অর্থনৈতিক পরাশক্তি হওয়ার দৌড়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে রাখছে এস আলম গ্রুপ



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
দেশের অর্থনীতিতে মেগা বিনিয়োগের মাধ্যমে অবদান রাখছে এস আলম গ্রুপ

দেশের অর্থনীতিতে মেগা বিনিয়োগের মাধ্যমে অবদান রাখছে এস আলম গ্রুপ

  • Font increase
  • Font Decrease

ধারাবাহিক সাফল্যের কারণে বাংলাদেশকে এখন এশিয়ার অর্থনীতিতে ‘পঞ্চম বাঘ’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কয়েক দশক আগেও বিশ্ব মঞ্চে একটি ‘তলাবিহীন ঝুঁড়ি’ হিসাবে ডাকা হলেও বর্তমানে উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ।

পূর্বের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ক্ষুধা, দুর্ভিক্ষ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের অভিশাপকে উপেক্ষা করে বাংলাদেশ বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে। লন্ডন-ভিত্তিক সেন্টার ফর ইকোনমিক্স অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চ (সিইবিআর) এর পূর্বাভাস অনুসারে এটি ২০৩৮ সালের মধ্যে বিশ্বের ২০ তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

বন্দর নগরী চট্টগ্রামের অন্যতম বৃহত্তম শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের অবদান ছাড়া এই অভূতপূর্ব সাফল্য সম্ভব হতো না।

গ্রুপটি ১৯৮৫ সাল থেকে ৩৭ বছরেরও বেশি সময় ধরে দেশের বিকাশমান অর্থনীতি মজবুতকরণে কাজ করছে। শিল্পগোষ্ঠীটি তার দীর্ঘ যাত্রায় দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় পণ্য, বিদ্যুৎ খাত, আমদানি ও পরিশোধন, স্থাপত্য, বিস্তৃত শিল্প ও অবকাঠামোগত প্রকল্পগুলোতে সম্পৃক্ত রয়েছে। অর্থনৈতিক অঞ্চল, স্বাস্থ্য, টেক্সটাইল, আইটি এবং অন্যান্য ব্যবসায় হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করে সচল রাখছে দেশের অর্থনীতি। সংস্থাটির উন্নয়ন উদ্যোগের ফলে ২ লাখেরও বেশি লোকের সরাসরি কর্মসংস্থান হয়েছে, যা দেশের আর্থ-সামাজিক পরিমণ্ডলকে সমৃদ্ধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। 

প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি ও পরিশোধন

এস. আলম গ্রুপ ছয়টি ভোজ্যতেল এবং দুটি চিনি শোধনাগারের কর্ণধার। তেল, গম এবং চিনির বেশিরভাগ অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করে ভোক্তাদের চাহিদা মেটাতে দেশের বাজারে চিনি, গম, ছোলা, পেঁয়াজ এবং তেলের মতো প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি ও প্রক্রিয়াজাতকরণে এস আলম গ্রুপ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।

২০২৩ সালে কোম্পানিটি ৭ লাখ ৫০ হাজার টন চিনি আমদানি করেছিল, যার মূল্য ৪৯ কোটি ৫ লাখ ডলার। গত তিন বছরে (২০২৩, ২০২২, ২০২১) চিনি আমদানির পরিমাণ ছিল ১৪ লাখ ৮২ হাজার মেট্রিক টন, যার মূল্য বাংলাদেশি টাকায় ৮২ কোটি ৬১ লাখ ৯৮ হাজার ৫০০ টাকা।

এছাড়া ২০২৩ সালে ৫ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানি হয়েছিল, যার মূল্য ১৪ কোটি ৫৬লাখ ডলার। গত তিন বছরে (২০২৩, ২০২২, ২০২১) গমের আমদানির পরিমাণ ছিল ১৬ লাখ ১০ হাজার টন যার মূল্য ৪৯ কোটি ৫৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা।

গত বছর পাম ও সয়াবিন তেলের মোট আমদানি ছিল প্রায় ৩ লাখ ১২ হাজার ৪৮০ মেট্রিক টন। যেখানে পাম তেল ছিল প্রায় ২ লাখ ৭৫ হাজার ৭৭৯ মেট্রিক টন এবং সয়াবিন তেল ছিল প্রায় ৩৬ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন। পাম তেলের আর্থিক বাজার মূল্য ছিল যথাক্রমে ২৫ কোটি ৯১ লাখ ৪৭ হাজার ১৫২ ডলার এবং সয়াবিন তেলের জন্য ৪ কোটি ১৯ লাখ ১ হাজার ৭২ ডলার। গত তিন বছরে (২০২৩, ২০২২, ২০২১) মোট তেল আমদানির পরিমাণ ছিল ১৩ লাখ ১০৬ মেট্রিক টন, যার মূল্য ১৫৬ কোটি ৮২ লাখ ৪২ হাজার ৩৩১ টাকা।

এস. আলম গ্রুপ বর্তমান অভ্যন্তরীণ বাজারের তেল, গম এবং চিনির চাহিদার যথাক্রমে ৩০,২০ এবং ৩৫ শতাংশ পূরণ করে। এই বছর এই হার ৫০ শতাংশ বৃদ্ধির পরিকল্পনা করেছে কোম্পানিটির। এস আলম গ্রুপের ছয়টি ভোজ্য তেল শোধনাগার এবং দুটি সক্রিয় চিনি শোধনাগারের পাশাপাশি আরেকটি নির্মাণাধীন রয়েছে। এই স্ব-অর্থায়নকৃত শোধনাগারগুলোতে ইউরোপীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রতিদিন প্রায় ৪ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন ভোজ্য তেল এবং ৫ হাজার ১০০ মেট্রিক টন চিনি পরিশোধন করা হয়। এর মধ্যে চট্টগ্রামে দুটি চিনি শোধনাগার রয়েছে। অন্যান্য মেগা চিনি শোধনাগারের নির্মাণ কাজ ২০২৬ সালের মধ্যে শেষ হবে।

তেল শিল্পে এস. আলম গ্রুপের নিট বিনিয়োগ প্রায় ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং চিনি শিল্পে প্রায় ৭০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এসব উদ্যোগের মাধ্যমে কোম্পানিটি ৬ হাজারের বেশি লোকের কর্মসংস্থান করতে সক্ষম হয়েছে। বেসরকারি কোন প্রতিষ্ঠানের একক প্রচেষ্টায় এতবড় সাফল্যের দৃষ্টান্ত কমই পাওয়া যাবে। 

বিদ্যুৎ খাতে বৃহৎ বিনিয়োগ: বাঁশখালীতে ২.৬ বিলিয়ন ডলারের এসএস পাওয়ার প্লান্ট এবং ৩ বিলিয়ন ডলারের সবুজ ও নবায়নযোগ্য শক্তি

এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট

এস আলম গ্রুপ চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে দেশের প্রথম বৃহৎ বেসরকারি কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করেছে। ১৩২০-মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টটি প্রায় ২.৬ বিলিয়ন ডলার বা ২৮ হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগে নির্মিত হয়েছে। এস. আলম গ্রুপের এই প্রকল্পে ৭০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে, বাকি ৩০ শতাংশ চীনা কোম্পানি এসইপিসিও ৩ এবং এইচটিজির হাতে রয়েছে।

গত বছর, বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি জাতীয় গ্রিডে একীভূত করা হয়েছিল, যেখানে দুটি ইউনিট রয়েছে এর প্রতিটির ক্ষমতা ৬৬০ মেগাওয়াট। প্রথমটির বাণিজ্যিক বাণিজ্যিক উৎপাদন ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ এবং ২৬ অক্টোবর, ২০২৩-এ দ্বিতীয় ইউনিটের উদ্বোধন করা হয়েছে। এই প্রকল্পের বিশেষ দিক হল, এটির উৎপাদিত শক্তি অন্যান্য অনেক পাওয়ার প্ল্যান্টের তুলনায় বেশি সাশ্রয়ী।

সবুজ ও নবায়নযোগ্য শক্তি

এস. আলম গ্রুপের হাতে নেয়া সাম্প্রতিক মেগা প্রকল্প হল সবুজ ও নবায়নযোগ্য শক্তি। চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে স্থাপিত কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্টের প্রত্যাশিত ক্ষমতা হবে ৩ হাজার মেগাওয়াট। সূচনা থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ৫০% সবুজ শক্তি দিতে সক্ষম হবে এবং পরে ধীরে ধীরে এটি ১০০% পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হবে। এই প্রকল্পে বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার এবং এটি ২০২৭ সালের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে। এটি সম্পন্ন হলে, এই প্রকল্পটি প্রায় পাঁচ হাজার লোকের জন্য সরাসরি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। এছাড়া সেখানে পরোক্ষভাবে এক লাখ লোকের কর্মসংস্থান হবে। জিই, সিমেন্স এবং মিতসুবিসি-এর মতো নেতৃস্থানীয় পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোকে এই সবুজ এবং পুনর্নবায়নযোগ্য শক্তিতে নিযুক্ত করা হবে। এই প্রকল্পের অনন্য প্রকৃতির কারণে প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী কার্বন ট্যাক্সের সুবিধা পাবে দেশ। যা টেকসই শিল্পোন্নয়ন প্রচেষ্টার এক মাইলফলক হয়ে থাকবে। 

অবকাঠামো নির্মাণ খাতে ইস্পাত ও সিমেন্ট শিল্প: দেশে উৎপাদিত হচ্ছে বিশ্বমানের ইস্পাত ও সিমেন্ট

এস. আলম গ্রুপ ১৯৯৫ সালে গ্যালভানাইজিং এবং স্টিল শিট প্রক্রিয়াজাত প্রক্রিয়া শুরু করে। এই কারখানাগুলি চট্টগ্রাম এবং নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত।জাপানি এবং ইতালীয় প্রযুক্তিভিত্তিক এই ফ্যাক্টটোরিগুলিতে, 'সিআই এবং জিপি শিট', 'কালার কোটেড সিজিআই শিট,' 'কোল্ড রোল্ড স্টিল শিট' এবং আরও অনেক কিছু তৈরি করা হয়।

এই গালভানাইজিং প্ল্যান্ট এবং ফ্ল্যাট রোলিং প্ল্যান্টগুলিতে ৬৪০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে এবং ২০০০ এরও বেশি কর্মচারী এই শিল্পে কাজ করে। গ্যালভানাইজিং শিল্পের চারটি প্ল্যান্টের মোট উৎপাদন ক্ষমতা প্রতিদিন প্রায় ৯৩০ মেট্রিক টন। এছাড়া, দুটি ফ্ল্যাট রোলিং প্ল্যান্টের বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা ২ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন।

একটি উল্লেখযোগ্য স্ব-অর্থায়নে এস. আলম গ্রুপ ২০০০ সালে চট্টগ্রামের চরপাথরঘাটায় 'পোর্টল্যান্ড কম্পোজিট সিমেন্ট ফ্যাক্টরি' শুরু করে। ১৩০ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগের প্রতিষ্ঠানটিতে ১৫০০ জনেরও বেশি কর্মী রয়েছে। জার্মান প্রযুক্তি ব্যবহার করা এই প্ল্যান্টে দৈনিক উৎপাদন হয় ১২০০ মেট্রিক টন সিমেন্ট।

৫৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ২ শিল্পাঞ্চলে ৫০ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি

সরকারের উন্নয়ন লক্ষ্যের সাথে সামঞ্জস্য রেখে, এস. আলম গ্রুপ দুইটি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ার পরিকল্পনা করেছে। এগুলো হচ্ছে ১৮৪ একর জমি উপর 'বাঁশখালী এস. আলম অর্থনৈতিক অঞ্চল ১' এবং ২৫৯ একর জমি উপর 'বাঁশখালী এস. আলম অর্থনৈতিক অঞ্চল ২' ।

দেশের অন্যতম শীর্ষ ব্যবসায়িক শিল্পগোষ্ঠী এই গ্রুপের ৫৮ হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এর মধ্যে বিদ্যুৎ খাতে ৩৫ হাজার কোটি, এইচআর কয়েল খাতে ১৫ হাজার কোটি, ডিআরআই প্ল্যান্ট খাতে সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা এবং বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্নয়নে ৫০০ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে গ্রুপটির।

শিল্পাঞ্চল দুটির কার্যক্রম শুরু হলে ৫০ হাজারের বেশি নতুন কর্মসংস্থান তৈরিসহ বিপুল পরিমাণের বিদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় ও সরকারের রাজস্ব আহরণের নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে। এ ছাড়া ভবিষ্যতে আরও ৪০০ একর ভূমি ‘বাঁশখালী এস আলম ইকোনমিক জোন ২’-এ যুক্ত করা এবং জাপানের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বেশ কিছু মাঝারি ও ভারী শিল্প স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে এস আলম গ্রুপের।

শিল্পাঞ্চল দুইটি বাস্তবায়ন হলে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের নতুন দিগন্ত উন্মোচন হবে এবং সরকারের রাজস্ব খাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

স্বাস্থ্যসেবা তহবিল: ৫ লাখেরও বেশি মানুষকে সেবা দিতে ২০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ

এস. আলম গ্রুপ তাদের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে দেশে প্রধান প্রধান শহরে ক্লিনিক, হাসপাতাল এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেছে। তাদের লক্ষ্য হচ্ছে সুবিধাবঞ্চিতদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা এবং স্বাস্থ্যসেবাকে সবার কাছে আরও সহজলভ্য করা। দেশের অন্যতম শীর্ষ ব্যবসায়িক শিল্পগ্রুপের উদ্যোগে চট্টগ্রামে ‘এস. আলম ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতাল’ প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষের দিকে। এটি অনকোলজি, কার্ডিওলজি, নেফ্রোলজি, এন্ডোক্রিনোলজি, অর্থো-পেডিক্স, পেডিয়াট্রিক্স, গাইনোকোলজি এবং মাতৃত্বকালীন যত্নসহ বিভিন্ন মতো সেবা প্রদান করবে।

গ্রুপটি দেশের বিভিন্ন স্থানে মেডিকেল ও নার্সিং কলেজ এবং অন্যান্য চিকিৎসা সুবিধা স্থাপনের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করেছে। এখন পূর্বাচল, বসুন্ধরা এবং অন্যান্য এলাকায় ভূমি উন্নয়নে কাজ করছে। এস আলম গ্রুপের এসব উদ্যোগে ৫ হাজারের বেশি লোকের কর্মসংস্থান হবে। ইউরোপীয়, ভারত এবং পূর্ব এশীয় ব্যবসায়িক অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ হচ্ছে, যা ৫ লাখেরও বেশি লোককে সেবা দেবে। এসব প্রয়াসের মাধ্যমে বাংলাদেশ কেবল এশিয়াতেই নয়, এক সময় বিশ্বের অর্থনৈতিক পরাশক্তি হয়ে উঠবে, এই প্রত্যাশা দৃঢ়ভাবেই করা যায়।

   

চট্টগ্রামে মাল্টিপারপাস বে-টার্মিনাল, আবুধাবি পোর্টস দিচ্ছে ১০০ কোটি ডলার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম বন্দরের বহুল প্রতীক্ষিত বে-টার্মিনাল প্রকল্পের অধীন মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণে ১০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করছে আবুধাবি পোর্টস গ্রুপ (এডি পোর্টস)। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল এবং আবুধাবি পোর্টস গ্রুপের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার সাইফ আল মাজরুই স্মারকে সই করেন। এসময় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও এডি পোর্টসের বাংলাদেশ এজেন্ট সাইফ পাওয়ারটেকের প্রতিনিধিরা উপস্থিতি ছিলেন।

সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী, সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবি পোর্টস গ্রুপ বে-টার্মিনাল প্রকল্পের অধীনে মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণে বিনিয়োগ করবে। তারা অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি যন্ত্রপাতিও সরবরাহ করবে।


জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে চট্টগ্রাম শহরের দক্ষিণ পাশে বঙ্গোপসাগরের তীরে ‘বে- টার্মিনাল’ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ‘বে-টার্মিনাল’ নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়ার পর সেখানে ফিজিবিলিটি স্টাডির জন্য ২০১৭ সালে কনসালটেন্ট নিয়োগ করা হয়। কনসালটেন্ট প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ফিজিবিলিটি স্টাডি ও মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করা হয়। গত বছরের ১৪ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী চূড়ান্ত মাস্টারপ্ল্যানের মোড়ক উন্মোচন করেন।

সমীক্ষা অনুযায়ী, মাস্টারপ্ল্যানে এক হাজার ২২৫ মিটার দীর্ঘ দুটি কন্টেইনার টার্মিনাল এবং এক হাজার ৫০০ মিটার দীর্ঘ একটি মাল্টিপারপাস টার্মিনালসহ মোট তিনটি টার্মিনাল রয়েছে। তিনটি টার্মিনালের দৈর্ঘ্য চার দশমিক ৯৫ কিলোমিটার। মাস্টারপ্ল্যানে মোট ১১টি জেটি রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।

চ্যানেলে যথোপযুক্ত নাব্যতা থাকায় সেখানে ১২ মিটার ড্রাফটের এবং ৩০০ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজ ভেড়ানো সম্ভব হবে। আবহাওয়া এবং সাগরের বড় বড় ঢেউ থেকে রক্ষা করতে একটি ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ ব্রেক ওয়াটার বা ঢেউনিরোধক বাঁধ নির্মাণ করা হবে। বে-টার্মিনাল থেকে বহির্নোঙরের দূরত্ব এক কিলোমিটার।

মাল্টিপারপাস টার্মিনালটি চট্টগ্রাম বন্দর ও আবুধাবি পোর্টস গ্রুপ যৌথভাবে নির্মাণ করবে। এক হাজার ২২৫ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণে সিঙ্গাপুরের পিএসএ এবং অপরটি নির্মাণে দুবাইয়ের ডিপি ওয়ার্ল্ড অর্থায়ন করার সম্ভাবনা রয়েছে। ছয় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ব্রেক ওয়াটার ও অ্যাক্সেস চ্যানেল ড্রেজিং করবে বিশ্বব্যাংক।

বে-টার্মিনাল প্রকল্পের জন্য ৬৬ দশমিক ৮৫ একর ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি ইতোমধ্যে অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে এবং ৫০০ দশমিক ৬৯ একর সরকারি খাস জমি অনুমোদন পেয়েছে। ব্রেক ওয়াটার নির্মাণে বিশ্বব্যাংকের বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে। বছরে ৫০ লাখ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ২০২৬ সালে অপারেশনে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।


স্মারক সই অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশি বন্দর পরিচালনাকারীরা বিনিয়োগ করছেন। আমি সম্ভাবনা ও স্বপ্ন দেখি, এক সময় আসবে, যখন চট্টগ্রাম বন্দর পৃথিবীর অন্য কোনো দেশেও এর কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তফা কামাল, চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল, বাংলাদেশে নিযুক্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লা আলী আব্দুল্লা কাসিফ আল মৌদি, আবুধাবী পোর্টস গ্রুপের ইন্টারন্যাশনাল অফিসের রিজিওনাল চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার আহমেদ আল মুতায়া।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুর পথ ধরে মেরিটাইম সেক্টরে আমাদের যে যাত্রা, তা পুনর্জীবিত ও উজ্জীবিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার সময়ে সমুদ্র ও পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত তৈরি হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর গত ১৫ বছরে আন্তর্জাতিক বন্দরের সক্ষমতা অর্জন করেছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, মোংলা বন্দরের আপগ্রেডেশন হচ্ছে। মোংলা বন্দর চট্টগ্রাম বন্দরের মতো সক্ষমতা অর্জন করবে। পায়রা বন্দরে নির্মাণাধীন জেটিতে ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজ ভিড়েছে। এটি নতুন অনুভূতি। আগে মাদার ভেসেলে পণ্য পরিবহনের জন্য আমাদের কলম্বো ও সিঙ্গাপুর বন্দরের ওপর নির্ভরশীল হতে হতো। বর্তমানে মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মিত হচ্ছে। এতে করে নির্ভরশীলতা কমে যাবে। মাতারবাড়ি বন্দর আঞ্চলিক হাবে পরিণত হবে।

তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল পরিচালনার জন্য সৌদি আরবের রেড সি গেটওয়ে টার্মিনালের সঙ্গে চুক্তি সই হয়েছে। খুব শিগগিরই এর কার্যক্রম শুরু হবে। বে-টার্মিনাল নির্মিত হলে ২৪ ঘণ্টা জাহাজ আসা-যাওয়া করবে। জোয়ার-ভাটার জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। চট্টগ্রাম বন্দর অন্য ধরনের উচ্চতায় চলে যাবে। বে-টার্মিনালের সঙ্গে সড়ক, রেলওয়ে কানেক্টিভিটি থাকবে। পণ্য পরিবহন সহজলভ্য হবে। বে-টার্মিনাল বাংলাদেশের সমুদ্র পরিবহনের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। অল্প সময়ের মধ্যেই মাল্টিপারপাস টার্মিনালের নির্মাণ কাজ শুরু করতে চাই।


জানা যায়, টার্মিনালটি নির্মিত হলে চট্টগ্রাম বন্দর বছরে ১০ লাখ টিইইউ (টোয়েন্টি-ফুট ইকুইভ্যালেন্ট ইউনিট) কন্টেইনার এবং ৭০ লাখ মেট্রিক টন কার্গো হ্যান্ডলিং করতে পারবে। এতে দেশের আমদানি ও রপ্তানি দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি পরিবহন খরচ এবং সময় কমে আসবে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, আন্তর্জাতিক কন্টেইনার টার্মিনাল পরিচালনায় এডি পোর্ট গ্রুপ একটি দক্ষ প্রতিষ্ঠান। এডি পোর্ট গ্রুপের ৫টি সমন্বিত বিজনেস ক্লাস্টার ডিজিটাল, ইকোনমিক সিটিস এন্ড ফ্রি জোন, লজিস্টিকস, মেরিটাইম এবং পোর্ট রয়েছে। আবুধাবি অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিভাগের তত্ত্বাবধানে আবুধাবি পোর্ট গ্রুপ মাকতা গেটওয়ে এডভান্সড ট্রেড এন্ড লজিস্টিক প্লাটফরম তৈরি এবং পরিচালনা করেছে। যা আবুধাবি জুড়ে বাণিজ্য ও লজিস্টিক নৌ, স্থল ও আকাশ পথে পরিষেবা গুলোকে একীভূত করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রমসহ বে-টার্মিনাল প্রজেক্টে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাথে যৌথভাবে এডি পোর্ট গ্রুপ বিনিয়োগ করবে । এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের ফলে চট্টগ্রাম বন্দরে তথা বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য বিদেশী বিনিয়োগ আসবে এবং দেশীয় অর্থের সাশ্রয় হবে। এতে দেশের অর্থনীতি উপকৃত হবে। এডি পোর্ট গ্রুপের সাথে অংশীদারিত্বে কাজ করার ফলে চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন সম্ভব হবে এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে মর্মে আশা করা যায় ।

উল্লেখ্য, বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে ১০ মিটার গভীরতা ও ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের বড় জাহাজ প্রবেশ করতে পারে না। বে টার্মিনালে ভিড়তে পারবে ১২ মিটার গভীরতা ও ২৮০ মিটার পর্যন্ত দৈর্ঘ্যের জাহাজ।

;

‘রাজনীতিবিদরা অর্থনীতিবিদদের হুকুমের আজ্ঞাবহ দেখতে পছন্দ করেন’



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
“বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় আগামীর করণীয়” শীর্ষক একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান

“বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় আগামীর করণীয়” শীর্ষক একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজনীতি ও অর্থনীতির মধ্যে অসম রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও অর্থনীতিবিদ ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন।

তিনি বলেছেন, রাজনীতিবিদরা অর্থনীতিবিদদের গৃহভৃত্য না হলেও হুকুমের আজ্ঞাবহ হিসেবে দেখতে পছন্দ করেন।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) আয়োজিত “বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় আগামীর করণীয়” শীর্ষক একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি বৃহস্পতিবার এসব কথা বলেন।

বিআইডিএস সম্মেলন কক্ষে ড. ফরাসউদ্দিনের লেখা বইটির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান।

বিআডিএস মহাপরিচালক (ডিজি) বিনায়ক সেন অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য শামস্ রহমান, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান জাইদি সাত্তার, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, অর্থনৈতিক বিবেচনায় নেয়া প্রকল্পের লাভ ক্ষতির সঙ্গে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের লাভ ক্ষতির বড় একটা পার্থক্য থাকে। সেটি সব দেশেই আছে, আর এটাকেই রাজনৈতিক অর্থনীতি বলা হয়ে থাকে।

‘নীতিমালার যে ধরনের বিশ্লেষণ দরকার এবং বাস্তবায়ন করার সক্ষমতা দরকার, সেটা সরকারের অনেক সময় থাকে না। এর সঙ্গে প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার সংস্কারের বিষয়ও রয়েছে’। তিনি বলেন, এ কারণেই রাজনীতির সঙ্গে অর্থনীতির বড় ধরনের বিচ্যুতি দেখা যায়।

অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে দেয়া পরামর্শের সঙ্গে রাজনৈতিক সরকারের পদক্ষেপ না মেলার কারণেও বড় ধরনের বিচ্যুতি হচ্ছে, বলে মনে করেন তিনি।

এ অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, কিছু প্রভাবশালীদের রাতারাতি অন্যায়ভাবে অর্থ বৈভব অর্জনের সুযোগ করে দেওয়া। এই ধরনের রাজনৈতিক কৌশল অপরিহার্য ছিল না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

তিনি আরও বলেন, নিজ পরিশ্রমে ছোট থেকে বড় হয়েছেন এমন সত্যিকারের শিল্প উদ্যোক্তারা এসব কারণে বঞ্চিত হচ্ছেন। এই বৈষম্যের কারণে ব্যবসায় পরিবেশের অনেক ক্ষতি হয়েছে।

অনুষ্ঠানে ফরাসউদ্দিন বলেন, অর্থনীতিবিদেরা গণমাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে জ্ঞানের কথা বলে থাকেন। আমন্ত্রণ জানিয়ে তাঁদের কথা রাষ্ট্র পরিচালনাকারীদের শোনা উচিত।

‘আমি বড় অর্থনীতিবিদ নই। তবু মনে করি, প্রচলিত পথে দারিদ্র্য বিমোচনের পরিবর্তে শিল্পায়নের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার,’ তিনি বলেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের পদটিকে সাংবিধানিক পদে উন্নীত করার দিয়ে ফরাসউদ্দিন বলেন, “নিদেনপক্ষে গভর্নর পদে ছয় বছরের জন্য নিয়োগ দেয়া উচিত।”

কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং এর গভর্নরের অটোনমির বিষয়ে কারো দ্বিমত করার সুযোগ নেই বলে অনুষ্ঠানে মন্তব্য করেন ড. মশিউর রহমান।

ডঃ বিনায়ক সেন বলেন, রাজনীতি ও অর্থনীতি এক সঙ্গে চলতে পারে না। রাজনীতির ওপর ধনীদের প্রভাব কমাতে হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এটা কীভাবে করা যায় বিশ্বব্যাপী চিন্তা করা হচ্ছে।

ব্যাংকিং খাতে সুশাসনের অভাব রয়েছে মন্তব্য করে ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, ব্যাংক খেলার যায়গা নয়। এখানে মানুষের আমানত থাকে। মানুষের আমানত নিয়ে খেলার সুযোগ নেই।

;

ভবনের অ্যাকটিভ ডিজাইন বুমেরাং হয়েছে: নসরুল হামিদ



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ষাটের দশকে আমাদের স্থাপত্যবিদরা পথ দেখিয়ে গেছেন কিন্তু আমরা মাঝখানে পথ হারিয়ে ফেললাম। সঠিক পথ ফেলে ভবনের অ্যাকটিভ ডিজাইন বুমেরাং হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এমপি।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) সন্ধ্যায় আগারগাঁও আইএবি সেন্টারে নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (নেসকো) মাস্টার কন্ট্রোল সেন্টারের ডিজাইন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা যদি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববদ্যালয়ের দিকে তাকায়, দেখেন তখন তারা চিন্তা করেছিলেন। অনেক দেশেই তখন বিষয়গুলো চিন্তায় করেনি। আমরা সেখান থেকে অ্যাকটিভ ডিজাইনে গেলাম, এগুলো কস্ট ইফেক্টিভ হচ্ছে না। যারা ভালো কাজ করতে চায় তাদের টিকে থাকা কঠিন।

তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ে বেশ দক্ষ লোকজন থাকেন তাদের বক্সের মধ্যে থেকে কাজ করতে হয়। তারা চেঞ্জ চাচ্ছে এটাই বড় বিষয়। আমরা তরুণদের নিয়ে একটি টিম করছি, আমাদের ভবনগুলো যেন ভবিষ্যৎ চিন্তা ও ব্যবহারকারী বান্ধব হয়। আমরা স্থাপত্যবিদদের দিয়ে তিতাসের ভবন করছি, ডেসকোর ভবন করছি। ভবিষ্যতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে। প্রতিযোগিতা হলো নতুনদের ধ্যানধারণা পেলাম, তাদেরও একটা আইডিয়া হলো বড় পরিসরে কাজ করার।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, প্রতিযোগিতায় ৮২টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়। সেখান থেকে ধাপে ধাপে চূড়ান্ত করা হয়েছে ব্যাপক উৎসাহ ছিল। আমরা পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কথা বলছি। আমরা সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কিন্তু আমরা দায়ী না। অনেকে প্রশ্ন করেন আমরা কি করছি, কেন এখনও কয়লা ব্যবহার করছি। আমরা ক্লিন এনার্জির দিকে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগ গত ১৪ বছর ধরে এডিপি বাস্তবায়নে এক নম্বর থাকে, প্রথম বিদ্যুৎ বিভাগকে স্বাধীনতা পদক দেওয়া হয়েছে।

বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, নেসকোর মাস্টার কন্ট্রোল সেন্টারের ডিজাইন প্রতিযোগিতার বিষয়টি ব্যতিক্রম উদ্যোগ। আমি মনে করি এর মাধ্যমে আইএবির সঙ্গে নতুন ডোর উন্মোচিত হবে। আমরা মনে করি হতাশ হতে হবে না। ভবনকে যদি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী করতে পারি, তাহলে বিশাল অগ্রগতি হবে।

তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, আমি তখন অর্থমন্ত্রণালয়ে তখন অর্থ মন্ত্রণালয়ের ভবন করা হবে। আমরা বলেছিলাম যত টাকা লাগুক খরচ করতে রাজি আছি। ভবন গ্রিন হতে হবে, অনেক টাকা ব্যয় করেছি, তবে নান্দনিকও হয়নি, জ্বালানি সাশ্রয়ীও হয়নি।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা এনার্জি সাশ্রয়ী ব্যবহার নিশ্চিত করতে কাজ করছি। নেসকোর মাস্টার কন্ট্রোল সেন্টারে সেই ধারাবাহিকতা অংশ।

নেসকো বোর্ডের চেয়ারম্যান ও বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মাসুম আহমেদ চৌধুরী বলেন, আমাদের লক্ষ্য ছিল আধুনিকতম ভবনের সঙ্গে বিদ্যুতের সাশ্রয়ী ব্যবহার নিশ্চিত করা। আমাদের ক্ষুদ্র উদ্যোগ এক সময় আন্দোলনে রূপান্তর হবে বলে আশা করি।

আইএবির প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. খন্দকার সাব্বির আহমেদ এতে সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, এক সময়ের নাজুক বিদ্যুৎ বিভাগ এখন স্থাপত্য বিভাগের প্রধান পৃষ্টপোষক হয়ে উঠেছে। ডিজাইন প্রসঙ্গে বলেন, এখানে প্যাসিভ ডিজাইন করা হয়েছে, কনভেনশনাল জ্বালানির চেয়ে প্রাকৃতিক উৎসের ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন নেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকিউল ইসলাম। তিনি বলেন, নেসকো সব ধরনের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে গ্রাহকদের মানসম্মত সেবা নিশ্চিত করা।

নেসকো রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের শহরাঞ্চলে বিদ্যুৎ বিতরণের দায়িত্বে রয়েছে।

;

ওয়ালটনের বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব পণ্য উন্মোচন



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আসছে ঈদুল আজহা বা কোরবানি ঈদ। এ উপলক্ষে ক্রেতাদের জন্য বিশেষ চমক হিসেবে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও ফিচারের ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী নতুন মডেলের পণ্য উন্মোচন করেছে দেশের ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটন।

নতুন মডেলের পণ্যের মধ্যে রয়েছে ইনভার্টার প্রযুক্তির মাল্টি-কালার ডিজাইনের সাইড বাই সাইড রেফ্রিজারেটর, ইউরোপিয়ান ডিজাইনের কম্বি মডেলের রেফ্রিজারেটর, ভার্টিকাল ফ্রিজার, চকোলেট কুলারসহ মোট ৭টি মডেলের ফ্রিজ।

এছাড়াও আছে সোলার হাইব্রিড প্রযুক্তির স্প্লিট টাইপ এসি, ৪ ও ৫ টনের সিলিং এবং ক্যাসেট টাইপ লাইট কমার্শিয়াল এসি, ৬৫ ইঞ্চির ওএলইডি টিভি, ওয়াশিং মেশিন ও বিএলডিসি প্রযুক্তির ফ্যান।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) সকালে রাজধানীর বসুন্ধরায় ওয়ালটন করপোরেট অফিসের কনফারেন্স হলে আয়োজিত এক জমকালো অনুষ্ঠানে নতুন মডেলের প্রোডাক্টস উন্মোচন করেন ওয়ালটন প্লাজার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ রায়হান। অনুষ্ঠানে সারা দেশে একযোগে চলমান ডিজিটাল ক্যাম্পেইন সিজন-২০ এর ‘ননস্টপ মিলিয়নিয়ার’ অফারের বর্ণাঢ্য র‌্যালি উদ্বোধন করা হয়।

নতুন মডেলের পণ্য উন্মোচন অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেকের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর মেজর জেনারেল (অব.) ইবনে ফজল শায়েখুজ্জামান, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. ইউসুফ আলী, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর দিদারুল আলম খান (চিফ মার্কেটিং অফিসার), মফিজুর রহমান, ফিরোজ আলম, মো. তানভীর রহমান, তাহসিনুল হক, সোহেল রানা, মোস্তফা কামাল, মোহাম্মদ শাহজাদা সেলিম প্রমুখ।

এছাড়া ভার্চুয়াল মাধ্যমে সারা দেশ থেকে ওয়ালটন প্লাজা ম্যানেজার ও পরিবেশকগণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চলনা করেন জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ও ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আমিন খান।

;