১০ বছর ধরে নারীদের ব্যবস্থাপনায় দুর্গোৎসব



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ময়মনসিংহ
নারীদের ব্যবস্থাপনায় দুর্গোৎসব, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

নারীদের ব্যবস্থাপনায় দুর্গোৎসব, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহ নগরে এবারের শারদীয় দুর্গাপূজায় রয়েছে ৭৮টি মণ্ডপ। এর মধ্যে ব্যতিক্রম শিববাড়ী মন্দির। কারণ এখানে এ পূজার উদ্যোগ, আয়োজন এবং তা বাস্তবায়ন করেন নারীরা। কেনাকাটা থেকে শুরু করে অর্থ সংগ্রহ, আপ্যায়ন ব্যবস্থা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, মঞ্চ সাজানো, প্রসাদ বিতরণ, প্রচারণাসহ সব ব্যবস্থাপনাতেই থাকেন নারীরা।

সক্রিয়ভাবে কোনো পুরুষের অংশগ্রহণ ছাড়া শুধু নারীদের মাধ্যমে বছরের পর এমন আয়োজনে পুরো নগরেই সনাতন ধর্মাবলম্বী, বিশেষ করে নারীদের মধ্যে সৃষ্টি হয় এক ভিন্ন আমেজ ও উৎসাহ। পূজার সময় এ মন্দিরে ঢল নামে সব বয়সী নারীর। তাতে পরিণত হয় এক মধুর মিলনমেলায়।

ব্যতিক্রমী এই আয়োজনের শুরু ২০০৯ সালে। সেই থেকে প্রতিবছরই এভাবে পূজা আয়োজন করে আসছে 'নারীশক্তি' নামের একটি সংগঠন। এবারের আয়োজনটি দশমবারের মতো।

এটি সফল করতে বিভিন্ন উপকমিটি কাজ করছে মূল কমিটির পাশাপাশি। এই কমিটি ও উপকমিটিতে যারা আছেন তাদের সবাই নারী। সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছেন বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীতশিল্পী সুমিতা নাহা। নারীদের মধ্য থেকেই দুর্গোৎসব উদযাপন পরিষদ নামে একটি কমিটি গঠন করে পূজা উদযাপনের বিভিন্ন দায়িত্ব বণ্টন করে দেওয়া হয়। পূজা সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের লক্ষে তাদের আবার কয়েকটি উপকমিটি গঠন করে দেওয়া আছে। তবে প্রথম থেকে যেভাবে দায়িত্ব বণ্টন করা আছে, এখন পর্যন্ত সেই কমিটির অধীনেই পূজা পরিচালিত হয়ে আসছে।

কমিটির সার্বিক কার্যক্রম দেখভাল করার জন্য একটি উপদেষ্টা কমিটিও রয়েছে। প্রথম আয়োজনে ১৩৫ জন নারী সংগঠিত হয়ে এই ব্যতিক্রমী আয়োজনের উদ্যোগ নেন। তখন নগরের সর্বস্তরের মানুষ তাদের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন। পূজা উদযাপনে সব সদস্যকে দৈনিক ৫ টাকা হারে চাঁদা দিতে হয়। এই টাকা দিয়েই তারা যাবতীয় ব্যয়ভার মেটান। তারা অন্য কোথাও চাঁদার জন্য হাত পাতেন না।

চাঁদার অর্থ দিয়ে প্রতিবছরই এই নারীরা একই রকমের শাড়ি কিনেন। অষ্টমী পূজা থেকে বিজয়া দশমীর বিসর্জন পর্যন্ত সবাই এই এক রকমের শাড়ি পরে পূজায় অংশ নেন। সিঁদুর খেলার দৃশ্য তাদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয়। বিসর্জনেও তারা ব্রহ্মপুত্র নদে দল বেধে প্রতিমা বিসর্জন দিতে যান।

পূজা উদযাপন ছাড়াও এই নারীরা জনকল্যাণমূলক ও সমাজসেবায় স্বাক্ষর রেখে চলেছেন। নারী নির্যাতন প্রতিরোধ, বিনামূল্যে রক্তদান, গরিব ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো, মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান, বন্যাদুর্গতদের সহায়তা, বাল্যবিবাহ বন্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি, নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে সারা বছরই কাজ করে যাচ্ছেন এই নারীরা।

দুর্গাপূজা উপলক্ষে একটি স্মরণিকাও প্রকাশিত হয় প্রতিবছর। আর তাতে বাণী দিয়ে থাকেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে রাষ্ট্র ও প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা।

আয়োজকরা জানান, এখন পর্যন্ত তাদের সদস্য সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৬৫ জনে। তাঁদের সবাই ময়মনসিংহ নগরের বাসিন্দা নন। ভারতেরও কয়েকজন নারী রয়েছেন। এছাড়া আরও কয়েকজন প্রবাসী বাঙালি নারী রয়েছেন। পূজা উপলক্ষে তারা দেশে এসে এই মিলনমেলায় যোগ দেন।

এমন ব্যতিক্রমী আয়োজন প্রসঙ্গে শিববাড়ী মন্দিরের দুর্গোৎসব উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুচিত্রা সেন জানান, দুর্গাপূজায় মণ্ডপে সব আয়োজনের নেপথ্যে থেকে নারীরাই যাবতীয় কাজ সম্পাদন করেন। তারা নেপথ্যের এই কাজকে প্রত্যক্ষভাবে সবার সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন।

   

রাত পোহালেই ভোট রংপুরের পীরগাছা ও কাউনিয়া উপজেলায়



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাত পোহালেই রংপুরের পীরগাছা ও কাউনিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট। এর মধ্যে কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে গেছে নির্বাচনী সরঞ্জাম।

মঙ্গলবার (৭ মে) বিকেলে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ব্যালট পেপার বাদে সকল সরঞ্জাম পাঠানো হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পীরগাছা উপজেলা নির্বাচনে তিনটি পদে লড়াইয়ে মাঠে রয়েছেন ১৪ প্রার্থী। এর মধ্যে ১০ জনই আওয়ামী লীগের। তিনজন জাতীয় পার্টির ও একজন বিএনপির।

চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তছলিম উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ মিলন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মনোয়ারুল ইসলাম মাসুদ এবং উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান আবু নাছের শাহ মো. মাহবুবার রহমান।

ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. শারেখ খন্দকার জয় ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাফর ইকবাল, উপজেলা জাতীয় ছাত্র সমাজের সাবেক উপজেলা যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রহিম ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফরহাদ হোসেন অনু।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের শারমীন আখতার, ইসরাত জাহান, জরিনা বেগম, তানজিনা আফরোজ ও মাহমুদা খাতুন এবং জাতীয় পার্টির প্রার্থী রেহেনা বেগম।

কাউনিয়ায় উপজেলা চেয়ারম্যান পদে মাঠে থাকা তিনজনের মধ্যে দুজনই আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী। একজন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম মায়া। অপরজন জেলা পরিষদের সদস্য ও ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক।

এই উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬ জনের মধ্যে মাহমুদুল হাসান পিন্টু কাউনিয়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম-সম্পাদক, মনজুদার রহমান মিলন জেলা কৃষকলীগের সদস্য, সুশান্ত সরকার উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং শফিকুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর কবির আওয়ামী লীগের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা। আরেকজন গনেশ কুমার বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মাঠে থাকা চারজনের মধ্যে সেলিনা খাতুন উপজেলা মহিলা লীগের সহ-সভাপতি, রওশন আরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক মহিলা বিষয়ক সম্পাদক এবং রাবেয়া বেগমও মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী। আর আঙ্গুরা খাতুন বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, পীরগাছা উপজেলায় তিনজন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটারসহ ২ লাখ ৮১ হাজার ৬৯৮ ভোটার ১১৩টি কেন্দ্রের ৭৬০টি কক্ষে ভোট দেবেন। এর মধ্যে ১ লাখ ৩৯ হাজার ১৬৭ পুরুষ ও ১ লাখ ৪২ হাজার ৫২৮ জন মহিলা ভোটার রয়েছেন।

কাউনিয়া উপজেলা একটি পৌরসভা ও ৬টি ইউনিয়নের ৬৩টি ওয়ার্ডের ৯৩টি ভোটকেন্দ্রের ৫১৭টি স্থায়ী এবং ১৮টি অস্থায়ী ভোটকেন্দ্রে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। দুইজন তৃতীয় লিঙ্গসহ এখানে ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৪০ হাজার ৫৪৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৫০৯ এবং মহিলা ১ লাখ ৪ হাজার ৩২ জন।

রংপুর সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল্যাহ্ আল মোতাহসিম জানান, শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণে বাড়তি নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে তার জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও র‌্যাব-পুলিশের পাশাপাশি, বিজিবি, আনসার ও ডিবি পুলিশ মোতায়েন থাকবে।

;

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শ্রমিকলীগ সভাপতি গ্রেফতার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শ্রমিকলীগ সভাপতি নাসির উদ্দিন দিদারকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।

মঙ্গলবার (৭ মে) রাত ১০টার দিকে মিরসরাইয়ে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। দিদারের বাড়ি মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ থানার ৩নং জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের পরাগলপুর গ্রামে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সন্ধ্যার পর দিদারের বাড়ি ঘেরাও করে পুলিশ। এ সময় তিনি পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। তবে শেষ পর্যন্ত পুলিশের জালে ধরা পড়েন তিনি।

গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন।

তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি নাসির উদ্দিন দিদারকে গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম গ্রেফতার করেছে। তার বিরুদ্ধে নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট (এনআই) অ্যাক্ট আইনে একটি মামলা ছিল। ওই মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিলো।’

জানা গেছে, চলতি বছরের ৪ এপ্রিল নাছির উদ্দিন দিদারের মালিকানাধীন আরশিনগর ফিউচার পার্কে এক ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। সেখানে তিনি মোনাজাত করেন। মোনাজাতের মধ্যে এলোমেলোভাবে একের পর এক নানা কথা বলা শুরু করেন। এক পর্যায়ে আমন্ত্রিত অতিথিরা তার দোয়া-মোনাজাত শুনে হাসি ধরে রাখতে পারেননি। মুহূর্তেই ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ক্ষোভ প্রকাশ করে নেটিজেনরা বিভিন্ন মন্তব্য করেন।

এর আগে, ২০২৩ সালের ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে গান-বাজনা বাজিয়ে দিবসটি পালন করে ভাইরাল হোন এই শ্রমিক লীগ নেতা। এছাড়া বিভিন্ন সময় ওয়াজ-মাহফিলে আপত্তিকর নানা বক্তব্য দিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মুখে পড়তে দেখা গেছে তাকে।

;

রাত পোহালেই টাঙ্গাইলের দুই উপজেলায় নির্বাচন: কে হাসবে শেষ হাসি



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, টাঙ্গাইল
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) এই দুই উপজেলা নিয়ে সংসদীয় আসন গঠিত। এ আসনের এমপি ড. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী। এই দুই উপজেলায় ড. আব্দুর রাজ্জাক চেয়ারম্যান পদে দুই জন প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছেন। তবে আওয়ামী লীগেরই অন্য নেতারা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়েছেন ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপির প্রার্থীরা। কে হাসবে শেষ হাসি এ নিয়ে চলছে ভোটারদের মাঝে হিসাব নিকাশ।

বুধবার (৮ মে) টাঙ্গাইলের এই দুই উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে। ইতোমধ্যে কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে গেছে নির্বাচনী সরঞ্জাম।

আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য দলের কেউ এই নির্বাচনে প্রার্থী হননি। মধুপুরে আওয়ামী লীগের তিন নেতা এবং ধনবাড়ীতে আওয়ামী লীগের পাঁচ নেতা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

মধুপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জানান, গত ১০ বছর ধরে এই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছরোয়ার আলম খান আবু। গত দুই মেয়াদেই স্থানীয় এমপি ড. আব্দুর রাজ্জাকের সমর্থন ছিল তাঁর দিকে। কিন্তু দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আবু টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন বলে ঘোষণা দেন। এ নিয়ে স্থানীয় এমপি ড. আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব সৃষ্টি হয়। মধুপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ ভাগ হয়ে যায়। একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। যদিও দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় আবু সংসদ নির্বাচনে আর প্রার্থী হননি। তবে তিনি এবারও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ দলের বড় একটি অংশের সমর্থন আছে আবুর দিকে।

ভোটার আরিয়ান আহমেদ কাকন বলেন, আমরা যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দিয়ে বিজয় করবো। যে উন্নয়ন করবে আমাদের পাশে থাকবে তাকেই আমরা ভোট দিব। আমরা সুষ্ঠ সুন্দর নির্বাচন চাই।

অন্যদিকে চেয়ারম্যান পদে স্থানীয় এমপি ড. আব্দুর রাজ্জাকের সমর্থন নিয়ে প্রার্থী হয়েছেন মধুপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও শোলাকুড়ী ইউনিয়ন পরিষদের পদত্যাগকারী চেয়ারম্যান ইয়াকুব আলী। এ ছাড়াও আব্দুর রাজ্জাকের অংশের অপর নেতা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মীর ফরহাদুল আলম চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। এই তিন প্রার্থীর দিকে ভাগ হয়ে গেছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।

মধুপুরের সাবেক এমপি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী ২৩ বছর পর গত শনিবার মধুপুরে যান। তিনি ছরোয়ার আলম খানের পক্ষে গণসংযোগে অংশ নেন।

এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান প্রার্থী ছরোয়ার আলম খান আবু জানান, দলের অধিকাংশ নেতা-কর্মী আমার পক্ষে আছে। মধুপুরে জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হলে আমি বিপুল ভোটে বিজয়ী হবো।

ড. আব্দুর রাজ্জাক সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ইয়াকুব আলী জানান, ছরোয়ার আলম খান আবু দীর্ঘদিন উপজেলা চেয়ারম্যান থেকেও জনগণের আশা আকাঙ্খা পূরণ করতে পারে নাই। মধুপুরের মানুষ পরিবর্তন চায়। নতুন চেয়ারম্যান চাই। তাই আমার পক্ষে দলীয় নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। আমি শতভাগ আশাবাদী বিপুল ভোটে এ উপজেলার মানুষ আমাকে বিজয়ী করবে।

একটি পৌরসভা ও ১১টি ইউনিয়ন নিয়ে মধুপুর উপজেলা গঠিত। এ উপজেলায় মোট ভোটার ২ লাখ ৫৫ হাজার ২১৮ জন। এ উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান চারজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

ধনবাড়ী উপজেলা-

ধনবাড়ীতে নির্বাচনী মাঠে পাঁচ প্রার্থী। ধনবাড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে এমপি ড. আব্দুর রাজ্জাক সমর্থন করেছেন ধনবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হারুনার রশিদ হীরাকে। হীরা ড. আব্দুর রাজ্জাকের খালাতো ভাই। ২০১৯ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে হীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান হলেও এবার আরও চারজন প্রার্থীর বিরুদ্ধে তাঁকে লড়াই করতে হচ্ছে।

তাঁরা হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মঞ্জুরুল ইসলাম তপন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ তালুকদার সবুজ, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মেহেদী হাসান রনি এবং সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা আজিজুল ইসলাম।

আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জানান, হারুনার রশিদ হীরা আব্দুর রাজ্জাকের খালাতো ভাই। অপর প্রার্থী মঞ্জুরুল ইসলাম তপন আব্দুর রাজ্জাকের মামাতো ভাই। এই উপজেলার নেতা-কর্মীরাও বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন।

ড. আব্দুর রাজ্জাক সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী হারুনার রশীদ হীরা বলেন, আমার পক্ষে দলীয় নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করছেন। মানুষ উন্নয়ন চাই। আমি চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় এ উপজেলায় অনেক উন্নয়ন করেছি। আবারও জনগণ আমাকে বিপুল ভোটে জয়লাভ করাবে।

নিজেকে সাবেক কৃষিমন্ত্রী ও বর্তমান এমপি ড. আব্দুর রাজ্জাকের সাথে আমার রক্তের কোন সম্পর্ক নেই। সে আমার মামাতো ভাই না বলে দাবি করেছেন অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী খন্দকার মঞ্জুরুল ইসলাম তপন। তিনি বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ বর্তমানে ভালই আছে। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হলে আমি বিপুল ভোটে বিজয়ী হবো।

একটি পৌরসভা ও সাতটি ইউনিয়ন নিয়ে ধনবাড়ী উপজেলা গঠিত। এ উপজেলায় মোট ভোটার ১ লাখ ৬২ হাজার ৫৫৮ জন। এ উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এ ব্যাপারে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মতিয়ূর রহমান জানান, অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। কেউ কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা করার চেষ্টা করলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ইতো মধ্যে বিভিন্ন কেন্দ্রে কেন্দ্র নির্বাচনের সরঞ্জাম পৌঁছে গেছে।

;

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন: সিলেটে কেন্দ্রে ভোটার আনাই চ্যালেঞ্জ প্রার্থীদের



মশাহিদ আলী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, সিলেট
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

 

রাত পোহালেই সিলেটে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে চারটি উপজেলায় ভোটগ্রহণ শুরু হবে। বুধবার (৮ মে) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। এ চার উপজেলায় তিনটি পদে মোট ৫৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। শেষ মুহূর্তে এসে এখন আলোচানার টেবিলে চলছে ভোটের হিসেব-নিকাশ। ভোটের দিন যে প্রার্থী যত বেশি ভোটার কেন্দ্রে নিয়ে আসবেন সেই প্রার্থী পড়বেন বিজয়ের মালা। ভোটারদের কেন্দ্র আনাটাই হচ্ছে সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জিং। তাই বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছেন প্রার্থীরা। বিশেষ করে অঞ্চল ভিত্তিক ভোটার আনার চেষ্টা করবেন তারা।

নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন। এছাড়া ভোটের দিন চারটি উপজেলায় আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা যায়, প্রথম ধাপে সিলেট জেলার সদর, দক্ষিণ সুরমা, গোলাপগঞ্জ ও বিশ্বনাথ উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। চার উপজেলায় ৮ লাখ ১৪ হাজার ৫২ ভোটার রয়েছেন। তিনটি পদে মোট ৫৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সিলেট সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৬ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৮জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩জন লড়ছেন।

গোলাপগঞ্জ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৩জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২জন প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছেন। আর বিশ্বনাথ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ১০ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬ জন এবং ৩জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোটের লড়াইয়ে আছেন।

এদিকে, ভোটের দিন কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিত নিয়ে রয়েছে নানা আলোচনা। সিলেটের চারটি উপজেলার মধ্যে মাত্র শুধু বিশ্বনাথে অংশগ্রহণ করেছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। বাকি সবগুলো উপজেলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীই প্রার্থী। তাই ভোটার উপস্থিত নিয়ে রয়েছে তাদের মধ্যে একটা চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জকে সামনে রেখে ভোটারদের দোয়ারে দোয়ারে ঘুরেছেন প্রার্থীরা। নিজ অঞ্চলের ভোটের বিষয়টি প্রাধন্য দিয়েছেন তারা।

প্রার্থীরা বলছেন, বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ও জাতীয় নির্বাচনে ভোটার উপস্থিত ছিল তুলনামূলক কম।তাই তারা এবার ভোটারদের কেন্দ্রমুখী বিভিন্ন কৌশলে প্রচারণা করেছেন। বিশেষ করে তরুণ ভোটারদের কাজ করেছেন। এছাড়াও ভোট কেন্দ্রে নারী নিয়ে আসতে ছুটে ঘিয়েছেন ঘরে ঘরে।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, ভোটে আড়াই হাজারের বেশি পুলিশ সদস্য, সাড়ে তিন হাজারের বেশি আনসার সদস্য ও ৪জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট ও ৩৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবেন। এর বাইরে বিজিবি ও এপিবিএন সদস্যরাও মাঠে থাকবে। চারটি উপজেলায় ৩০২টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে। এরমধ্যে ১৭৪টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ ধরে নিরাপত্তা পরিকল্পনা করেছে সিলেট জেলা ও সিলেট মহানগর পুলিশ( এসএমপি)। এসএমপির আওতাধীন সদরে ৬২ টি কেন্দ্রের মধ্যে ৪৫টি ঝুঁকিপূর্ণ ও দক্ষিণ ‍সুরমার ৬৩টি কেন্দ্রের ৩৯টি ঝুঁকিপূর্ণ নির্ধারণ করা হয়েছে। আর জেলার দুই উপজেলায় ৯০টি ঝুঁকিপূর্ণ ধরা হয়েছে। তন্মধ্যে গোলাপগঞ্জে ১০৩টি কেন্দ্রের ৬৩টি ও বিশ্বনাথে ৭৪টি কেন্দ্রের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ২৭টি নির্ধারণ করা হয়েছে।

ভোটার উপস্থিত নিয়ে বিশ্বনাথ উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী ও সদ্য বহিষ্কৃত যুক্তরাজ্য বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক সেবুল মিয়া বলেন, বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ও জাতীয় নির্বাচনে মানুষের ভোটের প্রতি আগ্রহ ছিলো না।তাই ভোটের দিন ভোটার উপস্থিত ছিল কম। কিন্তু যেহেতু এখন স্থানীয় সরকার নির্বাচন তাই প্রত্যেকে তার নিজ এলাকাসহ অঞ্চল ভিত্তিক ভোটে জোর দিয়েছেন বেশি। আমি আমার জায়গা থেকে চেষ্টা করেছি প্রতিটি এলাকায় যোগাযোগ করার। এখন দেখি বাকিটা ভোটার উপর ভিত্তি করছে।

চেয়ারম্যান প্রার্থী ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদরুল ইসলাম বলেন, অন্যান্য নির্বাচন থেকে এবারের নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিত বেশি হবে বলে আমার ধারণা। কেননা আমাদের কর্মী-সমর্থকরা নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি পাড়া-মহল্লা গিয়ে ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে এসে ভোটপ্রদানের আহ্বান জানিয়েছে। এছাড়া আমি আমার নির্বাচনী এলাকায় তরুণ ভোটারদের বেশি গুরুত্ব দিয়েছি।কারণ তরুণরাই যাচাই-বাচাই করে ভোট দিয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থীদের বিজয়ী করবে। আমি আশা করি আমাকে উপজেলাবাসী ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন।

ভোটের দিন বিকেল পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন সিলেট আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক দীলিপ বৈষ্ণব। তিনি বলেন, যে চারটি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে সেগুলোতে দিনের বেলায় বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। তবে সন্ধ্যার পর বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

এব্যাপারে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন ঘিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ কোনো বিশৃঙখলা তৈরি করার চেষ্টা করলে সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেটের সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও চার উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ভোটারদের উপস্থিতি প্রার্থীদের উপর নির্ভর করছে। তারা জনগণের সঙ্গে কতটা সম্পৃক্ত হতে পেরেছেন এবং প্রচার প্রচারণা করেছেন তা ভোটারদের উপস্থিতি বলে দেবে।

;