তালপাতার পাখায় ঘোরে সংসারের চাকা



মাহবুবা পারভীন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বগুড়া
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

গ্রামে প্রবেশ করতেই দেখা মেলে আঁকাবাঁকা রাস্তার দুই পাশ দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সারি সারি তালগাছ। এই গ্রামে প্রবেশ করে তালগাছগুলি দেখে মনে পড়ে যায় রবিঠাকুরের সেই ছড়া-

‘তালগাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে সব গাছ ছাড়িয়ে উঁকি মারে আকাশে…’

বলছি, বগুড়ার কাহালু উপজেলার আড়োলা গ্রামের কথা। বর্তমানে সেই গ্রামটি ‘তালপাখার গ্রাম’ নামে পরিচিত। এই গ্রামে প্রবেশ করতেই দেখা যায়, সবাই তালপাতা দিয়ে পাখা বানানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

গরমে তালপাতার পাখার বাতাসে শরীর জুড়িয়ে যায়। বগুড়ার কাহালু উপজেলার পাইকড় ইউনিয়নের পাশাপাশি দুটি গ্রাম। একটির নাম যোগীরভবন। অপরটি আড়োলা আতালপাড়া। ইতোমধ্যে, গ্রাম দুটি ‘পাখার গ্রাম’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

পাখার গ্রাম যোগীরভবন, আড়োলা, আতাইল পাড়া, ছবি- বার্তা২৪.কম

সম্প্রতি, গিয়ে দেখা যায়, দুটি গ্রামের একেক পাড়ায় একেক ধরনের পাখা তৈরি হয়। যোগীরভবন গ্রামে তৈরি হয়, ‘হাতলপাখা’ বা ‘ডাঁটপাখা’। আর আড়োলা আতালপাড়ায় তৈরি হয়, ‘ঘোরানো পাখা’ বা ‘ঘুন্নী পাখা’ আর ‘পকেট পাখা’।

পাখা তৈরির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন দুটি গ্রামের সব নারী। শীতের শেষে বসন্তকালে অর্থাৎ ফাল্গুন মাস থেকে পাখা তৈরির কাজ শুরু হয়।

গ্রামে প্রবেশ করেই চোখে পড়ে বাড়ির উঠানে রং-তুলির আঁচড়ে ঘোরানো পাখা রাঙিয়ে তুলছেন সখিনা বেগম। রঙিন ঘোরানো পাখা বাঁধাই করছেন গোলজার। বাঁধাই হয়ে গেলে পাখাটি বিক্রি করবেন তিনি।

তৈরি হবে ২০ লাখ তালপাখা
বাড়ির উঠানে বসে ‘তালপাখা’ বাঁধাইয়ের কাজে ব্যস্ত কুলসুম বেগম। তালপাতার তৈরি হাতপাখার গ্রামে এবার ২০ লাখ পাখা বিক্রির প্রস্তুতি চলছে। এই পাখা চৈত্র মাস থেকে ভাদ্র মাস পর্যন্ত বিক্রি হবে।

গ্রামের নারী, পুরুষ, শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধরা অবসর সময়ে তালপাখা তৈরির কাজ করেন। বংশ পরম্পরায় গ্রামের মানুষ ‘তালপাখা’ তৈরির কাজ করে আসছেন বলে জানান গ্রামের বাসিন্দারা। গরমে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে দিন দিন বাড়ছে পাখার চাহিদা। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পাখা তৈরি কাজের পরিধিও।

তালপাখা তৈরিতে সময় পার করছেন গ্রামের নারীরা, ছবি- বার্তা২৪.কম

আড়োলা গ্রামের খোন্দকার জানান, দাদার আমল থেকে তারা তালের পাতা দিয়ে হাতপাখা তৈরির কাজ করে আসছেন। কৃষি কাজের পাশাপাশি তালপাখা তৈরির কাজ করেন তিনি। তার স্ত্রীও সংসারের কাজের ফাঁকে রঙের আঁচড় দিয়ে তালপাখার সৌন্দর্য বৃদ্ধির কাজ করে থাকেন।

আকরাম আকন্দ জানান, গত বছর তিনি পাখা বিক্রি করে সংসার খরচ বাদেই এক লাখ টাকা সঞ্চয় করেছেন। তার মতে, গত বছর তিন গ্রাম থেকে ১৫ লাখ তালপাখা বিক্রি হয়েছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। এবার চাহিদা বেড়ে গ্রাম থেকে ২০ লাখ পাখা তৈরি করে তা বিক্রি করা হবে।

তৈরি হয় পকেট পাখা, ঘুরানী পাখা, ডাগুর পাখা
তালগাছের পাতা (স্থানীয় ভাষায় তালের ডাগুর) দিয়ে তিন ধরনের পাখা তৈরি হয়। স্থানীয়ভাবে এর নাম দেওয়া হয়েছে- পকেট পাখা, ঘুরানী পাখা এবং ডাগুর পাখা।

পাখা তৈরি করতে তালের পাতা ছাড়াও বাঁশ, সুতা এবং জিআই তার প্রয়োজন পড়ে। তৈরি হয়ে যাওয়ার পর বিভিন্ন রঙের আঁচড় দিয়ে সৌন্দর্য বাড়াতে ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন রঙ। ১০ টাকায় কেনা তালগাছের একটি পাতা বা ডাগুড় দিয়ে তৈরি হয়, বড় পাখা বা ডাগুর পাখা ২টি, ঘুরানী পাখা ৪টি এবং পকেট পাখা ৬টি।

তালপাতা সংগ্রহ, পাখা তৈরি ও রঙের আঁচড়
বছরের আশ্বিন মাস থেকে শুরু হয় বাঁশ এবং তালপাতা সংগ্রহের কাজ। এরপর বাঁশ ছোট ছোট আকারে কাটতে হয়। তালপাতাও কেটে পাখা তৈরির উপযোগী করা হয়। ফাল্গুন মাস পর্যন্ত চলে পাখা তৈরির কাজ।

চৈত্র মাসের শুরু থেকে পাখার সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য বাহারি রঙ লাগানো হয়। এটি শেষ হয়ে গেলে তা বিক্রয় উপযোগী হয়।

দেশের ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, রংপুর, সৈয়দপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারি থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যাপারীরা আসেন তালপাখা কিনতে।

এ বিষয়ে যোগীর ভবন গ্রামের মামুনুর রশিদ জানান, প্রতি বছর ১৭ থেকে ১৮ হাজার ‘ডাগুর পাখা’ তৈরি করেন তিনি। এই পাখাগুলি বরিশাল, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁসহ বিভিন্ন জেলায় বিক্রি হয়।

গত বছরের তুলনায় এবছর পাখার চাহিদা বেশি বলে উল্লেখ করে মামুনুর রশিদ বলেন, একটি তালপাতা বা ডাগুরের দাম ১০ টাকা হলেও বাঁশ ও রঙের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে তাদের খরচও বেড়ে গেছে।

অবসরে পাখা তৈরি করছেন গ্রামের নারীরা, ছবি- বার্তা২৪.কম


 

পাখা তৈরির বিষয়ে আতাইল পাড়া গ্রামের পারভীন, মর্জিনা, সাবিনা, বেবি, সুমি জানান, তারা প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০টি করে হাতপাখা তৈরি করে বিক্রি করেন। বছরের ছয় মাস সংসারের কাজের ফাঁকে হাতপাখা তৈরির কাজ করে তারা বাড়তি আয় করছেন বছরের পর বছর ধরে। পাখা বিক্রি করে এইসব নারীরা তাদের সৌখিন জিনিস কিনে থাকেন সে টাকায়।

হাতপাখা তৈরির তিন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, ‘পকেট পাখা’ ১১ টাকা, ‘ঘুরানী পাখা’ ২০ টাকা এবং ‘ডাগুর পাখা’ ৩০ টাকা দরে ব্যাপারীরা পাইকারি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। তারা আবার বিভিন্ন মেলা কিংবা হাটে-বাজারে খুচরা বিক্রেতার কাছে বিক্রি করছেন।

গরমের সময় বিদ্যুতের লোডশেডিং বেড়ে যাওয়ার কারণে হাতপাখার চাহিদা প্রতি বছরই বাড়ছে বলে পাখা কিনতে আসা ব্যাপারী করিম বার্তা২৪.কমকে জানান।

শহর ও গ্রামে তীব্র গরম থেকে একটু স্বস্তি পেতে ধনী, গরিব থেকে সব পরিবারেই হাতপাখার ব্যবহার হয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে।

   

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে এসে পর্যটকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কক্সবাজার
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে এসে মোবাইলে কথা বলতে বলতে ঢলে পড়ে এক পর্যটকের আকষ্মিক মৃত্যু হয়েছে। 

শনিবার (২৭ এপ্রিল) সকালের দিকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে এ ঘটনা ঘটে।

সুগন্ধা পয়েন্ট থেকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই পর্যটকের নাম মতিউর রহমান (৪০)। 

লাইফগার্ড কর্মী মোহাম্মদ উসমান জানান, সুগন্ধা পয়েন্টে ওই লোক ফোনে কথা বলতে বলতে হঠাৎ মাটিতে ঢলে পড়ে যান।

বিচকর্মী মো. হোসেন জানান, সুগন্ধা পয়েন্টে হঠাৎ দুর্বল হয়ে মাটিতে পড়ে যায় ওই পর্যটক। তাৎক্ষণিক তাকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক হাসপাতালে আনার পথে ওই পর্যটকের মৃত্যু হয় বলে জানান।

বীচ কর্মী উজ্জ্বল জানান, নিহত পর্যটকের বাড়ি কুমিল্লা জেলার বুড়িচং এলাকায়। ইতিমধ্যে তার পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। মৃত্যুর খবর শুনে মতিউর রহমানের স্ত্রী এবং সন্তানেরা কক্সবাজারে আসছেন।

সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পর্যটক মতিউর রহমানের মৃত্যু হয়েছে।

 

;

ময়মনসিংহে বাস চাপায় সিএনজির ২ যাত্রী নিহত 



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহের সদর উপজেলায় বাস সিএনজি সংঘর্ষে নারীসহ দুইজন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আহত হয়েছে আরও ৪ জন।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে ময়মনসিংহ-শেরপুর সড়কের রঘুরামপুর এ দুর্ঘটনা ঘটে।

কোতোয়ালী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. পলাশ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সুত্র জানায়, শেরপুরগামী একটি বাসের সাথে বিপরীত দিক থেকে আসা সিএনজির সাথো মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুজন মারা যায়। এই ঘটনায় আহত হয় আরও ৪ জন। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে।

তিনি বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাজ করছেন। তাৎক্ষণিক নিহতের নাম ঠিকানা জানাতে পারেননি তিনি।

;

উচ্ছেদ আতঙ্ক

ভূমিদস্যুর বিরুদ্ধে কোম্পানীগঞ্জে এলাকাবাসীর মানববন্ধন-ঝাড়ু মিছিল



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নোয়াখালী
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে উচ্ছেদ আতঙ্কে ভূমিদস্যুর বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও ঝাড়ু মিছিল করেছেন এলাকাবাসী।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে গাংচিল বাজারে এ মানববন্ধন ও ঝাড়ু মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে এলাকার শত শত নারী-পুরুষসহ সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

জানা গেছে, চলএলাহী ইউনিয়নের গাংচিল গ্রামে বাপ-দাদার ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ আতঙ্কে ভূমিদস্যু আক্তার হোসেন ও মিলনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও ঝাড়ু মিছিল করেন এলাকাবাসী।

মানববন্ধনে ক্ষতিগ্রস্তরা অভিযোগ করেন, কয়েক যুগ ধরে তারা গাংচিল বাজারের পাশে বাপ-দাদার ভিটেমাটিতে বসবাস করে আসছেন। এরই মধ্যে স্থানীয় ভূমিদস্যু আক্তার হোসেন ও মিলন শত শত পরিবারের বসতভিটা দখলের পাঁয়তারা শুরু করেছেন। তারা জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মোটা অংকের ঘুষ দিয়ে নিজেদের পরিবারের সদস্য ও ছেলে-মেয়েদের নামে বসতভিটাগুলি রেকর্ড করে ফেলেছেন। এখন তাদের সে সব ভিটামাটি থেকে সরিয়ে দেওয়ার পাঁয়তারা শুরু করেছেন। যে কোনো সময় তারা ‘সন্ত্রাসী বাহিনী’ দিয়ে তাদের ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করার হুমকি-ধামকি দিয়ে যাচ্ছেন। সে কারণে তারা চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত আক্তার হোসেনের সেলফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোনকল রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এবং সেইসঙ্গে ভূমিদস্যু জাল-জালিয়াতির ‘প্রধান হোতা’ আক্তার হোসেন ও অপর্কমের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

;

ক্রিস্টাল মেথ আইসসহ কণ্ঠশিল্পী গ্রেফতার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর রামপুরা থানার খিলগাঁও চৌধুরীপাড়া এলাকা থেকে এক কেজি ক্রিস্টালমেথ আইসসহ এক কণ্ঠশিল্পীকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতের নাম- এনামুল কবির রেবেল।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মতিঝিল বিভাগের খিলগাঁও জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মো. রাশেদ।

তিনি বলেন, রামপুরা থানার খিলগাঁও চৌধুরীপাড়া মাটির মসজিদ থেকে এক কেজি ক্রিস্টালমেথ আইসসহ কণ্ঠশিল্পী এনামুল কবির রেবেল করা হয়েছে। এ সম্পর্কে বিস্তারিক জানাতে দুপুরে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।

;