কেন ২০২৩ পশ্চিমের জন্য একটি অস্বস্তিকর বছর ছিল?



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
রাশিয়ার অবস্থানে মর্টার নিক্ষেপ করছে ইউক্রেনের সেনারা। ছবি : সংগৃহীত

রাশিয়ার অবস্থানে মর্টার নিক্ষেপ করছে ইউক্রেনের সেনারা। ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি ১২ মাস আন্তর্জাতিক রাজনীতির মঞ্চে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশ বেশ কয়েকটি ধাক্কা খেয়েছে। ওই ধাক্কা কারও জন্যই আপাতত বিপর্যয়কর হয়নি, কিন্তু এটি মার্কিন-আধিপত্য, পশ্চিমা মূল্যবোধ থেকে দূরে থাকা ক্ষমতার ভারসাম্যের দিকে ইঙ্গিত করেছে, যা বছরের পর বছর ধরে বিশ্ব রাজনীতিতে প্রভাব ফেলেছে।

বিশ্বের অনেক ফ্রন্টে পশ্চিমা স্বার্থে হাওয়া বইছে ভুল দিকে। বিবিসি অবলম্বনে সেসব বিষয় নিম্নে আলোচিত হলো:

ইউক্রেন

কৃষ্ণসাগরে সাম্প্রতিক কিছু সাফল্য সত্ত্বেও যুদ্ধ ইউক্রেনের পক্ষে যাচ্ছে না। এর মানে, বর্ধিত মাধ্যমে এটি ন্যাটো এবং ইইউয়ের জন্য খারাপভাবে যাচ্ছে, যারা ইউক্রেনের যুদ্ধ প্রচেষ্টা এবং তার অর্থনীতিকে কয়েক বিলিয়ন ডলারের জন্য ব্যাঙ্করোল করেছে।

গত বছর ন্যাটোতে আশা ছিল বেশি যে, নিবিড় প্রশিক্ষণের সঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলোর সরবরাহ করা আধুনিক সামরিক সরঞ্জাম হাতে পেয়ে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী সাফল্য ঘরে তুলতে পারবে এবং রাশিয়ার দখল করা তাদের বেশিরভাগ অঞ্চল তারা পুনরুদ্ধার করবে। কিন্তু, বাস্তবে সেটা হয়নি।

কারণ, ব্রিটেনের চ্যালেঞ্জার ২ এবং জার্মানির লেপার্ড ২-এর মতো আধুনিক যুদ্ধ ট্যাঙ্কগুলো ইউক্রেনে পাঠানোর সাহস নিয়ে ন্যাটো দেশগুলো তাদের চিন্তা-ভাবনা করতে অনেক সময় নিয়েছে। এই বিষয়টি ভ্লাদিমির পুতিনকে এক ধরণের প্রতিশোধের জন্য উস্কে দিয়েছে বলা যায়।

শেষ পর্যন্ত পশ্চিমারা যখন ট্যাঙ্ক সরবরাহ করেছিল, তখন পুতিন কিছুই করেননি। কিন্তু, জুনে যখন তারা যুদ্ধক্ষেত্রে মোতায়েন করার জন্য প্রস্তুত ছিল, রাশিয়ার কমান্ডোরা মানচিত্রটি দেখে সঠিকভাবে অনুমান করেছিলেন যে, ইউক্রেনের প্রধান প্রচেষ্টা কোথায় হতে চলেছে।

ইউক্রেন ভেবেছিল, জাপোরিঝিয়া ওব্লাস্টের মধ্য দিয়ে দক্ষিণে আজভ সাগরের দিকে অগ্রসর হয়ে রাশিয়ার কন্ট্রোল লাইনকে দুই ভাগে বিভক্ত করে ক্রিমিয়াকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে।

২০২৩ সালের প্রথমার্ধে যখন ইউক্রেনীয় ব্রিগেডরা ব্রিটেনে এবং অন্য কোথাও প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল এবং যখন ট্যাঙ্কগুলোকে সামনের দিকে পূর্ব দিকে পাঠানো হচ্ছিল, তখন রাশিয়া আধুনিক যুদ্ধ ইতিহাসের সবচেয়ে বড়, সবচেয়ে বিস্তৃত প্রতিরক্ষামূলক দুর্গের লাইন তৈরি করছিল।

রাশিয়ার অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক মাইন, অ্যান্টি-পারসনেল মাইন, বাঙ্কার, ট্রেঞ্চ, ট্যাঙ্ক ফাঁদ, ড্রোন এবং আর্টিলারি-সবই ইউক্রেনের পরিকল্পনাকে ব্যর্থ করে দেয় এবং কিয়েভের বহুমুখী পাল্টা আক্রমণ ব্যর্থ হয়।

স্পষ্টতই এই পরিস্থিতি ইউক্রেনের জন্য গভীরভাবে হতাশাজনক। ন্যাটো তাদের অস্ত্রশস্ত্র খালি করেছে এবং তার মিত্র ইউক্রেনকে সমর্থন করার জন্য সরাসরি যুদ্ধে যাওয়া ছাড়া সবকিছুই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করেছে। রাশিয়ান আগ্রাসনকে প্রতিহত করতে একটি বিব্রতকর ব্যর্থতায় সম্ভাব্য সব শেষ।

ভ্লাদিমির পুতিন

আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একজন ওয়ান্টেড মানুষ।

২০২৩ সালের মার্চ মাসে তিনি ইউক্রেনীয় শিশুদের বিরুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের জন্য তার শিশু অধিকার কমিশনারের সঙ্গে হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের দ্বারা অভিযুক্ত হন।

পশ্চিমারা আশা করেছিল যে এটি তাকে একটি আন্তর্জাতিক অঙ্গণে বেকায়দায় ফেলবে এবং তাকে তার নিজের দেশে আটকে রাখবে। কারণ, পুতিন গ্রেপ্তার এবং হেগে নির্বাসনের ভয়ে কোথাও ভ্রমণ করতে পারবে না। কিন্তু সেটা হয়নি।

ওই অভিযোগের পর থেকে পুতিন কিরগিজস্তান, চীন, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং সৌদি আরবে গেছেন এবং সব দেশেই লাল গালিচা স্বাগত পেয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্রিকস সম্মেলনেও কার্যত অংশ নিয়েছেন তিনি।

একের পর এক ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার অর্থনীতিকে নতজানু হওয়ার কথা ছিল, যা পুতিনকে তার আগ্রাসন ফিরিয়ে আনতে বাধ্য করবে বলে ভাবা হয়েছিল। কিন্তু, রাশিয়া ওই নিষেধাজ্ঞাগুলোর প্রতি উল্লেখযোগ্যভাবে স্থিতিস্থাপক বলে প্রমাণিত হয়েছে। চীন এবং কাজাখস্তানের মতো অন্যান্য দেশের মাধ্যমে অনেক পণ্য সরবরাহ করছে মস্কো।

এটা সত্য যে, পশ্চিমারা মূলত রাশিয়ান তেল ও গ্যাস থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে, কিন্তু মস্কো কম দামে হলেও অন্যান্য ইচ্ছুক অনেক গ্রাহক খুঁজে পেয়েছে।

বাস্তবতা হলো, যদিও পুতিনের আগ্রাসন এবং ইউক্রেনের নৃশংস দখলদারিত্ব পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে ঘৃণ্য, এটি মূলত বাকি বিশ্বের কাছে নয়। কারণ, অনেক দেশ এটিকে ইউরোপের সমস্যা হিসেবে দেখে।

কেউ কেউ ন্যাটোকে দোষারোপ করে বলেছে, এটি নিজেকে পূর্বে অনেক দূর পর্যন্ত প্রসারিত করে রাশিয়াকে উস্কে দিয়েছে।

গাজা

ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ স্পষ্টতই সমস্ত গাজাবাসীর জন্য এবং ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের হত্যাকাণ্ডের দ্বারা প্রভাবিত ইসরায়েলিদের জন্য বিপর্যয়কর। এটি পশ্চিমের জন্যও খারাপ হয়েছে।

এটি ন্যাটোর মিত্র ইউক্রেন থেকে বিশ্বব্যাপী মনোযোগ সরিয়ে নিয়েছে। কারণ, এটি এই শীতে রাশিয়ার অগ্রগতি রোধ করতে লড়াই করছে। এটি কিয়েভ থেকে মার্কিন যুদ্ধাস্ত্রগুলোকে ইসরায়েলের পক্ষে সরিয়ে দিয়েছে।

কিন্তু সর্বোপরি বিশ্বের অনেক মুসলমান এবং অন্যান্যদের দৃষ্টিতে, এটি জাতিসংঘে ইসরায়েলকে রক্ষা করে গাজা ধ্বংসের জন্য যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যকে জড়িত করে তুলেছে। রাশিয়া, যার বিমানবাহিনী সিরিয়ার আলেপ্পো শহরে কার্পেট বোমা মেরেছে, ৭ অক্টোবর থেকে মধ্যপ্রাচ্যে তার স্টক বেড়েছে।

যুদ্ধ ইতিমধ্যেই দক্ষিণ লোহিত সাগরে ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে ইরান-সমর্থিত হুথিরা জাহাজে বিস্ফোরক ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। কারণ, বিশ্বের প্রধান শিপিং কোম্পানিগুলো আফ্রিকার দক্ষিণ প্রান্তের সব পথ ঘুরিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছে।

ইরান

ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সন্দেহের মধ্যে রয়েছে, যা তারা অস্বীকার করে আসছে। তবুও পশ্চিমা প্রচেষ্টা সত্ত্বেও দেশটিকে বিচ্ছিন্ন করা তো অনেক দূরে, প্রক্সি মিলিশিয়াদের মাধ্যমে ইরাক, সিরিয়া, লেবানন, ইয়েমেন এবং গাজাজুড়ে সামরিক তাঁবু প্রসারিত করেছে তেহরান।

ইরান চলতি বছর মস্কোর সঙ্গে একটি সর্বদা ঘনিষ্ঠ জোট গঠন করেছে, যার আওতায় ইউক্রেনের শহর এবং শহরগুলোতে হামলার জন্য শাহেদ ড্রোনগুলো সরবরাহ করে থাকে।

বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ দ্বারা একটি প্রতিকূল হুমকি হিসাবে মনোনীত হলেও মধ্যপ্রাচ্যে নিজেকে অবস্থান শক্ত করে গাজা যুদ্ধ থেকে উপকৃত হয়েছে ইরান।

আফ্রিকার সাহেল

একের পর এক, পশ্চিম আফ্রিকার সাহেল অঞ্চলের দেশগুলো সামরিক অভ্যুত্থানের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে, যা এই অঞ্চলে জিহাদি বিদ্রোহের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তাকারী ইউরোপীয় বাহিনীকে বহিষ্কার করেছে।

মালি, বুরকিনা ফাসো এবং মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রের মতো সাবেক ফরাসি উপনিবেশগুলো ইতিমধ্যেই ইউরোপীয়দের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে গত জুলাই মাসে।

তখনও আরেকটি অভ্যুত্থান নাইজারে একজন পশ্চিমাপন্থী প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল। সর্বশেষ ফরাসি সেনারা নাইজার ছেড়েছে, যদিও ৬০০ মার্কিন সেনা সেখানে দুটি ঘাঁটিতে রয়ে গেছে।

এদিকে, এক সময় পশ্চিমা মিত্র হিসেবে দেখা দক্ষিণ আফ্রিকা রুশ ও চীনা যুদ্ধজাহাজের সঙ্গে যৌথ নৌমহড়া চালিয়ে আসছে।

উত্তর কোরিয়া

গণতান্ত্রিক গণপ্রজাতন্ত্রী কোরিয়ার নিষিদ্ধ পারমাণবিক অস্ত্র এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির কারণে কঠোর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার অধীনে থাকার কথা।

তবুও এই বছর দেশটি রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করেছে। দেশটির নেতা কিম জং-উন রাশিয়ার একটি মহাকাশ বন্দর পরিদর্শন করেছেন। তারপরে উত্তর কোরিয়া ইউক্রেনে যুদ্ধরত রাশিয়ান বাহিনীর কাছে প্রায় মিলিয়ন আর্টিলারি শেল সরবরাহ করেছে।

উত্তর কোরিয়া বেশ কয়েকটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে, যা এখন মহাদেশীয় যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ অংশে পৌঁছাতে সক্ষম বলে মনে করা হচ্ছে।

চীন

২০২৩ সালে সান ফ্রান্সিসকোতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং শি’র মধ্যে একটি সফল শীর্ষ বৈঠকের মাধ্যমে বেইজিং এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে উত্তেজনা কিছুটা হলেও হ্রাস পেয়েছে।

কিন্তু দক্ষিণ চীন সাগরের বেশিরভাগ অংশের উপর তার দাবি থেকে সরে আসার কোনও প্রমাণ প্রদর্শণ করেনি চীন। উল্টো একটি নতুন মানচিত্র প্রকাশ করেছে বেইজিং, যাতে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় কয়েকটি দেশের উপকূলরেখা পর্যন্ত তার অঞ্চলগুলো প্রসারিত করেছে।

চীন প্রয়োজনে বলপ্রয়োগ করে তাইওয়ানকে একত্রীকরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

   

আইসিসির গ্রেফতারের শঙ্কায় আতঙ্কে নেতানিয়াহু



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গাজায় থামছে না ইসরায়েলের আক্রমণ। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নির্দেশে প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। বিশ্বজুড়ে চলমান আন্দোলনকে তোয়াক্কা করছে না ইসরায়েল সেনাবাহিনী। অন্যদিকে, ফিলিস্থিনপন্থী বিশ্বনেতাদের ডাকেও কানে আঙুল দিয়ে বসে আছে তেল আবিব।

আন্তর্জাতিক আইনকে অমান্য করে নির্বিচারে চালানো হচ্ছে হত্যা, নির্যাতন ও ধ্বংসযজ্ঞ। নারী-শিশুসহ তিলে তিলে শেষ করা হচ্ছে অবরুদ্ধ অঞ্চলটিকে। অন্যদিকে ইসরায়েলের এমন কর্মকাণ্ডেও কিছু করতে পারছে না বিশ্ব।

তবে এবার জানা যাচ্ছে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করতে পারে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।

দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে শনিবার (২৭ এপ্রিল) এমনটাই বলা হয়েছে। দ্যা নিউ আরব অনুসারে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রের বরাত দিয়ে মারিভ পত্রিকা জানিয়েছে, আইসিসির গ্রেফতারি পরোয়ানার আশঙ্কায় অত্যন্ত চাপে এবং আতঙ্কের মধ্যে আছেন নেতানিয়াহু।

শুধু নেতানিয়াহু নন, তার বিশিষ্ট কিছু কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও এই গ্রেফতারি নোটিশ আসতে পারে বলে ইসরায়েলের মিডিয়ায় প্রতিবেদন প্রকাশ পেয়েছে।

ইসরায়েলের মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট এবং আর্মি চিফ অব স্টাফ হার্জি হালেভির নাম সেই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত থাকবে। সেই সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করার জন্য সিনিয়র সরকারী কর্মকর্তারা এ সপ্তাহে তেল আবিবে জরুরি বৈঠক করেছেন।

এরই মধ্যে গ্রেফতারি পরোয়ানা ঠেকাতে নেতানিয়াহু আন্তর্জাতিক বন্ধুদের, বিশেষ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। কখন গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হতে পারে, তা স্পষ্ট নয় এবং এই ধরনের তথ্য প্রকাশ করা আদালতের জন্য আদর্শ নয়।

তবে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার আশঙ্কা প্রথম বৃহস্পতিবার মার্কিন ট্যাবলয়েড নিউইয়র্ক পোস্টে ব্রিটিশ-ইসরাইলপন্থী ভাষ্যকার ডগলাস মারে একটি মতামতের অংশে প্রচার করেছিলেন।

মারে লিখেছেন, কয়েকদিনের মধ্যে ওয়ারেন্ট জারি হতে পারে। এতে নেতানিয়াহু অবিলম্বে বিচারের মুখোমুখি হবেন না। তবে এটি প্রধানমন্ত্রীর জন্য বিশ্বমঞ্চে একটি বড় ধাক্কা এবং ইসরায়েলের মিত্র ও আইসিসি সদস্যদের ওপর কাজ করার জন্য চাপ সৃষ্টি করবে।

এর আগে শুক্রবার এক এক্সবার্তায় নেতানিয়াহু লিখেছেন, ‘ইসরায়েলের সহজাত ও আত্মরক্ষার অধিকার খর্ব হয়, আইসিসির এমন কোনো প্রচেষ্টা আমার নেতৃত্বে এ দেশটি মেনে নেবে না। মধ্যপ্রাচ্যের একমাত্র গণতন্ত্র ও বিশ্বের একমাত্র ইহুদি রাষ্ট্রের সামরিক কর্মকর্তাদের জব্দ করার হুমকি আপত্তিজনক। আমরা এর কাছে কখনো মাথা নত করব না।’

গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের জন্য এ ধরনের ওয়ারেন্টের অর্থ কী হবে, তা নিয়ে সিনিয়র ইসরায়েলি কর্মকর্তারা উদ্বিগ্ন বলে জানা গেছে।

ইসরায়েলের চ্যানেল ১৩ সম্প্রচারকারী কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, তারা বিশ্বাস করেন ট্রাইব্যুনাল জুনিয়র সেনাদের পরিবর্তে নীতিনির্ধারকদের টার্গেট করবে।

;

বিয়ে করার জন্য ২ সপ্তাহের মুক্তি পেলেন হত্যা মামলার আসামি



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হত্যা মামলার এক আসামিকে বাগদান ও বিয়ে করার জন্য দুই সপ্তাহের প্যারোলে মুক্তি দিয়েছেন দিল্লি হাইকোর্ট।

রোববার ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেল এনডিটিভি এ খবর প্রকাশ করে জানায়, এর আগেও ওই ব্যক্তি প্যারোলে মুক্তি পেয়ে যথাসময়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করেছিলেন।

তার কাজের প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে দিল্লি হাইকোর্ট যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি রাহুল দেবকে দুই সপ্তাহের জন্য প্যারোলে মুক্তি দিয়েছেন।

এ বিষয়ে বিচারপতি অমিত শর্মা বলেন, তার সামগ্রিক কাজ এবং এর আগে তিনি প্যারোলে মুক্তির পর সময়মতো আদালতে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। সে কারণে বিয়ে করার জন্য তাকে দুই সপ্তাহের জন্য প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হলো।

রাহুল দেব চার সপ্তাহের প্যারোলে মুক্তি চাইলে উচ্চ আদালত তাকে দুই সপ্তাহের প্যারোলে মুক্তি দিতে রাজি হয়। আগামী ৩০ এপ্রিল আর্য সমাজ মন্দিরে রাহুল দেবের বিয়ে হওয়ার দিন ধার্য রয়েছে।

এর আগে হাইকোর্ট রাহুল দেবকে ২৯ জানুয়ারি থেকে ৫ মার্চ পর্যন্ত প্যারোলে মুক্তি দিয়েছিল এবং ৬ মার্চ তিনি যথাসময়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। ২০১৪ সালে হত্যা মামলায় মিথ্যা তথ্য দেওয়া ও আলামত নষ্টের জন্য আদালত রাহুল দেবকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তিনি ১৪ বছর ৬ মাস ২৫ দিন ধরে মানডোলি জেলে বন্দি রয়েছেন। প্যারোল শেষে রাহুল দেবকে যথাসময়ে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

;

উপ-প্রধানমন্ত্রীর পদ হারানোয় থাই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

উপ-প্রধানমন্ত্রীর পদ হারানোয় থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পার্নপ্রি বাহিদ্ধা-নুকারা পদত্যাগ করেছেন।

স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাতে রোববার (২৮ এপ্রিল) এতথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মন্ত্রিসভায় রদবদলে উপ-প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব হারানোর পর পার্নপ্রি বাহিদ্ধা-নুকারা পদত্যাগের ঘোষণা দেন। দেশটির সরকারি রাজকীয় গেজেটে প্রকাশিত মন্ত্রিসভার তালিকায় দেখা যায়, পার্নপ্রি কেবল পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছেন। এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পাশাপাশি দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছিলেন তিনি।

থাই সরকারের একজন মুখপাত্র রয়টার্সকে বলেছেন, তিনি বিষয়টি জানার চেষ্টা করছেন।

থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন নেতৃত্বাধীন নতুন মন্ত্রিসভার অনুমোদন দিয়েছে থাইল্যান্ডের রাজা। মন্ত্রিসভায় রদবদল এনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পার্নপ্রি বাহিদ্ধা-নুকারাকে উপ-প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

;

ইরাকে নতুন আইন, সমকামী সম্পর্কে জড়ালে ১৫ বছরের জেল



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সমকামীতাকে 'অপরাধ' হিসেবে আখ্যা দিয়ে ইরাকের পার্লামেন্টে একটি আইন পাস হয়েছে। এমন অপরাধের শাস্তি হিসেবে ১৫ বছরের কারাদণ্ডের কথা বলা হয়েছে এই আইনে। ধর্মীয় মূল্যবোধকে সমুন্নত রাখার লক্ষ্যেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। এদিকে ইরাকের এমন সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো।

গতকাল শনিবার (২৮ এপ্রিল) পাস হওয়া আইনটির একটি অনুলিপি রয়টার্সের হাতে এসেছে। এতে বলা হয়েছে, নৈতিক অবক্ষয় ও বিশ্বগ্রাসী সমকামিতার আহ্বানের হাত থেকে ইরাকি সমাজকে রক্ষা করা এ আইন পাসের উদ্দেশ্য।

এই আইনটি দেশটির পার্লামেন্টের সংখ্যাগরিষ্ঠ শিয়া মুসলিম দলগুলোর পৃষ্ঠপোষকতায় পাস হয়েছে।

আইনে বলা হয়েছে, যৌনবৃত্তি ও সমলিঙ্গের সম্পর্ক অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। এমন কর্মকাণ্ডে জড়ালে ১০ বছর থেকে সর্বোচ্চ ১৫ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এমনকি যৌনবৃত্তি ও সমকামিতা প্রচারের জন্যও কমপক্ষে সাত বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

এর আগে অবশ্য এই আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান ছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর তীব্র নিন্দার কারণে সেই আইন সংশোধন করে এখন ১৫ বছরের শাস্তির বিধান করা হয়েছে।

এদিকে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এলজিবিটিকিউ রাইটস প্রোগ্রামের ডেপুটি ডিরেক্টর রাশা ইউনেস বলেছেন, ইরাকের পার্লামেন্টে এ আইন এলজিবিটিকিউ জনগণের বিরুদ্ধে অধিকার লঙ্ঘনের শামিল এবং এতে মৌলিক মানবাধিকার ক্ষুন্ন হবে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিবৃতিতে বলেছে, এই আইন পাস করা মানবাধিকার ও স্বাধীনতার জন্য হুমকি।

এদিকে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এই সংশোধনীকে বিপজ্জনক এবং উদ্বেগজনক উল্লেখ করে এক্সে লিখেছেন, ‘যিনি যেভাবে থাকতে চান, তাকে সেভাবে থাকতে দেওয়া উচিত। তাকে কারও লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা উচিত নয়।’

ইরাকের আইন প্রণেতা রায়েদ আল-মালিকি এএফপিকে বলেছেন, 'এই ধরনের কাজ থেকে সমাজকে রক্ষা করার জন্য এ আইনটি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসাবে কাজ করবে।'

বর্তমান বিশ্বে ৬০টির বেশি দেশে সমকামিতাকে আইনত অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয় বলে জানিয়েছে আওয়ার ওয়ার্ল্ড। সংগঠনটির হিসাবে, ১৩০টির বেশি দেশে সমলিঙ্গের মধ্যে যৌন সম্পর্ক বৈধ।

;