বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাস্তবতার প্রেক্ষিতেই দলের চারজন সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিয়েছেন।তবে কৌশলগত কারণে শপথ নেননি তিনি।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে 'উন্নয়নের মৃত্যুকূপে জনজীবন/'নুসরাত' একটি প্রতিবাদ' শীর্ষক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। সভার আয়োজন করে 'আওয়াজ' নামের একটি মানবাধিকার সংগঠন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল কিছু সংবাদ মাধ্যমের সমালোচনা করে বলেন, 'আমি শপথ নেইনি। এটাও দলীয় সিদ্ধান্ত এবং আমাদের কৌশল। আমি কোনো চিঠিও দেইনি। কোনো সময়ও চাইনি। কিছু কিছু সংবাদ মাধ্যম বলেছে আমি নাকি আজকে শপথ নেব। তারা এখন কী লিখবেন? জোরেশোরে কয়েকটি চ্যানেল থেকে বলা হচ্ছে, আমি ব্যক্তিগতভাবে শপথ নেওয়ার জন্য সময় চেয়েছি, আবেদন করেছি। এটা একদম সিম্পল স্টেট কথা, আমি কোনো চিঠি দেইনি, কোনো সময় চাইনি।'
আরও পড়ুন: কী আছে ফখরুলের ভাগ্যে?
তিনি বলেন, 'আপনি বলতে পারেন, আপনার দলের সিদ্ধান্ত হলে, আপনি শপথ নেননি কেন? কারণ, এটাও দলের সিদ্ধান্ত। এটা আমাদের কৌশল। সেই কৌশলে আমি শপথ নেইনি। শপথের ব্যাপারে কোনো চিঠি দেইনি।'
বিএনপির শপথ নেওয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, 'এটা নিয়ে অনেকে অনেক রকম কথা বলছেন, চিন্তা করছেন এটা আমাদের জন্য খুব খারাপ সিদ্ধান্ত। কিন্তু আমরা মনে করছি না। আমাদের এটার পেছনে সব চেয়ে বড় যুক্তি হচ্ছে, সামান্যতম যে সুযোগটুকু রয়েছে, যে স্পেস রয়েছে সেটুকু ব্যবহার করা। একটা কথা আমাদের মনে রাখতে হবে— যেকোনো কিছুই সময়ের প্রয়োজনে পরিবর্তন হয়। কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি, এই সিদ্ধান্তটা সঠিক সিদ্ধান্ত। বাস্তবতার প্রেক্ষিতে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের গণতন্ত্র চর্চা, প্রতিবাদ করার যে জায়গাটুকু, তা একেবারেই সংকীর্ণ হয়ে আসছে। তাই, আমরা সেই জায়গা থেকে ন্যূনতম কথা বলার সুযোগ পেয়েছি। সময়ই প্রমাণ করবে এটা সঠিক সিদ্ধান্ত হল কিনা?'
আরও পড়ুন: কার নির্দেশে শপথ নিলেন না ফখরুল?
তিনি আরও বলেন, ‘গতকাল থেকে রাজনীতি খুব গরম হয়ে উঠেছে। কারণ, বিএনপির নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা শপথ নিয়েছেন। বলা যেতে পারে, এটা নিঃসন্দেহে একটা চমক, একটা ইউটার্ন। আমাদের দলীয় সিদ্ধান্ত ছিল ৩০ তারিখের যে নির্বাচন হয়েছে, সেটা কোনও নির্বাচন হয়নি। যে নির্বাচনের ভোট ২৯ তারিখের রাতে চুরি হয়ে গেছে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে। জনগণের ভোটের অধিকার ছিনিয়ে নিয়ে নির্বাচন হয়েছে। তখন জনগণের যে ক্ষোভ ছিল, সেই ক্ষোভের ধারাবাহিকতায় আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম— শপথ গ্রহণ করব না। কিন্তু একটি কথা আমরা বিশ্বাস করি, কোনো সিদ্ধান্তই যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত থাকবে, এটা সবসময় সঠিক নয়। আমরা পরিষ্কারভাবে বলেছি, আমাদের ন্যূনতম যে সুযোগটুকু আছে সংসদে গিয়ে বলার, সেটা কাজে লাগাবো।'
আরও পড়ুন: শপথের রাজনীতি
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, জেএসডি'র সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিনা রহমান, আয়োজক সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক ড. শাহিদা রফিক।
আরও পড়ুন: তারেকের নির্দেশেই বিএনপির এমপিরা শপথ নিয়েছেন: ফখরুল