৬৮ বছর পর মংলাতে কাস্টমের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম



আবু হোসাইন সুমন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম
খুলনা খালিশপুরে মংলা কাস্টম হাউস, ছবি: বার্তা২৪

খুলনা খালিশপুরে মংলা কাস্টম হাউস, ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

আমদানি-রফতানিসহ সংশ্লিষ্ট বন্দর ব্যবহারকারীদের দাবির প্রেক্ষিতে কয়েক বছর আগেই মংলা কাস্টম হাউস খুলনা থেকে মংলা বন্দর এলাকায় পূর্ণাঙ্গ স্থানান্তরে সরকার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিলেও দীর্ঘদিনেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। ২০১৭ সালের ৫ আগস্ট মংলা বন্দর উপদেষ্টা কমিটির ১৪তম সভায় নৌ পরিবহণ মন্ত্রীর নির্দেশনাও আজ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি।

এর আগেও ২০১১ সালে নৌ মন্ত্রী খুলনার খালিশপুর থেকে মংলা কাস্টম হাউস মংলা বন্দরে স্থানান্তরের নির্দেশনা দিলেও সেটিও বাস্তবায়ন হয়নি। অবশেষে এ মাসেই (জানুয়ারি) মংলা কাস্টম হাউস মংলাতেই পূর্ণাঙ্গভাবে স্থানান্তর করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মংলা কাস্টম হাউসের কমিশনার সুরেশ চন্দ্র বিশ্বাস।

তিনি বলেন, 'আগামী ২০ জানুয়ারি থেকে মংলা বন্দরে কাস্টমের নতুন ইউনিট থেকে চালু করা হবে। খুলনাস্থ মংলা কাস্টম হাউসের রফতানি শুল্কায়ন ও আমদানি শুল্কায়ন গ্রুপ-২ এবং ৪ এর শুল্কায়নসহ সকল কার্যক্রম চালু করতে এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেয়া হয়েছে।'

কাস্টম কর্তৃপক্ষ ও বন্দর সূত্র জানায়, ১৯৫০ সালের ১ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সামুদ্রিক বন্দর হিসেবে মংলা বন্দরের কার্যক্রম শুরু হয়। তখন থেকেই মংলা কাস্টম হাউস খুলনার খালিশপুরে অবস্থিত হওয়ায় ব্যবসায়ীদের অনেক সময়ক্ষেপণের পাশাপাশি নানাবিধ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। দীর্ঘদিন ব্যবসায়ীরা আমদানি-রফতানির স্বার্থে মংলা কাস্টম হাউস মংলা বন্দরে রাখার দাবি জানিয়ে আসছিলেন।

মংলা বন্দর ব্যবহারকারী মেসার্স নুরু এন্ড সন্স’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলহাজ্ব এইচ এম দুলাল ও মেসার্স মায়া এন্টারপাইজের পরিচালক আহসান হাবিব হাসান বলেন, 'মংলা বন্দর থেকে সড়ক পথে খুলনার খালিশপুর পর্যন্ত দূরত্ব প্রায় ৫৮ কিলোমিটার। মংলা কাস্টম হাউস খুলনাতে হওয়ায় একজন ব্যবসায়ীকে শুল্কায়নসহ পণ্য খালাসের কাজ কর্মে দুই থেকে তিন দফায় খুলনা-মংলা যাতায়াত করতে হয়। এতে সময় নষ্টের পাশাপাশি ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ব্যবসায়ীদের এ ভোগান্তি দীর্ঘ ৬৮ বছর ধরে চলে আসলেও দাবি থাকা স্বত্বেও এখন পর্যন্ত মংলা কাস্টমের কার্যক্রম মংলা বন্দরে স্থানান্তর হয়নি। ফলে নিরুপায় হয়ে ভোগান্তির মধ্যদিয়েই ব্যবসায়ীদের এ বন্দর ব্যবহার করতে হচ্ছে।'

বন্দর ব্যবহারকারীরা আরও বলেন, 'মংলা বন্দর থেকে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হলেও যথাস্থানে কাস্টম হাউসের মূল অফিস না থাকায় ব্যবসায়ীদের ভয়াবহ ভোগান্তিতে পড়তে হয়। বন্দরের কাজ শেষ করে কাস্টম ক্লিয়ারেন্সের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে খুলনায় যেতে হয়। পরে ওই কাগজ নিয়ে আবার বন্দরে ফিরে এসে সংশ্লিষ্ট অফিসে জমা দিতে হয়।'

সিএন্ডএফ (ক্লিয়ারিং এন্ড ফরোয়ার্ডিং) এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো: সুলতান আহমেদ বলেন, 'শুধু কার্যালয় মংলায় আসলেই তো সমস্যার সমাধান হবে না। শুল্কায়ন কার্যক্রমের সাথে বেশ কিছু কার্যক্রম জড়িত। ব্যাংকিং সেবা, ক্লিয়ারিং এন্ড ফরোয়ার্ডিং (সিএন্ডএফ), শিপিং এজেন্সির কার্যক্রমসহ বেশ কিছু কার্যালয়ও শুল্ক কার্যালয়ের সাথে সাথে মংলায় স্থানান্তর করতে হবে।'

মংলা কাস্টম হাউসের কমিশনার সুরেশ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, 'প্রতিষ্ঠার পর থেকে মংলা বন্দরের আমদানি-রফতানি পণ্যের কাস্টম সংশ্লিষ্ট যাবতীয় কার্যক্রম খুলনা ও মংলা এ দুস্থানে সম্পন্ন হয়ে আসছে। পণ্য পরীক্ষা, রামেজ (ঘোষণার অতিরিক্ত কোন পণ্য জাহাজে আছে কিনা তা পরীক্ষা), ইপিজেড পণ্য পরীক্ষা ও শুল্কায়ন, পণ্য খালাস, প্রিভেন্টিভসহ (নিবারকমূলক কার্যক্রম) আনুষঙ্গিক কার্যক্রম মংলা কাস্টমস হাউসের বন্দর ইউনিট অর্থাৎ মংলা বন্দরে সম্পন্ন হচ্ছে। অন্যদিকে সকল প্রশাসনিক কার্যক্রমের পাশাপাশি আইজিএম (জাহাজে আমদানিকৃত পণ্যের ঘোষণা) দাখিল, আমদানি ও রফতানিকৃত পণ্যের শুল্কায়ন, ব্যাংকিং কার্যক্রম ও রাসায়নিক পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম খুলনার খালিশপুরে অবস্থিত মূল কার্যালয়ে সম্পন্ন হয়ে আসছে। তবে মংলা বন্দর উপদেষ্টা কমিটির ১৪তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ২০ জানুয়ারি থেকে মংলা ইউনিট থেকে সকল কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এজন্য ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট একাধিক দপ্তরে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে।'

মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডোর একেএম ফারুক হাসান বলেন, 'আমরা চাই যে কোন মূল্যেই মংলা বন্দরের সাথেই কাস্টম কার্যালয় স্থানান্তরিত হোক। আপাতত সমস্যার সমাধানের জন্যে আমাদের ট্রাফিক বিভাগের কিছু কক্ষ তাদেরকে ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু তাতে তাদের পুরো কার্যক্রম সম্পাদন করা সম্ভব হচ্ছে না। এ সমস্যা সমাধানে যত দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় সেটি আমাদের বন্দরের জন্যেই মঙ্গল হবে।

   

মানুষের হাত-পা কেটে পৈশাচিক আনন্দ পেত মিল্টন: হারুন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ নামক আশ্রমের আশ্রিত গরীব, অসহায় মানুষগুলোর জন্য যখন অপারেশনের প্রয়োজন হতো তখন নিজে হাতে ব্লেড দিয়ে আঙুল কেটে ফেলতো চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দার। ব্লেড, ছুরি দিয়ে কাটাছেঁড়ার কারণে অসহায় মানুষগুলো অমানবিক কষ্ট পেতেন, আর্তনাদ করতেন। এসব দেখে পৈশাচিক আনন্দ উপভোগ করতেন মাদকাসক্ত মিল্টন। 

রাজধানীর মিরপুর মডেল থানায় করা মামলায় তিন দিনের রিমান্ড শেষে মিল্টন সমাদ্দারকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত লোমহর্ষক তথ্য সম্পর্কে জানান ডিএমপি'র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

রোববার (০৫ মে) দুপুরে মিন্টো রোডের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে হারুন অর রশীদ আক্ষেপ করে বলেন, মিল্টন সমাদ্দারের মতো সাইকোপ্যাথিক মানুষ কীভাবে মানবতার ফেরিওয়ালা হয়? তা আমাদের বোধগম্য নয়। তিনি যে নির্যাতন করে, ব্লেড ছুরিতে নিজেই অপারেশন করতেন, টর্চার সেলে মানুষকে পেটাতেন, তাদেরকে তিনি বানর বলে অভিহিত করতেন। পিটিয়ে নিস্তেজ করতেন। তিনি স্বীকার করেছেন যে, এসব করে তিনি পৈশাচিক আনন্দ পেতেন। আমরা তার টর্চার সেল থেকে আলামত জব্দ করেছি। কথিত অপারেশন থিয়েটার থেকে ব্লেড,  ছুরি জব্দ করেছি।

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, মিল্টন সমাদ্দার ভয়াবহ অপরাধ করেছেন। একটি দুটি অপরাধ করেননি, তার বিরুদ্ধে উঠা সব অভিযোগ তো ভয়াবহ। তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন। তার একাউন্টে এখনো ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা আছে। এতোগুলো টাকা থাকার পরও তিনি কাউকে চিকিৎসা করাননি। তিনি নিজেই হয়ে গেছেন অপারেশন থিয়েটারের হেড। তার অপারেশন থিয়েটারে থাকতো একটা ছুরি ও কিছু ব্লেড। তিনি এগুলো দিয়েই নিজেই অপারেশন করাতেন। এরকম ভয়াবহ, অমানবিক আচরণ, অসভ্য আচরণ, এটা বাংলাদেশের মানুষের জন্যই তো লজ্জাজনক। যারা তার সঙ্গে জড়িত, যারা পেট্রনাইজড করেছে, সহযোগিতা করেছে, ফেসবুকে ফলোয়ার বাড়ানোর জন্য যারা পেট্রন করেছে, ফাউন্ডেশনের মেম্বার তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

হারুন বলেন, যে ছেলেটা সেই উজিরপুর থেকে বাবাকে পিটিয়ে ঢাকায় এসে ঔষধের দোকানে চুরি করেছেন, এরপর একটা আশ্রম গড়ে তোলেছেন। যেখানে সে অসহায়, গরীব শিশু, বৃদ্ধ, প্যারালাইজড, বাকপ্রতিবন্ধী, মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষকে সংগ্রহ করে আশ্রমে নিতেন। তাদের দেখিয়ে তিনি ফেইসবুকে ফলোয়ারের মাধ্যমে টাকা ইনকাম করতেন। সেই টাকা আবার তিনি খরচা করতেন না।

তার আশ্রমে ৯০০ লোক মারা গেছে বলে নিজেই প্রচার করতেন উল্লেখ করে হারুন বলেন, মানুষগুলো মারা গেছেন। জানাজা হলো না, রাতের অন্ধকারে কবর দেয়া হলো, আত্মীয়-স্বজনকে জানানো হলো না, মিথ্যেভাবে সিল স্বাক্ষর দিয়ে নিজেই ডেথ সার্টিফিকেট দিলেন, পরেও স্বজনদের জানালেন না, এসবই আমাদের তদন্তে আসবে।

যেসব শিশু তার আশ্রমে ছিল, তাদের খোঁজ পাবার পর দেখা করতে দেয়া হতো না স্বজনদের। ওই শিশুদের ক্ষেত্রে আসলে কী ঘটেছিল? বিক্রি করতো? কিছু পেয়েছেন আপনারা? এমন প্রশ্নের উত্তরে হারুন বলেন, একটু ধৈর্য ধরেন সবই বেরিয়ে আসবে। এরকম আরও যেসব মিল্টন সমাদ্দার বাংলাদেশে যদি আরও থেকে থাকে, তথাকথিত মানবতার ফেরিওয়ালা নামে এ ধরনের অপকর্ম করে থাকে তাদের ব্যাপারেও খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে।

মিল্টন সমাদ্দার নিজেই বলেছেন, ৯০০ লোকের প্রাণ নিভে গেলো! কীভাবে নিভে গেলো? তিনি তো তাদের হাসপাতালে নেননি, ডেথ সার্টিফিকেটও নেননি, থানা পুলিশকে অবহিত করেননি। আবার ৯০০ লোকের প্রাণ যাবার যে কথা তিনি বলেছেন, সেটা আদৌ সত্য কিনা, নাকি এটা টাকা ইনকামের একটা কথার কথা! সত্য হলে কি করেছেন। সব তদন্তে নিয়ে আসবো। এই আশ্রমের সঙ্গে আরও যারা যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

হারুন বলেন, অটিজম শিশুদের সঙ্গে যা করা হয়েছে তা লজ্জাজনক। কারণ বঙ্গবন্ধুর নাতনী প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল অটিজম নিয়ে সারা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক অফিসের (ডব্লিউএইচওএসইএআরও) আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন বৈশ্বিক অটিজম বিশেষজ্ঞ সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল)। আর সেই দেশে অটিজমের নাম ধারণ করে অসহায়, বাক প্রতিবন্ধী ভারসাম্যহীন মানুষ সংগ্রহ করে ফেইসবুকে প্রচার করে ফলোয়ারদের মাধ্যমে টাকা সংগ্রহ করে আত্মসাৎ করেছেন। অন্যদিকে তিনি সেই টাকা খরচা করেননি। এটা তো লজ্জাজনক।

তাকে জবাবদিহি করতে হবে। তিনি কীভাবে ডেথ সার্টিফিকেট দিতেন। আমরা তো সেখানে যাতায়াত করা ডাক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তিনি বলেছেন, মিল্টন সমাদ্দার তার সিল স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ডেথ সার্টিফিকেট দিতেন, যা তিনি জানতেন না। মিল্টন সমাদ্দার নিজেও তা স্বীকার করেছেন। তিনি নাকি মানবতার ফেরিওয়ালা। এসব অপকর্ম করে কীভাবে একজন মানুষ মানবতার ফেরিওয়ালা হয়?

এদিকে রাজধানীর মিরপুর মডেল থানায় করা সিটি করপোরেশনের মৃত সনদ জাল কারার অভিযোগের মামলায় রিমান্ড শেষে মিল্টন সমাদ্দারকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। দুপুর ১টার দিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়।

এর আগে শনিবার দুপুরে মিন্টো রোডের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে হারুন অর রশীদ বলেন, মিল্টন সমাদ্দার রিমান্ডে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ রয়েছে সেসব বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার আশ্রমের বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে মিল্টনের স্ত্রীকে রোববার দুপুরে ডিবিতে ডাকা হয়েছে। তাকেও আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করব।

রাজধানীর মিরপুর থেকে গত বুধবার রাতে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) মিরপুর জোনাল টিম। তার বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানায় ৩টি মামলা করা হয়েছে। আরও কয়েকটি মামলার প্রস্তুতি চলছে। গত বৃহস্পতিবার মিল্টনকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ আশ্রমে জাল মৃত্যুসনদ দেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

এদিকে মিল্টন সমাদ্দারের গ্রেফতার হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে মিরপুরের পাইকপাড়া এবং বরিশালের উজিরপুরের সাধারণ মানুষজন। এছাড়া বুধবার রাতেই রাজধানীতে আনন্দ মিছিল করে স্থানীয়রা। গ্রেফতারের পর থেকেই ভুক্তভোগীদের অনেকে মিল্টনের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন।

প্রসঙ্গত, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক কোটি ৬০ লাখের বেশি অনুসারী রয়েছে মিল্টন সমাদ্দারের। অভিযোগ রয়েছে এই বিশাল অনুসারীদের কাজে লাগিয়ে তার মূল টার্গেট ছিল বিভিন্ন মানবিক কাজ প্রচার করে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করা।

;

টাঙ্গাইলে বজ্রপাতে বাবুর্চির মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, টাঙ্গাইল
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

 

টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে বজ্রপাতে ওয়াজেদ আলী খান (৫০) নামে এক হোটেল বাবুর্চির মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার (৪ মে) রাতে ঘাটাইল উপজেলায় ফতেরপাড়া-খিলপাড়া রোড এলাকায় বজ্রপাতের সময় এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

রোববার (৫ মে) সকালে উপজেলার ঝাইকা রাস্তার নদীর পাড় থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিহত ওয়াজেদ আলী খান ঘাটাইল সদর ইউনিয়নের খিলপাড়া গ্রামের মৃত সোনা খানের ছেলে।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য রায়হান খান ও নিহতের পরিবার জানান, ওয়াজেদ আলী একটি হোটেলের বাবুর্চি ছিলেন। শনিবার দিবাগত রাতে হোটেলের কাজ শেষ করে ঘাটাইল থেকে তিনি বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় আকাশে ঘন ঘন বজ্রপাত হচ্ছিল। রাত ১১টায় বজ্রপাতের এক পর্যায়ে ফতেরপাড়া-খিলপাড়া রোডে বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়। রোববার সকালে স্থানীয়রা তার মরদেহ দেখতে পেয়ে পরিবারকে খবর দেয়। পরে ঝাইকা রাস্তার নদীর পাড় থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া বলেন, তার শরীরের বিভিন্ন অংশ বজ্রপাতে ঝলসে গেছে। নিহতের পরিবার মরদেহ বাড়িতে নিয়ে গেছে।

;

দায়িত্বের কাছে তুচ্ছ তাপমাত্রা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশজুড়ে চলমান দাবদাহে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা যখন কঠিন, তখন ঘণ্টার পর পর ঘণ্টা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা। গেল দু-একদিন বৃষ্টি হলেও রোদের তীব্রতা কমার নাম নেই। ফেনীতে গড়ে প্রতিদিন ৩৩ থেকে ৩৬ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা অব্যাহত আছে। গরমে সাধারণ মানুষের যখন হাঁসফাঁস অবস্থা ট্রাফিক পুলিশদের দায়িত্বের কাছে তাপমাত্রা যেন তুচ্ছ।

রোববার (৫ মে) দুপুরে ফেনীর মহিপাল, ট্রাংক রোড়, মিজান রোড়, ডাক্তার পাড়া মোড়সহ শহরের বি়ভিন্ন ব্যস্ত সড়কে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় দেখা যায় তাদের। কড়া রোদ, তীব্র গরম, যানজট, উচ্চ শব্দের হর্ন চারদিকে। এরমধ্যে রয়েছে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি। সব মিলিয়ে অসহনীয় পরিস্থিতি তৈরি হলেও ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা পরিস্থিতির সম্মুখে থেকে তাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।

জেলা ট্রাফিক পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ফেনী সদর, সোনাগাজী, দাগনভূঞাসহ ৬ জন ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টি.আই), শহরে ৬ জন সার্জেন্ট/ টাউন সাব-ইন্সপেক্টর (টিএসআই), ১০ জন অ্যাসিসটেন্ট টাউন সাব-ইন্সপেক্টরসহ (এটিএসআই) ৪০ জন কনস্টেবল ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ কাজে নিয়োজিত আছে।

ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা বার্তা২৪.কমকে জানায়, তীব্র গরমকে উপক্ষো করে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে হচ্ছে তাদের। এছাড়াও হিট স্ট্রোকসহ অন্যান্য রোগের ঝুঁকি থাকলেও সাধারণ মানুষকে যানজট থেকে মুক্তি দিতে প্রতিদিন ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা কাজ করতে হয়।

কথা হয় ট্রাংক রোড মোড়ে দায়িত্ব পালন করা ট্রাফিক পুলিশের সদস্য কনস্টেবল জামালের সাথে। তিনি বলেন, জনগণের স্বার্থে এই তীব্র গরমে আমাদের রাস্তায় কাজ করতে হয়। হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি রয়েছে বিধায় পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক খাবার স্যালাইন, পানি, ছাতা সরবরাহ করছে। এছাড়াও নিয়মিত শরীর চেকআপ করা হচ্ছে।

মহিপালে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে দায়িত্ব পালন করছেন কনস্টেবল মো. রিপন। তিনি বলেন, জনগণের সেবা করা আমাদের দায়িত্ব। কষ্ট হলেও জনগণকে সেবা দিতে এই তীব্র দাবদাহে রাস্তায় আমরা ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছি।

এ প্রসঙ্গে জেলা ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক মো. আনোয়ারুল আজীম মজুমদার বলেন, তাপমাত্রা যদি ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসও হয় আমাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। কারণ আমরা যদি কিছুক্ষণের জন্য থেমে যাই তাহলে তীব্র যানজট লেগে শহর অচল হয়ে যাবে। যতই রোদ, বৃষ্টি, ঝড় লেগে থাকুক আমাদের সার্বক্ষণিক রাস্তায় দায়িত্ব পালন করতে হয়।

পুলিশ পরিদর্শক (শহর ও যানবাহন) এস.এম শওকত হোসেন বলেন, ট্রাফিক পুলিশদের সবসময় রাস্তায় থেকে কাজ করতে হয়। ঝড়-বৃষ্টি, রোদ, যানবাহনের উচ্চ শব্দের হর্ন আর ধুলোয় থেকে শরীরে নানা অসুস্থতা বাসা বাঁধলেও জনগণের স্বার্থে দায়িত্ব পালন করে যেতে হয়।

চিকিৎসকের মতে, তীব্র দাবদাহে হিটস্ট্রোকের সবচেয়ে ঝুঁকিতে ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা। তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির উপরে হলে মাসল ব্রেকডাউন হতে পারে। এছাড়াও ডিহাইড্রেশন হয়, শরীরে পটাশিয়াম বেড়ে যায়। এর ফলে হার্টবিট অ্যাবনর্মাল হয়ে যেতে পারে, যে কারণে মৃত্যুঝুঁকি অনেক বেশি। পটাশিয়ামের মাত্রা অনেক বেশি বেড়ে গেলে চিকিৎসা নেওয়ার আগেই রোগীর মৃত্যু হতে পারে।

হিট স্ট্রোক রোধে চিকিৎসকরা পরামর্শ দিচ্ছেন, ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করার (হালকা রঙের সুতির কাপড় হলে ভালো), যথাসম্ভব ঘরের ভেতরে বা ছায়াযুক্ত স্থানে থাকার, রোদে বাইরে যাওয়ার সময় টুপি, ক্যাপ অথবা ছাতা ব্যবহার করার, প্রচুর পরিমাণে পানি বা খাবার স্যালাইন অথবা ফলের রস পান করার, রোদে দীর্ঘ সময় ঘোরাঘুরি না করা, তীব্র শারীরিক পরিশ্রম এড়িয়ে চলার।

এ প্রসঙ্গে জেলা ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক মো. আনোয়ারুল আজীম মজুমদার বলেন, ট্রাফিক পুলিশদের হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি রয়েছে সর্বোচ্চমাত্রায়। হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি প্রতিরোধে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক পানি, স্যালাইন, ছাতা সরবরাহ করা হচ্ছে এবং প্রত্যেকটি কনস্টেবলের শরীরে কোনো সমস্যা আছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করতে নিয়মিত চেকআপ করা হচ্ছে। যাদের সমস্যা ধরা পড়ছে তাদের স্থলে অন্য কনস্টেবলকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, প্রত্যেককে নির্দেশনা দেওয়া আছে যাতে তীব্র রোদে একটানা কাজ না করে ৩০ মিনিট বিশ্রাম নিয়ে কাজ করে। ওই ৩০ মিনিটে অন্য কনস্টেবল দায়িত্ব পালন করবে। এভাবে সমন্বয় করে দায়িত্ব পালন করার জন্য নির্দেশ দেওয়া আছে বলে জানান তিনি।

;

আইএবি অ্যাওয়ার্ডস ২০২৩ পেল ‘নাফ-ডরমেটরি টেকনাফ প্রকল্প'



নিউজ ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

স্থাপত্য ও নকশায় অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সম্প্রতি ‘আইএবি অ্যাওয়ার্ডস ২০২৩’ প্রদান করেছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্টস (আইএবি)। এ বছর পুরস্কার পাওয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল ‘নাফ-ডরমেটরি টেকনাফ প্রকল্প'।

উদ্ভাবনী নকশা ও দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে অনন্য স্থাপত্য হিসেবে গড়ে উঠেছে ‘নাফ-ডরমেটরি টেকনাফ প্রকল্প'। এর স্বীকৃতি হিসেবে প্রকল্পটির স্থপতি মোহাম্মদ এহসানুল আলম, মামুনুর রশিদ চৌধুরী ও সায়মা শারমিন নিপা আইএবি পুরস্কার পেয়েছেন। এই যুগান্তকারী প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ইউনাইটেড গ্রুপের প্রয়াত পরিচালক নাসিরুদ্দিন আকতার রশীদ। প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকের একাগ্রতা ও অক্লান্ত পরিশ্রমের প্রতিফলন ঘটেছে আইএবি পুরস্কার প্রাপ্তিতে।

নাফ ডরমেটরি প্রকল্পটি বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণে নাফ নদীর তীরে ২৭ একর জমির ওপর অবস্থিত। উদ্ভাবনী নকশা এবং স্থাপত্যের কারণে আমদানি-রপ্তানি পণ্যের আনা-নেয়ার ক্ষেত্রে কম সময় লাগছে। বাংলাদেশ ও মায়ানমারের মধ্যে সংযোগ ও বাণিজ্য বৃদ্ধির মাধ্যমে যা অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে ভূমিকা রাখছে।

নাফ ডরমেটরির মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক অবকাঠামোর অগ্রগতি এবং বাংলাদেশ ও বহির্বিশ্বে ইতিবাচক পরিবর্তনের লক্ষ্যে ইউনাইটেড গ্রুপের যে প্রতিশ্রুতি, তার প্রতিফলন ঘটেছে।

;