হিট অ্যালার্টেও স্কুল খুলল, গরমের ঝুঁকিতে শিক্ষার্থীরা



রাজু আহম্মেদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
হিট অ্যালার্টেও স্কুল খুলল, গরমের ঝুঁকিতে শিক্ষার্থীরা

হিট অ্যালার্টেও স্কুল খুলল, গরমের ঝুঁকিতে শিক্ষার্থীরা

  • Font increase
  • Font Decrease

ঈদ ও তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে এক মাসের বেশি ছুটির পর আবারও খুলেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রাথমিক ও গণশিক্ষার মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রোববার থেকে পুনরায় শুরু হয়েছে পাঠদান। পাঠদানের সময় সুচি পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে নতুন সময়। তবে সে সময়েও তীব্র গরমের ঝুঁকিতে শিক্ষাথীরা।

অভিভাবকরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের নিয়মিত রুটিন পরিবর্তন করতে হচ্ছে। এতে স্বাভাবিকভাবে নতুন সময়ে অভ্যাস তৈরিতে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। পাশাপাশি পড়াশুনার সময় ও প্রাইভেট টিউশনের সুযোগ সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে অনেক শিক্ষার্থীকে। এ ছাড়া দেশের তাপ প্রবাহের প্রকোপে সকাল ৯ টার পরই বাইরের তাপমাত্রা অসহনীয় হয়ে যায়। ফলে নতুন সময় অনুযায়ী পাঠদানেও ঝুঁকির বাইরে নয় শিক্ষার্থীরা। এমন অবস্থায় অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থাই উত্তম বলছেন তারা

ফার্মগেট বটমলী হোম বালিকা স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ম্যারানো মেরিন। নিয়মিত সকাল ১০ টায় স্কুলে আসে সে। প্রাত্যহিক অভ্যাস অনুযায়ী সকাল ৮ টায় ঘুম থেকে উঠে নাস্তা ও রেডি হয়ে আসেন। তবে নতুন নিয়মে নিজেকে প্রস্তুত করতে প্রায় ৩৫ মিনিট দেড়ি হয়ে এই শিক্ষার্থীর। স্বাভাবিক ভাবে ঘুম অপূর্ণ থাকায় মাথা ব্যথার সমস্যায় ও পড়েছে বলে জানান মেরিনের মা মেরিনো লিনা।


লিনা বলেন, আমাদের অভ্যাসগত কিছু দিক থাকে যা পরিবর্তন সম্ভব নয়৷ পরিবর্তন করলেও বেশ কিছু জটিলতা থাকে খাপ খেতে নানা সমস্যায় পড়তে হয়। শিশুদের ক্ষেত্রে এটা বেশি।

তিনি বলেন, সকাল ১০টা হলেই গরম আর সহ্য করা যায় না। বাচ্চাদের রক্ষার জন্য যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা কোন ভাবেই তাদের উপকারে আসছে না। আবহাওয়া যতটা প্রখর হয়ে উঠেছে তাতে কোন ভাবেই সময় পরিবর্তন করে রক্ষা পাওয়া যাবেনা। এর জন্য অনলাইন ক্লাস চালু করা প্রয়োজন।

নাখাল পাড়া প্রাইমারি স্কুলের ৪র্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর মা আমেনা খাতুন বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তাপপ্রবাহ টা বেশি থাকে। ফলে শিক্ষার্থীদের ঝুঁকির যে কথাটা আমরা বলছি তা ঠেকানোর উপায় তাদের ঘরে রাখা। এ ক্ষেত্রে তাপপ্রবাহ যতদিন থাকে ততদিন তাদের অনলাইন শিক্ষার ব্যবস্থাই শ্রেয় মনে হয় হয় আমাদের।


সিভিল অ্যাভিয়েশন স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মারুফ বলেন, সকালে নিয়মিত রুটিনে আমাদের একটা অভ্যাস হয়েছে। যেটা থেকে বের হয়ে নতুন সময় ঠিক রাখতে আজ কিছুটা সমস্যা হয়েছে। তবে দুপুরের যে রোদ টা এটা থেকে মুক্তি মেলেনি। দেখছেন শরীর ঘেমে গেছে৷ এখন এমন অবস্থায় আমাদের অনলাইন ক্লাশ হলেই ভালো হতো

সরকারের নতুন সময় অনুযায়ী এক পালায় (শিফটে) পরিচালিত বিদ্যালয়গুলো প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলবে। আর দুই পালায় বিদ্যালয়গুলোয় প্রথম পালা সকাল ৮টা থেকে সকাল সাড়ে ৯টা এবং দ্বিতীয় পালা সকাল পৌনে ১০টা থেকে থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলমান থাকবে। 

শিফট পরিবর্তন করে কি শিশুদের গরম ও রোদ থেকে রক্ষা সম্ভব কিনা? এ প্রসঙ্গে শিশু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তীব্র তাপ প্রবাহে সব থেকে ঝুঁকিতে আছে শিশুরা।  অতিরিক্ত গরমে শিশুদের ডায়রিয়া,  নিউমোনিয়া, জন্ডিস পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়া স্বাভাবিক ভাবে জ্বর, সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহ, কানে ইনফেকশন, টনসিলাইটিস ও নিউমোনিয়াও দেখা দিতে পারে। প্রখর রোদে ত্বকে ফোসকা পড়া, ত্বক বিবর্ণ হয়ে যাওয়া, ফাঙ্গাসের সংক্রমণ, ঘামাচি ও চুলকানি দেখা দিতে পারে। ফলে রোদ থেকে শিশুদের রক্ষাতে ঘরে থাকার পরামর্শ সকলের।


চিকিৎসকরা বলছেন, বর্তমান তাপমাত্রা একদমই অস্বাভাবিক শিশুদের জন্য। এর ফলে নানা ভাবে আক্রান্ত হতে পারে শিশুরা। ঠান্ডা ও ছায়াযুক্ত স্থানে শিশুদের রাখা জরুরি। এবং গরম থেকে বাঁচতে পারিবারিক ভাবে সচেতনতা বাড়ানোর উচিত। তাই শিফট পরিবর্তন নয়, শিশু সুরক্ষায় নিরাপদ স্থানই নিশ্চিত প্রয়োজন।

আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে শিশু বিশেষজ্ঞ ও অ্যাসোসিয়েট সাইন্টিস্ট ফারহানা আফরোজ বলেন, দিন দিন তাপ প্রবাহ বেড়ে চলছে৷ ফলে শিশু ও বৃদ্ধরা নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে৷ বিশেষ করে শিশুরা অতিরিক্ত ঝুঁকিতে পড়ছে। ফলে শিশুদের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া উচিত।

তিনি বলেন, শিশুদের গরমের পাশাপাশি ধুলোবালি থেকে দূরে রাখতে হবে। বাহিরের খাবার ও পানি পান জরা থেকে বিরত রাখতে হবে। তীব্র গরমে অস্বস্তি থেকে শিশুরা মাথা ঘুরে পড়ে যেতে পারে। সকল ঝুঁকি এড়াতে দিনের বেলায় ঘরে থাকাই শ্রেয়।

প্রসঙ্গত, ৩১ মার্চ থেকে দেশে তাপপ্রবাহ শুরু হয়। গত ২৮ দিন ধরে টানা তাপপ্রবাহ চলছে; যা অতীতে কখনো দেখা যায়নি। এ পরিস্থিতিতে ঈদের ছুটির পর আর স্কুল খোলেনি সরকার। অসহনীয় গরমের কারণে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত স্কুল-কলেজে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল।

এই গরমে শিশুদের 'অতি উচ্চ ঝুঁকির' বিষয়টি স্মরণ করিয়ে তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিতে বলেছে জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফও।

   

৯ শিক্ষার্থীর জন্য ১৩ শিক্ষক, তবুও সবাই ‘ফেল’!



মাসুম বিল্লাহ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গাইবান্ধা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

গাইবান্ধার একটি এমপিওভুক্ত উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২০২৪ এর এসএসসি পরীক্ষায় নিয়মিত ৯ শিক্ষার্থীসহ ১৪ শিক্ষার্থীর একজনও পাস করেনি। অথচ বিদ্যালয়টিতে ওই ১৪ শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা ১৬ জন। তার মধ্যে শিক্ষকের সংখ্যাই ১৩ জন।

ফেল করা ওই ১৪ জনের সকলেই মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ৯ জন নিয়মিত এবং অনিয়মিত শিক্ষার্থী ছিলেন ৫ জন, অর্থাৎ গত বছরের অকৃতকার্য পাঁচ পরীক্ষার্থীও এ বছরের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। অনিয়মিত ওই পাঁচ শিক্ষার্থী ছাড়া এ বছরের ৯ জন নিয়মিত শিক্ষার্থীর জন্য বিদ্যালয়ে ছিলেন ১৩ শিক্ষক। তবুও পাস করেনি কেউই। আর নিয়মিত ওই ৯ শিক্ষার্থীর ছয় জনই ফেল করেছেন গণিত বিষয়ে।

বিদ্যালয়টির এমন নেতিবাচক হতাশ করা ফলাফলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা। তারা প্রশ্ন তুলেছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দায়িত্বের পাশাপাশি যোগ্যতা নিয়েও। ১৪ শিক্ষার্থীর একজনও পাস করতে না পারা ওই বিদ্যালয়ের নাম ‘ঘগোয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়’। প্রতিষ্ঠানটি জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নে অবস্থিত।

সূত্র জানায়, ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ঘগোয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। পরবর্তীতে ১৯৯৯ সাল হতে ওই বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে থাকে শিক্ষার্থীরা। প্রতিষ্ঠার ১০ বছর পর বিদ্যালয়টি ২০০৪ সালে এমপিওভুক্ত হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়ে ১৩ শিক্ষকের মধ্যে ৯ জন পুরুষ এবং নারীর সংখ্যা ৪।

স্থানীয়রা বলছেন, ১৪ জন শিক্ষার্থীর জন্য বিদ্যালয়ে শিক্ষক ১৩ জন। প্রত্যেকটি শিক্ষার্থীর জন্য প্রায় একজন শিক্ষক বলা যায়। আর এ বছরের (চলতি পরীক্ষার) নিয়মিত ৯ জন শিক্ষার্থী ধরলে একজন শিক্ষার্থীর বিপরীতে প্রায় দেড়জন করে শিক্ষক বলা যায়। তারপরেও একজনও পাস করতে না পারার জন্য কেবল ওই সব শিক্ষার্থী দায়ী নয়, এর জন্য দায়ী শিক্ষকরা। এমন ফলাফলে শিক্ষকদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেও কম হয়ে যাবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ক্ষোভ প্রকাশ করে একজন স্থানীয় বলেন, বিদ্যালয়টি প্রতিদিন খোলা থাকে ঠিকই। শিক্ষকদের মধ্যে যারা নিয়মিত আসেন, তারা কেবল বেতন নেওয়ার জন্য আসেন, পড়াতে আসেন না। বিদ্যালয়ে এসে নানান তালের, নানা গল্পে তারা ব্যস্ত থাকেন। কিন্তু তারা যে জন্য বেতন পান, সেই দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করলে অবশ্যই বাচ্চারা পাস করতো। এমপিওভুক্ত একটা বিদ্যালয়ে কী করে এসএসসি পরীক্ষায় শতভাগ শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয় বিষয়টি তদন্ত প্রয়োজন।

সকল পরীক্ষার্থী অকৃতকার্য হওয়া প্রশ্নে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হাকিম মোবাইল ফোনে বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘১৯৯৯ সাল থেকে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নেয়। কোনো বছরই ফলাফলে এমন বিপর্যয় হয়নি। হ্যাঁ, ফলাফল খারাপ ছিল, তাই বলে এরকম নয়। এবছরের ১৪ শিক্ষার্থীর অন্তত পাঁচ থেকে সাত জন পাস করার শতভাগ যোগ্যতা রাখে। কেন তাদের রেজাল্ট ফেল আসল? আমরা বুঝতে পারছি না। তবে, ধারণা করা হচ্ছে উত্তরপত্র মূল্যায়নে যেকোনো ধরনের ত্রুটি হয়ে থাকতে পারে।’ আমরা ফলাফল বিষয়ে শিক্ষা বোর্ডে চ্যালেঞ্জ করব, বলেন তিনি।

তিনি জানান, ফলাফল প্রকাশের পর ইতোমধ্যে ১৪ শিক্ষার্থীর ১২ জন আমার সাথে যোগাযোগ করেছে। তাদের ফলাফল মূল্যায়নে তারা বোর্ড চ্যালেঞ্জ করবে।

এ ব্যাপারে গাইবান্ধা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রোকসানা বেগম মোবাইল ফোনে বলেন, যেকোনো বিদ্যালয়ই পরীক্ষার ফলাফলে শতকরা শূন্যের হারের বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। ওই বিদ্যালয়ের এ বছরের ১৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৪ জনই অকৃতকার্যের হওয়ার ব্যাপারে ইতোমধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নোটিশে প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষার্থীরা ফেল করা বিষয়ের সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের জবাব দিতে বলা হয়েছে। জবাব পেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষায় ওই বিদ্যালয় থেকে ১৮ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। যাদের মধ্যে পাস করে ১৩ জন এবং ফেল করে ৫ জন (যারা এ বছরও পরীক্ষায় অংশ নেয়)। এছাড়া বিদ্যালয়টি হতে ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় ২১ জন। যার মধ্যে কৃতকার্য হয় ১৭ জন। ওই বছরেও অকৃতকার্য হয় ৫ জন শিক্ষার্থী।

;

‘রেলের ধারে মাথা রাইখা কোনো রকমে বাঁইচা আছি’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আমাগো কষ্টের শ্যাষ নাই, কয়ডা কমু? দ্যাহার কেউ নাই। নাই ভালো একটা ঘর, নাই কল, নাই টয়লেট। কত জায়গায় বাচ্চাদের পুষ্টি দেয়, লেখাপড়ার জিনিসপত্র, গর্ভবতী মায়েদের সেবা দেয় বিনা পয়সায়। কিন্তু এই বস্তিতে কোনো সুবিধা আহে না। রেলের বস্তিতে না মইরা বাঁইচা আছি আমরা। এভাবেই কথাগুলো বলেছেন রংপুর নগরীর লালবাগ রেললাইনের বস্তিবাসীরা।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, রেললাইনের দুই ধারে ছোট ছোট টিনশেড, বাঁশের ছাউনি আবার কোনো কোন ঘরের অধিকাংশই কাপড়ের পর্দা ও পলিথিনের আবরণে ঢাকা। এই বস্তিতে প্রায় ১৫০ পরিবারে ৫০০-র বেশি মানুষের বাস। দিনভর দেখা মেলে এক ঝাঁক শিশুসহ মায়েরা নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত। ঘনবসতিপূর্ণ প্রতিটি ঘরের নেই পর্যাপ্ত জায়গা। ঘিঞ্জি ভাবে যুবক-সন্তানদের নিয়ে এক ঘরেই থাকেন তারা। পরিবার পরিকল্পনা না থাকায় একাধিক শিশু ঘর আলো করে আসলেও জীবন আলোকিত হচ্ছে না তাদের। বঞ্চিত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, পুষ্টিসহ সুন্দর পরিবেশে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠা থেকে।

বস্তিতে একটিমাত্র বেসরকারি স্কুল থাকলেও সেখানে স্বল্প সংখ্যক শিশুর শিক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। সুযোগ না পেয়ে ঝড়ে পড়ছে অসংখ্য শিশু। বিশেষ করে পরিবারের দারিদ্র্য প্রাথমিকের গণ্ডি পার হতে দিচ্ছে না শিশুদের। ন্যূনতম স্বাক্ষর শিখেই কাজে দেওয়া হচ্ছে। বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা না থাকায় সমস্যার যেন শেষ নেই তাদের।


জানতে চাইলে বস্তিবাসী বৃদ্ধ জয়নব, রমিজা, আজিরনসহ বেশ কয়েকজন বলেন, আমাগো দুঃখ দেহার কেউ নাই। অনেকেই আহে শুধু খাতা কলমে নাম লেইহা আর খোঁজ নাই। পানি আয়রন থাকলেও তাও খাওয়া যায়। কিন্তু টয়লেট নাইগা। ড্রেনের ওপরে ইট দিয়া কাপড়-প্লাস্টিকের ঘেরাও করা। এভাবেই আমরা যুগের পর যুগ চলছি।

বস্তিবাসী আনোয়ার বলেন, এখানে বাচ্চাদের শিক্ষার হার খুবই কম। অধিকাংশ নারী গ্রাম ঘুইরা কাজ করে। আর পুরুষরা হকারি করে এই উপার্জনে পরিবার নিয়া খুব কষ্ট আমাগো। শুনছি রেলের এই বস্তি নাকি উঠাইয়া দিবো তহন কই যামু, সেই চিন্তায় আছি।

রেললাইনের ধারে ঠাঁই নেওয়া এই মানুষজনের দিন কাটে অভাব অনটনে, দুঃখ কষ্টে। নেই নিজস্ব জমিজমা, মাথা গোঁজার ঠাঁই। দারিদ্রে অকালে ঝড়ে পড়ছে শিশুরা। বঞ্চিত হচ্ছে মানবাধিকার থেকে।

;

এপ্রিলে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে ১০.২২ শতাংশ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি বছরের এপ্রিলে দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ বেড়ে ১০ দশমিক ২২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।

সোমবার (১৩ মে) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত ভোক্তা মূল্য সূচকের (সিপিআই) প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১০ দশমিক ২২ শতাংশের অর্থ হলো ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে যে পণ্য কিনতে ১০০ টাকা খরচ করতে হয়েছে। সেই একই পণ্য এই বছরের এপ্রিলে কিনতে খরচ করতে হয়েছে ১১০ টাকা ২২ পয়সা।

বিবিএসের প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, এপ্রিলে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা কমেছে। মার্চে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ দশমিক ৮১ শতাংশ। এপ্রিলে কমে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ।

খাদ্য মূল্যস্ফীতি বাড়লেও খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতির হার কমেছে এপ্রিলে। এ মাসে খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ। যা মার্চে ছিল ৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ।

একই সঙ্গে বেড়েছে গ্রামাঞ্চলে মূল্যস্ফীতির হার। মার্চে গ্রামে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ। আর এপ্রিলে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ।

;

শেষ হল ৫ দিনের যুব মতবিনিময়



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাভার (ঢাকা)
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

শেখ হাসিনা জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটে শেষ হল ৫ দিন ব্যাপী যুব মতবিনিময় আয়োজন। সারা দেশ থেকে ২০০ যুবক ও যুব নারী উদ্যোক্তা এ আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন।

সোমবার (১৩ মে) দুপুরে সাভারের শেখ হাসিনা জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের অডিটোরিয়ামে সমাপনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এ আয়োজন শেষ হয়। এ আয়োজনে যুব উদ্যক্তারা তাদের পরিশ্রম ও সফলতার গল্প সকলের সামনে তুলে ধরেন।

সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-১৯ আসনের সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হওয়ার চেষ্টা করতে হবে। যাতে নিজের পাশাপাশি সমাজের পিছিয়ে পড়া গোষ্ঠীকে নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়া যায়। অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, উদ্যোক্তা না হলে, চাকরি করে আপনি বড় কিছু করতে পারবেন না। উদ্যোক্তা হলে আপনি নিজের জন্য, পরিবারের জন্য, দেশের মানুষের জন্য অনেক কিছুই করতে পারবেন।

এ আয়োজনের সভাপতিত্ব করেন ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক আবু তাহের মো. মাসুদ রানা। তিনি বলেন, সমাজে যারা উদ্যোক্তা হতে চেষ্টা করছেন তাদের কাছে এই ইনস্টিটিউটের কথা তুলে ধরবেন, অনুপ্রাণিত করবেন। আমাদের মূল লক্ষ্য যারা বেকার অদক্ষ তাদের উদ্যোক্তা হতে সহায়তা করা।

উল্লেখ্য, গত ৯ মে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী নাজমুল হাসান এ আয়োজনের উদ্বোধন করেছিলেন।

;