হেফাজত নেতার বিরুদ্ধে ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
হেফাজতে ইসলামী’র কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি চট্টগ্রামের নাজিরহাট কওমী মাদ্রাসার মুহাদ্দিস মাওলানা ছলিম উল্লাহর বিরুদ্ধে ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। ‘আহসান সোসাইটি বাংলাদেশ’ নামের একটি অর্থ বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের নামে তিনি গ্রাহকদের এ অর্থ আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ।
শুক্রবার (২১ সেপ্টেম্বর) জুমা নামাজের আগে নাজিরহাট বাজারে জামানতের টাকা ফেরত পাওয়ার দাবিতে মানববন্ধন করেন এই সোসাইটির হাজারখানেক গ্রাহক। মানববন্ধন শেষে তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে নাজিরহাট বাজারের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় এক হাজার গ্রাহকের ১০ কোটি টাকা নিয়ে ফেরত না দিয়েই কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন আহসান সোসাইটি কর্তারা। এ সোসাইটির নাজিরহাট শাখার তত্ত্বাবধায়ক হচ্ছেন মাওলানা ছলিম উল্লাহ। তিনি নাজিরহাট ও ফটিকছড়ি এলাকার বিভিন্ন গ্রাহকের কাছ থেকে বিনিয়োগের জন্য এ টাকা গ্রহণ করেন।
সরেজমিনে নাজিরহাটে গেলে দেখা যায়, আহসান সোসাইটির কার্যালয়টি বন্ধ, কার্যালয়টির সাইনবোর্ডও মুছে ফেলা হয়েছে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, নাজিরহাট পৌরসভা সদরে এহসান সোসাইটি নামে এক এমএলএম কোম্পানী গ্রাহকদের বিনিয়োগকৃত প্রায় ১০কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে গেছে। এ প্রতিষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্ট অফিস সহকারি মুফতি মুবির বিন হাসান ইতিমধো গা ঢাকা দিয়েছেন। এব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনকে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছেন বলেও জানান গ্রাহকরা। বিনিয়োগের টাকা ফেরত পেতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন গ্রাহকরা।
গ্রাহকদের অভিযোগ, মাওলানা ছল্লিমুল্লাহ ২০০৭ সালে আহসান সোসাইটি’র নাজিরহাট শাখা চালু করেন। এটি একটি ইসলামিক শরীয়াহ্ ভিক্তিক ও সুদমুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাবি করে ব্যাংকের হারাম না খেয়ে তার প্রতিষ্ঠানে ডিপিএস খোলার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করে আসছিলেন ছলিমুল্লাহ। তিনি যেহেতু নাজিরহাট মাদ্রাসার মুহতামিম সেহেতু তার কথা বিশ্বাস করে গ্রাহকরা হিসাব খুলতে শুরু করেন। এভাবে দীর্ঘ ৯ বছর অর্থ লেনদেন করার পর ২০১৬ সালে গ্রাহকদের করা ডিপিএস-এর মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার শেষ মুহূর্তে পরিচালক ও সমন্বয়কারী গ্রাহকদের বিনিয়োগকৃত টাকা ফেরত দিতে নয় ছয় শুরু করেন।
অভিযোগ রয়েছে, এই সময়ে মাওলানা ছলিমউল্লাহ বেশ অর্থ সম্পদের মালিক বনে গেছেন। নাজিরহাটের আশপাশে কয়েকটি প্লট ও ৫তলা বিশিষ্ট দুটি ব্লিডিংয়ের মালিক হয়েছেন।
সোসাইটির গ্রাহক আজিজুর রহমান জানান, সোসাইটির আত্মসাতের টাকায় ছলিমউল্লাহ এ বিল্ডিং ও জায়গার মালিক হয়েছেন।
এসব অভিযোগের ব্যাপারে মাওলানা ছল্লিমুল্লাহ বলেন, ‘আমি দীর্ঘ দিন দায়িত্বে থাকলেও গত ২০১৩ সালে আমি দায়িত্ব থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নিই। সুতরাং আমার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ সত্য নয়।’
বিল্ডিং ও প্লটের মালিক হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার শ্বশুর থেকে কিছু জায়গা পেয়েছি। সে গুলো বিক্রি করে এসব করেছি।’