‘ফণী’ নিয়ে রাজশাহীতে উৎকণ্ঠা, জেলাজুড়ে সতর্কতা জারি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট রাজশাহী বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সুপার সাইক্লোন ‘ফণী’ দেশের উত্তরাঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় জেলাজুড়ে সতর্কতা জারি করেছে রাজশাহী জেলা প্রশাসন। জেলার নয়টি উপজেলার গ্রাম পর্যায়ে শুরু করা হয়েছে সতর্কতামূলক মাইকিং। জেলার স্কুল, কলেজ ও মাদরাসাগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা ও শুকনো খাবার মজুদ রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। সজাগ থাকার কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে দমকল ও বিদ্যুৎ বিভাগকে।

বৃহস্পতিবার (০২ মে) দুপুর ২টার দিকে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত জরুরি সভায় এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী জেলা প্রশাসক এসএম আব্দুল কাদের। ওই সভায় রাজশাহীর নয়টি উপজেলার ইউএনও, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা, কৃষি কর্মকর্তা ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় জানানো হয়, আবহাওয়া অধিদফতরের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী- শুক্রবার বিকেল থেকে রাতের মধ্যে যে কেনো সময় বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’। উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানলেও তা রাজশাহী অঞ্চলের উপর দিয়েও বয়ে যেতে পারে। এজন্য সকলকে সতর্ক এবং ক্ষয়-ক্ষতি মোকাবেলায় তৎপর হতে হবে।

সভায় অন্যদের মধ্যে দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রুহুল আমীন, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আমিনুল হক, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. জুলফিকার মো. আকতার হোসেন, সমাজসেবা উপ-পরিচালক রাশেদুল কবীর, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শবনম শিরিন প্রমুখ।

রাজশাহী জেলা প্রশাসক এসএম আব্দুল কাদের বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘যতোদূর জেনেছি- দেশের উত্তরাঞ্চলে এ ধরনের সুপার সাইক্লোনের কেন্দ্র থাকার অভিজ্ঞতা নেই। ফলে কোনোক্রমে যদি রাজশাহী অঞ্চল ফণী’র কেন্দ্রে পরিণত হয়, তবে ভয়াবহ ক্ষতি হতে পারে। এ জন্য আগাম সতর্কতা ও মোকাবিলার প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।’

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/May/02/1556801286598.jpg

ঘূর্ণিঝড় পূর্বাভাস সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক ওয়েবসাইট (windy.com) থেকে পাওয়া স্যাটেলাইট চিত্রের বিশ্লেষণ থেকে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় ফণী খুব দ্রুত গতিপথ পরিবর্তন করছে। তবে বর্তমান গতিপথ অপরিবর্তিত থাকলে তা দেশের উত্তরাঞ্চলের ওপর দিয়েও বয়ে যেতে পারে।

রাজশাহী আবহাওয়া অধিদফতরের উচ্চ পর্যবেক্ষক শহিদুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘ঢাকা থেকে আমাদেরকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। আমরাও ফণী’র গতিপথের দিকে নজর রাখছি। তবে ১ থেকে ২৫ নম্বর বুলেটিন পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়টির গতিবিধি ভীষণভাবে পরিবর্তিত হওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের ঠিক কোনপথে তা যাবে এটা নিশ্চিত করতে আরও একদিন অপেক্ষা করতে হবে।

এদিকে, ফণী’র সম্ভাব্য কেন্দ্র হয়ে উঠতে রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চল উল্লেখ করে নিজেদের অফিসিয়াল ফেসবুকে পেজে সতর্কতামূলক পোস্ট দিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও রাজশাহী-৬ (বাঘা) আসনের সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলম এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

   

মে দিবসে সকল মেহনতি মানুষকে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহান মে দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল মেহনতি মানুষকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।

‘মহান মে দিবস’ উপলক্ষ্যে দেওয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, “বিশ্বের শ্রমজীবী ও মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার গৌরবোজ্জ্বল ত্যাগের ঐতিহাসিক দিন ‘মহান মে দিবস-২০২৪’ উপলক্ষ্যে আমি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব মেহনতি মানুষকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক-মালিক গড়বো দেশ, স্মার্ট হবে বাংলাদেশ’ যথার্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি।”

১৮৮৬ সালের পহেলা মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে রক্তাক্ত আন্দোলনে শ্রমিকের ন্যায্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আত্মাহুতি দেওয়া বীর শ্রমিকদের প্রতিও প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন শোষিত, বঞ্চিত ও শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি ১৯৭২ সালে জাতীয় শ্রম নীতি প্রণয়ন করেন এবং প্রথম মহান মে দিবসকে শ্রমিক সংহতি দিবস হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। জাতির পিতা মে দিবসে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেন। তিনি শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে মজুরি কমিশন গঠন করেন এবং নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণা করেন। ১৯৭২ সালে মহান মে দিবস উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। সেই ভাষণে তিনি শ্রমিকদের মজুরির হার বৃদ্ধি এবং যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত ও দুর্দশাগ্রস্ত শ্রমিকদের এডহক সাহায্য প্রদানের ঘোষণা দেন। তিনি পরিত্যক্ত কল-কারখানা জাতীয়করণ করে দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী এবং শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করেন। জাতির পিতার উদ্যোগে বাংলাদেশ ১৯৭২ সালের ২২ জুন আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সদস্যপদ লাভ করে।

আওয়ামী লীগ সরকার জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে দেশের শ্রমজীবী মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও কল্যাণে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “মালিক-শ্রমিকের মধ্যে সৌহার্দ্য ও সুসম্পর্ক বজায় রাখার মাধ্যমে নিরাপদ কর্মপরিবেশ, সামাজিক নিরাপত্তা ও শ্রমিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ শ্রম আইন যুগোপযোগী ও আধুনিকায়ন করে ‘বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) আইন-২০১৮’ প্রণয়ন করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন খাতে কর্মরত শ্রমিকদের কল্যাণ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন গঠন করা হয়েছে। এই তহবিল থেকে যে কোন শ্রমিক কর্মরত অবস্থায় দুর্ঘটনাজনিত কারণে স্থায়ীভাবে অক্ষম হলে অথবা মৃত্যুবরণ করলে, জরুরি চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ ও দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসার জন্য এবং শ্রমিকদের সন্তানের উচ্চ শিক্ষার জন্যেও আর্থিক সহায়তা পাচ্ছেন। আমরা রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের সার্বিক কল্যাণে আর্থিক সহায়তা প্রদানে একটি কেন্দ্রীয় তহবিল গঠন করেছি এবং সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছি। এ শিল্পের কর্মহীন এবং দুস্থ শ্রমিকদের সর্বোচ্চ তিন মাসের নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান করে চলমান সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হয়েছে। সকল সেক্টরে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বাড়ানো হয়েছে। শ্রমিকদের সামাজিক মর্যাদা, স্বাস্থ্য ও সেইফটি নিশ্চিতকল্পে জাতীয় শ্রমনীতি-২০১২, জাতীয় শিশুশ্রম নিরসন নীতি-২০১০, জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি নীতিমালা-২০১৩, বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা-২০১৫ এবং গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি-২০১৫ প্রণয়ন করা হয়েছে।”

তিনি বলেন, “আমাদের সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক এবং কার্যক্রম আরো সুদৃঢ় হয়েছে। শিল্প-কারখানায় কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন পরিদপ্তরকে অধিদপ্তরে উন্নীত করা হয়েছে। শ্রমিক ও তাদের পরিবারের কল্যাণে বিভিন্ন সেবার সম্প্রসারণ ও জোরদারকরণে আমরা শ্রম পরিদপ্তরকে সম্প্রতি অধিদপ্তরে রূপান্তরিত করেছি। শ্রমিক ভাই-বোনদের যেকোন সমস্যা সংক্রান্ত অভিযোগ গ্রহণ, অভিযোগ নিষ্পত্তি ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদানের জন্য সার্বক্ষণিক টোল ফ্রি হেল্প লাইন (১৬৩৫৭) চালু করা হয়েছে। শিল্প কারখানায় বিশেষ করে গার্মেন্টস শিল্পে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যথাযথ পরিদর্শন ও মনিটরিং ব্যবস্থা চলমান রয়েছে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, মহান মে দিবসের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে শ্রমিক-মালিক পরস্পর সুসম্পর্ক বজায় রেখে জাতীয় উৎপাদন বৃদ্ধিতে নিবেদিত হবেন। মে দিবসের চেতনায় দেশের শ্রমিক-মালিক ঐক্য জোরদার করে শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণ ও দেশের সার্বিক উন্নয়নের মধ্য দিয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ তথা উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবো; এটাই হোক আমাদের মে দিবসের অঙ্গীকার।”
তিনি ‘মহান মে দিবস-২০২৪’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সর্বাঙ্গীণ সাফল্য কামনা করেন।

 

 

;

নাটোরে আওয়ামী লীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নাটোর
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নাটোরের লালপুরের গোপালপুর পৌরসভার আজিমনগর রেলস্টেশন সংলগ্ন রবিউল ইসলাম কনফেকশনারী দোকানের সামনে প্রকাশ্যে পৌর আলীগের সহ-সভাপতি মনজুরুল ইসলাম মঞ্জুকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নিহত মনজুরুল ইসলাম মঞ্জু বাহাদিপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের সন্তান।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টার দিকে গোপালপুর পৌরসভার আজিমনগর রেলস্টেশন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, রাত সাড়ে ১০টার দিকে আজিমনগর রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন রবিউল ইসলাম কনফেকশনারির সামনে বসেছিলেন মঞ্জু। এসময় দুই মোটরসাইকেলে চার-পাঁচজন এসে মঞ্জুর মাথায় এবং পেটে গুলি করে দ্রুত সটকে পড়েন। এতে ঘটনাস্থলেই মঞ্জু মারা যান।

উল্লেখ্য বিগত ২৮ নভেম্বর ২০১৮ সকালে নাটোরের নর্থবেঙ্গল সুগার মিলস গেটে লালপুর উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিরুল ইসলাম হত্যা মামলার অন্যতম আসামী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তিরা জানান। জাহিরুল মরার পরে দীর্ঘ ৪ বছর যাবত একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে আসছিল।

এ ব্যাপারে লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসিম আহমেদ জানান মরদেহ এখন পর্যন্ত তাদের পরিবারের কাছেই রয়েছে।ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশের কয়েকটি দল মাঠে কাজ শুরু করেছে। প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে মঞ্জুর প্রতিপক্ষরা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে।

এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

;

খাগড়াছড়িতে ভয়াবহ আগুনে পুড়ল ২৪ দোকান



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, খাগড়াছড়ি
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

খাগড়াছড়ি শহরের শান্তিনগর এলাকায় ভয়াবহ আগুনে পুড়ে গেছে ২৪টি দোকান। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১ টার দিকে শান্তিনগরের জাফর তালুকদার মার্কেটে এ আগুনের সূত্রপাত ঘটে।

ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়দের সহায়তায় দুই ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। আগুনে পোড়া দোকান গুলোর মধ্যে ওয়ার্কশপ, মোটরপার্টস, ব্যাটারীর সার্ভিস ও কুলিংকর্ণার ছিল।

এ ছাড়া ওয়ার্কশপের সামনে থাকা দুইটি ট্রাক্টরও পুড়ে যায়। প্রাথমিক ভাবে আগুনে কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

মার্কেট মালিক জাফর তালুকদার বলেন, আগুনে ২৪টি প্লটের সব পুড়ে গেছে। আশপাশে পানির উৎস না থাকায় আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের বেগ পেতে হয় বলে জানান তিনি।

খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তানভীর হাসান জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। আগুনে ২৪টি দোকান পুড়ে গেছে তবে কোন হতাহতের ঘটনা নেই।

;

পোশাক শ্রমিকের ১২ হাজারের জীবন, নিজেই চলতে পারিনা, বউরে খাওয়ামু কি!

  ‘শ্রমিকের জয়গান কান পেতে শোন ঐ’



গুলশান জাহান সারিকা, স্টাফ করেস্পন্ডেন্টম, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর পীরেরবাগের বাসিন্দা শানিনুর প্রতিদিন ৮টা-৫টা কাজ করে মাসে ১২ হাজার টাকা ঘরে আনেন। স্বামীও কাজ করেন। কিন্তু দুই জনের আয়েও চলেনা পাঁচজনের পরিবার। রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন শাহীনুর। বস্তির ছাপড়া ঘরের ভাড়া গোনা আর আনুসঙ্গিক বিল পরিশোধের পর, বাজারের দিকে পা বাড়ানোর আগেই দেখেন হাত খালি। তিন মেয়েকে স্কুলে পাঠিয়েছিলেন এই মধ্যবয়ষ্ক নারী। কিন্তু এক মেয়েকে এরইমধ্যে স্কুল ছাড়াতে হয়েছে। এটাই পোশাক শ্রমিকের জীবন।

তৈরি পোশাক খাতের অর্থনীতির গতির সাথে সাথে এই খাতের শ্রমিকের জীবন-জীবিকা অতীতেও তেমন গতি পায়নি। এখনো পাচ্ছে না। গেল বছর পোশাক শ্রমিকদের বেতন সর্বনিম্ন ১২ হাজার টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। যা আগে ছিল ৮ হাজার টাকা। এ বেতন বাড়ায় কিছুটা স্বস্তি ফিরবে বলে আশা করা হলেও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সে স্বস্তির দেখা মেলেনি। শাহীনুর তার জ্বলন্ত প্রমাণ।

জীবিকার তাগিদে জীবনে সফলতার স্বপ্ন নিয়ে প্রতি বছর প্রায় ছয় লাখ মানুষ ঢাকা শহরে পাড়ি জমায় তাদের ভাগ্য বদলানোর আশায়। ঢাকায় আসা বিপুল সংখ্যক এ মানুষের মধ্যে নিম্নবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত বেশির ভাগেরই ঠাঁই হয় রাজধানীর বিভিন্ন পোশাক কারখানায়। গ্রাম থেকে উঠে আসা এসব মানুষ দৈন্যদশা থেকে মুক্তি পেতে অল্প আয়ে নিজের শ্রম বিলিয়ে দিচ্ছেন পোশাক কারখানায়। কিন্তু তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি।

দৈনিক ৮-৯ ঘণ্টা কাজের বিনিময়ে ১২-১৩ হাজার টাকা মাসিক বেতনে কাজ করেন অনেকে। তবে এ অল্প আয় দিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন পোশাক শ্রমিকদের পরিবারগুলো।

বাসা ভাড়া, সংসার খরচ, দিয়ে কেমন কাটছে পোশাক শ্রমিকদের জীবন? এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করেছেন বার্তা২৪.কমের এই প্রতিবেদক। বৃহস্পতিবার (২৫এপ্রিল) রাজধানীর মিরপুর এলাকার কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিকের সাথে সরেজমিনে কথা বলে জানা গেছে তাদের অবস্থার কথা।

মিরপুর শেওড়াপাড়ান একটি কারখানার পোশাক শ্রমিক শাহিনুর বেগম থাকেন পীরেরবাগ এলাকায় । বার্তা ২৪ কে তিনি বলেন, "স্বামীর একার রোজগারে সংসার চলেনা। তাই নিজেও কাজে গেছি। কিন্তু তাতেও চলে না। সকাল ৮ টায় যাই আর বিকাল পাঁচটায় ফিরি। মাসে সাড়ে ১২ হাজার টাকা পাই। হাড়ভাঙ্গা খাটুনির পর যা পাই তা বাসা ভাড়া, কারেন্ট বিল, পানির বিল দিতেই শেষ হয়ে যায়।"

"আমার তিন মেয়ে। ছেলে নাই। তাদের পড়াশোনার খরচ চালাতে পারি না। এক মেয়ের পড়া বন্ধ করে দিছি," বললেন শাহীনুর।

ভাগ্যের এই করুণদশার জন্য দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিকেই দায়ী করেন শাহীনুর। তিনি বলেন, একটু খেয়ে-পরে বাঁচার জন্য দুই জন কাজ করি। তাও তিনটা মেয়েকে নিয়ে এই শহরে চলতে পারি না। এইটাই দুর্ভাগ্য।"

আরেক পোশাক শ্রমিক আলাউদ্দিন বরিশালের পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া থানা থেকে জীবিকার সন্ধানে এসে যোগ দেন রাজধানীর একটি গার্মেন্ট কারখানায়। সেখানে আয়রন ম্যানের কাজ তার। মাসিক মজুরি ১২০০০ টাকা।

কাজের জায়গায় অনেক চাপ থাকে। ঘড়ির কাটার এদিক-ওদিক হওয়ার কোন সুযোগ নেই। সময়ের মধ্যে নির্দিষ্ট কাজ না করতে পারলে চাকরি চলে যাবে। বার্তা২৪ কে আলাউদ্দিন বলেন, "অভাবের তাড়নায় লেখাপড়া বেশি দূর করতে পারিনি। গ্রামে যখন কিছু করতে পারলাম না ঢাকা শহর চলে আসলাম। গার্মেন্টসের আয়রন ম্যানের কাজ পাইলাম। এই গরমে খুব কষ্ট হয় সে কাজ করতে। কিচ্ছু করার নেই। শেওড়াপাড়ায় মেসে থাকি। খাওয়া-থাকা বাবদ নিজেরই মাসে ৭-৮ হাজার টাকা খরচ হয়। বাকি টাকা বাড়িতে পাঠাই। তাতে মায়ের ওষুধ কিনতে হয়।

"মায় বলে সংসার শুরু করতে, বিয়া করতে। আমি বলি নিজেই চলতে পারিনা, বউরে খাওয়ামু কি!"

আরেক গার্মেন্টস কর্মী রোজিনা বলেন, "আগে আট হাজার টাকা ছিল এখন ১২ হাজার টাকা হইছে। কিন্তু এই যুগে আইসা এই টাকায় সংসার চলেনা। বাজারে মাছ-মাংসের আগুন ছোঁয়া দাম। ব্রয়লার মুরগিও প্রায় আড়াইশো টাকা কেজি। আমার স্বামীর নিত্য আয় নিত্যই ব্যয় হয়ে যায়। মাইয়া দুইটা বড় হইতাছে, বিয়া যে দিমু কিছুই সঞ্চয় নাই।"

তৈরি পোশাক শিল্প বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান একটি খাত। অর্থনৈতিক চালিকা শক্তির এখাতে স্বল্পদরে শ্রম কিনে ভারী হয় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। আর মালিকপক্ষের বাড়ে শান-শওকত। কিন্তু দিনের পর দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করেও শ্রমিকেরা দেখেননা সুখের মুখ। যতটুকু যাও বাড়ে আয়, সব শেষ হয়ে যায় বাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ধাক্কায়। সুতরাং তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকের জীবনে নেই সামান্য পরিবর্তন।

;