রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রের বিমাও এসবিসির সঙ্গে



মাহফুজুল ইসলাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
ভবিষ্যতের রূপপুর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর

ভবিষ্যতের রূপপুর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর

  • Font increase
  • Font Decrease

সম্পদের ঝুঁকি কমাতে সাধারণ বিমা করপোরেশনের (এসবিসি) সঙ্গে বিমা করেছে রূপপুর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট (আরএনপিপি) কর্তৃপক্ষ। এটি দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিমা। সাধারণ বিমা করপোরেশন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র মতে, আরএনপিপি প্রকল্প-১ ও ২ এর নামে মোট ১ হাজার ২৬৫ কোটি ইউএস ডলারের বিমা করা হয়েছে। তার জন্য চার কিস্তিতে প্রিমিয়াম বাবদ ৪ কোটি ৮৭ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ ইউএস ডলার সমপরিমাণ অর্থ দিতে হবে সাধারণ বিমাকে।

অর্থাৎ ৮৪ দশমিক ৫০ টাকা প্রতি ডলারে মূল্য হলে ১১ জুলাই ২০১৯ সালের ডলারের মূল্য অনুসারে এসবিসিকে দিতে হবে ৪১১ কোটি ৬২ লাখ ৯০ হাজার ৭৫০ টাকা। আর তাতে ১ হাজার ২৬৫ কোটি ইউএস ডলার অর্থাৎ ১ লাখ ৬ হাজার ৮৯২ কোটি ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ পাবে আরএনপিপি কর্তৃপক্ষ।

দু’টি ইউনিটের বিমার মধ্যে প্রথম ইউনিটের বিমা মেয়াদ শুরু হয়েছে ২০১৭ সালের আগস্ট মাস থেকে। থাকবে ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত। এরপরও আরো ২৪ মাস কোনো ধরনের সমস্যা হলে তার ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

একইভাবে ইউনিট-২ এর বিমার মেয়াদ শুরু হয়েছে ২০১৭ সালের ১ অগাস্ট থেকে, চলবে ২০২৪ সালের ২২ অক্টোবর পর্যন্ত। এরপরও আরও ২৪ মাস কোনো সমস্যা হলে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

সার্বিক বিষয়ে এসবিসির ডেপুাটি জেনারেল ম্যানেজার (পুনঃবিমা) জাকির হোসেন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, বিদেশিরা তো মনে করেছিল বাংলাদেশের এতো বড় বিমা করার সক্ষমতা নেই। সাধারণ বিমা করপোরেশন বিমাটি করতে পারায় একদিকে দেশের সম্পদ দেশেই রইল। অন্যদিকে বিদেশিরাও জানল যে, বাংলাদেশের বিমা করার সক্ষমতা আছে। তাতে দেশের মানুষের মধ্যে এসবিসির প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা বাড়বে। এটা আমাদরে বড় অর্জন।

পাওয়ারে সেক্টরের কোম্পানিগুলোর মধ্যে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। তারাও দেশি কোম্পানির সঙ্গে বিমা করতে উৎসাহিত হবে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে দেশের প্রথম পারমাণবিক কেন্দ্রের মূল নির্মাণকাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় ২০১৭ সালেন ৩০ নভেম্বর। প্রকল্পটির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশের একক বৃহত্তম প্রকল্প এটি এবং কেন্দ্রটির মূল পর্যায়ের উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ পারমাণবিক জগতে প্রথম পা রাখবে। পাবনায় পদ্মা নদীর পাড়ে রাশিয়ান রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশন নেতৃত্ব দিচ্ছে রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ। দুই ইউনিটের বর্তমান বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে উৎপাদন হচ্ছে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।

রূপপুর প্রকল্পের পেছনের তথ্য:

১৯৬১: পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের প্রথম উদ্যোগ গ্রহণ।

১৯৬২-১৯৬৮: পাবনা জেলার ঈশ্বরদী থানার পদ্মা নদী তীরবর্তী রূপপুরকে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্থান হিসাবে নির্বাচন এবং প্রকল্পের জন্য ২৬০ একর ও আবাসিক এলাকার জন্য ৩২ একর জমি অধিগ্রহণ।

১৯৬৯-১৯৭০: ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত তৎকালীন পাকিস্তান সরকার বাতিল করে দেয়।

১৯৭৭-১৯৮৬: একনেক কর্তৃক পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র (১২৫ মেগাওয়াট) নির্মাণ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প অনুমোদন, কিন্তু বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন বাতিল।

১৯৮৭-১৯৮৮: জার্মানি ও সুইজারল্যান্ডের দু’টি কোম্পানির দ্বিতীয়বার ফিজিবিলিটি স্টাডির আলোকে ৩০০-৫০০ মেগা-ওয়াট পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের সুপারিশ।

১৯৯৭-২০০০: বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের তৎকালীন চেয়ারম্যান ড. এম.এ ওয়াজেদ মিয়া কর্তৃক ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ।

২০০৯: পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য প্রাথমিক কার্যাবলী ও পারমাণবিক অবকাঠামো উন্নয়নের কার্যক্রম শুরু। এবং বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন ও রাশান ফেডারেশনের স্টেট অ্যাটমিক এনার্জি করপোরেশনের (রোসাটোম) মধ্যে 'পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার' বিষয়ক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর।

২০১০: বাংলাদেশ সরকার এবং রাশান ফেডারেশন সরকারের মধ্যে ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি স্বাক্ষর। নভেম্বরে জাতীয় সংসদে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য সিদ্ধান্ত প্রস্তাব গ্রহণ।

২০১১: বাংলাদেশ এবং রাশান ফেডারেশন সরকারের মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন সংক্রান্ত আন্তঃরাষ্ট্রীয় সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর।

২০১৩: অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের প্রথম পর্যায় কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন।

২০১৬: রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের মূল পর্যায়ের কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য বাংলাদেশ সরকার এবং রাশান ফেডারেশন সরকারের মধ্যে স্টেট ক্রেডিট চুক্তি স্বাক্ষর।

আরও পড়ুন: সাধারণ বিমা করপোরেশনে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের বিমা

   

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের পদোন্নতি প্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সংবর্ধনা



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ঢাকা অঞ্চলের ২০২৪ সালের পদোন্নতি প্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সংবর্ধনা ও প্রীতি সম্মিলনের আয়োজন করা হয়।

সোমবার (১৩ মে) যমুনা ফিউচার পার্ক কনভেনশন সেন্টারে এটি অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী জাফর আলম। সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ ফোরকানুল্লাহ।

এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল হান্নান খান ও মোহাম্মদ হাবীবুর রহমান। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের বিভিন্ন অঞ্চলের আঞ্চলিক প্রধান, প্রধান কার্যালয়ের বিভাগীয় প্রধানসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন নির্বাহীগণ, ঢাকা ও পাশর্^বর্তী অঞ্চলের শাখাসমূহের ব্যবস্থাপকবৃন্দ। এসময় ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার শাখাসমূহের সর্বস্তরের প্রায় ২০০০ কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।

প্রীতি সম্মিলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাফর আলম সকলকে একসঙ্গে নবউদ্যমে ব্যাংককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করার আহ্বান জানান। সবার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ব্যাংক এগিয়ে গেলে, ব্যাংকের উন্নয়ন হলেই আপনারা এগিয়ে যাবেন, তাই ব্যাংককে সফলতার চূড়ায় পৌঁছে দিতে সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যান।

;

ইসলামী ব্যাংকের সাথে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির চুক্তি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ইসলামী ব্যাংকের সাথে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির চুক্তি

ইসলামী ব্যাংকের সাথে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির চুক্তি

  • Font increase
  • Font Decrease

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ)-এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের যাবতীয় ফি পেমেন্ট সংক্রান্ত্র এক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।

এ চুক্তির আওতায় ডিআইইউ-এর শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা টিউশন ফি ও সেমিস্টার ফি-সহ যে কোন ধরনের ফি ইসলামী ব্যাংকের শাখা, উপশাখা, এজেন্ট আউটলেট এবং সেলফিন অ্যাপের মাধ্যমে দ্রুত প্রদান করতে পারবেন।

সম্প্রতি ডিআইইউ কনফারেন্স হলে ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. লুৎফর রহমান ও ইসলামী ব্যাংকের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মোঃ আলতাফ হুসাইনের উপস্থিতিতে ডিআইইউ-এর ট্রেজারার (চলতি দায়িত্ব) মমিনুল হক মজুমদার ও ব্যাংকের আশুলিয়া শাখাপ্রধান এ.বি.এম মোস্তফা আলী হায়দার সমঝোতা স্মারকে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে স্বাক্ষর করেন।

ব্যাংকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মোঃ মাকসুদুর রহমান ও ঢাকা নর্থ জোনপ্রধান বশির আহমদ এবং ডিআইইউ-এর প্রো ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এস.এম. মাহবুব উল-হক মজুমদার, রেজিস্ট্রার ড. মোঃ নাদির বিন আলী ও অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর ড. সাইয়েদ মিজানুর রহমানসহ উভয় প্রতিষ্ঠানে নির্বাহী ও কমৃকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

;

উপজেলা নির্বাচনের ২য় ধাপে প্রতি চারজনের একজন ঋণগ্রস্ত: টিআইবি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপে কোটিপতি প্রার্থীর সংখ্যা বেড়েছে তিনগুণ। একই সঙ্গে প্রতি চারজন প্রার্থীর একজন ঋণগ্রস্ত প্রার্থী রয়েছে। মোট প্রার্থীর মধ্যে ১৩ দশমিক ১৩ শতাংশ প্রার্থী বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

রোববার (১৯ মে) সকালে রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) কর্তৃক ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ২য় ধাপে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণে এই তথ্য জানায় সংস্থাটি।

টিআইবি জানায়, দ্বিতীয় ধাপে ১৫৭ উপজেলায় চেয়ারম্যান ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান মিলে মোট প্রার্থী এক হাজার ৮১১ জন। এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ২৩৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান ১৬৭ জন, নারী ভাইস চেয়ারম্যান ৬০ জনসহ মোট ৪৬২ জন প্রার্থী ঋণগ্রস্ত।

উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীদের তথ্য বিশ্লেষণে টিআইবি জানায়, দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে ৫ বছরে চেয়ারম্যান প্রার্থীর আয় বেড়েছে প্রায় ১১ হাজার শতাংশ। এইক্ষেত্রে দেখা যায় অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে সাড়ে ১১ হাজার স্ত্রী ও নির্ভরশীলদের সম্পদ বৃদ্ধির হার ১২ হাজার চারশত শতাংশ।

গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি আরও জানায়, ৩১০.৯৪ কোটি টাকার ঋণ নিয়ে ঋণগ্রস্ত প্রার্থী তালিকার শীর্ষে আছেন নেত্রকোনার পূর্বধলার চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আসাদুজ্জামান। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ৯৯.১৫ কোটি টাকার ঋণ রয়েছে কুমিল্লা সদর দক্ষিণের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান। তিন নম্বরে পিরোজপুরের নেছারাবাদের ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মোঃ সোহাগ মিয়া, তার ঋণ ৩৫.৮৭ কোটি।

;

অর্থনীতিকে ভারসাম্যপূর্ণ করতে যা চান ব্যবসায়ীরা, জানালেন আমিন হেলালী



আশরাফুল ইসলাম, পরিকল্পনা সম্পাদক, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার (১৬ মে, ২০২৪) পৌনে ৩ ঘণ্টার বৈঠক করেছেন ১৫ সদস্যের ব্যবসায়ী নেতারা। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই’র শীর্ষ নেতাদের নেতৃত্বে এই বৈঠকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নর ডলারের মূল্যবৃদ্ধিতে অর্থনীতির অস্থিরতা-সহ নানা প্রসঙ্গে গৃহীত পদক্ষেপসমূহের কথা জানিয়েছেন। ব্যবসায়ী নেতারা বাংলাদেশের উদীয়মান অর্থনীতির অস্থিরতা কাটিয়ে একে ভারসাম্যপূর্ণ করতে তাদের পর্যবেক্ষণ ও দাবি তুলে ধরেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে। দীর্ঘ সময় ধরে ডেপুটি গভর্নর ও নির্বাহী পরিচালকদের নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ব্যবসায়ী নেতাদের কথা শুনেছেন এবং সেইসব বিষয়ে তাদের আশ্বস্ত করেছেন।

বৈঠকের সামগ্রিক বিষয়াবলী নিয়ে বার্তা২৪.কমের সঙ্গে বিস্তৃত আলাপচারিতায় এফবিসিসিআই’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও দশদিশা গ্রুপের চেয়ারম্যান আমিন হেলালী জানিয়েছেন, চলমান অস্থিরতায় অর্থনীতিকে ভারসাম্যপূর্ণ করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে তুলে ধরা প্রত্যাশার কথা। কথা বলেছেন পরিকল্পনা সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম।

আমিন হেলালী: দেশের ব্যবসায়ীদের প্রত্যেকটা সেক্টরের এসোসিয়েশন লিডারদের নিয়ে ১৫ সদস্যের টিম গত ১৬ মে (২০২৪) বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নরের সঙ্গে আমরা এফবিসিসিআই এর পক্ষ থেকে দেখা করেছি। সেখানে আলোচনায় যে বিষয়গুলো ছিল..সবচাইতে বড় কথা হল, তিনি সকল ডেপুটি গভর্নর ও নির্বাহী পরিচালকদের নিয়ে আমাদের সঙ্গে বসেছেন। সেখানে তিনি আমাদের পৌনে ৩ ঘণ্টা সময় দিয়েছেন। আমাদের প্রত্যেকটি কথা তিনি শুনেছেন। প্রথমতঃ, এটি হচ্ছে একটি ইতিবাচক দিক। প্রতিটি সমস্যাই তিনি এড্রেস করেছেন। সমস্যাগুলো নিয়ে তিনি পদক্ষেপ নিচ্ছেন, নেবেন-বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।

বার্তা২৪.কম: আলোচনায় কোন বিষয়গুলো প্রধান্য পেয়েছিল...

আমিন হেলালী: যেমন ধরুন-সুদের হার নিয়ে আমরা উনাকে বলেছি, অর্থনৈতিক এই অবস্থার মধ্যে যে আপনারা (বাংলাদেশ ব্যাংক) স্মার্ট ফর্মুলা বাতিল করে সুদের হারকে বাজারভিত্তিক করে দিলেন, এখন কি অবস্থা হবে? আমরা তো ব্যবসায়িক প্ল্যান করতে পারব না। লাগামহীন হয়ে যাবে। গভর্নর বললেন যে, ‘না, তা হবে না। আমাদের ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনা বাবদ ৭-৯ পার্সেন্ট খরচ আছে।’

গভর্নর ধারণা করছেন সুদের এই কম্পিটিশনের মাধ্যমে ১২ পার্সেন্টের বেশি বাড়বে না। যদিও বাড়ে বা কেউ যদি বাড়াতে চায় মার্কেটে তাহলেও ১৪ পার্সেন্টের বেশি কেউ বাড়াতে পারবে না। এটা উনি আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু কেউ এটাকে ১২ পার্সেন্টও করতে পারবে, ৯ পার্সেন্টও করতে পারবে- যার যার কস্টিং অনুসারে তারা সুদ হার নির্ধারণ করতে পারবেন। বাংলাদেশ ব্যাংক এখানে আশ্বস্ত করেছে এটাই যে, যতই বাড়ুক ১৪ এর ওপরে যাবে না। অন্যদিকে ডলার রেট ১১৭ টাকা নিয়ে স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, ইফ দেয়ার ইজ এনি আন্ডারহ্যান্ড ডিলিংস...সঙ্গে সঙ্গে উনাকে (গভর্নর) কমপ্লেইন করতে বলেছেন, তিনি সরাসরি অ্যাকশনে যাবেন।

বার্তা২৪.কম: এসএমই’র ১% সার্ভিস চার্জ রহিতকরণ ও একক গ্রাহক ঋণসীমা নিয়ে কি আলোচনা হয়েছে...

আমিন হেলালী: এসএমই’র ক্ষেত্রে সব ব্যাংকগুলো ১% সার্ভিস চার্জ কেটে নিয়ে যাচ্ছিল প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে-এনিয়ে অনেক দিন ধরে আমরাও কথা বলে আসছিলাম, অস্পষ্টতা কাটছিল না। তবে এই মিটিংয়ে তিনি আমাদের স্পষ্ট করলেন, এমএমই’তে ১ পার্সেন্ট যে সার্ভিস চার্জ কেটে নেয় এখন থেকে আর কাটতে পারবে না। এটা অলরেডি রহিত করেছে। একক গ্রাহক ঋণসীমা যেটি ১৫% ছিল, আমাদের দাবি ছিল ৩০% করে দেওয়ার জন্য। সেই জায়গায় তিনি বলেছেন, ‘৩০ পার্সেন্ট না, ২৫ পার্সেন্ট করতে পারব। এর বেশি করা যাবে না, কারণ তাহলে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হয়ে যাবে।’ কমপ্লায়েন্সে থাকতে হলে ২৫% ম্যাক্সিমাম, সেটা তিনি শিগগিরই প্রজ্ঞাপন দিয়ে দেবেন।

আরেকটি বিষয় হচ্ছে ডলার ডিভ্যেলুর কারণে যেসব বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি হয়েছে, সেখানে রেগুলেশনের মাধ্যমে যার যত ক্ষতি হয়েছে-কারও হয়ত ১০ কোটি টাকা হল, কারও ৫ লাখ টাকা বা কারও ৫০০ কোটি টাকা হল..ডলার যখন ৮৫ টাকা ছিল সেটা ১১০ টাকা করার পরও যখন লস হওয়া শুরু হল, তখন পেমেন্ট দিতে হয়েছে বেশি-ক্যালকুলেশনের মাধ্যমে যা লস হয়েছে তা আলাদা ভাবে দীর্ঘমেয়াদী পেমেন্টের ব্যবস্থা করে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে গভর্নর আশ্বস্ত করেছেন। কিস্তির ক্ষেত্রে ৬ মাসের যে বিষয়টি ছিল তা ৩ মাস করেছে, আমরা সেটিকে আবারও ৬ মাস মেয়াদী করতে বলেছি। গভর্নর বলেছেন, আন্তর্জাতিক যে কমপ্লায়েন্স আছে তাতে স্ট্যান্ডার্ড ৩ মাসের বেশি করা যায় না। আমরা জানিয়েছি, এতে আমাদের সমস্যা হয়ে যাবে, ঋণখেলাপি বেড়ে যাবে। তিনি এ বিষয়ে বলেছে, নতুন কি কৌশল করে এই অসুবিধা নিরসন করা যায় তা তিনি দেখবেন।

বার্তা২৪.কম: এসএমই’তে কমপ্লায়েন্স সুবিধা নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কী বলছে?

আমিন হেলালী: বর্তমানে সবার জন্য ব্যাংকিং যে পলিসি এসএমই’র জন্যও তাই। কিন্তু এসএমই’র স্টেকহোল্ডার যাঁরা তারা তো কর্পোরেটদের মত কমপ্লায়েন্স এর সুবিধা নিতে পারছে না। তাদের দিকে কেউ তাকাচ্ছে না। বিষয়টিও তিনি (গভর্নর) সিরায়াসলি দেখবেন বলেছেন, কিভাবে এসএমই-দের জন্য আলাদা ব্যাংকিং সুবিধা বা কমপ্লায়েন্সের টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন তৈরি করা যায়। তিনি জানালেন, এসএমই’র জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে ২৫ হাজার কোটি টাকা আছে। কিন্তু আমরা বলেছি, এই ২৫ হাজার কোটি টাকা থাকলে কি হবে-২৫ টাকাও তো এসএমই ভোগ করতে পারবে না-যে টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন আছে তার কারণে প্রকৃত স্টেকহোল্ডারা তা পারবে না। বড়রাই এসএমই সেজে একাই এগুলো ভোগ করে ফেলবে। গভর্নর আমাদের কথা বিবেচনায় নিয়েছেন এবং বলেছেন, উনি বিষয়টি দেখবেন, কি কৌশল নিয়ে এসএমই-কে বিকশিত করা যায় স্মল এবং স্টার্টআপ-দেরকে নিয়ে।

বার্তা২৪.কম: গভর্নর ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এই দীর্ঘ আলোচনায় আপনারা কতটা আশ্বস্ত হতে পেরেছেন?

আমিন হেলালী: প্রতিটি বিষয়ে তিনি (গভর্নর) আমাদের কথা শুনেছেন এবং কথা বলেছেন, আমি মনে করি এটি পজেটিভ দিক। উনি আরও একটি কথা মেনশন করেছেন, ‘দেখুন, বেসরকারি খাত যদি না টিকে থাকে, তাহলে আমাদের কাজটা কি? আপনাদের যদি সঠিক গ্রোথ হয়-তাহলে সরকারের ট্যাক্স বাড়বে। ট্যাক্স বাড়লে উন্নয়ন বাড়বে, আমরা যারা চাকুরি করি আমাদের বেতন বাড়বে। এগুলো মাথায় রেখেই আমরা চেষ্টা করছি’-এগুলো বলেছেন।

আমরা মনে করি, সরকারি লোক যারা আছেন তারাই কিন্তু পলিসি ড্রাফট করেন। বেসরকারি খাতের সঙ্গে কথা বলে যদি পলিসি হয়; তাহলে তা ওয়ার্কেবল হয়। আমি মনে করি এগুলো পজেটিভ দিক। আমরা আমাদের সমস্যা নিয়ে বার বারই মিটিং করতে পারব। সমাধান উভয় পক্ষ মিলে কিভাবে করা যায় সেই রাস্তাও বের করা যাবে।

বার্তা২৪.কম: আইএমএফ’র পরামর্শেই বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের মূল্য একলাফে ৭ টাকা বাড়াতে বাধ্য হয়েছে শেষ মুহূর্তে এসে, এই দাবি করছেন অর্থনীতিবিদরা। প্রশ্ন হচ্ছে, ডলারের মূল্যবৃদ্ধির ফলে আমদানি-রফতানিতে প্রভাব কতখানি পড়ছে?

আমিন হেলালী: কথাটা ফেলে দেওয়ার মত নয়। আমরা যেহেতু নিম্ন আয় থেকে উত্তীর্ণ হয়ে এখন মধ্যম আয়ে গ্রেজুয়েশন নেব; একারণে আমাদের ওপর অনেক কমপ্লায়েন্স ভর করছে। এটা ভয় পেলে হবে না। নিয়মের মধ্যে চললে কিন্তু সব সময় লাভবান হওয়া যায়। যদি নিয়মকে প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব হয়। বাংলাদেশের প্রধান সম্পদই হচ্ছে মানবসম্পদ। আমরা নিয়ম যদি পালন করতে পারি, আমাদেরকে কেউ পিছে ফেলতে পারবে না। আমাদের কাছে আসতেই হবে। পৃথিবীর সর্বত্রই মানবসম্পদের সংকট, তাদের কাজের লোক নেই। আমাদের কাজের লোক আছে। নিয়ম আমাদের পালন করতেই হবে, আমি নিজেও তা এডমিট করি।

বার্তা২৪.কম: অর্থনীতিকে ভারসাম্যপূর্ণ করতে বড় সংকটটি কোন জায়গাতে বলে মনে করেন?

আমিন হেলালী: আমরা এফবিসিসিআই এর পক্ষ থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি, আমাদের এসোসিয়েশন-চেম্বারকে কমপ্লায়েন্স করতে। হ-য-ব-র-ল ভাবে অর্থনীতি এই জায়গায় আসছে। অর্থনীতির আকার বড় হয়েছে। আমাদের যে রেভিনিউ, এনবিআর এর যে রেভিনিউ কালেকশন-তাদের টার্গেটই ৭ %। বাস্তবায়ন কতটুকু হবে কে জানে? আমরা এতবড় একটা অর্থনীতির দেশ। স্ট্যান্ডার্ড হল মিনিমাম ২২-২৩%। নেপালের মত দেশে ১৪-১৫%। এটা কার ব্যর্থতা? আমি মনে করি সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা, এনবিআর এর ব্যর্থতা এটা। ২০০৯ সালে ৯০ বিলিয়নের অর্থনীতি ছিল, তখন তাদের যে পরিকল্পনা ছিল, তারা (এনবিআর) এখনও সেখানেই আছে। বর্তমানে অর্থনীতির আকার হয়েছে ৪৭০ বিলিয়ন। এনবিআর সেই জায়গায় তাদের জাল বিস্তার করতে পারেনি। সেই জায়গাগুলো আয়ত্বে আনতে পারেনি কারণ হয়ত তারা রেভিনিউ কালেকশনের চাপে থাকে। যারা রেভিনিউ দেয় তারা খোঁজে খোঁজে তাদের কাছেই যায়। বর্তমানে আয়কর সাবমিট করেছে মাত্র ৩৭ লাখ। এর মধ্যে ২১ লক্ষ সরকারকে কর দিয়েছে।

বার্তা২৪.কম: এনবিআর’র বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের হয়রানির অভিযোগ আবারও প্রকাশ্যে এল। সম্প্রতি বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে ব্যবসায়ী নেতারা এর প্রতিকারও দাবি করেছেন। গভর্নরের সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি এসেছে কী?

আমিন হেলালী: গভর্নর এবিষয়ে বলেছেন, আপনারা যারা কাঁচামাল আমদানিকারকদের জন্য ডলারের কোনো কমতি পড়বে না। আমরা গভর্নরকে সুনির্দিষ্টভাবে বলেছি, যারা প্রতারণা করে টাকা নিয়ে গেছেন ব্যাংক থেকে এবং বিদেশে টাকা পাচার করেছেন, আপনি তাদের চিহ্নিত করুন। আমরা আপনাকে সহযোগিতা করব। আপনার কোনো অসুবিধা হবে না। আমরা আপনার সঙ্গে আছি।

তিনি বলেছেন, ‘আমার কাছে স্পষ্ট নির্দেশনা আছে সরকার প্রধানের। আমি কারও চোখ রাঙানি দেখতে পারব না। কারোর যদি এ সংক্রান্ত কিছু ধরা পড়ে, ছাড় দিব না। তিনি বলেছেন, টুকটাক এদিক-সেদিক হবেই, মেজর যে ঘাপলা ছিল তা পুরোপুরি স্টপ আছে। মানি লন্ডারিংয়ের যে কয়েকটি ঘটনা, ওভার ইনভেস্টমেন্ট...যে জিনিসের দাম ১০০ ডলার, তার অনুকূলে ৩০০ ডলার এলসি করে; ২০০ ডলার পাচার ঘটনাও অনেক হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের চিহ্নিত করেছে বলে জানানো হয়েছে। ওই জায়গাগুলো যেন আর ভবিষ্যতে পুনরাবৃত্তি না হয়, অতীতে যা হয়েছে তা আছে নথিভূক্ত কিন্তু ভবিষ্যতে আর হবে না, একথা বলেছেন গভর্নর।। আমাকে উনাকে বলেছি, এগুলো লিস্ট করেন এবং আমাদেরকেও দেন। আমি রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন স্তরেও এসব কথাগুলি বলি, কারণ আমাদের অধিকার আছে, কেননা আমরা সঠিকভাবে ব্যবসা করতে চাই। দোষ নিতে চাই না।

বার্তা২৪.কম: এনবিআর’র হয়রানিতে রফতানিখাত বাধাগ্রস্ত হয় এই অভিযোগ রয়েছে...

আমিন হেলালী: পূর্বেও উল্লেখ করেছি, ৯০ বিলিয়ন ডলার অর্থনীতির যে কাঠামামো ছিল, যে প্ল্যান ছিল- তা দিয়ে ৪৭০ বিলিয়নের অর্থনীতিকে কন্ট্রোল করতে চাইলে হবে? আপনার সক্ষমতা আছে ১০০ টাকা ডিল করার, কিন্তু যদি আপনার হাতে হাজার টাকা আসে তা কিভাবে আপনি ডিল করবেন? সেটা ব্যবস্থাপনা করতে আপনাকে নিশ্চয়ই সিস্টেম করতে হবে। আমি মনে করি বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার ৪৭০ বিলিয়ন ডলার নয়; যেহেতু আমি ফেডারেশনে সব ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ওঠাবসা করি তারই প্রেক্ষিতে বলছি, আমাদের ইনফর্মাল যে অর্থনীতি যা রাষ্ট্রীয় হিসাব নিকাশের মধ্যে আসছে না। ঘুষ-দুর্নীতি বা অন্যান্য ইস্যু, রোজার সময় আমরা যে জাকাত দিই-এসব কোনো রাষ্ট্রীয় হিসাবে অন্তর্ভূক্ত হচ্ছে না। আমি মনে করি, আমাদের অর্থনীতির যে বহুবিধ মাত্রা আছে, অর্থনীতিবিদদের থিওরি সেখানে কাজে লাগছে না। তারা এসব বিষয় বিবেচনায় আনছেন না। এগুলোকে যদি মেইনস্ট্রিম করতে পারি, তাহলে আমাদের বাজেট আট লক্ষ কোটি কেন হবে; আমি মনে করি ১৬ লক্ষ কোটি হবে। রেভিনিউ ইনকাম যদি ৩ লক্ষ কোটি থেকে বাড়িয়ে আট লক্ষ কোটি হয়-তাহলে অনায়াসেই ১৫ লক্ষ কোটি টাকার বাজেট করতেই পারি। এনবিআর কঠোর হচ্ছে শুধু যারা দৃশ্যমান ব্যবসার মধ্যে আছে তাদেরকে প্রতি। নতুন যারা আসছে তারা আর মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে না। কেউ নতুন একটা ব্যবসা খুলবে, নতুন কোন স্টার্টআপ আসবে-তখন তারা (এনবিআর) যেসব নিয়ম-কানুনের ফর্দ লাগিয়ে দিচ্ছেন-সেই ভয়ে এখন আর কেউ বিনিয়োগে যাচ্ছে না। এনবিআর’কে সৃজনশীল চিন্তা ভাবনায় আসতে হবে। যেটা হয়ে গেছে তাকে কিভাবে সারফেইসে আনবে সেটা চেষ্টা করুক, ডিস্টার্ব না করুক। সবাই ইনকাম ট্যাক্সটা দিতে চায়। কেউ হয়ত ৭ বছর ধরে কাজ করে, সেও চাইবে ট্যাক্স দিয়ে স্বচ্ছ হয়ে যেতে। কিন্তু যখনই কেউ দিতে যাবে, তখন হয়ত সংশ্লিষ্ট কেউ বলবে-‘আপনার বিগত দিনের সবকিছু অডিট হবে। সব ফেরত দিতে হবে। তারচেয়ে আসেন দেওয়ার দরকার নেই। একলা একলা ডিল করে ফেলি।’-আপনি যা ইনকাম করে খরচ করে ফেলেছেন তার ওপর যদি করারোপ করে তাহলে কেউ কর দিতে আসবে না। তাই এনবিআরকে করদাতাবান্ধব হতেই হবে।

;