ফ্যাশনেবল-স্টাইলিস্ট রাজনীতিবিদ অরুণ জেটলির ব্র্যান্ডপ্রীতি



ড. মাহফুজ পারভেজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
স্টাইলিস্ট রাজনীতিবিদ অরুণ জেটলি/ছবি: সংগৃহীত

স্টাইলিস্ট রাজনীতিবিদ অরুণ জেটলি/ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজনীতিতে মেধা ও দক্ষতার পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবনযাপনে ফ্যাশন ও স্টাইলের স্বাক্ষর রেখেছেন সদ্য প্রয়াত ভারতীয় রাজনীতিবিদ অরুণ জেটলি। দিল্লিতে জন্ম নেওয়া ও নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠ গ্রহণকারী অরুণ জেটলির জীবনচর্চায় ছিল রুচি ও আভিজাত্যের ছাপ। পোশাক ও নিত্য ব্যবহার্য্য সামগ্রীর ক্ষেত্রে তিনি হাল ফ্যাশনের আধুনিক স্টাইলের অনুসারী ছিলেন। বিশ্বসেরা ব্র্যান্ডের বাছাই করা পণ্যসমূহ নিজের জন্য পছন্দ করতেন তিনি।

বলে রাখা সঙ্গত যে, ভারতের রাজনীতিতে ফ্যাশন ও স্টাইলের অনুসরণ নতুন নয়। আধুনিক ভারতীয় রাজনীতির দুই দিকপাল জিন্না ও নেহেরু বিশেষ পছন্দের পোশাক ও সেরা দোকানের জিনিস বেছে নিতেন। অবশ্য সেটা ব্র্যান্ড আইটেমের যুগ ছিল না। ফলে তারা দেশ-বিদেশের নামজাদা সরবরাহকারীর কাছ থেকে নিজেদের ব্যবহারের জন্য নানা পণ্য সামগ্রী সংগ্রহ করতেন।

ফ্যাশন ও স্টাইলের ক্ষেত্রে পরবর্তীকালে নাম করেছিলেন মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়র রাজবংশের সদস্য রাজনীতিবিদ মাধব রাও সিন্ধিয়া ও তার বোন বসুন্ধরা রাজে। আরেকজনের নাম এক্ষেত্রে বহুলভাবে উচ্চারিত। তিনি হলেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের এককালের অধিনায়ক, পাঞ্জাবের পাতিয়ালার পার্শ্ববর্তী পতৌদির নবাব মনসুর আলি খান। যিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বংশধর, বোম্বের নামকরা বাঙালি নায়িকা শর্মিলা ঠাকুরের স্বামী এবং বলিউড নায়ক সাইফ আলি খানের পিতা।

অরুণ জেটলির মৃত্যুর পর তার অন্তরঙ্গ জীবনের যে বর্ণিল চিত্র প্রকাশ পাচ্ছে, তাতে তিনি অবধারিত ভাবে স্থান করে নিতে চলেছেন ফ্যাশন, স্টাইল ও ব্র্যান্ডের জগতেও। তুলনামূলকভাবে প্রাচীনপন্থী, ধর্মাশ্রয়ী ও রক্ষণশীল রাজনীতির মুখপাত্র হয়েও তিনি নিজেকে উপস্থাপন করেছিলেন আধুনিক ভাবমূর্তিতে। চলনে, বলনে, পোষাকে সেই রুচি, আভিজাত্য ও স্বাতন্ত্রিকতার ছাপ দেখা গেছে অরুণ জেটলির আইনজীবী পেশা ও রাজনীতির কেরিয়ারে।

অরুণ জেটলি ব্যবহার করতেন বিশ্বের সেরা ব্র্যান্ডের দামি ও অত্যাধুনিক সামগ্রী। ঘড়ি, কলম, জামা, জুতা, টাওয়েল ইত্যাদি তিনি বেছে নিতেন বিশ্বসেরা ব্র্যান্ড কোম্পানির কাছ থেকে। সর্ব-সাম্প্রতিক ও উচ্চমানের ব্র্যান্ডের প্রতি ছিল তার দুর্নিবার আকর্ষণ। তাকে বলা হতো ‘হাই-অ্যান্ড ব্র্যান্ড’ প্রেমিক।

রাজনীতিতে এসে যখন তিনি নিয়মিত কুর্তা আর পায়জামা পড়তেন একটি হাতাকাটা কোটের সমন্বয়ে, তখনও গ্রীষ্মে পিওর কটন আর শীতে সেগুলো পশমিনা কাপড়ে তৈরি করা হতো। তার আগে, আইনজীবী পেশাকালে তিনি লন্ডনের বেসপোক শার্ট এবং জন লবের তৈরি কারুশিল্পময় জুতার চেয়ে নিম্নমানের কিছুই পড়তেন না।

 https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/25/1566745804348.JPG

অরুণ জেটলির পাঁচ দশকের লম্বা রাজনৈতিক কেরিয়ারের ঘনিষ্ঠজনেরা তার ব্যবহার্য্য সামগ্রীর বিরাট তালিকার কথা জানিয়েছেন, যে তালিকা এতো লম্বা যে, শেষ হওয়ার নয়। তার কর্মক্ষেত্রের সবাই জানতো ব্র্যান্ডপ্রীতি আর ফ্যাশন ও স্টাইলের দিক থেকে তিনি সবার চেয়ে এগিয়ে। নিজের এই অভ্যাসের কথা অরুণ জেটলি লুকিয়ে রাখতেন না। তার প্রকাশ্য তৎপরতায় সেগুলো লক্ষ্য করা যেতো। ঘড়ি, কলম, জামা, জুতা, তোয়ালের ক্ষেত্রে নামকরা ব্র্যান্ডের প্রতি তার সহজাত আকর্ষণ ছিল অত্যন্ত তীব্র ও প্রখর। তার সংগ্রহেও ছিল নামকরা, দামি ব্র্যান্ডের বহু জিনিস। তিনি ব্যবহার করতেন পিটেক ফিলিপস নির্মিত ঘড়ি, মন্ট ব্ল্যাঙ্ক-এর কলম, বেসপোক ব্র্যান্ডের শার্ট এবং জন লবের তৈরি কারুশিল্পময় জুতা।

অরুণ জেটলি এতোটাই অগ্রসর ও অত্যাধুনিক ছিলেন যে, যখন অধিকাংশ ভারতীয়ই ওমেগা ব্র্যান্ডের ঘড়ি কেনার কথাও চিন্তা করতে পারতেন না, তখন তিনি নিজের কব্জিতে অবলীলায় পিটেক ফিলিপস-এর ঘড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন। তার ছিল উল্লেখ করার মতো মন্ট ব্ল্যাঙ্ক কোম্পানির কলম, জামাওয়ার ব্র্যান্ডের টাওয়েল, রুমাল, টাই। মন্ট ব্ল্যাঙ্ক কোম্পানি নতুন ধরনের কোনও কলম বাজারে ছাড়লেই সেটা নিজের জন্য সংগ্রহ করতেন অরুণ জেটলি। এমনকি, যেদিন কলমটি বাজারে রিলিজ করা হতো, সেদিনই তা নিয়ে নিতেন তিনি।

লেখক-সাংবাদিক কুমকুম চাড্ডা ‘দ্যা মেরিগোল্ড স্টোরি’ নামে যে বই রচনা করেছেন, তাতে অরুণ জেটলিকে নিয়ে রয়েছে একটি আস্ত অধ্যায়। ‘অরুণ জেটলি: দ্য পিড পিপার’ নামের সেই অধ্যায়ে অরুণ জেটলির কেতা-দুরস্ত জীবনযাপনের আদ্যোপান্ত রয়েছে। রয়েছে তার ব্র্যান্ডপ্রীতি, ফ্যাশন সচেতনতা ও স্টাইলের প্রতি আগ্রহের কথাও।

ব্র্যান্ড সচেতনতা অরুণ জেটলির জীবনের আগাগোড়াই উপস্থিত ছিল। রাজনীতিতে এসেও তিনি সেটা পরিত্যাগ করতে পারেন নি। তার আইনজীবী পুত্র রোহানের জন্য তিনি প্রথম যে জুতো জোড়া কিনেছিলেন, সেগুলোও ছিল স্যালভাটরে ফেরাগামো নামের নামকরা ইতালীয় লাক্সারি ব্র্যান্ডের। মন্ত্রী পরিষদেও তার চেয়ে লেটেস্ট ও সর্বাধুনিক ল্যাপটপ নিয়ে অন্য কেউ কাজ করতেন না।

অরুণ জেটলির এই ফ্যাশনেবল-স্টাইলিস্ট জীবনধারা ও ব্র্যান্ডপ্রীতি সবাই জানতেন। কিন্তু কেউ এই ব্যয়বহুল জীবনের কোনও সমালোচনা করার সুযোগ পেতেন না। কারণ তিনি নিজের উপার্জন ও ব্যয়ের মধ্যে পরিচ্ছন্নতা ও স্বচ্ছতা রক্ষা করতেন। আইনজীবী হিসাবে তার অফিসকে তিনি এতোটাই নিয়মতান্ত্রিক করেছিলেন যে, কোনও মক্কেলের পক্ষে টাকা নিয়ে দর কষাকষি বা হেনস্তা হওয়ার সুযোগ ছিল না। তার অফিসের কর্মচারীরাও নানা বাহানায় ক্লায়েন্টের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সুযোগ পেতেন না। তিনি সবার পারিশ্রমিক নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন এবং সেমতে টাকা জমা দেওয়ার জন্য হিসাবরক্ষক রেখেছিলেন।

মন্ত্রী হিসাবেও অরুণ জেটলি ব্যক্তিগত জীবন ও আর্থিক ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা দেখিয়েছেন। একবার নৈনিতালে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে তিনি একদল বন্ধু-বান্ধব নিয়ে গিয়েছিলেন। তবে সেখানে তাদের থাকা-খাওয়ার যাবতীয় খরচ তিনি কড়ায় গণ্ডায় হিসাব করে নিজের পকেট থেকে চুকিয়ে দিয়েছিলেন।

 https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/25/1566745816503.jpeg

আরেক বার, তিনি তখন ভারতের অর্থমন্ত্রী, লন্ডনে একটি বিখ্যাত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান তার ব্যবহারের জন্য একটি গাড়ি পাঠায়। তিনি সেই গাড়ি হোটেলের দরজা থেকে ফিরিয়ে দিয়ে নিজে ভাড়া করা গাড়িতে চলাফেরা করেছিলেন।

অরুণের স্ত্রী, জম্মু ও কাশ্মীরের সাবেক অর্থমন্ত্রীর মেয়ে সঙ্গীতা নিজের স্বামী সম্পর্কে গর্ব করে বলেছিলেন, ‘অরুণ নিজের সততা, স্বচ্ছতা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে সব অর্জন করেছে। কেউ তাকে হাতে তুলে কিছুই দেয় নি।’

অরুণ জেটলির ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক জীবনে বহু সাফল্যের সঙ্গে সঙ্গে কিছু সমালোচনা থাকলেও তিনি ছিলেন ব্যক্তি-মানুষ হিসাবে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য। অতুলনীয় জনসংযোগ ক্ষমতা ও মোহনীয় দক্ষতার অধিকারী অরুণ রাজনৈতিক কারণে অনেকের সঙ্গে লড়াই করতেও ব্যক্তিগত সম্পর্ককে কখনোই নষ্ট হতে দেন নি। রাজনীতিতে তার উচ্চরুচি ও উন্নত সাংস্কৃতিক বোধ বিদ্যমান সংঘাত ও হানাহানি প্রবণ পরিবেশে বিরল ও শিক্ষণীয় দৃষ্টান্ত।

যে কারণে তার মৃত্যুর পর দলমত নির্বিশেষে সবাই ভিড় করেছেন দিল্লির গ্রেটার কৈলাসে অবস্থিত অরুণ জেটলির বাড়িতে। চরম প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসের নেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে তার বৈরিতা এমন হয়েছিল যে, উভয়ের মধ্যে কথা বলা ও মুখ দেখাদেখি বন্ধ ছিল। কিন্তু অরুণ জেটলির মৃত্যু সংবাদ পেয়ে পুত্র রাহুলকে নিয়ে ছুটে আসেন সোনিয়া। এখানেই অরুণ জেটলির ব্যক্তিত্বের সাফল্য নিহিত।

রাজনৈতিক কেরিয়ারের চকচকে ইমেজের মতো ব্যক্তিজীবনেও অরুণ জেটলি সবাইকে মোহিত করেছিলেন তার ফ্যাশন, স্টাইল, ব্র্যান্ডপ্রীতির দ্বারা। রুচি ও আভিজাত্যের দীপ্তিতে ভারতীয় রাজনৈতিক ঘরানায় রেখেছিলেন মেধার স্বাক্ষর এবং দারুণ সফলভাবে সম্ভব করে তুলেছিলেন নিজের আলোকিত ও সুশোভন উপস্থিতি।

অরুণ জেটলির মৃত্যুতে মেধাবী নেতা এবং সুস্নিগ্ধ-সুসজ্জিত ব্যক্তিত্বের অধিকারী রাজনীতিবিদের অভাব ভারতের রাজনীতিতে অনুভূত হবে, যে অভাব খুব সহজে কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে না।

আরও পড়ুন: অরুণ জেটলি: ভারতীয় রাজনীতির মেধাবী পুরুষ

   

ব্রাজিলে গেস্টহাউসে অগ্নিকান্ডে নিহত ১০



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দক্ষিণ ব্রাজিলের পোর্তো অ্যালেগ্রে শহরে গৃহহীনদের অস্থায়ী আশ্রয় হিসাবে ব্যবহৃত একটি গেস্টহাউসে শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) আগুন লেগে কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছে।

অগ্নিকাণ্ড এবং হতাহতের খবর রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছেন দেশটির কর্মকর্তারা।

রিও গ্র্যান্ডে ডো সুল রাজ্যের ফায়ার বিভাগ বলেছে, উদ্ধারকর্মীরা সেখান থেকে ১০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে।

রিও গ্র্যান্ডে ডো সুল রাজ্যের ফায়ার বিভাগ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা ক্ষতিগ্রস্তদের সনাক্ত করতে এবং আগুনের কারণ অনুসন্ধান করতে ঘটনাস্থলে রয়েছেন।

রাজ্যের গভর্নর এডুয়ার্ডো লেইট বলেছেন, অগ্নিকাণ্ডের খবর তাকে গভীরভাবে বিচলিত করেছে।

তিনি এক্স-এ লিখেছেন, ‘ফায়ার ডিপার্টমেন্ট আগুন নেভাতে পাঁচটি ট্রাক এবং কয়েক ডজন অগ্নিনির্বাপক কর্মী প্রেরণ করেছে।’

তিনি আর লিখেছেন, ‘আমরা এই ট্র্যাজেডির কারণ অনুসন্ধানে কাজ চালিয়ে যাব। নিহতদের পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা।’

ব্রাজিলের মিডিয়ায় প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, তিন তলা ভবনটি আগুনে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে এবং য়ায়ার সার্ভিসকর্মীরা আগুন নেভানোর জন্য লড়াই করছে।

মেয়র সেবাস্তিয়াও মেলো এক্স-এ লিখেছেন, একাধিক আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে আহতদের সংখ্যা ১১ জন বলে জানানো হয়েছে।

;

ছয় বছরে বিজেপির গুগলে বিজ্ঞাপন খরচ ১০০ কোটি রুপি



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গুগল এবং ইউটিউবে ১০০ কোটি রুপির বেশি বিজ্ঞাপন দিয়েছে বিজেপি। এনডিটিভি জানিয়েছে, ভারতে এই প্রথম কোনও রাজনৈতিক দল এত টাকার রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন দিল।

২০১৮ সালের মে মাস থেকে বিজ্ঞাপনের ‘ট্রান্সপারেন্সি রিপোর্ট’ প্রকাশ করেছে গুগল। তাতে দেখা গেছে, কংগ্রেস, ডিএমকে, রাজনৈতিক উপদেষ্টা সংস্থা ইন্ডিয়ান পলিটিক্যাল অ্যাকশন কমিটি (আই-প্যাক) মোট যত টাকার বিজ্ঞাপন দিয়েছে, তারচেয়ে বেশি টাকার বিজ্ঞাপন একাই দিয়েছে বিজেপি। সেটি ১০১ কোটি রুপিও বেশি।

ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, ২০১৮ সালের ৩১ মে থেকে ২০২৪ সালের ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত গুগলে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপনে যত খরচ করা হয়েছে, তার ২৬ শতাংশই করেছে বিজেপি। ছয় বছরে মোট ৩৯০ কোটি রুপি খরচ করা হয়েছে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপনে।

গুগলের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন বলতে শুধু রাজনৈতিক দলের বিজ্ঞাপনকেই বোঝায় না। এই তালিকায় রয়েছে সংবাদ মাধ্যম, সরকারের প্রচার বিভাগ, এমনকি রাজনীতিক, অভিনেতাদের দেওয়া বিজ্ঞাপনও।

গুগলের পরিসংখ্যান বলছে, ছয় বছরে দুই লাখ ১৭ হাজার ৯৯২টি রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে এক লাখ ৬১ হাজারটি বিজেপির।

এর মধ্যে আবার দলের সব থেকে বেশি বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে কর্নাটকের বাসিন্দাদের উদ্দেশ্য করে। কর্নাটকের বাসিন্দাদের উদ্দেশে গুগলে প্রকাশ করা হয় ১০ কোটি ৮০ লাখ রুপির বিজ্ঞাপন। তার পরেই রয়েছে উত্তরপ্রদেশ।

সেখানকার বাসিন্দাদের জন্য ১০ কোটি ৩০ লাখ টাকার বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়েছে। তারপরের স্থানে রয়েছে রাজস্থান ও দিল্লি। এমনিতে গুগলে সবচেয়ে বেশি রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে তামিলনাড়ুর উদ্দেশে। তারপরে রয়েছে তেলঙ্গানা, উত্তরপ্রদেশ, কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশ।

গুগলে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন দেওয়ার ক্ষেত্রে বিজেপির পর রয়েছে কংগ্রেস। ছয় বছরে ৪৫ কোটি রুপির বিজ্ঞাপন দিয়েছে তারা। এই সময়ে মোট ৫,৯৯২টি বিজ্ঞাপন দিয়েছে তারা। তাদের লক্ষ্য ছিল মূলত কর্নাটক এবং তেলঙ্গানা। দুই রাজ্যের বাসিন্দাদের জন্যই ৯.৬ কোটি রুপি করে খরচ করেছে কংগ্রেস। মধ্যপ্রদেশের জন্য ৬.৩ কোটি রুপি খরচ করেছে।

কংগ্রেসের পর রয়েছে ডিএমকে। গুগলে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন দেওয়ার নিরিখে তারা তৃতীয় স্থানে। ২০১৮ সালের মে মাস থেকে গুগলে বিজ্ঞাপন দিয়ে ৪২ লাখ রুপি খরচ করেছে তারা। তার মধ্যে ১৬.৬ কোটি রুপির বিজ্ঞাপন দিয়েছে তাদের রাজনৈতিক উপদেষ্টা সংস্থা।

তামিলনাড়ুর বাইরে কর্নটকে ১৪ কোটি রুপি এবং কেরলে ১৩ কোটি রুপির বিজ্ঞাপন দিয়েছে এমকে স্ট্যালিনের দল। ভারত রাষ্ট্রসমিতি (বিআরএস) ২০১৩ সালের নভেম্বরে তেলঙ্গানার বিধানসভা নির্বাচনের সময় ১২ কোটি রুপি খরচ করেছে। আইপ্যাক তৃণমূলের জন্য পশ্চিমবঙ্গের উদ্দেশে গুগলে ৪.৮ কোটি রুপির বিজ্ঞাপন দিয়েছে।

লোকসভার দ্বিতীয় দফার নির্বাচনের আগে গুগলে বিজ্ঞাপন দিতে রাজনৈতিক দলগুলো যে পরিমাণ টাকা খরচ করেছে, তা জানলে বিস্মিত হতে হয়।

এ ক্ষেত্রে বিজেপিকে পিছনে ফেলেছে কংগ্রেস। ১৮ থেকে ২৪ এপ্রিল কংগ্রেস গুগলে ৫.৭ কোটি রুপির বিজ্ঞাপন দিয়েছে। আর বিজেপি দিয়েছে ৫.৩ কোটি রুপির।

;

ক্যাম্পসের বিক্ষোভ আমাদের গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য : অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাম্পাসগুলোতে ছড়িয়ে পড়া ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভ আমাদের গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য।’

তবে, তিনি ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংগঠন হামাসের বিরুদ্ধে দেশটির শিক্ষার্থীদের নিরবতার সমালোচনা করেছেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

এদিকে, হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধের প্রতিবাদকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কখনও কখনও রাসায়নিক টেজার ব্যবহার করছে। ফলে, বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে।

বিক্ষোভকে স্তব্দ করতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বড় আকারের গ্রেপ্তার অভিযান চালিয়েছে দেশটির পুলিশ।

চীনের উচ্চ-পদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে একদিনের বৈঠকের পর বেইজিংয়ে বক্তৃতাকালে ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘এই ধরনের বিক্ষোভ আমাদের গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের নাগরিকরা যেকোনো সময় তাদের মতামত, উদ্বেগ এবং ক্রোধ প্রকাশ করতে পারে, যা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে চীন।’

ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘আমি মনে করি, এই ধরনের বিক্ষোভ একটি দেশের শক্তিকে প্রতিফলিত করে।’

তিনি বলেন, ‘প্রতিবাদকারীরা হামাসের নিন্দা করেনি, যারা গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে অভূতপূর্ব হামলা চালিয়েছিল।’

গাজা যুদ্ধ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি, যুদ্ধ গতকাল শেষ হতে পারতো, এটি আগামীকালও শেষ হতে পারে। যদি হামাস তার অস্ত্র নামিয়ে বেসামরিকদের পেছনে লুকিয়ে থাকা বন্ধ করে জিম্মিদের মুক্তি দেয়। তবেই শান্তি ফিরবে।’

তিনি বলেন, ‘তবে হামাস সেটি না করে যুদ্ধের পথ বেছে নিয়েছে।’

;

মহাকাশে অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধের প্রস্তাবে রাশিয়ার ভেটো 



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপিত মহাকাশে অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধের একটি প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে রাশিয়া। ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের ১৩টি দেশই ওই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। একমাত্র দেশ হিসেবে ভেটো দেয় রাশিয়া। অপর দেশ চীন ভোটাভুটিতে অংশগ্রহণ করেনি। 

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার (২৪ এপ্রিল) ১৯৬৭ সালের মহাকাশ চুক্তির ওপর ভিত্তি করে নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান একটি খসড়া প্রস্তাবটি উত্থাপন করে। খসড়াটিতে বলা হয়, ‘ক্ষমতাধর দেশের পাশাপাশি সব রাষ্ট্রকে মহাকাশের শান্তিপূর্ণ ব্যবহার এবং এতে অস্ত্র প্রতিযোগিতা প্রতিরোধের লক্ষ্যে সক্রিয়ভাবে অবদান রাখার আহ্বান জানানো হচ্ছে।’

খসড়ায় ১৯৬৭ সালের মহাকাশ চুক্তি সমর্থনের জন্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়। মহাকাশে কোনো ধরনের গণবিধ্বংসী অস্ত্র বহনকারী কোনো বস্তুকে পৃথিবীর কক্ষপথে স্থাপন না করতে সম্মত হয়েছিল এতে স্বাক্ষরকারী সব দেশ।

বুধবার নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপিত প্রস্তাবটিতে একমাত্র দেশ হিসেবে রাশিয়ার ভেটো দেওয়ার সমালোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির এমন পদক্ষেপকে ‘বিভ্রান্তিকর’ বলে অভিহিত করেছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড। তিনি বলেন, সহজবোধ্য প্রস্তাবটি এ ধরনের প্রতিযোগিতা বন্ধে আইনগত বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করত। তবুও এতে ভেটো দিয়েছে রাশিয়া। অথচ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রকাশ্যে বলেছিলেন, মহাকাশে পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপনের কোনো ইচ্ছা নেই মস্কোর।

লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড বলেন, ‘আজকের ভেটো প্রশ্নের উদ্রেক করেছে। যদি আপনি নিয়ম মেনে চলেন, তাহলে আপনি কি এমন একটি প্রস্তাবকে সমর্থন করবেন না, যা সে নিয়মগুলো মেনে চলাকেই নিশ্চিত করে? আপনি কী লুকাতে চান?’ অন্যদিকে জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার দূত ভাসিলি নেবেনজিয়া বলেন, প্রস্তাবটির পেছনে ‘গোপন ও নিষ্ঠুর’ উদ্দেশ্য রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র এবং জাপানের।

এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের দপ্তর হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কিরবি দাবি করেন, মহাকাশভিত্তিক একটি অ্যান্টি-স্যাটেলাইট পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে রাশিয়া। পরে ওই অভিযোগ অস্বীকার করে মস্কো দাবি করে, ১৯৬৭ সালের মহাকাশ চুক্তির প্রতি তারা দৃঢ়ভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও বিষয়টি নিয়ে নিজ দেশের অবস্থান স্পষ্ট করেন। তিনি বলেন, মহাকাশে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের বিরুদ্ধে মস্কোর অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্ট।

বিবিসির খবরে বলা হয়, বৈশ্বিক নজরদারি, মার্কিন সামরিক অভিযান থেকে শুরু করে জিপিএস সিস্টেম, আর্থিক লেনদেনের মতো বেসামরিক কাজে ব্যবহারের জন্য অনেক ক্ষেত্রেই স্যাটেলাইট যোগাযোগের ওপর নির্ভর করে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে তাদের স্যাটেলাইটগুলোকে টার্গেট করা হলে রীতিমতো অচল হয়ে পড়বে দেশটি।

;