‘রওশন এরশাদ ২০১৪ সালের মতো করতে পারবেন না’ 

জাতীয় পার্টি, রাজনীতি

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা  | 2023-11-18 05:21:32

২০১৪ সালের মতো রওশন এরশাদের প্রভাব বিস্তার করার সুযোগ নেই। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার মতো নির্বাহী ক্ষমতা তার নেই বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ও বিশেষ দূত মাসরুর মাওলা।

তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেছেন, ২০১৪ সালের নির্বাচন আর ২০২৩ সালের নির্বাচন এক না, অনেক পার্থক্য রয়েছে। ২০১৪ সালে রওশন এরশাদ যা করেছিলেন এবার তার সেই সুযোগ নেই। ২০১৪ সালে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ছিলেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। আর তখন বেগম রওশন এরশাদ ছিলেন তার স্ত্রী। যে কারণে অনেক কিছু করার ‍সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু এখন পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। আগের মতো সুবিধা করতে পারবেন না।

তিনি বলেন, রওশন এরশাদ জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক পদে রয়েছেন। ওই পদের নির্বাহী কোনো ক্ষমতা নেই। ওনি সিনিয়র পার্সন হিসেবে সম্মানিত করে রাখা হয়েছে। নির্বাচনে অংশ নেওয়া কিংবা না নেওয়ার প্রশ্নে তার সিদ্ধান্ত দেওয়ার কোনো ক্ষমতা নেই। তার সঙ্গে পার্টির কোনো নেতা নেই। তিনি যে জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতার পদ ব্যবহার করেন, সেটিও পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের দিয়েছেন ।

আমি যতদূর জানি তিনি (রওশন এরশাদ) নিজে নির্বাচন যাওয়ার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেন নি। তার আশপাশের কিছু লোকজন এসব বলা বলি করছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পরিস্থিতি আর বর্তমান পরিস্থিতি এক নয়। তখন আন্তর্জাতিকভাবে এমন চাপ ছিল না। প্রভাবশালী দেশগুলো তখন বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে এতটা সরব ছিল না। ২০১৪ কিংবা ২০১৮ সালের সঙ্গে মেলানো ঠিক হবে না বলেও মনে করেন তিনি।

নির্বাচন প্রশ্নে জাতীয় পার্টির সর্বশেষ অবস্থান কী? এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমরা সরকারের ডাকের অপেক্ষায় রয়েছি। আমরা মনে করছি আলোচনার মাধ্যমে একটি সমাধান আসবে।

পাল্টা প্রশ্ন ছিল আপনি কোন সংলাপের কথা বলছেন। যুক্তরাষ্ট্র সরকার সংলাপের জন্য যে চিঠি দিয়েছে তার সঙ্গে কোন যোগসূত্র রয়েছে। ওই চিঠিতো ৩টি দলকে দেওয়া হয়েছে? জবাবে মাসরুর মাওলা বলেন, আমি জাতীয় পার্টির মুখপাত্র। আমি জাতীয় পার্টির কথা বলতে পারি। অন্যদের বিষয়ে বলতে পারবো না।

তফসিল ঘোষণার পর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এখনও কোন মতামত দেননি। তিনি নির্বাচন প্রশ্নে ভেবে চিন্তে পা ফেলতে চান। কিন্তু পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ নির্বাচনে এক পা দিয়ে রেখেছেন। তফসিলকে স্বাগত জানিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। অনেকেই ২০১৪ সালের নির্বাচনের আলামত দেখতে পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। ২০১৪ সালে নির্বাচনে মনোনয়ন দাখিল করার পর হঠাৎ করেই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। কিন্তু সেই নির্দেশ অমান্য করে রওশনের নেতৃত্বে ৮৭জন প্রার্থী নির্বাচনে থেকে যান।

নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রশ্নে তফসিলের পর জিএম কাদের-এর পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায় নি। সর্বশেষ গত ১৪ নভেম্বর জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় জিএম কাদের বলেন, ”আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচনে যাবে কি না তা রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে নানাভাবে দুর্বল করার চেষ্টা করেছে। যখনই কোনো সিদ্ধান্ত নিতে যাই, তখনই পিছুটান আসে। কিন্তু সরকার দল ভাঙতে পারছে না। আমার অনুরোধ, যে সিদ্ধান্ত নেব, সবাই সে সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন। হয়তো সবার মতামতের প্রতিফলন নাও হতে পারে। রাজনীতিতে আবেগের মূল্য দিলে পথভ্রষ্ট হতে হবে, বাস্তবতাকে মূল্য দিতে হবে।’’

এ সম্পর্কিত আরও খবর