গড়াই নদী শুকিয়ে খাল: সংকটে কৃষি ও জীববৈচিত্র্য



এসএম জামাল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার পদ্মার শাখ নদী গড়াই প্রকৃতির বিরূপ প্রভাবে শুকিয়ে এখন খালে রূপ নিয়েছে। স্বাভাবিক নাব্যতায় বছরে দেশি প্রজাতির প্রায় ১শ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদনের ক্ষেত্র এই নদী।  জিকে সেচ পাম্প অচল হয়ে পড়ায় নদী তীরবর্তী কৃষি, জীব-বৈচিত্র্য হুমকিতে পড়েছে। দেশি প্রজাতির মাছ উৎপাদন, জিকে পাম্পকে সচল, সুন্দরবনকে লবণাক্ততা মুক্তকরণ এবং প্রাণী, গাছ-পালা রক্ষা, ভূগর্ভের পানির স্তর ধরে রাখতে গড়াই নদীতে সারা বছর নাব্যতা রাখতে সরকার ড্রেজিংসহ নানা মুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

জানা যায়, পদ্মার শাখা গড়াই নামে ৮৯ কিঃ মিঃ দৈর্ঘ্য। এছাড়া দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০টি জেলায় শুষ্ক মৌসুমে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য, কৃষি, মৎস্য, জলপথ রক্ষা এবং সর্বোপরি খুলনা বিভাগের উপকুলীয় লবণাক্ততার আগ্রাসন থেকে একমাত্র সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন’কে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষার প্রধান মিঠা পানির উৎস হলো গড়াই নদীর পানি প্রবাহ। বিষয়টি সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বিবেচনায় গড়াই নদী পুনরুদ্ধার প্রকল্প হাতে নিয়েছে যা বর্তমানেও চলমান রয়েছে।

চলতি বছরে গড়াইয়ের নাব্যতা সচল রাখতে ২৬ কোটি টাকার প্রাক্কলন ব্যয়ে গড়াই পুনরুদ্ধার প্রকল্পের খনন কাজ চলমান। প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৮ সালে প্রথম ধাপে গড়াই নদী পুনরুদ্ধার প্রকল্পে ক্যাপিটাল ড্রেজিং দিয়ে শুরু হয়েছিল।

বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়নে নেদারল্যান্ডের একটি কোম্পানি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার তালবাড়িয়াস্থ গড়াই নদীর উৎসস্থল থেকে কুমারখালী হয়ে খোকসা উপজেলার জানিপুর পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার নদী খনন করে একটা পাইলট প্রকল্প সম্পন্ন করে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্যদিয়ে সৃষ্ট পানি প্রবাহের নাব্যতাকে টেকসই করতে স্থায়ীভাবে মেইন্টেনেন্স প্রকল্প চালুর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ। এর পরেই গড়াই নদীর সুফল পেতে শুরু করে এ এলাকা।


সরজমিনে গড়াই নদীর কমলাপুর, বারখাদা বাঁধ সংলগ্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চিকন সরু গড়াই নদীতে স্বচ্ছ পানি প্রবাহমান । গড়াই নদীর মূল উৎস পদ্মাতেই তেমন পানি নেই। ফলে উজান থেকে নেমে আসা পানির লাইনে পলি-মাটি ভরাট হওয়ায় শুষ্ক মৌসুমে গড়াই শুকিয়ে পানি প্রবাহ স্বাভাবিকতা হারাচ্ছে। গড়াই শুকিয়ে যাওয়ায় কুষ্টিয়া এলাকায় পানির স্তর নেমে গেছে।

কুষ্টিয়া সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মাহাতাব উদ্দিন বলেন, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলার জনগোষ্ঠীর কাঙ্খিত বিশুদ্ধ পানি প্রবাহ, কৃষি, মৎস্য, জীববৈচিত্র্য, পরিবেশ ও জলপথ রক্ষা এবং সর্বোপরি বঙ্গোপসাগর উপকূলীয় অঞ্চলের তীব্র লবণাক্ততার আগ্রাসন রুখতে গড়াই ব্যতীত কোনো কিছুই আর ফলপ্রসূ হচ্ছে না। গড়াই আংশিক শুকিয়ে যাওয়ায় এ অঞ্চল জুড়ে প্রতি বছরই শুষ্ক মৌসুমে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তরে তীব্র সংকট দেখা দিচ্ছে।

গড়াই নদীর ওপর অবস্থিত সৈয়দ মাছ-উদ রুমী সেতু ও গড়াই ব্রিজের নিচে ড্রেজিং করার ফলে কিছুটা পানি প্রবাহ থাকলেও অধিকাংশ পিলার ধূধূ বালির ওপর রয়েছে। সাধারণ মানুষ এই গড়াই নদীর অনেক স্থান দিয়ে হেঁটে পার হচ্ছে।

কুষ্টিয়া পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, নদীগুলোর নাব্যতা না থাকার পাশাপাশি পানির স্তর বিগত বছরগুলোর তুলনায় ২৫ থেকে ৩০ ফিট নেমে যাওয়ায় হস্তচালিত নলকূপে পানি উঠছে না।

পানির স্তর এভাবে কমে যাওয়ার জন্য যত্রতত্র গভীর নলকূপ ব্যবহারকে দায়ী করছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর। তারা বলছে, শুষ্ক মৌসুমে পানির স্তর নিচে নামার সঙ্গে সঙ্গে নদীর পানিও শুকিয়ে যায়। সেক্ষেত্রে যেসব নলকূপের লেয়ার কম দেওয়া, সেসব নলকূপে পানি না ওঠারই কথা। সেক্ষেত্রে নতুন নলকূপ স্থাপনের ক্ষেত্রে পরিকল্পনা মাফিক আরও গভীরে লেয়ার দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

গড়াই নদীর উৎসমুখ সংলগ্ন সদর উপজেলার ১নং হরিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম মুশতাক হোসেন মাসুদ বলেন, গড়াই নদীকে স্থায়ী খননের মাধ্যমে এর পূর্বের পানি প্রবাহ নিয়ে আসলে শুধু কুষ্টিয়া না পুরো দক্ষিণাঞ্চলের ১০ জেলার মানুষ, কৃষি, সুন্দরবণ উপকৃত হবে।

পরিবেশ কর্মী গৌতম কুমার রায় বলেন, গড়াই নদী পুনরুদ্ধার প্রকল্প এলাকায় বসবাসরত নানা শ্রেণী-পেশার জনগোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে নদী খননের উদ্যোগ পুর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হলে মুলত এ গড়াই নদী স্থায়ী ভাবে ফিরে পেতে পারে তার হারিয়ে যাওয়া প্রবহমান যৌবন।

কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সুফি মোঃ রফিকুজ্জামান জানান, গড়াই নদীকে কেন্দ্র করে কুষ্টিয়ার তিনটি উপজেলায় প্রায় ১ হাজার হেক্টর এর সেচের আওতাভুক্ত। যেহেতু কুষ্টিয়া এলাকাটি জিকে সেচ এলাকা। সে জন্য এখানকার কৃষকরা খালের পানির ওপরই বেশি নির্ভর। তার পরেও একেবারে নদী তীরবর্তী এলাকার কৃষক ও কৃষি কাজে জড়িত বেশ কিছু মানুষ প্রতি বছর ১ হাজার হেক্টর জমিতে ধান, ভুট্রাসহ নানা রকম ডাল চাষ করে থাকে। গড়াই শুকিয়ে যাওয়ায় আবাসিক এলাকায় টিউবওয়েলে পানি উঠছেই না গত প্রায় দুই মাস ধরে। তাপমাত্রাও বৃদ্ধি পেয়েছে। কুষ্টিয়া এলাকায় আগে শুনেছি ৩০ থেকে ৩৫ এর উপরে তাপমাত্রা উঠেনি এ বছর ৪২ দশমিক ৫ ডিগ্রী তাপমাত্রা উঠেছে। এর কারণ হিসেবে তিনি জানান, গড়াই নদী শুকিয়ে যাওয়া। গড়াইতে যদি পর্যাপ্ত পানি থাকতো তা হলে তাপমাত্রা এত উঠতো না।


অপরদিকে গড়াইকে কেন্দ্র করে যে কৃষি কাজ চলতো তাও হুমকিতে পড়েছে। অনেকে পানির আশায় চাষ করেছিল পরে রোদে পুড়ে পানির অভাবে নষ্ট হয়ে যায় ফসল। তিনি গড়াই নদীকে সারা বছর পানি প্রবাহ ধরে রাখার পরামর্শ দিয়ে জানান, কৃষি, জীববৈচিত্র্য রক্ষা, সুন্দরবনকে রক্ষা, দেশি প্রজাতির মাছ উৎপাদনসহ বিবিধ সুফল পেতে হলে গড়াই নদীকে সারা বছরই পানি প্রবাহ স্বাভাবিক রাখা জরুরি।

তবে নদীতে জাল দিয়ে মাছ ধরা, বাঁধ দিয়ে মাছের পোনা উৎপাদন এ সব কিছুই তিনি জানেন না বলে জানান। যদি হয়ে থাকে তা হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান তিনি।

অপরদিকে হঠাৎ করে চলতি বছর গত ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে সর্বশেষ জিকে তিনটি পাম্প এক সাথে নষ্ট হওয়ায় বন্ধ হয়ে যায়। তাতে কুষ্টিয়া সদর ও মিরপুর এবং চুয়াডাঙ্গা সদর ও আলমডাঙ্গাসহ এ চার উপজেলার কৃষকেরা চরম দুর্ভোগে পড়েন।

সেচপ্রকল্পের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, পাম্প চালুর জন্য সেচ প্রকল্পের ইনটেক চ্যানেলে কমপক্ষে ১৪ ফুট উচ্চতায় পানি থাকা প্রয়োজন। কিন্ত পদ্মা নদীর পানি কমে যাওয়ায় ইনটেক চ্যানেলে পানির স্তর এখন মাত্র ১১ ফুট ফলে পাম্প চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।

গড়াই নদীকে স্থায়ী খনন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সারা বছর স্বাভাবিক নাব্যতা ফিরিয়ে আনা এবং জিকে পাম্প তিনটিকেই সচল রাখা হলে কুষ্টিয়া এলাকায় কৃষি কাজে দুর্ভোগ কমবে। পানির স্তর ফিরে আসবে রক্ষা পাবে এ অঞ্চলের জীব ও বৈচিত্র্য লবণাক্ততামুক্ত হবে আমাদের সুন্দরবন।

   

সিলেটে পানি বন্দি মানুষের মাঝে পুলিশের ঈদ উপহার বিতরণ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, সিলেট
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে সিলেট জেলা পুলিশের উদ্যোগে পানি বন্দি মানুষের মাঝে ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

রোববার (১৬জুন) দুপুর ২টা থেকে বিকেল পর্যন্ত গোয়াইনঘাট থানাধীন বিভিন্ন এলাকায় বন্যার্ত মানুষের মাঝে এই ঈদ উপহার বিতরণ করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট জেলা পুলিশ সহকারী পুলিশ সুপার ও মিডিয়া ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা সম্রাট তালুকদার।

তিনি জানান, সাম্প্রতিক সময়ে অতিবৃষ্টির কারণে সিলেট জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় ব্যাপক বন্যার সৃষ্টি হয়। বন্যা কবলিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে সিলেট জেলা পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি আরও জানান, পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন'র দিক- নির্দেশনায় গোয়াইনঘাট থানা পুলিশের ব্যবস্থাপনায় ১নং রুস্তুমপুর ইউনিয়ন ও ১৩ নং বিছনাকান্দি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের ২০০ শত পানিবন্দি অসহায় পরিবারের মানুষের মাঝে ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়।

উপহার হিসেবে চাল, ডাল, পেয়াজ, তেল, আলু এবং বিস্কুটসহ শুকনো খাবার সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়।

;

২৪ ঘণ্টায় কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণের ঘোষণা কুসিক মেয়রের



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনে (কুসিক) ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোরবানি পশুর সব ধরনের বর্জ্য অপসারণ করা হবে বলে জানিয়েছেন মেয়র ডা.তাহসীন বাহার সূচনা। এছাড়া ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পশুর হাটের বর্জ্য পরিষ্কার করা হবে বলেও জানান তিনি।

রবিবার (১৬ জুন) সন্ধ্যায় বার্তা২৪.কম-কে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন মেয়র সূচনা।

মেয়র সূচনা বলেন, সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিরা টানা ৩-৪ দিন কাজ করেন। তাই কুমিল্লাবাসী ঈদের দুই দিনের মধ্যে কোরবানি শেষ করলে ভালো হয়।

মেয়র আরও বলেন, ঈদের দিন কোরবানির বর্জ্য অপসারণের জন্য সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে স্থায়ী ও আউটসোর্সিং মিলে প্রায় ৪ শতাধিক শ্রমিক কাজ করবে। ২৪ ঘন্টার মধ্যে বর্জ্য সরিয়ে নেওয়ার জন্য ৩৮ টি গাড়ী থাকবে। অন্যদিকে নগরীর ২৭ টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের মাধ্যমে ২৪ হাজার ব্যাগ বিতরণ করা হয়েছে। ফলে নগরবাসী তাদের কোরবানির বর্জ্য দ্রুত অপসারণ করতে পারবেন।

সি‌টি মেয়র আ‌রও বলেন, ঈ‌দের দিন দুপুর ৩ টা থেকে প্রতি ওয়ার্ড ভিত্তিক বর্জ্য পরিষ্কারের জন্য গাড়ি যাবে ।গাড়ির নাম্বার, চালক এবং সহযোগীদের নাম ও ফোন নাম্বার ইতিমধ্যেই নির্বাচিত কাউন্সিলরদের সচিবের কাছে পাঠানো হয়েছে । তারপরও যদি সন্ধ্যার মধ্যে কোন বর্জ্য অপসারন না হয়। সেক্ষেত্রে একটি হটলাইন নাম্বার দেয়া হয়েছে। আমি আশা করছি, নগরবাসী সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ ভাবে ঈদুল আজহা উদযাপন করবে।

;

ময়মনসিংহে নিখোঁজের ৩ দিন পর নারীর মরদেহ উদ্ধার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহে সদর উপজেলায় নিখোঁজের তিন দিন পর মিনারা আক্তার (৩৫) নামে এক বিবস্ত্র মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত মিনারা জেলার ত্রিশাল উপজেলার ধলা এলাকার আনিসুর রহমানের স্ত্রী ও জেলা ফুলবাড়িয়ার রাধাকানাই ইউনিয়নের রমজান আলীর মেয়ে।

রবিবার (১৬ জুলাই) দুপুরের সদর উপজেলার চুরখাই এলাকার আব্দুল লতিফের বাসা থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

কোতোয়ালী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওয়াসিম কুমার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ জানায়, দুপুরের দিকে উপজেলার চুরখাই আব্দুল লতিফের বাসা থেকে দুর্গন্ধ পেয়ে থানায় খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ওই বাড়িতে গিয়ে একটি ঘরের ভিতর খাটের উপর থেকে লেপ দিয়ে প্যাচানো বিবস্ত্র ও গলিত মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেে মর্গে পাঠানো হয়। বাড়ির মালিক আব্দুল লতিফ ওই বাড়িতে বসবাস করে না। তবে, তার ছেলে রাজিব এই বাড়িতে বসবাস করতেন। ঘটনার পর থেকে রাজিব পলাতক রয়েছে।

নিহতের স্বামী আনিসুর রহমান বলেন, গত শুক্রবার সকাল ৮ টায় আমার স্ত্রী তার বাবার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়। যাওয়ার সময় আমার মোবাইলটি সাথে করে নিয়ে যায়। এরপর ওই দিন বেলা ১১ টা থেকে মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায় এবং তখন থেকে সে নিখোঁজ ছিল। পরে তাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার কোন সন্ধ্যান মেলেনি। দুপুরে খবর পাই যে, চুরখাই এলাকায় এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এমন খবরে মর্গে এসে মরদেহ শনাক্ত করি।

তিনি আরও বলেন, ২০১৮ সালে মিনারাকে দ্বিতীয় বিয়ে করি। তবে, এই স্ত্রীর ঘরে কোন সন্তান ছিল না। আমার স্ত্রীর ঘরে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। দুই স্ত্রী এক বাড়িতেই থাকত। তবে, সংসার আলাদা ছিল। এমন ঘটনা কি কারণে তা আমার জানা নেই।

এসআই ওয়াসিম কুমার বলেন, মরদেহ উদ্ধারের পর ত্রিশালের আনিসুর রহমান নামে একজন ওই নারীকে তার স্ত্রী বলে দাবি করছেন। তবে, ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংগ্রহ করে পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করছি। ধারণা করা হচ্ছে, তিন চারদিন আগে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনায় সাথে বাসার মালিকের ছেলে রাজিবকে সন্দেহ করা হচ্ছে। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে বলেও জানান তিনি।

;

ফেনীতে আধুনিক তাঁবুতে হবে ঈদের জামাত, ৫ ঘন্টায় বর্জ্য অপসারণ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাত পোহালেই পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদের প্রধান জামাতের জন্য প্রস্তুত হয়েছে ফেনীর ঐতিহাসিক মিজান ময়দান। ফেনী পৌরসভার উদ্যোগে মুসল্লিদের জন্য নানা সুযোগ-সুবিধাসহ সার্বিক নিরাপত্তা ও আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে এ ময়দানকে। মিজান ময়দানে বসানো হয়েছে তাপ ও পানি নিরোধক আধুনিক তাঁবু। এ ময়দানে সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে জেলার প্রধান ঈদ জামাত।

এদিকে ঈদের দিন পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে কোরবানির বর্জ্য অপসারণের ঘোষণা দিয়েছেন ফেনী পৌরসভার মেয়র মোঃ নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী। এ ছাড়া ফেনী পৌরসভার ১৮টি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের জন্য ৪০ হাজার কোরবানির বর্জ্য অপসারণের ব্যাগ দেয়ার পাশাপাশি পশু কোরবানির স্থানও নির্ধারণ করে দিয়েছে পৌরসভা। বর্জ্য অপসারণের কাজে নিয়োজিত পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

ঈদের প্রধান ঈদ ময়দান ও বর্জ্য অপসারণের বিষয় তদারকি করে মিজান ময়দান পরিদর্শন করেছেন ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, জেলাপ্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার ও পুলিশ সুপার জাকির হাসান। এসময় তারা ফেনীবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বর্জ্য অপসারণে পৌরসভাকে সহযোগিতা করার আহবান জানান।

পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, স্বাচ্ছন্দ্যে ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য ঈদগাহে পাঁচ শতাধিক বৈদ্যুতিক ফ্যান লাগানো হয়েছে। ঈদকে আনন্দময় করে তুলতে দুই দিন ধরে আলোকসজ্জার পাশাপাশি মুসুল্লিদের জন্য খেজুর ও খাবার পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। ময়দান প্রস্তুতির কাজ করছে আপন ইভেন্টস নামে অনুষ্ঠান ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান।

একই সূত্র জানায়, পৌরসভার নির্ধারিত ১০৯টি স্থানে পশু জবাই করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে মাইকিংও করা হয়েছে। ওয়ার্ড কাউন্সিলরের মাধ্যমে প্রতিটি ওয়ার্ডের জন্য দুই হাজার ব্যাগ দেওয়া হয়েছে। শহরের ১৮টি ওয়ার্ডে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করতে ১২টি দল গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি দলের জন্য একজন সুপারভাইজার ও একটি করে ট্রাক্টর দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া একটি ভ্রাম্যমাণ দল ও পানির গাড়ি নিয়োজিত থাকবে। স্যানিটারি ইন্সপেক্টররা এসব দলের কাজ তদারকি করবেন।

ফেনী পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী বলেন, ঈদের দিন বৃষ্টির পূর্বাভাসের বিষয়টি মাথায় রেখেই দ্বিতীয়বারের মতো জেলা পর্যায়ে এ তাঁবুটি স্থাপন করা হয়েছে। ঈদ জামাতের জন্য আমাদের প্রস্তুতি শেষ। মুসল্লিরা সুন্দর পরিবেশে নির্বিঘ্নে নামাজ আদায় করতে পারবে।

বর্জ্য অপসারণের বিষয়ে তিনি বলেন, পৌরবাসীর সহযোগিতায় গত বছর কোরবানির ছয় ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। এ বছর কোরবানির বর্জ্য পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণের জন্য পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঈদের দিন বেলা একটা থেকে প্রায় দুই শতাধিক কর্মী ১২টি দলে ভাগ হয়ে মাঠে কাজ করবেন।

তিনি বলেন, সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যেই সব বর্জ্য অপসারিত হবে। কর্মীদের মধ্যে যে দল যথাযথ দায়িত্ব পালন করবে, তাদের পুরস্কৃত করা হবে। শুধু শহরের প্রধান সড়ক নয়, অলিগলি থেকেও বর্জ্য অপসারণ করে পানি ও ব্লিচিং পাউডার ছিটানো হবে বলে জানান তিনি। এছাড়াও প্রতিটি পাড়া মহল্লায় পৌরসভা থেকে ব্যাগ দেয়া হয়েছে, বর্জ্যগুলো ব্যাগে রাখলে পৌরসভার কর্মীরা গিয়ে নিয়ে আসবে।

এদিকে ফেনী ইসলামিক ফাউন্ডেশন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, অন্যান্য জামাতের মধ্যে ফেনী কেন্দ্রীয় বড় জামে মসজিদে সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে, জহিরিয়া জামে মসজিদে ৭টা, সার্কিট হাউস জামে মসজিদ, মহিপাল চৌধুরী বাড়ি জামে মসজিদ, শান্তি কোম্পানি জামে মসজিদ, পুরাতন রেজিস্ট্রি অফিস জামে মসজিদ, ফেনী রেলওয়ে স্টেশন জামে মসজিদ, উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদ, হাজারীপাড়া জামে মসজিদ, বিরিঞ্চি কেন্দ্রীয় ছুফিয়া ঈদগাহ, মমিন জাহান জামে মসজিদ, মুন্সিবাড়ি জামে মসজিদ, জেলা কারাগার জামে মসজিদে সাড়ে ৭টা, তাকিয়া বাড়ি মসজিদ, লমি হাজারী বাড়ি জামে মসজিদ, দক্ষিণ চাঁড়িপুর ঈদগাহ, মধ্য চাঁড়িপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ ঈদগাহে ৮টা, জিএ একাডেমি ঈদগাহ ও পুলিশ লাইনস জামে মসজিদে সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

ফেনী ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক মীর মোহাম্মদ নেয়ামত উল্ল্যাহ বলেন, জেলার প্রধান ঈদ জামাত ঐতিহাসিক মিজান ময়দানে সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে জামাতের জন্য

;