রংপুরে ভুয়া চিকিৎসককে জেল-জরিমানা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
রংপুরে ভুয়া চিকিৎসককে জেল-জরিমানা/ছবি: বার্তা২৪.কম

রংপুরে ভুয়া চিকিৎসককে জেল-জরিমানা/ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রংপুরে আব্দুর রশিদ নামে এক ভুয়া চিকিৎসককে পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। অনাদায়ে তাকে ৬ মাসের জেল দেওয়া হয়েছে।

শনিবার (২৮ মার্চ) বিকেলে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার সাইমোড় জসদা মার্কেটে অভিযান চালিয়ে এই জরিমানা করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. উলফৎ আরা বেগম এ অভিযান পরিচালনা করেন।

জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসক দাবিকারী আব্দুর রশিদ ভুয়া প্রচারণা চালিয়ে লোকজনকে নানাভাবে প্রতারণা করে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা ও অপারেশন করে আসছিল। তার কোনো চিকিৎসক সনদ ও সেবাকেন্দ্রের লাইসেন্স ছিল না। এসব তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার অভিযান চালানো হয়। এসময় অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ওই ভুয়া চিকিৎসককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ছয় মাসের জেল প্রদান করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

ভুয়া চিকিৎসক আব্দুর রশিদ রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন এর ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কাউনিয়াতে চেম্বার দিয়ে চিকিৎসা করে আসছিলেন।

   

গাজীপুর বিআরটিএ অফিসে বেপরোয়া দালাল চক্র



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গাজীপুর
বেপরোয়া দালাল চক্র

বেপরোয়া দালাল চক্র

  • Font increase
  • Font Decrease

গাজীপুর রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) অফিসে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে দালাল চক্র। কর্মকর্তাদের পোশাকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা থেকে শুরু করে ড্রাইভিং লাইসেন্সের লিখিত পরীক্ষার খাতা দেখাসহ সকল কার্যক্রমই পরিচালিত হচ্ছে দালালের মাধ্যমে। অভিযোগ রয়েছে বিআরটিএ অফিসের কর্মকর্তারা নিজেদের সুবিধার্থে এসব দালালদের সঙ্গে সখ্যতা তৈরি করেছে। নিজেদের স্বার্থ হাসিলে বিভিন্ন কাজে দালালদের ব্যবহার করে থাকেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সড়ক দুর্ঘটনা রোধ ও সড়কে শৃঙ্খলা জোরদার করতে গত বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে গাজীপুর সদর উপজেলার ভবানীপুর বাজার এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যৌথ অভিযান চালায় বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) ও হাইওয়ে থানা পুলিশ। ওই অভিযানে রুহুল আমিন নামে চিহ্নিত এক দালাল বিআরটিএ এর পোশাক পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাজ করতে দেখা গেছে।

মহাসড়কে চলমান ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও লাইসেন্সবিহীন চালকের বিরুদ্ধে মামলা-জরিমানা আদায় করছেন সালনা হাইওয়ে পুলিশ ও বিআরটিএ এর মেকানিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট আদিয়াত রহমান। সে সময় কাগজ হাতে এই কর্মচারীর সাথে সেসব তথ্যের হিসাব রাখছেন দালাল রুহুল।

জানা যায়, এসব দালালরা বিআরটিএ সেবা প্রত্যাশীদের কাছে নিজেদেরকে অফিসের লোকজন হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকে। অফিস কর্তাদের সাথে সখ্যতার সুযোগ কাজে লাগিয়ে তারা সেবা প্রত্যাশীদের কাছ থেকে কাজ করে দেওয়ার কথা বলে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে সেই টাকার একটি মোটা অংশ চলে যায় অফিস প্রধানের পকেটে। এভাবে দালালের মাধ্যমে গাজীপুর বিআরটিএ এর সহকারী পরিচালক এবং মোটরযান পরিদর্শক দালালদের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

দালালের ভ্রাম্যমাণ আদালতে উপস্থিতির কথা স্বীকার করে গাজীপুর বিআরটিএ এর সহকারী পরিচালক আবু নাঈম বলেন, আমাদের জনবল সংকট তাই সে সহযোগিতা করে।

বিআরটিএ’র পোশাক পরার বিষয়ে তিনি বলেন, ভুল করে হয়তো পরেছে। আমি সবাইকে ডেকে মানা করে দিবো যেন আর কেউ বিআরটিএর পোশাক না পরে।

;

প্রাতিষ্ঠানিক কলকারখানায় শিশুশ্রম নেই: শ্রম প্রতিমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রাতিষ্ঠানিক কলকারখানায় কোনো শিশুশ্রম নেই বলে দাবি করেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম চৌধুরী।

তিনি বলেন, অনানুষ্ঠানিক খাতে শিশু শ্রম আছে। যেমন কোনো বাসায় কাজের ছেলে কিংবা কাজের মেয়ে রাখা বা গ্যারেজে কোনো গরিব ঘরের সন্তানকে কাজ শেখানোর জন্য কাজে লাগানো হয়। এসব খাতে আমরা হস্তক্ষেপ করলেও বন্ধ করা সম্ভব হয় না। তবে প্রাতিষ্ঠানিক কলকারখানায় কোনো শিশুশ্রম নেই।

শ্রমিকদের কর্মঘণ্টা নিয়ে এক প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তৈরি পোশাক খাত থেকে বেশির ভাগ বৈদেশিক মুদ্রা আসে। তারা যখন বিদেশি অর্ডার বাস্তবায়ন কিংবা রফতানি তাড়াতাড়ি করাতে শ্রমিকদের ওভারটাইম করান। এ জন্য তাদের পাওনা দেওয়া হয়। শ্রমিকরা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন। এটা পারস্পরিক বিষয়, সমঝোতার ভিত্তিতে করা হয়। আবার অনানুষ্ঠানিক খাতে এগুলো হয়। যেমন দোকানে আটঘণ্টার বেশি শ্রম দিতে হচ্ছে। এসব বিষয় নিরসনে আমরা কাজ করছি।

ট্রেড ইউনিয়ন নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের বিষয়ে বিধান অনেক শিথিল করা হয়েছে। অনলাইন ও অফলাইনে ট্রেড ইউনিয়নের নিবন্ধন আমরা দিচ্ছি। সেক্ষেত্রে তাদের বাধাগুলো শিথিল করে তারা যাতে সহজে ট্রেড ইউনিয়ন পেতে পারেন, আমরা সেই ব্যবস্থা করেছি।

শ্রম আইন নিয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, আইন না মানলে আমরা শ্রম আদালতে মামলা করতে পারি। সেটা বাস্তবায়ন করতে আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে পরিদর্শকরা আছেন। তারা পরিদর্শন করে যথাযথ ব্যবস্থা নেন। শ্রম আইন না মানলে লাইসেন্স বাতিলের ক্ষমতা রয়েছে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হয় না, এমনটা বলা যাবে না।

;

ফেরিঘাটে শিক্ষার্থীর মৃত্যু, টেম্পুচালকের বিরুদ্ধে মামলা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ফেরিঘাটে শিক্ষার্থীর মৃত্যু, টেম্পুচালকের বিরুদ্ধে মামলা

ফেরিঘাটে শিক্ষার্থীর মৃত্যু, টেম্পুচালকের বিরুদ্ধে মামলা

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রামের কালুরঘাট ফেরিঘাটের বেইলি ব্রিজে সিএনজি চালিত টেম্পুর ধাক্কায় কলেজ শিক্ষার্থী ফাতেমা তুজ জোহরার (১৮) মৃত্যুর ঘটনায় চালকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সকালে টেম্পুচালক রেজাউল করিম জিসানকে (২২) গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

টেম্পুচালক রেজাউল করিম জিসান বোয়ালখালী উপজেলার আমুচিয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের খরঞ্জপাড়ার বাসিন্দা।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) রাতে নিহত কলেজ শিক্ষার্থীর ভাই মো. রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে টেম্পুচালকের বিরুদ্ধে সড়ক পরিবহন আইনে বোয়ালখালী থানায় এই মামলা দায়ের করেন।

বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আছহাব উদ্দিন বলেন, ঘটনার পরপরই টেম্পুটি জব্দ ও টেম্পু চালককে আটক করা হয়েছিলো। মামলা দায়েরের পর চালককে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

এর আগে, সোমবার সকাল ১০টার দিকে বোয়ালখালী থেকে নগরীর কলেজে যাওয়ার পথে কালুরঘাট ফেরিঘাটের বেইলি ব্রিজে টেম্পুর ধাক্কায় শিক্ষার্থী ফাতেমা তুজ জোহরা (১৮) মারা যান। তিনি বোয়ালখালী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম কধুরখীল হানিফা বাড়ির মো. হাসানের মেয়ে।

;

বাস মালিকদের সুবিধা দিতেই রেলের ভাড়া বৃদ্ধি: যাত্রী কল্যাণ সমিতি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রেয়াত সুবিধা প্রত্যাহারের নামে বাসের চেয়ে রেলের ভাড়া বৃদ্ধির গণবিরোধী সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

সংগঠনটি বলছে, যানজটে নাকাল দেশবাসীকে যাতায়াতে ভোগান্তি থেকে মুক্তি দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৫ বছর যাবত ধারাবাহিকভাবে রেলখাতের উন্নয়নে লাখো কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে নতুন নতুন রেলপথ ও রেল স্টেশন নির্মাণ, নতুন কোচ ও ইঞ্জিন আমদানি করে এই খাতকে সমৃদ্ধ করার মাধ্যমে রেলসেবা জনগণকে দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে চাইছেন। ঠিক তখনই রেল কর্তৃপক্ষ রেয়াতি সুবিধা প্রত্যাহারের নামে ভাড়া বৃদ্ধি করে দূরপাল্লার যাত্রাপথে রেলের ভাড়া বাসের ভাড়ার চেয়ে বেশি নির্ধারণ করে বাস মালিকদের বিশেষ সুবিধা দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এমন গণবিরোধী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে রেলপথকে অতীতের মতো নিরাপদ ও সাশ্রয়ী রাখার দাবি জানাচ্ছে সংগঠনটি।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান সংগঠনের মহাসচিব মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক চৌধুরী।

রেলের রেয়াতি সুবিধা প্রত্যাহার করে সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ পর্যন্ত ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি যাত্রী কল্যাণ সমিতি পর্যবেক্ষণ করে নিয়ে ৫টি রুটের বাস এবং রেলের ভাড়া ও সময়ে তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে, এতে দেখা গেছে।

>> ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম তূর্ণা নিশিতা ট্রেনে শোভন চেয়ারের আগের ভাড়া ছিল ৩৪৫ টাকা। এখন রেয়াতি সুবিধা প্রত্যাহারের পর ৪০৫ টাকা। এই টিকিট কালোবাজারির কাছ থেকে যাত্রীদের কিনতে হয় ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায়। ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে লোকাল বাসের ভাড়া ৪০০ টাকা, ডাইরেক্ট বাসের ভাড়া ৬৮০ টাকা। ঢাকা চট্টগ্রাম তূর্ণা নিশিতা ট্রেনে এসি চেয়ারে আগের ভাড়া ছিল ৬৫৬ টাকা রেয়াত প্রত্যাহারের পরে এখন ৭৭৭ টাকা। এই টিকিট কালোবাজারির কাছ থেকে কিনতে হয় ১০০০ থেকে ১২০০ টাকায়। অথচ এই রুটে এসি বাসের ভাড়া ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা। ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে বাসে যেতে সময় লাগে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা, ট্রেনে সময় লাগে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা।

>> ঢাকা খুলনা রুটে ট্রেনের শোভন চেয়ারে ৫০০ টাকার ভাড়া এখন ৬২৫ টাকা। অথচ এই রুটে বাসে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায় যাতায়াত করেন যাত্রীরা। এই রুটে ট্রেনে এসি চেয়ার ৯৫৫ টাকার টিকিট এখন ১১৯৬ টাকা যা কালোবাজারির কাছ থেকে ১৫০০ টাকায় কিনতে হয়। অথচ ঢাকা-খুলনা রুটে বিলাসবহুল এসি বাসের ভাড়া মাত্র ৯০০ টাকা।

>> ঢাকা-রংপুর রুটে ট্রেনের শোভন চেয়ার ৫০৫ টাকা টিকিট এখন ৬৩৫ টাকা যা কালোবাজারির কাছ থেকে কিনতে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা লাগে। ঢাকা রংপুর রুটে লোকাল বাসের ভাড়া ৪০০/৫০০ টাকা, ডাইরেক্ট বাসের ভাড়া ৮০০ টাকা। এই রুটে ট্রেনের এসি চেয়ার ৯৬৬ টাকার টিকিট এখন ১২১৪ টাকা যা কালোবাজারির কাছ থেকে কিনতে লাগে ১৫০০ টাকায়। এই রুটে বিলাসবহুল বাসের এসি টিকিট ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকায় পাওয়া যায়। ঢাকা রংপুর ট্রেনের এসি বার্থ ২১৮০ টাকা যা কালোবাজারে কিনতে ৩০০০ টাকা লাগে অথচ বিলাসবহুল বাসে এই রুটে এসি স্লিপার ১৬০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। এই রুটে বাসে যেতে সময় লাগে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা, ট্রেনে সময় লাগে ১০ থেকে ১১ ঘণ্টা।

>> ঢাকা-কুড়িগ্রাম রুটে ট্রেনের ৫১০ টাকার শোভন চেয়ার টিকিট এখন ৬৪৫ টাকা যা কালোবাজারে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকায় কিনতে হয়। অথচ এই রুটে ৬০০ থেকে ৯০০ টাকার উন্নতমানের বাসে যাওয়া যায়। এই রুটে ট্রেনের এসি চেয়ার ৯৭২ টাকার টিকিট এখন ১২৩৭ টাকা যা কালোবাজারির কাছ থেকে ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকায় কিনতে হয়। অথচ বিলাসবহুল এসি বাসের টিকিট ১২০০ টাকায় পাওয়া যায়।

>> ঢাকা-পঞ্চগড় রুটে এসি বার্থ এর মূল্য ২৪০০ টাকা। এই রুটে বিলাস বহুলবাসে এসি স্লিপারের ভাড়া ১৮০০ টাকা।

পর্যবেক্ষণে আরও দেখা গেছে, রেলখাতকে লাভজনক করার ঘোষণা দিয়ে ২০১২ সালে সর্বনিম্ন ৭ থেকে সর্বোচ্চ ১১০ শতাংশ এবং ২০১৬ সালে ৭ শতাংশ রেলের ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল। একইসাথে ২০১২ সালের ভাড়া বৃদ্ধির সময় ট্রেনের ওই সময়ে বিদ্যমান সেকশনাল রেয়াতি সুবিধা প্রত্যাহারের পরে আসলেই কি রেল লাভবান হয়েছিল? ওই বছর অর্থাৎ ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে রেলের লোকসান ছিল ১২২৬ কোটি টাকা। এতে বুঝা যায় কেবল ভাড়া বৃদ্ধি করে লাভবান হওয়া বা লোকসান কমানো কোনোভাবেই সম্ভব নয়।

বর্তমানে রেয়াতি সুবিধা প্রত্যাহার করে যে হারে রেলের ভাড়া বাড়ানো হয়েছে, এতে যাত্রীরা রেল বিমুখ হবে, রেলে টিকিটবিহীন যাত্রী যাতায়াতের সংখ্যা বাড়বে, রাজস্ব আয় কমবে, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের লুটপাটের সুযোগ আরো বাড়বে। রেলের আয়বর্ধক খাত যেমন সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও ট্রেনের সংখ্যা বাড়িয়ে পণ্যবাহী ট্রেন থেকে আয় বাড়ানো দিকে না ঝুঁকে রেলওয়ে সাধারণ যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া নিয়ে আয় বাড়ানোর যে আকাশকুসুম পরিকল্পনা করছে সেটি কার্যত ব্যর্থ বলে অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে প্রমাণিত।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার রেলকে বিকশিত করার লক্ষ্যে গত ১৪ বছরে ৯৪ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের পরে এখনো ৬০ শতাংশ রেলপথ ঝুঁকিপূর্ণ, ৮০ শতাংশ লোকোমোটিভ ও ৬৩ শতাংশ কোচ মেয়াদোত্তীর্ণ, যার অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল শেষ হয়ে গেছে। পরিকল্পনার গলদে ট্রেনের টিকিট ১০দিন আগে কিনতে হচ্ছে যাত্রীদের, অথচ ৯০ শতাংশ যাত্রী ১০দিন আগে ভ্রমণ পরিকল্পনা করতে পারে না, অন্যদিকে বাসের টিকিট তাৎক্ষণিক পাওয়া যাচ্ছে। ট্রেনের টিকিট যাত্রীরা সহজে কাটতে পারে না, ফলে কখনো কালোবাজারি বা স্টেশনের পার্শ্ববর্তী কম্পিউটারের দোকান থেকে টিকিট কিনতে হয়। এভাবে টিকিট ক্রয়ের কারণে সাধারণ ও নিম্নআয়ের মানুষ অনেক সময় প্রতারিত হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে কখনো কখনো রেলে কর্তব্যরতদের ম্যানেজ করে বিনা টিকিটে ভ্রমণে বাধ্য হন অনেক যাত্রী।

তিনি বলেন, ট্রেন লাইনচ্যুতির ঘটনা ঘটলে মাঝপথে যাত্রীরা অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়ে, এমন পরিস্থিতিতে রেললাইনের আশেপাশে দোকান থাকে না বলেই অনেকে অনাহারে অর্ধা‌হারে কষ্ট ভোগ করতে হয়। লাইনচ্যুতি ও শিডিউল বিপর্যয়ের কারণে অনেক যাত্রীর চাকুরি, পরীক্ষা, বিদেশের ফ্লাইট, আদালতের হাজিরার মতো জনগুরুত্বপূর্ণ কাজে যোগ দিতে না পেরে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে সাধারণ মানুষকে রেলমুখী করে নামমাত্র মূল্যে টিকিট বিক্রি করে রেলকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছে।

আরও বলেন, ভারতে শেয়ালদহ রেলস্টেশন থেকে আজমীর জংশন পর্যন্ত ১৬৪২ কিলোমিটার দূরত্বে ১টি প্রথম শ্রেণির বার্থ সিটের ভাড়া মাত্র ৬৯০ রুপি, সেখানে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ৩৪৬ কিলোমিটার (প্রকৃত দূরত্ব ৩০০ কিলোমিটারেরও কম) ১টি নন এসি বার্থ সিটের ভাড়া ৮১০ টাকা। শেয়ালদহ রেলস্টেশন থেকে বনগাঁও ৭৭ কিলোমিটার দূরত্বে লোকাল ট্রেনের ভাড়া মাত্র ২০ রুপি। আর বাংলাদেশে ১টি টিকিট কাটতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সহজ ডট কমকে কমিশন দিতে হয় ২০ টাকা।

সহজ ডটকমসহ বিভিন্ন অনলাইনভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন খাতে পণ্য ক্রয় বা ব্যবসায়িক কৌশলের কারণে গ্রাহককে নানামুখী ছাড় দিলেও রেলের ক্ষেত্রে উল্টো আচরণ করছে। অর্থাৎ রেল প্রশাসনের মতোই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও যাত্রীদের চাহিদার সুযোগ নিয়ে শুধুই বেহিসাবি মুনাফা করে যাচ্ছে। ভারতের এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে রেলে সাশ্রয়ীমূল্যে পণ্য পরিবহন করে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে। ভারতের পণ্যবাহী ট্রেনে ৫০ থেকে ৭৫টি পর্যন্ত কোচ ব্যবহার করে খরচ কমিয়ে আনে। এমন পদ্ধতিতে চট্টগ্রাম ও মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে সারা দেশে রেলপথে পণ্য পরিবহন নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার পাশাপাশি এক জেলা থেকে অন্য জেলায় মাছ, মাংস, সবজি ও নিত্যপণ্য পরিবহন করা গেলে এদেশেও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

অন্যদিকে রেলের অনিয়ম-দুর্নীতি, অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা বন্ধ করে, সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার, বেদখলকৃত জমি উদ্ধার করে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের পাশাপাশি নানামুখী লাভজনক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে রেলকে ধীরে ধীরে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা সম্ভব। এজন্য রেল মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়েতে সৎ, নিবেদিতপ্রাণ, চৌকস, ব্যাপক দেশি-বিদেশি কারিগরি জ্ঞানসমৃদ্ধ একঝাঁক দেশপ্রেমিক কর্মকর্তা প্রয়োজন। একইসাথে শেখ হাসিনার ভিশন বাস্তবায়নে রেলের উপর জেঁকে বসা দুর্নীতিবাজ কালো বিড়ালের বিষদাঁত উপরে ফেলার এখন সময়ের দাবি।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সংগঠনের সহ-সভাপতি তাওহীদুল হক লিটন, যুগ্ন মহাসচিব মনিরুল হক, প্রচার সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রাসেল, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন প্রমুখ।

;