দেশে ফিরেছেন ৬০ হাজার হাজী, থেকে গেলে ১ লাখ রিয়াল জরিমানা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
বিমানবন্দরে হাজীদের ভিড়, ছবি: সংগৃহীত

বিমানবন্দরে হাজীদের ভিড়, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র হজপালন শেষে সৌদি আরব থেকে এ পর্যন্ত মোট ৬০ হাজার ৩৫৯ জন বাংলাদেশি দেশে ফিরে এসেছেন।

বিমান বাংলাদেশ ও সৌদি এয়ারলাইন্সের সর্বমোট ১৬১টি ফিরতি ফ্লাইটে তারা দেশে আসেন। এরমধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পরিচালিত ফ্লাইট ৭৮টি এবং সৌদি এয়ারলাইন্স পরিচালিত ফ্লাইট ৮৩টি।

এ বছর পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হয়েছে ২১ আগস্ট। হজপালন করতে গিয়ে সৌদি আরবে এ পর্যন্ত ১১৮ জন বাংলাদেশি হজযাত্রী ইন্তেকাল করেছেন। তন্মধ্যে পুরুষ ৯৭ জন ও নারী ২১ জন। তারা মক্কা, মদিনা, জেদ্দা, মিনা ও আরাফাতের ময়দানে ইন্তেকাল করেন। তাদেরকে সেখানেই দাফন করা হয়েছে।

পবিত্র হজ পালন শেষে হাজীদের নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট শুরু হয় ২৭ আগস্ট, ফিরতি ফ্লাইট শেষ হবে ২৬ সেপ্টেম্বর।

চলতি বছর পবিত্র হজ পালনের জন্য বিমান বাংলাদেশ ও সৌদি এয়ারলাইন্সের মোট ৩৭১টি ফ্লাইটে বাংলাদেশ থেকে সর্বমোট ১ লাখ ২৭ হাজার ২৯৮ জন (ব্যবস্থাপনা সদস্যসহ) সৌদি আরবে যান।

এদিকে ২০১৮ সালে হজ কার্যক্রম পরিচালনাকারী এজেন্সির মালিক ও মোনাজ্জেমদের (এজেন্সির প্রতিনিধি) জন্য জরুরি নোটিশ দিয়েছে সৌদি আরবে অবস্থিত বাংলাদেশের হজ অফিস।

সৌদি আরবের পাসপোর্ট বিষয়ক অধিদপ্তরের বরাত দিয়ে জারীকৃত ওই নোটিশে বলা হয়েছে, সৌদি আরবে অবস্থানের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর কোনো হাজী প্রস্থানে বিলম্ব করলে, সে বিষয়ে হাজীদের খেদমতে (সেবায়) কোনো কোম্পানী বা সংস্থার কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করলে ওই সংস্থা বা কোম্পানীকে ১ লাখ সৌদি রিয়াল পর্যন্ত অর্থ দণ্ড প্রদান করা হবে এবং বেআইনিভাবে অবস্থানকারীদের সংখ্যা একাধিক হলে সংখ্যানুযায়ী প্রত্যেকের জন্য আলাদা আলাদ দণ্ড দেওয়া হবে। তাই হজপালনকারী, এজেন্সির মালিক বা মোনাজ্জেমদের নির্দিষ্ট সময়ে সৌদি আরব ত্যাগের জন্য বলা হলো।

   

সেবার ব্রত নিয়ে রিমালে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ান



মুহাম্মদ ছফিউল্লাহ হাশেমী, অতিথি লেখক, ইসলাম
রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি, ছবি: বার্তা২৪.কম

রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঘূর্ণিঝড় রিমালে ইতোমধ্যে ৩৭ লাখ ৫৮ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া প্রায় ৩৫ হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত এবং আংশিক ক্ষতি হয়েছে এক লাখ ১৪ হাজার ৯০০ ঘরবাড়ি।

সোমবার (২৭ মে) সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিবুর রহমান এসব তথ্য জানান। তিনি আরও জানান, ‘ঘূর্ণিঝড় রিমালে এ পর্যন্ত ১০ জন প্রাণ হারিয়েছেন।’

ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে গেছে ফসলের ক্ষেত, মাছের ঘের, বিধ্বস্ত হয়েছে বাড়িঘর। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে বেশ কিছু উপজেলা। এ পরিস্থিতিতে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের চরম জনদুর্ভোগ সহজেই অনুমেয়।

এমতাবস্থায় ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পুর্নবাসনে যদি উদ্যোগ নেওয়া না হয়, তাহলে তাদের মানবেতর জীবনযাপন করতে হবে। এমন কোনো পরিস্থিতি হয়তো আমরা কেউই দেখতে চাই না।

এর আগে আমরা নিজ নিজ জায়গা থেকে করোনা পরিস্থিতিতে মানবতার পাশে দাঁড়িয়েছি। সিলেটের বন্যার সময় এদেশের মানুষ তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। এটাই সত্য দেশের দূর্যোগ আর ক্রান্তিলগ্নে এ দেশের মানুষের, সরকারের এগিয়ে আসার রেকর্ড রয়েছে। ঘুর্ণিঝড়ও একটি দূর্যোগ। এ দূর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আমাদের দাঁড়াতে হবে, তাদের পরিবারকে রক্ষা করতে হবে। সাহায্যের হাত নিয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী, বিত্তবান, আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। তবেই তাদের পক্ষে এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে।

ইসলাম মানবতার ধর্ম। মানবতার মুক্তির দূত হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানবতার মুক্তির জন্য সারা জীবন ব্যয় করেছেন। পৃথিবীর যেখানেই মানবতা ভূলুণ্ঠিত হয়েছে, অসহায় মানবতার আর্তচিৎকারে আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত হয়েছে, সেখানেই সেবার ব্রত নিয়ে এগিয়ে গেছে ইসলামপ্রিয় মুসলিম ভাইয়েরা।

অসহায়, ক্ষুধার্তদের হক আদায়ের ব্যাপারে ইসলাম স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে। হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি পেট পুরে খায়, আর পাশেই প্রতিবেশী ক্ষুধার্ত অবস্থায় দিন কাটায় সে প্রকৃত মুমিন নয়।’

অপর হাদিসে হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমরা পৃথিবীবাসীর প্রতি অনুগ্রহ প্রদর্শন করো, তাহলে আসমানের অধিবাসীও তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করবেন।’

অন্য হাদিসে এসেছে, ‘সমগ্র সৃষ্টিজীবই আল্লাহর পরিবারের মতো, আর সর্বোত্তম হলো- ওই ব্যক্তি যে তার পরিবারের প্রতি সদাচরণ করে।’

ইসলাম বা মুসলমানরা শুধু থিওরি বা দৃষ্টিভঙ্গি পেশ করে না। বরং তারা নিজেরাই আর্তমানবতার সেবায় ঝাঁপিয়ে পড়ে। ইসলামের ইতিহাস তার প্রমাণ বহন করে যুগে যুগে ইসলাম ও মুসলমানরা প্রমাণ করেছে, ইসলাম মানবতার ধর্ম। আমরা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনীর দিকে যদি তাকাই তাহলে দেখতে পাবো তিনি কীভাবে আর্তমানবতার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেছেন এবং সাহাবায়ে কেরামদের শিক্ষা দিয়েছেন।

তাই তো রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সব সাহাবায়ে কেরাম নিজেদের আর্তমানবতার সেবায় নিয়োজিত রেখেছেন। হিজরতের পরবর্তী সময়ে মক্কার আনসাররা কীভাবে মুহাজির ভাইদের প্রতি সহানুভূতি, সহমর্মিতা প্রদর্শন করেছেন। শুধু এতটুকুই নয়, নিজেরা ক্ষুধার্ত, অসহায়, দরিদ্র হওয়া সত্ত্বেও খাবার ও থাকার মূল অংশ অপর ভাইয়ের জন্য দিয়ে দিয়েছেন। নিজেরা মুমূর্ষু, প্রচণ্ড পিপাসার্ত হওয়ার পরও নিজের খাদ্য ও পানীয় অপর ভাইয়ের জন্য বিলিয়ে দেওয়ার যে নজির স্থাপন করেছেন, তার নমুনা ইতিহাসের পাতায় বিরল।

আমরাও রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামদের অনুসরণ করে ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত ভাই-বোনদের সেবায় আত্মনিয়োগ করি। সাধ্যানুযায়ী তাদের সাহায্য-সহযোগিতা করি। যারা অর্থ দিয়ে সহায়তা করতে পারি, তারা যেন এগিয়ে আসি।

আসুন, একে অপরের পাশে দাঁড়াই। মহান আল্লাহ তার রহমত ও বরকতে আমাদের এই ক্ষতিপূরণ পুষিয়ে নেওয়ার তওফিক দান করুন। আমিন!

লেখক : আলেম, প্রাবন্ধিক ও কলেজ শিক্ষক।

;

হজের খতিব শায়েখ মাহের, কে তিনি?



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মাহের বিন হামাদ বিন মুয়াক্বল আল মুয়াইকিলি, ছবি: সংগৃহীত

মাহের বিন হামাদ বিন মুয়াক্বল আল মুয়াইকিলি, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গত বছরের আগস্ট মাসের ১১ তারিখ এক অভাবনীয় ঘটনার সাক্ষী হয় পবিত্র কাবা প্রাঙ্গণ। ওই দিন কাবা শরিফে জুমার নামাজ পড়ান ২ জন ইমাম। খুতবার পর নির্ধারিত খতিব শায়েখ মাহের আল-মুয়াইকিলি নামাজ শুরু করলেও তা সম্পন্ন হয়েছে শায়েখ আবদুর রহমান আস-সুদাইসের ইমামতিতে। মূলত শায়খ মুয়াইকিলি অসুস্থ হওয়ায় এমনটি ঘটে।

এবার পবিত্র কাবার সেই ইমাম ও খতিব শায়েখ ড. মাহের বিন হামাদ বিন মুয়াক্বল আল মুয়াইকিলি হজের খতিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।

অসাধারণ কোরআন তেলাওয়াতের জন্য বিশ্বব্যাপী দারুণ জনপ্রিয় শায়েখ মাহের হজের খতিব হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।

সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি শায়েখ আবদুল আজিজ আলে শায়খ ১৪৩৬ হিজরিতে সর্বশেষ হজের খুতবা দেন। এর পর থেকে প্রতিবছর একজন করে হজের খতিব নিয়োগ দেওয়া হয়। মসজিদে হারামের খতিব হিসেবে শায়েখ মাহের হলেন হজের খুতবা দেওয়া তৃতীয় ইমাম। এর আগে ১৪৩৭ হিজরিতে (২০১৬ সালে) হজের খুতবা দেন মসজিদে হারামের প্রধান খতিব শায়েখ ড. আবদুর রহমান আস সুদাইস ও ১৪৪২ হিজরিতে (২০২১ সালে) হজের খুতবা প্রদান করেন মসজিদে হারামের ইমাম ও খতিব শায়েখ বানদার বিন আবদুল আজিজ বালিলা।

আরও পড়ুন: হজের নতুন খতিব শায়খ মাহের আল মুয়াইকিলি

১৪২৮ হিজরিতে মসজিদে হারামের ইমাম ও খতিব হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। ৫৪ বছর বয়সী বিখ্যাত এই আলেম পবিত্র কাবার ইমাম হিসেবে ১৫ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করছেন। ড. মাহের আল মুয়াইকিলি ১৯৬৯ সালের সাত জানুয়ারি সৌদি আরবের মদিনা মোনাওরায় জন্মগ্রহণ করেন।

হিফজ সম্পন্ন করার পর মদিনার টিসার্স কলেজে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে একজন গণিতের শিক্ষক হিসেবে ব্যাচেলর ডিগ্রি অর্জন করেন।

১৪২৫ হিজরিতে মক্কার উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শরিয়া অনুষদ থেকে তিনি মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। এখানে তার বিষয় ছিল, ‘ফিকহুল ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল’ তথা ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বলের ইলমে ফিকহ।’

একই প্রতিষ্ঠান থেকে ১৪৩২ হিজরিতে ইমাম সিরাজি (রহ.) রচিত শাফেয়ি মাজহাবের কিতাব ‘তুহফাতুন নাবিহ শারহুত তানবিহ’র ওপর ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন।

শায়েখ মাহের কর্মজীবন শুরু করেন উম্মুল কুরার জুডিশিয়াল স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে।

১৪২৬-২৭ হিজরির রমজানে মদিনার মসজিদে নববিতে সহকারী ইমামের দায়িত্ব প্রাপ্ত হন। পরের বছর (১৪২৮) রমজান মাসে মসজিদে হারামের তারাবি ও তাহাজ্জুদের ইমাম মনোনীত হন। ওই বছরই আনুষ্ঠানিকভাবে মসজিদে হারামের স্থায়ী ইমাম ও খতিবের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এখনও তিনি এ পদে সমাসীন রয়েছেন।

ড. মাহের আল মুয়াইকিলি দুই ছেলে ও দুই মেয়ের বাবা। তাদের সবাই হাফেজে কোরআন। নম্র-ভদ্র এবং অমায়িক ব্যবহারের জন্য শায়েখ মাহের সর্বমহলে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত। চমৎকার উচ্চারণ আর অনবদ্য কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ কোরআনপ্রেমীরা। পবিত্র কাবা প্রাঙ্গণে জুমার খুতবা দেওয়াসহ তিনি নিয়মিত বিভিন্ন ওয়াক্তের নামাজের ইমামতি করেন।

;

হজের নতুন খতিব শায়খ মাহের আল মুয়াইকিলি



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
শায়খ মাহের আল মুয়াইকিলি, ছবি: সংগৃহীত

শায়খ মাহের আল মুয়াইকিলি, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি বছর আরাফাতের ময়দানে হজে অংশগ্রহণকারী মুসলিম উম্মাহর উদ্দেশে খুতবা দেবেন মসজিদে হারামের ইমাম ও খতিব শায়খ ড. মাহের বিন হামাদ আল মুয়াইকিলি। আগামী ৯ জিলহজ আরাফাতের ময়দানে হজের খুতবা দেবেন তিনি।

সম্প্রতি সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ এক রাজকীয় ফরমানে তাকে আরাফাতের দিনে খুতবা দেওয়ার জন্য অনুমোদন দেন।

অসাধারণ কোরআন তেলাওয়াতের জন্য বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় শায়খ মাহের আল মুয়াইকিলি। ১৪২৮ হিজরিতে মসজিদে হারামের ইমাম ও খতিব হিসেবে যুক্ত হন তিনি।

ড. মাহের আল মুয়াইকিলি ১৯৬৯ সালের সাত জানুয়ারি সৌদি আরবের মদিনা মোনাওরায় জন্মগ্রহণ করেন। হেফজ সম্পন্ন করার পর মদিনার টিসার্স কলেজে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে একজন গণিতের শিক্ষক হিসেবে ব্যাচেলর ডিগ্রি অর্জন করেন।

১৪২৫ হিজরিতে মক্কার উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শরিয়া অনুষদ থেকে তিনি মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। তার বিষয় ছিল, ‘ফিকহুল ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল’ তথা ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বলের ইলমে ফিকহ।’

একই প্রতিষ্ঠান থেকে ১৪৩২ হিজরিতে ইমাম সিরাজি (রহ.) রচিত শাফেয়ী মাজহাবের কিতাব ‘তুহফাতুন নাবিহ শারহুত তানবিহ’র ওপর ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন।

তার কর্মজীবন শুরু হয় উম্মুল কুরার জুডিশিয়াল স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে।

শায়খ মাহের আল মুয়াইকিলি আরাফাতের দিনের ইমাম হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন হারামাইন শরিফাইনের পরিচালনা পর্ষদের প্রধান ড. শায়খ আবদুর রহমান আস-সুদাইস। এ সময় তিনি তার সফলতা কামনা করেন।

সৌদির স্থানীয় সময় আগামী ৯ জিলহজ আরাফাতের ময়দানে অবস্থিত মসজিদে নামিরা থেকে শায়খ মাহের আল মুয়াইকিলি হাজিদের উদ্দেশে খুতবা দেবেন। খুতবা শেষে মসজিদে নামিরায় এক আজান ও দুই ইকামতে জোহর এবং আসরের নামাজ পড়াবেন। তিনি সবসময় সহজ ভাষায় এবং হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে খুতবা প্রদান করেন।

এই আরাফাতের ময়দানেই নবী মোহাম্মদ (সা.) বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন।

;

হজযাত্রা নিশ্চিতে হাবের উদ্যোগ প্রশংসিত



মুফতি এনায়েতুল্লাহ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর, বার্তা২৪.কম
হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম, ছবি: বার্তা২৪.কম

হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

হজযাত্রীদের কল্যাণে হাব সর্বদা নিরলস ও সততার সঙ্গে কাজ করছে। এক কথায়, হজযাত্রীদের সেবা নিশ্চিত, বিড়ম্বনাহীন ও স্বাচ্ছন্দপূর্ণ হজযাত্রা নিশ্চিত করার জন্য হাব নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

বার্তা২৪.কম-এর সঙ্গে একান্ত আলাপে হজ এজেন্সি মালিকদের সংগঠন হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম এমন মন্তব্য করেছেন।

হজফ্লাইট শুরুর পর থেকে আশকোনা হজ ক্যাম্পে হজযাত্রীদের সুবিধাদি নিশ্চিত ও বিড়ম্বনাহীন হজযাত্রার লক্ষ্যে এম শাহাদাত হোসাইন তসলিমের তৎপরতা আলাদাভাবে নজর কেড়েছে। অতীতের যেকোনো বছরের তুলনায় এবারের ব্যবস্থাপনা নিয়ে অভিযোগ অনেক কম পাওয়া যাচ্ছে। হজযাত্রার শেষ দিকে এসে কিছু হজ এজেন্সির নানাবিধ অনিয়মের কথা শোনা গেলেও স্বস্তির বিষয় হলো, ধর্ম মন্ত্রণালয় এবং হাবের প্রচেষ্টায় অনেকটা নিরসনের পথে।

হজ ব্যবস্থাপনা ও বাংলাদেশ থেকে হজযাত্রার নানা প্রসঙ্গ নিয়ে এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, ‘প্রত্যেক এজেন্সির হজযাত্রীদের সংখ্যা অনুসারে হজের ধারাবাহিক কাজগুলো সঠিকভাবে সমাধান হচ্ছে কিনা, সে বিষয়টি প্রত্যেক এজেন্সিকে আলাদা আলাদাভাবে মনিটরিং করি। হজযাত্রীদের ভিসার জন্য কি কি ধারাবাহিকতা সম্পন্ন করতে হয় এবং কোন কোন ধাপ কখন কিভাবে করতে হয় তা আমরা জানি এবং সে মোতাবেক প্রত্যেকটি এজেন্সিকে মনিটরিং করা হয়। যে কারণে বর্তমান হজ ব্যবস্থাপনা শৃঙ্খলায় ফিরে এসেছে।’

হজ যাত্রীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করছেন এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম, ছবি: সংগৃহীত

কোনো হজ এজেন্সি কর্তৃক যাতে আল্লাহর মেহমান হজযাত্রীদের কোনো অধিকার লঙ্ঘিত না হয়, হাব সে বিষয়ে সদা তৎপর। যদি কোনো হজ এজেন্সি এর ব্যত্যয় করে, তাহলে তাকে যথাযথ শাস্তি দেওয়া হয় এবং এ বিষয়ে হাব কঠোর ভূমিকা পালন করে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘হাব তার সদস্যদেরকে সর্বদা মনিটরিংয়ের মধ্যে রাখে। যে কারণে এবার হজের টাকা নিয়ে লাপাত্তা হওয়ার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। ইহরাম গায়ে জড়িয়ে কোনো হজযাত্রীকে চোখের পানি ফেলতে হয়নি, হজযাত্রীদের মিছিল করতে হয়নি।’

চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে ব্যবস্থাপনাসহ হজযাত্রীর সংখ্যা ৮৫ হাজার ১১৭ জন। এরমধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীর সংখ্যা ৪ হাজার ৫৬২ এবং বেসরকারি হজযাত্রীর সংখ্যা ৮০ হাজার ৬৯৫ এই বিপুল সংখ্যক হজযাত্রীর হজ ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করছে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত ২৫৯টি হজ এজেন্সি। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত সর্বশেষ (২৭ মে) বুলেটিনের তথ্যমতে ৪৫ হাজার ৪৩ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন।

সৌদি সরকারের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বেশিরভাগ এজেন্সি প্রয়োজনীয় কাজ শেষে ভিসা করাতে পেরেছে কয়েকটি এজেন্সি পারেনি, এর কারণ কি। এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘ভিসা প্রক্রিয়া এখনও চলমান, প্রায় সব ভিসা হয়ে গেছে। সামান্য কিছু ভিসা সবসময়ই থেকে যায়। কারণ সবযাত্রী হজে গমন করেন না বা করতে পারেন না। কেউ মৃতুজনিত কারণে, অসুস্থতা বা স্বেচ্ছায় যাওয়া নিজের বা পরিবারের যাত্রা বাতিল করেন। এ কারণে কিছু সংখ্যক লোক হজে গমন না করা এটা স্বাভাবিক ঘটনা।’

এবারও কয়েকটি এজেন্সির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, দেখা গেছে মধ্যস্বত্বভোগী ও ভাড়াটে হজ মুয়াল্লিম হজ ব্যবস্থাপনার বিশৃঙ্খলার জন্য দায়ি, এটা নিরসনের কি কোনো পথ নেই?

জবাবে হাব সভাপতি বলেন, ‘তথাকথিত কাফেলা বা মোয়াল্লেম নামক মধ্যস্বত্বভোগী বর্তমান হজ ব্যবস্থাপনায় প্রধান অন্তরায়। বিশেষ করে গ্রামের সহজ-সরল হজযাত্রীদের থেকে কমমূল্যে হজে নেওয়ার কথা বলে প্রলুব্ধ করে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হজযাত্রীরা বিড়ম্বনা বা প্রতারণার শিকার হন। এসব মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্মরোধে ধর্ম মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও হাব মিলে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। দেশব্যাপী তাদের তালিকা করে নির্মূল করা বা আইনের কাঠামোতে নিয়ে আসার বিষয়ে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য শীঘ্রই কাজ শুরু করা হবে।

হজ ক্যাম্পে হাজিরা সৌদি গমনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, ছবি: বার্তা২৪.কম

হাব হজযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে কিভাবে কাজ করছে?

এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, ‘বাংলাদেশের হজযাত্রীদের প্রায় ৯৫ ভাগ হাব সদস্যদের মাধ্যমে হজে গমন করেন। হাব সদস্যরা এই বিশাল সংখ্যক হজযাত্রীর সেবা প্রদানে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। হজ একটি দ্বিরাষ্ট্রিক বিষয়। মিনা, আরাফাত ও মুজদালিফায় হজযাত্রীদের সেবা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সৌদি সরকারের, সেখানে বহু প্রতিকূলতার মাঝেও হজযাত্রীদের সেবা নিশ্চিত করতে হাব সদস্যরা কঠোর পরিশ্রম করেন। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের হাব সদস্যরা ব্যক্তিগতভাবে সেবা শুশ্রুষা করেন, তাদের সার্বিক বিষয়াদি দেখভাল করেন, অসুস্থ হলে ক্লিনিকে নিয়ে যান, মিনা ও আরাফাতের তাঁবুসহ মুজাদিলফায় ব্যক্তিগতভাবে তাদের দেখাশোনা ইত্যাদি কাজগুলো হাব সদস্যরা করে থাকেন। তাছাড়া বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের বাংলাদেশি বাবুর্চি দ্বারা রান্না করা উপাদেয় খাবার সরবরাহ করেন। এগুলোর কারণে হজব্যবস্থাপনায় বেসরকারিভাবে হজযাত্রীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক হজযাত্রীদের কল্যাণে হাব নিরলস ও সততার সঙ্গে কাজ করছে।’ 

তিনি বলেন, ‘হজ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ ও সৌদি দুটি পর্ব আছে। হজের ভিসা হওয়ার জন্য প্রত্যেক হাজির বিপরীতে মিনায় তাঁবুর স্থান বুকিং নিশ্চিত, সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বুকিং নিশ্চিত, ক্যাটারিং বুকিং নিশ্চিত, গাড়ী বুকিং নিশ্চিত, মক্কা ও মদিনায় হোটেল বুকিং ইত্যাদি নিশ্চিতের পর ভিসার আবেদন করতে হয়। ভিসা হওয়ার পর বিমান টিকিট করে তাদেরকে সৌদি আরব প্রেরণ করা হজের বাংলাদেশ পর্বের মূল কাজ। হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছার পর তাদের প্যাকেজ মোতাবেক হোটেল প্রাপ্তি, খাওয়া ও মিনা আরাফাত ও মুজদালিফায় সেবা ইত্যাদি নিশ্চিত করে হজযাত্রীদের ভালোভাবে হজের পর বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হজের সৌদি পর্বের কাজ। আমরা সেই চেষ্টাটাই করছি।’

;