শেখ হাসিনার পেনাল্টি মিস হবে না



এরশাদুল আলম প্রিন্স, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি ও গণতান্ত্রিক বাম জোটের নেতা মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম-ছবি: শাহরিয়ার তামিম।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি ও গণতান্ত্রিক বাম জোটের নেতা মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম-ছবি: শাহরিয়ার তামিম।

  • Font increase
  • Font Decrease

সবচেয়ে বড় বাণিজ্য হলো এমপিগিরি

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আমার নেতৃত্বেই প্রথম মিছিল হয়েছিল

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর প্রথম প্রতিবাদ করেছিলাম আমি

নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তদারকির সরকার চাই


মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি ও গণতান্ত্রিক বাম জোটের অন্যতম নেতা। তুখোড় ছাত্রনেতা ও ডাকসুর সাবেক সভাপতি। দেশের সাম্প্রতিক রাজনীতি, নির্বাচন, ছাত্র রাজনীতি, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী রাজনৈতিক উত্থান পতনের ইতিহাসের নানা দিক নিয়ে সম্প্রতি মুখোমুখি হয়েছিলেন ‘বার্তা২৪’ এর।

সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এরশাদুল আলম প্রিন্স।

বার্তা: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কমিউনিস্ট পার্টির প্রস্তুতি ও ভাবনা সম্পর্কে কিছু বলবেন কি?

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম: সত্য কথা বলতে দেশ আজ নানা দিক থেকে গভীর সংকটে। হয়তো রাজনৈতিক সংকটটা দৃশ্যমান বেশি এবং মানুষ এটা নিয়ে বেশি আলোচনা করে। কিন্তু আমি যখন সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলি, তখন দেখি, তারা নির্বাচন নিয়ে চিন্তা করে বটে, কিন্তু তারা আরও বেশি চিন্তিত তাদের ন্যূনতম মজুরি নিয়ে। গার্মেন্টসের শ্রমিকদের দাবি, তাদের ন্যূনতম মজুরি হতে হবে ১৬ হাজার টাকা। কিন্তু সরকারি ঘোষণা দেয়া হলো এর অর্ধেক। যদি ন্যূনতম প্রয়োজনের অর্ধেক মজুরি দেয়া হয়, তাহলে সরকারি সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনও যা পায় তার অর্ধেক হওয়া উচিত?

দেশের উন্নয়ন ও জিডিপি অনেক দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে-এ রকম একটি হিসাব আমাদের সামনে তুলে ধরা হয়, কিন্তু আমাদের মোট সম্পদ বাড়ছে ঠিকই, কিন্তু সেই সঙ্গে বৈষম্যের হার বাড়া এ কথাই প্রমাণ করে যে এ সম্পদ সবার মধ্যে সমবন্টন হচ্ছে না। আমরা দেখতে পাচ্ছি, অর্থনীতির মধ্যে লুটপাটের ধারা বহুদিন ধরেই চলছে। এর একটি অশুভ প্রভাব আমাদের অর্থনীতি, সমাজ এমনকি রাজনীতির ভেতরেও অনুপ্রবেশ করেছে। রাজনীতিতেও এখন সবকিছু কেনা-বেচা ও লেনদেনের বিষয় হয়ে গেছে। নমিনেশন বাণিজ্য, ভোট বাণিজ্য, সিট বাণিজ্য, নিয়োগ বাণিজ্য, অবসর বাণিজ্য, বদলি বাণিজ্য। কোথায় বাণিজ্য নেই?

আর সবচেয়ে বড় বাণিজ্য হলো ‘এমপিগিরি’। আমাদের রাজনীতি বাণিজ্যিকীকরণ ও দুর্বৃত্তায়ন দ্বারা আক্রান্ত হয়ে পড়েছে।

আমাদের ফিরে যেতে হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়। আমাদের বামপন্থিদের ভিশন হলো- ভিশন মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১।

ইলেকশন নিয়ে আমরা আইয়ুব খানের আমল থেকেই সংগ্রাম করেছি। ‘এক লোক, এক ভোট’, ‘সার্বজনীন ভোটাধিকার দিতে হবে, দিতে হবে’। সে ভোট আদায় হলো, ভোটে জনগণ রায় দিলো। কিন্তু ভোটের সেই রায় কার্যকর করতে না দেওয়ায় আমাদের অস্ত্র হাতে সংগ্রাম করে রায় কার্যকর করতে হলো।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Sep/25/1537858657948.jpg

বার্তা : রাজনীতির এ বাণিজ্যিকীকরণ কীভাবে হলো?

মুজাহিদুল: মুক্তিযুদ্ধের যে চিন্তা ও ধারা ছিল সেখান থেকে দেশকে সম্পূর্ণ উল্টো দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পুঁজিবাদি লুটেরা ধনিক শ্রেণি এখন ক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রণ করছে। যখন বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা দেশ স্বাধীন করলাম এবং তিনি সরকার গঠন করলেন, তারপর থেকেই অবস্থা পরিবর্তন হতে থাকে। তার আগে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিতো মধ্যবিত্ত শ্রেণি। দলটির নেতৃত্ব এখন মধ্যবিত্তের হাতে নেই। দুর্ভাগ্যজনকভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা এখন সম্পদ আহরণের উৎস হয়ে গেছে। আর বিএনপির জন্মই হয়েছে লুটেরা ধনিক শ্রেণির স্বার্থ রক্ষার জন্য।

বার্তা : সুষ্ঠু নির্বাচনের ধারাবাহিকতা আমরা কেন ধরে রাখতে পারলাম না?

মুজাহিদুল: জনগণ চাক বা না চাক যে কোনও ভাবেই ক্ষমতায় যাওয়ার মানসিকতাই সুষ্ঠু নির্বাচনের ধারাবাহিকতা নষ্ট করেছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে নীতি-মতাদর্শগত বিরোধ নেই সেটা আমি বলবো না। তবে মূল বিরোধ হলো লুটপাটের ভাগবাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্ব।

বার্তা : সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ঐক্য প্রক্রিয়াকে কীভাবে দেখছেন?

মুজাহিদুল: সম্প্রতি যে ঐক্য হয়েছে তা আসলে বিদ্যমান দ্বিদলীয় কাঠামোর মধ্যেই ঘোরপাক খাচ্ছে। এর মাধ্যমে বরং আসল বিকল্পের সংগ্রামটিকে দুর্বল করা হচ্ছে। আমরা বামপন্থীরা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরে গিয়ে বিকল্প শক্তি গড়তে চাই। সে লক্ষ নিয়ে আমরা অগ্রসর হচ্ছি। আর নতুন ঐক্য প্রক্রিয়াটি এখনো প্রসেসে। বিএনপি ও বিএনপির সঙ্গে যে ২০ দল তাদের সঙ্গে নিয়ে একটি সরকারবিরোধী জোট গঠন করা হচ্ছে। সেটা তারা করুক। কিন্তু আমরা মনে করি, এক দু:শাসন নামিয়ে আরেক দু:শাসন ক্ষমতায় বসিয়ে আসল সমস্যার সমাধান হবে না। ফুটন্ত কড়াই থেকে বাঁচতে জ্বলন্ত চুলায় ঝাপ দিলে কোনো কাজ হবে না। বিপদ সরিয়ে আপদ আনলে কাজ হবে না। আমাদের মু্ক্তিযুদ্ধের ধারায় অগ্রসর হতে হবে।  

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Sep/25/1537858673584.jpg

বার্তা : আওয়ামী লীগতো মুক্তিযু্দ্ধের পক্ষের শক্তি। তাদের সাথে ঐক্য করার কথা ভাবছেন কি?

মুজাহিদুল: আওয়ামী লীগের ইতিহাসে অনেক উত্থান-পতন। একসময় ভাসানীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ছিল। যখন সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্ব নিলেন তখন দলটি ডানপন্থী হয়ে গেলো। আবার বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এটি ধীরে ধীরে মধ্য-বামপন্থী ধারায় আসলো। সেখান থেকে আবার ডান ও মধ্য-ডান অবস্থাতে ফিরে এসেছে।

মোশতাক বঙ্গবন্ধুকে পরামর্শ দিয়েছিল সমাজতন্ত্র বাদ দিয়ে পুঁজিবাদের পথ ধরতে, ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ দিয়ে বাজার অর্থনীতির পথ ধরতে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু মোশতাকের কথা শোনেননি। মোশতাকের পরামর্শ ছিল সমাজতন্ত্র বাদ দিয়ে বাজার অর্থনীতি চালু করা। আমি সবিনয়ে আওয়ামী লীগের কাছে জিজ্ঞেস করতে চাই, আওয়ামী লীগ এখন বঙ্গবন্ধুর নীতিতে চলছে না মোশতাকের নীতিতে? বঙ্গবন্ধু হত্যার পর আমার নেতৃত্বে প্রথম মিছিল হয়েছিল। প্রথম প্রতিবাদ করেছিলাম আমি। অনেক নেতাই সেদিন মোশতাকের মন্ত্রিসভায় যোগ দিয়েছিল। এরপর সামরিক শাসনের মাধ্যমে দেশ মুক্তিযুদ্ধের ধারা থেকে সরে গেলো। এরপর আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় এসেছে, কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের মূল ধারায় দেশকে ফিরিয়ে নিয়ে যায়নি। ধর্ম নিরপেক্ষতায় প্রত্যাবর্তন করতে পারেনি। জামায়াতে ইসলামকে এখনও নিষিদ্ধ করা হয়নি। এসব নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি খেলা করছে।

অনেকে আমাদের বলে, আপনারা কি আওয়ামী লীগ ও বিএনপি থেকে সমদূরত্বের নীতিতে চলেন? না, আমরা আওয়ামী লীগ ও বিএনপি থেকে দূরত্ব মেপে আমাদের দলের নীতি ঠিক করি না। তারাই আমাদের থেকে দূরত্ব মেপে নীতি ঠিক করে। কাজেই কাছে আসার সুযোগ কম। কারণ, আওয়ামী লীগের শ্রেণি চরিত্র বদলে গেছে। আগে ছিল মধ্যবিত্তের নেৃতৃত্বে পরিচালিত দল, এখন হয়েছে লুটেরা ধনিক শ্রেণি দ্বারা পরিচালিত দল। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা শুধু মুখে বললে হবে না। গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা মানতে হবে।

বার্তা : নির্বাচনকালীন সরকারের কোনো ফর্মুলা কি আপনাদের আছে?

মুজাহিদুল: আমরা এরশাদের বিরুদ্ধে যখন লড়াই করি, তখন তিন জোটের রূপরেখা প্রণিত হয়। সেটা ড্রাফট করার দায়িত্ব আমরা ওপরই ছিল। প্রথম ড্রাফটে  বলেছিলাম যে আগামী তিনটা নির্বাচন তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করতে হবে।  শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া- দুজনেই এতে আপত্তি করলেন। তাই ওটা রাখা হয়নি। আমরা চেয়েছিলাম নির্বাচনের ওপর মানুষের বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে। কিন্তু এখন পর্যন্তও মানুষ বিশ্বাস করে, দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব না।

সরকার থেকে বলা হলো, অক্টোবরের মাঝামাঝি নির্বাচনকালী সরকার গঠন করা হবে। কিন্তু সংবিধানে নির্বাচনকালীন সরকার বলতে কিছু আছে কি? নাই। সরকার বলছে, নির্বাচনকালীন সরকারের কাজ হবে ‘রুটিন কাজ’। কিন্তু সংবিধানে ‘রুটিন কাজ’ বলে কিছু নেই। সরকার বলছে, শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে। কিন্তু সংবিধানে আছে নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। তাই সব কিছুই একটা প্রহসন। আমি এটাকে বলি ঐন্দ্রজালিক প্রহসন। আমরা নিরপেক্ষ তদারকির সরকার চাই। আজ্ঞাবহ কমিশনকে সরিয়ে দিতে হবে। সংসদ বহাল রেখে নিরপেক্ষ নির্বাচন অনেক জটিলতা সৃষ্টি করবে। আমরা বলেছি, সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা চালু করতে হবে। যে দল যতো শতাংশ ভোট পাবে ততো শতাংশ সিট পাবে। না ভোট দেয়ার সুযোগ দিতে হবে। নির্বাচনে সাম্প্রদায়িকতার ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। নির্বাচনের খরচ রাষ্ট্র চালাবে। নির্বাচন কমিশন সব তদারকি করবে। সব সরকারি খরচে হবে। প্রজেকসন মিটিং হবে। সেখানে প্রার্থীরা কথা বলবেন। অনেক দেশেই এ সিস্টেম আছে।

বার্তা: ইভিএম নিয়ে আপনাদের অবস্থান কী?

মুজাহিদুল: নাসিম সাহেব কয়েকদিন আগে বলেছেন, মেসি-রোনাল্ডো পেনাল্টি মিস করতে পারে, কিন্তু শেখ হাসিনার পেনাল্টি মিস হবে না। পেনাল্টি যাতে মিস না হয়, সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। শোনা যায়-এটা অনুসন্ধান করে দেখতে হবে-সংসদে আইন পাস হওয়ার আগেই ও নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেয়ার আগেই চার হাজার টাকার ইভিএম কেনার জন্য এলসি খুলে দেয়া হয়েছে। কে এই এলসি খুললো? এখানে কি কি লেনদেন হয়েছে? এসব যোগসূত্র খুঁজে দেখতে হবে। এসব ইঞ্জিনিয়ারিং কলাকৌশল থেকে বের হতে হবে। সামরিক শাসনের সময়ও এসব কলা কৌশল প্রয়োগ করা হয়েছে। 

বার্তা: আপনি তুখোড় ছাত্রনেতা ও ডাকসুর সভাপতি ছিলেন। ছাত্র রাজনীতির ইতিবাচক পরিবর্তন কীভাবে আসতে পারে?

মুজাহিদুল: ছাত্র রাজনীতি আসলে অবদমিত। ছাত্র রাজনীতি হচ্ছে যেটা আমরা গণজাগরণ মঞ্চে দেখেছি, যৌন নির্যাতনের বিরুদ্ধে যে প্রতিবাদ হয়েছে সেখানে এবং সাম্প্রতিক নিরাপদ সড়কের জন্য কিশোর বিদ্রোহও এর উদাহরণ। কিন্তু সাধারণ ছাত্রদের এ জাগরণকে দমন করে রেখেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে দখল করে রাখা এক ধরনের মাস্তান ও ক্যাডার বাহিনী। মিছিল না করলে, নেতার পেছন পেছন না ঘুরলে হলে সিট দেয়া হবে না-এসব চলছে। ছাত্র রাজনীতির নামে টেন্ডারবাজি-চাদাবাজি, লোকজনকে ধরে নিয়ে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায় করা হচ্ছে। যদি ছাত্র নির্বাচন হয় তবেতো এসব হবে না। তাই নির্বাচনও হচ্ছে না। এর সাথে যুক্ত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটা অশুভ অংশ। দু:খের বিষয় শিক্ষকদের একটা অংশও এর সাথে জড়িয়ে পড়েছে। দেশে সব নির্বাচন হচ্ছে, কিন্তু ছাত্র নির্বাচন হচ্ছে না। ছাত্রসংসদের জন্য ফি দিতে হচ্চে ছাত্রদের। কিন্তু ছাত্রসংসদ নেই। সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নেই ২৮ বছর। অথচ, দরকার বছর বছর নির্বাচন। কিন্তু সেটি হচ্ছে না।

বার্তা: জনগণের উদ্দেশ্যে বিশেষ বক্তব্য আছে কি?

মুজাহিদুল: আমি বলতে চাই, দেশকে আমাদের স্বপ্নের মতো করে, মনের মতো করে গড়ে তুলতে হলে অনেক কিছু করতে হবে। আমি সবিনয়ে  দর্শকদের বলতে চাই-মনে রাখবেন জমি বর্গা দেয়া যায়, কিন্তু স্বার্থ কখনো বর্গা দেয়া যায় না। যার যার স্বার্থ নিয়ে নিজে নিজের সংগঠন, সমিতি এগুলো গড়ে তুলুন। ‍কৃষকরা কৃষকের সংগঠন গড়ে তুলুন, শ্রমিকরা শ্রমিকের সংগঠন গড়ে তুলুন। ছাত্ররা ছাত্রদের। নিজেরা সক্রিয় হয়ে মাঠে নামেন। আপনার স্বার্থ আপনাকেই আদায় করে নিতে হবে। গ্যালারিতে বসে খেলা দেখলে হবে না। জনগণের প্রকৃত বিকল্প শক্তিকে চিহ্নিত করে তাদেরকে সামনে নিয়ে আসার জন্য ব্যবস্থা করেন। তাহলেই আমরা সবাই মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে দেশ গড়তে পারবো।

বার্তা: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ

মুজাহিদুল: বার্তা২৪ কেও অনেক ধন্যবাদ

 

   

'বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা গণবিরোধী সিদ্ধান্ত'



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা সরকারের একটা গণবিরোধী সিদ্ধান্ত এবং এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ। সামনে এই সংকট আরো প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। 

রোববার (১৯ মে) দুপুরে রংপুর সার্কিট হাউজে এসে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় কালে এসব কথা বলেন তিনি।

সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে জিএম কাদের বলেন, সামনে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। দেশের রিজার্ভ এখন ১০ বিলিয়নের নিচে নেমে এসেছে, যা এ যাবৎ কালের সর্বনিম্ন। এখন বলা হয় ৩ মাসের আমাদানি করার মতো অর্থ থাকলেই নাকি যথেষ্ট। কিন্তু আমরা যতটুকু জানি আমদানি ব্যয় আগের তুলনায় অনেক কমিয়ে দেয়া হয়েছে। এখন ৭/৮ মিলিয়নের জায়গায় ৪/৫ মিলিয়নে নেমে এসেছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অনেক বড় বড় কথা বলেন, তাকে আমি রেসপেক্ট করি। কিন্তু তিনি যেসব কথা বলছেন এটা জনগণ আর বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ আগে জনগণকে ধারণ করলেও এখন তারা জনগণের ঘাড়ে চেপে বসেছে। আগে আওয়ামী লীগ একটা গাছের মতো ছিলো জনগণ যেখানে বিশ্রাম নিতো এখন সেটা পরগাছা হয়ে গেছে। তারা দেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

এর আগে দুপুরে জিএম কাদের ঢাকা থেকে বিমানযোগে সৈয়দপুর বিমান বন্দরে আসেন। সেখান থেকে সরাসরি রংপুর সার্কিট হাউজে এসে পৌঁছালে জেলা প্রশাসক মোবাস্বের হাসান, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলম চৌধুরী, মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, জেলা সভাপতি আলাউদ্দিন মিয়াসহ প্রশাসনের ও পার্টির নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।

;

দেশের মানুষ বর্তমান সরকারের ওপর বিরক্ত: চুন্নু



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ ও জাতীয় পার্টি (জাপা) মহাসচিব মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, দীর্ঘ সময় রাষ্ট্রক্ষমতায় থেকে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা হ্রাস পেয়েছে। দেশের মানুষ বর্তমান সরকারের ওপর বিরক্ত।

শনিবার (১৮ মে) জাপার বনানী কার্যালয়ে জাতীয় পেশাজীবী পরিষদের নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভায় এ মন্তব্য করেন।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি’র ওপর মানুষ আস্থা রাখতে পারছে না। কারণ, আন্দোলন সংগ্রামে বিএনপি সফল হতে পারছে না। এই দুটি দলের বিকল্প হিসেবে সাধারণ মানুষ জাতীয় পার্টিকে বেছে নিতে চায়। আগামী দিনে জাতীয় পার্টির উজ্জল ভবিষ্যত আছে। তাই, জাতীয় পার্টিকে আরো শক্তিশালী করতে হবে।

পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ডাঃ মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান আকাশের সভাপতিত্বে সভা পরিচালনা করেন সদস্য সচিব ডাঃ রাকিব। পেশাজীবী পরিষদের লেহাজ উদ্দিন, সাংবাদিক নিশাত শাহরিয়ার, অধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম, মোঃ নুরুজ্জামান, সোয়াইব ইফতেখার, ডাঃ মোঃ আজীজ বক্তব্য রাখেন।

উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মোঃ খলিলুর রহমান খলিল, ভাইস চেয়ারম্যান সুলতান আহমেদ সেলিম, যুগ্ম দফতর সম্পাদক সমরেশ মন্ডল মানিক, কেন্দ্রীয় সদস্য শেখ মোঃ আবু ওয়াহাব।

;

সরকার বয়কটে ইসরায়েল-ভারতের পণ্য বয়কট হবে: আলাল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশের বর্তমান সরকার ‘ইসরায়েল ও ভারতের পণ্য’ মন্তব‌্য করে বিএনপি'র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মুয়াজ্জিন হোসেন আলাল বলেছেন, এই সরকারকে যদি বয়কট করা যায়, তাহলে ইসরায়েল ও ভারতের পণ্যকে বয়কট করা হবে। তাই, এই আওয়ামী লীগ সরকারকে বয়কট করাই হচ্ছে, এখন সবচাইতে বড় কাজ।

শনিবার (১৮ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘বাংলাদেশ সিভিল রাইটস সোসাইটি’-এর উদ্যোগে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে এক নাগরিক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।

আলাল বলেন, ‘দ্য হিন্দুস্থান টাইমস’-এ একটি খবর দেখলাম, ভারত থেকে ইসরায়েলকে দেওয়া অস্ত্র বহর ইউরোপের একটি দেশ স্পেন তাদের বন্দরে রাখার অনুমতি দেয়নি। তারা ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে সেই জাহাজকে।

একই সঙ্গে ইউরোপের অন্যান্য দেশকেও স্পেন বলেছে, ইসরায়েলকে সমরাস্ত্র দেওয়া বন্ধ করতে হবে এবং তারা নিজেরাও বন্ধ করেছে। অথচ আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ যেখানে লাখ লাখ মানুষ রক্ত দিয়ে একটি মানচিত্র অর্জন করেছে, সেখানে ইসরায়েলের থাবা প্রায় বসেছে। তা না হলে রাতের বেলায় গোপনে ইসরায়েল সংস্থার বিমান কীভা‌বে অবতরণ করে! ভারত থেকে ইসরায়েলকে অস্ত্র পাঠানো হচ্ছে, সমর্থন করা হচ্ছে। স্পেনের মতো একটি দেশ এর প্রতিবাদ করেছে। কিন্তু আমরা প্রতিবাদ করছি না!

তিনি বলেন, ভারত এত বড় আমাদের প্রতিবেশী একটি রাষ্ট্র অথচ ধীরে ধীরে বাংলাদেশের জনগণের মন থেকে তারা উঠে গেছে। ফেলানি তো কোনো মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিল না অথচ তার লাশ কাঁটাতারে ঝুলেছে। তাকে কেন কাঁটাতারে ঝুলতে হয়েছিল! প্রতিদিন ‘গরু পাচারকারী’ আখ্যা দিয়ে অসংখ্য মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে, যেটা বিশ্বের অন্যান্য দেশের সীমান্তে হয় কি না আমাদের জানা নেই, একই অবস্থা আজ ইসরায়েল করছে ফিলিস্তিনিদের ওপর!

যুবদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, মিয়ানমারের গণহত্যার বিপক্ষে আমাদের পক্ষে গাম্বিয়ার মতো দেশ আন্তর্জাতিক আদালতে বাদী হতে পারে, তাহলে আমরা কেন আজ ফিলিস্তিনের পক্ষে আন্তর্জাতিক আদালতে বাদী হতে পারবো না! আজ এ সরকার ভারতকে তোষামোদ করে নিজে ক্ষমতায় থাকার জন্য বিশ্বের সব মানবতাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিচ্ছে। সুতরাং, আমরা মনে করি, ইসরায়েল ও ভারতের পণ্য হচ্ছে, বাংলাদেশের বর্তমান সরকার। এই সরকারকে যদি বয়কট করা যায়, তাহলে ইসরায়েলকে পূর্ণ বয়কট করা হবে; ভারতীয় পণ্যকেও বয়কট করা হবে। এই আওয়ামী লীগ সরকারকে বয়কট করাই হচ্ছে, এখন সবচাইতে বড় কাজ।

এ সময় সংগঠনটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

;

সরকারের ধারাবাহিকতায় দেশে এতো উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে: কাদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

সরকারের ধারাবাহিকতা এবং স্থায়িত্বতায় দেশে এতো উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

শনিবার (১৮ মে) দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা একটা কথা কেউ বলি না, আজকের বাংলাদেশের এতো উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি কেন? সরকারের ধারাবাহিকতা এবং স্থায়িত্বতার কারণে। এর কারণেই বাংলাদেশের এত উন্নয়ন ও অর্জন সম্ভব হয়েছে। এই কারণে বিশ্বের বিস্ময়ে রূপান্তরিত হতে পেরেছে বাংলাদেশ।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অতি আপনজন এই দেশের জনগণ। হতাশা কবলিত বাংলাদেশে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন।

 সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।

;