কার নির্দেশে শপথ নিলেন না ফখরুল?



রেজা-উদ্-দৌলাহ প্রধান,স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা, বার্তা২৪.কম
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, পুরনো ছবি

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, পুরনো ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

গ্রাম্য একটা শ্লোক আছে, ‘সেই তো নথ খসালি, কেন লোক হাসালি’। সংসদ নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্ট জোটের নির্বাচিত সদস্যদের শপথ নিয়ে যে নাটকীয়তা, টানা-হেচড়া আর গুঞ্জন হল তাতে সেই শ্লোকটি ঘুরে আসছে রাজনীতির ময়দানে।

দফায় দফায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের  নির্বাচিত সদস্যদের শপথ ও তাদের নিয়ে নাটকীয়তার চূড়ান্ত রূপ দেখা গেল সোমবার (২৯ এপ্রিল)।

শপথ গ্রহণের সময়সীমা শেষের অন্তিম মুহূর্তে বিএনপির চারজন নির্বাচিত যখন সংসদের পথে তখন দলটির পল্টনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপির নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ নিতে সরকার চাপ দিচ্ছে, জুলুম জবরদস্তি করছে।

কিন্তু মূল চমক দেখা যায় সন্ধ্যায় শপথ নেওয়ার পরই। শপথ নেওয়ার পর এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, তারেক রহমানের নির্দেশেই শপথ নিয়েছেন। এর কিছুক্ষণ পর গুলশান কার্যালয়ে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও একই কথা বলেন। তিনি জানান, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সিদ্ধান্তেই বিএনপি থেকে নির্বাচিত চার নেতা শপথ নিয়েছেন।

তিনি তাহলে শপথ নিলেন না কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সময় হলেই তা জানতে পারবেন।’

স্বাভাবিক ভাবেই রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন একটি প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে অন্যরা তারেক রহমানের নির্দেশে শপথ নিতে গেল তাহলে ফখরুল গেলেন না কেনো? তাহলে তিনি কি তারেক রহমানের আদেশ মানতে চাইছেন না! নাকি অন্য কোনো রহস্য রয়েছে। বিএনপি কার নির্দেশে চলে এ নিয়ে অনেক দিন ধরেই নানা রকম মুখরোচক আলোচনা রয়েছে। সেই আলোচনাকেই আবার উস্কে দিলো বলে মনে করছেন কেউ কেউ।

আর সেটা বুঝতে হলে ফিরে যেতে হবে পেছনের ঘটনায়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্ট জোট থেকে ৮ জন প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু নির্বাচনের ফলাফলকে প্রত্যাখ্যান করে জোটের নির্বাচিতরা সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেবে না বলে জোটের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত টেকে ৭ মার্চ পর্যন্ত। ওই দিন ঐক্যফ্রন্ট থেকে ধানের শীষ মার্কায় নির্বাচিত সদস্য সুলতান মনসুর (মৌলভীবাজার-২) জোটের সিদ্ধান্ত অমান্য করে শপথ নেন। সুলতানের শপথ নেওয়ার পর থেকেই রাজনীতিতে নতুন গুঞ্জনের সূত্রপাত হয়। সেই গুঞ্জনকে আরো উষ্কে দেন সুলতান মনসুর নিজেই। তাকে বহিস্কার করে গণফোরাম। তিনি বলেন, ‘আমি তো শপথ নিয়েছি। অপেক্ষা করেন আরো আসবে।’

সুলতান মনসুরের সে ভবিষ্যতবাণীকে সত্য করে ২ এপ্রিল শপথ নেন গণফোরামের মোকাব্বির খান (সিলেট-২)। মোকাব্বির খান শপথ নিলে একদিকে গণফোরাম তাকে শোকজ করে, বহিস্কৃত হবেন বলে দলের নেতারা জানায়। অন্যদিকে দলের কাউন্সিলেই আবার তাকে ড. কামালের পাশের মঞ্চে বসতে দেখা যায়।

মোকাব্বির খানের শপথের পরই রাজনীতির দৃশ্যপট পাল্টে যায়। রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন ওঠে বিএনপি থেকে নির্বাচিতরাও শপথ নেবেন, বিনিময়ে দুর্নীতির দায়ে কারাবন্দি অসুস্থ চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে প্যারোলে মুক্ত হবেন। সাংবাদিকরা যতই এই গুঞ্জন নিয়ে প্রশ্ন করেন; বিএনপি নেতারা বিষয়টিকে পুরোপুরি উড়িয়ে দেন। খালেদা জিয়া প্যারোলে মুক্ত হবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন দলের শীর্ষ নেতারা। সংসদ সদস্য হিসেবেও কেউ শপথ নেবেন না।

কিন্তু বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) শেষ সময়ে আচমকাই সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেন ঠাকুরগাঁও-৩ আসন থেকে নির্বাচিত জাহিদুর রহমান। বিএনপির মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘যারা দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে শপথ নেবেন তারা গণদুশমন। দলের সিদ্ধান্ত অমান্য ও দলীয় প্রধানকে কারাগারে রেখে যারা শপথ নিচ্ছে তারা জনগণের থুথুর ঢলে ভেসে যাবে।’

দুই দিন পর ২৭ এপ্রিল রাতে বসে স্থায়ী কমিটির বৈঠক। তাতে স্কাইপির মাধ্যমে লন্ডন থেকে যোগদেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমান। বৈঠক শেষে দলীয় সিদ্ধান্ত ভঙ্গের দায়ে জাহিদুরকে বহিস্কারের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জাহিদুরের বহিস্কারের ঘটনায় যখন অন্যদের নিরুৎসাহিত হওয়ার কথা। কিন্তু না অন্যরাও শপথের প্রস্তুতি নিয়েই ঢাকায় ঘুরাঘুরি করতে থাকেন। অবশেষে ২৯ এপ্রিল বিকেল সাড়ে ৫টায় অনেক বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো স্পিকারের কক্ষে শপথ নেওয়ার জন্য হাজির হন হারুনুর রশীদ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩), আমিনুল ইসলাম (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২), উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২) ও বগুড়া-৪ আসন থেকে নির্বাচিত মোশাররফ হোসেন। তারা শপথ নেওয়া শেষেই ‘বোমা ফাটান’। জানান, তারেক রহমানের নির্দেশ পেয়েই শপথ নিতে এসেছেন।

অথচ দু’দিন আগেই বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত ছিল শপথ না নেওয়ার। কিন্তু দুই দিন পরেই তারেক রহমানের একক নির্দেশে দলীয় সে সিদ্ধান্ত পাল্টে গেল। স্থায়ী কমিটির কোনো বৈঠকও হল না। এমনকি যার খবর সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভীও জানেন না।

আরও নানান রকম প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। কেননা কয়েকদিন ধরেই বিএনপি বলা বলি করছিলো শপথ নিতে সরকারের চাপ রয়েছে। বিশেষ করে জাহিদুর রহমানের শপথের পর তারা আরও গলা ফাটিয়ে বলতে থাকেন। রুহুল কবীর রিজভী ছিলেন কয়েকধাপ এগিয়ে। এখন বলা হচ্ছে তারেক রহমানের নির্দেশেই শপথ। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে এতোদিনের বক্তব্য কি স্ট্যান্ডবাজি, নাকি অন্যকিছু। অন্যকিছু যদি নাই হয় তাহলে তারেক রহমান বলার পরেও কার নির্দেশে এখনো শপথ নিলেন না মির্জা ফখরুল।

তৃণমূলের নেতারা বলছেন, তারেক রহমানের নির্দেশে শপথ নিয়ে থাকলে ভালো। আর যদি না হয় তাহলে খবর আছে।

আরও পড়ুন: শপথ নিলেন ফখরুল বাদে বিএনপির বাকিরা

আরও পড়ুন: সংসদ অধিবেশনে যোগ দিলেন বিএনপির ৫ এমপি

   

আরও ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করল বিএনপি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের আরও ৫৫ জন নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) চার জন ও বুধবার (১৫ মে) ৫১ জনকে বহিষ্কার করা হয়।

বৃহস্পতিবার দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

গত ৮ মে থেকে প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন শুরু হয়। এই নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিচ্ছে না। কিন্তু দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নেতাকর্মীরা। এ কারণে প্রথমে তাদের শোকজ এবং পরে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে বহিষ্কার করছে দলটি। তবে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নির্বাচন থেকে ফিরে আসায় কয়েকজনের বহিষ্কারাদেশ তুলেও নেওয়া হয়েছে।

প্রথম পর্বে ৮০ জনকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপ মিলিয়ে অন্তত ১৪৯ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করে দলটি। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ২০৪ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

;

সর্বস্ব খুইয়ে স্বদেশে বঙ্গবন্ধুকন্যা ও একটি স্বপ্নের বাস্তবায়ন



রুহুল আমিন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
সর্বস্ব খুইয়ে স্বদেশে বঙ্গবন্ধুকন্যা ও একটি স্বপ্নের বাস্তবায়ন

সর্বস্ব খুইয়ে স্বদেশে বঙ্গবন্ধুকন্যা ও একটি স্বপ্নের বাস্তবায়ন

  • Font increase
  • Font Decrease

সেদিন ছিল কালবৈশাখীর তাণ্ডব। সকাল থেকেই প্রচণ্ড ঝড়বৃষ্টি, আছে সামরিক শাসকের রক্তচক্ষু ও নিষেধাজ্ঞা। তবে সব কিছু উপেক্ষা করে ১৯৮১ সালের ১৭ মে বিকাল সাড়ে চারটায় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে নিয়ে কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে অবতরণ করে ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের ৭০৭ বোয়িং বিমানটি।

মুষলধারার বৃষ্টি-বাদলা উপেক্ষা করে গণতন্ত্রকামী লাখ লাখ মানুষের মিছিল এসে থামে বিমানবন্দরের সামনে। মানুষের স্রোতে ভেঙে পড়ে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। রানওয়ের দুই পাশে লাখ লাখ মানুষ, তার মাঝে পদ্ম হয়ে নেমে আসলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।

বঙ্গবন্ধুকন্যা যখন নেমে আসেন বিমান থেকে, তার চোখে পানি, সে পানি মুছে দিচ্ছে বৃষ্টি হয়ে নেমে আসা আকাশের কান্না। সেই সাথে 'জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু' স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে চারপাশ। কালো ডোরাকাটা তাঁতের মোটা শাড়ি পরা শেখ হাসিনা দীর্ঘ নির্বাসন জীবন কাটিয়ে আবারও পা রাখেন দেশের মাটিতে। নেমে এসে মিশে গেলেন মানুষের স্রোতে।

সর্বস্ব হারিয়ে মেয়ে পুতুলকে নিয়ে সেদিন দেশে ফিরেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। তবে বাবা-মা, ভাইদের হারালেও তিনি যে একা নন বরং পুরো দেশই তার পরিবার, সে কথা মনে করিয়ে দিতে ভুল করেনি উপস্থিত জনতা। সেদিনের সে জনতা ‘পিতৃহত্যার বদলা নিতে/লক্ষ ভাই বেঁচে আছে, শেখ হাসিনার ভয় নাই/রাজপথ ছাড়ি নাই' এমনই নানা স্লোগানে শেখ হাসিনাকে বরণ করে নেন একজন বোন হিসেবে, একজন পরিবারের পরম আপনজন হিসেবে।

একদিকে কালবৈশাখীর চোখরাঙানি অন্যদিকে লক্ষ জনতার একবার বঙ্গবন্ধুরকন্যাকে দেখার তৃষ্ণা। এর মধ্য দিয়ে সেদিনের ঢাকা শহর হয়ে উঠে এক স্তব্ধ নগরী। যে কারণে বিমানবন্দর থেকে বনানী হয়ে শেরে বাংলা নগরে আসতে সময় লেগে যায় সাড়ে তিন ঘণ্টারও বেশি। কিছু দুষ্কৃতিকারীর হাতে পরিবারের সবাইকে হারালেও প্রতিশোধের আগুনে জ্বলে ওঠেননি তিনি। বরং হাঁটলেন পিতার দেখানো পথে। তাই তো সংবর্ধনা মঞ্চে দাঁড়িয়ে জনতার উদ্দেশ্যে কন্যা তার বাপের মত করেই বললেন, 'পিতা-মাতা, ভাই রাসেল সবাইকে হারিয়ে আমি আপনাদের কাছে এসেছি। আমি আপনাদের মাঝেই তাদের ফিরে পেতে চাই।’

আপ্লুত শেখ হাসিনা সেদিন আরও বলেছিলেন, ‘সব হারিয়ে আমি আপনাদের মাঝে এসেছি, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তার আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জাতির পিতা হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণে আমি জীবন উৎসর্গ করতে চাই। আমার আর হারাবার কিছু নেই।’

তিনি বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগের নেত্রী হওয়ার জন্য আসিনি। আপনাদের বোন হিসেবে, মেয়ে হিসেবে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী কর্মী হিসেবে আপনাদের পাশে থাকতে চাই। জীবনের ঝুঁকি নিতেই হয়, মৃত্যুকে ভয় করলে জীবন মহত্ব থেকে বঞ্চিত হয়।’

সেই যে প্রতিজ্ঞা, পিতার দেখানো স্বপ্ন পূরণের প্রতিজ্ঞা, সে প্রতিজ্ঞা পূরণে দেশে ফিরেই হাল ধরেন আওয়ামী লীগের। নানা লড়াই, সংগ্রাম ও প্রতিবন্ধকতা ডিঙিয়ে শক্তিশালী করেন দলকে। শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে আস্থা ফিরিয়ে আনেন নেতাকর্মীদের মাঝে। সে আস্থার সুফল পান ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। বিজয়ী হয়ে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।

ক্ষমতায় এসেই মনোযোগী হন দেশ গঠনে, বাবার স্বপ্ন পূরণে। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত মাত্র পাঁচ বছরে খাদ্য ঘাটতির দেশ থেকে খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশে পরিণত করেন। করেন গঙ্গা চুক্তি। কোন তৃতীয় পক্ষ ছাড়ায় অশান্ত পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি ফিরিয়ে আনতে করেন শান্তি চুক্তি। এছাড়াও বিদ্যুৎ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সব জায়গায়, জনগণের মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নে গ্রহণ করেন নানা কার্যক্রম।

তবে ২০০১ সালের নির্বাচনে আবারও ক্ষমতায় আসে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার। এরপর আবারও ঘটে ১৯৭৫ সালের মত আরেকটি নিকৃষ্ট ঘটনা। তখনকার বিরোধীদলীয় নেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে হয় গ্রেনেড হামলা। তবে তার সামনে ঢাল হয়ে দাঁড়ান নেতাকর্মীরা। প্রাণে বেঁচে যান তিনি। তবে নিহত হন দলটির ২৪ জন নেতাকর্মী।

তবে এসব কিছুতেও দমে যাননি জাতির পিতার কন্যা। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় পিছপা হননি এক পাও। তাই তো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে 'মাইনাস-টু ফর্মুলা'ও টলাতে পারেনি তাকে। সব ষড়যন্ত্রকে নস্যাৎ করে দিয়ে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আবারও বিপুল ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়ে দ্বিতীয় বারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। তারপর থেকে টানা ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে জাতির পিতার কন্যার নেতৃত্বে দেশ চালানোর দায়িত্বে আছে আওয়ামী লীগ।

এই সময়ের মধ্যে তার নেতৃত্বের কারণেই স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গঠন করে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের। বাংলাদেশ শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং চিকিৎসাসেবা, তথ্য, যোগাযোগ ও প্রযুক্তি, অবকাঠামো, কৃষিসহ সব ক্ষেত্রেই উন্নতি লাভ করেছে। হয়েছে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ।

বঙ্গবন্ধুকন্যার হাত ধরে সব বাধা অতিক্রম করে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার যথার্থ বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলছেন তিনি। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর, স্বপ্নের পদ্মা সেতু, মেট্রোরেলের মতো মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন। মহাকাশে উড়িয়েছেন বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট- যা ছিল এক সময় কল্পনারও অতীত। স্বপ্ন দেখাচ্ছেন ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত, সমৃদ্ধ দেশ গড়ার।

;

আওয়ামী লীগ কারও দয়ায় ক্ষমতায় আসেনি: নানক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪. কম, ঢাকা
আওয়ামী লীগ কারো দয়ায় ক্ষমতায় আসেনি: নানক

আওয়ামী লীগ কারো দয়ায় ক্ষমতায় আসেনি: নানক

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কোনোদিন কারও দয়ায় ক্ষমতায় আসেনি বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

সেমিনারের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম। 

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কোনোদিনও কারো দয়ায় ক্ষমতায় আসেনি। আওয়ামী লীগ ৭০ এর নির্বাচনে পাকিস্তানি শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করেছে, জেনারেল আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে লড়াই করে জনতার জয়ের মধ্য দিয়ে ৭০’র নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জেনারেল জিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করেছে, এরশাদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে নিরবিচ্ছিন্ন লড়াই করেছে।

তিনি আরও বলেন, হাজার হাজার সামরিক অফিসারকে আপনাদের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান হত্যা করেছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আপনারা ক্ষমতায় থাকাকালীন গঙ্গা পানির চুক্তি সমাধান করেননি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ৪৪ হাজার কিউসেক পানি অর্জন করেছে। বঙ্গবন্ধুর রক্ত যার ধমনীতে আছে, সেই রক্তের উত্তরাধিকার শেখ হাসিনা স্বার্থরক্ষার ক্ষেত্রে কারো সঙ্গে কোনো আতাত করে না।

বিএনপির লজ্জা নেই এমন মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, ওরা বেহায়া, ওদের লজ্জা নেই। মির্জা ফখরুল আপনারা যা বলবেন বুঝে শুনে বলবেন। ইট মারলে পাটকেল খাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকবেন।

বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের সভাপতি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাস, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া, দৈনিক বাংলা ও নিউজবাংলা২৪ এর নির্বাহী পরিচালক এবং বঙ্গবন্ধু গবেষক মো. আফিজুর রহমান, বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী প্রমুখ।

;

শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের খাবার বিতরণ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪৪তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে এতিমখানায় খাবার বিতরণ করেছে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক উপ-কমিটি।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) তেজগাঁওয়ের রহমতে আলম ইসলাম মিশন এতিমখানায় সুবিধাবঞ্চিতদের মাঝে এসব খাবার বিতরণ করে দলটি। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

এসময় অতিথিরা বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিয়েছিলো দুষ্কৃতকারীরা। তবে সে সময় জীবনকে ঝুঁকির মুখে ফেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসেছিলেন। তিনি ফিরে এসেছিলেন বলেই আজকে দেশের এতো উন্নয়ন। শৃঙ্খল মুক্ত গণতন্ত্র। স্বাধীন নির্বাচন কমিশন। তিনি ফিরে এসেছেন বলেই আজকে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর হবার স্বপ্ন দেখছি।

আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম প্রমুখ।

;