নদী ধ্বংস করে কোনো প্রতিষ্ঠান নয়: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, এমপি বলেছেন, নদীর পাড়ে শিল্পপ্রতিষ্ঠান হবে, বড় বড় স্থাপত্য হবে কিন্তু নদীকে রক্ষা করে সেসব প্রতিষ্ঠান করতে হবে, নদীকে ধ্বংস করে নয়।

তিনি বলেন, সরকার নদী রক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। আমাদের মন্ত্রণালয়ে যেসব প্রকল্প গ্রহণ করা হয়, সেটা অংশীজনদের সঙ্গে পরামর্শ করেই করা হয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে তার ব্যত্যয় হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে সার্ভে ঠিকমতো না করেই প্রকল্প নেওয়ার নজিরও আছে। তবে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে অংশীজনদের মতামত ও সার্ভে সম্পন্ন করে যাতে প্রকল্পগুলো নেওয়া হয়, সেটি আমি কেবিনেটে তুলবো।

রোববার (২৬ মে) দুইদিনব্যাপী রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ মিলনায়তনে ‘জাতীয় নদী সম্মেলন’-এর শেষদিনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এ সব কথা বলেন।

অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট (এএলআরডি), বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), পানি অধিকার ফোরাম, রিভারাইন পিপল ও বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক দলের যৌথ উদ্যোগে নদী রক্ষায় এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

বালুমহাল নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা সম্পর্কে প্রতিমন্ত্রী বলেন, হাইড্রোগ্রাফিক সমীক্ষা ছাড়া কোথাও কোনো বালুমহাল করতে দেওয়া যাবে না এবং নদীতে কোনো স্লুইসগেট থাকবে না, এটিও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আছে।

এই নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নে আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করে যেতে হবে। কোনো ব্যত্যয় দেখলে আপনারা পরিচয় গোপন করে আমাদের জানাবেন। আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

খালিদ মাহমুদ আরো বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী সরকার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ৪০ শতাংশ ড্রেজিং করবে। বাকি ৬০ শতাংশ নিয়মানুযায়ী টেন্ডারের মাধ্যমে বেসরকারি ব্যবস্থাপনার অধীনে দেওয়া হয়। বর্তমানে ১শ ৫০টি ড্রেজার মেশিন সরকারের কাছে আছে। কিন্তু জনবল সংকটের কারণে কাজ সম্পূর্ণ হচ্ছে না।

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান সারোয়ার মাহমুদ বলেন, নদী কমিশনের দায়িত্ব মূলত সুপারিশ করা। আইন প্রয়োগ করার ক্ষমতা তাদের দেওয়া হয়নি।
তিনি বলেন, নদীর নাব্যতা, নদীদূষণ, নদীদখল, দখল বা অপদখল এই তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে কৌশলগত পরিকল্পনা মাফিক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করলে আমাদের লক্ষ্য পূরণ হবে। এজন্য স্থানীয় মানুষদের অভিজ্ঞতার আলোকে সমস্যার সমাধান করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, সিএস রেকর্ডে নদীর উল্লেখ থাকলেও পরবর্তীতে দেখা যায়, সেটা স্বার্থান্বেষী মহলের প্রভাবে ব্যক্তি মালিকানার নামে রেকর্ড হয়ে আইনি জটিলতা তৈরি। আইনের অপপ্রয়োগের এই বিষয়গুলো সম্পর্কে জনগণকে আরো সচেতন করতে হবে। অবৈধ দখলকৃত জায়গা শুধু উদ্ধার করলেই হবে না, সরকারের পক্ষ থেকে এর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় দেখা যায়, এক পক্ষকে উচ্ছেদ করলে আরেক পক্ষ এসে সেটি দখল করে বসবে কিংবা সেই পক্ষেই ফের দখলে চলে আসে।

বাংলাদেশের নদীর জীবন ও অধিকারবিষয়ক প্রবন্ধ উপস্থাপনায় গবেষক ও নদী আন্দোলনকর্মী শেখ রোকন নদী রক্ষায় চারটি দৃষ্টিভঙ্গির প্রস্তাবনা দেন।

নদীকে মুক্তভাবে চলতে দেওয়া, নদীনির্ভর জনগোষ্ঠীর সঙ্গে নদীর অর্থনৈতিক যোগাযোগ স্থাপন করা, নদীর প্রতিবেশগত ঝুঁকি হ্রাস করা এবং নদীর পুনরুজ্জীবনের জন্য আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা; এছাড়াও আমাদের নদীগুলো কোথায় আছে, কেমন আছে, তা জানা, এ দৃষ্টিভঙ্গিতে আগালে আমরা নদী বাঁচাতে পারবো বলে মনে করেন তিনি।

নদী সুরক্ষায় যুক্ত আন্দোলনকর্মীদের দুই বছরের (২০২৪-২৬) একটি রোডম্যাপ তুলে ধরে বেলা’র প্রধান নির্বাহী অ্যাডভোকেট সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, নদীর অর্থনৈতিক গুরুত্বকে আমরা প্রায় শূন্যের কোঠায় নামিয়ে নিয়ে এসেছি নানাভাবে দখল-দূষণ, বালু-পাথর উত্তোলন করে।

এ সময় দখল-দূষণকারীদের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা জনসম্মুখে প্রকাশ করার দাবি করেন তিনি।

এছাড়াও, বালু-পাথর উত্তোলনের রাজনৈতিক অর্থনীতির ওপর গবেষণা করা এবং নদীর উন্নয়নে জনসংযোগ বৃদ্ধি, নদীবিষয়ক ডাটাবেজ তৈরি, অ্যাডভোকেসি ও আইনি উদ্যোগ, নদীর ‘স্বাস্থ্য কার্ড’-এর রূপরেখা প্রণয়ন (শিল্পদূষণ, গৃহস্থালি বর্জ্য, এন্টিবায়োটিক পলি, রাসায়নিক কীটনাশক ও সারের প্রভাব); নদী সংবাদকর্মী প্ল্যাটফর্ম গঠনসহ বেশ কিছু কর্মসূচি তিনি তার রোডম্যাপে উল্লেখ করেন।

এএলআরডি’র নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা বলেন, নদীর যত দখল, দূষণ এর সবকিছুর সঙ্গে ব্যবসায়ী মহল এবং রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা যুক্ত। নদী নিয়ে আমাদের আরো সচেতন হতে হবে।

এজন্য তিনি সরকারিভাবে 'নদী সপ্তাহ' ঘোষণার আহ্বান জানান।

মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির বলেন, সবার মধ্যে জবাবদিহিতা নিশ্চিতের পাশাপাশি দায়িত্বশীলতা আনতে হবে। বর্তমানে সব জায়গায় দায়িত্বহীনতা চরমভাবে বিরাজ করছে।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শেখ মো. শরীফ উদ্দিন, এনডিসি বলেন, আমাদের অনেক ভৌত উন্নয়ন হয়েছে। এখন প্রয়োজন নৈতিক উন্নয়ন। আমাদের নৈতিক চরিত্র পথ দেখাবে আলোর দিকে। নৈতিক চরিত্র উন্নয়ন হলে কেউ আর অন্যায়ভাবে নদী দখল, দূষণ করবে না।

নদী সম্মেলনের সমাপনী দিনের সভাপতি ড. আইনুন নিশাত বলেন, আমাদের দেশে প্রতিবছর যে পরিমাণ পলি পরিবাহিত হয়ে আসে, বাজেট সীমাবদ্ধতার কারণে তা দীর্ঘকাল ধরে আর পরিমাপ করা হচ্ছে না। আমাদের বালু উত্তোলন প্রয়োজন কিন্তু তা পরিকল্পিতভাবে হতে হবে এবং যথাযথ মনিটরিং করতে হবে। নদী সম্পর্কে বেসিক ডাটা নেই। স্থানীয় পর্যায়ে বিভিন্ন অঞ্চলে এরকম সম্মেলন হলে আরো বিস্তারিত আলোচনা হয়।

প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন রংপুর কারমাইকেল কলেজের অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ, রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টারের চেয়ারম্যান মো. এজাজ, নদী পরিব্রাজক দল-এর মো. মনির হোসেন এবং সিসিডিবি’র নির্বাহী পরিচালক জুলিয়েট কেয়া মালাকার।

এছাড়াও দেশের ৮টি বিভাগ থেকে ৮ জন নদী আন্দোলনের সাথে যুক্ত প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।

অংশীজনদের নিয়ে সম্মিলিতভাবে অতিবিপন্ন নদীগুলোকে কীভাবে রক্ষা করা যায়, সে বিষয়ে বিশদ নাগরিক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে দেশের ৮ বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রায় ১শ নদী আন্দোলনকর্মী যোগদান করেন।

সুস্থ পরিবেশ-স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে পরিবেশ সংরক্ষণ জরুরি: পরিবেশমন্ত্রী



স্টাফ করেস্পন্ডেন্ট, বার্তা২৪. কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪, বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা-২০২৪’-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে পরিবেশমন্ত্রী

ছবি: বার্তা২৪, বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা-২০২৪’-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে পরিবেশমন্ত্রী

  • Font increase
  • Font Decrease

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, সুস্থ পরিবেশ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে পরিবেশ সংরক্ষণ জরুরি। শুধু দেশের জিডিপির হার বৃদ্ধি করে উন্নয়ন করলে পরিবেশের দিকে নজর না দিলে কিছুই স্থায়ী হবে না।

বুধবার (৩ জুলাই) পরিবেশ অধিদফতরে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা-২০২৪’ সমাপনী ও পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন পরিবেশমন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, যুবকদের পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন কাজে সংশ্লিষ্ট হতে হবে। জাতির জনকের পরিবেশ নিয়ে দূরদর্শী চিন্তা ছিল। স্বাধীনতা যুদ্ধের পরপরই বৃক্ষরোপন কর্মসূচি করেন তিনি।

এছাড়া পরিবেশ রক্ষায় জাতীয় সংসদে প্লাস্টিক ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হবে বলেও জানান তিনি।

পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আব্দুল হামিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ।

ফারহিনা আহমেদ বলেন, পরিবেশ রক্ষায় নাগরিকদের নিজের জায়গা থেকে সচেতন হতে হবে। এককভাবে সরকারের পক্ষে পরিবেশের সমস্যা সমাধান করা কঠিন। নাগরিকেরা দায়িত্ববান হলে সবাই মিলে সুন্দর ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব।

ফারহিনা আহমেদ আরো বলেন, ২০২৩ সালে আমরা প্লাস্টিকের দূষণ রোধে এবং সচেতনতায় কাজ করেছি। এ বছর মরুময়তা রোধ, জমির উর্বরতা নষ্ট রোধ, ভূমি পুনরুদ্ধার ও ভূমি রক্ষায় কাজ করছি।

বক্তব্য শেষে প্রধান অতিথি প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ও অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে পুরষ্কার বিতরণ করেন।

;

মানসম্মত শিক্ষার পাশাপাশি পরিবেশ উন্নয়নে সবুজায়ন প্রকল্প



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী

ছবি: সংগৃহীত, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী

  • Font increase
  • Font Decrease

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে মানসম্মত শিক্ষার পাশাপাশি পরিবেশের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে সবুজায়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।

সরকার শিক্ষা, স্বাস্থ্যখাত এবং পরিবেশের উন্নয়নে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের অংশ হিসেবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যাতে ‘স্মার্ট নাগরিক’ গড়তে পারে, সে লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে।

শনিবার (২৯ জুন) রাজধানীর খিলগাঁও মডেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ মিলনায়তনে আয়োজিত বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, আন্তঃবিভাগীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ ও নবীন বরণ অনুষ্ঠান-২০২৪-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীদের মানসিক ও শারীরিক উন্নয়নের জন্য ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে হবে। এ ধরনের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নেতৃত্বের গুণাবলি বিকশিত করে সব ক্ষেত্রে জয়ী হতে নিজেকে প্রস্তুত করবে।

এ সময় তিনি সব ধরনের অনিয়ম থেকে দূরে থেকে যথাযথভাবে পাঠদানের জন্য শিক্ষকদের আহ্বান জানান তিনি

পরিবেশমন্ত্রী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে নতুন বিভাগ খোলা, নতুন ভবন নির্মাণ, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের সুবিধা প্রদানসহ শিক্ষার উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণেরও আশ্বাস দেন।

প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. ইমাম জাফরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে গভর্নিং বডির সভাপতি মো. আবদুর রউফ, স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ, শিক্ষকমণ্ডলি, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

পরিবেশমন্ত্রী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে গাছের চারা রোপন করেন এবং বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ ও নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেন।

;

গাছেদের পরিচর্যায় অ্যাম্বুলেন্স সেবা



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গাছ, আরো গাছ। এখন যেভাবে উষ্ণ হচ্ছে পৃথিবী, তাতে প্রকৃতিতে ধস নামার জন্য হাতে আর খুব বেশি সময়ও নেই বলে জানিয়েছেন পরিবেশবিদেরা। এই সময়ে শুধু নতুন গাছ লাগানোই নয়, পুরনো গাছেদের যত্ন এবং পরিচর্যাও সমান প্রয়োজন। পরিবেশ রক্ষার জন্য একটি ছোট্ট পদক্ষেপকেও স্বাগত জানাচ্ছে বিশ্ব। ঠিক এমনই এক সময়ে সম্প্রতি পার হয়ে যাওয়া ‘বিশ্ব জীববৈচিত্র্য দিবস’ উপলক্ষে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে চালু হয়েছে গাছেদের অ্যাম্বুলেন্স সেবা!

জানা যায়, নানা সময়ে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে উপড়ে যায় বহু গাছ। কখনো আবার নির্মাণের কাজে বাধা তৈরির ‘অপরাধে’ নির্বিচারে কেটে ফেলা হয় তাদের। এই অ্যাম্বুলেন্স সেবায় তাদেরই তুলে নিয়ে গিয়ে নতুন করে মাটিতে লাগিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ধারণাটি প্রথম মাথায় এসেছিল পরিবেশ নিয়ে আন্দোলনকারী ডা. কে আবদুল ঘানির মাথায়। ভারতের সবুজ মানুষ, ‘গ্রিন ম্যান অব ইন্ডিয়া’ বলে পরিচিত ডা. আবদুল ঘানি ইতোমধ্যে ৫০ লাখ গাছ লাগিয়েছেন।

একটি বেসরকারি সংস্থার কাছে তিনি এ প্রস্তাব রাখলে, সংস্থাটি তার চিন্তাভাবনা নিয়ে কাজ শুরু করতে রাজি হয়।

কীভাবে কাজ করে গাছেদের অ্যাম্বুলেন্স
জানা গেছে, উপড়ে যাওয়া গাছকে নিয়ে গিয়ে অন্য জায়গায় লাগানোর পাশাপাশি এই অ্যাম্বুলেন্স বিভিন্ন জায়গায় বয়ে নিয়ে যায় নানান গাছের বীজও। শহরের মানুষদের মধ্যে গাছ লাগানো-সংক্রান্ত সমস্ত রকম সচেতনতা ও সাহায্য করেন তারা। কোনো গাছ মারা গেলে, তার অংশগুলো ঠিক জায়গায় পৌঁছেও দেন তারা।

এই অ্যাম্বুলেন্সেই থাকেন দক্ষ মালী ও গাছকর্মীরা। তাদের সঙ্গে থাকে বাগান করার নানান জিনিসপত্র- সার, পানি, ঝারি, খুরপি ইত্যাদি।

এই প্রকল্পে বিশেষভাবে সহায়তাকারী বেসরকারি সংস্থা ‘সাসা'-এর কর্মকর্তা সুরেশ কুমার যাদব বলেন, একইসঙ্গে যেমন পরিবেশ দূষণ বাড়ছে, সেইসঙ্গে গাছের সংখ্যাও কমছে। এই অবস্থায় বড় বড় প্রাপ্তবয়স্ক গাছগুলির মৃত্যু বোধহয় আমাদের পক্ষে মেনে নেওয়া কষ্টকর! সে জন্যই কোনো গাছ যাতে প্রাকৃতিক বা বিশেষ কারণে মরে না যায়, সে কারণে সেগুলিকে রক্ষা করার এই উদ্যোগ এই সময়ে অত্যন্ত জরুরি বলে মনে হয়েছে আমাদের। এ জন্য যেসব যন্ত্রপাতি বা ওষুধপত্র দরকার, তা সবই আমরা রেখেছি অ্যাম্বুলেন্সে। কোথাও থেকে গাছ তুলে এনে অন্য জায়গায় লাগানোর জন্যও অত্যাধুনিক পদ্ধতি প্রয়োগ করা হচ্ছে।

ভারতের এই 'সবুজ মানুষ' ডা. আবদুল ঘানি ইতোমধ্যে ৫০ লাখ গাছ লাগিয়ে ফেলেছেন, ছবি- সংগৃহীত

অ্যাম্বুলেন্স প্রকল্পের উদ্যোক্তা ডা. আবদুল ঘানি বলেন, কত গাছ ঝড়ে উপড়ে যায়। পড়ে পড়ে মারা যায়। সেগুলো নতুন করে আর লাগানোর ব্যবস্থা করাই হয় না। এই অ্যাম্বুলেন্স আর তা হতে দেবে না। হেল্পলাইনে ফোন করা মাত্রই আমরা অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে পৌঁছে যাবো এবং বিনামূল্যে গাছটিকে সরিয়ে আনবো।

আবদুল ঘানি আরো বলেন, শুধু প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে উপড়ে যাওয়াই নয়, অনেক সময়েই দেখা যায়, গাছের কারণে সমস্যায় পড়ছেন পথচারী বা শহরবাসী। সেগুলি কেটে ফেলতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। আমাদের জানালে আর এভাবে মারতে হবে না গাছগুলিকে। যত্ন করে তাদের সরিয়ে অন্যখানে লাগিয়ে দেবো আমরা।

;

জলবায়ু মোকাবিলা-পানি ব্যবস্থাপনায় পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি: পরিবেশমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, জলবায়ু মোকাবিলা ও পানি ব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রতিশ্রুতির চেয়ে বাস্তব প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।

তিনি বলেন, পানি ব্যবস্থাপনা, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ও ক্রায়োস্ফিয়ার সংরক্ষণ বিষয়ে কথার ফুলঝুরি ও প্রতিশ্রুতি প্রদানের চেয়ে বাস্তব পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করতে হবে।

মন্ত্রী এ চ্যালেঞ্জগুলির গুরুত্ব তুলে ধরে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনতে সক্ষম বৈশ্বিক সংহতি ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের দৃঢ় অবস্থানের আহ্বান জানান।

তাজিকিস্তানের দুশানবেতে ‘টেকসই উন্নয়নের জন্য পানি’ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সাধারণ অধিবেশনে মঙ্গলবার (১১ জুন) কান্ট্রি স্টেটমেন্ট বিষয়ে বক্তব্য রাখার সময় পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী এসব কথা বলেন।

এ অধিবেশনে বৈশ্বিক নেতা ও স্টেকহোল্ডাররা পানি, জলবায়ু এবং ক্রায়োস্ফিয়ার সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

পরিবেশমন্ত্রী বলেন, আমাদের কথা এবং প্রতিশ্রুতির চেয়ে পানি, জলবায়ু এবং ক্রায়োস্ফিয়ার বিষয়ে বাস্তব পদক্ষেপ এবং কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি করতে হবে। আমাদের সম্মিলিত লক্ষ্য অর্জন এবং একটি স্থায়ী ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে বৈশ্বিক সংহতি, রাজনৈতিক প্রতিজ্ঞা এবং নেতৃত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এ সময় মন্ত্রী আরো বলেন, আন্তর্জাতিক দশক ‘টেকসই উন্নয়নের জন্য পানি’ উদ্যোগের ৩য় হাই লেভেল আন্তর্জাতিক সম্মেলন দেশগুলির মধ্যে সহযোগিতা এবং টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু একটি সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রচেষ্টার সমন্বয় ঘটাতে গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে।

তার বক্তব্যে পরিবেশমন্ত্রী বাংলাদেশে এ বৈশ্বিক উদ্যোগগুলির প্রতি অঙ্গীকার এবং পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সম্মিলিত উদ্যোগের গুরুত্বও তুলে ধরেন।

;