ফেরদৌসের মতোই কি শাস্তি পাবেন বাকিরা?

ভারত, আন্তর্জাতিক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, কলকাতা, বার্তা২৪.কম | 2023-08-26 01:59:35

বাংলাদেশি অভিনেতা ফেরদৌস আহমেদ ভারতের পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীদের হয়ে ভোটের প্রচারে নেমেছিলেন। বিদেশিদের দিয়ে প্রচার করানোর অভিযোগে রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা ও এ বিষয়ে পক্ষপাতমূলক বক্তব্য পেশের জন্য রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী কর্মকর্তার পদত্যাগ দাবি করেছেন বিরোধীদলগুলো।

সূত্র জানায়, রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী কর্মকর্তা আরিজ আফতাব এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কেন্দ্রীয় (দিল্লির) নির্বাচন কমিশনের মতামত চেয়েছেন।

এদিকে ফেরদৌসের পাশাপাশি অভিনয় করার ভিসা নিয়ে ভারতে গিয়ে রাজনৈতিক প্রচারে সম্পৃক্ত হওয়ার অভিযোগ এসেছে জি-বাংলার 'রাণী রাসমণি' সিরিয়ালে রাজচন্দ্রের ভূমিকায় অভিনয় করা বাংলাদেশি গাজী আবদুন নুর সহ আরও কয়েকজন শিল্পীর বিরুদ্ধে।

তৃণমূল কংগ্রেস নেতা ও সাবেক পরিবহন মন্ত্রী মদন মিত্রের সঙ্গে রাম নবমীর মিছিলে ছিলেন নুর। এছাড়া দমদমে তৃণমূল প্রার্থী সৌগত রায়ের হয়ে প্রচারণায় ছিলেন বলে অভিযোগ এই বাংলাদেশি ছোট পর্দার অভিনেতার বিরুদ্ধে। প্রচারের ঐ ভিডিও কপি জমা পড়েছে নির্বাচন কমিশনের দফতরে। তার বিষয়ে একই ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা তা এখনও জানা যায়নি।

রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র আবদুন নুর বলেন, ‘মদনদার (মদন মিত্র) সাথে আমার পারিবারিক সম্পর্ক। তার সাথে দেখা করতে গিয়ে দেখি তিনি একটি প্রোগ্রামে আছেন। আমি দাদাকে বললাম, আমার এখানে থাকা ঠিক হবে না। হাইকমিশনের নিষেধ আছে।’ তখন মদনদা বললেন, ঠিক আছে, আমার সাথে গাড়িতে থাক, তোকে নামিয়ে দেব।’

কলকাতায় বাংলাদেশি অভিনেতা গাজী আবদুন নুর (বামে)/ ছবি: সংগৃহীত

 

নুর বলেন, ‘আমি যদি প্রচারণায় যেতাম, তাহলে তো ব্যাজ লাগাতাম, উত্তরীয় পরতাম। আমাকে দিয়ে তো বক্তৃতাও দেওয়ানো হয়নি। সৌগত রায়ের সাথে ঐ দিনের আগে আমার দেখায় হয়নি। আমাকে দেখে দর্শকরা যদি হাত নাড়েন, স্বাভাবিকভাবে আমাকে হাত নাড়তে হয়।’

তিনি বলেন, ‘প্রচারণায় অনেক লোকজন থাকায় আমি একা সেখান থেকে বের হয়ে আসতে পারছিলাম না। কিন্তু আমার উচিৎ ছিল সেখান যেভাবেই হোক বের হয়ে আসা।’

বুধবার (১৭ এপ্রিল) এক তারকা অভিনেত্রীর নামেও কানাঘুষা হচ্ছে রাজ্য বিজেপির দফতরে। ঐ অভিনেত্রীকেও নাকি পশ্চিমবঙ্গের উত্তরবঙ্গের কোনো জনসভায় দেখা গিয়েছিল। যদিও তার সঠিক কোনো তথ্য রাজ্যের নির্বাচন কমিশনকে দিতে পারেনি। তাই সে বিষয়টি কেউ আমল নিচ্ছেন না। তবে একটা উৎকণ্ঠা বোধ কাজ করছে অভিনেত্রীর ফ্যানদের মধ্যে। তবে বুধবার পর্যন্ত তারকা অভিনেত্রীর তিনটি মোবাইল ফোন নম্বরের সুইচ অফ আছে।

জানা যায়, বুধবার ফেরদৌসের প্রচারণা সম্পর্কে রিপোর্ট জমা পড়েছে দেশটির বিদেশ মন্ত্রীর কাছে। সেখানে বাংলাদেশি এই অভিনেতার বিরুদ্ধে ভিসা আইন লঙ্ঘন করার অভিযোগ আনা হয়েছে। ফলস্বরূপ ভারত সরকার ফেরদৌস আহমেদের বিজনেস ভিসা বাতিল করেছে।

শুধু তাই নয়, বিদেশ থেকে আগত নাগরিকদের কালো তালিকায় বাংলদেশি এই অভিনেতার নাম যুক্ত করা হয়েছে। তবে ভারতে কোনো কাজ করতে না পারলেও টুরিস্ট ভিসা নিয়ে ভারতে আসতে পারবেন ফেরদৌস।

এতে সমস্যায় পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের একাধিক প্রযোজকসহ পরিচালকরা। কারণ ফেরদৌস অভিনীত ‘দত্তা’ নামের একটি ছবির অর্ধেকের বেশি কাজ হয়েছিল বলে জানা গেছে। ফেরদৌস যদি ভারতেই ঢুকতে না পারেন তাহলে কী করে বাকি কাজ এগোবে? প্রসঙ্গত, শুটিং -এর ফাঁকেই রায়গঞ্জের প্রচারে গিয়েছিলেন বাংলাদেশি নায়ক।

ফেরদৌসের এই আচরণে মাথায় হাত পড়েছে ‘দত্তা’র পরিচালকসহ অন্যান্য প্রযোজকদের। কারণ আরও কয়েকটি ছবিতে চুক্তিবদ্ধ ছিলেন ফেরদৌস।

এ সম্পর্কিত আরও খবর