চট্টগ্রামের আলোচিত সন্ত্রাসী সাইফুল বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড বগা গ্রেফতার



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার আলোচিত সন্ত্রাসী সাইফুল বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ডখ্যাত দেলোয়ার হোসেন ওরফে বগাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দিবাগত রাতে উপজেলার পশ্চিম আমিলাইশ এলাকা থেকে এই সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করা হয়।

বগার বিরুদ্ধে সাতকানিয়ার কাঞ্চনা গ্রামে ডাকাতি করতে গিয়ে শিশু হত্যা, অপহরণ, ইয়াবা, ছিনতাই, ডাকাতি ও সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনের সময় সাতকানিয়ার সাবেক এমপির স্ত্রী-শ্যালকের ওপর হামলাসহ কমপক্ষে ১০টি মামলা রয়েছে।

বগাকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রিটন সরকার। তিনি বলেন, ইয়াবা মামলায় বগাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে সাতকানিয়া ও বাকলিয়া থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

৩ মাসে বগার নেতৃত্বে ২২ হামলা:

৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই প্রতিপক্ষের ওপর হামলা চালিয়েছে সাইফুল বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড বগা। গত তিনমাসে সাতকানিয়ার চরতি-আমিলাইশ এলাকায় অন্তত ২২টি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে এই সাইফুল বাহিনী। এরমধ্যে কমপক্ষে ১০টি ঘটনায় থানায় অভিযোগ জমা পড়েছে এই বাহিনীর বিরুদ্ধে। বাকিরা ভয়ে মুখ খোলেননি।

নতুন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর উপজেলার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বদলে যেতেই নির্বাচনের দিন সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় সাইফুল বাহিনীর অত্যাচার। দক্ষিণ চরতিতে নৌকার সমর্থকদের বাড়ি-ঘর ও দোকানে হামলা ও লুটপাট চালায় সাইফুল বাহিনী। এ সময় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য ইলিয়াছ শাহীনের ফার্মাসি ও কৃষক লীগ নেতা ফারুকের বাড়ি ও ডেকোরেশনের দোকানে লুটপাট ও ভাঙচুর চালানো হয়।

নির্বাচনের পরের দিন সোমবার খতিরহাট এলাকায় নৌকা সমর্থক জিল্লুর রহমানকেও মারধর করে সাইফুল বাহিনী। নির্বাচনের আগের দিন শনিবার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার নুরুল আমিন কে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দেয় সন্ত্রাসী সাইফুলের বড় ভাই জসিম উদ্দিন।

এছাড়া নির্বাচনের পর ৫ ফেব্রুয়ারি চরতি ইউনিয়ন পরিষদ কার্য়ালয়ে ঢুকে বর্তমান চেয়ারম্যান রুহুল্লাহ চৌধুরীকে মারধর করে সাইফুল বাহিনী। পরে দক্ষিণ চরতি এলাকার ডিশ ব্যবসায়ী নুর মোহাম্মদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাকে পরিবারসহ বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে সাইফুল বাহিনী। নির্বাচনের পর থেকে এখনো ঘর ছাড়া নুর মোহাম্মদের পরিবার। চরতি ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি মাইনুদ্দিনকে অপহরণ করে মারধর দক্ষিণ চরতির আরাফাত সিকদারকে মারধর করে এই সাইফুল বাহিনী।

নির্বাচনের আগে ২১ ডিসেম্বর দক্ষিণ চরতি কাটাখালী ব্রিজের পাশে নৌকার পথ সভায় অস্ত্র ও লাঠি-সোটা নিয়ে হামলা চালায় সাইফুল ও তার বাহিনী। এই সময় নৌকা সমর্থক চরতী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রুহুল্লাহ চৌধুরী, সাতকানিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান, মিছদাকুল বেসারত চৌধুরী, মোহাম্মদ রফিক, রবিউল ইসলাম ও মোহাম্মদ ফয়সালসহ কমপক্ষে ৮-১০ জন আহত হন।

এর দুইদিন আগে ১৯ ডিসেম্বরও নৌকার পথসভা শেষে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য ইলিয়াছ শাহীনকে মারধর করে সাইফুল বাহিনী। ওইদিনও ইলিয়াছ শাহীনের ফার্মাসি ও কৃষক লীগ নেতা ফারুককে বাড়ি-দোকানে হামলার ঘটনা ঘটে। নির্বাচনের আগে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি নুর হোসেন কেও মারধর করে সাইফুল। এলাকাবাসীর অভিযোগ, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে এমন কোনো দিন নেই যে- সন্ত্রাসী সাইফুল ও তার বাহিনী দ্বারা এলাকার মানুষের উপর হামলার ঘটনা ঘটছে।

এলাকাবাসী জানিয়েছেন, সন্ত্রাসী সাইফুল কোনো পদ পদবিতে না থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের পরিচয়ে এলাকায় সন্ত্রাসী কার্য়াক্রম চালিয়ে আসছেন। এতদিন পর্যন্ত সাবেক এমপি আবু রেজা মোহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীর অনুসারী হিসেবে এলাকায় তার পরিচিতি ছিল। গত বছর প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচনকে ঘিরে ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল্লাহ চৌধুরীর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হলে তখন থেকে এম এ মোতালেবের দিকে ভিড়েন সাইফুল মেম্বার। মোতালেব দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিলে তারপর থেকে আরো হিংস্র হয়ে উঠেন তিনি।

এর আগে ২০১৮ সালে সন্ত্রাসী সাইফুল বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ভিটে-মাটি ছেড়ে যায় দক্ষিণ চরতির ১০ পরিবার। নারী ও শিশুসহ এসব পরিবারের প্রায় অর্ধ শতাধিক লোকজন দীর্ঘ এক বছর নিজেদের ভিটে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ হওয়ার পর উদ্ভাস্তুর মতো দিনযাপন করে। বাড়ি-ভিটে ফিরে পেতে ২০১৯ সালের ২৭ এপ্রিল চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনও করেন উদ্ভাস্তু পরিবারসহ এলাকার বিক্ষুব্ধ লোকজন।

সাইফুল বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ডার হিসেবে এসব মারধর ও হামলার ঘটনায় নেতৃত্ব দিচ্ছে ইয়াবা ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন (বগা)। ইতোমধ্যে দুই-তিন বার জেলেও গিয়েছে এই ইয়াবা ব্যবসায়ী। সাতকানিয়ার পশ্চিম অঞ্চল (চরতি, আমিলাইশ, কাঞ্চনা, এওচিয়া ও নলুয়া) সহ চন্দনাইশের বৈলতলী, আনোয়ারার হাইলধর ও বাঁশখালীর পুকুরিয়া অঞ্চলের অস্ত্র ও ইয়াবা ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করে সাইফুল ও তার বাহিনী। এছাড়া রয়েছে খাল ও সাঙ্গু নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন ও পাহাড় কেটে মাটি ব্যবসা।

সাইফুল বাহিনীর অন্য সদস্যদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রিটন সরকার।

 

   

সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধানের কাজ চলছে: বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছেন, সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধানের কাজ চলছে ৷ গ্যাস পাওয়া গেলে তা সাত থেকে আট বছর পর উত্তোলন করা যাবে।

মঙ্গলবার (৭ মে) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য (এমপি) আহম্মেদ হোসেনের এক সম্পূরক প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী এ সব কথা জানান।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০১৬-২০১৭ সালে আমরা গভীর সমুদ্রে খনিজ সম্পদ বা গ্যাস আহরণের মাল্টিপ্লান সার্ভে করার জন্য প্রস্তুতি শুরু করি। তার মধ্যে বিশেষ করে গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য আমরা মাল্টিপ্লান সার্ভে করার জন্য প্রস্তুতি নেই। তার আগে আমরা মিয়ানমারের বর্ডারের সঙ্গে তিনটি ব্লক দুটি কোম্পানিকে দিয়েছিলাম। তারা এখানে সার্ভে করার যে পরিমাণ গ্যাস তারা পাবে বলে মনে করেছিল তা ভিজিবল হয়নি, তারা দেখতে পায় কম গ্যাস আছে সেখানে, তারা সরে যায়। ইতোমধ্যে মাল্টিপ্লান সার্ভে শেষ হয়েছে, আমরা টু ডি সার্ভের রেজাল্ট পেয়ে গেছি। ইতোমধ্যে আমরা গভীর সমুদ্রবন্দরে চলে গেছি। প্রায় ১৭টি কোম্পানি ইচ্ছে প্রকাশ করেছে এতে বৃহৎ কোম্পানি শেভরনসহ আরও বেশ কয়েকটি বড় কোম্পানি রয়েছে। তারা বিট করার জন্য টুডি সার্ভের রেজাল্ট নিয়েছে। বুধবার থেকে তাদের সঙ্গে আমাদের মিটিং আছে। বিডিং শেষ হবে সেপ্টেম্বরে।

তিনি বলেন, আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে আমরা কোম্পানিগুলোকে থ্রিডি সার্ভের জন্য বিভিন্ন ব্লকে নিয়োগ দেবো। প্রায় ২০ থেকে ৩০ মিলিয়ন ডলার ইনভেস্টমেন্ট করার পর যদি গ্যাস বা তেল থাকে ৭-৮ বছর পর তাহলে সে গ্যাস বা তেল উত্তোলন করতে পারবো।

বর্তমানে দেশে বিদ্যুতের চাহিদার চেয়েও উৎপাদন ক্ষমতা বেশি জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে বিদ্যুতের চাহিদার চেয়েও উৎপাদন ক্ষমতা বেশি। সরকার ২০০৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে তাৎক্ষণিক, স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করে নিবিড় তদারকির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। জানুয়ারি ২০০৯ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ২৬ হাজার ২৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। ফলে বিদ্যুতের স্থাপিত ক্ষমতা ক্যাপটিভসহ ৩০ হাজার ২৭৭ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে।

নসরুল হামিদ বলেন, চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতায় ঘাটতি না থাকলেও কভিড-১৯ মহামারি পরবর্তীতে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ও বৈশ্বিক জ্বালানি সংকটের কারণে পরিপূর্ণ সক্ষমতায় বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না। এর ফলে কিছু কিছু স্থানে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে সাময়িক অসুবিধা হচ্ছে। এ ছাড়া অত্যধিক গরম ও দেশের কোথাও কোথাও দাবদাহ থাকার কারণে বিদ্যুতের চাহিদা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় উৎপাদন বৃদ্ধির ওপরও জোর দেওয়া হচ্ছে। আমরা আশা করছি, অচিরেই সবাইকে নিরবচ্ছিন্ন ও মানসম্মত বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে দিতে সক্ষম হব।

;

রাত পোহালেই ভোট রংপুরের পীরগাছা ও কাউনিয়া উপজেলায়



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাত পোহালেই রংপুরের পীরগাছা ও কাউনিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট। এর মধ্যে কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে গেছে নির্বাচনী সরঞ্জাম।

মঙ্গলবার (৭ মে) বিকেলে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ব্যালট পেপার বাদে সকল সরঞ্জাম পাঠানো হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পীরগাছা উপজেলা নির্বাচনে তিনটি পদে লড়াইয়ে মাঠে রয়েছেন ১৪ প্রার্থী। এর মধ্যে ১০ জনই আওয়ামী লীগের। তিনজন জাতীয় পার্টির ও একজন বিএনপির।

চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তছলিম উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ মিলন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মনোয়ারুল ইসলাম মাসুদ এবং উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান আবু নাছের শাহ মো. মাহবুবার রহমান।

ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. শারেখ খন্দকার জয় ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাফর ইকবাল, উপজেলা জাতীয় ছাত্র সমাজের সাবেক উপজেলা যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রহিম ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফরহাদ হোসেন অনু।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের শারমীন আখতার, ইসরাত জাহান, জরিনা বেগম, তানজিনা আফরোজ ও মাহমুদা খাতুন এবং জাতীয় পার্টির প্রার্থী রেহেনা বেগম।

কাউনিয়ায় উপজেলা চেয়ারম্যান পদে মাঠে থাকা তিনজনের মধ্যে দুজনই আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী। একজন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম মায়া। অপরজন জেলা পরিষদের সদস্য ও ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক।

এই উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬ জনের মধ্যে মাহমুদুল হাসান পিন্টু কাউনিয়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম-সম্পাদক, মনজুদার রহমান মিলন জেলা কৃষকলীগের সদস্য, সুশান্ত সরকার উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং শফিকুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর কবির আওয়ামী লীগের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা। আরেকজন গনেশ কুমার বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মাঠে থাকা চারজনের মধ্যে সেলিনা খাতুন উপজেলা মহিলা লীগের সহ-সভাপতি, রওশন আরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক মহিলা বিষয়ক সম্পাদক এবং রাবেয়া বেগমও মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী। আর আঙ্গুরা খাতুন বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, পীরগাছা উপজেলায় তিনজন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটারসহ ২ লাখ ৮১ হাজার ৬৯৮ ভোটার ১১৩টি কেন্দ্রের ৭৬০টি কক্ষে ভোট দেবেন। এর মধ্যে ১ লাখ ৩৯ হাজার ১৬৭ পুরুষ ও ১ লাখ ৪২ হাজার ৫২৮ জন মহিলা ভোটার রয়েছেন।

কাউনিয়া উপজেলা একটি পৌরসভা ও ৬টি ইউনিয়নের ৬৩টি ওয়ার্ডের ৯৩টি ভোটকেন্দ্রের ৫১৭টি স্থায়ী এবং ১৮টি অস্থায়ী ভোটকেন্দ্রে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। দুইজন তৃতীয় লিঙ্গসহ এখানে ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৪০ হাজার ৫৪৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৫০৯ এবং মহিলা ১ লাখ ৪ হাজার ৩২ জন।

রংপুর সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল্যাহ্ আল মোতাহসিম জানান, শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণে বাড়তি নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে তার জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও র‌্যাব-পুলিশের পাশাপাশি, বিজিবি, আনসার ও ডিবি পুলিশ মোতায়েন থাকবে।

;

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শ্রমিকলীগ সভাপতি গ্রেফতার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শ্রমিকলীগ সভাপতি নাসির উদ্দিন দিদারকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।

মঙ্গলবার (৭ মে) রাত ১০টার দিকে মিরসরাইয়ে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। দিদারের বাড়ি মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ থানার ৩নং জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের পরাগলপুর গ্রামে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সন্ধ্যার পর দিদারের বাড়ি ঘেরাও করে পুলিশ। এ সময় তিনি পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। তবে শেষ পর্যন্ত পুলিশের জালে ধরা পড়েন তিনি।

গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন।

তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি নাসির উদ্দিন দিদারকে গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম গ্রেফতার করেছে। তার বিরুদ্ধে নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট (এনআই) অ্যাক্ট আইনে একটি মামলা ছিল। ওই মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিলো।’

জানা গেছে, চলতি বছরের ৪ এপ্রিল নাছির উদ্দিন দিদারের মালিকানাধীন আরশিনগর ফিউচার পার্কে এক ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। সেখানে তিনি মোনাজাত করেন। মোনাজাতের মধ্যে এলোমেলোভাবে একের পর এক নানা কথা বলা শুরু করেন। এক পর্যায়ে আমন্ত্রিত অতিথিরা তার দোয়া-মোনাজাত শুনে হাসি ধরে রাখতে পারেননি। মুহূর্তেই ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ক্ষোভ প্রকাশ করে নেটিজেনরা বিভিন্ন মন্তব্য করেন।

এর আগে, ২০২৩ সালের ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে গান-বাজনা বাজিয়ে দিবসটি পালন করে ভাইরাল হোন এই শ্রমিক লীগ নেতা। এছাড়া বিভিন্ন সময় ওয়াজ-মাহফিলে আপত্তিকর নানা বক্তব্য দিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মুখে পড়তে দেখা গেছে তাকে।

;

রাত পোহালেই টাঙ্গাইলের দুই উপজেলায় নির্বাচন: কে হাসবে শেষ হাসি



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, টাঙ্গাইল
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) এই দুই উপজেলা নিয়ে সংসদীয় আসন গঠিত। এ আসনের এমপি ড. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী। এই দুই উপজেলায় ড. আব্দুর রাজ্জাক চেয়ারম্যান পদে দুই জন প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছেন। তবে আওয়ামী লীগেরই অন্য নেতারা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়েছেন ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপির প্রার্থীরা। কে হাসবে শেষ হাসি এ নিয়ে চলছে ভোটারদের মাঝে হিসাব নিকাশ।

বুধবার (৮ মে) টাঙ্গাইলের এই দুই উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে। ইতোমধ্যে কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে গেছে নির্বাচনী সরঞ্জাম।

আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য দলের কেউ এই নির্বাচনে প্রার্থী হননি। মধুপুরে আওয়ামী লীগের তিন নেতা এবং ধনবাড়ীতে আওয়ামী লীগের পাঁচ নেতা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

মধুপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জানান, গত ১০ বছর ধরে এই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছরোয়ার আলম খান আবু। গত দুই মেয়াদেই স্থানীয় এমপি ড. আব্দুর রাজ্জাকের সমর্থন ছিল তাঁর দিকে। কিন্তু দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আবু টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন বলে ঘোষণা দেন। এ নিয়ে স্থানীয় এমপি ড. আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব সৃষ্টি হয়। মধুপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ ভাগ হয়ে যায়। একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। যদিও দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় আবু সংসদ নির্বাচনে আর প্রার্থী হননি। তবে তিনি এবারও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ দলের বড় একটি অংশের সমর্থন আছে আবুর দিকে।

ভোটার আরিয়ান আহমেদ কাকন বলেন, আমরা যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দিয়ে বিজয় করবো। যে উন্নয়ন করবে আমাদের পাশে থাকবে তাকেই আমরা ভোট দিব। আমরা সুষ্ঠ সুন্দর নির্বাচন চাই।

অন্যদিকে চেয়ারম্যান পদে স্থানীয় এমপি ড. আব্দুর রাজ্জাকের সমর্থন নিয়ে প্রার্থী হয়েছেন মধুপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও শোলাকুড়ী ইউনিয়ন পরিষদের পদত্যাগকারী চেয়ারম্যান ইয়াকুব আলী। এ ছাড়াও আব্দুর রাজ্জাকের অংশের অপর নেতা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মীর ফরহাদুল আলম চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। এই তিন প্রার্থীর দিকে ভাগ হয়ে গেছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।

মধুপুরের সাবেক এমপি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী ২৩ বছর পর গত শনিবার মধুপুরে যান। তিনি ছরোয়ার আলম খানের পক্ষে গণসংযোগে অংশ নেন।

এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান প্রার্থী ছরোয়ার আলম খান আবু জানান, দলের অধিকাংশ নেতা-কর্মী আমার পক্ষে আছে। মধুপুরে জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হলে আমি বিপুল ভোটে বিজয়ী হবো।

ড. আব্দুর রাজ্জাক সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ইয়াকুব আলী জানান, ছরোয়ার আলম খান আবু দীর্ঘদিন উপজেলা চেয়ারম্যান থেকেও জনগণের আশা আকাঙ্খা পূরণ করতে পারে নাই। মধুপুরের মানুষ পরিবর্তন চায়। নতুন চেয়ারম্যান চাই। তাই আমার পক্ষে দলীয় নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। আমি শতভাগ আশাবাদী বিপুল ভোটে এ উপজেলার মানুষ আমাকে বিজয়ী করবে।

একটি পৌরসভা ও ১১টি ইউনিয়ন নিয়ে মধুপুর উপজেলা গঠিত। এ উপজেলায় মোট ভোটার ২ লাখ ৫৫ হাজার ২১৮ জন। এ উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান চারজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

ধনবাড়ী উপজেলা-

ধনবাড়ীতে নির্বাচনী মাঠে পাঁচ প্রার্থী। ধনবাড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে এমপি ড. আব্দুর রাজ্জাক সমর্থন করেছেন ধনবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হারুনার রশিদ হীরাকে। হীরা ড. আব্দুর রাজ্জাকের খালাতো ভাই। ২০১৯ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে হীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান হলেও এবার আরও চারজন প্রার্থীর বিরুদ্ধে তাঁকে লড়াই করতে হচ্ছে।

তাঁরা হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মঞ্জুরুল ইসলাম তপন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ তালুকদার সবুজ, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মেহেদী হাসান রনি এবং সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা আজিজুল ইসলাম।

আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জানান, হারুনার রশিদ হীরা আব্দুর রাজ্জাকের খালাতো ভাই। অপর প্রার্থী মঞ্জুরুল ইসলাম তপন আব্দুর রাজ্জাকের মামাতো ভাই। এই উপজেলার নেতা-কর্মীরাও বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন।

ড. আব্দুর রাজ্জাক সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী হারুনার রশীদ হীরা বলেন, আমার পক্ষে দলীয় নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করছেন। মানুষ উন্নয়ন চাই। আমি চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় এ উপজেলায় অনেক উন্নয়ন করেছি। আবারও জনগণ আমাকে বিপুল ভোটে জয়লাভ করাবে।

নিজেকে সাবেক কৃষিমন্ত্রী ও বর্তমান এমপি ড. আব্দুর রাজ্জাকের সাথে আমার রক্তের কোন সম্পর্ক নেই। সে আমার মামাতো ভাই না বলে দাবি করেছেন অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী খন্দকার মঞ্জুরুল ইসলাম তপন। তিনি বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ বর্তমানে ভালই আছে। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হলে আমি বিপুল ভোটে বিজয়ী হবো।

একটি পৌরসভা ও সাতটি ইউনিয়ন নিয়ে ধনবাড়ী উপজেলা গঠিত। এ উপজেলায় মোট ভোটার ১ লাখ ৬২ হাজার ৫৫৮ জন। এ উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এ ব্যাপারে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মতিয়ূর রহমান জানান, অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। কেউ কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা করার চেষ্টা করলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ইতো মধ্যে বিভিন্ন কেন্দ্রে কেন্দ্র নির্বাচনের সরঞ্জাম পৌঁছে গেছে।

;