে প্রাপ্ত ১২ কোটি ডলার খরচ করে কয়েক দশক সময় নিয়ে বানিয়েছেন তিনি। এর মাধ্যমে ১৩ বছর পর তার নতুন ছবি এলো।

কানে ৪৫ বছর পর ‘মেগালোপলিস’ নিয়ে উৎসবের মূল প্রতিযোগিতায় ফিরলেন ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলা

২ ঘণ্টা ২০ মিনিটের ছবিটির প্রদর্শনী শেষ হতেই টানা ৭ মিনিট দাঁড়িয়ে করতালিতে অভিবাদন জানিয়েছেন দর্শক ও অতিথিরা। তখন অভিনেতা অ্যাডাম ড্রাইভার ও জিয়ানকার্লো এসপোসিতোকে জড়িয়ে ধরেন ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলা। আবেগপ্রবণ কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আপনাদের সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমার কেমন লাগছে তা বলে বোঝানো যাবে না।’

এরপর দর্শক সারিতে থাকা নিজের পরিবারের সদস্যদের পরিচয় করিয়ে দেন ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলা। তবে তিনি বলেন, ‘তারাই একমাত্র নয়, ছবিটির অসাধারণ অভিনেতা-অভিনেত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবাই আমার পরিবার। যেমন স্থপতি চেজার কাতিলিনা (মেগালোপোলিস ছবির প্রধান চরিত্র) বলেছেন, আমরা সবাই এক পরিবার। তোমরা সবাই আমার কাজিন। আমরা এক। আমরা মানব পরিবার। আমাদের পুরো পরিবার, দিনের শেষে এই সুন্দর বাড়ি ও পৃথিবীর প্রতি আমাদের সবারই আনুগত্য থাকা দরকার। এটাই আমার চাওয়া। শিশুরাই আমাদের কাছ থেকে এমন সুন্দর পৃথিবীর উত্তরাধিকারী হতে চলেছে। সুন্দর পৃথিবীতে যেকোনো ভাষায় আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শব্দ হলো ‘এসপারেনচা’। অর্থাৎ আশা। এটাই আমি উৎসর্গ করছি।’

‘মেগালোপলিস’-এর পুরো টিম হাজির হয়েছেন কান চলচ্চিত্র উৎসবে

এবারের মূল প্রতিযোগিতায় রয়েছে ২২টি চলচ্চিত্র। এরমধ্যে পল শ্রেডারের ‘ও কানাডা’র অভিনেতা রিচার্ড গেয়ার ‘মেগালোপলিস’-এর প্রিমিয়ার দেখেছেন। অস্কারজয়ী ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলার সামনের সারিতে বসেন তিনি। নির্মাতার গালে চুম্বনের পর তাকে অভিনন্দন জানান এই তারকা।

‘মেগালোপলিস’-এর গল্পে দেখা যায়, একটি দুর্ঘটনায় নিউ ইয়র্ক সিটি ধ্বংস হওয়ার পর টেকসই ইউটোপিয়া হিসেবে শহর পুনর্র্নিমাণের জন্য কাজ শুরু করে চেজার। কিন্তু তাকে চ্যালেঞ্জ করে দুর্নীতিগ্রস্ত মেয়র ফ্র্যাঙ্কলিন সিসেরো। তার মেয়ে জুলিয়াকে ভালোবেসে ফেলে চেজার। মেয়েটি তাকে লক্ষ্য পূরণে সহায়তা করে যায়।

‘মেগালোপলিস’ সিনেমার দৃশ্যে হলিউড অভিনেতা অ্যাডাম ড্রাইভার
;