খাবারে শিল্প কারখানার রং, ধানমন্ডির রেস্টুরেন্টকে ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
জাতীয়
রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় অস্বাস্থ্যকর রান্নাঘরে খাবার তৈরি ও খাবারে শিল্প কারখানায় ব্যবহৃত রং পাওয়া যাওয়ায় একটি রেষ্টুরেন্টেকে ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন র্যাব-২ ভ্রাম্যমাণ আদালত।
মঙ্গলবার (৪ জুন) র্যাব-২ থেকে মোবাইলে পাঠানো এক ক্ষুদে বার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
ক্ষুদে বার্তায় বলা হয়, রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় একটি রেষ্টুরেন্টে অস্বাস্থ্যকর রান্নাঘর এবং খাবারে শিল্প রং ব্যবহার করার দায়ে ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান ও সিলগালা করা হয়। এছাড়া ২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
এ বিষয়ে বিস্তারিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হবে বলেও ক্ষুদে বার্তায় বলা হয়।
দুর্নীতি মামলায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির না হওয়ায় মানিকগঞ্জ পৌর মেয়র রমজান আলীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে মানিকগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক জয়শ্রী সমদ্দার এই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুদকের আইনজীবী আজিজ উল্লাহ জানান, পৌর মেয়র রমজান আলীর বিরুদ্ধে তিনটি দুদকের মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। রোববার ওই মামলায় হাজির হয়নি পৌর মেয়র রমজান আলী। বিচারক তার জামিন বাতিল করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
পৌর মেয়র রমজান আলীর আইনজীবী এটিএম শাহজাহান বলেন, দুদকের মামলায় মেয়র রমজান আলী জামিনে ছিলেন। মেয়র বর্তমানে চীনে থাকায় আদালতে আজ হাজির হতে পারেননি।
ব্যক্তিগত কাজে বিদেশ থাকার কারণে বিচারক তার জামিন বাতিল করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন। মেয়র দেশে আসার পর আদালতে জামিন প্রার্থনা করলে তার জামিন হয়ে যাবে বলে জানান ওই আইনজীবী।
প্রচণ্ড দাবদাহ উপেক্ষা করে পটুয়াখালীর সদর উপজেলার দুটি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সকাল ৮টায় শুরু হয়ে একটানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে। একাধিক চেয়ারম্যান ও মেম্বর প্রার্থী থাকায় ভোটগ্রহণকে ঘিরে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে এলাকায়।
ভোটকেন্দ্রের বাইরে বসে বিভিন্ন খাবারের দোকান। তবে প্রচণ্ড গরমে তৃষ্ণা মেটাতে কম দামে আইসক্রিম পাওয়ায় অনেকেই কিনে খেয়েছেন। বেশির ভাগ দোকানে পাওয়া গেছে ৫ টাকা ও ১০ টাকা দামের আইসক্রিম। কমদামি এসব আইসক্রিম কতটা স্বাস্থ্যসম্মত সেটা অবশ্য অন্য ব্যাপার। ভোটের আনন্দে সে চিন্তা কারো মাথাতেই ছিল না।
রোববার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে কমলাপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ক্রোকমহল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, গরমে তৃষ্ণা মেটাতে কম দামের এসব আইসক্রিম কিনছেন শিশু, কিশোর, যুবকসহ সবাই।
স্থানীয় বাসিন্দা মানিরুল ইসলাম বলেন, ‘ছেলেকে সঙ্গে নিয়েই ভোট দিতে আসছিলাম। ছেলে বায়না করলো আইসক্রিম খাবে। তাই কিনে দিতে বাধ্য হইছি’।
৭ বছরের শিশু তামিম জানালো, বাড়ির পাশে ভোটকেন্দ্র হওয়ায় ঘুরতে এসেছে। বাবার কাছ থেকে ১০ টাকা নিয়ে দুটো আইসক্রিম কিনে খেয়েছে।
আইসক্রিম বিক্রেতা আনোয়ার গাজী বলেন, ‘আমার ১৫ বছরের এই ব্যবসায়ী জীবনে আজ সর্বোচ্চ বেচাকেনা করেছি। সকাল থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। আশা করি, আরো হাজার দেড়েক বিক্রি হবে’।
নির্বাচনি মেডিকেল টিমের মেডিকেল অফিসার ডা. জিয়া রহমান বলেন, ‘এসব আইসক্রিমগুলো কোনোমতেই স্বাস্থ্যসম্মত না। আর আমরা সব ভোটারদের অনুরোধ করেছি, যাতে দীর্ঘক্ষণ রোদে থাকার পরে যাতে সরাসরি ঠান্ডা কিছু না খান। আমাদের তিন সদস্য বিশিষ্ট টিম সার্বক্ষণিক মাঠে কাজ করছে’।
ভুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান পদে ৪ জন, সংরক্ষিত সদস্য ৯ জন, সাধারণ সদস্য ২৫ জন এবং কমলাপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, সংরক্ষিত সদস্য ৮ ও সাধারণ সদস্য ২৬ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
হিট অ্যালার্টেও স্কুল খুলল, গরমের ঝুঁকিতে শিক্ষার্থীরা
রাজু আহম্মেদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
জাতীয়
ঈদ ও তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে এক মাসের বেশি ছুটির পর আবারও খুলেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রাথমিক ও গণশিক্ষার মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রোববার থেকে পুনরায় শুরু হয়েছে পাঠদান। পাঠদানের সময় সুচি পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে নতুন সময়। তবে সে সময়েও তীব্র গরমের ঝুঁকিতে শিক্ষাথীরা।
অভিভাবকরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের নিয়মিত রুটিন পরিবর্তন করতে হচ্ছে। এতে স্বাভাবিকভাবে নতুন সময়ে অভ্যাস তৈরিতে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। পাশাপাশি পড়াশুনার সময় ও প্রাইভেট টিউশনের সুযোগ সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে অনেক শিক্ষার্থীকে। এ ছাড়া দেশের তাপ প্রবাহের প্রকোপে সকাল ৯ টার পরই বাইরের তাপমাত্রা অসহনীয় হয়ে যায়। ফলে নতুন সময় অনুযায়ী পাঠদানেও ঝুঁকির বাইরে নয় শিক্ষার্থীরা। এমন অবস্থায় অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থাই উত্তম বলছেন তারা
ফার্মগেট বটমলী হোম বালিকা স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ম্যারানো মেরিন। নিয়মিত সকাল ১০ টায় স্কুলে আসে সে। প্রাত্যহিক অভ্যাস অনুযায়ী সকাল ৮ টায় ঘুম থেকে উঠে নাস্তা ও রেডি হয়ে আসেন। তবে নতুন নিয়মে নিজেকে প্রস্তুত করতে প্রায় ৩৫ মিনিট দেড়ি হয়ে এই শিক্ষার্থীর। স্বাভাবিক ভাবে ঘুম অপূর্ণ থাকায় মাথা ব্যথার সমস্যায় ও পড়েছে বলে জানান মেরিনের মা মেরিনো লিনা।
লিনা বলেন, আমাদের অভ্যাসগত কিছু দিক থাকে যা পরিবর্তন সম্ভব নয়৷ পরিবর্তন করলেও বেশ কিছু জটিলতা থাকে খাপ খেতে নানা সমস্যায় পড়তে হয়। শিশুদের ক্ষেত্রে এটা বেশি।
তিনি বলেন, সকাল ১০টা হলেই গরম আর সহ্য করা যায় না। বাচ্চাদের রক্ষার জন্য যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা কোন ভাবেই তাদের উপকারে আসছে না। আবহাওয়া যতটা প্রখর হয়ে উঠেছে তাতে কোন ভাবেই সময় পরিবর্তন করে রক্ষা পাওয়া যাবেনা। এর জন্য অনলাইন ক্লাস চালু করা প্রয়োজন।
নাখাল পাড়া প্রাইমারি স্কুলের ৪র্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর মা আমেনা খাতুন বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তাপপ্রবাহ টা বেশি থাকে। ফলে শিক্ষার্থীদের ঝুঁকির যে কথাটা আমরা বলছি তা ঠেকানোর উপায় তাদের ঘরে রাখা। এ ক্ষেত্রে তাপপ্রবাহ যতদিন থাকে ততদিন তাদের অনলাইন শিক্ষার ব্যবস্থাই শ্রেয় মনে হয় হয় আমাদের।
সিভিল অ্যাভিয়েশন স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মারুফ বলেন, সকালে নিয়মিত রুটিনে আমাদের একটা অভ্যাস হয়েছে। যেটা থেকে বের হয়ে নতুন সময় ঠিক রাখতে আজ কিছুটা সমস্যা হয়েছে। তবে দুপুরের যে রোদ টা এটা থেকে মুক্তি মেলেনি। দেখছেন শরীর ঘেমে গেছে৷ এখন এমন অবস্থায় আমাদের অনলাইন ক্লাশ হলেই ভালো হতো
সরকারের নতুন সময় অনুযায়ী এক পালায় (শিফটে) পরিচালিত বিদ্যালয়গুলো প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলবে। আর দুই পালায় বিদ্যালয়গুলোয় প্রথম পালা সকাল ৮টা থেকে সকাল সাড়ে ৯টা এবং দ্বিতীয় পালা সকাল পৌনে ১০টা থেকে থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলমান থাকবে।
শিফট পরিবর্তন করে কি শিশুদের গরম ও রোদ থেকে রক্ষা সম্ভব কিনা? এ প্রসঙ্গে শিশু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তীব্র তাপ প্রবাহে সব থেকে ঝুঁকিতে আছে শিশুরা। অতিরিক্ত গরমে শিশুদের ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, জন্ডিস পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়া স্বাভাবিক ভাবে জ্বর, সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহ, কানে ইনফেকশন, টনসিলাইটিস ও নিউমোনিয়াও দেখা দিতে পারে। প্রখর রোদে ত্বকে ফোসকা পড়া, ত্বক বিবর্ণ হয়ে যাওয়া, ফাঙ্গাসের সংক্রমণ, ঘামাচি ও চুলকানি দেখা দিতে পারে। ফলে রোদ থেকে শিশুদের রক্ষাতে ঘরে থাকার পরামর্শ সকলের।
চিকিৎসকরা বলছেন, বর্তমান তাপমাত্রা একদমই অস্বাভাবিক শিশুদের জন্য। এর ফলে নানা ভাবে আক্রান্ত হতে পারে শিশুরা। ঠান্ডা ও ছায়াযুক্ত স্থানে শিশুদের রাখা জরুরি। এবং গরম থেকে বাঁচতে পারিবারিক ভাবে সচেতনতা বাড়ানোর উচিত। তাই শিফট পরিবর্তন নয়, শিশু সুরক্ষায় নিরাপদ স্থানই নিশ্চিত প্রয়োজন।
আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে শিশু বিশেষজ্ঞ ও অ্যাসোসিয়েট সাইন্টিস্ট ফারহানা আফরোজ বলেন, দিন দিন তাপ প্রবাহ বেড়ে চলছে৷ ফলে শিশু ও বৃদ্ধরা নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে৷ বিশেষ করে শিশুরা অতিরিক্ত ঝুঁকিতে পড়ছে। ফলে শিশুদের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া উচিত।
তিনি বলেন, শিশুদের গরমের পাশাপাশি ধুলোবালি থেকে দূরে রাখতে হবে। বাহিরের খাবার ও পানি পান জরা থেকে বিরত রাখতে হবে। তীব্র গরমে অস্বস্তি থেকে শিশুরা মাথা ঘুরে পড়ে যেতে পারে। সকল ঝুঁকি এড়াতে দিনের বেলায় ঘরে থাকাই শ্রেয়।
প্রসঙ্গত, ৩১ মার্চ থেকে দেশে তাপপ্রবাহ শুরু হয়। গত ২৮ দিন ধরে টানা তাপপ্রবাহ চলছে; যা অতীতে কখনো দেখা যায়নি। এ পরিস্থিতিতে ঈদের ছুটির পর আর স্কুল খোলেনি সরকার। অসহনীয় গরমের কারণে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত স্কুল-কলেজে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল।
এই গরমে শিশুদের 'অতি উচ্চ ঝুঁকির' বিষয়টি স্মরণ করিয়ে তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিতে বলেছে জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফও।
চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ারের মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ দ্রুত তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
রোববার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইউশা রহমান এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য গণমাধ্যমকে জানান।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন জানায়, জাতীয় দৈনিক কালবেলায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে মানবসেবার অন্তরালে যে নির্মম ও বর্বরোচিত চিত্র ফুটে উঠেছে তা অত্যন্ত ভয়াবহ। মানবসেবা পরম ধর্ম কিন্তু মানব সেবার নামে মুখোশের আড়ালে রাস্তা থেকে অসুস্থ, অসহায় ও নিরীহ মানুষকে তুলে এনে চিকিৎসার নামে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রির যে অভিযোগ মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে উঠেছে তা অত্যন্ত ভীতিকর, ন্যাক্কারজনক ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।
সাংবিধানিক সংস্থাটি জানায়, অভিযুক্ত মিল্টন সমাদ্দার গুরুতর অসুস্থদের হাসপাতালে না নিয়ে নিজ প্রতিষ্ঠানে আটকে রাখা, ভুয়া ডাক্তার কর্তৃক মৃত্যু সার্টিফিকেট তৈরি করা কিংবা মৃত লাশের শরীরে কাটাছেঁড়ার যে তথ্য প্রতিবেদনে উঠে এসেছে তার যথাযথ তদন্ত হওয়া উচিত মর্মে কমিশন মনে করে।
তাই অভিযোগের বিষয়টি নিবিড়ভাবে তদন্ত করে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক দ্রুত কমিশনে প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য পুলিশ কমিশনার, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সম্পর্কে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক কমিশনে প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য মহাপরিচালক, সমাজসেবা অধিদফতরকে বলা হয়েছে। প্রতিবেদনটি আগামী ৩০ মে কমিশনে জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।