প্রকৃত ইসলামী সমাজ সব ধর্মাবলম্বীর সমানাধিকারের রক্ষাকবচ



ড. মাহফুজ পারভেজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ধর্মীয়, জাতিগত, ভাষাগত সংখ্যালঘুর মানবাধিকারের দাবিতে সোচ্চার বিশ্ব সম্প্রদায় আইনগত ও সামরিক-বেসামরিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেও বিশ্বব্যাপী নিপীড়িত মানবতার আহাজারি থামাতে পারছে না। বরং ইসলামে সংখ্যালঘুর অধিকার সংরক্ষণের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত থাকার পরেও মুসলিমরাই হচ্ছে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত। ‘ইসলামে সংখ্যালঘুর অধিকার’ সম্পর্কে ঐতিহাসিক পর্যালোচনা: পর্ব- ৬

আমাদের মনে রাখতে হবে যে, কোনো বিষয়ে চিন্তার শৈথিল্য ও বিভ্রান্তি আসে ইতিহাসহীনতা, অজ্ঞানতা ও কুপমণ্ডুকতা থেকে। অথচ ইসলামে, যে কোনো বিষয়ের মতোই অমুসলমান ও সংখ্যালঘুদের সঙ্গে আচরণ ও নীতিমালার ক্ষেত্রে বিন্দুমাত্র অজ্ঞানতা ও কুপমণ্ডুকতার কোনো স্থান নেই। প্রকৃত প্রস্তাবে ইসলাম ধর্মে মানুষের ওপর কোনোরূপ জবরদস্তি নেই। ধর্ম প্রচারে কেবল যুক্তি প্রয়োগ করতে হবে; সদুপদেশ ও সদাচরণ অবলম্বণ করতে হবে। প্রতিমা-পূজকের প্রতিমাকে পর্যন্ত মন্দ বলা নিষিদ্ধ রয়েছে। পবিত্র কোরআনের সূরা আন আমের ১০৮তম আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলছেন, ‘আল্লাহ ছাড়া অন্যান্য দেব-দেবীর উপাসনা যারা করে তাদের উপাস্যদের তোমরা গালি দিয়ো না।’

ইসলামের বিধান মতে, জাতি-ধর্ম-নির্বিশেষে মজলুমকে সাহায্য করতে হবে। আল্লাহতায়ালা এমন কারও প্রতি দয়া করবেন না, যে আল্লাহর সৃষ্ট জীবের প্রতি দয়াশীল নয়। অমুসলমানকে যে মুসলমান পীড়া দেয়, নিগৃহীত করে বা অসম্মানের দৃষ্টিতে দেখে সে প্রকৃত বিচারে মুসলমান নয়। এসবই পবিত্র কোরআনের মাধ্যমে আল্লাহতায়ালার নির্দেশ এবং মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালামের কথা-কাজ তথা হাদিসের শিক্ষা। খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের দাবি প্রতিষ্ঠা করে হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে ফরমান জারি করেছিলেন তা থেকেই ইসলামী রাষ্ট্রে অমুসলমানের স্থান, মর্যাদা ও অধিকারের বিষয়টি স্পষ্ট হয়। তিনি বলেছেন, ‘অমুসলিমের জীবন আমাদের জীবনের এবং তাদের সম্পদ আমাদের সম্পদের মতোই।’

আদি ইসলামী রাষ্ট্র মদিনার সনদে অমুসলমানদেরকে মদিনায় বসবাসের অধিকারসহ সকল সামাজিক-রাজনৈতিক-নাগরিক-আইনগত অধিকার দিয়েছিল। এমনকি তাদের একটি অংশ বিশ্বাসঘাতকতা করা সত্ত্বেও অন্য অংশের প্রতি কোনোরূপ অন্যায় আচরণ করা হয়নি। আবু দাউদ শরীফে বর্ণিত এক হাদীসে হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘সর্তক থাকো সে ব্যক্তি সম্পর্কে, যে ব্যক্তি অমুসলমানের ওপর জুলুম বা নির্যাতন করে অথবা তাদের হক বা অধিকার নষ্ট করে অথবা তাদের সামর্থ্যরে চাইতে বেশি কাজের বোঝা চাপাতে চেষ্টা করে অথবা তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাদের থেকে কিছু জোরপূর্বক নেয়; আমি কিয়ামতের দিন সে ব্যক্তির বিরুদ্ধে লড়বো।’

মুমিন-মুসলমানদের আমির বা নেতা হজরত উমর (রা.) শুধু রাজ্য শাসনকালেই নয়, মৃত্যুকালেও অমুসলমানের অধিকার সম্বন্ধে সাবধান করে দিয়ে যান।

এ প্রসঙ্গে ইসলামের মূল ভাবনা সম্পর্কে গভীর অনুধাবনের প্রয়োজন রয়েছে। ধর্মের ভিত্তিতে, বিশেষ করে ইসলাম ধর্মের ভিত্তিতে, যে ধর্ম কেবলমাত্র ধর্ম নয়, দ্বীন বা জীবন ব্যবস্থাও বটে, জাতিগঠন করলে কোনোভাবেই আক্রমণাত্মক পরিস্থিতি বা প্রতিক্রিয়াশীলতা আসতে পারে না। আক্রমণ ও প্রতিক্রিয়ার মনোভাব তাদের ক্ষেত্রেই আসতে পারে এবং ইতিহাসের বিচারে এসেছেও, যারা ধর্মের ছদ্মাবরণে ছ্যুৎমার্গের কিংবা বৈষম্যের বা অসাম্যের ধ্বজ্বা ধারণ করে। যারা সমাজ-সংসারে চাণক্য বা মেকিয়াভেলির সুবিধাবাদ ও নীতিজ্ঞানহীনতা প্রচার ও গ্রহণ করেছে, যাদের ধর্ম পুরোহিত সমাজভিত্তিক ব্যক্তিগত পূণ্য লাভের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে এবং যারা ধর্ম ও বাস্তব জীবনে অন্য সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পর্কে রূপরেখা সম্পর্কে অজ্ঞ ও দিক-নিদের্শনা শূণ্য, তাদের সমস্যা আর ইসলামের সমস্যা তাই কোনোভাবে এক নয়। যেহেতু ইসলাম ব্যক্তিগত ও মানসিক নিয়ন্ত্রণেই সীমাবদ্ধ থাকে না, সেহেতু প্রকৃত মুসলমানের একটি বাস্তব ও পালনযোগ্য জীবন-দর্শন এবং জীবন-মিশন রয়েছে।

অন্য ধর্মীয়দের এটা নেই বলেই, তাদের বৈষয়িক ও ধর্মীয় বিষয় আলাদা করতে হয়। এদের ধর্ম অন্য ধর্মের লোককে ঘৃণা করতে শিক্ষা দিতে পারে এবং ধর্মকে তত্ত্বগতভাবে একটি নিরাপদ স্থানে রেখে বৈষয়িক ও জাগতিক বিষয়ে নীতিজ্ঞানহীনতার অবলম্বন করতেও অবাধ সুযোগ দিয়ে থাকে। পক্ষান্তরে, ইসলামী সমাজ ও রাষ্ট্রে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে মানুষ হিসাবে সকল মানুষের সম্মান, মর্যাদা, অধিকার ও দাবি প্রতিষ্ঠা করতে হবে- কারণ সকল মানব সম্প্রদায়ই ইসলামের দৃঢ়তর বিশ্বাস মতে, আল্লাহর সৃষ্টিকূলের সদস্য। কাজেই ইসলামী সমাজে ও বিশ্বাসে সম্প্রদায়গত লাভের কোনো প্রশ্নই ওঠে না। কেবল সম্প্রদায়গত উন্নতি করলেই মুসলমানের কর্তব্য শেষ হয় না; যুক্তি ও আইন দ্বারা সমাজে সকলের জন্য কল্যাণ ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠাই মুসলমানের কাজ।

বিভিন্ন ধর্মে কোনো ধর্মীয় অনুশাসন পালন না করেও সেই ধর্ম-সম্প্রদায়ের সদস্য থাকা যায়; কিন্তু ইসলামে কেবলমাত্র সম্প্রদায়গত মুসলমানের কোন মূল্য থাকবে না, যে পর্যন্ত সে বাস্তব জীবনে ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় গণ্ডিতে ইসলামকে প্রতিষ্ঠা না করবে। অতএব ইসলামী সমাজ মানে কেবলমাত্র মুসলমানের সমাজ নয়; ইসলামী শাসন মানে কেবলমাত্র মুসলমানদের সম্প্রদায়গত-শ্রেণীগত শাসন নয়। ইসলামী সমাজ ও ইসলামী শাসন মানে, এমন একটি সমাজ কাঠামো ও শাসন ব্যবস্থা, যেখানে ইসলামের মূলভাবের ওপর ভিত্তি করে শাসন-প্রশাসন-বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে; মানুষ হিসাবে মানুষ যেখানে ধর্ম-বর্ণ-ভাষা-অঞ্চল-লিঙ্গ নির্বিশেষে পরিপূর্ণ মানবিক সম্মান, মর্যাদা ও অধিকার পেয়েছে; অর্থনীতি থেকে সমাজতত্ত্ব, বিজ্ঞান থেকে শিল্পকলা-সাহিত্য তথা জীবনের সকল ক্ষেত্রে ইসলাম যে মানববান্ধব, কল্যাণধর্মী ও প্রগতিশীল পথ নিদের্শ করে, আপামর মানুষের জন্য সেই পথ অবারিত করাই ইসলামী সমাজের লক্ষ্য; সেই পথের কল্যাণ সকলকে সমানভাবে পৌঁছে দেওয়াই ইসলামী রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য।

সেজন্য প্রকৃত ইসলামী সমাজই হবে মুসলমান ও অমুসলমান নির্বিশেষে সকল মানুষের সমানাধিকারের সনদ এবং মানবিক সম্মান, মর্যাদা, কল্যাণ ও অধিকারের রক্ষাকবচ। এই কথাটির ব্যাপক অর্থ ইসলামী সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠার জন্য যারা নিয়োজিত শুধু তারাই নন, সকল মুসলমানকেই বুঝতে হবে ও অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে প্রতিপালন করতে হবে এবং কোনরূপ অপবাদ ও পূর্ব-ধারণার বাইরে এসে নিজেদের বাস্তবসম্মত কল্যাণ, মর্যাদা, সম্মান, অধিকার ও নিরাপত্তা বিধানের স্বার্থে অমুসলমান ভাই-বোনদেরকেও অনুধাবন করতে হবে।

আরও পড়ুন: পর্ব- ৫: ‘মদিনা সনদ’ নাগরিক সমানাধিকারের এক অনন্য উদাহরণ

   

সৌদির স্থানীয় ও প্রবাসীদের জন্য নতুন হজ প্যাকেজ



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
কিদানা আল-ওয়াদি টাওয়ার, ছবি: সংগৃহীত

কিদানা আল-ওয়াদি টাওয়ার, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সৌদি আরবের নাগরিক ও প্রবাসীদের জন্য হজের নতুন দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে দেশটির হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়। সোমবার (২৭ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সৌদি গেজেট।

হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা করা প্যাকেজ দুটির মধ্যে প্রথম প্যাকেজে মক্কায় সুসজ্জিত আবাসিক ভবনে কম খরচে থাকার সুযোগ রাখা হয়েছে। এই প্যাকেজের আওতায় হজযাত্রীদের আত-তারবিয়ার দিন (৮ জিলহজ) থেকে আরাফাত দিবস (৯ জিলহজ), আন নাহার (১০ জিলহজ) ও তাশরিকের দিনগুলোতে (১১ ও ১২ জিলহজ) মিনা, মুজদালিফা এবং আরাফাতের পবিত্র স্থানগুলোতে পরিবহনসহ অন্যান্য মৌলিক সেবা দেওয়া হবে।

প্যাকেজের আওতায় মিনায় হজযাত্রীদের আবাসনের ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত নয়। তবে হজের আচার-অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে হজের দিনগুলোতে হজযাত্রীদের মিনায় রাতের একটি অংশ থাকার জন্য পরিবহন ব্যবস্থা করা হবে। প্যাকেজটির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে সৌদি আরবের মুদ্রায় ৪ হাজার রিয়াল।

অন্য আরেকটি প্যাকেজে মিনায় নবনির্মিত কিদানা আল ওয়াদি টাওয়ারে থাকার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এই প্যাকেজের দাম শুরু ১৩ হাজার রিয়াল থেকে। এই প্যাকেজের আওতায় হজের দিনগুলোতে হজযাত্রীরা আরামদায়ক শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসে যাতায়াত করতে পারবেন। এছাড়া এতে বিভিন্ন ধরনের খাবার, ঠান্ডা এবং গরম পানীয় এবং আরাফাতে সুসজ্জিত তাঁবুর পাশাপাশি মুজদালিফাতে রাতযাপনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।

কিদানা আল-ওয়াদি টাওয়ারটি নিউ মিনায় নির্মাণ করা হয়েছে। কঙ্কর নিক্ষেপের স্থান জামারাত থেকে এক কিলোমিটার দূরে ১২টি পাঁচতলা বিশিষ্ট নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটি ভবনে ৩টি করে লিফট বেশ কয়েকটি বাথরুম রয়েছে। এর রুমগুলো এমনভাবে সাজানো হয়েছে যে, প্রতিটি রুমে ২৫ থেকে ৩০ জন হজযাত্রী থাকতে পারবেন।

;

সুখী সমাজ গঠনে যা জরুরি



মাওলানা ফখরুল ইসলাম, অতিথি লেখক, ইসলাম
সুন্দর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হচ্ছে, সুন্দর পারিবারিক বন্ধন, ছবি: সংগৃহীত

সুন্দর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হচ্ছে, সুন্দর পারিবারিক বন্ধন, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

এ কথা বলতে দ্বিধা নেই যে, প্রাচীনকাল থেকে যে যৌথ পরিবারে চিত্র সারাবাংলায় ছিল- তা এখন অনেকটাই ম্লান। শহুরে জীবনে অনেক আগেই বিলীন হয়েছে যৌথ পরিবার। আগে গ্রামে-গঞ্জে কিছু যৌথ পরিবার দেখা গেলেও এখন তা আর নেই। এমনকি ঐতিহ্যবাহী পরিবারেও বিলীন একত্রে বাস করার ইতিহাস। দিন যত যাচ্ছে, আমরা যেন তত এই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসছি। ক্রমেই ‘স্বামী-স্ত্রী-সন্তানে’ই সীমাবদ্ধ করে ফেলছি পরিবারকে। সেখানে মা-বাবা কিংবা দাদা-দাদীর স্থান নেই। মা-বাবাকে হয় গ্রামের বাড়িতে কাটাতে হচ্ছে নিঃসঙ্গ-অসহায় জীবন। আবার অনেক মা-বাবার ঠিকানা হচ্ছে- ‘বৃদ্ধাশ্রম।’

অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, একান্নবর্তী কিংবা যৌথ পরিবারের ধারণা এখন ‘সেকেলে’ হয়ে গেছে। বিশেষ করে, শহুরে জীবন ব্যবস্থায় এই ব্যাপারটি চরম আকার ধারণ করেছে। সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, সমাজে প্রচলিত যৌথ পরিবারে পারস্পরিক সম্প্রীতি গভীর হয়, অসুখ-বিসুখসহ নানা সমস্যায় একে অন্যের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। এতে অনেক বড় সমস্যাও সমাধান হয়ে যায় অতিসহজে।

রক্তের বন্ধন মানেই পারিবারিক বন্ধন। পরিবারের সব সদস্যের মাঝে অকৃত্রিম সুসম্পর্ক গড়ে তোলা এবং তা অটুট রাখা সবার দায়িত্ব। সমাজ ব্যবস্থায় সুন্দর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি শর্ত হচ্ছে, সুন্দর পারিবারিক বন্ধন।

প্রত্যেক মানুষের জন্য পারিবারিক শিক্ষা অতি গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো আয়ত্ব করতে পরিবারই সর্বোত্তম মাধ্যম। নানাবিধ চারিত্রিক গুণাবলি অর্জন করতে পরিবারের ভূমিকা অপরিসীম। ভদ্রতা, নৈতিকতা, দায়িত্বশীলতা, কৃতজ্ঞতাবোধ, বড়দের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন, কনিষ্ঠদের স্নেহ-আদর, অন্যের প্রতি সহমর্মিতা প্রদর্শন, পরোপকারিতার মানসিকতা গড়ে তোলা এবং উদার মানসিকতাবোধ জাগ্রত করার গুণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে যতটা না অর্জন করা যায়- তার চেয়ে বেশি পরিবার থেকে অর্জন করা যায়।

পৃথিবীর প্রথম পরিবার গড়ে ওঠে হজরত আদম (আ.) ও তার স্ত্রী হজরত হাওয়া (আ.)-এর মাধ্যমে। পরিবারের সদস্য প্রথমত তারা স্বামী-স্ত্রী দু’জন ছিলেন। সৃষ্টির পর আল্লাহতায়ালা এ পরিবারকে জান্নাতে বসবাস করতে দেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে আদম! তুমি আর তোমার স্ত্রী দু’জনেই জান্নাতে বসবাস করো।’ -সুরা আল বাকারা : ৩৫

এরপর তারা পৃথিবীতে আসেন। তাদের থেকে জন্ম নেয় সন্তান-সন্ততি। এভাবে পৃথিবীতে পরিবার ও পারিবারিক ব্যবস্থার সূচনা হয়। পারিবারিক জীবনের গুরুত্ব প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে মানবমণ্ডলী! তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ভয় করো যিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি হতেই সৃষ্টি করেছেন ও যিনি তা হতে তার স্ত্রী সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তাদের দুই জন থেকে বহু নর-নারী ছড়িয়ে দিয়েছেন।’ -সুরা আন নিসা : ১

বর্ণিত আয়াত থেকে বুঝে আসে যে, পারিবারিক বন্ধন থেকেই মানববংশ সম্প্রসারিত হয়েছে। যদি সবজাতি ও গোত্রের লোকেরা বিভিন্ন পরিবারে বিভক্ত হয়ে নিজ নিজ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে, তবে সে পরিবার সমাজে সর্বোত্তম আদর্শ পরিবার হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করবে। যেখানে বইতে থাকে শান্তির ফল্গুধারা। পরিবারের প্রতিটি সদস্যের বিচরণ হবে সুখকর ও আনন্দময়।

পরিবারের সদস্যরা যখন আল্লাহর দেওয়া দায়িত্বানুভূতি সম্পর্কে সজাগ থাকবে। স্ত্রী তার অধিকার পূর্ণাঙ্গভাবে লাভ করবে। স্বামী যখন স্ত্রীর নিকট তার অধিকার পাবে, সন্তান বাবা-মায়ের ঘনিষ্ঠ সাহচর্য ও তাদের অধিকার লাভ করবে, আত্মীয়-স্বজন যখন পরস্পরের যথাযথ সম্মান মর্যাদা পাবে, তখন কোনো স্ত্রী আর তার অধিকারের দাবিতে প্রকাশ্য জনপথে আন্দোলনে বের হবে না, কোনো স্বামী ভালোবাসা ও সুন্দর জীবন-যাপনে অন্য নারীর প্রতি আসক্ত হবে না, কোনো সন্তানই বাবা-মায়ের অবাধ্য হয়ে উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন করবে না এবং আত্মীয়-স্বজনের সম্পর্কের দৃঢ়তায় আল্লাহর রহমত, বরকত ও অনুগ্রহ বর্ষিত হতে থাকবে। শুধু তাই নয়- ইসলাম নির্দেশিত পারিবারিক জীবন হলো- আল্লাহর মহা অনুগ্রহ।

মানুষ আল্লাহপ্রদত্ত পারিবারিক জীবন-যাপনে অভ্যস্ত হলে সমাজ থেকে মহামারির আকার ধারণকারী পরকীয়া, মাদকাসক্তি, ইভটিজিং, এসিড নিক্ষেপ, ধর্ষণ পরবর্তী হত্যা, অবৈধ ভালোবাসায় ব্যর্থদের আত্মহত্যাসহ সবপ্রকার অপরাধ প্রবণতা এবং জীবনের শেষ সময়ে বৃদ্ধাশ্রমের মতো দুঃখী জীবন-যাপন চিরতরে নির্মূল হবে।

তাই একটি সুন্দর ও আদর্শ পরিবার গঠনের লক্ষ্যে আল্লাহ ও রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশনাসমূহ মেনে চলা প্রত্যেক মুসলমানের ঈমানের অপরিহার্য দাবি।

আদর্শ ও উত্তম পরিবার গঠনে পরিবারের দায়িত্বশীলদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। আর প্রচণ্ড অস্থির একটা পৃথিবীতে বাস করছি আমরা। আর এই অস্থির সময়ে সবচেয়ে অবহেলিত, উপেক্ষিত একটা টার্ম হচ্ছে- পরিবার। পরিবারগুলো এখন যখন তখন তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

মনে রাখতে হবে, পরিবার হচ্ছে- সমাজ কাঠামোর মূল ভিত্তি, সুখী পরিবার একটি সুখী সমাজ বা রাষ্ট্র গঠনের পূর্বশর্ত। আর একটি সুন্দর পরিবার গঠনের পূর্বশর্ত হচ্ছে- পরিবারকে ইসলামের আদলে গড়ে তোলা।

;

সেবার ব্রত নিয়ে রিমালে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ান



মুহাম্মদ ছফিউল্লাহ হাশেমী, অতিথি লেখক, ইসলাম
রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি, ছবি: বার্তা২৪.কম

রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঘূর্ণিঝড় রিমালে ইতোমধ্যে ৩৭ লাখ ৫৮ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া প্রায় ৩৫ হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত এবং আংশিক ক্ষতি হয়েছে এক লাখ ১৪ হাজার ৯০০ ঘরবাড়ি।

সোমবার (২৭ মে) সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিবুর রহমান এসব তথ্য জানান। তিনি আরও জানান, ‘ঘূর্ণিঝড় রিমালে এ পর্যন্ত ১০ জন প্রাণ হারিয়েছেন।’

ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে গেছে ফসলের ক্ষেত, মাছের ঘের, বিধ্বস্ত হয়েছে বাড়িঘর। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে বেশ কিছু উপজেলা। এ পরিস্থিতিতে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের চরম জনদুর্ভোগ সহজেই অনুমেয়।

এমতাবস্থায় ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পুর্নবাসনে যদি উদ্যোগ নেওয়া না হয়, তাহলে তাদের মানবেতর জীবনযাপন করতে হবে। এমন কোনো পরিস্থিতি হয়তো আমরা কেউই দেখতে চাই না।

এর আগে আমরা নিজ নিজ জায়গা থেকে করোনা পরিস্থিতিতে মানবতার পাশে দাঁড়িয়েছি। সিলেটের বন্যার সময় এদেশের মানুষ তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। এটাই সত্য দেশের দূর্যোগ আর ক্রান্তিলগ্নে এ দেশের মানুষের, সরকারের এগিয়ে আসার রেকর্ড রয়েছে। ঘুর্ণিঝড়ও একটি দূর্যোগ। এ দূর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আমাদের দাঁড়াতে হবে, তাদের পরিবারকে রক্ষা করতে হবে। সাহায্যের হাত নিয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী, বিত্তবান, আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। তবেই তাদের পক্ষে এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে।

ইসলাম মানবতার ধর্ম। মানবতার মুক্তির দূত হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানবতার মুক্তির জন্য সারা জীবন ব্যয় করেছেন। পৃথিবীর যেখানেই মানবতা ভূলুণ্ঠিত হয়েছে, অসহায় মানবতার আর্তচিৎকারে আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত হয়েছে, সেখানেই সেবার ব্রত নিয়ে এগিয়ে গেছে ইসলামপ্রিয় মুসলিম ভাইয়েরা।

অসহায়, ক্ষুধার্তদের হক আদায়ের ব্যাপারে ইসলাম স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে। হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি পেট পুরে খায়, আর পাশেই প্রতিবেশী ক্ষুধার্ত অবস্থায় দিন কাটায় সে প্রকৃত মুমিন নয়।’

অপর হাদিসে হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমরা পৃথিবীবাসীর প্রতি অনুগ্রহ প্রদর্শন করো, তাহলে আসমানের অধিবাসীও তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করবেন।’

অন্য হাদিসে এসেছে, ‘সমগ্র সৃষ্টিজীবই আল্লাহর পরিবারের মতো, আর সর্বোত্তম হলো- ওই ব্যক্তি যে তার পরিবারের প্রতি সদাচরণ করে।’

ইসলাম বা মুসলমানরা শুধু থিওরি বা দৃষ্টিভঙ্গি পেশ করে না। বরং তারা নিজেরাই আর্তমানবতার সেবায় ঝাঁপিয়ে পড়ে। ইসলামের ইতিহাস তার প্রমাণ বহন করে যুগে যুগে ইসলাম ও মুসলমানরা প্রমাণ করেছে, ইসলাম মানবতার ধর্ম। আমরা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনীর দিকে যদি তাকাই তাহলে দেখতে পাবো তিনি কীভাবে আর্তমানবতার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেছেন এবং সাহাবায়ে কেরামদের শিক্ষা দিয়েছেন।

তাই তো রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সব সাহাবায়ে কেরাম নিজেদের আর্তমানবতার সেবায় নিয়োজিত রেখেছেন। হিজরতের পরবর্তী সময়ে মক্কার আনসাররা কীভাবে মুহাজির ভাইদের প্রতি সহানুভূতি, সহমর্মিতা প্রদর্শন করেছেন। শুধু এতটুকুই নয়, নিজেরা ক্ষুধার্ত, অসহায়, দরিদ্র হওয়া সত্ত্বেও খাবার ও থাকার মূল অংশ অপর ভাইয়ের জন্য দিয়ে দিয়েছেন। নিজেরা মুমূর্ষু, প্রচণ্ড পিপাসার্ত হওয়ার পরও নিজের খাদ্য ও পানীয় অপর ভাইয়ের জন্য বিলিয়ে দেওয়ার যে নজির স্থাপন করেছেন, তার নমুনা ইতিহাসের পাতায় বিরল।

আমরাও রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামদের অনুসরণ করে ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত ভাই-বোনদের সেবায় আত্মনিয়োগ করি। সাধ্যানুযায়ী তাদের সাহায্য-সহযোগিতা করি। যারা অর্থ দিয়ে সহায়তা করতে পারি, তারা যেন এগিয়ে আসি।

আসুন, একে অপরের পাশে দাঁড়াই। মহান আল্লাহ তার রহমত ও বরকতে আমাদের এই ক্ষতিপূরণ পুষিয়ে নেওয়ার তওফিক দান করুন। আমিন!

লেখক : আলেম, প্রাবন্ধিক ও কলেজ শিক্ষক।

;

হজের খতিব শায়েখ মাহের, কে তিনি?



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মাহের বিন হামাদ বিন মুয়াক্বল আল মুয়াইকিলি, ছবি: সংগৃহীত

মাহের বিন হামাদ বিন মুয়াক্বল আল মুয়াইকিলি, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গত বছরের আগস্ট মাসের ১১ তারিখ এক অভাবনীয় ঘটনার সাক্ষী হয় পবিত্র কাবা প্রাঙ্গণ। ওই দিন কাবা শরিফে জুমার নামাজ পড়ান ২ জন ইমাম। খুতবার পর নির্ধারিত খতিব শায়েখ মাহের আল-মুয়াইকিলি নামাজ শুরু করলেও তা সম্পন্ন হয়েছে শায়েখ আবদুর রহমান আস-সুদাইসের ইমামতিতে। মূলত শায়খ মুয়াইকিলি অসুস্থ হওয়ায় এমনটি ঘটে।

এবার পবিত্র কাবার সেই ইমাম ও খতিব শায়েখ ড. মাহের বিন হামাদ বিন মুয়াক্বল আল মুয়াইকিলি হজের খতিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।

অসাধারণ কোরআন তেলাওয়াতের জন্য বিশ্বব্যাপী দারুণ জনপ্রিয় শায়েখ মাহের হজের খতিব হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।

সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি শায়েখ আবদুল আজিজ আলে শায়খ ১৪৩৬ হিজরিতে সর্বশেষ হজের খুতবা দেন। এর পর থেকে প্রতিবছর একজন করে হজের খতিব নিয়োগ দেওয়া হয়। মসজিদে হারামের খতিব হিসেবে শায়েখ মাহের হলেন হজের খুতবা দেওয়া তৃতীয় ইমাম। এর আগে ১৪৩৭ হিজরিতে (২০১৬ সালে) হজের খুতবা দেন মসজিদে হারামের প্রধান খতিব শায়েখ ড. আবদুর রহমান আস সুদাইস ও ১৪৪২ হিজরিতে (২০২১ সালে) হজের খুতবা প্রদান করেন মসজিদে হারামের ইমাম ও খতিব শায়েখ বানদার বিন আবদুল আজিজ বালিলা।

আরও পড়ুন: হজের নতুন খতিব শায়খ মাহের আল মুয়াইকিলি

১৪২৮ হিজরিতে মসজিদে হারামের ইমাম ও খতিব হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। ৫৪ বছর বয়সী বিখ্যাত এই আলেম পবিত্র কাবার ইমাম হিসেবে ১৫ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করছেন। ড. মাহের আল মুয়াইকিলি ১৯৬৯ সালের সাত জানুয়ারি সৌদি আরবের মদিনা মোনাওরায় জন্মগ্রহণ করেন।

হিফজ সম্পন্ন করার পর মদিনার টিসার্স কলেজে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে একজন গণিতের শিক্ষক হিসেবে ব্যাচেলর ডিগ্রি অর্জন করেন।

১৪২৫ হিজরিতে মক্কার উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শরিয়া অনুষদ থেকে তিনি মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। এখানে তার বিষয় ছিল, ‘ফিকহুল ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল’ তথা ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বলের ইলমে ফিকহ।’

একই প্রতিষ্ঠান থেকে ১৪৩২ হিজরিতে ইমাম সিরাজি (রহ.) রচিত শাফেয়ি মাজহাবের কিতাব ‘তুহফাতুন নাবিহ শারহুত তানবিহ’র ওপর ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন।

শায়েখ মাহের কর্মজীবন শুরু করেন উম্মুল কুরার জুডিশিয়াল স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে।

১৪২৬-২৭ হিজরির রমজানে মদিনার মসজিদে নববিতে সহকারী ইমামের দায়িত্ব প্রাপ্ত হন। পরের বছর (১৪২৮) রমজান মাসে মসজিদে হারামের তারাবি ও তাহাজ্জুদের ইমাম মনোনীত হন। ওই বছরই আনুষ্ঠানিকভাবে মসজিদে হারামের স্থায়ী ইমাম ও খতিবের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এখনও তিনি এ পদে সমাসীন রয়েছেন।

ড. মাহের আল মুয়াইকিলি দুই ছেলে ও দুই মেয়ের বাবা। তাদের সবাই হাফেজে কোরআন। নম্র-ভদ্র এবং অমায়িক ব্যবহারের জন্য শায়েখ মাহের সর্বমহলে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত। চমৎকার উচ্চারণ আর অনবদ্য কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ কোরআনপ্রেমীরা। পবিত্র কাবা প্রাঙ্গণে জুমার খুতবা দেওয়াসহ তিনি নিয়মিত বিভিন্ন ওয়াক্তের নামাজের ইমামতি করেন।

;