টাকা লেনদেনের জেরে হত্যা, মূল আসামি গ্রেফতার
অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাপড়ের ব্যবসায় বিনিয়োগকৃত টাকা লেনদেনের জেরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হত্যা করা হয় নারায়ণগঞ্জের পিয়ার আলী স্বপন (৩৫) কে। এ ঘটনায় জড়িত হত্যাকারী ও হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আসামি নুরুল আমীন’কে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
মঙ্গলবার (৭ মে) র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-১০ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) সহকারী পুলিশ সুপার এম. জে. সোহেল এ তথ্য নিশ্চিত করেন। গতকাল সোমবার রাজধানীর দক্ষিণ কেরণীগঞ্জ এলাকা থেকে র্যাব-১০ ও র্যাব-১৪ এর যৌথ আভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এম. জে. সোহেল বলেন, গত ১১ মার্চ সকালে নারায়নগঞ্জ সদর নৌ থানায় কর্মরত এসআই/ মো. সবুর মিয়া সঙ্গীয় ফোর্সসহ নৌ টহল করা কালে সংবাদ পাওয়া যায় যে নারায়ণগঞ্জ জেলার সদর থানার আলআমিন নগর সাকিনস্থ শীতলক্ষ্যা নদীর পশ্চিম পাড়ে একটি অজ্ঞাতনামা ভিকটিমের (৩৫) মৃতদেহ ভাসছে।
পরে এসআই মো. সবুর মিয়া মৃতদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুলকালে অজ্ঞাতনামা ভিকটিমের চোখের ডান পাশে ও কোমরের উপরের তলপেটে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের মাধ্যমে কাটা রক্তাক্ত জখম এবং বুকে রক্ত জমাট আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায় অজ্ঞাতনামা আসামিরা গত ১১ ফেব্রুয়ারি ভিকটিমকে হত্যা করে মরদেহ গুম করার উদ্দেশ্যে শাতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেয়।
এ ঘটনায় নারায়নগঞ্জ সদর নৌ থানায় কর্মরত এসআই মো. সবুর মিয়া বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার সদর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা রুজুর পর প্রাথমিক তদন্তে ভিকটিমের নাম পিয়ার আলী স্বপন (৩৫) এবং ভিকটিম নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা এলাকায় বসবাস করতেন বলে জানা যায়।
ভিকটিম স্বপনের সাথে আসামি নুরুল আমিন (৪২) এবং আসামি নুরুল আমিনের ছোট ভাই রুহুল আমিন (৩৯) অংশাদারিত্বের ভিত্তিতে কাপড়ের ব্যবসা করতেন। ব্যবসায় বিনিয়োগকৃত টাকা লেনদেন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ভিকটিমের সাথে বিরোধের জের ধরে পরিকল্পিতভাবে আসামি নুরুল আমিন ও রুহুল আমিন অজ্ঞাতনামা অন্যান্য আসামিদের সহযোগীতায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথারি আঘাত করে হত্যাকরে। পরে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলার সদর থানার আলআমিন নগর সাকিনস্থ এস এস ডক ইয়ার্ড সংলগ্ন শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেয়।
এ ঘটনায় মামলা রুজুর বিষয়টি জানতে পেরে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সকল আসামিরা আত্মগোপনে চলে যায়। ঘটনাটি জানতে পেরে র্যাব-১০ ও র্যাব-১৪ এর একটি যৌথ আভিযানিক দল পিয়ার আলী স্বপন হত্যাকাণ্ডে জড়িত সকল আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ৬ মে আনুমানিক রাত সাড়ে ৯ টার দিকে র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১৪ এর সহযোগিতায় ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানাধীন কদমতলী এলাকায় একটি যৌথ অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযানে স্বপনকে নৃশংসভাবে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ও হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আসামি নুরুল আমিন (৪২), কে গ্রেফতার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামি হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। সে মামলা রুজুর পর হতে নিজেকে আইনের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য রাজধানী ঢাকা, আশুলিয়া ও সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপন করে ছিল বলে জানা যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।