‘হামার প্রধানমন্ত্রীকে ভোট দিমো’
রাত পোহালেই একাদশ জাতীয় নির্বাচন। এ নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন লালমনিরহাটের বিলুপ্ত ৫৯ টি ছিটমহলের কয়েক হাজার নতুন ভোটার । প্রায় ৭০ বছর পর এবারই প্রথম সংসদ নির্বাচনে তারা ভোট দিতে যাচ্ছেন। এরে মধ্যেই তারা জাতীয় পরিচয়পত্র পেয়ে গেছেন। ভোটারদের মধ্যে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার সঞ্চার হয়েছে আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নে দুইটি, হাতীবান্ধা উপজেলার গোতামারী ইউনিয়নে দুইটি এবং পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী, শ্রীরামপুর, বাউরা, জগতবেড়, জোংড়া ও কুচলিবাড়ী ইউনিয়নে ৫৫টি বিলুপ্ত ছিটমহলের মধ্যে জনবসতি থাকা ৩৬টি ছিটমহলের নতুন ভোটাররা আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দেবেন। ১৯৭৪ সালে তৎকালীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর চুক্তির আলোকে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ২০১৫ সালের ৩১ জুলাই মধ্যরাতে ১১১টি ছিটমহল বিনিময়ের কাজ চূড়ান্ত হয়। এর মাধ্যমে দীর্ঘ ৬৮ বছর পর লালমনিরহাটের ৫৯টি ছিটমহল বাংলাদেশের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত হয়।
বিলুপ্ত ছিটমহলের কয়েক হাজার মানুষ পায় বাংলাদেশের নাগরিকত্ব। সরকারের আন্তরিকতায় শুরু হয় উন্নয়নের কাজ। ৫৯টি ছিটমহলে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, অবকাঠামোতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়। রাস্তাঘাট, কালভার্ট নির্মাণসহ ঘরে ঘরে পৌঁছে যায় বিদ্যুতের আলো। নতুন ভোটার তালিকায় সংযুক্ত হন কয়েক হাজার ভোটার।
বিলুপ্ত ভোটবাড়ী ছিলমহলের বাসিন্দা হাসিমুল হোসেন বলেন, প্রথম ভোট দিমো এবার। শেখের বেটি আমাদের স্বাধীন করে দিছে। ৬৮ বছর নিজে দেশে থেকেও পরবাসী জীবন থাকি মুক্ত করি দিছে। এখন হামরা নয়া বাংলাদেশি নাগরিক। রাস্তা-ঘাট, বিদ্যুৎসহ সবকিছুই পাইছি।’ আমরা হামার প্রধানমন্ত্রীকে ভোট দিমো।
একই বিলুপ্ত ছিটমহলের গৃহিনী জোবেদা খানম বলেছেন, আমাদের আর কিছু লাগবে না। আমরা সব কিছু পাইছি। এখন শুধু একটা হাসপাতাল করে দিলে আমাদের কষ্ট কমে যাবে।