ঈদে গ্রামে ছুটছেন নেতারা

বিবিধ, রাজনীতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-31 07:44:48

চলতি বছরের ডিসেম্বরে, নয় আগামী বছরের জানুয়ারিতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তাই পবিত্র ঈদুল আজহায় যার যার নির্বাচনী এলাকায় ছুটছেন নেতারা। দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর পাশাপাশি লক্ষ্য জনসংযোগ বাড়ানোর।

দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত করতে নিজেদের ব্যক্তিগত অবস্থান জানান দিচ্ছেন তারা। সব মিলে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে পবিত্র ঈদুল আজহায় ভোটের বার্তা নিয়ে এলাকামুখী হচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।

অন্যদিকে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর নেতারা সম্ভাব্য আন্দোলনের বিষয়ে তৃৃণমূল নেতাকর্মীদের কাছে বিশেষ বার্তা নিয়ে যাচ্ছেন। জানা গেছে, বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের অনেকেই এবার নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় ঈদ করবেন। আন্দোলনের বার্তা নিয়েই তৃণমূলে যাচ্ছেন নেতারা। তবে স্থায়ী কমিটির নেতারা ঢাকায় ঈদ করবেন। অনেকে অবশ্য ঈদের আগেই নির্বাচনী এলাকা ঘুরে এসেছেন। আবার ঈদের পরও এলাকায় যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে অনেকের।

আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অনেকটাই চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে আওয়ামী লীগ। মার্কিন ভিসা নীতি, বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর কূটনৈতিক চাপ, নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতি, বিএনপি-জামায়াতসহ বিরোধী শিবিরের আন্দোলনের কারণে নির্বাচন নিয়ে অনেকটাই চ্যালেঞ্জের মুখে ক্ষমতাসীন দলটি। এমন অবস্থায় সাধারণ ভোটারদের গুরুত্ব দিতে চায় দলটি। এজন্য জনবিচ্ছিন্ন, দলীয় নেতাকর্মী বিমুখ, অজনপ্রিয় ও বিতর্কিতদের এমপিদের মনোনয়ন দেবে না আওয়ামী লীগ। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের প্রায় শতাধিক এমপিদের কর্মকাণ্ডে নাখোশ তৃণমূল আওয়ামী লীগ। নির্বাচিত হওয়ার পর স্থানীয় রাজনীতির ত্রাণকর্তা, পরিবার দিয়ে রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করা, স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে নৌকার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া, ত্যাগী ও পরীক্ষিতদের অবমূল্যায়ন, জেলা-উপজেলা শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব ও দূরত্ব তৈরি করা, সরকারি কাজে অনিয়মসহ নানা কর্মকাণ্ডে তাদের ওপর ক্ষুব্ধ দলের কেন্দ্রীয় নেতারাও।

তবে বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা জানান, নির্বাচনের আগে এটাই হচ্ছে সর্বশেষ ঈদ। তাই এবারের ঈদকে গণসংযোগের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত বলে মনে করছেন তারা। বর্তমান সরকারের আমলে প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় দারুণ উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে। তাই এলাকায় যেতে আমাদের কোনো ধরনের পিছুটান নেই। জনগণের কাছে বুক ফুলিয়ে নিজেদেরকে উপস্থাপন করতে পারবো। ভবিষ্যতে ভোটারদের চাহিদা অনুযায়ী নির্বাচনী এলাকায় আরও উন্নয়ন করতে চাই। এসব নিয়েই মূলত মতবিনিময় করতে চায় তৃণমূল নেতাকর্মী ও ভোটারদের সঙ্গে।

বিএনপি নেতারা জানান, সামনে বড় আন্দোলনে যাবে দল। তাই বিশেষ বার্তা নিয়ে তৃণমূলে যাচ্ছেন নেতারা। নির্বাচনের আগে সরকারবিরোধী আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়াই তাদের মূল লক্ষ্য। এজন্য আগেভাগেই গ্রামে ছুটছেন নেতারা। দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করবেন। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকেই নিজ নিজ এলাকায় দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। সরকারবিরোধী আন্দোলনকে শক্তিশালী করতে কেউ কেউ নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করতেও কাজ করছেন।

জানা গেছে, বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের অনেকেই এবার নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় ঈদ করবেন। তবে স্থায়ী কমিটির নেতারা ঢাকায় ঈদ করবেন। অনেকে অবশ্য ঈদের আগেই নির্বাচনী এলাকা ঘুরে এসেছেন। আবার ঈদের পরও এলাকায় যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে অনেকের।

নতুন এ কৌশলের বিষয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, নির্বাচনের আগে এটাই শেষ ঈদ। এ কারণে আন্দোলনকে বেগবান করতে বেশকিছু নির্দেশনা আছে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে। এর মধ্যে অন্যতম যেসব বিভাগে এখনো তারুণ্যের সমাবেশ বাকি আছে, সেসব এলাকার ভোট বঞ্চিত তরুণদের উদ্বুদ্ধ করা। এছাড়া নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন মানুষকে আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করাই হচ্ছে মূল লক্ষ্য।

এ সম্পর্কিত আরও খবর