২৯৫ রান করেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের আক্ষেপ
এমন উইকেটে আগে ব্যাট করার সুযোগ মানেই তো-সোনায় সোহাগা! পুরোদুস্তর ফ্ল্যাট উইকেট। কোন সুইং নেই। বাউন্সের বালাই নেই। উইকেটে দাড়িয়ে থাকলেই রান আসবে। তো এমন উইকেটে টসে জিতে ব্যাট করার সেই সুযোগটা কি পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ? প্রথমদিন শেষে হায়দরাবাদের স্কোরবোর্ডে ৭ উইকেটে ২৯৫ রানের স্কোর ওয়েস্ট ইন্ডিজের আক্ষেপের কথাই জানাচ্ছে!
এমন সহজ ব্যাটিং উইকেটে তো টানা দুদিন ব্যাট করে ছয়শ’র ওপর রান নিয়ে যাওয়া যায়। প্রথমদিনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিংও তাই জানাচ্ছিল। কিন্তু উইকেট যে অনেকগুলো হারিয়ে ফেলেছে তারা। এখান থেকে আর বড় রানের স্বপ্ন দেখার উপায় কই? তবুও ২৯৭ রানকে আরও বড় করার শেষ একটা স্বপ্ন টিকে আছে এখন রোস্টন চেজের ব্যাটে। অপরাজিত ৯৮ রান নিয়ে প্রথমদিন শেষ করেন চেজ। সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ২ রান দুরে থাকা রোস্টন চেজ কি রাতে ঘুমাতে পারবেন?
রাজকোটে সিরিজের প্রথম টেস্টেও চেজই ছিলেন ব্যাট হাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেরা পারফর্মার। ১৮২ রানে ৫ উইকেট হারানো ওয়েস্ট ইন্ডিজ যে হায়দরাবাদের টেস্টের প্রথমদিন তিনশ ছুঁইছুঁই স্বস্তিদায়ক রান যে করতে পেরেছে তার পুরো কৃতিত্ব ছয় ও সাত নম্বর ব্যাটিং জুটির। ডরিচ ও চেজ ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ৬৯ রান যোগ করেন। আর দিনের শেষ সেশনে চেজের সঙ্গে সপ্তম উইকেটে চেজ যোগ করেন আরও ১০৪ রান।
টসে জিতে সকালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাট করতে নেমে দলীয় ৩২ রানে প্রথম উইকেট হারায়। শুরুর ধসের সেই শুরু। টপ ও মিডলঅর্ডারের কোন ব্যাটসম্যানই প্রতিরোধ গড়তে পারেননি। মনে হচ্ছিল প্রথমদিনেই ব্যাটিংয়ে নামবে ভারত। কিন্তু সেই হিসেব বদলে দেন প্রথমে ডরিচ-চেজ জুটি এবং সাত নম্বরে চেজ-হোল্ডার জুটি। চেজের সঙ্গে ১০৪ রানের জুটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক জেসন হোল্ডার ৫২ রান করেন।
ভারতীয় পেস বোলার শার্দুল ঠাকুর তার অভিষেক টেস্টকে আপাতত পারফরমেন্স নয়, অন্য কারণে মনে রাখবেন-ইনজুরি! মাত্র ১০ বল করার পর কুঁচকির ব্যথা নিয়ে মাঠ ছাড়েন ঠাকুর। সারাদিনে আর খেলায় ফিরতেই পারেননি। ড্রেসিংরুমেই বসেই বিশ্রামে সময় কাটছে তার। অর্থাৎ এই টেস্টের প্রথমদিন একজন বোলার কম নিয়েই খেলতে হয়েছে ভারতকে। দলের বাকি আরেকজন মাত্র পেস বোলার উমেশ যাদব ২৩ ওভার বল করেন। দিনের বাকি ৭০ ওভার করেন ভারতের স্পিনাররা। নির্ধারিত সময়ের খেলা তখনো শেষ হয়নি, কিন্তু দেখা গেল ৯০ ওভার বোলিং করে ফেলেছে ভারত! বাকি সময়ে ভারত আরও পাঁচ ওভার করার সুযোগ পায়। চেজ ও হোল্ডার যেভাবে খেলছিলেন তাতে মনে হচ্ছিল দিনের শেষ সেশনটা কোন ক্ষতি ছাড়াই কাটিয়ে দেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু নতুন বল হাতে নিয়ে একেবারে শেষবেলায় হোল্ডারকে ৫২ রানে আউট করে উমেশ যাদব ভারতকে আরেকবার আনন্দের উপলক্ষ এনে দেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: (১ম দিন শেষে) ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনি: ২৯৫/৭ (৯৫ ওভারে, ব্রাথওয়েট ১৪, পাওয়েল ২২, হোপ ৩৬, হেটমায়ের ১২, অ্যাম্বিস ১৮, চেজ ৯৮*, ডরিচ ৩৯, হোল্ডার ৫২, বিশু ২*, উমেশ ৩/৮৩, কুলদ্বীপ ৩/৭৪)।