ঘূর্ণিঝড় ফণী
বিকেল থেকে স্বাভাবিক আবহাওয়া, ছাড়তে হবে আশ্রয়কেন্দ্র
ঘূর্ণিঝড় ফণীর বিপদ কেটে গেছে। সমুদ্রবন্দরগুলোতে ৭ নম্বর নামিয়ে ৩নং সর্তকতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। শনিবার বিকেল থেকে আবহাওয়া স্বাভাবিক হতে থাকবে। বিকেল ৪টা থেকেই আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে বাড়ি ফেরা যাবে।
শনিবার (৪ মে) দুপুরে সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান, আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, শুক্রবার (৩ মে) সন্ধ্যা ৬টা থেকে ঘূর্ণিঝড় ফণীর অগ্রভাগ বাংলাদেশ স্পর্শ করার পর উপকূলসহ সারাদেশে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া দেখা দেয়। এ অবস্থায় মংলা এবং পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭নং বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছিল। এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দরকে ৬নং বিপদ সংকেত এবং কক্সবাজারে ৪নং হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছিল। ঘূর্ণিঝর ফণী শনিবার (৪ মে) সকাল ৬টায় স্থলভাগের উপর দিয়ে ভারতের অংশ থেকে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা, খুলনা, যশোর অঞ্চলে অবস্থান করছিল। এটি তখনও ঘূর্ণিঝড় হিসেবেই ছিল। সকাল ৬টায় চারপাশে বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার। এরমধ্যে বরিশালে সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ৭৪ কিলোমিটার বেগে আঘাত করছিল। দেশের অন্যান্য অঞ্চলে কোথাও ৪৫ কিলোমিটার, কোথাও ৩৭ কিলোমিটার বেগে আঘাত হেনেছে।
তিনি জানান, দুপুরে স্থল নিম্নচাপ হিসেবে ঢাকা, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল ও এর আশেপাশে অবস্থান করছিল। এটি স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। যে কারণে সমুদ্রবন্দর সমূহকে ৭নং বিপদ সংকেত নামিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে। তার পরিবর্তে সবগুলো বন্দরে স্থানীয় ৩নং সর্তকতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। কৌশল হিসেবে আগামী ১৮-২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ করতে সর্তকতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
সামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, আগাম আবহাওয়া সংকেত হচ্ছে- এখন নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে বলতে পারি। বিকেল ৪টা থেকে মানুষ আশ্রয় কেন্দ্র থেকে ঘরে ফিরতে পারবেন। বিপদ কেটে গেছে বলা যায়।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান জানান, ফণীর কারণে ১৯ জেলার ৪ হাজার ৭১ টি আশ্রয় কেন্দ্রে মোট ১৬ লাখ ৪০ হাজার ৪১৭ জন মানুষকে নেওয়া হয়েছিল। ফণীর প্রভাবে এখন পর্যন্ত চারজন নিহত হয়েছেন। ৬৩ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুইজন বরগুনায় একজন ভোলায় এবং একজন নোয়াখালীতে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে সহায়তা দেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ক্যাপটেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব শাহ্ কামাল, তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুল মালেক, আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. সামছুদ্দিন আহমেদ, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব আসাদুল হক প্রমুখ।
আরও পড়ুন: স্থল গভীর নিম্নচাপে রূপান্তরিত ফণী