শুরু হচ্ছে বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কাজ



বার্তা টিম
বিজিএমইএ ভবন ভাঙার প্রস্তুতি চলছে/বার্তা২৪.কম

বিজিএমইএ ভবন ভাঙার প্রস্তুতি চলছে/বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা: আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী শুরু হচ্ছে রাজধানীর হাতিরঝিল লেকে অবৈধভাবে নির্মিত বহুতল বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কাজ।

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকাল ৯টার দিকে গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎসহ ভবনের সব ইউটিলিটি সার্ভিসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এর মাধ্যমে মূলত মূল ভবন ভাঙার কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করবে প্রশাসন।

সরেজমিন দেখা গেছে, ভবনটি ভাঙার প্রস্তুতি হিসেবে বিজিএমইএ ভবনের সামনে রাজউক কর্মকর্তারাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন। এছাড়া ভবন ভাঙার যন্ত্র বুলডোজার প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

উল্লেখ, সর্বশেষ ১২ এপ্রিলের মধ্যে ভবনটি সরিয়ে নিতে সময় দিয়েছিলেন আদালত। নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ার পর আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নে নামলো রাজউক।

রাজউক সূত্রে জানা গেছে, ভবনটি ভাঙতে বিজিএমইএকে দেওয়া সময় পার হয়ে যাওয়ার পরই এই ভবনটি ভাঙার কার্যক্রম শুরু করছে। ভবনটি ভাঙার জন্য রাজউকের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপস্থিত রাজউক কর্মকর্তারা। এছাড়া ভবনটি থেকে মালপত্র সরিয়ে নিতে অফিস মালিকদের কিছু সময় হতে পারে। এরপরই মূল ভবন ভাঙার কাজ শুরু করা হবে।

রাজউকের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট অলিউর রহমান বলেন, আদালত থেকে ১২ এপ্রিলের মধ্যে ভবন ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও এখনও এখানে কিছু অফিস আছে। তাদের ভবন ছাড়ার জন্য দুই ঘণ্টা দিয়েছি। তাই ভবন ভাঙার কাজ শুরু করতে দেরি হচ্ছে।

‘বিজিএমইএ ভবন’ অপসারণে আপিল বিভাগের দেওয়া এক বছর সময় শেষ হয়েছে ১২ এপ্রিল। গত বছরের ২ এপ্রিল সর্বোচ্চ আদালত ভবনটি অপসারণে তৈরি পোশাক ও রফতানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএকে এক বছর ১০ দিন সময় দেন।

   

হালদায় ডিম ছেড়েছে কার্প জাতীয় মা মাছ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হালদায় ডিম ছেড়েছে কার্প জাতীয় মা মাছ।

মঙ্গলবার (৭ মে) সকাল ৬টার দিকে হালদা নদীর রাউজানের মইশকরম এলাকার চইল্যাখালিতে ডিম পাওয়া যায়।

বিষয়টি বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ জীববিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ও হালদা গবেষক ড.মো.শফিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, গতকালের টানা কয়েকঘণ্টার বজ্রপাতসহ ভারি বর্ষণের ফলে হালদায় পাহাড় যে ঢল নেমেছে এতে নদীর নিচের দিকে ডিমের দেখা মিলেছে৷ আজ সকাল ৬টায় ভাঁটার শেষের দিকে হালদা নদীর রাউজান অংশের মইশকরম এলাকার চইল্যাখালিতে ডিম সংগ্রহকারী ডিম সংগ্রহ করেছেন। এরমধ্যে পাকিরাম দাশ, হরিরন্জন দাশ, সন্তোষ দাশ, সুজিত দাশ ও সুনিলদাশ ১১ টি নৌকার মাধ্যমে ডিম সংগ্রহ করেন। প্রতিটি নৌকায় গড়ে দুই থেকে আড়াই বালতি করে ডিম সংগ্রহ করেন তারা।

তিনি আরও বলেন, গত কয়েকদিন আগে গবেষণা করে আমি একটি প্রতিবেদন দিয়েছিলাম। সেখানে বলেছি, পানির তাপমাত্রা কমে বজ্রপাতসহ ভারি বৃষ্টি হলে ৬ থেকে ১০ মের মধ্যে মা মাছ ডিম ছাড়তে পারে। কাল এই সময়ের অমাবস্যার জোঁ চলমান থাকবে।


পোনা সংগ্রহকারী সুনিলদাশ বলেন, সকালে আমরা নৌকা প্রতি আড়াই কেজি কার্প জাতীয় মাছের পোনা সংগ্রহ করেছি। গতকাল বৃষ্টি হওয়ার কারণে মা মাছ ডিম ছেড়েছে। জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়াতে মা মাছ ডিম ছাড়তে অনুকূল পরিবেশ পায়নি। রাতের জোয়ার শেষে ভাটায় মা মাছ ডিম ছেড়েছে। আশা করি আরও ডিম সংগ্রহ করতে পারব।

সোমবার পতেঙ্গা আবহাওয়া অধিদফতরের পতেঙ্গা কার্যালয় তিন ঘণ্টায় ৯৭ দশমিক ৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে। কার্যালয়ের আবহাওয়াবিদ মেঘনাথ তঞ্চঙ্গা বার্তা২৪.কমকে বলেন, সোমবার বিকেল তিনটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ৯৭ দশমিক ৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ঘণ্টায় ৩৫ কিলোমিটার গতিতে দমকা হাওয়া বয়ে গেছে।

আজ (মঙ্গলবার) সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত কিছু কিছু জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টিও হতে পারে বলে জানিয়েছেন এ আবহাওয়াবিদ।

;

তৃতীয় দিনেও নরসিংদীতে পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির কর্মবিরতি



ডিস্ট্রিক্ট করসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নরসিং
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

টানা তৃতীয় দিনেও সারাদেশের পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির প্রায় ৪০ হাজার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কর্মবিরতি পালন করছেন নরসিংদী পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি) ও পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) মধ্যকার বৈষম্য দূরীকরণসহ অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়নের দাবিতে অনির্দিষ্টকালব্যাপী এ কর্মসূচি পালন করছেন তারা।

সরকার বা যথাযথ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে তাদের দাবি-দাওয়ার ব্যাপারে কোনো সাড়া না পাওয়ায় কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

আন্দোলনরত নরসিংদী পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-২ এর কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা জানান, রোববার (৫ মে) সকাল ৯টা থেকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচি মঙ্গলবারও (৭ মে) দেশের ৮০টি পবিসের সদর কার্যালয়ের সামনে প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচি, মানববন্ধন করছেন তারা। এসময় জরুরি বিদ্যুৎ সরবরাহ ছাড়া সব ধরনের গ্রাহক সেবা ও অন্যান্য কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবেন তারা।

তারা জানান, একই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করলেও পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ও পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সুযোগ-সুবিধা, চাকরির নিরাপত্তা ও নিশ্চয়তার রয়েছে বিস্তর ফারাক। পদ, পদবি, পদোন্নতি, বেতন গ্রেড, সাপ্তাহিক ছুটি, একই প্রতিষ্ঠানে একই পদে নিয়মিত এবং চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ, লোকবলের স্বল্পতাসহ সব ক্ষেত্রেই বৈষম্যের শিকার সমিতির কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা।

এসব বৈষম্যের বিষয়ে অনেকদিন ধরেই অভিযোগ জানানো হলেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। বরং এসব ন্যায়-সঙ্গত অধিকারের কথা বললেই নানাভাবে হয়রানি করা হয়। এমনকী আন্দোলন শুরুর পরেও নানাভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও আন্দোলন বন্ধে নানামুখী চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন, বৈষম্যের অবসান না হলে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

সরকারের বিশেষায়িত এই প্রতিষ্ঠানটি দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন এবং নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎসেবা পৌঁছে দিতে গ্রাহকদের প্রান্তিকপর্যায়ে সেবা দিয়ে থাকে।

এদিকে, জরুরি বিদ্যুৎ ছাড়া অন্যান্য গ্রাহকসেবা বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন পল্লী বিদ্যুতের প্রায় ৪ কোটি গ্রাহক। এভাবে চলতে থাকলে দেশজুড়ে লোডশেডিংয়ের শঙ্কাও তৈরি হয়েছে।

;

রবীন্দ্র জয়ন্তী উদযাপনে প্রস্তুত শিলাইদহ কুঠিবাড়ি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মজয়ন্তী উদযাপনে প্রস্তুত কুষ্টিয়ার কুমারখালি উপজেলার শিলাইদহ কুঠিবাড়ি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তী উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতিদিনই শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়িতে বাড়ছে দর্শনার্থীদের ভিড়।

প্রতিবারের মতো এবারও কুঠিবাড়ির আঙিনায় বাঁশ-কাঠ-ত্রিপল দিয়ে সাজানো হয়েছে মঞ্চ ও দর্শনার্থীদের বসার স্থান। রবীন্দ্র কুঠিবাড়িতে রং-তুলির আঁচড়, ব্যবহৃত জিনিসপত্রকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাও শেষ হয়েছে। জন্মজয়ন্তীকে কেন্দ্র করে কুঠিবাড়ির পাশেই তিন দিনব্যাপী গ্রামীণ মেলারও আয়োজন করা হয়েছে।

এ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরাও সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন।

জেলার দুইটি উপজেলায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ও তীব্র গরমের কারণে তিনদিনের অনুষ্ঠান এবার দুই দিনে করা হচ্ছে। তীব্র তাপ প্রবাহের কারণে আগত দর্শনার্থীদের জন্য নতুন করে ৪টি টিউবওয়েল বসিয়ে সুপেয় পানি নিশ্চিত করা হয়েছে। অন্যবারের মতো থাকছে চিকিৎসক ও সেবক দল।

কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনসূত্রে জানা গেছে, বুধবার (৮ মে) সকালে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিশ্বকবির ১৬৩তম জন্মজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি। এছাড়াও উপস্থিত থাকবেন কুষ্টিয়া-৫ (খোকসা-কুমারখালী) আসনের সংসদ সদস্য আব্দুর রউফ।

এবছর স্থায়ীভাবে নির্মিত মঞ্চে চলবে কবিগুরুর সাহিত্য ও শিল্পজীবন নিয়ে আলোচনা, গান ও কবিতা। এখানে এসে কবিগুরুর শিল্প ও সাহিত্যকর্ম ব্যক্তিজীবনে অনুপ্রেরণা যোগায় এমনটায় মনে করেন রবীন্দ্র ভক্ত ও দর্শনার্থীরা।


বৈশাখের ঝড়-বৃষ্টিতে উৎসবের আয়োজন যাতে বিফলে না যায় তাই অক্লান্ত পরিশ্রম করছে নির্মাণ শ্রমিকেরা। পাশাপাশি আয়োজনের প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন বলে জানিয়েছেন তারা।

সাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন আয়োজিত এ আয়োজনকে সফল করতে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সকল প্রস্তুতি প্রায় শেষ করেছে।

এব্যাপারে শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়ির কাস্টোডিয়ান আল-আমিন জানান, বিশ্বকবির ১৬৩তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় এবং জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবার তিনদিনের স্থলে দুইদিন অনুষ্ঠান হতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই শিলাইদহ কুঠি-বাড়ির পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাসহ যে সকল কাজ আছে সেগুলো শেষ পর্যায়ে রয়েছে। নিদিষ্ট সময়ের মধ্যেই সকল কাজ শেষ হয়ে যাবে।

সাহিত্যিক ইমাম মেহেদী বলেন, বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিকাশে তার রয়েছে অসামান্য অবদান। কবিগুরুর দার্শনিক চিন্তাসমৃদ্ধ গভীর জীবনবাদী চিন্তা জাগানিয়া লেখায় অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে বাংলার জল, বাংলার মাটি, বাংলার ফল আর বাংলার আলো-বাতাসে বেড়ে ওঠা মানুষ।

তিনি সারা জীবন হৃদয়ের গহিনে লালন করেছেন মানব মুক্তির দর্শন। জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সেই দর্শন অন্বেষণ করেছেন। তার কবিতা, গান, গল্প, উপন্যাসসহ সব সৃষ্টি মানুষকে আজও সেই অন্বেষণের পথে, তার অনিষ্ট উপলব্ধির পথে আকর্ষণ করে।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দাদা প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর ১৮০৭ সালে এই অঞ্চলের জমিদারি পান। পরবর্তী সময়ে ১৮৮৯ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিলাইদহে জমিদার হয়ে আসেন। শিলাইদহে তিনি ১৯০১ সাল পর্যন্ত জমিদারি পরিচালনা করেন। এখানে অবস্থানকালে তিনি রচনা করে তার বিখ্যাত গ্রন্থ সোনার তরী, চিত্রা, চৈতালীসহ আরও বিভিন্ন গ্রন্থ।

রবীন্দ্রনাথ শিলাইদহে বসেই গীতাঞ্জলী কাব্য গ্রন্থের অনুবাদের কাজ শুরু করেন। পরে ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলী গ্রন্থের অনুবাদে সাহিত্যে প্রথম নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। এখানে বসে রচনা করা বিশ্বকবির অসংখ্য গান, কবিতা ও সাহিত্যকর্ম বাঙলা সাহিত্যকে করেছে সমৃদ্ধ। তাই রবীন্দ্র সাহিত্যে শিলাইদহের গুরুত্ব অন্যতম।

;

উপজেলা নির্বাচন

পীরগাছায় ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগে অনিয়ম



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে রংপুরের পীরগাছায় ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা (প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং কর্মকর্তা) নিয়োগে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ উপজেলায় প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও পোলিং কর্মকর্তা নিয়োগে দক্ষ ও অভিজ্ঞদের বাদ দিয়ে নন এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের নিয়োগ দেওয়ার সব প্রস্তুতি চূড়ান্ত হয়েছে।

বুধবার (৮ মে) ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। বিগত নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করেছেন এমন অনেক কর্মকর্তাকে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা থেকে বাদ দিয়ে সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া একই শিক্ষককে একাধিক কেন্দ্রে দায়িত্ব প্রদান, ১০ গ্রেডের অফিসার প্রিসাইডিং এবং ৬ষ্ঠ ও ৭ম গ্রেডের শিক্ষককে সহকারী প্রিসাইডিং, কর্মরত প্রতিষ্ঠান এবং নিজ ভোটকেন্দ্রে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। একইভাবে প্রার্থীরা একাধিক প্রতিষ্ঠানের সভাপতির দায়িত্ব পালন করলেও সেই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের নির্বাচনে দায়িত্ব প্রদান করার অভিযোগ করা হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, কৌশলে একজন শিক্ষককে দুই বা তিনটি করে ভোটকেন্দ্রে নিয়োগ দিয়ে পরবর্তীতে দালালের মাধ্যমে পাঁচশ থেকে দুই হাজার টাকা নিয়ে অন্যদেরকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। এই হ-য-ব-র-ল অবস্থা নিয়ে নিয়োগ প্রাপ্তদের মাঝে চাপা ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পীরগাছা উপজেলায় ১১৩টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হবে। ১১৩টি কেন্দ্রের জন্য ১১৩ জন প্রিসাইডিং অফিসার, ৭৬০ জন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও ১৫২০ জন পোলিং অফিসার, ১০ শতাংশ অতিরিক্ত ২৩৯ জনসহ মোট ২৬৩২ জনকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে। ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে আগ্রহী শিক্ষকদের বাদ দিয়ে যারা দায়িত্ব পালন করতে চান না তাদেরকে নিয়োগ দিয়ে পরবর্তীতে নাম কাটা ও সংযোজন করতে দালালের মাধ্যমে পাঁচশ থেকে দুই হাজার টাকার ঘুষ বাণিজ্য করার অভিযোগ করেছেন শিক্ষকরা।

পীরগাছায় সরকারী ও এমপিওভূক্ত কলেজ, মাদ্রাসায় প্রায় ১০০ জন সহকারী অধ্যাপক হিসেবে চাকরি করছেন। সিনিয়র প্রভাষক, প্রভাষক প্রায় ১৫০ জন, বিভিন্ন সরকারি দফতর, রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকে ১ম শ্রেণির কর্মকর্তা আছেন প্রায় ৫০ জন অথচ ১০ম গ্রেডের সরকারি কর্মকর্তাদেরকে প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বেশ কিছু নন এমপিওভূক্ত শিক্ষককে ভোট গ্রহণকারি কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অথচ এমপিওভূক্ত শিক্ষকদের অনেককেই দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।

ভূক্তভোগীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ পীরগাছায় যোগদানের পর দালাল সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। তিনি দালাল ছাড়া কোন কাজই করেন না। অফিস সময়ে দরজা আটকিয়ে ভিতরে বসে থাকেন তিনি। জরুরী কাজে কেউ দেখা করতে চাইলেও মেলে না অনুমোদন। এমনকি সেবা প্রার্থীরা দালাল ছাড়া সরাসরি অফিসে গেলে হেনস্থার শিকার হন এই কর্মকর্তার মাধ্যমে। শুধু তাই নয়, তার মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেন না বলে অভিযোগ ভূক্তভোগীদের। স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদেরও ফোন রিসিভ করেন না তিনি।

ঝিনিয়া ধনীর বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুমন চন্দ্র বলেন, আমাকে ২৫ নম্বর কেন্দ্রে পোলিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। আমি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি এবং টাকা ছাড়াই ভাতা প্রাপ্তির মাস্টার রোলে আমার প্রাপ্তি স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। পরে টাকার বিনিময়ে আমার পরিবর্তে হাফিজার রহমানকে নতুন করে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

মোহাম্মদ আলী দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক আজাদ হোসেন সরকার বলেন, আমি ঘুষ না দেওয়ার কারণে আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।

তিনি আরও বলেন, আমার মাদ্রাসার শিক্ষকদেরকে দায়িত্ব না দেওয়ায় বাধ্য হয়ে ঘুষ দিয়ে ভোটের দায়িত্ব নিয়েছেন। কাশিয়াবাড়ী দাখিল মাদ্রাসার সুপার আব্বাস আলী বলেন, নির্বাচন অফিসের এক দালালের মাধ্যমে ১৯৫ জন শিক্ষক-কর্মচারীকে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগপত্র দিয়েছেন।

তাম্বুলপুর মাদ্রসার সহকারী শিক্ষক আদোল হোসেন বলেন, নির্বাচন অফিসের এক দালাল শিক্ষক প্রতি ৫শ টাকা হারে নিয়ে ভোটের দায়িত্ব পাইয়ে দিয়েছেন।

ডাকুয়ার দিঘী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক জ্যোৎস্না রাণী মহন্তকে ব্রামণীকুন্ডা আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পোলিং অফিসার ও সাতদরগা প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অনন্তরাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রহিমা বেগমকে পূর্ব পারুল ও পেটভাতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এবং নাছুমামুদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নারগীছ নিগারকে কিশামত পারুল শাহী স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা, পারুল ও ছাওলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

ঝিনিয়া ধণীর বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক দীপক চন্দ্র বলেন, আমি দায়িত্বের জন্য কথা বললে নির্বাচন অফিসের লোক আমার নিকট ৫শ টাকার দাবি করলে আমি নগদ ২শ টাকা দিয়ে প্রশিক্ষণের ভাতা উঠিয়ে বাকী টাকা পরিশোধের শর্তে আমাকে দায়িত্ব দেন।

এক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর স্বামী শফিকুল ইসলাম মাস্টারকে সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কৌশলে অসংখ্য শিক্ষককে দুই থেকে তিনটি কেন্দ্রে দায়িত্ব দিয়ে পরবর্তীতে টাকার বিনিময়ে নতুন করে একজনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রার্থীদের নির্বাচনী এজেন্ট নিয়োগেও হয়রানি করার অভিযোগ করেছেন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী তানজিনা আফরোজের স্বামী গোফরান ভূঁইয়া। তিনি বলেন, বর্তমান নির্বাচন অফিসার ফারুক আহমেদ সাধারণ মানুষকে হয়রানি করতে খুব পটু। তিনি যোগদানের পর থেকে অনিয়ম বেড়ে গেছে।

কৈকুড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোসলেহা খাতুন ও তাজমিনা আক্তার নিজের ভোট কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা। নিজের কর্মরত প্রতিষ্ঠানে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন চৌধুরাণী ফাতেহিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষক আব্দুল আউয়াল। এমপিওভূক্ত শিক্ষক বাদ দিয়ে ননএমপিও শিক্ষক হাফিজার রহমান, রুমি ও সাইফুল ইসলামসহ অনেককে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহ মাহবুবার রহমান ও তছলিম উদ্দিন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সভাপতি থাকায় সেই সকল প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ না দেওয়ার জন্য সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কাছে অভিযোগ করেছেন অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ মিলন। অভিযোগে তিনি জানান, শাহ মাহবুবার রহমান পীরগাছা মহিলা কলেজের সভাপতি। তছলিম উদ্দিন দেউতি স্কুল এন্ড কলেজ, সৈয়দপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও চর তাম্বুলপুর মাদ্রাসার সভাপতি। তাই এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ না দেওয়ার আবেদন করেন।

অপরদিকে চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ মিলন নিজেই তাম্বুলপুর, সাতদরগা দাখিল মাদ্রাসা, পবিত্রঝার ফাজিল মাদ্রাসা, অন্নদানগর উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন বলে অভিযোগ করেছেন অপর প্রার্থীরা।

অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ বলেন, কিছু ভুল ত্রুটি আছে সেগুলো নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে সংশোধন করা হবে।

রংপুর সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং অফিসার আব্দুল্যাহ্ আল মোতাহসিম বলেন, নিজ কর্মস্থল ও নিজের ভোটকেন্দ্রে কাউকে নিয়োগ দেয়া হয়না। তবে খোঁজ নিয়ে দেখছি। সুনির্দিষ্টভাবে বললে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

;