নকশা অনুমোদনে ১৬ থেকে ৪ ধাপে নামানোর সিদ্ধান্ত

ঢাকা, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা, বার্তা২৪.কম | 2023-08-30 14:03:55

রাজধানী ঢাকা ও বন্দরনগরী চট্টগ্রামে যে কোন ইমারত বা ভবন নির্মাণে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় নগরবাসীর। এক টেবিল থেকে আরেক টেবিলে দৌড়াতে দৌড়াতে ভোগান্তির সঙ্গে বিপুল অর্থের অপচয় হয়ে থাকে। বিষয়টি নজরে এনে দ্রুত সেবা নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।

নকশা অনুমোদনের যে ১৬টি ধাপ অতিক্রম করতে হতো সেটাকে কমিয়ে ৪ ধাপে নিয়ে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানালেন মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে সেবা সহজীকরণে আমরা অনন্য দৃষ্টান্ত, নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করলাম। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়াধীন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও চউকসহ অন্যান্য কর্তৃপক্ষের নির্মাণ অনুমোদনের জন্য নকশা অনুমোদনের যে ১৬টি ধাপ রয়েছে, তার প্রতিটির আবশ্যকতা নাই। এতে শুধু সেবা প্রার্থীদের ভোগান্তি বাড়ে। তাই সেবা প্রার্থীদের সীমাহীন ভোগান্তি কমাতে ১৬টি স্তর কমিয়ে মাত্র ৪টি স্তরে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার জন্য আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ১২টি স্তরকে আমরা বাদ দিচ্ছি।'

বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে "বিডা'র সমন্বয়ে রাজউক এবং চউক এর সেবা সহজীকরণ" বিষয়ে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভা পরবর্তী প্রেস ব্রিফিং-এ গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, 'বিল্ডিং নির্মাণে নকশা অনুমোদন হবে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অনুযায়ী বা গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়াধীন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আইন অনুযায়ী। সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে কোনরকম অকারণ অজুহাত দেখিয়ে সেবা প্রার্থীদেরকে ভোগান্তির ভেতরে ফেলাকে প্রধানমন্ত্রী কোনভাবেই গ্রহণ করেন না। সরকারের একটি অংশ হিসেবে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট দফতর/সংস্থাও একই কর্মসূচিতে এগিয়ে যাবে। এটাই আমাদের প্রত্যয়। সেটা মাথায় রেখেই আমরা কাজ করছি।'

তিনি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী আশা করেন, কাজের গতি আরও বাড়াতে হবে। কাজে স্বচ্ছতা আনতে হবে। সততা আনতে হবে। নিরলস পরিশ্রম করতে হবে। মনে রাখতে হবে আমরা সেবক। যাদের ট্যাক্সের টাকায় আমাদের বেতন, সে মানুষ গুলোকে সেবা দিতে হবে।'

এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ রয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, 'আমরা কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যা বাংলাদেশের সকল মানুষের সেবার উদ্দেশ্যে। সেবা সহজীকরণের জন্য, দীর্ঘদিনের অনাকাঙ্ক্ষিত ভোগান্তি থেকে পরিত্রাণ দেয়ার জন্য। নির্মাণ অনুমোদনের ক্ষেত্রে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অনুযায়ী সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে ১৫০দিন সময় লাগতো। এ সময় এখন কমিয়ে সর্বোচ্চ মাত্র ৫৩ দিনে নিয়ে আসা হয়েছে। এতে অনেক বড় পরিবর্তন হয়েছে। এক্ষেত্রে খরচ কমেছে ও ব্যয় হ্রাস পেয়েছে এবং আমরা অটোমেশন অর্থাৎ অনলাইন পদ্ধতি চালু করেছি। অটোমেশন পদ্ধতি চালু করার ফলে কাউকে সশরীরে রাজউক কিংবা চউকে যেতে হবে না। অফিসে কাজ নির্বিঘ্নে করা যাবে। সময় বাঁচবে। সেবাগ্রহীতারা অনলাইনে রেসপন্স পাবেন এবং ফলাফল পেয়ে যাবেন।'

মন্ত্রী বলেন, 'জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য আমরা একটা যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সকল ইমারত নির্মাণের ক্ষেত্রে ইনস্যুরেন্স বাধ্যতামূলক। বিল্ডিং নির্মাণ করতে গিয়ে অথবা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের ক্ষেত্রে অনেক সময় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার স্বীকার হতে হয়। এক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষতিপূরণ পাবে।'

মন্ত্রী আরও বলেন, 'আগামী ১ মের মধ্যে রাজউক ও চউক এর ‘ভূমি ব্যবহার ছাড়পত্র’, ‘নকশা অনুমোদন’ ‘বৃহৎ ও বিশেষায়িত প্রকল্প অনুমোদন’ এবং ‘অকুপেন্সি সার্টিফিকেট’-এ ৪টি সেবা শতভাগ অটোমেশন প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করা হবে।'

মতবিনিময় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী এম. আমিনুল ইসলাম, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক) এর চেয়ারম্যান মো. আবদুচ ছালাম, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. ইয়াকুব আলী পাটোয়ারী প্রমুখ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর