সংবাদ পরিবেশনে এআই উপস্থাপক—কতটা বিশ্বাসযোগ্য!



মানসুরা চামেলী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
সংবাদ পরিবেশনে এআই উপস্থাপক—কতটা বিশ্বাসযোগ্য!

সংবাদ পরিবেশনে এআই উপস্থাপক—কতটা বিশ্বাসযোগ্য!

  • Font increase
  • Font Decrease

২২ মিনিট ৩ সেকেন্ড ধরে এডিট করা বিভিন্ন নিউজ ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে একের পর এক পড়ে যাচ্ছেন উপস্থাপিকা। কিন্তু তারা কেউ রক্তে মাংসে গড়া মানুষ নন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের (এআই) প্রেজেন্টার। তবে শুরুতেই বিষয়টি কেউ ধরতে পারবেন না। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটি লস অ্যাঞ্জেলেসভিত্তিক চ্যানেল ওয়ানের।

গত বছরের শেষের দিকে চ্যানেলটি তাদের এআই-জেনারেটেড সংবাদ পরিবেশনের প্রচারমূলক ভিডিও স্ট্রিমিং করেন। সম্পূর্ণরূপে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন বিশ্বের প্রথম সংবাদ নেটওয়ার্ক এ বছর চালু করতে যাচ্ছে তারা।

প্রতিষ্ঠাতা ও উদ্যোক্তা অ্যাডাম মোসাম বিষয়টিকে খবর পরিবেশনের আকর্ষণীয় ধাপ বলে মানছেন। তারা মনে করেন, এতে করে দর্শক খবরে নতুন অভিজ্ঞতা পাবে।

এআই প্রযুক্তি এক ভাষা থেকে অন্য ভাষাতে স্ক্রিপ্ট এবং সাক্ষাৎকার অনুবাদ করতে সাহায্য করবে।- এআই এই সক্ষমতা চ্যানেল ওয়ান তার প্রচারমূলক ভিডিওতে প্রদর্শন করে দেখিয়েছে।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের (এআই) মাধ্যমে সংবাদ উপস্থাপনার ধারণাটি বিশ্ববাসীর জন্য ইতোমধ্যেই পুরনো খবর। ২০১৮ সালে চীনের সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া সর্বপ্রথম এআই সংবাদ উপস্থাপকের সঙ্গে পরিচিত করিয়ে দেয় বিশ্বকে। এরপর অনেক দেশই পরীক্ষামূলকভাবে এআই দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করে আসছে। এরপর ২০১৯ সালে লাটভিয়ার টিভি চ্যানেলে দেখা যায় লরা নামক এআই উপস্থাপককে। ২০২৩ সালের এপ্রিলে কুয়েত নিউজে দেখা মেলে এআই উপস্থাপক ফেদা'র। একই মাসে ভারতীয় সংবাদ চ্যানেল আজ তাক-এর স্ক্রিনে দেখা যায় এআই উপস্থাপক সানাকে। গত বছর ভারতের উড়িষ্যার এক টিভি চ্যানেলেও খবর পড়তে দেখা যায় লিসা নামক এআই উপস্থাপককে। এছাড়াও ইন্দোনেশিয়া, তাইওয়ান ও মালয়েশিয়ার টেলিভিশন চ্যানেলে দেখা গেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উপস্থাপক।

এআই দিয়ে যা দেখানো হচ্ছে তার সঙ্গে দর্শকরা কি সামাজিক সম্পর্ক বজায় ও এআইর প্রতি ভরসা বজায় রাখতে পারবেন—এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

জনমত পোলিং ফার্ম ইপসোসের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে সংবাদ উপস্থাপকদের প্রতি মানুষের প্রতি আস্থা সর্বনিম্নে নেমেছে। যুক্তরাজ্যের মাত্র ৪২ শতাংশ মানুষ টিভি নিউজরিডারদের বিশ্বাস করে। যা এক বছরে প্রায় ১৬ শতাংশ কম।

এদিকে, সোশ্যাল মিডিয়ার তারকারা শ্রোতাদের সাথে প্যারা-সামাজিক প্রভাব (একতরফা সম্পর্ক) নামে সম্পর্ক স্থাপন করেছে। যদিও শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাবিদরা ১৯৫০-এর দশকে প্রথম প্যারা-সামাজিক সম্পর্ককে সংজ্ঞায়িত করেছিলেন। সেই সময় থেকে রাতে সংবাদ পড়া উপস্থাপকরা প্যারা-সামাজিক সম্পর্ক দিয়ে মানুষের আপন হয়ে উঠেছিল। এক পর্যায়ে সংবাদ উপস্থাপকরা সাংবাদিকদের থেকেও বেশি আপন হয়ে ওঠেন। তারা সংবাদ শোনায়; তারা বন্ধু, রাতের পর রাত আপনাকে বসার ঘরে স্বাগত জানায়—বিষয়টি এমন হয়ে দাঁড়ায়।

এদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রভাব বিস্তারকারীরা সরাসরি ক্যামেরা ফরমেটে সংযোগ স্থাপন করছেন। দুর্দান্ত সাফল্যের জন্য মানুষের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে তুলছেন। টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম এবং লেবার বিভাগের শিক্ষার্থী ক্রিস্টিন এইচ ট্রান বলেছেন, 'প্যারা-সামাজিক' লেবেলটি দিনে দিনে বিবর্তিত হয়েছে। আপনি একজন প্রতিবেদক বা নিউজ টুইচ স্ট্রিমারের সাথে প্যারা-সামাজিক সম্পর্কে থাকতে পারেন।  এছাড়া আপনি একজন ইউটিউবার, একজন গায়ক এবং ‘ইনস্টাগ্রাম-পাওয়ার কাপল’-এর সাথে একটি প্যারা-সামাজিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারেন।

কিন্তু, এআই’র সঙ্গে ব্যক্তিগত সংযোগ স্থাপনের সম্ভাবনা কম, যতটা আপনার অন্য মানুষের সঙ্গে করা সম্ভব। মানুষ এখানে কোন ধরনের তুলনায় যাবে না। কারণ এটা মনে করা হাস্যকর যে মানুষের চেয়ে রোবট ভালো কাজ করে, বলছেন অ্যাডাম মোসাম।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়টার্স ইন্সটিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব জার্নালিজম-এর সিনিয়র রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট এবং বিবিসির সাবেক সম্পাদক নিক নিউম্যান বলেছেন, যখন আমি সাংবাদিকতায় শুরু করলাম, তখন অভিনেতা সংবাদ পড়তেন। মানুষ এটিকে খুব ভালোভাবে নিত।

সাংবাদিকরা সবসময় সংবাদ পড়লেও এই পরীক্ষাটি সফল হতে পারে, বলেন নিউম্যান। এটি শুধুমাত্র সংক্ষেপ সংবাদ বুলেটিনের জন্য উপযোগী হতে পারে, দর্শকরা এআই প্রেজেন্টারের সঙ্গে একটি ‘পরাসামাজিক’ সম্পর্ক তৈরি করবে- এ নিশ্চয়তা একবারেই কম। সংবাদ পরিবেশনের জন্য, আমি মনে করি মানুষই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় রাখবে, তিনি বলেন।

চ্যানেল ওয়ান এবং নিউজজিপিটি, যারা নিজেদের সম্পূর্ণরূপে এআই দ্বারা পরিচালিত বিশ্বের প্রথম নিউজ চ্যানেল বলে দাবি করছে;- এখন প্রশ্ন হচ্ছে তারা কী সম্পূর্ণরূপে মানুষের প্রভাব সরিয়ে দিতে পারবে?

বর্তমানে, চ্যানেল ১-এ প্রায় এক ডজন কর্মী এআই তৈরিকৃত স্ক্রিপ্ট সম্পাদনা, যাচাইবাছাই এবং প্রতিবেদনের বিষয় নির্বাচন করছেন। চ্যানেল কর্তৃপক্ষ জানায়, ১৩-ধাপের প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হচ্ছে যাতে এআই দ্বারা নির্ভুলভাবে সংবাদ পরিবেশন করা যায়।

বিবিসি নিউজে ১৮ বছর সংবাদ উপস্থাপনার দায়িত্ব পালন করা সাংবাদিক সাইমন ম্যাকয় বলেছেন, এআই উপস্থাপক হয়তো খবর পড়তে গিয়ে উচ্চারণে কোনো ভুল করবে না, মেকআপ বা জামা-কাপড় নিয়ে তার কোনো সমস্যা থাকবে না, দিন-রাত বিরতিহীন কাজ করে যাবে, পারিশ্রমিক নিয়ে চিন্তা করবে না। কিন্তু তার সবচেয়ে বড় দুর্বলতাই হবে মানবীয় আবেগের অভাব। সংবাদের ধরন অনুযায়ী এআই অবতারের মৌখিক অভিব্যক্তি বদলাবে না। যে কারণে সংবাদকে আকর্ষণীয় করে তুলতে ব্যর্থ হবে এআই।

সূত্র: বিবিসি

   

এক ঘরেই তিন বলী



তাসনীম হাসান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
দুই ছেলের সঙ্গে খাজা আহমদ বলী/ছবি: আনিসুজ্জামান দুলাল

দুই ছেলের সঙ্গে খাজা আহমদ বলী/ছবি: আনিসুজ্জামান দুলাল

  • Font increase
  • Font Decrease

চুল থেকে দাড়ি-সবই সফেদ। হাঁটাচলায় মন্থর। স্বাভাবিকভাবেই প্রবীণের বয়সটা আঁচ করা যায় প্রথম দেখাতেই। কিন্তু তার ষাটোর্ধ্ব বয়সটা যেন কেবল ক্যালেন্ডারের হিসাব। বয়স যতই ছোবল বসানোর চেষ্টা করুক না কেন-তিনি যেন এখনো ২৫ এর টগবগে তরুণ। সেই বলেই তো ফুসফুসের রোগবালাইকে তুড়ি মেরে ঐতিহাসিক আবদুল জব্বারের বলীখেলা এলেই হাজির হয়ে যান রিংয়ে। এক দুবার নয়, এবার কিনা পূর্ণ হলো সুবর্ণজয়ন্তী!

চট্টগ্রামের অন্যতম আবেগের ঠিকানা ঐতিহাসিক এই বলীখেলার বড় বিজ্ঞাপন হয়ে ওঠা এই বলীর নাম খাজা আহমদ বলী। ৫০ বছর ধরে বলীখেলায় অংশ নিয়ে দর্শকদের আনন্দ দিয়ে যাওয়া এই বলীর এখন পড়ন্ত বয়স। ফুসফুসে বাসা বেঁধেছে রোগ। কানেও শোনেন কম। খাজা আহমদ বুঝে গিয়েছেন, তার দিন ফুরাচ্ছে। কিন্তু তিনি যে বলীখেলার স্মৃতি থেকে সহজেই মুছে যেতে চান না। সেজন্যই উত্তরসূরী হিসেবে এরই মধ্যে গড়ে তুলেছেন নিজের দুই ছেলেকে। বাবার পাশাপাশি দুই ভাইও এখন বলীখেলার নিয়মিত প্রতিযোগী।

খাজা আহমেদ বলীর বাবাও বলীখেলায় অংশ নিতেন। বাবার সঙ্গে বলীখেলায় এসে ১৯৭৪ সালে শখের বসে খেলতে নামেন খাজা আহমেদও। বয়স তখন ১২ বছরের আশপাশে। সেই শুরু, আর কোনোদিন মিস করেননি বলীখেলায় অংশ নেওয়া। একবার চ্যাম্পিয়নের গৌরবও অর্জন করেছিলেন। বহু বছর ধরে খাজা আহমেদ বলী ও সত্তরোর্ধ্ব মফিজুর রহমানের ‘বলীযুদ্ধ’ জব্বারের বলীখেলার অন্যতম আকর্ষণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তবে এই দ্বৈরথ হয়তো আর দেখা যাবে না। দুই বছর আগে উৎপত্তি হওয়া ফুসফুসের রোগটা ইদানিং যে খাজা আহমদকে বেশিই ভোগাচ্ছে। সেজন্য গতবছর অবসরের ঘোষণাও দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এবার দুই ছেলেকে নিয়ে বলীখেলায় এসে আবেগ সামলাতে পারেননি খাজা আহমেদ। ছেলেদের সঙ্গে নিজেও নেমে পড়েন রিংয়ে। সেজন্য আরও একবার মফিজুর রহমান-খাজা আহমেদের লড়াই দেখল হাজারো দর্শক। যদিওবা যৌথ বিজয়ী ঘোষণা করে দুজনের মুখেই হাসি ফুটিয়েছেন রেফারি।

প্রতিপক্ষ মফিজুর রহমানের সঙ্গে বলী-যুদ্ধে খাজা আহমদ

কেন অবসর ভাঙলেন এমন প্রশ্নে হাসি খেলা করে যায় খাজা আহমেদ বলীর মুখে। বলতে থাকেন, ‘বয়সের কারণে শরীর দস্ত। ফুসফুসও ঠিকঠাক কাজ করছে না। সেজন্য অবসর নিয়েছিলাম। কিন্তু বলীখেলায় আসার পর দেখলাম দর্শকেরা সবাই অনুরোধ করছেন। সেজন্য মন বলল, না খেললে দর্শকদের প্রতি অন্যায় হবে। আর আবেগ ও ভালোবাসার কাছে বয়স-রোগ পেরেছে কবে?’

তবে এখানেই সব শেষ, বলে দিয়েছেন খাজা আহমেদ বলী। বলেছেন, ‘বয়স হয়ে গেছে। মনে হয় না আর খেলতে পারব। অসুখটা বেশি যন্ত্রণা দিচ্ছে। সেজন্য মনে মনে মেনে নিয়েছি এটাই আমার শেষ অংশগ্রহণ। বাকিটা আল্লাহর হাতে।’

তিন ছেলে ও এক মেয়ের বাবা খাজা আহমদের বাড়ি চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গায়। কৃষিকাজ করেই চলে সংসার। তবে বলীখেলা এলে সব কাজ বাধ। কয়েকদিন ধরে চলে প্রস্তুতি। নিজের স্মৃতি ধরে রাখতে এরই মধ্যে খাজা আহমেদ নিজের দুই ছেলেকে গড়ে তুলেছেন বলী হিসেবে। ২০১২ সাল থেকে বলীখেলায় নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন তার বড় ছেলে মো. সেলিম। গত বছর থেকে যোগ দিয়েছেন ছোট ছেলে মো. কাইয়ুমও। এখন বলীখেলার আগে দুই ছেলেকে নিয়ে চলে খাজা আহমদের প্রস্তুতি।

জানতে চাইলে সেলিম বলেন, ‘বাবার কাছ থেকে আমরা বলীখেলা শিখেছি। বয়সের কারণে বাবা এখন অসুস্থ। হয়তো আর খেলা হবে না। সেজন্য তার উত্তরসূরী হিসেবে আমরা বলীখেলায় অংশ নেব সামনের দিনগুলোতে। এটা শুধু পরিবারের বলীর প্রজন্ম ধরে রাখার জন্য নয়, তরুণদের মাদক-সন্ত্রাসী কার্যক্রম থেকে দূরে রাখতে উদ্বুদ্ধ করার উদ্যোগও।’

বাবাকে পাশে রেখে একই কথা বললেন ছোট ছেলে মো. কাইয়ুমও। বলেন, ‘হয়তো বাবা আর খেলবেন না। তবে তিনি না খেললেও যতদিন বেঁচে থাকবেন বলীখেলা দেখতে আসবেন। রিংয়ের নিচে দাঁড়িয়ে আমাদের উৎসাহ দিয়ে যাবেন।’

ছেলের কথা শুনে আবেগ খেলে যায় খাজা আহমেদ বলীর মনে। কাঁধের গামছাটা হাতে তুলে নিয়ে চোখ মুছতে মুছতে বললেন, ‘না খেললেও যতদিন বাঁচি এখানে, এই বলীর মাঠ লালদীঘি ময়দানে ছুটে আসব। এটা থেকে দূরে থাকতে পারব না।’

খাজা আহমেদ যখন কথা বলছিলেন দূরে কোথাও তখন মাইকে বাজছিল, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেই অমর গান। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় অক্লান্ত গলায় গেয়ে চলেছেন, যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে, আমি বাইব না মোর খেয়াতরী এই ঘাটে...

;

চাকরি ছেড়ে বসের সামনেই ঢোল বাজিয়ে নাচলেন যুবক!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নিত্যদিনের অফিসের কর্মপরিবেশে অনেকের মধ্যেই 'বিরক্তি' চলে আসে। তবুও ধৈয্য নিয়ে সব সহ্য করে টিকে থাকার জন্য চালিয়ে যান লড়াই। তবে এ যাত্রায় সকলের দ্বারা টিকে থাকা সম্ভব হয় না। অফিসের 'বিষাক্ত' কর্মপরিবেশে অনেকেই ভোগেন মানসিক সমস্যায় কিংবা ব্যক্তিজীবনে। এমন পরিবেশ থেকে বাঁচতে একেক জন একেক পন্থা অবলম্বন করে থাকেন।

তবে অনিকেত নামের এক যুবক এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে যা করেছেন নেট দুনিয়ায় তা রীতিমতো ভাইরাল। এসব থেকে মুক্তি পেতে চাকরিটাই ছেড়ে দিয়েছেন এই যুবক। এতেই ক্ষান্ত হননি তিনি, বসের সামনেই ঢাকঢোল বাজিয়ে নেচে উদযাপন করেছেন এমন মুহূর্তের।

ঘটনাটি ভারতের পুনে রাজ্যের। অনিকেত নামের ওই যুবক বিক্রয় সহযোগী হিসেবে চাকরি করতেন।

তার এমন উদযাপনের একটি ভিডিও ইন্সটাগ্রাম শেয়ার করেছেন অনীশ ভগত।

ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, গত তিন বছর ধরে এই কোম্পানির সাথে কাজ করেও বেতন খুব একটা বাড়েনি। এছাড়াও অফিসের বসের দ্বারাও তাকে বিভিন্ন সময়ে অপমানিত হতে হয়েছে।

তাই তার কাজের শেষ দিনে বন্ধুরা অফিসের বাইরে ঢোল নিয়ে জড়ো হয়েছিলেন এবং নেচেছিলেন। ভিডিওতে দেখা গেছে, এ ঘটনায় তার বস অনেক উত্তেজিত হয়েছেন। পাশাপাশি তার বস লোকজনকে ধাক্কা দিয়েছেন এবং চিৎকারও করেছেন।

ভিডিওটির ক্যাপশনে ভগত লিখেছেন, আমি মনে করি আপনারা অনেকেই এর সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে পারবেন। আজকাল বিষাক্ত কাজের সংস্কৃতি খুব বেশি দেখা যায়। সম্মান এবং অধিকারের অভাব খুবই সাধারণ। অনিকেত তার পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। আমি আশা করি এই গল্প মানুষকে অনুপ্রাণিত করবে।

পোস্ট করা ভিডিওটি এক মিলিয়নেরও (১০ লাখের বেশি) বেশি ভিউ পেয়েছে। পোস্টটিতে অসংখ্য লাইক ও কমেন্টও রয়েছে।

একজন ইন্সটাগ্রাম ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'আমি জানি না কেন এটি আমাকে এত সন্তুষ্ট করেছে।'

আরেকজন লিখেছেন, 'নাচটি আমাকে অন্য মাত্রার তৃপ্তি দিয়েছে।'

'আপনি সত্যিই আমার জীবনে দেখা সবচেয়ে ইতিবাচক এবং উত্সাহী ব্যক্তি'- তৃতীয় একজন ঠিক এভাবেই নিজের অনুভূতি জানিয়েছেন।

তথ্যসূত্র: হিন্দুস্থান টাইমস 

;

অভয়ারণ্যে মানুষ যখন বন্দিখাঁচায়



প্রমা কোয়েল, ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চিড়িয়াখানা, নানানরকম পশুপাখি ও প্রাণীর বন্দিশালা। কেবল রং-বেরঙের চিড়িয়াই নয়; বাঘ, সিংহ, ভালুক, বানর, গণ্ডারসহ কত বন্যপ্রাণীই না খাঁচায় বন্দি থাকে!

চিড়িয়াখানায় রাখতে বন্য প্রাণীদের প্রকৃতির স্বাধীন জীবন থেকে ছিনিয়ে আনা হয়। তাদের খাঁচায় বন্দি করা হয় যেন, মানুষ তাদের দেখে আনন্দ পায়। অনেক প্রাণীর জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি খাঁচাতেই কেটে যায়।

ছোট থেকে বড় সব বয়সের মানুষই চিড়িয়াখানায় ঘুরতে যেতে পছন্দ করেন। শিশুরা না হয় অবুঝ! তবে যারা প্রাপ্তবয়স্ক তারাও চিড়িয়াখানায় এই বন্দি প্রাণীদের জীবনকে গভীরভাবে অনুধাবন করতে পারেন না।

এশিয়ার বড় দেশ চীনে রয়েছে, এক অদ্ভুত চিড়িয়াখানা। চংকিংয়ে অবস্থিত সেই চিড়িয়াখানার নাম ‘লেহে লেদু বন্যপ্রাণী চিড়িয়াখানা’। একে ‘রিভার্স জু’ (বিপরীত চিড়িয়াখানা) বলেও ডাকা হয়।

এখানেও মানুষ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে পশু দেখতে আসেন। তবে একেবারেই ভিন্ন উপায়ে। মূলত, একটি খাঁচা রয়েছে, যেখানে মানুষদের সেই খাঁচায় পুরা হয়। তারপর সেই খাঁচাবন্দি মানুষদের নিয়ে রাখা হয়, অভয়ারণ্যে। সেখানে বন্য প্রাণীরা মানুষের খাঁচার চারপাশে অবাধে ঘুরতে থাকে। চিড়িয়াখানায় বন্দি প্রাণীদের বন্দিজীবনের এক প্রতীকী দৃশ্য!

অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় মানুষদের জন্য এটি এক নতুন অভিজ্ঞতা!

অভয়ারণ্যে খাঁচায় বন্দি মানুষ, ছবি-সংগৃহীত

খুব কাছে থেকে হিংস্র বন্যপ্রাণীদের মুক্ত অবস্থায় দেখতে পাওয়া যেমন লোমহর্ষক, ঠিক তেমনই আতঙ্কজনকও হতে পারে। বিপরীতধর্মী এই চিড়িয়াখানাটি সবার জন্য প্রথম উন্মুক্ত করা হয়, ২০১৫ সালে। তখন বিশ্বের সংবদমাধ্যমের শিরোনাম কেড়েছিল এ চিড়িয়াখানাটি।

একটি শক্ত লোহার খাঁচাবেষ্টিত দর্শনার্থীদের একটি ট্রাকে তুলে অভয়ারণ্যে রেখে দেওয়া হয়। সেখানে তাদের ঘিরে ধরে ঘুরতে থাকে বাঘ, ভালুক, সিংহ ইত্যাদি হিংস্র প্রাণী।

এ বিষয়ে চিড়িয়াখানার প্রধান চ্যান লিয়াং বলেন, দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা রক্ষার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। খাঁচার ফাঁকা অংশ দিয়ে হাতের আঙুলও বের না করার নির্দেশনা দেওয়া থাকে।

তবে বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টিকারী এই চিড়িয়াখানাটি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে অনেক। এর নৈতিকতা নিয়ে অনেকে প্রশ্নও তুলেছেন।

অনেকে মনে করেন, এরকম ব্যবস্থাপনায় দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। কারণ, শিকারী প্রাণীগুলো প্রচণ্ড হিংস্র। তাই, সে কারণে যে কোনো সময় বিপজ্জনক ঘটনা ঘটে যেতে পারে।

আবার এরকম চিন্তাভাবনার প্রশংসাও করেছেন অপর একটি পক্ষ। তাদের বক্তব্য, পৃথিবীটা কেবল মানুষদের নয়। প্রকৃতিতে সব প্রাণীদের একটা ভারসাম্য থাকা প্রয়োজন। তাদের বন্দি করে রাখা মানুষের উচিত নয়। কারণ, মুক্ত প্রকৃতিতে বিরাজ করার অধিকার সব প্রাণীরই রয়েছে।

তাদের মন্তব্য, আমরা প্রাণীদের আবাসস্থল বনজঙ্গল সব উজাড় করেছি। সে কারণে তাপমাত্রাও অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। আবার প্রাণীদের বন্দি রেখে তাদের জীবন চরম দুর্বিষহ করে তুলি।

চাইলে এবং সুযোগ পেলে এই ধরনের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা নিতে চিড়িয়াখানাটি ঘুরে আসতে পারেন বৈকি!

তথ্যসূত্র: এনিমেল অ্যারাউন্ড দ্য গ্লোব

;

৫ বছরের শিশুর বিস্ময়কর প্রতিভা!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বয়স সবে ৫ কিংবা ৬। এই বয়সেই তার প্রতিভা দেখে অবাক হবে যে-কেউ!

গত বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সের (সাবেক টুইটার) একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এখন পর্যন্ত ভিডিওটি ১ মিলিয়নের (১০ লাখের বেশি) বেশি মানুষ দেখেছেন। খবর এনডিটিভি। 

ভিডিওতে রিলি নামের ওই শিশুটিকে প্রথমে শ্বাস নিতে দেখা যায়। তারপর সে একটি শক্তিশালী গর্জন দিয়ে শ্বাস ছাড়ে। ওই গর্জনটি হুবুহ সিংহের গর্জনের অনুরূপ।

রিলির মা অ্যামি ভিডিওটি এক্সে শেয়ারের পরই তা ভাইরাল হয়ে যায়। শিশুটির এমন নিখুত দক্ষতা দেখে মুগ্ধ দর্শকরা। ভিডিওটিতে অনেকেই নিজেদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন।

এক্স ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, এত অল্প বয়সে এমন বাস্তবসম্মত গর্জন তৈরি করার রিলির ক্ষমতার বিস্ময় প্রকাশ করে।

আরেকজন লিখেছেন, শিশুরা খুব দ্রুত শিখে। তার এমন প্রতিভা সত্যিই অবাক করার মতো।

;