নির্বাচিত সরকারের অধীনে নির্বাচন জাতীয় পার্টিও চায়, তবে!

জাতীয় পার্টি, রাজনীতি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-31 11:26:00

আমরা চাই নির্বাচিত সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। যে সরকার নিজেই নিজের ফলাফল ঘোষণা করতে পারে তাকে নির্বাচিত সরকার বলা যায় না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের।

শুক্রবার (১৪ জুলাই) আইডিইবি মিলনায়তনে এরশাদের মৃত্যুবার্ষিকীর আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি আরও বলেন, এখন ডেমোক্রেসির বিপক্ষে আওয়ামী ক্রেসি চলছে। যেখানে গর্ভমেন্ট অব দ্য আওয়ামী লীগ, গর্ভমেন্ট বাই দ্য আওয়ামী লীগ এবং গর্ভমেন্ট ফর দ্য আওয়ামী লীগ। এটা কথনোই ডেমেক্রেসি হতে পারে না।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নামে ও বেনামে সরকার হয়ে যাচ্ছে। তারা তাদের সরকারের জন্য কাজ করছে। তারা কাজ করছে তাদের সরকারের জন্য। কিছু মানুষ প্রশাসনে আছে, পুলিশে আছে সরকারি বিভিন্ন বিভাগে আছে, তার আগ বাড়িয়ে বলেন আমরা আওয়ামী পরিবার, আমরা ছাত্রলীগ-যুবলীগ করেছি। তারা আওয়ামী লীগের সভায় যায়, স্লোগান দেয় এবং আওয়ামী লীগের ভাষায় কথা বলে। এরা হচ্ছে বেনামে আওয়ামী লীগ।

তিনি বলেন, বর্তমান আওয়মীক্রেসি দেশের ইতিহাস বদলে দিচ্ছে, আগামী প্রজন্মের জন্য একটি ভয়াবহ দেশ রেখে যাচ্ছে। দেশের অর্থনীতি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বিপর্যস্ত। তরুণ সমাজ হতাশায় মাদকাসক্ত হয়ে গেছে। দাশেরকান্দি নামে একটি প্রকল্প করা হয়েছে, উদ্দেশ্য হচ্ছে গুলশান-বনানী-বারিধারা এই এলাকার বজ্য পরিশোধন করে তা বালু নদীতে ফেলা হবে। এক বছর আগে এটি উদ্বোধন করতে চেয়েছিলো। দেখা গেলো বজ্য নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হয়নি। প্রজেক্টের টাকা খরচের নামে ভাগবাটোয়ারা হয়েছে।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতির আহ্বানে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ যখন রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণ করেন। তখন যারা ক্ষমতায় ছিলো তারা ব্যতীত দেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দলসহ সাধারণ মানুষ স্বাগত জানিয়েছিলো। বর্তমান সরকারের প্রধান তখন বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, এর ব্যতীত আর কোন উপায় ছিলো না। সাধারণ মানুষ এরশাদের ক্ষমতা গ্রহণ জনকল্যাণমূলক মনে করেছে। ১৯৯০ সালের পর আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার ভিত্তিক সামাজ প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।

জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ কমীরা অন্ধ ভিক্ষুকের কাছ থেকেও চাঁদা তোলে, চাাঁদার জন্য রাস্তাগুলো বিপণন কেন্দ্র করে ফেলেছে। কোটি কোটি টাকা চাঁদা তুলে আবার বন্টন হয়, এরশাদ সাহেবের সময় এগুলো ছিলো না।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিলো বৈষম্যের বিরুদ্ধে। পশ্চিম পাকিস্তান আমাদের সাতে বৈষম্য করতো। বৈষম্য থেকে মুক্তি পেতে দেশের মানুষ স্বৈরশাসন ও উপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছিলো। একসময় মনে হলো বৈষম্য থেকে মুক্তি পেতে আমাদের নিজেদের একটি দেশ দরকার। ১৯৭১ সালে মুক্তির জন্যই স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছিলো। আমরা কী বৈষম্য থেকে মুক্তি পেয়েছি? এখন আওয়ামী লীগ ও নন আওয়ামী লীগ বৈষম্য সৃষ্টি করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ বা বাবা-চাচা’রা আওয়ামী লীগ না করলে চাকরি পাওয়া যায় না।

মানুষ মনে করছে, দুনীতি দমন কমিশনের কাজ হচ্ছে সরকারি দলের দুনীতিবাজদের সার্টিফিকেট দেয়া যে, কোন দুর্নীতি হয়নি। সকল জায়গায় বিভাজন সৃষ্টি করা হচ্ছে, এটাই হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী। ফলে গরিব আরো গরিব হচ্ছে, ধনীরা আরো ধনী হচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের নামে লুটপাট চলছে। দেশের মানুষেল খোঁজ রাখা হচ্ছে না। বর্তমান সরকার স্বাধীনতার পক্ষে হতে পারে কিন্তু তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের শক্তি নয় বলে মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, সকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, নির্বাচন করতে হবে নির্বাচিত সরকারের অধীনে। আমরাও চাই। নির্বাচিত সরকার যদি নির্বাচন কমিশনসহ সকল কিছু প্রভাবিত করতে পারে তাকে সমর্থন করা যায় না। সংবিধানে বলা হয়েছে গণতন্ত্রের কথা। জনগণ যদি মনে করে আমার ভোটে সরকার গঠন হয়েছে, তাকেই বলা যায় নির্বাচিত সরকার। নির্বাচন কমিশন যেন সরকারের প্রভাবের বাইরে থাকে। আমার কথায় নির্বাচন কমিশন চলে, তাহলে আমি কী হেরে যাবো এমন সিদ্ধান্ত নেবো? যে সরকার নির্বাচন কমিশনকে প্রভাবিত করতে পারে সেই সরকারকে নির্বাচিত সরকার বলা যায় না।

এ সম্পর্কিত আরও খবর