গাজীপুরের টঙ্গীতে ঝুটের গোডাউনের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সাতটি ইউনিট আড়াই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে সাড়ে ১১টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার কামরুল হাসান বার্তা২৪.কমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ দুর্ঘটনায় প্রাথমিকভাবে কোনো ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। হতাহতের তথ্যও জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার কামরুল হাসান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘টঙ্গীর চেরাগ আলীর দত্তপাড়ায় একটি ঝুটের গোডাউনে আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট প্রায় আড়াই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ মুহূর্তে এর বেশি বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না। আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি।’
স্থানীয়রা জানান, দাউদ, খলিল, শফি ও কালামসহ কয়েকজনের ঝুটের গোডাউনে আগুন লাগে। মুহূর্তে তা ছড়িয়ে পড়ে পুরো কারখানায়।
উল্লেখ্য, সোমবার (৬ মে) রাত ৯টার দিকে টঙ্গীর দত্তপাড়ায় একটি ঝুটের গোডাউনে আগুন লাগে।
তীব্র গরমে বিদ্যুৎ সংকটের পাশাপাশি উত্তর বাড্ডা এলাকায় চরম পানির সংকট দেখা দিয়েছে। পানির অভাবে রান্না করতে পারছেন না গৃহিণীরা। সুপেয় পানির হাহাকার পড়েছে এলাকা জুড়ে। কয়েকদিন ধরে গোসল করতে পারছে শিশুরাও।
স্থানীয়দের অভিযোগ, রমজানের আগে থেকেই পানির সংকট ওই এলাকায়। দিনে একবার পানি আসলেও তা দুর্গন্ধ যুক্ত। ফলে খাওয়ার অনুপযোগী পানি খেয়ে অসুস্থ হচ্ছে অনেকে। বার বার যোগাযোগ করা হলেও ব্যবস্থা নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ।
সোমবার ( ২৯ এপ্রিল) সরজমিন গিয়ে দেখা গেছে, উত্তর বাড্ডা, নতুন বাজার ও মিশরি পাড়া এলাকায় পানির জন্য হাহাকার অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া ইব্রাহিমপুর, মণিপুর, মাটিকাটা, নন্দীপাড়া ও সোলমাইদ এলাকাসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় পানির সংকট রয়েছে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পানির অভাবে নাজুক অবস্থা শিশুদের। সারারাত অপেক্ষা করেও পানি না পেয়ে দোকান থেকে কিনে পানি খাচ্ছেন অনেকে। কয়েক কিলোমিটার দূর থেকে কলস ও বোতলে করে পরিবারের জন্য পানি আনছে নারী ও শিশুরা।
পানি না থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন গৃহিণীরা। সুপেয় পানির অভাবে রান্না হচ্ছে না বাসায়। এতে পানির অভাবে নাজুক অবস্থার পাশাপাশি শিশুদের খাদ্য অভাব দেখা দিয়েছে। একই অবস্থা বৃদ্ধ ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও।
স্থানীয়রা বলছেন শুধু বাড্ডা এলাকায় প্রায় দুই হাজার বাড়িতে এমন সংকট চলছে ৬ মাস ধরে। বিশেষ করে রমজান মাস থেকে পানির সংকট ভয়াবহ অবস্থায় চলে গেছে। এতে প্রায় কয়েক লক্ষ মানুষ ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।
উত্তর বাড্ডা মিছরি পাড়া এলাকার আমেনা খাতুন বলেন, কাল সারারাত অপেক্ষা করেছি পানির জন্য। রান্না করতে না পেরে দোকান থেকে কলা রুটি কিনে বাচ্চাদের খাওয়াতে হয়েছে। এভাবে প্রায় ৬ মাস থেকে আমরা ভুগছি। কিন্তু কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। মাঝে মাঝে পানি আসলেও তা দুর্গন্ধ থাকায় খাওয়ার অনুপযোগী। খেলেও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে সবাই।
একই এলাকার শাহাবুদ্দিন মাসুদ বলেন, পানির অভাবে আমরা অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি। টানা ১ সপ্তাহ ধরে পানি নাই। রাতে পানি আসে কিন্তু খাওয়ার অনুপযোগী। শিশুরা খেতে না পেরে দুর্বল হয়ে পড়ছে। কয়েক জন শিশু অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাও নিচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা ওয়াসার ১০টি আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রত্যেকটিতে রয়েছে পানির সংকট। এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য অঞ্চল ৮ এর মিছরি পাড়া, উত্তর সিটির ২১,২২,২৩ নং ওয়ার্ডসহ আশেপাশের এলাকা। এছাড়া অঞ্চল-২ এর নবাবগঞ্জ, ঢুরি আঙুলি লেন, জাফরাবাদ ও কাটাসুর, অঞ্চল-৪ এর বড়বাগ, মণিপুর, আগারগাঁও ও মিরপুর ১২। অঞ্চল-১০ এর ইব্রাহিমপুর, পূর্ব শেওড়াপাড়া, মিরপুর ১১ এর মদিনা নগর, বাইগারটেক, মাটিকাটা এবং উত্তরা ১৫, ১৬, ১৭ নম্বর সেক্টরে পানির সমস্যা রয়েছে। জোন-৫ এর গুলশান ১, গুলশান ২ এর ৮৩ নম্বর সড়ক এবং মালিবাগ বাজার রোড এলাকায় ও বাড্ডা এলাকা। অঞ্চল-৬ এর বনশ্রীর এফ ব্লক ও নন্দীপাড়া, অঞ্চল-৭ এর রসুলপুর, পাগলা, শাহী মহল্লা, নুরবাগ, আদর্শনগর, নামা শ্যামপুর, নিশ্চিন্তপুর, দেলপাড়া, শান্তিধারা ও দৌলতপুরেও রয়েছে পানির সমস্যা।
সমস্যা বিষয়ে জানতে চাইলে ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী অনুপম কুমার মন্ডল বলেন , সমস্যা সমাধানে আমরা কাজ করছি। কেন সংকট। সমাধান ও সরবরাহ এসব বিষয় আমি দেখি না।
এ বিষয়ে ঢাকা ওয়াসার মুখপাত্র এ এম মোস্তফা তারেক বলেন, সার্বিকভাবে পানি সরবরাহে কোনো সংকট নেই । জলবায়ুগত কারণে কিন্তু এলাকা ভিত্তিক কিছু সমস্যা রয়েছে। আমরা প্রায় ২০০টি পয়েন্টে বিনামূল্যে পানি সরবরাহ করছি ।
দীর্ঘদিনের সমস্যা এবং সংকটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন , দীর্ঘদিনের সমস্যা হলে তো অভিযোগ পেতাম। তাও যদি সংকট থাকে যে ১ টি এলাকার কথা বলছেন সেখান থেকে আসাদের হট লাইন নম্বরে অভিযোগ দিতে বলেন । আমরা আমাদের মোবাইল টিমের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিব ।
নানা জটিলতায় ৮০ শতাংশ হজযাত্রী ভিসার জন্য আবেদন করতে না পারায় ভিসা আবেদনের সময় আগামী ৭ মে পর্যন্ত বাড়ানো বাড়ানো হয়েছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে হজের ভিসার আবেদনের শেষ সময় গত ২৯ এপ্রিল থাকলেও সেটি বাড়িয়েছে সৌদি সরকার। এতে চলতি বছর হজে যেতে চূড়ান্ত নিবন্ধনকারী হজযাত্রীরা আগামী ৭ মে পর্যন্ত হজ ভিসার আবেদন করতে পারবেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে হজ এজেন্সি অ্যাসোসিয়েশনের বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসেন তসলিম জানান, ধর্মমন্ত্রীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় বাংলাদেশি হাজিদের জন্য হজের ভিসা আবেদনের সময় ২৯ এপ্রিল থেকে আগামী ৭ মে পর্যন্ত বাড়িয়েছে। এসময়ের মধ্যে সবাইকে ভিসা আবেদন করার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।
তিনি জানান, নানা জটিলতায় এখনো ৮০ শতাংশ হজযাত্রীই ভিসার জন্য আবেদন করেননি। এজন্য হজের ভিসা আবেদনের সময় আরও বাড়ানোর আবেদন করে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
ভিসা আবেদনের সময় বৃদ্ধির বিষয়টি নিশ্চিত করে ধর্মসচিব মু. আবদুল হামিদ জমাদ্দার বলেন, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাওয়া হজযাত্রীদের বেশিরভাগ এখনো ভিসার আবেদন করতে পারেননি। বাড়ি ভাড়া করতে না পারা অন্যতম কারণ। অল্প কয়েকদিনে এত সংখ্যক হজযাত্রীর ভিসার আবেদন করাও সম্ভব নয়। পুরো বিষয়ে সংকটের কথা উল্লেখ করে সৌদি সরকার ও দূতাবাসকে হজের ভিসার আবেদনের সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হয়েছিল।
সময় বাড়ানোয় সৌদি সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছে সচিব বলেন, হজ এজেন্সিগুলো এসময়ের মধ্যে ভিসা আবেদন করবে।
আগামী ৯ মে থেকে হজ ফ্লাইট শুরু হবে। তার আগে ৮ মে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গত বছরের নভেম্বর মাসে ২০২৪ সালের হজ প্যাকেজ ঘোষণার সময় তৎকালীন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী (বর্তমান মন্ত্রী) ফরিদুল হক খান জানিয়েছিলেন, এ বছরের ১ মার্চ থেকে পবিত্র হজ পালনের ভিসা ইস্যু শুরু হবে ও ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত ভিসা আবেদন করা যাবে। কিন্তু বেসরকারি হজ এজেন্সিগুলো সৌদিতে বাসা ভাড়া করতে না পারা, ২৮ হাজার হজযাত্রীর মুজদালিফায় যাওয়ার অনিশ্চয়তা, হজযাত্রীদের বাড়ি ভাড়ার জন্য এজেন্সির প্রতিনিধিদের ভিসা না পাওয়া, মক্কা-মদিনার বাড়ি ভাড়ার টাকা আইবিএন অ্যাকাউন্টে না পাঠানোর জটিলতার কারণে বাড়ি ভাড়া করতে পারেনি হজ এজেন্সিগুলো। তাই ২৯ এপ্রিলের মধ্যে বেশিরভাগ হাজিদের ভিসার আবেদন করতে পারেনি এজেন্সিগুলো।
দেশের ওপর দিয়ে বয়ে চলা তীব্র তাপপ্রবাহে বিপাকে পড়েছেন মৎস্য খামারিরা। প্রচণ্ড এই গরমে ময়মনসিংহের ভালুকায় হ্যাচারিতে রেণুপোনা উৎপাদনে নেমেছে ধস। মরে যাচ্ছে পোনা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অনাবৃষ্টি ও তীব্র তাপদাহে ক্ষতির মুখে পড়েছে মৎস্য খামারি ও হ্যাচারি মালিকরা। পুকুরে পানি কমে যাওয়ায় গ্যাস জমে গেছে। তাপদাহের কারণে মাছগুলোকে খাবারও খাওয়ানো যাচ্ছে না। ফলে মাছ বড় হচ্ছে না।
উপজেলা মৎস্য অফিসের তথ্যমতে, ভালুকায় ৭৩২টি বাণিজ্যিক মৎস্য খামারসহ ছোট বড় প্রায় ১০ হাজার মৎস্য খামার রয়েছে। প্রতি বছর প্রায় ৭০ হাজার মেট্টিক টন মাছ উৎপাদন হয় এ উপজেলায়।
মৎস্য চাষি আপন সিকদার জানান, তীব্র গরমে খামারের পানি কমে গেছে। মাছগুলোকে খাবার খাওয়ানো যাচ্ছে না। ফলে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করছি।
আরেক মৎস্য চাষি মিজান মন্ডল বলেন, তীব্র তাপপ্রবাহে হ্যাচারিতে মাছের রেণু ফোটানো যাচ্ছে না। ফলে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি। আমরা সরকার ও মৎস্য অফিসের সহযোগিতা চাই।
ভালুকা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. সাইদুর রহমান বলেন, তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় পানিতে অক্সিজেন কমে যায়, এতে মাছ মরে যাচ্ছে। আমরা মৎস্য অফিস থেকে চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। যাতে এ সংকট মোকাবিলা করা যায়।
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকাণ্ড সমন্বয় করতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সেল গঠনের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন ইসি।
ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার উপসচিব আতিয়ার রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ইসির নির্দেশনায় জানানো হয়, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাসমূহের কর্মকাণ্ডের সমন্বয় লক্ষ্যে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এর নেতৃত্বে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সেল গঠন করতে হবে। এই সেলে অন্যান্য সদস্যগণ হবেন জেলা নির্বাচন অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার, পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি ও সহযোগী আইন-শৃঙ্খলা সংস্থা কর্তৃক মনোনীত কর্মকর্তাবৃন্দ।
এমতবস্থায় অবিলম্বে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সেল গঠন করতে উক্ত সেলের সদস্যদের তালিকা নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে প্রেরণ করার অনুরোধ জানানো হয়। এই সেল উপজেলা এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা সংরক্ষণকল্পে সকল প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। এই সেলও আইন-শৃঙ্খলাসহ সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে গৃহীত ব্যবস্থাদি নির্বাচন কমিশন সচিবালয়কে অবহিত করবে।
এদিকে সারাদেশের মোট ৪৯৫টি উপজেলার মধ্যে ৪৭৬টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন চারটি ধাপে অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। অবশিষ্ট ১৯টি উপজেলা পরিষদের মেয়াদপূর্তি না হওয়ায় পরবর্তীতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রয়োজন হবে।
ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, প্রথম ধাপে ১৫০টি উপজেলায় ৮ মে, দ্বিতীয় ধাপে ১৬০ উপজেলায় ২১ মে, তৃতীয় ধাপে ১১২ উপজেলায় ২৯ মে ও চতুর্থ ধাপে ৫৫ উপজেলায় ৬ জুন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপে ২২ টি, দ্বিতীয় ধাপে ২৪টি, তৃতীয় ধাপে ২১টি ও চতুর্থ ধাপে দু’টি উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হবে।